User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
Good
Was this review helpful to you?
or
বইটি সাধারণদের জন্য হলে সাইন্টিফিক নাম দিয়ে সূচীপত্র সিরিয়াল তৈরী করার বুদ্ধিটা আমার ভাল লাগেনি।
Was this review helpful to you?
or
ভেজষ উদ্ভিদের জন্য উপযোগী জলবায়ু রয়েছে দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে ভারত-বাংলাদেশ অঞ্চলে। তাই ভারতে আয়ুর্বেদ বা কবিরাজি শাস্ত্রের প্রসার ঘটে। কবিরাজিশাস্ত্র ভেষজ উদ্ভিদের গুণাগুণ ও ব্যবহারবিধিও আবিষ্কার করেছে। এই ভারতীয় উপমহাদেশে প্রায় আড়াই হাজার প্রজাতির ভেষজ উদ্ভিদ রয়েছে। বাংলাদেশেও প্রায় ৫৫০ প্রজাতির ভেষজ উদ্ভিদ আছে, যা থেকে ওষুধ প্রস্তুত করা হয়। লেখক নিশীথকুমার পাল বাংলাদেশের ৪৪৪ প্রজাতির উদ্ভিদের পরিচিতি, উপাদান ও ব্যবহার আলোচনা করেছেন ভেজজ উদ্ভিদের কথা নামের গ্রন্থে। এই গ্রন্থের একটি উপনাম আছে, ‘পরিচিতি, উপযোগিতা ও ব্যবহার’। কিন্তু ভেতরে তিনি বৈজ্ঞানিক নাম, বাংলা নাম, গোত্র, পরিচিতি, রাসায়নিক উপাদান, ধর্মাবলি ও ব্যবহার—এ বিষয়গুলো আলোচনা করেছেন। তাই বইয়ের উপনামে উপযোগিতা শব্দটি আরোপ অপ্রয়োজনীয়। এর বদলে উপাদান শব্দটি ব্যবহার করা যেত। নিশীথকুমার পাল খুবই সহজ ভাষায় বিজ্ঞানের বিষয়গুলো বুঝিয়ে বলতে চেয়েছেন। তাঁর প্রাথমিক উদ্দেশ্য ছাত্রছাত্রী হলেও, সাধারণ পাঠকও এতে উপকৃত হবে। মূল আলোচনার আগে তিনটি অধ্যায়ে ভেষজ উদ্ভিদের সংরক্ষণ, ঐতিহাসিক পটভূমিকা ও ভেষজ উদ্ভিদের রাসায়নিক গঠন নিয়ে আলোচনা করেছেন। সংরক্ষণের ব্যাপারে লেখকের সুপারিশ হলো, ‘স্বস্থানে সংরক্ষণের লক্ষ্যে প্রাকৃতিক বনাঞ্চলে প্রাকৃতিক পরিবেশে ভেষজ উদ্ভিদ জন্মাতে হবে। অন্য স্থানে সংরক্ষণের লক্ষ্যে বোটানিক্যাল গার্ডেন ও জিন ব্যাংকে হুমকিগ্রস্ত নির্বাচিত ভেষজ উদ্ভিদ জন্মানো যেতে পারে। তবে কিছু ভেষজ উদ্ভিদ আছে, যা প্রাকৃতিক পরিবেশেই ভালো জন্মে। তাই সেগুলোকে স্বস্থানেই জন্মাতে হবে।’ ভেষজ উদ্ভিদের ঐতিহাসিক পটভূমিকায় লেখক মিসরীয় জ্ঞানের কথা বলেছেন। হোমারের রচনা থেকে তিনি হেলেনের ভেষজ ওষুধ ব্যবহারের প্রসঙ্গ উত্থাপন করেছেন। খ্রিষ্টপূর্ব ১৫০০ অব্দে থিবসের এক সমাধিতে ওষুধের ব্যবস্থাপত্র লেখা পাওয়া গেছে। এগুলো ভেষজ ওষুধ এবং এ থেকে ১৫০টি উদ্ভিদের নাম পাওয়া গেছে। এই অধ্যায়ে লেখকের সন্ধানী মনের পরিচয় পাওয়া যায়। কিন্তু ঐতিহাসিক পটভূমিকা বলতে শুধু বিদেশি পটভূমিকার অবতারণা করছেন, দেশীয় কিংবা উপমহাদেশীয় কোনো উদ্যোগের কথা তিনি উল্লেখ করেননি। এটি এই অধ্যায়ের সীমাবদ্ধতা হিসেবে চিহ্নিত করা যায়। এর মাধ্যমে আমাদের ঐহিত্যবাহী আয়ুর্বেদীয় ও ইউনানি চিকিত্সাকে এড়িয়ে যওয়া হয়েছে। তৃতীয় অধ্যায়ে ভেষজ উদ্ভিদের রাসায়নিক গঠন নিয়ে বিজ্ঞানসম্মত আলোচনা করা হয়েছে, যা সাধারণ পাঠকের জন্য উপযোগী নয়। উদ্ভিদবিদ্যার শিক্ষার্থীর জন্যই এটি প্রযোজ্য। পাঠকের আগ্রহের মূল জায়গা হলো চতুর্থ অধ্যায়, যেখানে আলোচিত হয়েছে প্রতিটি উদ্ভিদের পরিচিতি, উপাদান ও ব্যবহার। বেশ কিছু উদ্ভিদের সঙ্গে সাদাকালো ছবিও জুড়ে দেওয়া হয়েছে। এটি বাড়তি আকর্ষণ। প্রতিটি উদ্ভিদের ছবি দেওয়া গেলে আরও ভালো হতো। এ ধরনের বই হাতে পড়লে শিবকালী ভট্টাচার্যের চিরঞ্জীব বনৌষধির কথা মনে পড়ে যায়। চেনা-অচেনা কত উদ্ভিদের সঙ্গে পরিচয় ঘটে যায়! তাদের মূল-কাণ্ড-পাতা-ফুল-ফলে উপকারিতার কথা জানা যায়। যেমন ধরুন—লাউ। আমরা এর পাতা, কাণ্ড এবং ফল খাবার হিসেবেই খেয়ে থাকি। কিন্তু এর আরও অনেক ভেষজ গুণের কথা জানি না। লেখক জানিয়েছেন—‘ফলের শাঁস শীতলকারক, মূত্রবর্ধক, বমি-উদ্রেককারী ও বিরেচক। পাতার ক্বাথের সঙ্গে চিনি মিশিয়ে খেলে জন্ডিস ভালো হয়। কলেরার চিকিত্সায় রান্না করা ফল ব্যবহার করা হয়। বীজ পুষ্টিকর ও মূত্রবর্ধক। বীজের তেল মাথাব্যথা দূর করে ও কচি কাণ্ডের উষ্ণরস কানের ব্যথা ভালো করে।’ (পৃ. ২১৩) এ রকম অনেক উপকারী তথ্য আছে এ বইয়ে। কিন্তু কথা হচ্ছে এর ভাষা নিয়ে। সহজ করে লিখলে বুঝতে সুবিধা হতো। ‘বিরেচক’ শব্দের অর্থ কজন বুঝবে? অন্তত ব্যবহার অংশের ভাষা তত্সম না হলেই ভালো হতো। লেখক বইটি লেখার জন্য ২২টি বাংলা বইয়ের নাম উল্লেখ করেছেন। কিন্তু এ বইটির সঙ্গে যে বইটির বেশি সাজুয্য—অবনীভূষণ ঠাকুরের ভেজষ উদ্ভিদের লোকজ ব্যবহার বইটি ব্যবহার করতে পারতেন। এতে এই বইয়ের মর্যাদা আরও বাড়ত বলেই মনে হয়।