User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
রকমারি রিভিউ প্রতিযোগ মে বই:আউরা লেখক: :কার্লোস ফুয়েন্তেস প্রকাশক:প্রথমা প্রকাশন বইয়ের ধরন:রোমান্টিক উপন্যাস আমরা যেটাকে বলছি জাদুবাস্তবতা, লাতিন আমেরিকার প্রেক্ষাপটে সেটাই বাস্তব। তাদের বাস্তবের দুনিয়া এ রকমই। সারা বিশ্বের সাহিত্যাঙ্গন দাপিয়ে বেড়ানো লাতিন আমেরিকার সাহিত্যের অন্যতম প্রধান বৈশিষ্ট্যই এটি। বাস্তবের আবরণে পুরো ঘটনার ব্যাখ্যা সম্ভব হয় না বলেই সাহিত্যিকেরা আশ্রয় নেন জাদুবাস্তবতার। কার্লোস ফুয়েন্তেস খুব কম অনূদিত হয়েছেন বাংলায়। ১৯৬১ সালের দিকে তিনি রচনা করেন আউরা নামে স্বল্পায়তনের একটি উপন্যাস। এর প্রধান চরিত্র মাসিক ৯০০ পেসো বেতনের প্রাইভেট স্কুলের শিক্ষকফেলিপে মনতেরো হঠাৎ করেই সন্ধান পান আকর্ষণীয় এক চাকরির, যার বেতন চার হাজার পেসো। এক রেস্তোরাঁয় বসে তিনি খবরের কাগজে দেখতে পান বিজ্ঞাপনটি। ইতিহাসে উচ্চতর ডিগ্রিধারী মনতেরোর মনে হয়, এ চাকরিই তিনি খুঁজছেন এত দিন ধরে। বিজ্ঞাপনটিতে কোনো ফোন নম্বর দেওয়া নেই, শুধু একটি ঠিকানা আছে সেখানে, যার অর্থ হলো প্রার্থীকে সশরীরে উপস্থিত হতে হবে। যথাসম্ভব দ্রুত ঠিকানাটায় পৌঁছে যান ফেলিপে মনতেরো। আলো-আঁধারির এক রহস্যময় বাড়ি সেটা, যার কোনো দরজাতেই খিল লাগানো নেই, বাইরে থেকে সামান্য ধাক্কায় একেরপর এক খুলে যায় সেসব দরজা। ১০৯ বছরের বৃদ্ধা কনসুয়েলা তাঁর স্বামী জেনারেলইয়োরেন্তের স্মৃতিকথা সম্পাদনার কাজে নিয়োগ দেন ফেলিপে মনতেরোকে। এ বাড়িতে থাকতে এসে মনতেরো আরেকটি মেয়ের উপস্থিতি টের পান। সে আউরা, বৃদ্ধার ভাগনি, সমুদ্রের মতো সবুজ চোখের এক অসম্ভব সুন্দরী তরুণী। মনতেরোর মনে হয়, আউরাকে কোনো অজানা জাদুবলে আটকে রেখেছেন এই নিঃসঙ্গ বৃদ্ধা। পাশাপাশি তার প্রতি এক উদগ্র কামনা অনুভব করেন মনতেরো। যেকোনো ভাবে তাকে বাড়ির বাইরে নিয়ে যাওয়ার প্রতিজ্ঞা করেন মনে মনে। বাড়ির অস্বাভাবিক পরিবেশে মনতেরোর স্বপ্ন আর বাস্তবতা একাকার হয়ে যায়। জেনারেলের স্মৃতি পড়তে গিয়ে তিনি টের পান, বন্ধ্যা কনসুয়েলা সন্তান ও চিরস্থায়ী যৌবনের স্বপ্নে বিভোর। একপর্যায়ে আউরার সঙ্গে যৌন সম্পর্ক হয় ফেলিপে মনতেরোর। আউরাকে নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করেন তিনি। দ্বিতীয়বার মিলনকালে মনতেরো টের পান, সবুজ চোখের আউরা ক্রমে বদলে গিয়ে বৃদ্ধা কনসুয়েলার রূপ ধারণ করছে। প্রবল এক ঘোরের ভেতর তাঁর নিজেকে মনে হয় বৃদ্ধার প্রেমিক অথবা সেই জেনারেল,যার স্মৃতিকথা সম্পাদনার কাজটাই তিনি করছেন। উন্যাসটি আপনার মনে এক অদ্ভূত এক ধরনের অনুভূতির সৃষ্টি করবে।সেটা কোনো দুঃখের বা সুখের অনুভূতি নয়,অনুভূতিটা হবে একদম অন্যরকম যা বলে বোঝানো অসম্ভব।উপন্যাসটির রোমান্টিক রস আস্বাদন করতে পুরো উপন্যাসটি পড়তে হবে আপনাকে।
Was this review helpful to you?
or
আমরা যেটাকে বলছি জাদুবাস্তবতা, লাতিন আমেরিকার প্রেক্ষাপটে সেটাই বাস্তব। তাদের বাস্তবের দুনিয়া এ রকমই। সারা বিশ্বের সাহিত্যাঙ্গন দাপিয়ে বেড়ানো লাতিন আমেরিকার সাহিত্যের অন্যতম প্রধান বৈশিষ্ট্যই এটি। বাস্তবের আবরণে পুরো ঘটনার ব্যাখ্যা সম্ভব হয় না বলেই সাহিত্যিকেরা আশ্রয় নেন জাদুবাস্তবতার। এর মাধ্যমেই তাঁরা বয়ান করতে চান তাঁদের স্বপ্ন ও বাস্তবের জগৎ। বিভ্রম ও বাস্তবতার অপূর্ব সেতু গড়ে তোলেন লাতিন আমেরিকার সাহিত্যিকেরা। হুয়ান রুলফো, হুলিও কার্তোসার, গ্যাব্রিয়েল গার্সিয়া মার্কেস, কার্লোস ফুয়েন্তেস সমগ্র বিশ্বের সামনে সাহিত্যের এই জগৎ খুলে দেন। এ জগতে থাকে নিত্যনতুন চমক, বিস্ময়ের ঘোর এবং প্রবহমান সময়ের বাইরে গিয়ে দেখা পৃথিবীর নানা রকম কারসাজি। মানুষের স্বপ্ন তার বাস্তবতার বাইরে নয়। স্বপ্ন কখনো কখনো বাস্তবের চেয়ে আরও অধিক বাস্তব হয়ে ধরা দেয়। তবে লাতিন আমেরিকার সাহিত্যিকেরা বাস্তবের ভেতরে স্বপ্ন ও প্রতিবাস্তবের এমন এক আবহ উপস্থিত করেন, যাকে আর মায়া বলে উড়িয়ে দেওয়া যায় না। স্রেফ কল্পনা বলে তাকে উপেক্ষা করা সাধ্যাতীত। এক-একটি জানালা খুলে একেক ধরনের ভ্রমের ভেতরে পাঠকের প্রবেশকে অবশ্যম্ভাবী করে তোলেন তাঁরা। কার্লোস ফুয়েন্তেস তেমনই একজন শক্তিমান সাহিত্যিক, যিনি পাঠককে তাঁর নির্মিত অলৌকিক দুনিয়া থেকে ঘুরে আসতে বাধ্য করেন। স্প্যানিশভাষী লেখকদের মধ্যে শীর্ষস্থানীয় এই লেখকের জন্ম ১১ নভেম্বর ১৯২৮, পানামা সিটিতে। লাতিন আমেরিকার সাম্প্রতিকতম সাহিত্যিক বৈশিষ্ট্যের প্রতিনিধিত্ব করে তাঁর সাহিত্যকর্মগুলো। বেশ কিছু দিন ধরেই সম্ভাব্য নোবেল বিজয়ী সাহিত্যিকদের মধ্যে তাঁর নাম উচ্চারিত হচ্ছে। কার্লোস ফুয়েন্তেস খুব কম অনূদিত হয়েছেন বাংলায়। বাংলা ভাষাভাষী পাঠক তাঁর নামের সঙ্গে পরিচিত হলেও সাহিত্যকর্মের সঙ্গে সেভাবে পরিচিত নন। ১৯৬১ সালের দিকে তিনি রচনা করেন আউরা নামে স্বল্পায়তনের একটি উপন্যাস। এর প্রধান চরিত্র মাসিক ৯০০ পেসো বেতনের প্রাইভেট স্কুলের শিক্ষক ফেলিপে মনতেরো হঠাৎ করেই সন্ধান পান আকর্ষণীয় এক চাকরির, যার বেতন চার হাজার পেসো। এক রেস্তোরাঁয় বসে তিনি খবরের কাগজে দেখতে পান বিজ্ঞাপনটি। ইতিহাসে উচ্চতর ডিগ্রিধারী মনতেরোর মনে হয়, এ চাকরিই তিনি খুঁজছেন এত দিন ধরে। বিজ্ঞাপনটিতে কোনো ফোন নম্বর দেওয়া নেই, শুধু একটি ঠিকানা আছে সেখানে, যার অর্থ হলো প্রার্থীকে সশরীরে উপস্থিত হতে হবে। যথাসম্ভব দ্রুত ঠিকানাটায় পৌঁছে যান ফেলিপে মনতেরো। আলো-আঁধারির এক রহস্যময় বাড়ি সেটা, যার কোনো দরজাতেই খিল লাগানো নেই, বাইরে থেকে সামান্য ধাক্কায় একের পর এক খুলে যায় সেসব দরজা। ১০৯ বছরের বৃদ্ধা কনসুয়েলা তাঁর স্বামী জেনারেল ইয়োরেন্তের স্মৃতিকথা সম্পাদনার কাজে নিয়োগ দেন ফেলিপে মনতেরোকে। এ বাড়িতে থাকতে এসে মনতেরো আরেকটি মেয়ের উপস্থিতি টের পান। সে আউরা, বৃদ্ধার ভাগনি, সমুদ্রের মতো সবুজ চোখের এক অসম্ভব সুন্দরী তরুণী। মনতেরোর মনে হয়, আউরাকে কোনো অজানা জাদুবলে আটকে রেখেছেন এই নিঃসঙ্গ বৃদ্ধা। পাশাপাশি তার প্রতি এক উদগ্র কামনা অনুভব করেন মনতেরো। যেকোনোভাবে তাকে বাড়ির বাইরে নিয়ে যাওয়ার প্রতিজ্ঞা করেন মনে মনে। বাড়ির অস্বাভাবিক পরিবেশে মনতেরোর স্বপ্ন আর বাস্তবতা একাকার হয়ে যায়। জেনারেলের স্মৃতি পড়তে গিয়ে তিনি টের পান, বন্ধ্যা কনসুয়েলা সন্তান ও চিরস্থায়ী যৌবনের স্বপ্নে বিভোর। একপর্যায়ে আউরার সঙ্গে যৌন সম্পর্ক হয় ফেলিপে মনতেরোর। আউরাকে নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করেন তিনি। দ্বিতীয়বার মিলনকালে মনতেরো টের পান, সবুজ চোখের আউরা ক্রমে বদলে গিয়ে বৃদ্ধা কনসুয়েলার রূপ ধারণ করছে। প্রবল এক ঘোরের ভেতর তাঁর নিজেকে মনে হয় বৃদ্ধার প্রেমিক অথবা সেই জেনারেল, যার স্মৃতিকথা সম্পাদনার কাজটাই তিনি করছেন। আউরার শেষে উপন্যাসটি রচনার পটভূমি সম্পর্কে কার্লোস ফুয়েন্তেসের একটি লেখাও জুড়ে দেওয়া হয়েছে, যেটি এর পাঠ অনেকাংশে সহজ করে তোলে। দ্বিতীয় পুরুষে রচিত এ উপন্যাসের সাবলীল একটি ভাষান্তর আমাদের সামনে হাজির করেন অনুবাদক। বিশ্বসাহিত্যের, বিশেষ করে লাতিন আমেরিকার সাহিত্যের অনুরাগী বাংলা ভাষার পাঠকের কাছে দারুণ সমাদৃত হবে বইটি।