Our User Product Reviews

অসাধারণ বই

ভালো

good

অসাধারণ ও সহজপাঠ্য। আজাদ স্যার চলে গেছেন, কিন্তু রেখে গেছেন এসব অমূল্য সৃষ্টিগুলি। এ জ্ঞানের, জ্ঞানচর্চার ধারাটি শত সহিংসতা, শত হুমকির মুখেও ফল্গুধারার মতো বহমান থাকবে।

প্রথমে বলতে চাই যে হুমায়ুন আজাদ স্যার এর মতো লেখক বাংলাদেশে দ্বিতীয় আর এক জন আছে কি না সন্দেহ! তিনি ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলার বিভাগের অধ্যাপক, অথচ তিনি যে মহাকাশ বিজ্ঞান ও জ্যোতিবিজ্ঞান নিয়ে এত সুন্দর বই লিখেছেন এইটেই অবাক করার মতো বিষয়। বাংলাদেশে মহাকাশ বিজ্ঞান ও জ্যোতির্বিজ্ঞান নিয়ে যারা গবেষনা করেন তারাও এমন ধরনের কোন বই লিখেছেন কি না জানা নেই। মহাকাশ বিজ্ঞান ও জ্যোতির্বিদ্যার অনেক জটিল বিষয় তিনি সহজ করে উপস্থাপন করেছেন, যা সাধারন পাঠকের কাছে হয়ে উঠেছে সুখপাঠ্য। হুমায়ুন আজাদ স্যার সত্যিই একজন বহুমাত্ত্রিক প্রতিভা ও মুক্ত চিন্তার মানুষ ছিলেন। তিনি একাধারে বাংলাভাষা তত্ত্ব, রাজনীতি, সাহিত্য সমালচোনা, অনুবাদ উপন্যাস, কিশোর সাহিত্য, প্রবন্ধ লিখেছেন সাবলীল ভাবে। তিনি চিন্তা চেতনায় ছিলেন মুক্ত ও স্বাধীন এবং সব সময় প্রথাবিরোধী। মুক্ত চিন্তার মানুষরাই চিরকাল এই পৃথীবিকে এগিয়ে নিয়েছেন। তিনি হয়তো আরো অনেক কিছু দিতে পারতেন আমাদের এই বাংলাদেশ কে। কিন্তু বাংলাদেশের দুর্ভাগ্য যে তার মতো প্রতিভাকে লালন করতে ব্যর্থ হয়েছে। যেমটি ইটালির মানুষরাও বুঝতে পারেনি গ্যালিলিও গ্যালিলির প্রতিভাকে। তিনিও সত্যিই পৃথীবি ও মহাবিশ্বকে এগিয়ে নিয়েছিলেন অমেকখানি। আজ গ্যালিলিও গ্যালিলির অনেক কথায় প্রমানিত হয়েছে গবেষনার মাধ্যমে। মহাবিশ্ব সম্বন্ধে এত তথ্য ,উপাত্ত ও বিশ্লেষন কজন সাধারন পাঠকের কাছে আছে ? এগুল জানতে হলে প্রয়োজন প্রচুর বই পুস্তক ও অনেক পড়াশোনা। এই বইতে তিনি স্টিফেন হকিংস ও তার বিগ ব্যাং তত্ত্ব কেও তুলে ধরেছেন। যা বর্তমান সময়ের জন্য ছিল খুবই প্রয়োজন। সারা পৃথীবির ভেতরে সবচেয়ে বড় মহাকাশ গবেষবনা প্রতিষ্টান নাসা মিলিয়ন বিলিয়ন ডলার খরচ করছে মহাকাশ গবেষনার পেছনে। এবং তারা স্টিফেন হকিংস ও তার বিগ ব্যাং তত্ত্ব কেও গুরুত্তসহকারে দেখছেন। মহা গর্জব ও কৃষ্ণ গহ্বর সহ আরও অনেক কিছুই সাধারন পাঠকের জন্যা তিনি ব্যখ্যা করেছেন সহজভাবে। আবারও অনেক ধন্যাবাদ জানাচ্ছি হুমায়ুন আজাদ ও আগামী প্রকাশনীকে।

অত্যন্ত সুখপাঠ্য একটি বই । বিজ্ঞান ও সাহিত্য মিশে বইতিকে করে তুলেছে সমৃদ্ধ । বইটির ভুমিকা এমনঃ দশ থেকে বিশ মিলিয়ন বছর আগে মহাগর্জনে সৃষ্টি হয়েছিলো মহাবিশ্ব; তারপর অনেক বিলিয়ন বছর কেটে যায়, সাড়ে চার বিলিয়ন বছর আগে সৃষ্টি হয় সৌরজগত, এবং আমাদের গ্রহ পৃথিবী, আমাদের চাঁদ, এবং আরো গ্রহ, আরো চাঁদ। কোনো বিধাতা সৃষ্টি করেনি বিস্বয়কর মহাবিশ্ব, সৌরজগত, আর পৃথিবী; অনন্ত ঘন এক বিন্দুর বিস্ফোরণে সৃষ্টি হয়েছিলো সব কিছু, আজো সৃষ্টি হয়ে চলছে। মহাবিশ্ব এক অনন্ত অসীম চিরসম্প্রসারণশীল এলাকা, আজো বেড়ে চলছে মহাবিশ্ব। এক সময় সবাই ভাবতো তারা আছে পৃথিবীর কেন্দ্রে, আর পৃথিবীকে ঘিরে ঘুরছে সূর্য, চাঁদ, তারারা। মানুষের ধর্মের বইগুলো এ-ধারণাকে পরিণত করেছিলো বদ্ধমূল বিশ্বাসে। তারপর অনেক শতক কেটে গেছে, আবিস্কৃত হয়েছে মহাবিশ্বের অজস্র সত্য, মানুষ এগিয়েছে সামনের দিকে; কিন্তু এখন আমরা আবার ফিরে চলছি পৌরাণিক জগতের দিকে। হুমায়ুন আজাদ "মহাবিশ্ব" লিখেছেন আজকের পৌরাণিক মানুষদের সামনে মহাবিশ্বকে পৌঁছে দেয়ার জন্যে; লিখেছেন বিস্তৃতভাবে। একজন কবি ঔপন্যাসিক সমালোচক প্রাবন্ধিকের ছোঁয়ায় কবিতার মতো হয়ে উঠেছে জ্যোতির্বিজ্ঞান, এর প্রতিটি স্তবক পরাণকে বাতিল ক'রে এগিয়েছে বিজ্ঞানমনস্ক সময়ের দিকে।