User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
ইয়স্তেন গার্ডার একজন দার্শনিক। তবে সাধারণ পাঠকের কাছে তার সেই পরিচয় ছাপিয়ে বেশ করে ধরা পরে কার লেখক পরিচয়টুকু!! নরওয়েজীয় এই দার্শনিক লেখক নাম করেছেন তার প্রথম আন্তর্জাতিক ভাষায় অনুদিত বই সোফির জগতের জন্য। এরপরে তার আরও কিছু বই বিভিন্ন ভাষায় অনুদিত হয়। এর মাঝে আমার ব্যক্তিগতভাবে সবচেয়ে উপভোগ্য বই হল তাস রহস্য বা The Solitaire Mystery: a novel about family and destiny. ইয়স্তেন গার্ডার বিদঘুটে সব দার্শনিক আইডিয়াকে উপভোগ্য করে লেখার বিষয়ে যে দক্ষতা অর্জন করেছেন তা যে কোন লেখকেরই ঈর্ষার বিষয় হতে পারে! হ্যান্স, বাবার সাথে চলেছে গ্রীসের পথে, হারিয়ে যাওয়া মা কে খুজে পেতে। ইউরোপের রুক্ষ এবং বৈচিত্রহীন পথে হঠাত করেই বৈচিত্র নিয়ে আসে যখন গ্যাস স্টেশনের ধারে এক বামনের সাথে দেখা হয়ে যায় তার। বামন তাকে দেয় একটা ছোট্ট আতশ কাচ, যেটা দিয়ে সব জিনিস বড় করে দেখা যায়। ব্যপার স্যপার বুঝতে না পারলেও হ্যান্স মজাই পায়। কোন ছোট ছেলে উপহার পেতে পছন্দ করে না? হোক না কেন তা বিদঘুটে চেহারার বামন এর কাছ থেকে! ঘটনা আরও রহস্যময় হয়ে যায় যখন এর পরে অন্য এক স্টপেজে এক রুটি বিক্রেতা তাকে দেয় একটা ছোট্ট বই, যেটা কিনা কেবলমাত্র সেই আতশকাচ দিয়েই পড়া যায়! বইটি পড়দে থাকে হ্যান্স আর হারিয়ে যেতে থাকে একটা জাদুময়তার জগতে। অদ্ভুত এক দ্বীপের গল্পে নিজেকে আবিস্কার করে সে, একদম রুপকথা! কিন্তু একটা সময়ে পুরো রুপকথাটাই যেন আর রুপকথা থাকে না। তার পরিবারের রহস্যময় শিকড়ের সন্ধান, হয়ত বা হারিয়ে যাওয়া কোন প্রিয়জনকে ফিরে পাওয়া। পুরো বইটিতে রহস্যময়তা একটা বিশাল ফ্যাক্টর। তাই আর বেশি না বলি!! তবে পড়লে পস্তাবেন না এটা বলা যেতেই পারে!! আর বইটি পড়া শেষ করার পরে আপনি অনুভব করবেন আপনি যেন ঠিক আর আগের মত নেই! সবকিছুকে একটু হলেও অন্য রকমভাবে দেখতে শুরু করেছেন!
Was this review helpful to you?
or
প্রায় বছর খানেক আগেই ‘সোফির জগত’ পড়েছি, তাই ‘তাস রহস্য’ পড়ার জন্য বেশ উৎসাহী এবং আগ্রহী ছিলাম। ইয়স্তেন গার্ডার দারুণ উদ্ভাবনী শক্তির অধিকারী লেখক। তাঁর লেখা চিন্তাভাবনা নাড়িয়ে দেয়। তাঁর যে আইডিয়াগুলো তাঁর কাজের মাধ্যমে প্রকাশিত হয় তা আমি বেশ পছন্দ করি। নরওয়েজিয়ান লেখক এবং দর্শনের শিক্ষক ইয়স্তেন গার্ডারের ‘সোফির জগত’ দর্শনের ইতিহাস এবং নানান দার্শনিক প্রশ্নাবলী নিয়ে লেখা এক বেস্টসেলার। সে তুলনায় ‘তাস রহস্য’ অধিকতর অভিগম্য, এর বিষয় সরাসরি দর্শন না হলেও এটি পড়ার সময় পাঠক আসলে দার্শনিক প্রশ্নগুলোতেই জড়িয়ে যায়, জেনেই হোক কিংবা না জেনেই হোক। আরো স্পষ্ট করে বললে- ‘আমি কারা?’ ‘এ পৃথিবী কোথা থেকে এলো?’ ‘আমরা কোথায় চলেছি?’- এমন সব দার্শনিক প্রশ্ন আর ভাবনা লুকিয়ে আছে রূপকথা আর এডভেঞ্চারের আড়ালে, ‘তাস রহস্য’ উপন্যাসে। গার্ডারের শিশু-কিশোরদের দৃষ্টিভঙ্গি এবং বক্তব্যের প্রতি পক্ষপাত আছে- যা একদম সুস্পষ্ট। সম্ভবত এ কারণে যে, তিনি অনুভব করেন- শিশুরা এ পৃথিবীকে বড়োদের তুলনায় অধিকতর সঠিকভাবে মূল্যায়ন করতে পারে। একটি শিশু সবসময় জানতে চাইবে যেকোনো জিনিসের ব্যাপারে- কেন জিনিসটি এমন, যেখানে বড়োরা সে জিনিসের ব্যাপারে অভ্যস্ত হয়ে পড়ে কিংবা কোনো কিছুই জানতে চায় না। একটি শিশুর দৃষ্টিতে যদি কখনো এ পৃথিবীর দিকে আমরা তাকাই তাহলে হয়ত আমরা আমাদের পুরনো এবং ঘুণে ধরা চিন্তাভাবনাগুলোকে আরো ঝালিয়ে নিতে পারতাম। ‘তাস রহস্য’এর প্রধান চরিত্র বারো বছরের বালক হ্যান্স টমাস। সে তার পিতার (যিনি কিনা জার্মান পিতার নরওয়েজিয়ান পুত্র!) সাথে ছুটে যায় গ্রিসে, তার মায়ের সাথে দেখা করতে। টমাসের মা মডেল হবার স্বপ্ন নিয়ে তার পরিবার ছেড়ে গ্রিসে চলে যান আট বছর আগে। হ্যান্স ও তার বাবা পুরো ইউরোপ ভ্রমণ করে এবং নানা দার্শনিক বিষয় নিয়ে আলোচনা করে। একদিন এক বামুন হ্যান্সকে একটি অতসী কাঁচ উপহার দেয় এবং তাদের ভ্রমণপথকে অন্যদিকে নিয়ে যায়। এভাবে পিতা-পুত্র গিয়ে পৌছয় এক গ্রামে যেখানে হ্যান্স এক রুটি প্রস্তুতকারীর কাছে থেকে পায় বনরুটির ভেতরে লাগানো ছোট্ট বই, যার লেখাগুলো এতোই ছোটো যে খালি চোখে পড়ার কোনো উপায় নেই। তাই হ্যান্স তখন সেই বামুনের দেয়া অতসী কাঁচ দিয়ে পড়তে থাকে বই রহস্যময় বইটি। এটি তাকে শোনায় এক আশ্চর্য গল্প- এক রহস্যময় দ্বীপ, ফ্রোডো নামের নাবিক, এক প্যাকেট তাস এবং ‘রংধনু পানীয়’-যাতে আছে সবকিছুর স্বাদ। বইখানা পড়তে পড়তে হ্যান্স উপলব্ধি করতে পারে যে এই বইয়ের সাথে তার জীবনের কোনো-না-কোনো এক গভীর সংযোগ আছে এবং এটি পড়তে পড়তেই সেই রহস্য উন্মোচিত হবে। ‘তাস রহস্য’ উপন্যাসের প্রতিটি অধ্যায়ের নাম রাখা হয়েছে তাসের একেকটি তাসের নামে, যা অভিনব। তিপ্পান্ন অধ্যায়ের জন্য তিপ্পান্নটি কার্ড ( অতিরিক্ত কার্ডটি জোকার)। হ্যান্সের বাবা তাসের প্যাকেটের জোকার সংগ্রহ করেন এবং নিজেকে একজন জোকার বলে ঘোষণা করেন। ব্যাপারটা প্রতীকী। বনরুটির বইয়ের সেই রহস্যময় দ্বীপের তাসের প্যাকেট থেকে আবির্ভূত হওয়া মানুষেরা কখনো নিজেদের নিয়ে ভাবে না, ভাবে তারা কোথা থেকে এলো, তাদের দ্বীপের সৃষ্টি রহস্যই বা কী। তারা নিজদের বিভ্রান্ত হওয়া রোধ করতে পান করে ‘রংধনু পানীয়’, আর সবকিছু ভুলে থাকে। কিন্তু তাদের মধ্যে একমাত্র জোকারই খুঁজে বেড়ায় তার অস্তিত্বের রহস্য, সে পান করতে অস্বীকার করে রংধনু পানীয়। মানব সমাজেও আছে তেমনই দার্শনিক-রূপী ‘জোকার’ যারা খুঁজে বেড়ায় এ মহাবিশ্বের রহস্য। গার্ডারের উপন্যাস নির্মাণ কৌশলে প্রথমেই যা চোখে পড়ে তা হলো- গল্পের ভেতরে গল্প। ‘সোফির জগত’এ যেমন ছিল উপন্যাসের ভেতর উপন্যাস, তেমনই ‘তাস রহস্যে’ আছে গল্পের ভেতর গল্প, তারও ভেতরে গল্প। নানা স্তরের গল্প একই প্লটে উপস্থাপন করে লেখক যে জটিলতা উপন্যাসে নিয়ে আসেন তাতে করে এর প্রতি আমাদের মনোযোগ আরো বাড়িয়ে দিতে হয়। যদিও মাঝেমধ্যেই বিভিন্ন গল্পের ভিন্ন ভিন্ন বাস্তবতা একে ওপরের ওপর উপরিপাতিত হয়, তবুও এটি বিরক্তির উদ্রেক করে না। এর মাধ্যমেই লেখকের মুনশিয়ানা আমাদের কাছে স্পষ্ট হয়। আলোচ্য উপন্যাস আমাদেরকে সচেতনে করে নিজেদের অস্তিত্বের বিষয়ে, ঠিক ‘সোফির’ জগত’এর মতোই। গার্ডার তাঁর পাঠককে দার্শনিক প্রশ্ন-গুলোয় জড়িত করার ব্যাপার পূর্ণমাত্রায় সচেতন। তিনি চান তাঁর পাঠকেরা তাকাক নিজের অস্তিত্বের দিকে, দেখুক এ পৃথিবী কী আশ্চর্য এক জায়গা এবং নিজের জীবনকে হেলাফেলায় না নেয়ার ব্যাপারে সচেতন হোক। লেখক চান তাঁর দর্শন উপলব্ধি করুক পাঠকেরা, উদ্দীপ্ত হোক এবং বিবেচনা করুক তাঁর মতো করে জীবনকে দেখার ব্যাপারটা। উপন্যাসের ভাষা সন্দেহজনকভাবে অতি সহজ; এটি এমনই সহজ যে আমাদের ভাবতে বাধ্য করে যে এই বই হয়ত বাচ্চাদের জন্যই লেখা হয়েছে। কিন্তু এই সহজ বাক্যগুলোর আড়ালে লুকিয়ে আছে কয়েক স্তরের অর্থ এবং ব্যঞ্জনা যা বই পড়ে উদ্ঘাটন করা খুব সহজ কাজ নয়। পাঠককে খুব ভালোভাবে বইটি পড়তে হবে এবং দারুণ মনোযোগ দিতে হবে এটা বুঝতে যে, কে কাকে কখন কী বলছে। এক কথায়, বইটি খুবই চাতুর্যপূর্ণ এবং যারা এমন বই পড়তে আগ্রহী তাদেরকে আমি ‘তাস রহস্য’ পড়তে উৎসাহিত করব। সাজেদুল ওয়াহিদ ১৮/০৫/২০১৩
Was this review helpful to you?
or
হ্যান্স, বাবার সাথে চলেছে গ্রীসের পথে, হারিয়ে যাওয়া মা কে খুজে পেতে। ইউরোপের রুক্ষ এবং বৈচিত্রহীন পথে হঠাত করেই বৈচিত্র নিয়ে আসে যখন গ্যাস স্টেশনের ধারে এক বামনের সাথে দেখা হয়ে যায় তার। বামন তাকে দেয় একটা ছোট্ট আতশ কাচ, যেটা দিয়ে সব জিনিস বড় করে দেখা যায়। ব্যপার স্যপার বুঝতে না পারলেও হ্যান্স মজাই পায়। কোন ছোট ছেলে উপহার পেতে পছন্দ করে না? হোক না কেন তা বিদঘুটে চেহারার বামন এর কাছ থেকে! টমাসের মা মডেল হবার স্বপ্ন নিয়ে তার পরিবার ছেড়ে গ্রিসে চলে যান আট বছর আগে। হ্যান্স ও তার বাবা পুরো ইউরোপ ভ্রমণ করে এবং নানা দার্শনিক বিষয় নিয়ে আলোচনা করে। একদিন এক বামুন হ্যান্সকে একটি অতসী কাঁচ উপহার দেয় এবং তাদের ভ্রমণপথকে অন্যদিকে নিয়ে যায়।ঘটনা আরও রহস্যময় হয়ে যায় যখন এর পরে অন্য এক স্টপেজে এক রুটি বিক্রেতা তাকে দেয় একটা ছোট্ট বই, যেটা কিনা কেবলমাত্র সেই আতশকাচ দিয়েই পড়া যায়! হ্যান্স এক রুটি প্রস্তুতকারীর কাছে থেকে পায় বনরুটির ভেতরে লাগানো ছোট্ট বই, যার লেখাগুলো এতোই ছোটো যে খালি চোখে পড়ার কোনো উপায় নেই। তাই হ্যান্স তখন সেই বামুনের দেয়া অতসী কাঁচ দিয়ে পড়তে থাকে বই রহস্যময় বইটি। এটি তাকে শোনায় এক আশ্চর্য গল্প- এক রহস্যময় দ্বীপ, ফ্রোডো নামের নাবিক, এক প্যাকেট তাস এবং ‘রংধনু পানীয়’-যাতে আছে সবকিছুর স্বাদ। বইখানা পড়তে পড়তে হ্যান্স উপলব্ধি করতে পারে যে এই বইয়ের সাথে তার জীবনের কোনো-না-কোনো এক গভীর সংযোগ আছে এবং এটি পড়তে পড়তেই সেই রহস্য উন্মোচিত হবে। বইটি পড়দে থাকে হ্যান্স আর হারিয়ে যেতে থাকে একটা জাদুময়তার জগতে। অদ্ভুত এক দ্বীপের গল্পে নিজেকে আবিস্কার করে সে, একদম রুপকথা্রশ ।কিন্তু একটা সময়ে পুরো রুপকথাটাই যেন আর রুপকথা থাকে না। তার পরিবারের রহস্যময় শিকড়ের সন্ধান, হয়ত বা হারিয়ে যাওয়া কোন প্রিয়জনকে ফিরে পাওয়া।‘তাস রহস্য’ উপন্যাসের প্রতিটি অধ্যায়ের নাম রাখা হয়েছে তাসের একেকটি তাসের নামে, যা অভিনব। তিপ্পান্ন অধ্যায়ের জন্য তিপ্পান্নটি কার্ড ( অতিরিক্ত কার্ডটি জোকার)।বনরুটির বইয়ের সেই রহস্যময় দ্বীপের তাসের প্যাকেট থেকে আবির্ভূত হওয়া মানুষেরা কখনো নিজেদের নিয়ে ভাবে না, ভাবে তারা কোথা থেকে এলো, তাদের দ্বীপের সৃষ্টি রহস্যই বা কী। তারা নিজদের বিভ্রান্ত হওয়া রোধ করতে পান করে ‘রংধনু পানীয়’, আর সবকিছু ভুলে থাকে। কিন্তু তাদের মধ্যে একমাত্র জোকারই খুঁজে বেড়ায় তার অস্তিত্বের রহস্য, সে পান করতে অস্বীকার করে রংধনু পানীয়। মানব সমাজেও আছে তেমনই দার্শনিক-রূপী ‘জোকার’ যারা খুঁজে বেড়ায় এ মহাবিশ্বের রহস্য। ‘তাস রহস্যে’ আছে গল্পের ভেতর গল্প, তারও ভেতরে গল্প। নানা স্তরের গল্প একই প্লটে উপস্থাপন করে লেখক যে জটিলতা উপন্যাসে নিয়ে আসেন তাতে করে এর প্রতি আমাদের মনোযোগ আরো বাড়িয়ে দিতে হয়।