User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
Good one.
Was this review helpful to you?
or
আমার দখিন হাওয়ার বাসায় অনেক দিন ধরে একটা বই পড়ে আছে। লেখকের নাম শাকুর মজিদ। বইটির নাম - 'ক্লাস সেভেন ১৯৭৮’। বইটির ভুমিকা পড়লাম। মুক্তধারার চিত্তবাবুকে নিয়ে লেখা অংশটা পড়ে যথেষ্টই মজা পেলাম। নবীন কোন লেখকের লেখা পড়ার আমার কিছু নিয়ম আছে। প্রথম পড়ি লেখক নিজের সম্পর্কে কি লিখছেন। এই লেখাটা সাধারণত ফ্ল্যাপে থাকে। লেখক নিজেই অতি যত্নে লিখেন। তবে ভাব ধরেন যেন লেখা অন্য কেউ লিখেছে। একজন লেখক নিজের সম্পর্কে লিখেছিলেন-“তাঁর প্রতিটি রচনা কালজয়ী। তিনি টলস্টয় ঘারাণার লেখক।” শাকুর মজিদ নিজের সম্পর্কে লিখেছেন - আচ্ছা এই অংশ থাকুক। পাঠক পড়ে নেবেন। ফ্ল্যাপের লেখা পড়ার পর, আমি যাই উৎসর্গ পত্রে। তারপর ভূমিকায়। মূললেখা এক সিটিং এ প্রথম দশ পাতা পড়ি। যদি ভাল লেগে যায় তবেই পুরোটা পড়া হয়। শাকুরের বইয়ের পঞ্চম লাইনটি পড়ে আমি বুঝলাম লেখাটা ভাল হবে। পঞ্চম লাইনে লেখা - “অফিসে ইত্তেফাক পত্রিকা এলেই আমি শফিক স্যারকে জিজ্ঞেস করতাম, স্যার আমার রিজাল্ট বারইছেনি?” ’বারইছেনি’ খাঁটি সিলেটি শব্দ। সিলেটবাসীরা নিজেদের কথ্য ভাষা নিয়ে সামান্য সংকুচিত থাকেন। শাকুর সরাসরি এই ভাষা ব্যবহার করছে। তারচেয়েও বড় কথা, মূল গদ্যে হঠাৎ হঠাৎ সিলেটি ভাষা ঢুকিয়ে তিনি গদ্য ধারায় ঢেউ এর মত তৈরী করেছেন। এই কাজ তিনি ইচ্ছাকৃত ভাবে করেছেন না-কি অজানে- করেছেন তা আমি জানি না। যে ভাবেই থাকুন এতে তাঁর গদ্য স্বাদু হয়েছে। বাংলা ভাষার কিছু বড় লেখক এ ধরনের পরীক্ষা অতীতে করেছেন। চলতি ভাষার লেখা গদ্যে হঠাৎ হঠাৎ তৎসম শব্দ ঢুকিয়ে দিয়েছেন। যেমন - “তখন রাত্রি হয়েছে।” বইটিতে শাকুর তার কথা আন-রিক ভঙ্গিতে বলেছে। সে সহজিয়া ভঙ্গিতে তার স্বপ্ন এবং স্বপ্ন ভঙ্গের কথা, আনন্দ এবং বেদনার কথা লিখে গেছে। আমি তার চোখে পাবলিক স্কুলের ছবি দেখতে পেয়েছি। খেলার মাঠ, দুরের পাহাড়। অন্যকে নিজের দেখা ছবি গল্পের মাধ্যমে দেখানো সহজ কর্ম না। পাবলিক স্কুল নিয়ে বিদেশী কিছু পড়েছি। ছবি দেখেছি। বাংলা সাহিত্যে জরাসন্ধের একটা লেখা আছে - পাবলিক স্কুল ঠিক না, বরস্ট্যাল স্কুল। দুষ্টু এবং অপরাধী ছেলেদের জেলখানা টাইপ স্কুলের কাহিনী। শাকুর মজিদ সম্ভবত প্রথম ক্যাডেট কলেজের গল্প শুনাতে এসেছে। এবং ভাল শুনিয়েছে। কেউ যদি আমাকে সরাসরি জিজ্ঞেস করে, বইটির কোন দিকটা আমার সবচে ভাল লেগেছে - আমি বলব, লেখকের সাবলাইম হিউমার। গদ্য লেখক হিসেবে আমি জানি, গদ্যে প্রাণ প্রতিষ্ঠা করা কত কঠিন। এই কাজটি লেখক করতে পেরেছেন। গদ্যের কাঠিন ভূমিতে তাঁকে জানাচ্ছি সুস্বাগতম। পরম করুনাময়ের করুনা তার উপর বর্ষিত হোক এই তার প্রতি আমার শুভ কামনা।* *পুনশ্চ। একটা কথা বলতে ভূলে গেছি। শাকুর মজিদ ক্যাডেট কলেজ থেকে অসাধারণ রেজাল্ট করে ঝঝঈ এবং ঐঝঈ পাশ করেছিল। মূল বইতে এই সাফল্যের কথা সে একবারও উল্লেখ করেনি। এই সংযম সে দেখাতে পেরেছে এটাও অনেক বড় ব্যাপার।
Was this review helpful to you?
or
অসাধারণ বই।
Was this review helpful to you?
or
darun ekta boi. pore amar khub bhalo laglo. writer er school life er khub sundhor golpo.
Was this review helpful to you?
or
একুশে বইমেলা ২০১৩ থেকে একদিন শাকুর মজিদ এর "অষ্টভ্রমণ" বইটা কিনে আনি।বাসায় ফিরে বইয়ের ফ্লেপ উল্টে-পাল্টে দেখছিলাম।লেখকের অন্য বইয়ের তালিকায় দেখতে পেলাম তাঁর আত্মজৈবনিক একটি বই এর নাম "ক্লাস সেভেন ১৯৭৮"।নামটা আমার খুব পছন্দ হয়,তাছাড়া নামটা আমার কাছে কেমন যেন অদ্ভুত ঠেকে।আমি ভেবেছিলাম লেখক হয়তো ১৯৭৮ সালে সপ্তম শ্রেণীতে পড়ত,তিনি হয়তো সপ্তম শ্রেণী থেকে তার বর্তমান অবস্থান পর্যন্ত জীবনী লিখেছেন।সেই সাথে এটাও ভেবেছিলাম,তিনি হয়তো তার ছেলেবেলার কথা ভুলে গেছেন।তাই যেখান থেকে তার স্মৃতি কাজ করেছে সেখান থেকে লিখেছে বলেই হয়তো এমন নামকরণ।বইটা কিনার আগ্রহ হয়।এর পর মেলা থেকে লেখকের নতুন বের হওয়া দুইটা বই কিনি।কিন্তু এই বইটা আর কেনা হয়না।এরই মধ্যে লেখক আমাকে তাঁর অপর একটি নতুন বই উপহার দেয়।আমি সেটা সেদিন রাতেই পড়ে ফেলি।তারপর তাঁর আর একটা নতুন বই "যে ছিল এক মুগ্ধকর" পড়া শুরু করি।সেখানে আবার এই "ক্লাস সেভেন ১৯৭৮" এর প্রসঙ্গ চলে আসে।নন্দিত লেখক হুমায়ুন আহমেদ তাঁর এই বই পড়ে একটা রিভিও লিখে দিয়েছিলেন,যেটা পরবর্তী সংস্করণে যুক্ত করা হয়("যে ছিল এক মুগ্ধকর" এর এই অংশটুকু পড়ে আমার ভুলটা ভেঙ্গে যায় যে,এটা আসলে শুধু সপ্তম শ্রেণীর স্মৃতিচারন এবং সেটা শুধুই ক্যাডেট কলেজ নিয়ে)।আমি আবার বইটা কিনার জন্য আগ্রহবোধ করি ক্যাডেটদের লাইফ কেমন থাকে সেটা জানার জন্য।যথারীতি মেলায় গিয়ে অন্যপ্রকাশ স্টলে বইটা খুঁজি।কিন্তু আমার দুর্ভাগ্য যে হুমায়ূন আহমেদ এর বইয়ের ভীরে কেও আমাকে পাত্তা দেয়না।আমি মন খারাপ করে বাসায় চলে আসি।পরদিন আবার যাই,ভাগ্যক্রমে বইটাও কিনে ফেলি।বইটা এনে সেদিন আর পড়া শুরু করতে পারিনি।ঢাকার বাইরে চলে যাই।ঢাকায় ফিরে বইটা পরতে শুরু করি।বইয়ের ভুমিকা তে পাণ্ডুলিপি চুরির ঘটনাটা পড়ে আমার ভীষণ মন খারাপ হয়।মুক্তধারা যেহেতু ছাপতে চেয়েছিল তার মানে ওটা একটা অসাধারন লেখা হয়েছিল।মন খারাপ নিয়েই বইটা পড়তে শুরু করি।কি অসাধারন বাচনভঙ্গি।এই বইটা না পড়লে হয়তো কোনদিন জানতেই পারতাম না যে ক্যাডেট লাইফ কেমন হয়।বাপরে! কি শৃঙ্খলা।বইটা পড়তে পড়তে আমি এক অন্য জগতে চলে যাই।চোখের সামনে দেখতে পাই সেই ১৯৭৮ সাল(আমি তো দূরের কথা আমার মায়ের বয়সই তখন মাত্র ৮ বছর)। ফৌজদারহাট ক্যাডেট কলেজ,সেই শহিদুল্লাহ হাউস,পিটি-প্যারেড,প্রেপ টাইম,খাবার টেবিল,হারিয়ে যাওয়া ক্যাডেট দলিল,ক্যাডেট শামসুল,ক্যাডেট বশিরদের।ঝরে পড়া ক্যাডেট দের জন্য আমার খুব মায়া লাগে।মন্ত্রমুগ্ধের মত আমি বইটা পড়ে শেষ করে ফেলি।আমার এই ক্ষুদ্র জীবনে অনেক কিশোর উপন্যাস পড়েছি।সম্মান চতুর্থ বর্ষ ফাইনাল পরীক্ষা দিয়েও এখনও কিশোর উপন্যাস পড়ার লোভ সামলাতে পারিনা।লেখকের এই বইটা যদিও স্মৃতিচারণ মূলক তবুও আমার কাছে মনে হয়েছে আমার জীবনে পড়া শ্রেষ্ঠ কিশোর উপন্যাস এর একটি।তবে যে জিনিসটা আমাকে সবচেয়ে বেশী অভিভূত করেছে সেটা হল আর দশ-পাঁচ টা লেখকের মত শাকুর মজিদ তার বাহাদুরি কোথাও প্রকাশ করেননি।নিজে যা ছিলেন,যা ছিল তার দুর্বলতা তার সবটাই সে নির্দ্বিধায় বলতে পেরেছে।সত্য বলার সাহস সকলের থাকেনা,এ ক্ষেত্রে লেখক তার কঠিনতম পরীক্ষায় সফল হয়েছেন।অসাধারন তাঁর গল্প বলার ক্ষমতা।তাঁর বাচনভঙ্গিটাও চমৎকার।শাকুর ভাই এমন একটা বই লেখার জন্য অশেষ ধন্যবাদ।তবে সেই সাথে একটা অনুরোধ ১৯৭৯ সাল থেকে পরের ঘটনাবলী(যতদিন ফৌজদারহাট ক্যাডেট কলেজে ছিলেন) যদি স্মৃতিচারন করেন খুব খুশি হব।
Was this review helpful to you?
or
its a superv book