User login

Sing In with your email

Email Address
Password
Forgot Password?

Not Account Yet? Create Your Free Account

Send

Recipients:
Message:

Share to your friends

Copy link:

    Our Price:

    Regular Price:

    Shipping:Tk. 50

    • Size:
    • Color:
    QTY:

    প্রিয় ,

    সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
    মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?

    Please Login to Continue!

    Our User Product Reviews

    Share your query and ideas with us!

    Customer Reviews

      By Shafique Hasan

      20 Apr 2012 12:17 AM

      Was this review helpful to you?

      or

      প্রাচীন বাংলায় সভ্যতার উল্লম্ফন ছিলো না, ছিলো না বিত্তের বাড়াবাড়িও; কিন্তু যে জিনিসটা খুব দরকারি সেটা ছিলোÑচিত্তসুখ। আবহমান কালের সংস্কৃতি-যাত্রা নানা লোকজ উপাদান চিত্তে সুখ জোগাতো মানুষের। গ্রামের সহজ-সরল মানুষের চাওয়াও বেশি ছিলো না। সুতরাং তারা সুখী; মোটা ভাত, মোটা কাপড় আর একটুখানি বিনোদন এই নিয়েই কাটতো জীবন। তাদের হাজারো রকমের লোকাচারের একটি হচ্ছে পুঁথি। গ্রামীণ পরিবেশে, রাতের আলো-আঁধারিতে বসতো পুঁথি পাঠের আসর। সেটা হয়তো কারো বাড়ির নিকানো উঠান বা খোলা কোনো জায়গায়। কেউ একজন সুর করে পড়ে যেতেন পুঁথি। পুঁথির যে আলাদা একটি ছন্দ আছে, সুরের ওঠানামার খেলা, ভাবগাম্ভীর্য এবং বিশেষ বর্ণনাভঙ্গিমাÑমূর্ত হয়ে উঠতো যেন। স্বপ্নীল আবেশে জড়িয়ে পড়তো শ্রোতারা। অন্যদিকে পুঁথিশিল্পী নিত্যনতুন জগৎ নির্মাণ করে যেতেন। লহমায় লহমায় উন্মোচিত হতো স্বপ্নীল, রঙবেরঙের অমরাবতী। তাঁর মুখে উচ্চারিত একের পর এক শব্দ, বাক্য; আর সে শব্দসুষমায় সবাই নিজের মনে সাজিয়ে নিতো ছবি। যার যার মতো করে। মানুষ তন্ময় হয়ে শুনতো সুর করা পুঁথি। সময়টা পূর্ণিমা তিথির হলে পুঁথি পাঠ এবং শোনায় নতুন মাত্রা পেতো। চাঁদের আলোয় চারদিকে তৈরি হতো অসাধারণ দৃশ্য; এ দৃশ্যের ভেতর দিয়েই এগিয়ে যেতো সুরমূর্ছনা। জোছনার গায়ে লাগতো মধুবর্ষী সুরের ছোঁয়া। সুর-ছন্দ-দ্যোতনায় মজে ণে ণে কত চেনা-অচেনা, পার্থিব-অপার্থিব জগৎ দেখা হয়ে যেতো শ্রোতাদের! আসরের মধ্যমণি হিসেবে পুঁথিশিল্পীর শাণিত কণ্ঠে সুরলহরী খেলা করে যেতো। সুর কখনো সপ্তমে, আবার প্রয়োজন অনুযায়ী মৃদু। সেই সুরের দোলায় ডুবতো-ভাসতো শ্রোতার মন। আনন্দ কিংবা বিষাদের আখ্যানে আমূল পরিবর্তন আসতো দেহমনে- তন্ত্রীতে তন্ত্রীতে। পরবর্তীকালে এটাই জায়গা করে নিতো মস্তিষ্কের কোষে কোষে; মননের গহীন অন্দরে। প্রাচীন বাংলায় এবং নিকট অতীতেও পুঁথির প্রচলন এবং জনপ্রিয়তা ছিলো প্রচুর। শ্রেণী-পেশা, দলমতনির্বিশেষে সবাই পছন্দ করতো পুঁথি। পুঁথি মানে ছন্দোবদ্ধ কাহিনী। কবিতার মতোই, আবার ঠিক কবিতাও না। গল্প-কাহিনীকে কথ্য ভাষায় না বলে পুঁথিতে রূপান্তর করে, সুরের মায়াজালের বেষ্টনীতে পরিবেশিত হতো। এতে কাহিনী আরো রসগ্রাহী হওয়ার পাশাপাশি গ্রহণযোগ্যতা-উপযোগিতাও বাড়তো অনেকখানি। কাহিনীও আবেশিত হতো বহুমাত্রিক ব্যঞ্জনায়। মানুষের চিন্তাকে উস্কে দিতে, ভাবনার জগতের প্রসার ঘটাতে পুঁথি অনন্য। মনের খোরাক, আনন্দ এবং শিার অন্যতম অনুষঙ্গও। পুঁথিকাহিনী, পুঁথিকাব্য আজ সম্পূর্ণ অতীত। কালের ধুলায় বিস্মৃত, বিলুপ্ত এক অধ্যায়। সময়ের আবর্তে হারিয়ে গেছে সোনালি সে দিনগুলো। হারিয়ে গেছে পুঁথিসাহিত্যের সোনালি আকর। এর নেপথ্যে রয়েছে তথাকথিত আধুনিকতার মরণকামড়। অতীত বিমুখতা এবং উন্নাসিকতা। অনেক েেত্রই আধুনিকতা দুমড়েমুচড়ে দিচ্ছে অতীত-ঐতিহ্যকে, সুকুমার বৃত্তি এবং সুচেতনাকে। আমরা ভুলে গেছি, আধুনিকতা মানে অতীতকে অবহেলা নয়; বরং অতীত ঐতিহ্যকে সহযোগী হিসেবে নিয়ে পথচলার নামই আধুনিকতা। কয়েক শতাব্দী আগে, যখন আধুনিকতা এতো ভয়ানকভাবে রাজ্যপাট খুলে বসেনি- সারা বাংলাজুড়ে প্রচলন ছিলো পুঁথির। পুঁথিপাঠ, পুঁথিচর্চা। মূলত প্রান্তিক মানুষরাই ছিলো পুঁথি অনুরাগী। যাদের পড়াশোনা এবং ভাবনার দৌড় নিতান্তই কম। তাই বলে অন্যরা যে এটাকে অবহেলা করতেনÑতা নয়। পুঁথি ছিলো সর্বজনীন। গল্প শোনার যে চিরন্তন আকুতি, পুঁথিসাহিত্যের অনুপম কাহিনী-আখ্যানগুলো তার অনেকটাই মেটাতো। পুঁথিতে রচিত হতো নানা লোককাহিনী, মিথ কিংবা নিছক কল্পকথা। পুঁথির ইতিহাস দীর্ঘ সময়ের। তবে আনুমানিক ষোড়শ শতাব্দীর দিকে সিলেট অঞ্চলে উদ্ভূত হয়েছে নতুন ধরনের এক পুঁথি; পুঁথি বলতে যা বোঝায় তার সাথে এর কোনো বিরোধ বা বড় কোনো পার্থক্য নেই। শুধু বর্ণমালাটা ভিন্ন। এ বর্ণমালার নাম নাগরী। আঠারো-উনিশ শতকে সিলেট অঞ্চলকে কেন্দ্র করে নাগরী লিপি ব্যাপকভাবে বিকাশ লাভ করে। নাগরী লিপিতে রচিত হয়েছে অসংখ্য পুঁথি। পুঁথি লেখকদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য শাহনূর শাহ, শীতালং শাহ, আরকুম শাহ, ইরফান আলী, নাছিম আলী, দৈখুরা, ভেলা শাহ, শেখ ভানু, হাজী ইয়াছিন, ওয়াহেদ আলী, মুহম্মদ খলিল, শাহ আছদ আলী, আবদুল কাদির শাহ, মুন্সী সাদেক আলী, মুন্সী আব্দুল করিম, মুন্সী ইরফান আলী, সৈয়দ শাহনূর, ছৈয়দুর রহমান, শাহ আরমান আলী, শাহ আবদুল ওয়াহাব চৌধুরী, দীন ভবানন্দ প্রমুখ। অনুসন্ধান এবং পরিচর্যার অভাবে প্রচুর সংখ্যক রচয়িতার নাম থেকে গেছে অজ্ঞাত। অনেকেই জানেন না, নাগরী কোনো ভাষা নয়Ñলিপি মাত্র। ভাষা বাংলাই, বাংলাটাই নাগরী লিপিতে লেখা হতো। একই দেশে দুটি লিপি- বাংলাদেশিদের জন্য নিঃসন্দেহে গৌরবের। পৃথিবীর আর মাত্র একটি দেশেরই রয়েছে গর্ব করার মতো এই বিরল রেকর্ড। সিলেট অঞ্চলে নাগরীলিপিতে রচিত পুঁথিকে ধর্মীয় গ্রন্থের মতোই সম্মানের চোখে দেখা হতো। প্রায় প্রতিটি ঘরে ঘরে পবিত্র গ্রন্থের মতো স্থান পেতো এটি। এভাবেই পারিবারিকভাবে নাগরী পুঁথিকে লালন করার প্রচেষ্টা ছিলো। অবশ্য শুধু সিলেট নয়, এ সাহিত্য ব্যাপ্তি লাভ করেছিলো আসাম, কাছাড়, শিলচর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, করিমগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ, নেত্রকোনা, ময়মনসিংহ এলাকায়ও। শুধু মুসলমানদের মধ্যেই প্রচলিত- এ পুঁথির সাথে জড়িত ছিলো মুসলমানদের ধর্মীয় অনুভূতি। নাগরী লিপি ও সাহিত্যের ইতিহাস থেকে জানা যায়, আবরী, কাইথি, বাংলা ও দেব নাগরী লিপির সংমিশ্রণে চতুর্দশ শতকে এ লিপির উদ্ভব ঘটে। আরবি ও ফারসি ভাষার সঙ্গে সিলেটের স্থানীয় ভাষার সংমিশ্রণে যে মুসলমানি বাংলা প্রচলন হয় মূলত তার বাহক হিসেবে সিলেটি নাগরী ব্যবহৃত হতো। সিলেটের তৎকালীন মুসলমান লেখকরা বাংলার পরিবর্তে এই লিপিতেই ধর্মীয় বিষয়গুলির চর্চায় স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করতেন। সিলেটের তৎকালীন মুসলমান লেখকরা এ ভাষাতেই ধর্মীয় বিষয়সমূহ চর্চায় স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করতেন। এছাড়া হযরত শাহজালাল (রা.) এবং অন্যরা ধর্মমত লিপিবদ্ধ করতেন নাগরী লিপিতেই। ধর্মীয় পালনীয় বিষয় ছাড়াও ধর্মনেতাদের জীবনীও রচিত হয়েছে এ লিপিতে। মাত্র আড়াইদিনে এ লিপি শেখা যায় বলে জনশ্র“তি আছে। কেউ কেউ এ সাহিত্যের গায়ে ‘ইসলামি সাহিত্য’ রং চড়ানোর চেষ্টা করলেও তা মোটেই ঠিক নয়। হিন্দুরা এ লিপি ব্যবহার করতো না এবং জানতোও না। তাই বলে এটাকে মুসলমানদের নিজস্ব বিষয় হিসেবে আখ্যায়িত করা সত্যের অপলাপই। লিপিটির ব্যাপ্তি ছিলো ৬০০ বছরের মতো। বাংলা লিপির বিকল্প এবং সহজ লিপি হিসেবে খুব সহজেই জায়গা করে নিয়েছে গণমানুষের প্রাত্যহিকতায়। সংযুক্ত বর্ণের জটিলতামুক্ত এ লিপির বর্ণমালা ৩২টি। নাগরী লিপিতে রচিত পুঁথিসাহিত্যে যাপিতজীবনের নানা অনুষঙ্গ, লোকাচার, প্রান্তিক মানুষের হাসিকান্না ইত্যাদি বিধৃত হতো আটপৌরে ভাষায়। অনেক সময় এসব বিষয় ছাড়িয়ে মানবিক প্রেমোপাখ্যান, গাথা জায়গা করে নিতো। নাগরী লিপি ও সাহিত্যের চর্চা বেশকিছু জায়গায় প্রচলিত থাকলেও সিলেটই হয়ে উঠছিলো এর ‘রাজধানী’। নাগরী লিপির ক্রমবিকাশের সাথে সাথে এর ছাপাখানাও স্থাপিত হয়। যেখানে আলাদাভাবে নাগরী লিপিতে মুদ্রণের কাজ সংঘটিত হতো। এ থেকেই অনুমেয়, তৎকালে এ অঞ্চলে কতটা প্রভাব বিস্তার করেছিলো। কিন্তু একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধ সংঘটনকালে ছাপাখানাটি বিধ্বস্ত হয়। তারপর আর পুনরুদ্ধারের চেষ্টা করা হয়নি। কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান তো নয়ই, সরকারগুলোও ছিলো নিষ্ক্রিয়। শুধু ছাপাখানাই নয়, বাংলাদেশের গর্ব এ ঐতিহ্যিক সম্পদ নাগরী লিপি ও সাহিত্যকে রার, প্রয়োজনীয় পৃষ্ঠপোষকতা দিতেও এগিয়ে আসেননি কেউ। এসবের ভিতর দিয়েই গুটিকয়েক মানুষ ঠিকই নাগরীচর্চা করে যাচ্ছেন। যেমন বাংলাদেশ সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও প্রখ্যাত কবি মোহাম্মদ সাদিকের গবেষণা অভিসন্দর্ভের বিষয় ছিলো- নাগরী। তাঁর আগে-পরে আরো কেউ কেউ এ বিষয়ে গবেষণা করেছেন। করে যাচ্ছেনও। এছাড়াও সাম্প্রতিককালে বেশ কয়েকজন নাগরী গবেষক ও লেখকের দেখা মিলেছে। কিন্তু এ সংখ্যা মোটেই পর্যাপ্ত নয়। বিলুপ্তপ্রায় এ ঐতিহ্যকে টিকিয়ে রাখার জন্য তো নয়ই। একই চরম আশা এবং প্রাপ্তির কথা হচ্ছে, প্রতিষ্ঠান যেখানে ব্যর্থ হয়েছে, সরকারও যেখানে বিষয়টির গুরুত্ব অনুধাবন করতে ব্যর্থ সে মুহূর্তে এগিয়ে এসেছেন একজন ব্যক্তি। ইতিহাস-ঐতিহ্য ও ভাষাপ্রেমিক মানুষ। নাগরী লিপি ও সাহিত্যের প্রকৃত মর্ম উপলব্ধি করতে পেরে সে অনুযায়ী পদপে নিতে প্রয়াসী হয়েছেন একজন মোস্তফা সেলিম। তাঁর একক প্রচেষ্টা এদেশের অনেক মানুষ জানছে-চিনছে নাগরীকে। অবশ্য সেটা ব্যাপকভাবে গণমানুষের কাছে ছড়িয়ে দেয়া যাচ্ছে না। মোস্তফা সেলিমের এ উদ্যোগের পিছনে শুধু ঐতিহ্যপ্রেমই নয়, অঞ্চলপ্রেমও কাজ করেছে। একজন সিলেটি হিসেবে তাঁর চাওয়া, সিলেটের স্বর্ণালি-বর্ণালি সংস্কৃতি-ঐতিহ্যকে বর্তমান এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের সিলেটিদের কাছে তো বটেই সারাদেশে তুলে ধরা। এ লক্ষে ২০০৯ সালে প্রকাশ করেন নাগরী সাহিত্যের সবচেয়ে জনপ্রিয় পুঁথি কেতাব হালতুননবী। মোস্তফা সেলিম পেশায় প্রকাশক; বাংলাদেশের খ্যাতনামা প্রকাশনা সংস্থা উৎস প্রকাশন’র প্রধান নির্বাহী। পাশাপাশি সম্পাদনা করছেন পর্যটনবিষয়ক জনপ্রিয় মাসিক পত্রিকা ভ্রমণচিত্র। প্রকাশক এবং সম্পাদক পদের সাথে যুক্ত হয়েছে অতীতে তাঁর শিকতা এবং তৃণমূল পর্যায়ে সাংবাদিকতা করার অভিজ্ঞতা। সব মিলিয়ে অন্য যে কোনো কারোর চেয়ে তিনিই নাগরীকে নিয়ে তুলনামূলক বেশি, সহজভাবে কাজ করার উপযুক্ত। অবশ্য সহজ পথ সবসময় ‘সহজ’ থাকে না। এ সহজকে ছুঁতে পাড়ি দিতে হয় চড়াই-উৎরাই, নানা বন্ধুর পথ। একজন স্বপ্নবান, সংস্কৃতি অন্তঃপ্রাণ ব্যক্তি মোস্তফা সেলিম নাগরীসাহিত্যকে গণমানুষের সাথে পরিচয় এবং এর মর্মার্থ উপলব্ধি করানোর যে ব্রত নিয়ে অন্যরকম যুদ্ধে নেমেছেন সেটা এখনো চলমান। এ-যাবত প্রকাশ করেছেন ১৫টি নাগরীবিষয়ক বই। প্রকাশের অপোয় রয়েছে কমপে আরো ৩৫টি। প্রকাশিত বইগুলো হচ্ছেÑকেতাব হালতুননবী, চন্দরমুখি, কড়িনামা, মহব্বত নামা, শুনাভানের পুঁথি, ছয়ফুল বেদাত, শাত কইনার বাখান, হরিণ নামা, হাশর মিছিল, দেশ চরিত, নূর পরিচয়, ভেদ চরিত, ছদছি মছলা, ভেদ কায়া, হরিবংশ। বলার অপো রাখে না, বাংলাদেশের প্রকাশনা কুটির শিল্পের পর্যায়ে নেই। দিন-দিনই এর আনুষঙ্গিক ব্যয় বেড়েই চলেছে। এ অবস্থায় মূলধারার কোনো প্রকাশকের পক্ষে টিকে থাকাটাই কঠিন। জনপ্রিয় লেখকদের বই করে, পাঠক রুচির কাছে সমর্পিত হয়ে একজন প্রকাশক বৈষয়িকভাবে লাভবান হতে পারেন। সেই সাথে পাঠককেও উপহার দিতে পারেন ‘তৃপ্তি’র ঢেকুর। কিন্তু সত্যিকার সাহিত্যকে, তথাকথিত অজনপ্রিয় লেখককে পাঠকের সামনে নিয়ে আসাটা খুবই কঠিন। বাংলাদেশের বাস্তবতায় পাঠকরা আজ দিকভ্রান্ত। কোনটা যে ভালো বই, আর কোন বইটা পড়া উচিৎ- এ সহজ সিদ্ধান্তে আসতে পারেন না সিংহভাগ পাঠক। ফলশ্র“তিতে তারা ছোটে সস্তা, চটকদার বিষয়-সম্বলিত বইয়ের পেছনে। এতে করে তিগ্রস্ত হয় মূলধারার বই এবং সত্যিকারের প্রকাশক। পরোভাবে পাঠক নিজেও তিগ্রস্ত হন, সামষ্টিকভাবে বাংলা সাহিত্য। সাহিত্যভাণ্ডারের উজ্জ্বল মণিমুক্তাগুলো থেকে যাচ্ছে অগোচরে-অবহেলায়। চতুর্দিকে যখন হীরা ফেলে কাচ নিয়ে মাতামাতির মহোৎসব তখন এমনটাই তো খুব স্বাভাবিক! বলার অপো রাখে না, নাগরীসাহিত্যের বই প্রকাশ করে উৎস প্রকাশন ব্যবসায়িকভাবে লাভ করা দূরে থাক, বিনিয়োগটুকুও তুলে আনতে পারে না। কিন্তু তারপরও শেকড়-সন্ধানী অভিযাত্রী প্রকাশক পিছু হটেন না, বরং আরো সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় সঞ্চয় করেন। ল্যটাকে আরো শক্ত ভিত্তির ওপর স্থাপন করার প্রস্তুতি নেন। এ দুঃসাহসিক কাজে কিছু সহমর্মী ইতোমধ্যে জুটেছে। কিন্তু তাতেও খুব একটি সুবিধা হয়নি। যে কাজ করার কথা কোনো প্রতিষ্ঠান বা রাষ্ট্রের, সে কাজ যদি কোনো ব্যক্তি একাই করতে যান- পদে পদে তাঁর হোঁচট খাওয়ার সম্ভাবনা থাকে, বলাই বাহুল্য। ছয়শ বছরের পুরোনো, কালের করাল গহ্বর থেকে এ সাহিত্য তুলে আনার েেত্র সবচেয়ে সক্রিয় সহচর হিসেবে কাজ করছেন প্রকৌশলী আব্দুল মান্নান। তিনি প্রকাশিত সব বইয়েরই লিপ্যন্তর করেছেন। এছাড়াও একক প্রচেষ্টায় তৈরি করেছেন নাগরী ফন্ট। বইয়ের পৃষ্ঠাবিন্যাসেও রয়েছে দারুণ কুশলতার ছাপ। দুই কলাম বিশিষ্ট পৃষ্ঠায় পাশাপাশি স্থান পাচ্ছে প্রথমে নাগরী লিপি, তারপর বাংলা। অর্থাৎ পাঠক একই সাথে মূল লিপির সাথে পাচ্ছেন অনুবাদটাও। নাগরীকে গণমানুষের কাছাকাছি নিয়ে আসার অভিপ্রায়ে ইতোমধ্যে উৎস আয়োজন করেছে একাধিক সভা, সেমিনার। বাংলা একাডেমী আয়োজিত একুশে বইমেলায় উৎস প্রকাশনের ডিজিটাল ব্যানারে বাংলার পাশাপাশি স্থান পায় নাগরী হরফে লেখাও। কর্ম-ধারাবাহিকতায় একটি ডকুমেন্টারি নির্মাণের প্রস্তুতিও চলছে। খুব সহসা প্রকাশিত হবে মোস্তফা সেলিম সম্পাদিত নাগরীবিষয়ক বই সিলেটি নাগরী সাহিত্যের উৎস সন্ধান। এ-বইয়ে বিদগ্ধ লেখকরা নানা দৃষ্টিকোণ থেকে মূল্যায়ন করেছেন নাগরীসাহিত্যকে। দেশে-বিদেশে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছেন নাগরীসাহিত্যের বেশকিছু গুণগ্রাহীÑপাঠক-ভক্ত। এঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য শিকাগো (যুক্তরাজ্য) বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের সহযোগী অধ্যাপক মি. থিবো দুবের। থিবো দুবের গবেষণা করছেন মধ্যযুগের বাংলা সাহিত্য নিয়ে। তাঁর গবেষণার বড় একটি অংশজুড়ে রয়েছে নাগরী। এ সাহিত্যের হদিস খুঁজতে তাঁর পা পড়েছে বাংলাদেশে, অতঃপর উৎস প্রকাশনের কার্যালয়েও হাজির হয়েছেন তিনি। নাগরীসাহিত্যের পুনরুদ্ধারের উদ্যোগকে সাধুবাদ জানান তিনি। নিজেও বিভিন্ন দুর্লভ পাণ্ডুলিপি দিয়ে প্রয়োজনীয় সহযোগিতার আশ্বাস দেন। নাগরীসাহিত্য আজ দেশের সীমারেখা ডিঙিয়ে বহির্বিশ্বেও জায়গা করে নিচ্ছে। এসব নিশ্চয়ই একজন মোস্তফা সেলিমের বড় অর্জন। এরকম আরো কিছু অনুরাগী, বোদ্ধাজনের জন্য হলেও ‘একক সংগ্রাম’টা চালিয়ে নেয়া যায়। মনোবল অটুট থাকে। নিরন্তর শেকড়-সন্ধানী প্রকাশনা সংস্থা উৎস প্রকাশন, একজন পথ বিনির্মাণকারী সূত্রধর মোস্তফা সেলিম- যৌথ যাত্রার এখানেই শেষ নয়। শুরু মাত্র। একদিন রূপকথা, ঠাকুরমার ঝুলি বা অন্য যে কোনো গল্পবইয়ের মতো এদেশের মানুষ, বিশেষ করে নতুন প্রজন্মের ছেলেমেয়েদের হাতে উঠে আসবে নাগরীসাহিত্যের বই। সবাই ঐতিহ্য সম্পর্কে সচেতন হবে। নিজেদের অতীত-বৈভব আবিষ্কার করে বিস্ময়ে বিমূঢ় বা পুলক বোধ করবে...। বাংলা সাহিত্যের মূলধারার প্রতিনিধিত্বকারী হিসেবে জায়গা করে নেবে নাগরী। এমন স্বপ্ন মননের গভীরে ধারণ করে সম্মুখপানে এগিয়ে চলেছেন একজন মোস্তফা সেলিম। তাঁর যাত্রা বর্তমান এবং ভবিষ্যৎমুখী হলেও চিন্তাভাবনা, স্বপ্ন-আদর্শে অনেকটাই অতীতমুখী। যে অতীত নিরন্তর ভবিষ্যতের দিকে ধাবিত হওয়ার প্রেরণা জোগায়!

    •  

    Recently Viewed


    Great offers, Direct to your inbox and stay one step ahead.
    • You can pay using


    JOIN US

    icon Download App

    Rokomari.com is now one of the leading e-commerce organizations in Bangladesh. It is indeed the biggest online bookshop or bookstore in Bangladesh that helps you save time and money. You can buy books online with a few clicks or a convenient phone call. With breathtaking discounts and offers you can buy anything from Bangla Upannash or English story books to academic, research or competitive exam books. Superfast cash on delivery service brings the products at your doorstep. Our customer support, return and replacement policies will surely add extra confidence in your online shopping experience. Happy Shopping with Rokomari.com!