User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
চাকরি প্রার্থী দের জন্য অবশ্যই পাঠ্য, নির্মোহ ভাবে লিখেছেন
Was this review helpful to you?
or
মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানতে এমন সব বইয়ের বিকল্প নেই । ধন্যবাদ লেখককে ♥️
Was this review helpful to you?
or
Good
Was this review helpful to you?
or
অনেক ইতিহাস নির্ভরযোগ্য বই
Was this review helpful to you?
or
নির্মোহ বিশ্লেষণভিত্তিক একটি বই।রেফারেন্স বুক হিসেবেও ব্যবহার করা যায়।
Was this review helpful to you?
or
Valo বই
Was this review helpful to you?
or
ভালো
Was this review helpful to you?
or
সবচেয়ে যে বিষয় ভালো লেগেছে তা হলো - ১. নিরপেক্ষতা ২. আন্তর্জাতিক সোর্স থেকে রেফারেন্স
Was this review helpful to you?
or
Excellent
Was this review helpful to you?
or
মুক্তিযুদ্ধের সত্য ইতিহাস জানতে হলে এই বইএর বিকল্প পাওয়া দুষ্কর।
Was this review helpful to you?
or
বই পেয়েছি। কিন্তু কয়েকবার কাস্টমার কেয়ারে কথা বলেও ইনভয়েস পাইনি।
Was this review helpful to you?
or
Great
Was this review helpful to you?
or
সুন্দর
Was this review helpful to you?
or
মুক্তিযুদ্ধের একটা ভালো দলিলের বই
Was this review helpful to you?
or
ভালো
Was this review helpful to you?
or
nice
Was this review helpful to you?
or
অসাধারন একটি বই
Was this review helpful to you?
or
মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস জানার প্রয়াসে সংগ্রহে রাখার মত একটি বই।
Was this review helpful to you?
or
ফালতু বই
Was this review helpful to you?
or
দেশভাগের বিষয়বস্তু, ভৌগলিক অবস্থা, বৈষম্য সবকিছু এক কথায় দেশ ভাগের প্রয়োজনীয়তা। তৎকালীন সময়ে পাকিস্তান আর্মির বর্বরতা বাঙ্গালী কে জেগে উঠতে বাধ্য করেছিল তারই খুব সুন্দর বিশ্লেষণ করা হয়েছে বইটিতে।
Was this review helpful to you?
or
১৯৭১ সাল। যুদ্ধবিদ্যায় পারদর্শী পাকিস্তান সেনাবাহিনী পরাজিত হয় বাংলার সাধারণ মানুষের কাছে। সাধারণ মানুষের পক্ষে কি এমন প্রশিক্ষিত বাহিনীকে পরাজিত করা সম্ভব? তাও আবার এত কম সময়ে? ইতিহাস বলে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ছাড়া আর কোনো দেশের মুক্তির লড়াই এত কম সময়ে শেষ হয়নি। এই অসাধ্য সাধন তবে হল কী করে? এই প্রশ্নের উত্তর জানতে পড়তে হবে এই বই। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ সফলভাবে এতটা দ্রুততায় শেষ হওয়ার পিছনে রয়েছে আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক রাজনীতি-কূটনীতি, রয়েছে শরণার্থী সমস্যা আর এমনি আরো অসংখ্য জিনিসের অবদান। রণাঙ্গনের বাইরের এই রণে বাংলাদেশের হয়ে লড়েছে মুজিবনগর সরকার। আর একাই মুজিবনগর সরকারের কাণ্ডারি হয়ে এই লড়াই চালিয়ে গিয়েছেন বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমেদ। যুদ্ধ শুরুর পর মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনা, বিভিন্ন দেশের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন ও সমর্থন অর্জন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আর গণচীনের সব চোখ রাঙানি আর হস্তক্ষেপের সম্ভাবনার বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে মুক্তিযুদ্ধে জয় নিশ্চিত করা, শরণার্থীদের বাঁচানো আর যুদ্ধপরবর্তী দেশ গঠনের কাজ শুরু করা- সবকিছুর পেছনের নায়ক এই তাজউদ্দীনই। লেখক মঈদুল হাসান মুক্তিযুদ্ধের সময়ে কাজ করেছেন তাজউদ্দীন এর ঘনিষ্ঠ সহযোগী হিসেবে। বিশেষ বাংলাদেশ সরকারের হয়ে ভারত-রাশিয়ার সাথে যোগাযোগ এবং যুদ্ধ পরিকল্পনায় কাজ করেছেন তিনি। তাজউদ্দীন এর সাথে কাজ করতে গিয়ে তিনি মুজিবনগর সরকারকে দেখেছেন খুব কাছ থেকে। দলাদলি, ষড়যন্ত্র আর নানা প্রতিকূলতা জয় করে পাওয়া কাঙ্ক্ষিত বিজয়ের সাক্ষী তিনি। তাঁর তথ্যবহুল সুলিখিত স্মৃতিচারণ এই বই। আমাদের মুক্তিযুদ্ধের টেবিলের পেছনের ইতিহাসের ক্ষেত্রে বেশ গুরুত্বপূর্ণ বই বলে আমার কাছে মনে হয়েছে। প্রত্যেক বাংলাদেশির জন্য অবশ্যপাঠ্য।
Was this review helpful to you?
or
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস নিয়ে এই পর্যন্ত যত বই লেখা হয়েছে, তার রাজনৈতিক দলীয় সংকীর্ণতার উর্ধ্বে উঠে সাংবাদিক মঈদুল হাসানের এই বইটিকে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের আকরগ্রন্থ বলা যায়। মইদুল হাসান মুক্তিযুদ্ধের পুরো সময়টায় মুক্তিযুদ্ধের প্রবাসী সরকারের প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমেদের সার্বক্ষনিক সহচর ছিলেন। তাই উনি সমস্ত প্রবাসী সরকার, ভারতীয় নীতি নির্ধারকদের ডিসিশান গুলো কিভাবে আসতো তার ভিতরের বর্ণনা পুংখানুপুঙখু ভাবেই দিয়েছেন। সেই সাথে সে সময়ের আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক পরিবেশ আমাদের মুক্তিযুদ্ধকে কিভাবে প্রভাবিত করেছিল, সেইসবের বিস্তারিত বর্ণনা। প্রবাসী সরকারের অন্দরমহলের বিভিন্ন গ্রুপ, উপগ্রুপের মধ্যকার মারাত্মক গ্রুপিং। গ্রুপিংয়ের কারণেই মুজিব বাহিনীর মাধ্যমে তাজউদ্দীন কে হত্যাচেষ্টার মত মারাত্মক অজানা ইতিহাসও তুলে ধরেছেন। মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানার জন্য এই বইটা মাস্ট রিড৷ সহায়ক গ্রন্থ হিসেবে এই লেখকেরই প্রথমা প্রকাশনী থেকে প্রকাশীত আরেকটি বই - 'উপধারা একাত্তর ঃ মার্চ-এপ্রিল", প্রথমা থেকে প্রকাশিত মুইদুল হাসান, একে খন্দকার, এস আর মির্জার মধ্যকার কথোপকথনের সংকলন নিয়ে বই - 'মুক্তিযুদ্ধের পূর্বাপর কথোপকথন ' এ দুটিও বইও গুরুত্বপূর্ণ।
Was this review helpful to you?
or
যেকোনো যুদ্ধের ইতিহাসই নানা রকম জটিল উপাদানের সমন্বয়ে গড়ে ওঠার কথা, ওঠেও। বিশেষ করে, এ যুগের যুদ্ধগুলো শুধু অঞ্চলভিত্তিক যুদ্ধেই সীমাবদ্ধ থাকে না, তার এক বা একাধিক আন্তর্জাতিক প্রভাব ও পরিপ্রেক্ষিতও থাকে। আমাদের মুক্তিযুদ্ধও তেমনই একটি বিষয়। মূলধারা ’৭১ গ্রন্থে মঈদুল হাসান বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের এমন একটি অধ্যায়ের—‘মুক্তিযুদ্ধের পরিকল্পনা, উদ্যোগ ও মূল ঘটনাধারা’— প্রকৃত স্বরূপ তুলে এনেছেন, যেটি মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস আলোচনায় প্রায় উপেক্ষিতই থাকে, আর এ জন্য তিনি বেছে নিয়েছেন প্রবাসী সরকারের কর্মকাণ্ড ও আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটকে। যুদ্ধের সময় এই লেখক অস্থায়ী সরকারের প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদের সঙ্গে জড়িত হয়ে পড়েছিলেন এবং সংগ্রামের সাংগঠনিক পরিকল্পনা ও ব্যবস্থাপনার বিভিন্ন দিক সম্বন্ধে অবহিত ছিলেন। সংগত কারণেই সেসবের একটি নির্ভরযোগ্য বিবরণ এ গ্রন্থে রয়েছে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, পাকিস্তান যে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান চালাতে পারে, ২৫ মার্চের অনেক আগেই শেখ মুজিব সেটি অনুমান ও আশঙ্কা করেছিলেন এবং সে রকম কিছু ঘটলে প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারতের কাছ থেকে কী ধরনের সহায়তা পাওয়া যেতে পারে, সেটি জানার জন্য তাজউদ্দীন আহমদকে ৫ বা ৬ মার্চ ঢাকাস্থ ভারতীয় ডেপুটি হাইকমিশনার কে সি সেনগুপ্তের সঙ্গে আলোচনা করতে পাঠিয়েছিলেন। সেনগুপ্ত এর উত্তর সন্ধানে দিল্লিতে যান এবং ফিরে এসে তাজউদ্দীনকে ভাসাভাসাভাবে জানান, ‘পাকিস্তানি আঘাতের সম্ভাবনা সম্পর্কে ইসলামাবাদে ভারতীয় হাইকমিশন সম্পূর্ণ বিপরীত মত পোষণ করেন; তবু “আঘাত যদি নিতান্তই আসে” তবে ভারত আক্রান্ত মানুষের জন্য “সম্ভাব্য সকল সহযোগিতা” প্রদান করবে।’ ২৪ মার্চ সেনগুপ্তের সঙ্গে তাজউদ্দীনের পরবর্তী বৈঠক হওয়ার কথা থাকলেও সেটা হতে পারেনি। ফলে ২৫ মার্চের হামলার পর ভারতের কাছ থেকে কী ধরনের সহযোগিতা পাওয়া যাবে বা আদৌ পাওয়া যাবে কি না, এই অনিশ্চয়তা মাথায় নিয়েই তাজউদ্দীন তাঁর তরুণ সহকর্মী ব্যারিস্টার আমীর উল ইসলামকে নিয়ে সীমান্তে পৌঁছান। কিন্তু অচিরেই তিনি উপলব্ধি করেন যে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কাছে বাংলাদেশকে সহায়তা করার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কোনো নির্দেশ এসে পৌঁছেনি। ৩ এপ্রিল তিনি ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ পান এবং তাঁর জিজ্ঞাসার জবাবে জানান যে শেখ মুজিবের নেতৃত্বে ২৬ বা ২৭ মার্চেই একটি সরকার গঠিত হয়েছে এবং তিনি সেই সরকারের প্রধানমন্ত্রী। এই সরকারকে কূটনৈতিক স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য তিনি ভারতকে অনুরোধও জানান। কিন্তু তখন পর্যন্ত সরকার গঠন তো দূরের কথা, সহকর্মীরা বেঁচে আছেন কি না, সেটাও তাজউদ্দীনের জানা ছিল না! উল্লেখ্য, স্বাধীন বাংলা বিপ্লবী সরকার গঠিত হয় ১০ এপ্রিল, শপথ গ্রহণ করে ১৭ এপ্রিল ১৯৭১। যদিও এর আগেই ১১ এপ্রিল তাজউদ্দীন আহমদ বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বেতার ভাষণ দেন। তিনি যে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর কাছে নিজেকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে পরিচয় দিয়েছিলেন, এর পেছনে একটি তাৎপর্যপূর্ণ কারণ ছিল। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে প্রতিরোধযুদ্ধে সহায়তা চাওয়া আর বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে সহায়তা চাওয়া যে সম্পূর্ণ ভিন্ন ব্যাপার এবং ভিন্ন মাত্রাযুক্ত, সেটা তাজউদ্দীন আহমদ যথার্থই উপলব্ধি করেছিলেন। আগেই উল্লেখ করেছি, সাক্ষাতের শুরুতেই ইন্দিরা গান্ধী জানতে চেয়েছিলেন, ‘আওয়ামী লীগ ইতিমধ্যেই কোনো সরকার গঠন করেছে কি না!’ ইতিবাচক উত্তর পেয়ে তিনি ‘বাংলাদেশ সরকারের আবেদন অনুসারে বাংলাদেশের মুক্তিসংগ্রামকে সম্ভাব্য সকল প্রকার সহযোগিতা প্রদানের প্রতিশ্রুতি জ্ঞাপন করেন।’ তাজউদ্দীন আহমদের এই দূরদর্শিতা তাঁর ‘প্রধানমন্ত্রিত্বের’ নয় মাস ধরেই কার্যকর ছিল। আরেকটি উদাহরণ দিলে সেটি আরও পরিষ্কারভাবে বোঝা যাবে, ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে প্রথম সাক্ষাতেই তিনি বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য অনুরোধ করলেও এটিকে তিনি স্রেফ ‘দাবি’ হিসেবেই জিইয়ে রাখতে চেয়েছিলেন, কোনো চাপ বা তদবির করে একে ত্বরান্বিত করতে চাননি। কারণ, একদিকে বাংলাদেশকে কূটনৈতিক স্বীকৃতি দেওয়ার ব্যাপারে ভারতের বাস্তবসম্মত কিছু অসুবিধা ছিল; সেটি যেমন তিনি বুঝতে পেরেছিলেন, অন্যদিকে প্রতিরোধযুদ্ধ শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ভারতীয় স্বীকৃতি পেলে পাকিস্তান একে ‘ভারতীয় ষড়যন্ত্র’ বলে বিশ্বের কাছে প্রতিষ্ঠিত করার সুযোগ পেত এবং একে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ বলে চালিয়ে আন্তর্জাতিক হস্তক্ষেপে যুদ্ধবিরতি কার্যকর করার চেষ্টা করত, যা পরিশেষে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকে অঙ্কুরেই মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিত—সেটিও উপলব্ধি করতে পেরেছিলেন। তাজউদ্দীন আহমদ তাঁর রাজনৈতিক ও দার্শনিক প্রজ্ঞার কারণে বিষয়গুলো উপলব্ধি করতে পারলেও আওয়ামী লীগের অধিকাংশ নেতাই সেটি পারেননি। ফলে সরকার গঠনের পর থেকেই তাজউদ্দীন আহমদকে নানা রকম উপদলীয় ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করতে হয়। সেসবের বিস্তারিত বিবরণও আছে এই গ্রন্থে। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ভারত প্রথম থেকেই নানাভাবে সহায়তা করেছিল এবং এসব সহযোগিতা ছাড়া বাংলাদেশের পক্ষে এত দ্রুত জয়লাভ করা কঠিন হতো—এ কথা অনস্বীকার্য, কিন্তু এ-ও মনে রাখা দরকার যে ২৬ মার্চ থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত মুক্তিযোদ্ধারই পাকিস্তানিদের ব্যতিব্যস্ত রেখেছিলেন, নাস্তানাবুদ করে ছেড়েছিলেন, ওদের মনোবলকে নিয়ে এসেছিলেন শূন্যের কোঠায়। এটা না করতে পারলে সক্রিয় অংশগ্রহণের মাত্র ১২ দিনের মাথায় পাকিস্তানিদের পরাজিত করা ভারতীয়দের পক্ষে কোনোভাবেই সম্ভব হতো না। উল্লেখ্য, ভারতীয় স্থলবাহিনী বাংলাদেশে অভিযান শুরু করে ৪ ডিসেম্বর ১৯৭১ এবং আনুষ্ঠানিক কূটনৈতিক স্বীকৃতি দেয় ৬ ডিসেম্বর ১৯৭১। মুক্তিযোদ্ধাদের দুঃসাহসিক অভিযানে পাকিস্তানিরা যখন পলায়নপর এবং মানসিকভাবে পরাজিত, তখন ভারতীয় বাহিনীর অংশগ্রহণ তাদের এই পরাজয়কে কেবল ত্বরান্বিত ও অনিবার্য করে তুলেছিল। মূলধারা ’৭১ গ্রন্থে লেখক বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ঘটে যাওয়া মুক্তিযোদ্ধাদের এসব দুঃসাহসিক অভিযান ও এর ফলাফলের বিস্তারিত বিবরণ দেননি, তাঁর মনোযোগের কেন্দ্রে ছিল প্রবাসী সরকারের কর্মকাণ্ড ও আন্তর্জাতিক রাজনীতি। ফলে এই গ্রন্থটিও মুক্তিযুদ্ধের পূর্ণাঙ্গ ইতিহাস নয়। তবে একটি অজানা অধ্যায়ের উন্মোচন করে তিনি আমাদেরকে চির কৃতজ্ঞতাপাশে আবদ্ধ করেছেন।
Was this review helpful to you?
or
বইটি পড়ে আমার মনে হলো যে, আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের প্রামাণ্য দলিল বলা চলে একে। লেখক মঈদুল হাসান ছিলেন বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদের ঘনিষ্ঠ সহযোগী। একাত্তর সালের জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পটভূমিতে মুক্তিযুদ্ধের রাজনৈতিক, সামরিক, কূটনৈতিক-সব উপাদান একত্রিত করেই তুলে ধরেছেন মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস। ১৯৭১ সালের মার্চ থেকে ১৯৭২ সালে বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন পর্যন্ত গ্রন্থটির পরিসর বিস্তৃত। এর মধ্যে রয়েছে ২৫শে মার্চের কালরাত, বঙ্গবন্ধুর গ্রেপ্তার হওয়ার পর তাজউদ্দীন আহমদের সীমান্ত অতিক্রম, সরকার গঠন, স্বাধীন বাংলাদেশ সরকারের প্রকৃত অবস্থা, মুজিবনগর সরকারের শপথ গ্রহণ, তাজউদ্দীন আহমদের বেতার ভাষণ, ইন্দিরা গান্ধীর সঙ্গে যোগাযোগ, সোভিয়েত ইউনিয়নের সঙ্গে যোগাযোগ, ভারতের সহায়তা ও সব শেষে বিজয় অর্জন-এসবই ঠাঁই পেয়েছে বইটিতে।
Was this review helpful to you?
or
যারা যুদ্ধ বলতে শুধুই অস্ত্রহাতে জলে জঙ্গলে ছুটে বেড়ানো বোঝে, তাদের জন্য এ বই অবশ্য পাঠ্য। রাষ্ট্র ও তার স্বাধীনতা বুঝতেও এ বই অনন্য...
Was this review helpful to you?
or
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের ইতিহাস রচনায় এই গ্রন্থ নিঃসন্দেহে মূল্যবান সংযোজন। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের ইতিহাসের অনেক খানিই আজও অনালোকিত। তার কোন কোন অংশে আলোকপাত করার ব্যাপারে মূলধারা:’৭১ সমর্থ হয়েছে বলে আমার ধারণা। তবে মঈদুল হাসান, সঙ্গত কারণেই সমগ্র বিষয়কে বৃহত্তর প্রেক্ষাপটে উপস্থিত করেছেন পর্যাপ্ত গবেষণা ও অপ্রকাশিত নানা দলিলপত্রের ভিত্তিতে ঘটনার নিরপেক্ষ উপস্থাপনের উদ্দেশ্যেই।
Was this review helpful to you?
or
বইটিতে মূলত মুজিবনগর সরকারের প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমেদের মুক্তিযুদ্ধে কী ভূমিকা ছিল তা তুলে ধরা হয়েছে। সেকারণে বইটি পড়ে মুক্তিযুদ্ধের রাজনৈতিক দিক নিয়ে জানা যাবে যা অনেক বইয়েই পাওয়া যায় না। মুক্তিযুদ্ধের পূর্ণাঙ্গ ইতিহাস জানতে এই বই পড়া গুরুত্বপূর্ণ।
Was this review helpful to you?
or
ধন্যবাদ রকমারি ৩ দিনের মধ্যে ডেলিভারি দেওয়ার জন্য
Was this review helpful to you?
or
মুক্তিযুদ্ধের নির্ভরযোগ্য তথ্যসংবলিত যেসমস্ত ইতিহাসের বই রচিত হয়েছে, সেগুলোর মধ্যে মঈদুল হাসানের “মূলধারা' ৭১” নিঃসন্দেহে অগ্রভাগে থাকবে।
Was this review helpful to you?
or
আমার মতে অন্যান্য ইতিহাসের বইয়ের থেকে এই বইটিতে লেখক সবকিছুই উপস্থাপন করেছেন নিরপেক্ষভাবে।
Was this review helpful to you?
or
বইটা অনেক সুন্দর। আপনি যদি মুক্তিযুদ্ধের আসল ইতিহাস জানতে চান তাহলে বইটি আপনার জন্যে
Was this review helpful to you?
or
A must read for those who are interested to know about our liberation war.
Was this review helpful to you?
or
informative book.
Was this review helpful to you?
or
মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস জানার জন্য বইদুটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে ।
Was this review helpful to you?
or
should read everyone
Was this review helpful to you?
or
Nice book
Was this review helpful to you?
or
Good
Was this review helpful to you?
or
Gd.
Was this review helpful to you?
or
~ #Rokomari_Book_Club_Review_Competition পোস্ট:- ৪ প্রতিযোগির নাম :- Mohammed Siddik মঈদুল হাসান ১৯৩৬ সালের ২৯ জুলাই, বাংলা ১৪ শ্রাবণ, ১৩৪৩ সালে বগুড়ায় জন্মগ্রহণ করেন। সেখানেই শৈশব কাটে তার।১৯৭১ সালে মঈদুল হাসান প্রবাসী মুজিবনগর সরকার প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমেদ সহযোগী হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন।তাঁরই অভিজ্ঞতা থেকে মূলধারা বইটি রচনা করেন।মূলত গ্রন্থটি তার চোখে দেখা এক মসৃণ যুদ্ধের বিবরণ। ৭১' গ্রন্থটি নিঃসন্দেহে মহান মুক্তিযুদ্ধের এক অমূল্য সংযোজন। তৎকালীন সময়ে বাংলাদেশের রাজনীতি,কূটনীতিক পক্ষ বিপক্ষ দলের ভূমিকা,সামরিক বাহিনীর অবদান লেখক সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন।সমস্ত বিষয়ে পর্যবেক্ষণ গবেষণা অপ্রকাশিত দলিলপত্রের মাধ্যমে নিরপেক্ষ ভাবে বইটি সংযোজন করেছেন মঈদুল হাসান। ১৯৭১ মার্চ থেকে শুরু করে ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু স্বদেশ প্রত্যাবর্তন এর সংক্ষিপ্ত ইতিহাস।২৫ই মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের গ্রেফতার,তাজউদ্দিন আহমেদের দেশত্যাগ,নতুন দল গঠন তাজ উদ্দিনের নেতৃত্বে এগিয়ে যাওয়া, শপথ গ্রহণ,প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ভারত-পাকিস্তান টানাপোড়ন, সোভিয়েত ইউনিয়ন সম্পর্ক, যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতা,ভারতের সামরিক বাহিনীর দিক থেকে আমাদের সর্বাত্মক সহযোগিতা ইত্যাদি লেখক তাঁর অভিজ্ঞতার মাধ্যমে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে তথ্য প্রমান সহ লিপিবদ্ধ করেছেন। ৪৭' দেশভাগের পর থেকে বাঙালি রাষ্ট্র জীবনের সব দিক থেকে উপেক্ষিত,বঞ্চিত-শোষিত হতে শুরু করে।এই প্রক্রিয়া রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন, ছয় দফা,গণঅভ্যুত্থান সত্তরের নির্বাচন,কখনো জনসংখ্যা ভিওিক আইন পরিষদ,অর্থনৈতিক বৈষম্য দূরীকরণের দাবি করে এসেছে। পাকিস্তান সামরিক বাহিনী যে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অভিযান চালাবে ২৫ই মার্চের অনেক আগেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তা বুঝতে পেরেছিলেন।তাই তিনি তাজউদ্দিন আহমেদকে ভারত সফরে পাঠান ৫/৬ মার্চ সেখানে তিনি ডেপুটি হাইকমিশনারের কে সি সেনগুপ্ত আলোচনা করেন। তাজউদ্দিন আহমেদের দ্বিতীয় বৈঠক হওয়ার কথা থাকলেও তা হয়নি।২৫ ই মার্চ বঙ্গবন্ধুকে গ্রেফতারের পর ভারত সাহায্য পাওয়া যাবে কিনা তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় ভুগছেন তাজউদ্দিন আহমেদকে।উল্লেখ্য স্বাধীন বাংলার বিপ্লবী সরকার গঠিত হয় ১০এপ্রিল এবং শপথ গ্রহণ হয় ১৭ এপ্রিল ১৯৭১।১১ এপ্রিল ১৯৭১ সালে তাজউদ্দিন আহমেদ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বেতারে ভাষণ দেন। তাজউদ্দিন আহমেদ মুক্তিযুদ্ধের দূরদর্শিতা তা বলার অপেক্ষা রাখে না।কেননা তিনি ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সাথে প্রথম সাক্ষাতেই বাংলাদেশের স্বীকৃতি চান।এদিকে স্বীকৃতি দিলে পাকিস্তানিরা 'ভারতষড়যন্ত্র' বলে চালিয়ে দিবেন তা উপলব্ধি করতে পারেন।এ সকল কিছুর বিস্তারিত তথ্য রয়েছে গ্রন্থটিতে। বাংলাদেশি মুক্তিযুদ্ধ প্রথম থেকে ভারতের অবদান অনস্বীকার্য,কিন্তু একথা স্বীকার করতে হবে যে ২৬ই মার্চ পর থেকে পাকিস্তান নাস্তানাবুদ করে ছেড়েছিল, ৪ডিসেম্বর ১৯৭১ সালে ভারতের স্থল বাহিনীর আক্রমণ শুরু করে এবং ৬ ডিসেম্বর স্বীকৃতি দেয়।পাকিস্তানীরা যখন পলায়নপর এবং মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে পরবর্তীতে পাকিস্তান বাহিনী পরাজয় বরণ করে। যে কোন যুদ্ধের ময়দানে যতটুকু না লড়াই হয় তার চাইতে বেশী লড়াই হয় মঞ্চের পেছনে।বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধের নয় মাস সোভিয়েত ইউনিয়ন,মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র,ভারত-চীন যুদ্ধ যুদ্ধের প্রভাব, আওয়ামী লীগ নেতাদের ষড়যন্ত্র মূলক চক্রান্ত প্রত্যক্ষ-পরোক্ষভাবে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ভূমিকা রাখে। দালালিক প্রমানসহ মুক্তিযুদ্ধের কূটনৈতিক লড়াই নিয়ে অসাধারন একটি বই মূলধারা '৭১। ____________________________ মূলধারা '৭১ লেখক:- মঈদুল হাসান প্রথম প্রকাশ:- ১৯৮৬,ফেব্রুয়ারি প্রচ্ছদ:-সমর মজুমদার প্রকাশক:- মহিউদ্দিন আহমেদ পৃষ্ঠা সংখ্যা:-৩২০ মূল্য:- ৩৫০৳ ব্যক্তিগত রেটিং:-৯.৫০/১০.০০ ________________________________
Was this review helpful to you?
or
y
Was this review helpful to you?
or
Good
Was this review helpful to you?
or
খুব ভালো
Was this review helpful to you?
or
Bit informationesque, but thought provoking
Was this review helpful to you?
or
যে কোনো যুদ্ধের ইতিহাসই নানারকম জটিল উপাদানের সমন্বয়ে গড়ে ওঠার কথা, ওঠেও। বিশেষ করে এ যুগের যুদ্ধগুলো শুধুমাত্র অঞ্চলভিত্তিক যুদ্ধেই সীমাবদ্ধ থাকে না, তার এক বা একাধিক আন্তর্জাতিক প্রভাব ও পরিপ্রেক্ষিতও থাকে। আমাদের মুক্তিযুদ্ধও সেরকমই একটি বিষয়। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস আলোচনায় এ দিকটি এক রকম উপেক্ষিতই থাকে। মূলধারা '৭১ গ্রন্থে মঈদুল হাসান বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের এমন একটি অধ্যায়ের প্রকৃত স্বরূপ তুলে এনেছেন যেটি মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে লেখা বিভিন্ন গ্রন্থে প্রায় উপেক্ষিতই থাকে। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস মানেই যেন মুক্তিযোদ্ধাদের বীরত্বগাথা, নারীর সম্ভ্রমহানি, পাকিস্তানীদের নির্মম নিপীড়ন, হত্যাযজ্ঞ, লুটপাট, আগুন, রাজাকারদের কুকীর্তি ইত্যাদি। বলাবাহুল্য এসবই ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ উপাদান, ইতিহাসের সমগ্র নয়। লেখকের নিজের ভাষায়-- 'মুক্তিযুদ্ধের ঘটনার ব্যাপ্তি বিশাল, উপাদান অত্যন্ত জটিল এবং অসংখ্য ব্যক্তির আত্নত্যাগ ও অবদানে সমৃদ্ধ।' আমাদের ইতিহাসের সবচেয়ে গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায়ের ইতিহাস জানতে হলে এই সমগ্রকে জানতে হবে, অংশত নয়। দুঃখজনক হলেও সত্যি যে, আমাদের মধ্যে ইতিহাস সম্বন্ধে আগ্রহ আশংকাজনক ভাবে কম। বাংলাদেশের বড় দুটো রাজনৈতিক দল আবার মুক্তিযুদ্ধকে নামিয়ে এনেছে তাদের নেতাদের ঘোষণা বিতর্কের মধ্যে। যেন বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ কিংবা জিয়াউর রহমানের ২৭ মার্চের ঘোষণাই এ দেশের স্বাধীনতা এনে দিয়েছে! কোনো দেশের মুক্তিযুদ্ধকে দুজন মাত্র ব্যক্তির পর্যায়ে নামিয়ে আনার মতো এমন ঘটনা পৃথিবীর আর কোনো দেশে ঘটেছে বলে আমার জানা নেই। স্বাধীনতা লাভের পর থেকে এ দুটো দলের বারবার ক্ষমতায় আরোহন এবং রাষ্ট্রক্ষমতায় যুদ্ধাপরাধিদের অংশগ্রহণের ফলে রাষ্ট্রীয় প্রচারমাধ্যম ও স্কুল-কলেজ পর্যায়ের পাঠ্যপুস্তকে তাদের ইচ্ছেমতো ইতিহাস রচনার প্রবণতা দেখা গেছে। এবং এজন্যই তরুণ প্রজন্মের মনে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সম্বন্ধে একটি বিমূর্ত ধারণার জন্ম হয়েছে। ২৫ মার্চের ক্র্যাক-ডাউনের পর বঙ্গবন্ধুর স্বেচ্ছা-গ্রেফতার বরণ জাতিকে যে নেতৃত্বশূন্য অবস্থায় ঠেলে দিয়েছিলো, সেখান থেকে কীভাবে উত্তরণ ঘটলো, কার বা কাদের নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধ পরিচালিত হলো সেসব বিষয়ে খুব সামান্যই ধারণা আছে আমাদের নতুন প্রজন্মের। এই গ্রন্থে লেখক মূলত 'মুক্তিযুদ্ধের পরিকল্পনা, উদ্যোগ ও মূল ঘটনাধারাকে' তুলে ধরেছেন এবং এ জন্য অনিবার্যভাবেই তাঁকে বেছে নিতে হয়েছে প্রবাসী সরকারের কর্মকাণ্ড ও আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটকে। যুদ্ধের সময় লেখক তাজউদ্দিন আহমদের সঙ্গে জড়িত হয়ে পড়েছিলেন এবং সংগ্রামের সাংগাঠনিক পরিকল্পনা ও ব্যবস্থাপনার বিভিন্ন দিক সম্বন্ধে অবহিত ছিলেন। সঙ্গত কারণেই সেসবের একটি নির্ভরযোগ্য বিবরণ এ গ্রন্থে রয়েছে। মুক্তিযুদ্ধে ভারতীয় বাহিনীর ভূমিকা, শরণার্থী সমস্যা, তাজউদ্দীন আহমদ প্রসঙ্গ..... তাজউদ্দিন আহমদ তাঁর রাজনৈতিক ও দার্শনিক প্রজ্ঞার কারণে বিষয়গুলো উপলব্ধি করতে পারলেও আওয়ামী লীগের অধিকাংশ নেতাই সেটি পারেননি, ফলে তাজউদ্দিন আহমদকে সরকার গঠনের পর থেকেই আওয়ামী লীগের থেকেই নানা রকম উপদলীয় ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করতে হয়। পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর নিপীড়ন, বাঙালির মুক্তির লড়াই, আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র, শেখ মুজিবের ভুল.... সবই আলোচিত হয়েছে বইটিতে। আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধকে নিয়ে যতগুলো তথ্যমূলক বই আছে তারমধ্যে মঈদুল হাসান এই বইটির স্থান হবে এক থেকে দশের মধ্যে। সঠিক তথ্য সম্বলিত সেরা বইগুলোর মধ্যে একটি এই বইটি। রাজনৈতিক বিবেচনায়ও বইটি বহু গুরুত্বপূর্ণ। বারবার পড়ার মতোই বই মূলধারা ৭১। বইটিতে মঈদুল হাসান তুলে ধরেছেন বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময়ে মুক্তিযুদ্ধের পরিকল্পনা, উদ্যোগ ও মূল ঘটনা। তথ্যমূলক বইটি সকলের পড়ে দেখা উচিৎ। ইতিহাসের অনেক অজানা অথচ গুরুত্বপূর্ণ অংশ বেরিয়ে আসবে। বইটি পড়ে তাজউদ্দীন আহমদের সম্পর্কে অনেক কথা জানলাম। আগে থেকেই তাজউদ্দীন আহমদ আমার শ্রদ্ধেয় একজন মানুষ ছিলেন। বইটি পড়ে তা মজবুদ হয়েছে বহুগুণে। বঙ্গবন্ধু না থাকায় প্রচন্ড প্রতিকূলতার মধ্যে প্রায় একা একা কাজ করতে হয়েছে তাঁকে। সেই সময় ঘরে-বাইরে, চেনা-অচেনা অজস্র শত্রুর মোকাবিলা করতে হয়েছে। এ মহান মানুষটিকে তাঁর প্রাপ্য সম্মানের এক কণামাত্রও আমরা কিন্তু দিতে পারিনি। শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ এর সম্পর্কে যখনই কিছু পড়ি মনটা খুব খারাপ যায়। আমার মনে হয়েছে স্বাধীনতার পরে বঙ্গবন্ধু তাজউদ্দীন আহমদের উপর সম্পূর্ন আস্থা রাখতে পারেননি। যদি রাখতে পারতেন তাহলে মনে হয় বংলাদেশের ইতিহাস অন্যরকম হতো। বইটির আলোচিত সময় হল ১৯৭১-এর মার্চ থেকে ১৯৭২-এর ১০ই জানুয়ারীতে শেখ মুজিবরের স্বদেশ প্রত্যাবর্তনকাল পর্যন্ত। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস জানতে অবশ্যই মঈদুল হাসান লিখিত মূলধারা' বইটি পড়া উচিত। (তথ্য ও কথা সংগ্রহীত)
Was this review helpful to you?
or
মূলধারা :৭১ মইদুল হাসান যুদ্ধ মানেই এলোমেলো। কোন যুদ্ধের সঠিক ইতিহাস কোথাও লিপিবদ্ধ থাকে না। বেশির ভাগ কাহিনী লোক মুখে শোনার ফলে একেক জনের বর্ণনা একেক রকম শোনায়। ১৯৭১ সালের সংঘটিত মুক্তিযুদ্ধ বাঙালি জাতির স্বাধীনতার যুদ্ধ। ৯ মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর এই স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কিত অনেক ইতিহাসের বই রচিত হয়েছে। কোনটাই একেবারে সুনিদৃষ্ট ভাবে সয়ংসম্পূর্ন নয়। কোন না কোন ঘাটতি থেকেই গেছে। তবে তার মধ্যে মইদুল হাসানের "মুক্তধারা:৭১" মুক্তিযুদ্ধের বই গুলোর মাঝে অন্যতম। এই বইয়ের আলোচিত বিষয় বস্তু হলো মুক্তিযুদ্ধের পরিকল্পনা থেকে শুরু করে বাস্তনায়ন এবং সফল হওয়া পর্যন্ত। এত এত মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সম্বলিত পুস্তকের থেকে এই বই আলাদা করা যায়। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ জানতে এই বইটি পাঠককে বিশেষ ভাবে সহায়তা করবে। লেখক মুক্তিযুদ্ধের শুরু ১৯৭১ এর মার্চ মাস থেকে ১০ জানুয়ারী শেখ মুজিবের দেশে প্রত্যাবর্তন কাল পর্যন্ত প্রতিটি মাস পর্যায় ভিত্তিক আলোচনা করেছেন। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের কালরাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী দ্বারা সংঘটিত অপারেশান সার্চলাইট নামক হত্যাকান্ডের সময় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান গ্রেফতার হন। এরপর তাজউদ্দীন আহমদে সীমান্ত অতিক্রম করে ভারতে প্রবেশ করেন। বঙ্গবন্ধুর অনুপস্থিতিতে ১০ এপ্রিল বঙ্গবন্ধুকে রাষ্ট্রপতি এবং সৈয়দ নজরুল ইসলামকে অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি করে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নিজের কাধে নিয়ে সরকার গঠন করেন। সে সময় আওয়ামীলীগের বিভিন্ন নেতৃত্বের অন্তর্দ্বন্ধের মধ্যেও তাজউদ্দীন আহমদের নেতৃত্বে সে সরকারের এগিয়ে যায়। এরপর স্বাধীন বাংলাদেশ সরকারের প্রকৃত অবস্থা, শপথ গ্রহণ এবং প্রথম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তাজউদ্দীন আহমদের বেতার ভাষণ দেন। মুক্তিযুদ্ধে সহায়তায় তিনি ইন্দিরা গান্ধীর সাথে ও সোভিয়েত ইউনিয়নের সাথে যোগাযোগ করেন। এছাড়াও পাকিস্তানিদের এই আক্রমন থেকে সাধারণ জনগনকে রক্ষার জন্য বহির্বিশ্বে সাহায্যের আবেদন জানান। ভারত যখন পূর্ব পাকিস্থানের সহায়তায় এগিয়ে আসে তখন ভারত-পাকিস্থান টানাপড়েন শুরু হয়।এর মাঝে পাকিস্তান হঠাৎ করে ভারতেও আক্রমণ করে বসে। এরপর ভারত-সোভিয়েত মৈত্রীপূর্ণ সম্পর্ক এবং পাক-যুক্তরাষ্ট্র সুসম্পর্ক এসবের মধ্য দিয়ে বাঙালির প্রতিরোধ গড়ে তুলে। পূর্ব বাংলার জনগন সীমান্ত অতিক্রম করে ভারতে প্রবেশ করে এবং সামরিক প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহন করে। মুক্তিযুদ্ধের মাঝামাঝি সময় গেরিলা আক্রমণ শুরু হয়। এবং মুক্তিবাহিনীর শক্তিবৃদ্ধি পায় ভারতের সহায়তা। শেষ দিকে ভারতের মিত্রবাহিনীর সাথে যৌথবাহিনী গঠন করা হয় । এবং মাত্র ১২ দিনে বাংলাদেশ স্বাধীনতার বিজয় অর্জন করে। এবং সবশেষে বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন এর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ স্বয়ংসম্পূর্ণ স্বাধীনতা লাভ করে । মুক্তিযুদ্ধের এই নয় মাসের প্রতিটি ঘটনা, প্রতিটি কার্যক্রম লেখক নিজের প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে বর্ণনা করেছেন। এসবের বর্ণনায় উঠে এসেছে অনেক অজনা কাহীনি। পুরো নয় মাসের ঘটনাবলির বিবরণ লেখক তুলে ধরেছেন ২২ টি অধ্যায়ে। এছাড়া বইয়ের শেষে প্রকাশ করেছেন মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীন বাংলাদেশ সরকারের গুরুত্বপূর্ণ কিছু নথিপত্র। এর সবগুলোর ঘটনার মধ্যে সবথেকে বেশি প্রাধান্য দিয়েছেন লেখক প্রবাসী সরকারের কর্মকান্ড এবং আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপট। লেখকের বর্ণনায় ফুটে উঠেছে বাংলাদেশের প্রথম প্রধান মন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমেদ এর দূরদর্শিতা। কি করে তিনি মুজিব বিহীন দেশের নাজুক অবস্থায় হাল ধরেছিলেন। কি করে নিজস্ব চিন্তা চেতনায় বাংলার মুক্তিযুদ্ধে স্বাধীনতা পতাকার ছিনিয়ে এনেছিলেন। মুক্তিযুদ্ধে এই অংশটুকুর ইতিহাস খুব কম বইয়েই দেখতে পাওয়া যায়। লেখক এটার ঘাটতি পুরণ করেছিলেন। অবশ্য এ সম্পর্কে তিনি অনেক তথ্য দেয়ার কারণ ছিলো কারন যুদ্ধাবস্থায় অস্থায়ী সরকার প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমেদের সাথে তিনি জড়িত ছিলেন। সংগ্রামের সাংগঠনিক সকল পররিকল্পনা ও ব্যবস্তাপনার বিভিন্ন দিক সম্বন্ধে তিনি অবহিত ছিলেন। আর সে কারনেই বলা যায় ওই সময়ের সব থেকে নির্ভর যোগ্য তথ্যই বইটাতে পাওয়া যাবে। যদিও অনেকাংশে মুক্তিযুদ্ধের কাহিনীতে এই বই সয়ংসম্পূর্ণ তবুও কিছুটা অসম্পূর্নতা থেকে গেছে। তবে মুক্তিযুদ্ধের সাংগঠনিক পরিকল্পনা সমম্পর্কে বেশ ভালো ধারনা দিয়ে থাকবে।
Was this review helpful to you?
or
ইতিহাস জানার আনন্দের বড় এক হাতিয়ার মূলধারা: ’৭১। যুদ্ধ পরবর্তী সময়ে বিভিন্নজন বিভিন্নভাবে মুক্তিযুদ্ধকে বিশ্লেষণ করেছেন। কিন্তু আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায় নিয়ে লেখা বইগুলোর মধ্যে আমার জানামতে এটাই সেরা। তাজউদ্দিন এবং তৎকালীণ আওয়ামী লীগ সম্পর্কে জানতেও বইটি বিশেষ গুরুতপূর্ণ। তাজউদ্দিন কর্তৃক প্রদত্ত ২৩ নভেম্বরের বেতার ভাষণ আমাকে মুগ্ধ করেছে- “মুক্তিবাহিনী এখন যে কোন সময়ে, যে কোন জায়গায় শত্রুকে আঘাত করতে পারে; এমনকি শত্রুর নিরাপদ অবস্থানের কেন্দ্রে অতর্কিত আক্রমণ চালিয়ে তাকে বিমূঢ় করে দিতে পারে।... নদীপথে হানাদাররা বিপর্যস্ত, মংলা ও চট্টগ্রাম বন্দর প্রায় অকেজো, বাংলাদেশের বিস্তির্ণ এলাকা শত্রুমুক্ত। ক্রমেই অধিক যায়গায় গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের কার্যকর প্রশাসন চালু হচ্ছে। আর সৈন্য সামগ্রী ও মনোবল হারিয়ে শত্রুপক্ষ ততই হতাশায় উন্মাদ হয়ে উঠেছে।... এখন তারা চায় ভারতের সঙ্গে যুদ্ধ বাধিয়ে একটা আন্তর্জাতিক সঙ্কট সৃষ্টি করতে। তারা আশা করে যে, এমন একটা যুদ্ধ হলে, বাংলাদেশের রক্ষক্ষয়ী স্বাধীনতা সংগ্রামের থেকে পৃথিবীর দৃষ্টি অন্যদিকে নিবন্ধ হবে, মুক্তিবাহিনীর হাতে তাদের পরাজয়ের গ্লানি গোপন করা যাবে এবং এমন একটা পরিস্থিতির উদ্ভব হবে যাতে তাদের পৃষ্ঠপোষকেরা হস্তক্ষেপ করার সুযোগ পাবে। কিন্তু আমি প্রত্যয়ের সঙ্গে বলছি যে, এর একটি উদ্দেশ্যও সিদ্ধ হবে না।... সামরিক শাসকচক্র আত্মহত্যার যে ব্যবস্থাই করে থাকুক না কেন আর এই উপমহাদেশের জন্য যে ব্যবস্থাই বিশেষ বিশেষ রাষ্ট্রের মনঃপুত হোক না কেন, বাংলাদেশের জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য ব্যবস্থা একটিই- আর তা হল পূর্ণ স্বাধীনতা। ইতিহাসের অন্যতম রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে প্রতিদিন প্রমাণিত হচ্ছে আমাদের স্বাধীনতার সংকল্প এবং সে স্বাধীনতা রক্ষার শক্তি। দখলদার বাহিনীর বিনাশ অথবা সম্পূর্ণ অপসারণের মধ্য দিয়ে অর্জিত স্বাধীনতাই আমাদের একমাত্র লক্ষ্য। ইতিহাস মানুষকে অন্তত এই শিক্ষা দিয়েছে যে, জনসাধারণের ইচ্ছাশক্তির পরাজয় নেইÑ এমনকি এক বিশ্ব শক্তির সমরসম্ভার দিয়েও জনগণের মুক্তিসংগ্রাম দমন করা যায় না। “অশ্রু ও রক্তের বিনিময়ে যে স্বাধীনতার জন্য আমরা লড়ছি, সে স্বাধীনতা লাভের দিনটি নিকটতম হয়েছে। কিন্তু তার জন্য আরো আত্মত্যাগ, কষ্ট স্বীকার ও জীবন দানের প্রয়োজন হবে। স্বাধীনতার ধারণা অশেষ অর্থগর্ভ। স্বাধীনতার তাৎপর্য নির্ভর করে যুদ্ধ অবস্থায় আমরা কি মূল্য দিই এবং শান্তির সময়ে এর কি ব্যবহার করি তার উপর। শত্রু সংহারের প্রতিজ্ঞা সঙ্গে সঙ্গে তাই শহীদের রক্তের উপযুক্ত সমাজ গঠনের প্রতিজ্ঞাও আমাদেরকে নতুন করে নিতে হবে। বাংলাদেশের শহরে ও গ্রামে তরুণেরা যে যুদ্ধে লিপ্ত তা বিদেশী দখলদারদের বিতাড়িত করার সংগ্রাম এবং অসাম্য ও সুবিধাভোগের অবসান ঘটানোর সংগ্রাম।... “বাংলাদেশের জনসাধারণের অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আজও পাকিস্তানের সামরিকচক্রের হাতে বন্দী হয়ে রয়েছেন। আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস, তাকে মুক্ত করার একমাত্র উপায় হচ্ছে বাংলাদেশ থেকে হানাদার সৈন্যদের নিষ্ক্রমণের সকল পথ রুদ্ধ করে দেওয়া। তা করবার শক্তি আমাদের আছে এবং আমরা তা-ই করতে যাচ্ছি।”... -- মূলধারা: ’৭১
Was this review helpful to you?
or
বর্তমান সময়ে মুক্তিযুদ্ধ সংক্রান্ত বইগুলোতে বেশ রাজনৈতিক প্রভাব দেখা যায়। ফলে অজানা থাকে অনেক ইতিহাস। সেভাবে বিবেচনা করলে আমি এই বইকে মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কিত বইগুলোর মধ্যে সবচেয়ে নিরপেক্ষ বই হিসেবে স্বীকৃতি দেবো। লেখকের লেখনীতে ফুটে ঊঠেছে মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস, বিভিন্ন ঘটনার চুলচেরা বিশ্লেষণ।
Was this review helpful to you?
or
আমাদের মুক্তিযুদ্ধের এক অসামান্য দলীল। অনেক কিছু জানার আছে এতে।অনেক ইতিহাস আগে বিক্রিতভাবে জানতাম কিন্তু এখানে সঠিকভাবে তুলে ধরেছেন। বিশেষ করে মুক্তিযুদ্ধে তাজ উদ্দীন আহমেদের অবদানের কথা এই জাতি হয়তো একদিন ভুলেই যাবে, এই বইটি তখন জাতিকে সঠিক দিক নির্দেশনা দিবে। যারা মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানতে চায় তাদের জন্য বইটি অবশ্য পাঠ্য।
Was this review helpful to you?
or
আসুন এই বিজয়ের মাসে আহাম্মকদের বক্তব্য শুনে সময় নষ্ট না করে, সামাজিক মাধ্যমে সময় নষ্ট না করে মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে নিরপেক্ষ দৃষ্টিভঙ্গিতে পড়ি। পক্ষে-বিপক্ষে পড়ি,ইতিহাস জানি। মহান বীরদের উৎসর্গকে জানি। তবেই বিজয় মাসের মর্যাদা রক্ষা হবে। শুরুটা হোক তাহলে এই বই দিয়ে।
Was this review helpful to you?
or
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের ইতিহাস রচনায় এই গ্রন্থ নিঃসন্দেহে মূল্যবান সংযোজন। লেখক মঈদুল হাসান একাত্তর সালের জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পটভূমিতে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের রাজনৈতিক, সামরিক ও কূটনৈতিক সকল মূল উপাদানকেই একত্রে তুলে ধরেছেন। এই সব উপাদানের সংঘাত ও সংমিশ্রণে কিভাবে সফল রণনীতির উদ্ভব ঘটেছিল সেই ইতিবৃত্ত এই বিবরণে রয়েছে। এগুলিকে তিনি হাজির করেছেন ঘটনাবিকাশের নিজস্ব ধারাবাহিকতায়, যতদূর সম্ভব নিরপেক্ষ সাক্ষ্য-প্রমাণসহ। এ ছাড়া অনেক ঘটনা ও অনেক গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগের কথা তিনি প্রকাশ করেছেন, যেগুলির অনেক কিছুই আজও অপ্রকাশিত, অথচ যেগুলি ছাড়া স্বাধীনতা যুদ্ধের গতিপ্রকৃতির কোন সঙ্গত ব্যাখ্যা খুঁজে পাওয়া যায় না। এ জাতীয় বিবরণ সম্ভবত কেবল এই লেখকের পক্ষেই সম্ভব ছিল। কারণ প্রবাসে বাংলাদেশ সরকারের প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমেদের মুক্তিযুদ্ধ-সংক্রান্ত নীতি প্রণয়নের ক্ষেত্রে এবং তাঁর পক্ষ থেকে ভারত সরকারের উচ্চতর নীতিনির্ধারকদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনার ব্যাপারে লেখক ছিলেন বিশেষ আস্থাভাজন ব্যক্তি। তাঁদের দু’জনার মাঝে যোগাযোগ ছিল ঘনিষ্ঠ ও নিয়মিত। মুক্তিযুদ্ধকালের অনেক ঘটনার জন্যই লেখক এক নির্ভরযোগ্য সূত্র। একাত্তর সালে পাকিস্তানী বাহিনীর হত্যা, বর্বরতা ও সন্ত্রাসের ফলে ভারতে আশ্রয়প্রার্থী মানুষের সংখ্যা অকল্পনীয়ভাবে বেড়ে চলে। প্রথমদিকে প্রবাসে বাংলাদেশের রাজনৈতিক মহলে পরিস্থিতি ছিল বহুলাংশেই অসংগঠিত ও বিশৃঙ্খলাপূর্ণ। আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধের নয় মাসে তাজউদ্দীন আহমদ ছিলেন সকল ঘটনার কেন্দ্রে এবং অপরিসীম নিষ্ঠা ও সততার সঙ্গে তিনি তাঁর দায়িত্ব পালন করে গেছেন। কিন্তু তাঁর নিজের ভূমিকা সম্পর্কে এই মিতভাষী মানুষটি প্রায় কিছুই বলে যাননি। ফলে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের ইতিহাসের অনেক খানিই আজও অনালোকিত। তার কোন কোন অংশে আলোকপাত করার ব্যাপারে মূলধারা:’৭১ সমর্থ হয়েছে বলে আমার ধারণা। তবে মঈদুল হাসান, সঙ্গত কারণেই সমগ্র বিষয়কে বৃহত্তর প্রেক্ষাপটে উপস্থিত করেছেন পর্যাপ্ত গবেষণা ও অপ্রকাশিত নানা দলিলপত্রের ভিত্তিতে ঘটনার নিরপেক্ষ উপস্থাপনের উদ্দেশ্যেই।
Was this review helpful to you?
or
A must read book if you want to know the history of our liberation war. stories behind....
Was this review helpful to you?
or
সম্পুর্ন নিরপেক্ষ থেকে লেখার চেষ্টা করা মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস এর জন্য অসাধারন একটি বই। মুক্তিযুদ্ধের international affairs গুলো বেশ তথ্যের সাথে লেখক তুলে ধরেছেন, বুঝে পড়ার মত একটা বই
Was this review helpful to you?
or
যুদ্ধ মানেই দাবা খেলা। দাবার বোর্ডে নিয়মিত খেলা। এবং দাবা বোর্ডের বাইরে আসল খেলা। স্বাধীনতা যুদ্ধে অভ্যন্তরীণ যুদ্ধের বাইরেও যে আসল যুদ্ধ হয়েছে তার গল্পই করেছেন মঈদুল হাসান। বইটিতে আছে- *তাজউদ্দীন আহমেদের ভূমিকা এবং বিচক্ষণতা। *যৌথবাহিনী, মুজিব বাহিনী, আওয়ামীলীগের তৎকালীন কর্মকান্ড। *ভারত, সোভিয়েত, চীনএবং যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাব। বইটির যে ব্যাপারট সবচেয়ে ভাল লেগেছে তা হলো রেফারেন্স ☺
Was this review helpful to you?
or
মহান মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস তুলে ধরার ক্ষেত্রে এ গ্রন্থটি নিঃসন্দেহে একটি অমূল্য সংযোজন। লেখক মঈদুল হাসান একাত্তর সালের জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পটভূমিতে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের রাজনৈতিক,সামরিক ও কূটনৈতিক সকল মূল উপাদানকেই একত্রিত করে তুলে ধরেছেন মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস। এসব উপাদানের সংঘাত ও সংমিশ্রণে কিভাবে সফল রণনীতির উদ্ভব ঘটেছিল সেই ইতিবৃত্তই তিনি তুলে ধরার প্রয়াস পেয়েছেন এই বইটিতে। ১৯৭১ সালের মার্চ হতে ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন পর্যন্ত গ্রন্থটির আলোচ্য ঘটনাবলীর সময়কাল, ২৫ মার্চের কালরাতে শেখ মুজিব গ্রেফতার হওয়ার পর তাজউদ্দীন আহমদের সীমান্ত অতিক্রম,সরকার গঠন,বঙ্গবন্ধুর অনুপস্থিতিতে আওয়ামীলীগের নেতৃত্বের অন্তর্দ্বন্ধের মধ্যেও তাজউদ্দীন আহমদের নেতৃত্বে সে সরকারের এগিয়ে যাওয়া, স্বাধীন বাংলাদেশ সরকারের প্রকৃত অবস্থা,শপথ গ্রহণ, প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদের বেতার ভাষণ,ইন্দিরা গান্ধীর সাথে যোগাযোগ,সোভিয়েত ইউনিয়নের সাথে যোগাযোগ,সাড়া, বহির্বিশ্বে সাহায্যের আবেদন, ভারত-পাকিস্তান টানাপড়েন, ভারত-সোভিয়েত মৈত্রীপূর্ণ সম্পর্ক, পাক-যুক্তরাষ্ট্র সুসম্পর্ক; এসবের মধ্য দিয়ে বাঙালির প্রতিরোধ, সীমান্ত অতিক্রম করে ভারতে আসা,সামরিক প্রশিক্ষণ গ্রহণ, গেরিলা আক্রমণ,শক্তিবৃদ্ধি,ভারতের সহায়তা, মিত্রবাহিনীর সাথে যৌথবাহিনী গঠন,বিজয় অর্জন এসবের প্রত্যেকটি ঘটনাপ্রবাহই আলোচনা করে গেছেন লেখক তাঁর নিজস্ব প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে; যাতে উঠে এসেছে অনেক অজানা অধ্যায়। এছাড়া অনেক ঘটনা ও গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগের কথা তিনি প্রকাশ করেছেন,যেগুলির অনেক কিছুই আজও অপ্রকাশিত,অথচ এসব ছাড়া স্বাধীনতাযুদ্ধের গতি-প্রকৃতির কোন সুসংগত ব্যাখ্যা পাওয়া যায়না। এ জাতীয় বিবরণ সম্ভবত কেবল মঈদুল হাসানের পক্ষেই লেখা সম্ভব।কারণ, প্রবাসে বাংলাদেশ সরকারের প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদের মুক্তিযুদ্ধ সংক্রান্ত নীতি-প্রণয়নের ক্ষেত্রে এবং তাঁর পক্ষ থেকে ভারত সরকারের উচ্চতর নীতি-নির্ধারকদের সঙ্গে আলাপ আলোচনার ব্যাপারে তিনি(লেখক) ছিলেন আস্থাভাজন ব্যক্তি। ১৯৭১ এর ২৫ মার্চ হতে ১৯৭২ এর জানুয়ারি পর্যন্ত ঘটনাবলীর বিবরণ লেখক তুলে ধরেছেন ২২টি অধ্যায়ে। ৯০ পৃষ্ঠার পরিশিষ্ট অংশে তুলে ধরেছের মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীন বাংলাদেশ সরকারের গুরুত্বপূর্ণ কিছু নথিপত্র। কাজেই, রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে নীতিনির্ধারণ সংক্রান্ত সঠিক তথ্য জানতে বইটির গুরুত্ব অসামান্য।
Was this review helpful to you?
or
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকে জানতে এটি একটি অবশ্য পাঠ্য বই। এর আলোচিত সময় ১৯৭১-এর মার্চ তেকে ১৯৭২-এর ১০ই জানুয়ারীতে শেখ মুজিবরের স্বদেশ প্রত্যাবর্তনকাল পর্যন্ত। বিষয়বস্তু হলো মুক্তিযুদ্ধের পরিকল্পনা, উদ্যোগ ও মূল ঘটনাধারা। লেখক এ সময়টায় তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমদের যে সব নীতি ও পরিকল্পনা প্রণয়নের সঙ্গে জড়িত হয়ে পড়েছিলেন এবং সংগ্রামের সাংগঠনিক পরিকল্পনা ও ব্যবস্থাপনার যে দিকগুলো সম্পর্কে অবহতি ছিলেন, তাই বর্ণনা করেছেন।
Was this review helpful to you?
or
যেকোনো যুদ্ধের ইতিহাসই নানা রকম জটিল উপাদানের সমন্বয়ে গড়ে ওঠার কথা, ওঠেও। বিশেষ করে, এ যুগের যুদ্ধগুলো শুধু অঞ্চলভিত্তিক যুদ্ধেই সীমাবদ্ধ থাকে না, তার এক বা একাধিক আন্তর্জাতিক প্রভাব ও পরিপ্রেক্ষিতও থাকে। আমাদের মুক্তিযুদ্ধও তেমনই একটি বিষয়। মূলধারা ’৭১ গ্রন্থে মঈদুল হাসান বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের এমন একটি অধ্যায়ের—‘মুক্তিযুদ্ধের পরিকল্পনা, উদ্যোগ ও মূল ঘটনাধারা’— প্রকৃত স্বরূপ তুলে এনেছেন, যেটি মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস আলোচনায় প্রায় উপেক্ষিতই থাকে, আর এ জন্য তিনি বেছে নিয়েছেন প্রবাসী সরকারের কর্মকাণ্ড ও আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটকে। যুদ্ধের সময় এই লেখক অস্থায়ী সরকারের প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদের সঙ্গে জড়িত হয়ে পড়েছিলেন এবং সংগ্রামের সাংগঠনিক পরিকল্পনা ও ব্যবস্থাপনার বিভিন্ন দিক সম্বন্ধে অবহিত ছিলেন। সংগত কারণেই সেসবের একটি নির্ভরযোগ্য বিবরণ এ গ্রন্থে রয়েছে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, পাকিস্তান যে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান চালাতে পারে, ২৫ মার্চের অনেক আগেই শেখ মুজিব সেটি অনুমান ও আশঙ্কা করেছিলেন এবং সে রকম কিছু ঘটলে প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারতের কাছ থেকে কী ধরনের সহায়তা পাওয়া যেতে পারে, সেটি জানার জন্য তাজউদ্দীন আহমদকে ৫ বা ৬ মার্চ ঢাকাস্থ ভারতীয় ডেপুটি হাইকমিশনার কে সি সেনগুপ্তের সঙ্গে আলোচনা করতে পাঠিয়েছিলেন। সেনগুপ্ত এর উত্তর সন্ধানে দিল্লিতে যান এবং ফিরে এসে তাজউদ্দীনকে ভাসাভাসাভাবে জানান, ‘পাকিস্তানি আঘাতের সম্ভাবনা সম্পর্কে ইসলামাবাদে ভারতীয় হাইকমিশন সম্পূর্ণ বিপরীত মত পোষণ করেন; তবু “আঘাত যদি নিতান্তই আসে” তবে ভারত আক্রান্ত মানুষের জন্য “সম্ভাব্য সকল সহযোগিতা” প্রদান করবে।’ ২৪ মার্চ সেনগুপ্তের সঙ্গে তাজউদ্দীনের পরবর্তী বৈঠক হওয়ার কথা থাকলেও সেটা হতে পারেনি। ফলে ২৫ মার্চের হামলার পর ভারতের কাছ থেকে কী ধরনের সহযোগিতা পাওয়া যাবে বা আদৌ পাওয়া যাবে কি না, এই অনিশ্চয়তা মাথায় নিয়েই তাজউদ্দীন তাঁর তরুণ সহকর্মী ব্যারিস্টার আমীর উল ইসলামকে নিয়ে সীমান্তে পৌঁছান। কিন্তু অচিরেই তিনি উপলব্ধি করেন যে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কাছে বাংলাদেশকে সহায়তা করার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কোনো নির্দেশ এসে পৌঁছেনি। ৩ এপ্রিল তিনি ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ পান এবং তাঁর জিজ্ঞাসার জবাবে জানান যে শেখ মুজিবের নেতৃত্বে ২৬ বা ২৭ মার্চেই একটি সরকার গঠিত হয়েছে এবং তিনি সেই সরকারের প্রধানমন্ত্রী। এই সরকারকে কূটনৈতিক স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য তিনি ভারতকে অনুরোধও জানান। কিন্তু তখন পর্যন্ত সরকার গঠন তো দূরের কথা, সহকর্মীরা বেঁচে আছেন কি না, সেটাও তাজউদ্দীনের জানা ছিল না! উল্লেখ্য, স্বাধীন বাংলা বিপ্লবী সরকার গঠিত হয় ১০ এপ্রিল, শপথ গ্রহণ করে ১৭ এপ্রিল ১৯৭১। যদিও এর আগেই ১১ এপ্রিল তাজউদ্দীন আহমদ বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বেতার ভাষণ দেন। তিনি যে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর কাছে নিজেকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে পরিচয় দিয়েছিলেন, এর পেছনে একটি তাৎপর্যপূর্ণ কারণ ছিল। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে প্রতিরোধযুদ্ধে সহায়তা চাওয়া আর বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে সহায়তা চাওয়া যে সম্পূর্ণ ভিন্ন ব্যাপার এবং ভিন্ন মাত্রাযুক্ত, সেটা তাজউদ্দীন আহমদ যথার্থই উপলব্ধি করেছিলেন। আগেই উল্লেখ করেছি, সাক্ষাতের শুরুতেই ইন্দিরা গান্ধী জানতে চেয়েছিলেন, ‘আওয়ামী লীগ ইতিমধ্যেই কোনো সরকার গঠন করেছে কি না!’ ইতিবাচক উত্তর পেয়ে তিনি ‘বাংলাদেশ সরকারের আবেদন অনুসারে বাংলাদেশের মুক্তিসংগ্রামকে সম্ভাব্য সকল প্রকার সহযোগিতা প্রদানের প্রতিশ্রুতি জ্ঞাপন করেন।’ তাজউদ্দীন আহমদের এই দূরদর্শিতা তাঁর ‘প্রধানমন্ত্রিত্বের’ নয় মাস ধরেই কার্যকর ছিল। আরেকটি উদাহরণ দিলে সেটি আরও পরিষ্কারভাবে বোঝা যাবে, ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে প্রথম সাক্ষাতেই তিনি বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য অনুরোধ করলেও এটিকে তিনি স্রেফ ‘দাবি’ হিসেবেই জিইয়ে রাখতে চেয়েছিলেন, কোনো চাপ বা তদবির করে একে ত্বরান্বিত করতে চাননি। কারণ, একদিকে বাংলাদেশকে কূটনৈতিক স্বীকৃতি দেওয়ার ব্যাপারে ভারতের বাস্তবসম্মত কিছু অসুবিধা ছিল; সেটি যেমন তিনি বুঝতে পেরেছিলেন, অন্যদিকে প্রতিরোধযুদ্ধ শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ভারতীয় স্বীকৃতি পেলে পাকিস্তান একে ‘ভারতীয় ষড়যন্ত্র’ বলে বিশ্বের কাছে প্রতিষ্ঠিত করার সুযোগ পেত এবং একে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ বলে চালিয়ে আন্তর্জাতিক হস্তক্ষেপে যুদ্ধবিরতি কার্যকর করার চেষ্টা করত, যা পরিশেষে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকে অঙ্কুরেই মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিত—সেটিও উপলব্ধি করতে পেরেছিলেন। তাজউদ্দীন আহমদ তাঁর রাজনৈতিক ও দার্শনিক প্রজ্ঞার কারণে বিষয়গুলো উপলব্ধি করতে পারলেও আওয়ামী লীগের অধিকাংশ নেতাই সেটি পারেননি। ফলে সরকার গঠনের পর থেকেই তাজউদ্দীন আহমদকে নানা রকম উপদলীয় ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করতে হয়। সেসবের বিস্তারিত বিবরণও আছে এই গ্রন্থে। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ভারত প্রথম থেকেই নানাভাবে সহায়তা করেছিল এবং এসব সহযোগিতা ছাড়া বাংলাদেশের পক্ষে এত দ্রুত জয়লাভ করা কঠিন হতো—এ কথা অনস্বীকার্য, কিন্তু এ-ও মনে রাখা দরকার যে ২৬ মার্চ থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত মুক্তিযোদ্ধারই পাকিস্তানিদের ব্যতিব্যস্ত রেখেছিলেন, নাস্তানাবুদ করে ছেড়েছিলেন, ওদের মনোবলকে নিয়ে এসেছিলেন শূন্যের কোঠায়। এটা না করতে পারলে সক্রিয় অংশগ্রহণের মাত্র ১২ দিনের মাথায় পাকিস্তানিদের পরাজিত করা ভারতীয়দের পক্ষে কোনোভাবেই সম্ভব হতো না। উল্লেখ্য, ভারতীয় স্থলবাহিনী বাংলাদেশে অভিযান শুরু করে ৪ ডিসেম্বর ১৯৭১ এবং আনুষ্ঠানিক কূটনৈতিক স্বীকৃতি দেয় ৬ ডিসেম্বর ১৯৭১। মুক্তিযোদ্ধাদের দুঃসাহসিক অভিযানে পাকিস্তানিরা যখন পলায়নপর এবং মানসিকভাবে পরাজিত, তখন ভারতীয় বাহিনীর অংশগ্রহণ তাদের এই পরাজয়কে কেবল ত্বরান্বিত ও অনিবার্য করে তুলেছিল। মূলধারা ’৭১ গ্রন্থে লেখক বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ঘটে যাওয়া মুক্তিযোদ্ধাদের এসব দুঃসাহসিক অভিযান ও এর ফলাফলের বিস্তারিত বিবরণ দেননি, তাঁর মনোযোগের কেন্দ্রে ছিল প্রবাসী সরকারের কর্মকাণ্ড ও আন্তর্জাতিক রাজনীতি। ফলে এই গ্রন্থটিও মুক্তিযুদ্ধের পূর্ণাঙ্গ ইতিহাস নয়। তবে একটি অজানা অধ্যায়ের উন্মোচন করে তিনি আমাদেরকে চির কৃতজ্ঞতাপাশে আবদ্ধ করেছেন।