User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
স্রোতের বিপরীতে চলা এক কঠিন প্রবাহের নাম জেলেজীবন। সামুদ্রিক ঢেউয়ের সাথে লড়াই করে টিকে থাকতে হয় তাদের। সাংসারিক জীবনের টানাপোড়েন তাদেরকে সর্বদা ব্যতিব্যস্ত রাখে। জীবিকা নির্বাহ ছাড়া সবকিছু তাদের কাছে গৌণ হয়ে ওঠে। তবুও মনুষ্য সমাজের সভ্য সামাজিকতা তাদেরকে সর্বদা টানে। নীচু থেকে উপরে উঠার আপ্রাণ চেষ্টা করে জলদাস থেকে চৌধুরী হওয়ার স্বপ্ন দেখে; কারো কারো তৃষিত চোখে সমুদ্রের উত্তাল তরঙ্গে জাল পেতে মাছ ধরার দৃশ্য ছাড়া কিছুই দৃশ্যমান হয় না। জাত-পাতের বৈষম্য তাদের কাছে তুচ্ছ হয়ে ওঠে তখন। নিম্ন সামাজিক জীবনযাপনের মধ্যেও নৈতিক পদস্খলন তাদেরকে ভাবিয়ে তোলে। মেয়েদের সম্ভ্রম রক্ষার প্রাণান্তকর চেষ্টা, অপরাধ কর্মের বিচার-আচার সবকিছু নিয়মমাফিক চলে। এক কথায় জেলে সমাজের নানাবিধ বিষয়কে কেন্দ্র করে রচিত 'জলদাসীর গল্প'। হরিশংকর জলদাস মানেই বাস্তব, জীবনধর্মী রচনা। এই বইয়ের মধ্যেও তিনি জেলে সমাজের ভালো-মন্দ, সামঞ্জস্য-অসামঞ্জস্যসহ সব দিক তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন।
Was this review helpful to you?
or
এক কথায় জেলে সমাজের নানাবিধ বিষয়কে কেন্দ্র করে রচিত 'জলদাসীর গল্প'। হরিশংকর জলদাস মানেই বাস্তব, জীবনধর্মী রচনা। এই বইয়ের মধ্যেও তিনি জেলে সমাজের ভালো-মন্দ, সামঞ্জস্য-অসামঞ্জস্যসহ সব দিক তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন।
Was this review helpful to you?
or
ক্রুসেড শুধু ধর্মে সীমাবদ্ধ নয়। নানা কারণে ক্রুসেড সংঘটিত হয়। ব্যক্তি, সমাজ, রাষ্ট্রের মতো প্রতিষ্ঠানেরও ক্রুসেড থাকে, যদি তার সংগঠন ও প্রয়োগ ইতিবাচক হয়। শিল্পী, সাহিত্যিক, কবি, সাংবাদিক—এঁদেরও নিজস্ব ক্রুসেড রয়েছে। তাঁরা ধারণ করেন, চর্চিত রাখেন। শক্তিশালী ও নিষ্ঠাবান লেখকের পক্ষেই কেবল সম্ভব ক্রুসেডে ধ্যানস্থ থাকা। হরিশংকর জলদাস যেমনটা করে চলেছেন। জলদাসদের সুখ-দুঃখে, শোষণ-নির্যাতনসহ যাপিত জীবনের রূপ-রস-ঐশ্বর্যকে তিনি শিক্ষিতজনের ড্রয়িংরুমে পৌঁছে দিচ্ছেন। জেলেজীবনের রোদে-জলে অঙ্গার হয়ে অভিজ্ঞতার নির্যাসে জলদাসদের একদা লিখেছিলেন অদ্বৈত মল্লবর্মণ। এখন লিখছেন হরিশংকর জলদাস। দ্বিতীয় অদ্বৈত শিরোপা তাঁর জন্য যথার্থ ও যথোপযুক্ত। দুজনের মধ্যে অবশ্য সূক্ষ্ম ফারাক রয়েছে। অদ্বৈত লিখেছেন নদীসংলগ্ন জেলেদের কথা। হরিশংকর লিখছেন সমুদ্রগামী জেলেদের নিয়ে। লেখক হিসেবে পালন করছেন ক্রুসেডের ভূমিকা। লেখালেখিতে সেই ইঙ্গিতবহতার অভ্রান্ত স্বাক্ষর স্পষ্টত। । প্রথম থেকেই তিনি সেই পথের পথিক। ‘জলপুত্র’, ‘দহনকাল’, ‘কসবি’, ‘কৈবর্তকথা’য় যার প্রমাণ মিলেছে। একুশে বইমেলা-২০১১তে প্রকাশিত হয়েছে তাঁর প্রথম গল্পগ্রন্থ জলদাসীর গল্প। ১০টি গল্পেই হরিশংকরের তীক্ষধী লেখকসত্তা দৃশ্যগ্রাহ্য হয়। গল্পগুলোর বিশিষ্টতা হলো, এখানে লেখকের চর্চিত ক্রুসেডসত্তা স্পষ্টত। প্রান্তিক মানুষকে সর্বসমুখে তুলে ধরার এই প্রত্যয় ও প্রতীতিতে প্রশংসাযোগ্য । ভিন্ন ভিন্ন চারিত্র কাঠামোতে প্রান্তজনদের হাজির করেছেন তিনি। গল্পের নায়ক কিংবা কেন্দ্রীয় চরিত্ররা রাষ্ট্র, সমাজ ও পরিবারের বাস্তবিতায় নায়ক নন। কিন্তু পাঠান্তে মনে হয়, প্রকৃতপক্ষে এঁরাই নায়ক। সত্য ও সাহসের নির্ভীক পতাকাবাহক। যাঁদের চয়ন ও চিত্রণে হরিশংকরের সার্থকতা ইর্ষণীয়। বাস্তবের কোনো ঘটনা কিংবা চরিত্রকে অবিশ্বাস্য মনে হলেও তাঁর কোনো ক্ষতি নেই, প্রশ্নবাণে জর্জরিত হওয়ার ভয় নেই। কেননা তা বাস্তব। সে বিশ্বাস-অবিশ্বাসের পরোয়া করে না, কর্জ দেওয়া-নেওয়া করে না। সাহিত্যের সীমাবদ্ধতা ও বাধ্যবাধকতা হলো, তাকে বাস্তবযোগ্য হতে হয়। বিশ্বাস-অবিশ্বাসের চুলচেরা বিশ্লেষণের প্রশ্নে সর্বদা সতর্ক থাকতে হয়। হরিশংকর জলদাসের চরিত্রগুলো বাস্তব-অবাস্তবের রসায়নে সৃষ্ট হলেও শেষাবধি বাস্তব ও বিশ্বাসযোগ্য। খুনী দইজ্যাবুইজ্যাকে তাই আদর্শ মনে হয়। প্রশ্ন দেখা দেয়, আমরা কি পারব তাঁর মতো সাহসী হতে, জীবন বাজি রাখতে? কোটনা ক্ষীরমোহনকে উপস্থাপনেও হরিশংকরের শিল্পীত কৌশল আমাদের মুগ্ধ করে। ছোটগল্পের ছক্কা-পাঞ্জা রপ্ত বলেই, এ খেলা সম্ভবপর হয়েছে। ‘সুবিমল বাবু’, ‘ঢেন্ডেরি’, ‘একজন জলদাসীর গল্প’—প্রতিটিতেই সেই মুন্সিয়ানার ছাপ দৃশ্যমান। সাধারণ অর্থে, সহজিয়া ঢংয়ে, রূপকথা কিংবা আড্ডার ছলে তিনি গল্পে প্রবেশ করেন। চরিত্রের সঙ্গে পরিচয় করান। পরিবেশ-পরিস্থিতি-প্রতিরূপের বর্ণনা দেন। তৈরি করেন অদ্ভুত আকর্ষণ ও মোহমুগ্ধতা। হরিশংকরকে চেনা পাঠক, তখন পরিণতির জন্য উদগ্রীব হন। গল্পের শেষভাগে লেখক তাই হতাশ করেন না, বড় রকমের চমক দেখান। কুঠারাঘাত করেন চেতনায়। যার মধ্য দিয়ে পাঠককে হাজির করান ক্রুসেড ময়দানে। যে ময়দানে তাঁর সৃষ্ট চরিত্ররা আগে থেকেই উপস্থিত। শেষ পরিণতির জন্য অপেক্ষমাণ। মুহূর্তেই ঘটে যায় কাঙ্ক্ষিত-অনাকাঙ্ক্ষিত কিংবা অপ্রত্যাশিত যবনিকা। যা-ই ঘটুক না, যবনিকার পরেই হরিশংকরের চরিত্ররা নবজন্ম লাভ করে। মোহনা, সরলাবালা, লক্ষ্মীবালা, চরণদাসী সেইসূত্রে সচেতন পাঠকের মনে নায়কোচিত আসন লাভ করে। চেনা প্রান্তিক মানুষ, জলদাসদের জীবন শুধু নয়, ইতিহাসের পথ বেয়েও তিনি জলদাসদের অন্বেষণ করেছেন। মোহনা যার উজ্জ্বল প্রতিভূ। চণ্ডককে খুন করেও যে খুনী নয়, ভালোলাগা-ভালোবাসার পরশমণি হয়ে ওঠে। হরিশংকর জলদাস শুধু কাহিনিই লেখেন না, সমাজকেও লেখেন। যতটা বাইরের দিকে দৃষ্টি দেন, তার চেয়ে অধিক দেন ভেতরে। তাঁর চরিত্রগুলো তাই নতুন, চেনাজানা হয়েও অন্তর্গত সত্য, সাহস ও সৌন্দর্যে আদর্শযোগ্য। যাপিত জীবনের মতোই এদের লড়াইও নীরবে নিভৃতে নিরুপায় হয়ে। হরিশংকর সেভাবেই লিখেছেন। এ দ্বন্দ্ব-সংঘাতের উপর্যুপরি উপস্থিতি এখানে অপ্রতুল। এমনকি নাটকীয়তাও জীবনের অনিবার্য উপাদান হলেও হরিশংকরের জীবনঘনিষ্ঠ এসব গল্পে তার উপস্থিতি নেই। চমক সবই যেন পরিণতিতে, উপসংহার টানার আবশ্যকতায়। কিন্তু জীবনের ধারাপাত কি বাস্তবিকই এ রকম? জলদাসীর গল্পগ্রন্থের পীড়াদায়ক দিক হলো বানান বিভ্রাট, যা পাঠকের মনোযোগকে বারংবার বাধাগ্রস্ত করে। জলদাসীর গল্প’র নিবিড় পাঠ চেতনায় অদ্ভুত এক বোধ নাড়া দেয়। আলোড়ন ধরায়, বিনম্র করে। সন্তর্পণে লোকচক্ষুর আড়াল হয়ে, চলে যেতে ইচ্ছে করে মোহনা, সরলাবালাদের কাছে। প্রণাম জানাতে ইচ্ছে করে ওঁদের, বারাঙ্গনাপল্লির মোহনাকে। দ্বিতীয় অদ্বৈত হরিশংকর জলদাস এই ইচ্ছাপূরণ কী খুব বেশী অসম্ভব?
Was this review helpful to you?
or
প্রথম আলো বর্ষ সেরা বই দহনকাল এর লেখক হরিশংকর জলদাস এর রচিত জলদাসীর গল্প বইটি একটি গল্প সঙ্কলন।হরিশংকর জলদাস এর সমকালীন সময়ের আলোচিত লেখক। জন্ম চট্টগ্রামের উত্তর পতেঙ্গায়। একদম সাগরের কোলে। জাতিতে নিম্নবর্ণ।নিজে নিম্নবর্ণ মানুষ হয়ার কারনে তার লেখায় ঘুরে ফিরে প্রান্তিক সমাজ অর্থাৎ ডোম, মুচি, মেথর, জেলে ইত্যাদির কথাই ঘুরে ফিরে আসে। জলদাসীর গল্প বিটির কাহিনী গুলো মুলত প্রান্তিক সমাজের নারীদের নিয়ে রচিত। জেলে সমাজে নারী পুরুষের স্মান অবদান। কিন্তু তাও অন্যান্য সমাজের মতো তাদের রয়েছে না পাওয়ার বেদনা, হাহাকার বিপর্যয়, বিপ্ননন জীবন। এসব নিয়েই রচিত জলদাসীর গল্প। বইটিতে মোট দশটি গল্প রয়েছে। প্রথম গল্প কোটনা। কোটনা শব্দের অর্থ বেশ্যার দালাল।কেন ক্ষীর মোহন নিম্ন সমাজের হয়েও স্কুলে ভালো ছাত্র হয়েও বেশ্যার দালাল হল সেটাই গল্পের বিষয়। দইজ্যা বুইজ্যা গল্পটিতে মুক্তিযুদ্ধের সময় জেলে নারীদের পাক হানাদার বাহিনির দ্বারা সম্ভ্রমহানি এর ঘটনার বর্ণনা ফুটে উঠেছে। সুবিমল বাবু গল্পটি তে লেখক দেখেয়েছেন উচ্চবর্ণ রা নিম্ন বর্ণের ছোঁয়া এরিয়ে চলেন।তাদের ঘৃণা করতে পারেন। কিন্তু শরীরের কারনে তাঁদের ব্যবহার করতে তাঁদের বাধেনা। দুখিনি গল্পটি অনন্তবালা নামে এক দুখিনি জেলে নারীর গল্প। যে সবমহিমায় উজ্জ্বল। ঢেন্ডেরি গল্পটিতে প্রকাশ পেয়েছে জেলে সমাজের কলঙ্কময় দিক। বিবাহ বহির্ভূত অবৈধ সম্পর্ক। লেখক জেলে সমাজের দাম্পত্যজীবনের আধার দিক টি তুলে ধরেছেন। একজন জলদাসীর গল্পে সরল বালা নামে এক জলদাসির কাহিনী বলা হয়েছে। যে যুদ্ধের ত্রিশ বছর পরও অপেক্ষা করে যুদ্ধে মৃত তার সবামী ফিরে আসবে। সে বেচে আছে। চরন দাসী ও ঢেন্ডেরির মত জেলে জীবনের অন্ধকার দিক এর পরিচয় তুলে ধরেছেন। কিন্তু এখানের কাহিনী বিবাহ পূর্ব যৌনসম্পর্ক যার ফলাফল বুঝা যায় বইয়ের পর ও। প্রতিশোধ গল্পটি পাঠককে নিরবিচ্ছিন্ন এক আহাজারির সামনে দাড়া করাবে। এবং মোহনা গল্পটি আমাদের একাদশ শতাব্দীর কালিন্দিপাড়ের এক বেশ্যাপ্ললিতে নিয়ে যাবে।।প্রতিটি গল্পই তার স্মহিমায় উজ্জব্ল।লেখক শুধু কাহিনিকেই আমাদের সামনে উপস্থাপন করেননি। করেছেন সমাজকেও