User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
আহা উন্নয়ন
Was this review helpful to you?
or
A good read
Was this review helpful to you?
or
ভাল
Was this review helpful to you?
or
উন্নয়ন বলতে আমরা কী বুঝি? বা উন্নয়নকে কীভাবে ব্যাখ্যা করব? অর্থনৈতিক উন্নয়নের পরিধি কী? এগুলো সবই মৌলিক ধরনের প্রশ্ন। এ রকম আরও অনেক প্রশ্ন আছে। সেই সঙ্গে আছে উন্নয়নবিষয়ক নানা ধরনের বিভ্রান্তি। আর তাই প্রয়োজন এসব প্রশ্নের সঠিক উত্তর জানা। প্রয়োজন বিভ্রান্তির অপনোদন। রিজওয়ানুল ইসলামের উন্নয়নের অর্থনীতি বইটি এই কাজে যথেষ্ট সহায়ক হবে। যাঁরা অর্থনীতি চর্চা করেন, উন্নয়ন নিয়ে ভাবেন, তাঁদের অনেক প্রশ্নের জবাব খুঁজতে বইটি সহায়ক হবে। অবশ্য বইটি হাতে নিয়ে উল্টেপাল্টে দেখলে প্রথমে মনে হতে পারে, এটি বুঝি বিশ্ববিদ্যালয়ের পর্যায়ে অর্থনীতিতে অধ্যয়নরতদের জন্য লেখা একটি পাঠ্যপুস্তকবিশেষ। সে রকম মনে হলেও কিছু আসে-যায় না। কারণ, অর্থনীতির ছাত্রছাত্রীরা তাঁদের একটি প্রয়োজনীয় সহায়ক বই হিসেবে উন্নয়নের অর্থনীতিকে ব্যবহার করতে পারবেন। তাতে বইটির বৃহত্তর পর্যায়ে ব্যবহারোপযোগিতার কোনো ব্যত্যয় হয় না। বস্তুত রিজওয়ানুল ইসলাম উন্নয়ন ভাবনার বিবর্তন থেকে আরম্ভ করে উন্নয়ন ও প্রবৃদ্ধির বিভিন্ন তত্ত্ব, দারিদ্র্য ও অসাম্য, কৃষি ও শিল্প হয়ে বিশ্বায়ন পর্যন্ত উন্নয়নের বিভিন্ন দিক নিয়ে সুবিন্যস্তভাবে আলোচনা করেছেন। এই আলোচনায় একদিকে যেমন সংশ্লিষ্ট তত্ত্বগুলোর সংক্ষিপ্ত অথচ সহজ বিশ্লেষণ উঠে এসেছে, তেমনি এসেছে প্রাসঙ্গিক উদাহরণ। বাংলাদেশের অবস্থা সম্পর্কে লেখক ছোট হলেও কিছু বিবরণ তুলে ধরেছেন। তবে যেকোনো তত্ত্বেরই প্রায়োগিক দিক তথা বাস্তবে এর অবস্থা সম্পর্কে বলতে গিয়ে তিনি ইতিবাচক-নেতিবাচক দুটো দিকই উল্লেখ করেছেন। ফলে কোনো বিষয়কে বোঝানোর জন্য তা যেমন সহায়ক হয়েছে, তেমনি পরিপ্রেক্ষিত বিবেচনার সুযোগও তৈরি হয়েছে। একটা দৃষ্টান্ত টানা যেতে পারে। বৈষম্য বা অসাম্যবিষয়ক অধ্যায়ে আয়ের বণ্টনে অসাম্য ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির মধ্যে যোগসূত্র ব্যাখ্যা করতে গিয়ে রিজওয়ানুল ইসলাম বাংলাদেশের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেছেন। বলেছেন, ‘বাংলাদেশের কথাই ধরা যাক। নব্বইয়ের দশকেই এ দেশে অসাম্য বাড়তে শুরু করেছিল। কিন্তু কোনো রাজনৈতিক দলই উচ্চ আয়ের লোকের ওপর কর বাড়ানোর তেমন কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করেনি। এবং কোনো সরকারই কর বাড়ানোর এবং পুনর্বণ্টনের কোনো উদ্যোগ নেয়নি। সুতরাং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ওপর অসাম্যের কোনো নেতিবাচক প্রভাব পড়তে দেখা যায়নি। বাস্তবে অসাম্য এবং প্রবৃদ্ধি দুই-ই বেড়েছে।’ (পৃ. ৬৫)। তিনি এই বক্তব্য রাখছেন সেই ধারণার বিপরীতে, যেখানে বলা হয়, ‘বেশি অসাম্যের কারণে দরিদ্র জনগোষ্ঠী এমন দলকেই নির্বাচনে ভোট দেবে যে উচ্চ আয়ের লোকদের উপর উচ্চ হারে কর আরোপ করার প্রতিশ্রুতি দেবে। আর দরিদ্রদের সংখ্যা অনেক বেশি হলে তাদের ভোটে এমন দলই জয়ী হবে যে কর বৃদ্ধি করবে। আর তার ফলে সঞ্চয় ও বিনিয়োগ নিরুত্সাহিত হবে এবং তার নেতিবাচক প্রভাব পড়বে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ওপর।’ বাংলাদেশের দৃষ্টান্ত টেনে রিজওয়ানুল ইসলাম দেখালেন, প্রবৃদ্ধি ব্যাহত করতে অসাম্যের ভূমিকাবিষয়ক তাত্ত্বিক ব্যাখ্যার সমর্থন বাস্তবে মেলা কঠিন। তবে বাংলাদেশের দারিদ্র্য আলোচনায় দারিদ্র্য মানচিত্রের বিষয়টি উল্লেখ করা দরকার ছিল। ‘বাংলাদেশে কী ধরনের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হচ্ছে?’ শীর্ষক ১১তম অধ্যায়টি সবিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। এতে বাংলাদেশের অর্থনীতির প্রবৃদ্ধির গুণগত দিক পর্যালোচনা করা হয়েছে। অর্থাৎ প্রবৃদ্ধি কতটা গরিবি কমাতে পেরেছে, কতটা বৈষম্য হ্রাস করতে পেরেছে ও কতটা কাজের সুযোগ তৈরি করতে পেরেছে। রিজওয়ানুল ইসলাম এসব প্রশ্নের জবাব খুঁজতে গিয়ে বলেছেন: কর্মসংস্থান সৃষ্টির ক্ষেত্রে কিছু দুর্বলতা দেখা গিয়েছে। একদিকে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির তুলনায় কর্মসংস্থান বৃদ্ধির হার কমে যাচ্ছে। অন্যদিকে খাতওয়ারি বিন্যাসের পরিবর্তনে কৃষি থেকে শিল্পের দিকে না গিয়ে কর্মসংস্থান বেশি বাড়ছে নির্মাণ, সেবার মতো খাতগুলোয়।…অর্থনৈতিক সংস্কার এবং বাণিজ্য উদারীকরণের পরও বাংলাদেশের অর্থনীতি দৃঢ়ভাবে শ্রম নিবিড় শিল্পভিত্তিক উন্নয়নের পথে প্রতিষ্ঠিত হতে পারেনি।’ (পৃ. ২০৪)। রিজওয়ানুল ইসলাম আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থায় দীর্ঘদিন বিশেষ উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করেছেন। ফলে কর্মসংস্থান বিষয়ে তাঁর সামগ্রিক পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণ তাত্পর্যপূর্ণ। বইটিতে ছোট্ট একটি অর্থনৈতিক পরিভাষার তালিকা সংযোজন করা হয়েছে, যা বিশেষভাবে কাজে লাগবে। সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, আগস্ট ১৩, ২০১০