User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
Great
Was this review helpful to you?
or
কর্ণেল তাহের এবং জীবন দর্শকদের বোঝার জন্য খুব সুন্দর একটা বই
Was this review helpful to you?
or
রিভিউ বলতে এটুকুই বলবো, জীবনে পড়া অন্যতম সেরা বই।
Was this review helpful to you?
or
Good
Was this review helpful to you?
or
এক কিংবদন্তির আখ্যান।
Was this review helpful to you?
or
অনেক তথ্যবহুল বই।
Was this review helpful to you?
or
Good
Was this review helpful to you?
or
Good
Was this review helpful to you?
or
একজন কর্ণেল তাহেরকে ঘিরে আছে সময়। ঘিরে আছে একটা প্রজন্মের প্রতিচ্ছবি।
Was this review helpful to you?
or
দারুণ বই
Was this review helpful to you?
or
An important literary work based on a turning moment in the history of Bangladesh. We have got another account of the event by the protagonist's (Colonel Taher's) brother Dr M Anwar Hossain (Read: https://bangladeshonrecord.com/colone...). He summed up the events that led Colonel Abu Taher (Bir Uttam) to organise the soldiers uprising of November 7, 1975. He claims, "It is more appropriate to call what Taher organised an ‘uprising’ rather than a ‘revolution’ because the objective behind what could have been a ‘revolution’ remained unrealised due to Ziaur Rahman’s betrayal of Taher and the revolutionary soldiers of 1975. Perhaps had Zia kept his promise and allied with Taher and the revolutionary goals of the uprising, the November 7, 1975 events could have led to a ‘revolution’.
Was this review helpful to you?
or
অনবদ্য লেখনী। সকলের জন্য রিকমেন্ডেড।
Was this review helpful to you?
or
খুব সুন্দর।এটা গিফটের জন্য কিনেছিলাম।খুব ভালো লেগেছে
Was this review helpful to you?
or
Excellent
Was this review helpful to you?
or
Mind-blowing book. The last part of the book is amazing.
Was this review helpful to you?
or
Nice Book
Was this review helpful to you?
or
গল্পটা বাবা-মার ৪র্থ সন্তান নান্টুকে নিয়ে। যিনি স্কুলজীবনে শিক্ষকের কাছে ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলন ইতিহাস শোনেন। মাকে দেখে শেখেন অসহায় মানুষের পাশে আর অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাড়ানো। কিভাবে দেশকে নিয়ে চিন্তায় মগ্ন সেই কৈশোর হয়ে উঠেন কর্নেল তাহের ? দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে তার ও তার পরিবারের অবদান। স্বাধীনতা পরবর্তী দেশের উন্নয়ন নিয়ে তার স্বপ্ন ও পরিকল্পনা। সে পরিকল্পনার সফলতা ও ব্যর্থতা এবং তার পরিনতির। সময় করে পড়ে নিতে পারেন, জানতে পারবেন দেশের স্বাধীনতায় অবদান রাখা ১১নং সেক্টরের কমান্ডার আবু তাহের ও দেশের স্বধীনতা যুদ্ধের ইতিহাস সম্পর্কে।
Was this review helpful to you?
or
ছাত্রজীবনে দেখতাম ৭ নভেম্বর ছুটি থাকতো। কেন থাকতো? কখনও কারণ খুঁজতে যাইনি।দেশের সরকার পরিবর্তনের পর সেই ছুটি বাতিল হলো। কেন হলো? মাথা ঘামাইনি। যদিও আমার কৈশোর কেটেছে ছাত্র ইউনিয়নের বড় ভাইদের সান্নিধ্যে (যখন ”খেলাঘর” করতাম, মানে সেখানে গীটার, তবলা, আবৃত্তি, অভিনয় এসব শিখতাম...), আমি রাজনীতিতে কখনও সক্রিয় হইনি। এবং বিষয়টাতে সেভাবে জড়াইনি কখনো। বুয়েটে যখন পড়ছিলাম, তখন বিএনপি রাষ্ট্র-ক্ষমতায়। আমি ছাত্রদল, ছাত্রলীগ, ছাত্রফ্রন্ট - সবার সাথেই মিশেছি (মনে মনে ছাত্রফ্রন্টকে বেশি পছন্দ করতাম, কারণ ওদেরকে আমার নির্লোভ মনে হতো। মনে হতো ওরাই সাধারণ মানুষের কল্যাণ চায়) । আসা যাক মূল কথায়। লেখক শাহাদুজ্জামানের “ক্রাচের কর্নেল” নামের বইটা আমার পড়ার ইচ্ছে জাগে এ বছর যখন আমার ক্লাস ফাইভ পড়ুয়া ছেলে মেঘকে ১৮৫৭ সালের সিপাহী বিপ্লবের ইতিহাস পড়াচ্ছিলাম। ও মংগল পান্ডেকে চিনবে, কর্নেল তাহেরকে চিনবে না? এরপর বুয়েটে আবরার হত্যাকান্ডের পর ফেসবুকের বরাতে জানতে পারলাম, আবরারের আলমারিতে বেশকিছু বইয়ের মধ্যে একটি “ক্রাচের কর্নেল”। এবার আমাকে বইটা পড়তেই হবে...। নানা ব্যস্ততায় বই সংগ্রহ ও পড়া শুরু করলাম আরো পরে। শাহাদুজ্জামান তাঁর উপন্যাসটি শুরু করেছেন গল্পের নায়ক কর্নেল তাহেরের বিধবা স্ত্রী লুৎফাকে দিয়ে (যাকে দেখলে নাকি লিও টলস্টয়ের "আন্না কারেনিনা"কে মনে পড়ে)। লুৎফার হাত ধরে গল্প চলে যায় অতীতে। পাঠকের সামনে একটু একটু করে পরিস্ফুট হয় সেনাবাহিনীর এক তুখোড় অফিসার তাহেরের পরিচয়, যিনি কৈশোর থেকে বিপ্লবী। তাহেরের মা আশরাফুন্নেসা তাঁর ছেলেমেয়েদেরকে পরিশ্রমী আর প্রতিবাদী করেই তৈরি করেছিলেন ছোটবেলা থেকে। তার ফলেই হয়তো সব ভাই-বোনেরাই বড় হয়ে একেকজন বিপ্লবী হতে পেরেছিলেন। শুরুর দিকে লেখকের লেখনী আমার কাছে খুব চিত্তাকর্ষক মনে হয়নি। তবে কিছু কিছু ঘটনা বর্ণনা করতে গিয়ে তিনি যখন সেই ঘটনার সাথে পরবর্তীতে ঘটে যাওয়া ঐতিহাসিক ঘটনার যোগসূত্রটি সুচারু ভাষায় সংযুক্ত করেছেন, সেটি এক কথায় চমৎকার। কিশোর তাহেরের সাথে আমারও রীতিমতো ঘোর লেগেছিল যখন সে তার শিক্ষকের কাছে মাস্টার দা সূর্যসেনের অস্ত্রাগার লুটের ইতিহাস শুনে রোমাঞ্চিত হচ্ছিল। একটা সমাজতান্ত্রিক দেশ গড়তে যে বিপ্লব প্রয়োজন, তার জন্য নিজেকে তৈরি করতে শিখতে হবে যুদ্ধকৌশল। আর সে উদ্দেশ্যে তাহেরের যোগদান পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে! সেখানেও পাকিস্তানী সেনাদের সাথে তাঁর চ্যালেন্জিং সহাবস্থান। এবং দেশে যখন মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়েই গেল, তখন তাঁর পালিয়ে এসে মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেবার বীরগাঁথা এক কথায় দারুণ রোমহর্ষক। ১৪ নভেম্বর ১৯৭১, তাহেরের জন্মদিন। কামালপুরকে স্বাধীন করার পণ নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন যুদ্ধে। দুর্ধর্ষ সে অপারেশন। কিন্তু শেষ রক্ষা হলো না। বরং একটা পা হারিয়ে তাঁকে ছাড়তে হলো রণক্ষেত্র। এমন কি ১৬ই ডিসেম্বর বিজয় উৎসবের দিনও তাহের বিছানায়...। দেশ স্বাধীন হলো। তাহের পেলেন ”বীর উত্তম” খেতাম। স্বাধীন বাংলাদেশের সেনাবাহিনীর তিনি কর্ণেল। এরপর অনেক রাজনৈতিক চাল, ঘটনা, দুর্ঘটনা । তাহের ছেড়ে গেলেন ক্যান্টনমেন্ট। শুরু হলো তাঁর গোপন বিপ্লব। হাসানুল হক ইনু ছিলেন তাঁর প্রিয় সহচর। জাসদ বরাবরই ছিল তাঁর পাশে। সমাজতান্ত্রিক বাংলাদেশের স্বপ্ন তাঁর বুকের পুরোটা জুড়ে।.... এলো ১৯৭৫-এ আরেক ভয়াল ভোর। ১৫ই আগস্ট দিনের আলো ফোটার আগে সেনাবাহিনীর কয়েকজন বিদ্রোহী অফিসার ( আর তাদের পেছনে ছিল খোন্দকার মোশতাকের মতো কুটিল কুশীলব) স্বাধীন বাংলাদেশের মাটিতেই হত্যা করল স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ও তাঁর পরিবারের প্রায় সবাইকে। ভাগ্যক্রমে জার্মানীতে থেকে বেঁচে গেলেন শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা। ১৯৭১-এ যে মেজর জিয়া বঙ্গবন্ধুর পক্ষে রেডিওতে স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠ করেছিলেন, বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুতে তিনি ছিলেন প্রতিক্রিয়াহীন। অন্যদিকে খুনী মোশতাকের মুখের ওপর তাহেরকে বলতে শোনা যায়, “মুজিব মুজিব করবেন না। বলেন বঙ্গবন্ধু!” লেখক শাহাদুজ্জামান যে এই উপন্যাসটি লিখতে অনেক গবেষণা করেছেন, তার প্রমাণ পাওয়া যায় তাঁর লেখনীর প্রতিটি ঘটনার নিরপেক্ষ ও বিস্তারিত বিবরণে। ১৯৭৫ এর ৩ নভেম্বর জেলহত্যা থেকে শুরু করে ১৯৭৫-এর ৭ নভেম্বর যে সিপাহি বিপ্লবটি সংঘটিত হলো - তার দুর্দান্ত বিবরণ দিয়েছেন শাহাদুজ্জামান। শাহাদুজ্জামানের ভাষ্যমতে, সেনানিবাসে বন্দী জিয়াকে উদ্ধার করে দেশের ক্ষমতায় বসিয়েছিলেন কর্ণেল তাহের। নিয়তির নির্মমতায় সেই জিয়াই হয়ে দাঁড়ালেন তাহেরের মৃত্যূদূত! কী অদ্ভূত এক বিচার হলো! ১৯৭৬-এর ২১ জুলাই ফাঁসী হলো একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা দেশপ্রেমিক বিপ্লবীর। তাঁর বিরুদ্ধে দেশদ্রোহিতার অভিযোগ!! না, তিনি ক্ষমা ভিক্ষা করেননি কারো কাছে। বিজয়ীর মতো বরণ করে নিয়েছেন মৃত্যুকে। ইতিহাস সাক্ষী হয়ে রইলো এক নির্মম রাজনৈতিক প্রতিহিংসার। মৃত্যুর আগে তিনি পাঠ করেছিলেন সহযোদ্ধার লেখা কবিতা: “জন্মেছি সারা দেশটাকে কাঁপিয়ে তুলতে, কাঁপিয়ে গেলাম। জন্মেছি তাদের বুকে পদচিহ্ন আঁকব বলে, এঁকেই গেলাম। জন্মেছি মৃত্যুকে পরাজিত করব বলে, করেই গেলাম...” ( পাঠক হিসেবে আমি শামুক প্রজাতির। একটা বই অনেক সময় নিয়ে পড়ি। কিছুদিন পড়ি, তারপর বিরতি নিই। কিছু কিছু পাতা একাধিক বার পড়ি। ৩৪০ পৃষ্ঠার এই উপন্যাসটি আমি পড়েছি প্রায় ৩ সপ্তাহ ধরে। তাহেরের গ্রেফতারের পর থেকে উপন্যাসের শেষ দৃশ্য পর্যন্ত শাহাদুজ্জামান লিখেছেন মর্মস্পর্শী ভাষায়... গতকাল যখন পড়া শেষ করে উঠেছি, তখন আমার চোখের কোণে অশ্রু টলটল করছে। আমার স্ত্রী-পুত্র সেই অশ্রু দেখে ফেলল। আমি লজ্জা পেলাম। তবু এই অশ্রু আমি লুকোইনি। এই অশ্রু এক মুক্তিযোদ্ধার জন্য, এই অশ্রু এক দেশপ্রেমিকের জন্য। এই অশ্রু তাঁর জন্য, যিনি ধনী-গরীবের বৈষম্য ঘুঁচিয়ে এক সমাজতান্ত্রিক স্বাধীন ভূখণ্ডের স্বপ্ন দেখেছেন আজীবন। )
Was this review helpful to you?
or
excellent
Was this review helpful to you?
or
আমাদের মুক্তিযুদ্ধের দিনগুলো যেমন উত্তাল ছিল তেমনি উত্তাল ছিল যুদ্ধ পরর্বতী কয়েকটি বছর ।আমাদের জাতীয় বীরদের যদ্ধে আত্নাহুতি যেমন বেদনাদায়ক তার চেয়ে সহস্রগুণ বেশি বেদনাদায়ক স্বাধীন দেশে অন্তর্কোন্দল আর ক্ষমতার দ্বন্দে লিপ্ত হয়ে স্বাধীনতা যুদ্ধের সেইসক বীরদের একে অপরের হাতে মৃত্যু। কর্ণেল তাহের আমাদের মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম বীর।ছিলেন সেক্টর কমান্ডার।অসীম সাহসিকতায় যুদ্ধ করেছেন।হারিয়েছেন এক পা। বাংলাদেশ শুধূ কর্ণেল তাহেরের কাছে নয়।তাহেরের পুরো পরিবারের কাছেই ঋণী।তাহেররা ভাই মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছেন।তাছাড়া পুরো পরিবারেরই অবদান ছিলো মুক্তিযদ্ধে। যুদ্ধ শুরু হওয়ার অনেক আগেই তাহের বুঝতে পেরেছিলেন যে একটি সংঘাত অনিবার্য ।সশস্ত্র সংগ্রাম ব্যতীত স্বাধীনতা অর্জন সম্ভব নয়। তাই যুদ্ধের প্রস্তুতি হিসেবে অনেক আগে থেকেই যখন বাসায় আসতেন তখন ভাইদের অস্ত্র চালনার ট্রেনিং দিতেন। এই বইটি পড়ে সবচেয়ে ঋদ্ধ হযয়ছি তাহেরের মা সম্পর্কে জেনে।তাহেরের দেশপ্রেমিক হওয়ার এবং সমাজতান্ত্রিক ধ্যান ধারণায় উদ্বুদ্ধ হওয়ার পিছনে তাঁর মা জেবুন্নেসার বিরাট অবদান ছিল। ছেলে মেয়েদের তিনি কঠোর পরিশ্রমের মধ্য দিয়ে বড় করেছেন।পরিবারের সবকাজ ছেলেমেয়েদের মধ্যে সুষমভাবে বন্টন করে দিতেন এবং রোটেট করাতেন।কঠোর অনুশাসন আর যথাযোগ্য পারিবরিক শিক্ষার মধ্য দিয়ে বড় হওয়া তাঁর প্রত্যেকটি সন্তানই তাঁর সেই শিক্ষার যথাযোগ্য প্রয়োগ করেছিলেন। যুদ্ধের পর তাহের তার দীর্ঘদিনের লালিত সমাজতান্ত্রিক ধ্যান ধারণা প্রয়োগ করতে সরাসরি কাজ করা শুরু করেন।যুক্ত হোন জাসদের সাথে ।অল্প সময়ের মধ্যেই যে জাসদ তুমুল জনপ্রিয়তা অর্জন করে । রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের উদ্ভূত পরিস্থিতিতে তাহের জিয়াউর রহমানের জীবন রক্ষা করেছিলেন এবং জিয়াউর রহমান তাহেরের কাছে সাহায্যও চেয়েছিলেন । ১৯৭৫ এর ৭ই নবেম্বরে তাহেরের নেতৃত্বে সংগঠিত বিপ্লবটির সাফল্য ‘ক্ষমতা’ শেষ মুহূর্তে অন্যদের ভুলে তাহেরের হাতে না এসে জিয়ার হাতে চলে যায়। চিরকাল ভাগ্যের সহায়তা পাওয়া এবং উচ্চাকাংখী জিয়া তা লুফে নিতে ভুল করেন না। অদ্ভুদ মোহনীয় ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে জিয়া বেছে নিলেন ঘৃণ্য পথ। প্রহসনের বিচারে হত্যা করেন তাহেরকে।সামরিক আদালত বসিয়ে অদ্ভুত সে বিচার!নেই কোনো আত্নপক্ষ সমর্থনের সুযোগ,মিডিয়ার প্রকবশ নিষেধ এবং উপহাসের বিষয় হচ্ছে মুক্তিযোদ্ধা তাহেরের বিচার করেছেন পাকিস্তান ফেরত রাষ্ট্রীয় কর্মচারী যিনি মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানপন্থী ছিলেন। স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম ফাঁসি এবং তা একজন যুদ্ধাহত সেক্টর কমান্ডারের! ফাঁসির পূর্বে যখন তাহেরকে মৌলানা তওবা পড়াতে আসেন তাহের তওবা পড়তে অস্বীকৃতি জনান এবং বলেন, “আপনাদের জগতের কোনো পঙ্কিলতা আমায় স্পর্শ করেনি। শাহাদুজ্জামানের লেখনী অসাধারণ ।ইতিহাস আশ্রিত বইটি একজন কথাসাহিত্যিক লেখায় বইটিতে গতি আছে, আবেগ আছে। তবে সে আবেগ পক্ষপাতদুষ্ট নয়। শাহাদুজ্জামানের বলার ধরণও উপভোগ্য। মূলত কর্ণেল তাহেরকে কেন্দ্র করে হলেও ঘটনা সংশ্লিষ্টতায় সে সময়ের প্রায় সব গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রেই উঠে এসেছেন।
Was this review helpful to you?
or
মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক এর থেকে ভালো বই আমি পাইনি
Was this review helpful to you?
or
I was like flying through the pages of this book. But the last few pages!! I was struggling to read those last few pages. I was reading and wiping my tears at the same time.
Was this review helpful to you?
or
এক কথায় অসাধারণ একটি বই। যারা বই পড়তে ভালোবাসে তাদের সবারই পড়া উচিত।
Was this review helpful to you?
or
Delivered in time.
Was this review helpful to you?
or
বই:ক্রাচের কর্নেল। লেখক:শাহাদুজ্জামান। প্রকাশনা:মাওলা ব্রাদাস। মুদ্রিত মূল্য:৪৮০। রেটিং:১০/৮ ক্রাচের কর্নেল মূলত ইতিহাস আশ্রীত উপন্যাস।কর্নেল তাহেরকে উপজীব্য করে লেখক তার কলমের কালিতে একেছে এই গল্প। লেখক কর্নেল তাহেরকে তুলে ধরেছে বাংলা ভাষাভাষি পাঠক মহলে। তার কলমের জাদুতে ফুটিয়ে তুলেছে এক পা হারানো কর্নেলের বৈচিত্র্যময় জীবনকথা। ক্রাচের কর্নেলে আমরা দেখতে পাব একজন মাকে(তাহেরের মা)যিনি রত্নগর্ভা। সকল সন্তানদের দেশের জন্য,দেশের নামে, দেশের তরে ছেড়ে দিয়েছে। তারাও(সন্তান)দেশের টানে মৃত্যুকে সঙ্গী করে লড়েছে এই মাটিঁর জন্য। পরবর্তীতে দেশ স্বাধীন হওয়ার পরও দেশে সাম্য,প্রতিষ্ঠায় তাদের ভূমিকা এই বইয়ের প্রধান ছবি। আমি সাধারনত রিভিউ লিখা না,আসলে লিখার ইলেম কালাম নাই।ক্রার্চের কর্নেলের রিভিউ লিখা সাহসের ব্যাপার, সে সাহসও আমার নেই।তাই রিভিউ লিখছিনা ব্যাক্তিগত অণুভূতী ব্যাক্ত করছি বইটির ব্যাপারে। কর্নেল তাহের মূলত একজন স্বাধীনচেতা মানুষ। বিপ্লবের নেশায় যোগদেয় তৎকালীন পাকিস্তান আর্মিতে যুদ্ধে রণকৌশল শেখার জন্য। ছোটকাল থেকেই সমাজতন্ত্রের প্রতি দূর্বল ছিলেন। তিনি যখন স্কুলে পড়তেন, তখন ওনার একজন শিক্ষক ওনাকে শোনায় চট্টগ্রাম বিদ্রোহের গল্প,রোমাঞ্চিত হোন তিনি। তখন থেকেই বিপ্লবকে ধ্যানজ্ঞান করে। ১৯৭১ সালের জুন মাসে পাকিস্তান থেকে পালিয়ে যোগদেয় স্বাধীনতা যুদ্ধে,সেই পালানও ছিলো দুঃসাহসিক যাত্রা,ধরা পরলে নিশ্চিত মৃত্যুদণ্ড। মুক্তিযুদ্ধে যোগদিয়ে হন সেক্টর কমান্ডার শুরু করেন একের পর এক দুঃসাহসিক অপারেশন। একদিন কোনো এক অপারেশনে হারান একটি পা। তখন থেকেই হাটতে হয় ক্রাচে ভর দিয়ে। মুক্তিযুদ্ধে শুধু ওনি না একেক করে যোগদেয় ওনার সকল ভাই বোন। দুই ভাই পায় সম্মাননা খেতাব।তাহের পায় বীরউত্তম উপাধি। যুদ্ধশেষে যোগদেয় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে। রাজনৈতিক নানা কারনে পদত্যাগ করেন সেনাবাহিনী থেকে। আসেন মূলধারার রাজনীতিতে, হয় জাসদের সাথে সম্পর্ক।ওনার সাথে তিন ভাইও সরাসরি রাজনীতিতে আসেন।পরিকল্পনা করতে থাকে দেশে কীভাবে সাম্য প্রতিষ্ঠা করবে এবং সমাজতন্ত্রের ধাছে গড়ে তুলবে। হঠাৎ একদিন নেমে আসে এদেশে অন্ধকার, দেশের রাষ্ট্রপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বপরিবারে নিহিত হয়, সেনাবাহিনীর কিছু উগ্র ডানপন্থী অফিসারদের হাতে।খোন্দকার মোশতাক হয় দেশের রাষ্ট্রপতি। দেশের এই ঘোলাটে পরিস্থিতিতে ঢাকা ক্যান্টনমেন্টে চলতে থাকে ক্ষমতার লড়াই,অভ্যুত্থান পাল্টা অভ্যুত্থান। খালেদ মোশারফ বন্দি করে জেনারেল জিয়াকে। জিয়া কোনো আশার আলো না থেকে, ফোন করে কর্নেল তাহেরকে। তাহের তার নিজহাতে গড়ে তুলা বিপ্লবী সৈনিক সংস্থা এবং সাধারণ সিপাহিদের নিয়ে অভ্যুত্থান করে মুক্ত করেন জিয়াকে। জিয়া হন দেশের প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক। জিয়া নিজের ভোল পাল্টে,গ্রেফতার করতে থাকে শত শত সাধারন সৈনিক ও জাসদ কর্মী। গ্রেফতার হয় কর্নেল তাহের এবং তার প্রধান সহযোদ্ধারা। কঠিন নিরাপত্তায় শুরু হয় তাদের বিচারকাজ। বিচারের রায় হলো কর্নেল তাহের ফাসিঁ আদেশ। বাকিদের বিভিন্ন মেয়াদে সাজা। এই অদ্ভুত রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করার কোনো সুযোগ রাখা হয়নি।তাই তাহেরের আইনজীবী এবং আত্মীরা তাহেরকে বলে রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণ ভিক্ষা চাওয়ার জন্য। তাহের বীরের মতো উত্তর দেয়,এই রাষ্ট্রপতিকে আমি রাষ্ট্রপতি বানিয়েছি, তার কাছে প্রাণ ভিক্ষা চাওয়ার কোনো প্রশ্নই আসেনা। ২১জুলাই ১৯৭৬।ভোর ৪টায় ঢাকা কেন্দ্রিয় কারাগারে সমাপ্ত হয় একজন বিপ্লীর অসমাপ্ত কাজ। ক্ষুদিরাম, সূর্য সেনের সাথে আর একজন বিপ্লবীর নাম যোগ হয় কর্নেল তাহের। #অমর_হোক_কর্নেল_তাহের। লাল সালাম। রানা আহমেদ ২২/৯/২০
Was this review helpful to you?
or
অসাধারণ।
Was this review helpful to you?
or
বাংলাদেশের সৃষ্টির ইতিহাস নিয়ে অসাধারণ একটি বই৷ খুবই চমৎকারভাবে লেখক একজন অসাধারণ দেশপ্রেমিক কর্ণেল তাহেরের গল্প নিয়ে বাংলাদেশের ইতিহাস ধাপে ধাপে তুলে ধরেছেন৷
Was this review helpful to you?
or
অসাধরন অনবদ্য সৃষ্টি, শাহাদুজ্জামান স্যার বরাবরই প্রশংসনীয়।
Was this review helpful to you?
or
বইটি তে অনেক কিছু জানার আছে
Was this review helpful to you?
or
Very nine book❤️
Was this review helpful to you?
or
Wonderful
Was this review helpful to you?
or
ইতিহাস জানার সেরা বই,
Was this review helpful to you?
or
এই বইয়ের অনেক কিছু অনেকের কাছে সাংঘর্ষিক মনে হতে পারে।তবে আমি যতটুকু পড়েছি তাতে ভালো বলা যেতে পারে।
Was this review helpful to you?
or
Mind-blowing book
Was this review helpful to you?
or
অসাধারণ একটি বই। যেহেতু ইতিহাস নির্ভর লেখা তাই সংশ্লিষ্ট কিছু ছবি সংযুক্ত করলে ভালো হত, হয়ত!
Was this review helpful to you?
or
One of the finest book during the period 1971-1975 written by Jb. Shahadujjaman
Was this review helpful to you?
or
মাস্টারপিস একটা বই। গল্পাকারে সুন্দরভাবে ইতিহাস বর্ণিত।
Was this review helpful to you?
or
Great book
Was this review helpful to you?
or
Well written. It is hard to find books of that period and what happened to Colonel Taher and how he was betrayed and taken advantage of.
Was this review helpful to you?
or
অসাধারন !!!
Was this review helpful to you?
or
লেখক একজন বিপ্লবীকে নিয়ে বইটি লিখেছেন।মুক্তিযুদ্ধ শেষ হলেও যার বিপ্লব শেষ হয়নি। থাকে এদেশ গড়ার বিপ্লব। মহান মুক্তিযুদ্ধে পা হারানো এক সৈনিক সদ্য জন্ম নেয়া দেশে কাজ করছিলেন তার স্বপ্ন বাস্তবায়নে। ধোঁয়াশায় রাখা হয়েছিল এই বিপ্লবীকে। অপার সাহসিকতায় সে সময়ের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট তুলে ধরেছেন লেখক। তবে বইটিতে কোন রাজনৈতিক পক্ষপাতী দৃষ্টিভঙ্গিও আনা হয় নি। রাজনীতির মারপ্যাঁচে একজন যোদ্ধা কিভাবে ভিলেন হয়ে পারেন, বইটি পড়ে জানতে পারবেন।তবে লেখক সুনির্দিষ্ট কোনো সিদ্ধান্তে যান নি। কেবল ইতিহাস তুলে ধরেছেন।সিদ্ধান্ত পাঠকের উপর। প্রহসনের বিচারে ফাঁসি হয় কর্ণেল আবু তাহেরের।কিন্তু ফাসির মঞ্চে তিনি গেয়ে গাইলেন জীবনের গান। হাসতে হাসতে নিজেই দড়ি পড়লেন। এক সাহসী আর দেশপ্রেমিক যোদ্ধার গল্প জানতে আপনাকে আমন্ত্রণ। বইঃ ক্রাচের কর্নেল লেখকঃ শাহাদুজ্জামান প্রকাশনীঃ মাওলা ব্রাদার্স পার্সোনাল রেটিংঃ ৯/১০
Was this review helpful to you?
or
fabulous book
Was this review helpful to you?
or
বইয়ের ফ্লাপে লেখা কথাগুলাই বলতে হয়, "যাদুর হাওয়া লাগা অনেকগুলো মানুষ, নাগরদোলায় চেপে বসা একটি জনপদ, ঘোর লাগা এক সময়, একটি যুদ্ধ, একজন যুদ্ধাহত কর্নেল, কয়েকটি অভুত্থান। উপন্যাস 'ক্রাচের কর্নেল' বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে নাটকীয় কালপর্বের অনন্যসাধারণ গাঁথা।" এতো সাবলীল ভাষায় এতো ডিটেইলড ওয়েতে লেখক ঘটনাগুলা তুলে ধরেছেন এই বইটিতে সত্যিই অনন্যসাধারণ।
Was this review helpful to you?
or
রাজনৈতিক উপন্যাস কিংবা ইতিহাস আশ্রিত উপন্যাস পড়ে এতোটা মন খারাপ হয়নি কখনো, যতটা মন খারাপ হয়েছে কর্নেল আবু তাহেরকে নিয়ে লিখা এই উপন্যাসটা পড়ে। চোখের কোণে জলের উপস্থিতিতে সত্যিই মনটা খারাপ হয়ে যায়। আহ হা। তাহেরের সমাজতন্ত্রকে চাপিয়ে জয়লাভ করে জিয়াউর রহমানের জাতীয়তাবাদ। এ যেন রাজনৈতিক মতবাদগুলোর নিজেদের নিজেদের অস্তিত্ব টেকানোর লড়াই। কর্নেল আবু তাহের, শ্রদ্ধা।
Was this review helpful to you?
or
অসাধারণ বই।
Was this review helpful to you?
or
একজন ক্রাচের কর্নেল
Was this review helpful to you?
or
শাহাদুজ্জামান স্যার এর বই মানে বিশেষ কিছু
Was this review helpful to you?
or
হিস্টোরিকাল ফিকশন এর আগে তেমন একটা পড়া হয়নি। বলতে গেলে শাহাদুজ্জামানের লেখা এই ক্রাচের কর্ণেল বইটিই আমার প্রথম হিস্টোরিকাল ফিকশন। কর্ণেল তাহের ছিলেন একজন একনিষ্ঠ দেশপ্রেমিক। তিনি যুদ্ধে হারিয়েছিলেন তার বাম পাটি। ক্রাচে ভর করে চলতেন তিনি। এই অসীম সাহসী কর্ণেল দেশকে নিয়ে কতটা চিন্তা করত, কীভাবে দেশে বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করে দেশের জনগণের কষ্ট লাঘব করা যায় এসমস্ত বিষয় আপনি জানতে পারবেন এই ঐতিহাসিক উপন্যাসটির মাধ্যমে। মুক্তিযুদ্ধকে অনুভব করবেন খুব কাছ থেকে। মুক্তিযুদ্ধের সময় বিভিন্ন ঐতিহাসিক চরিত্রের কে কোন অবদানে ছিলেন তাও জানা যাবে অত্যন্ত সুখপাঠের মাধ্যমে। ক্রাচে ভর করে চলা এই কর্ণেল যদি বেঁচে থাকতেন বা বিশ্বাসঘাতকতার স্বীকার না হতেন তবে আমরা হয়ত আজ অন্যরকম এক বাংলাদেশে বাস করলেও করতে পারতাম। এই উপন্যাসটি আপনাকে এতই ঘটনা ঘনিষ্ঠ করে ফেলবে যে বইয়ের শেষটায় এসে তাঁর ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে আপনি অশ্রুজল না ঝরিয়ে পারবেন না।
Was this review helpful to you?
or
ক্রাচে ভর দেয়া একজন কর্ণেলের চোখে দেখা বাংলাদেশ ..
Was this review helpful to you?
or
যারা মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী ইতিহাস জানতে চান তারা যেন ভুলেও এই বইটি না পড়েন। যদি পড়তেই চান তাহলে প্রথমে মহিউদ্দিন আহমেদের "জাসদের উত্থান পতন" ও "বিএনপি-সময় অসময়" এবং কর্নেল এম এ হামিদের "তিনটি সেনা অভ্যুত্থান ও কিছু না বলা কথা" বইগুলো পড়ে নিন। এরপর এই কাল্পনিক উপন্যাসটি পড়ুন। কাল্পনিক বলছি এই কারণে যে উপন্যাসটিতে প্রকৃত ইতিহাসের চরম বিকৃতি করে কাল্পনিক অনেক কাহিনী ফাদা হয়েছে। যা একজন্ নবীন পাঠককে পুরোপুরিভাবে বিভ্রান্ত করে দেবে। এখানে কর্নেল তাহেরের জঘন্য অপকর্মকে আড়াল তাকে হিরো বানানো হয়েছে। অপরদিকে জিয়ার অবদানগুলোকে খাটো করে তাকে ভিলেনে রুপান্তর করা হয়েছে। জিয়া বা তাহের কেউই দুধে ধোয়া তুলসীপাতা ছিলেন না, উভয়েই ছিলেন চরম ক্ষমতালোভী এবং মুজিব বিদ্বেষী। মুজিব হত্যার পর উভয়েই নোংরা খেলায় মেতেছিলেন, যার বলি হয়েছে অসংখ্য নিরপরাধ সেনাসদস্য। তাদের দুজনেরই অন্ধকার দিক যেমন ছিল, তেমন ছিল আলোকিত দিক। কিন্তু একজনকে মিথ্যা হিরো আর অপরজনকে মিথ্যা ভিলেন বানিয়ে লেখক জাতিকে বিভ্রান্ত বই আর কিছু করেন নি।
Was this review helpful to you?
or
বর্তমান সময়ের জনপ্রিয় লেখক শাহাদুজ্জামানের এক অসামান্য সৃষ্টি “ক্রাচের কর্নেল” উপন্যাসটি। এই উপন্যাসটি সমান ভাবে জনপ্রিয় ও সমালোচিত। কর্নেল তাহেরকে কেন্দ্র করেই এই উপন্যাসের ঘটনাবলী বর্ণিত হয়েছে। কর্নেল তাহেরকে নিয়ে লেখকের পরিষ্কার লেখনী ও তৎকালীন সময়কার রাজনৈতিক পরিস্থিতির বর্ণনা এই উপন্যাসটির জনপ্রিয়তা ও সমালোচনার মূল কারন। ‘ক্রাচের কর্নেল' উপন্যাসটি ইতিহাস আশ্রয়ী উপন্যাস। ইতিহাস আশ্রয়ী উপন্যাস সাধারণত দুই ধরনের হয়ে থাকে- ১) কাল ঐতিহাসিক, তবে চরিত্রগুলো কাল্পনিক হয়ে থাকে। ২) কাল এবং চরিত্র দুটাই বাস্তব হয়ে থাকে। ক্রাচের কর্নেল দ্বিতীয় ধারায় পড়বে। কাল এবং চরিত্র বাস্তবের হওয়ার দরুন একজন পাঠক সবসময় একটি ইতিহাস নির্ভর উপন্যাসে শুধুই ইতিহাসকে খুঁজে বেড়ায়। শাহাদুজ্জামান এক্ষেত্রে মুনশিয়ানার পরিচয় দিয়েছেন। বইটিতে অনেক স্পর্শকাতর রাজনৈতিক ব্যাপার ছিলো। কিন্তু, তৎকালীন রাজনৈতিক পরিস্থিতির সঠিক ও তথ্যবহুল বর্ণনায় লেখক ছিলেন আপোষহীন। তিনি সাহসিকতার সাথে কিছু অপ্রিয় সত্য তুলে ধরেছেন। উপন্যসটির কেন্দ্র বা নয়ক হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে দেশের প্রতি প্রচণ্ড রকমের আবেগী এক বিপ্লবী, সাহসী ও নির্ভিক সৈনিক কর্নেল তাহেরের জীবন। এদেশকে নিয়ে ছিলো তার সীমাহীন আশা, স্বপ্ন দেখতেন এক উন্নত বাংলাদেশের। তার স্বপ্নগুলো বাস্তবায়িত হলে হয়ত এ দেশের চেহারাই পালটে যেত। একটি স্বাধীন দেশের মানুষের জন্য, তাদের উন্নতির জন্য স্বপ্ন দেখেছিলেন যুদ্ধক্ষেত্রে অসামান্য সাহসিকতার পরিচয় দিয়ে বীর বিক্রম খেতাবপ্রাপ্ত এই মুক্তিযোদ্ধা। তিনি স্বপ্ন দেখতেন এমন একটি দেশের, যে দেশের সকল নাগরিক সমান ভাবে তাদের মৌলিক অধিকার নিয়ে জীবন যাপন করতে পারবেন। কর্নেল তাহেরের অসামান্য সাহসের নিখুঁত বর্ণনা পাওয়া যায় উপন্যাসটির পরতে পরতে। তার প্রতিটি ভাই বোনকে তিনি যুদ্ধক্ষেত্রের জন্য তৈরি করেছিলেন। যখন মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলো তখন পশ্চিম পাকিস্তানের ক্যান্টনমেন্ট থেকে পালিয়ে তিনি যোগদান করেন মুক্তিযুদ্ধে। ১১ নং সেক্টরের সেক্টর কমান্ডার থাকাকালীন একটি অপারেশনে পা হারান তিনি। বইটিতে আছে সিরাজ শিকদারের সাথে তার পরিচয়, মুক্তিযোদ্ধের সময় তার অবদান। রক্তাক্ত ৭৫ এর ভয়ানক বেদনাদায়ক পর্বটি তিনি তুলে ধরেছেন নিপুণ দক্ষতায়। বীরউত্তম তাহেরকে দেশদ্রোহী প্রমাণ করে অস্বাভাবিক দ্রুততায় ফাঁসি কার্যকর করার লজ্জাজনক বর্ননা দেওয়া হয়েছে বইটিতে। প্রহসনের বিচারের মাধ্যমে তাঁকে ফাসিঁ দেওয়া হয়। ফাঁসিতে ঝোলানোর আগের বর্ণনা পড়ে কান্না পেয়ে যাওয়াটাই স্বাভাবিক। এক আদিম বিষণ্নতায় মন দ্রবীভূত হতে বাধ্য। ফাসিঁর দড়িতে নেওয়ার আগে তাঁকে তোওবা করতে একজন মৌলানা তাঁর কাছে গিয়েছিলেন, কিন্তু তাহের তওবা করেননি। কর্নেল তাহের বলেছিলেন তিনি কোন পাপ করেননি তাই তাঁর তোওবা করার প্রয়োজন নেই। ফাঁসির দড়ি তিনি নিজেই গলায় পড়তে পড়তে সহযোদ্ধা মেজর জিয়াউদ্দীনের লেখা একটা কবিতা আবৃত্তি করেন। জন্মেছি সারা দেশটাকে কাঁপিয়ে তুলতে, কাঁপিয়েই গেলাম । জন্মেছি তাদের বুকে পদচিহ্ন আঁকব বলে, এঁকেই গেলাম । জন্মেছি মৃত্যুকে পরাজিত করব বলে, করেই গেলাম । জন্ম আর মৃত্যুর দুটো বিশাল পাথর রেখে খেলাম । সেই পাথরের নিচে শোষক আর শাসকের কবর দিলাম । পৃথিবী, অবশেষে এবারের মতো বিদায় নিলাম । আমার দৃষ্টিতে ক্রাচের কর্নেল একটি অবশ্যপাঠ্য বই।
Was this review helpful to you?
or
যুদ্ধাহত, ক্ৰাচে ভর দিয়ে হাঁটা এক কর্নেল। কিংবা এ গল্প হয়তো শুধু ঐ কর্নেলের নয়। জাদুর হাওয়া লাগা আরও অনেক মানুষের। নাগরদোলায় চেপে বসা এক জনপদের। ঘোর লাগা এক সময়ের। গল্পটি শুরু করা যাক লালমাটিয়ার ঐ শ্যাম্পুর বিরাট বিলবোর্ডটি থেকে। বিলবোর্ডটিতে দিনের শেষ আলো আছড়ে পড়ছে। তায় ঠিক নিচে একা দাঁড়িয়ে আছেন লুৎফা। আকাশে মেঘ করেছে। বৃষ্টি হবে বুঝি বা। কোনো দূর দেশ থেকে শীত শীত হাওয়া আসছে। একটা আকাশি রঙের চাদর গায়ে জড়িয়েছেন লুৎফা। শিরিশ গাছের কয়েকটি পাতা উড়ে এসে পড়ছে লুৎফার চাদরে। লুৎফা সেই কর্নেলের স্ত্রী। তিনি দাঁড়িয়ে আছেন তার ছোট ছেলে মিশুর জন্য। মিশুর অফিসের বাস প্রতিদিন ঐ শ্যাম্পুর বিলবোর্ডের নিচে এসে দাঁড়ায়। লুৎফা সেই বাসের জন্য অপেক্ষা করছেন। অন্যমনস্ক, বিষণ্ণ। যেন অন্য কোনো গ্রহের ধুলো লেগে আছে তার গায়ে। বাস থেকে নামলে মিশুকে নিয়ে একটি রিকশায় উঠবেন লুৎফা। লাল আকাশকে পেছনে রেখে বাড়ি ফিরবেন তারা; কেউ কোনো কথা বলবেন না। এভাবেই চলছে প্রতিদিন। এরকমই নিয়ম বেঁধে দিয়েছেন ডাক্তার। মিশুকে নিয়ে সমস্যায় আছেন লুৎফা। সাইকিয়াট্রিস্টের চিকিৎসাধীন আছে মিশু। মিশুর সাম্প্রতিক লেখা কবিতাটি পড়ে সাইকিয়াট্রিস্ট চিন্তিত। কবিতা মিশু লেখে মাঝে মাঝে। সম্প্রতি সে লিখেছে, খুব ঠাণ্ডা মাথায় আমি একজনকে হত্যা করতে চাই। তারপর ঐ কবিতাজুড়ে অদ্ভুত সব ইমেজ। সে নাকি মানসপটে একটি গোলাপি ট্রেনকে ঝিকঝিক করতে করতে ছুটে যেতে দেখে। প্রতিদিন সকাল সাড়ে আটটায় মহাখালী রেল ক্রসিং-এ সেই গোলাপি ট্রেনটি আসে। তখন খুব হাওয়া বয় চারদিকে। রেললাইন আর ট্রেনের চাকা পরস্পরকে লেপ্টে থাকে। মিশুর মনে হয় যেন দুটি ধাতব ঠোঁট, চুম্বন করছে পরস্পরকে। মনোলোকে সে রেল ক্রসিং এ দাঁড়িয়ে ঐ মায়াবী প্রেমের দৃশ্য দেখে৷ দমকা হাওয়ায় তার চুল উড়ে, শরীর কাঁপে। রেললাইন আর ট্রেনের চাকার অঙ্গ অঙ্গ মিলনে যেন আশ্চর্য এক সৌন্দর্য রচিত হয়। মিশু লিখেছে আমি ঐ সৌন্দর্য চেখে দেখতে চাই। অন্যভাবে বললে একজনকে হত্যা করতে চাই আমি। ---ক্রাচের কর্নেল। পড়েছি বললে ভুল হবে, গ্রোগাসে গিলেছি বইটা। টুকটাক পড়লেও কম বই পড়ি নি এখন পর্যন্ত, কিন্তু এই বইটা কি করে বাদ পরে গেল বুঝি নি! যাই হোক দেরিতে হলেও পড়লাম। আশা করি যে কেউই পড়লে নিরাশ হবেন না।
Was this review helpful to you?
or
রাজনৈতিক উপন্যাস লেখা নিঃসন্দেহে অত্যন্ত কঠিন কাজ কারণ এখানে নিরপেক্ষতা বজায় রাখা প্রায় অসম্ভব। আর রাজনৈতিক উপন্যাসের চরিত্র যদি হয় আলোচিত এক ব্যক্তিত্ব তাহলে বিষয়টি আরো কঠিন। ক্রাচের কর্ণেল ঠিক তেমন এক বই। কিন্তু মনে রাখতে হবে দিনশেষে এটি একটি উপন্যাসগ্রন্থ, ইতিহাসের পাঠ্য নয়। কর্ণেল তাহের বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাসে সেই সব সাহসী সূর্যসন্তানদের একজন যারা স্রেফ সাহস দিয়ে পাক সামরিক জান্তাদের বুকে কাঁপন ধরিয়ে দিয়েছিলেন। কিন্তু স্বাধীনতা উত্তর বাংলাদেশে রাজনৈতিক আর আর্থসামাজিক পরিস্থিতির অবনতির দরুন বিপ্লব প্রতিবিপ্লব এর ধাক্কায় কর্ণেল তাহের পরিণত হন এক রাজনৈতিক যোদ্ধায়। ব্যক্তিগতভাবে কর্নেল তাহের সমাজতান্ত্রিক চিন্তায় দীক্ষিত ছিলেন। পরিশেষে রাজনৈতিক খেলায় এই দেশপ্রেমিক কর্ণেল গলায় পরেন ফাঁসির রশি। বইটিতে উনার ব্যক্তিগত ও পারিবারিক সংগ্রাম খুব সুন্দর ভাবে লেখা হয়েছে। উনার স্ত্রীর ভূমিকা দেখানো হয়েছে চমৎকারভাবে।
Was this review helpful to you?
or
This book is one of the masterpiece on our liberation war. The writer brilliantly described as to why we fought for our liberation, how we achieved our freedom, how things got complicated after the war, how craving for power led to one of the deadliest murders in mankind history, how the savior became the scapegoat and how once a major came to the helm of power about which he never dreamt of. This book has the appeal of clinging someone to the pages of it. A tempting and a must read book for every Bangladeshi.
Was this review helpful to you?
or
মুক্তিযুদ্ধ ও যুদ্ধ পরবর্তী ইতিহাসের জীবন্ত সাক্ষী ‘ক্রাচের কর্ণেল‘। আমার পড়া অসাধারণ বইগুলোর মধ্যে একটি।
Was this review helpful to you?
or
লেখক শাহাদজ্জামান অপ্রয়ি কিছু সত্য কথা তুলে এনেছেন অপার সাহসিকতায়। কোন ধরনের রাজনৈতিক প্রভাবে প্রভাবিক হননি লেখক।বইটি পড়ার সময় আমার একবারও মনে হয়নি ধোঁয়াচ্ছন্ন অথবা অস্পষ্ট।যা লিখেছেন সব তথ্য নির্ভর এবং সত্য কথা।উপন্যাসটি লিখা হয়েছে দেশের প্রতি প্রচন্ড আবেগি এক বিপ্লবীকে নিয়ে।দেশের প্রতি যার আবেগ ছিল সিমাহীন। তিনি ছিলেন অসমসাহসী যোদ্ধা এবং এক নির্ভীক বিপ্লবীর।তাঁর স্বপ্ন যদি পূরন হতো তা হলে হয়তো আজকের বাংলাদেশ মালয়শিয়া অথবা সিংগাপুরের মত দেশ হতো। স্বাধীন একটি দেশের জন্য খুব সাধারন একটা স্বপ্ন দেখেছিলেন বীরবিক্রম খেতাব পাওয়া অফিসার কর্নেল আবু তাহের। যে দেশে সবাই সমান ভাবে তাদের মৌলিক অধিকার নিয়ে জীবন-যাপন করতে পারবে।আমাদের ক্রাচের কর্নেল যে কি পরিমান সাহস নিয়ে জন্মে ছিলেন তা ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না। পশ্চিম পাকিস্তানের ক্যান্টনমেন্ট থেকে পালিয়ে তিনি যোগদান করেন মুক্তিযোদ্ধে। যুদ্ধের সময় একটি অপারেশনে পা হারান তিনি। বইটিতে আছে সিরাজ শিকদারের সাথে তার পরিচয়, মুক্তিযোদ্ধের সময় তার অবদান এবং রক্তাক্ত ৭৫ এর ভয়ানক বেদনাদায়ক পর্বটি তুলে দরেছেন নিপুণ দক্ষতায়। বীরউত্তম তাহেরকে দেশদ্রোহী প্রমাণ করে অস্বাভাবিক দ্রুততায় ফাঁসি কার্যকর করার লজ্জাজনক বর্ননা দিয়েছেন বইটিতে লেখক। প্রহসনের বিচারের মাধ্যমে তাঁকে ফাসিঁ দেওয়া হয়। ফাসিঁর দড়িতে নেওয়ার আগে তাঁকে তোওবা করতে একজন মৌলানা তাঁর কাছে গিয়ে ছিল কিন্তু তাহের তোওবা করেননি। কর্নেল তাহের বলেছিলেন তিনি কোন পাপ করেননি তাই তাঁর তোওবা করার প্রয়োজন নেই। ফাঁসির দড়ি তিনি নিজেই গলায় পরে ছিলেন এবং একটি কবিতা আবৃত্তি করেছিলেন।
Was this review helpful to you?
or
যাদুর হাওয়া লাগা অনেকগুলো মানুষ, নাগরদোলায় চেপে বসা একটি জনপদ,ঘোর লাগা এক সময়,একটি যুদ্ধ, যুদ্ধাহত এক কর্ণেল, কয়েকটি অভ্যুহ্থান। উপন্যাস ক্রাচের কর্ণেল বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে নাটকীয় কালপর্বের অনন্যসাধারণ গাঁথা। অসাধারণ একটি বই যার মায়া কাটানো অসম্ভব।
Was this review helpful to you?
or
আমার মতে, বইটা অবশ্যপাঠ্য । কর্ণেল তাহেরের জীবনীর জন্য তো বটেই, আমাদের দেশের ইতিহাসের বেশ কিছু অজানা অধ্যায়ের উন্মোচনের জন্যেও বটে।দশ ভাইবোনের এক বিশাল পরিবার ছিল মুক্তিযুদ্ধের সময়কার ১১নং সেক্টর কমান্ডার আবু তাহেরের । এর মধ্যে প্রায় সব ভাইবোনই অংশ নিয়েছিলেন যুদ্ধে । একই সেক্টরে । কেউ কেউ তাঁদেরকে একসঙ্গে বলতেন 'ব্রাদার্স প্লাটুন'। মনে পড়ে কর্ণেল তাহেরের কিশোরী বোন ডলি যখন যুদ্ধে যোগদান করেন, তখন কর্ণেল তাহের মুক্তিযোদ্ধাদের ক্যাম্পের সবার সাথে বোনকে পরিচয় করিয়ে দেন এই বলে "আমাদের তো অনেক গেরিলা আছে, এ হচ্ছে তোমাদের নতুন 'গেরিলি'।" বেশী সামনে চলে আসলাম, পেছনের একজন মহা গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রের নাম বাদ দিয়েই । তাঁর নাম আশরাফুন্নেসা । কর্ণেল তাহেরের মা...বলা ভালো 'আয়রন লেডি' হিসেবে ।কর্ণেল তাহেরের একটা স্বপ্ন ছিল আমাদের দেশটাকে নিয়ে । সে স্বপ্নপূরণের জন্য বেশ কয়েক ধাপ পূরণ করলেও কিছু কিছু জায়গায় ঘাটতি থেকে গিয়েছিল । যার জন্য ইতিহাস তাঁকে আজ স্মরণ করছে ট্র্যাজিক হিরো হিসেবে । কামালপুর অপারেশনে পাকিস্তানীদের সাথে সম্মুখযুদ্ধে পা হারানো ছিল একটা । অন্যটি বেশ পরে, পচাত্তরে জিয়াকে ক্যান্টনমেন্ট থেকে বের করে নিয়ে আসতে না পারাটা । কিছু কিছু ব্যাপারে ভাগ্যকেও দুষতে হবে, যেমন শেখ মণির কথা শুনে তাজউদ্দীনের প্রতি বঙ্গবন্ধুর বিরূপ মনোভাব থাকার প্রভাবও ছিল তাতে । এই বিপ্লবীর ঘটনাবহুল জীবনের অবসান তারই খুব কাছের বন্ধুমানুষ মেজর জিয়ার এক আকস্মিক কর্মকান্ডে।বইয়ের শেষদিকটাতে হাহাকারের মত অনুভূতি হতে একরকম বাধ্যই । এই আমাদের দেশেই এতোটা ব্রিলিয়ান্ট আর্মি অফিসার, মেধাবী রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, অকুতোভয় দেশপ্রেমিক এই লোকটার প্রতি এক ধরণের আক্ষেপ এসে যায় । বিশেষ করে, ফাঁসিতে ঝোলানোর আগের বর্ণনা যা যা ছিল, তাতে মন আক্রান্ত হয় বিষণ্নতায়, অনেকটা খুব নিকটাত্মীয়কে হারানোর মতই অনুভূতি....
Was this review helpful to you?
or
'ক্রাচের কর্নেল' লেখক- শাহাদুত জামান। লেখক শাহাদুজ্জামান'র টান টান উত্তেজনায় ভরা 'ক্র্যাচের কর্নেল' বইটিকে শুধুমাত্র একটি উপন্যাস বললে কম বলা হবে। কারন, এই অসাধারণ বইটি পড়লেই বুঝা যায় লেখক অনেক সময় নিয়ে, অনেক গবেষণার পর এই বইটি লিখেছেন। তার লেখনি ক্ষমতার গুণে এই বইটি একটি সাধারণ উপন্যাস থেকে কর্নেল তাহের-এর অসাধারণ জীবনী হয়ে উঠে। যারাই এই বইটি পড়বেন, তাদের কেউই যে বইটি শেষ না করে উঠতে পারবেন না এ ব্যাপারে নিশ্চিতভাবে বলে দেওয়া যায়।
Was this review helpful to you?
or
বই রিভিউঃ ক্রাচের কর্ণেল (শাহেদুজ্জামান) বাংলাদেশের বাম রাজনীতির দিকে বরাবরই ঝোঁক আছে আমার। তাই এই বইয়ের রিভিউ বায়াসড হতে পারে। আমার সবসময়ই মনে হয়,ইতিহাস একটা চরম থ্রিলার।এই বইটি আমার পড়া প্রথম রাজনৈতিক উপন্যাস।আসলে একে উপন্যাস না বলে মোর অফ এ দলিল বলা যায়। কখনো সংলাপে, কখনও ঘটনার বর্ণনায়,কখনো নিজের মতামতের ভিত্তিতে সুচারু ভাবে লেখক তুলে ধরেছেন কর্ণেল আবু তাহের বীরউত্তম এর জীবন। তাহের কখনোই স্থির হতে পারেননি জীবনে।এক ঝড়ের মত ছুটে বেড়িয়েছেন সমাজতান্ত্রিক একটি দেশ প্রতিষ্ঠার জন্য। বাংলাদেশের রাজনীতির অস্থির সে সময়কালের একটি সুন্দর চিত্র পেতে এই বইটি পড়া অবশ্যই উচিত। অনেক কথাই আমি বলতে পারি,কিন্তু সেসবই রাজনৈতিক হয়ে যাবে। তাই সযতনে এড়িয়ে গিয়ে একটি একটি কথাই বলব,ভেতরে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে বইখানা,হয়ত বাম বা সমাজতান্ত্রিক রাজনীতির প্রতি আমার সফট কর্ণারের জন্যই।
Was this review helpful to you?
or
বই : ক্রাচের কর্নেল লেখক : শাহাদুজ্জামান প্রকাশনী : মাওলা ব্রাদার্স মুদ্রিত মূল্য : ৪৫০ টাকা। ব্যক্তিগত রেটিং : ৯.৫/১০ একটা মানুষ কলেজ জীবন থেকেই একটা স্বপ্ন দেখছেন। বৈষম্যবিহীন সমাজ প্রতিষ্ঠার, একটা বিপ্লবের মাধ্যমে সমাজতান্ত্রিক দেশ গড়ার স্বপ্ন। এই স্বপ্নেই বিভোর ছিলেন তিনি। একটা চূড়ান্ত বিপ্লবের জন্য তিনি এক এক করে নিজেকে সব দিকে প্রস্তুত করতে থাকেন। তিনিই আমাদের ক্রাচের কর্নেল, কর্নেল তাহের, বীর উত্তম। যখন তৎকালীন পূর্বপাকিস্তানের কেউই স্বাধীনতার স্বপ্ন দেখতেন না তখনই তিনি স্বপ্ন দেখতেন একটা আলাদা রাষ্ট্রের, সেই ষাটের দশকেই। বিএ পাশ করেই আর্মিতে জয়েন করেন কিন্তু তার আর্মিতে যোগ দেয়ার উদ্দেশ্য অন্য সকলের চেয়ে আলাদা, তিনি চান একটা বিপ্লব। তিনি জানেন শুধু রাজনীতির মাধ্যমে সমাজতান্ত্রিক বিপ্লব ঘটানো যাবেনা প্রয়োজন হতে পারে সশস্ত্র সংগ্রামের। আর এজন্যই সামরিক জ্ঞান লাভের জন্য যোগ দেন আর্মিতে। আর্মিতে একের পর এক সাফল্য অর্জন করেন, কিন্তু স্বপ্ন একটাই থাকে একটা বিপ্লব। বিপ্লব করবেন বলেন ছুটিতে এসে তার সব ভাই বোনকে তিনি সামরিক প্রশিক্ষণ দিতে থাকেন শিখান বোমা বানানো, তাদেরও তিনি প্রস্তুত করেন বিপ্লবেরর জন্য। পাশাপাশি চলে সমমনা রাজনৈতিক দলের সাথে যোগাযোগ। সময় এগিয়ে যায়.... আসে ১৯৭১ সাল। আমাদের কর্নেল তখন পশ্চিম পাকিস্তানে, সেখন থেকে পালানোর জন্য মরিয়া হয়ে আছেন। এবং এক সময় পালিয়ে এসে যোগ দেন মুক্তিযুদ্ধে। ১১ নং সেক্টরের কমান্ডার হয়ে সেই সেক্টরকে সম্পূর্ণ নিজের মতো করে তৈরি করনে স্বপ্নে বিভোর কর্নেল। অসীম বীরত্বের সাথে যুদ্ধ করেন হারন নিজের এক পা, দেশ স্বাধীন হলে খতাব পান বীর উত্তম। স্বাধীনতার পর থেকেই যোনো কর্নেল তাহেরের স্বপ্ন ভাঙতে থাকে। এই বাংলাদেশ কি তিনি চেয়েছিলেন? তারপরও তিনি ভেঙে পড়েন না আবার স্বপ্ন দেখেন। কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্টে বিগ্রেড কমান্ডার হয়ে গিয়ে সেখানে তৈরী করেন সম্পূর্ণ অন্যরকম বিগ্রেড। অার্মিকে তৈরী করতে থাকেন গণমানুষের আর্মি। কিন্তু দ্রুত দেশের দৃশ্যপট পাল্টিতে থাকে। যখন দেখেন নিয়মতান্ত্রিকভাবে কোনো বিপ্লব সম্ভব হচ্ছে না তখন রিজাইন করেন আর্মি থেকে। যোগ দেন জাসদের রাজনীতিতে অনেকটা আড়ালে থেকেই রাজনীতি করেন। দ্রুত দেশের দৃশ্যপট পাল্টাতে থাকে। এক সময় বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়, যা কর্নেল তাহের কখনোই চান নি। তাঁরপরেই এদেশের রাজনীতি যেনো রাতারাতি সম্পূর্ণ বদলে যায়। এমন সময় আমদের রাজনীতিতে জাসদের অবস্থান ছিল তুঙ্গে। যার নেতৃত্ব ছিলো অনেকটা কর্নেলের ওপরই...... একসময় দেশের ভবিষ্যৎ কর্নেল তাহেরের হাতেই চলে আসে। বন্দি সেনাপ্রধান জিয়াউর রহমানের ফোনে তার কন্ঠে সেইভ মাই লাইফ বাক্য শুনে কর্নেল ভাবেন বিপ্লবের এখনি সময়। ৭ নভেম্বর বাংলাদের ইতিহাসে সে এক স্মরণীয় দিন। সেদিনই ঘটে উপমহাদেশের ২য় সিপাহি বিদ্রোহ, মুক্ত হন বন্দি সেনা প্রধান । কিন্তু কর্নেল তাহেরের স্বপ্ন বাস্তব হয় না, যে স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য তিনি আর্মিতে যোগ দিয়েছিলেন, এক বিশ্বাসঘাতক সেনা প্রাধানের কারণে। কি নির্মম পরিহাস! যে সেনাপ্রধানকে প্রাণে বাঁচালো সেই তাঁকে ফাঁসি দেয়। কর্নেল তাহের আর জাসদকে না জানলে বাংলাদেশের ইতিহাসের অনেক অজানা অধ্যায় জানা হবে না। লেখক শাহাদুজ্জামান অসাধারণ লিখেন। তাঁর লেখার হাতের দ্বারাই হয়তো কর্নেল তাহের পরিপূর্ণভাবে তার স্বরূপে উপন্যাসটিতে ফুটে ওঠতে পেরেছেন। আর লেখক শাহাদুজ্জামান আত্মজৈবনিক উপন্যাস লেখায় যে মুন্সিয়ানা দেখিয়েছেন তা সব সমালোচকের নজর কেড়ে ছিলো। বইটা আমি তন্ময় হয়ে পড়ছিলাম । আমি নির্দ্বিধায় বলতে পারি এটা আমার পড়া অন্যতম শ্রেষ্ট বই।
Was this review helpful to you?
or
কি অসাধারন একটা বই। মাত্রই শেষ করলাম আর ভাবলাম এই বইয়ের রিভিউ মাস্ট দিতে হবে। তাই সাথে সাথেই বসে পড়লাম। আসলে এখনো একটা ঘোরের মধ্যে আছি। আসলে বইটা পড়ে কিছুটা আবেগপ্রবণও হয়ে গেছি৷ বইটি হলো এক যোদ্ধার সম্পর্কে যে সপ্ন দেখেছিল এক সোনার বাংলার। নাম তার কর্নেল আবু তাহের বীরউত্তম। হে একজন মুক্তিযোদ্ধা, তাও সাধারণ কেউ নন, সেক্টর ১১ কমান্ডার আর জীবিত থাকা মুক্তিযোদ্ধাদের দেওয়া সর্বোচ্চ সম্মান বীরউত্তম পাওয়া মানুষ। বইটি একটি বায়োগ্রাফি কিন্তু তাই বলে যে শুধু তার জীবনীই তুলে ধরেছেন তা নয়। তুলে ধরেছেন বাংলাদেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাগুলো। প্রাক-মুক্তিযুদ্ধ থেকে শুরু করে মুক্তিযুদ্ধের পরবর্তী অবস্থা পর্যন্ত। বইটিতে উঠে এসেছে বাংলার ইতিহাসের সব বরনীয়, স্মরনীয় আর কিছু কুখ্যাত মানুষের নাম এবং কর্ম। আছে কিছু গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা যেমন দেশভাগ, মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযুদ্ধের পর একটি ভেঙে পড়া জাতির হাল ধরা, বাকশাল গঠন, মুজিব হত্যা, খন্দকার মোশতাকের ক্ষমতা দখল, মেজর খালেদ মোশাররফের সেনাবাহিনীর চেইন অব কমান্ড ফিরিয়ে আনার প্রচেষ্টা, কমিউনিজম প্রতিষ্ঠার চেষ্টা, বাংলার দ্বিতীয় সিপাহি বিদ্রোহ আর সর্বোপরি একজন লোকের সপ্নভঙ্গ এবং বিশ্বাসঘাতকতা ও অবিচারের স্বীকার হওয়া। বইয়ের সিকুয়েন্স অনেক সুন্দর করে এগিয়েছে। একটুর জন্যও বোরিং ফিল করবেন না। লেখকের শব্দচয়ন খুবই সুন্দর। যতক্ষন বই পড়তেছিলাম ততক্ষন আলাদা একটা জগতে ছিলাম। যেমন প্রতিটা ঘটনা চোখের সামনে ঘটছে। আর কর্নেল তাহের লোকটার জন্য সম্মানের আলাদা একটা স্থান তৈরি হয়েছে। He was a great man with great personality and bravery and self-respect. I got goosebumps while reading the book. পুরো ফ্যামিলি ছিল একটা বিল্পবের সংস্থা। যেহেতু বায়োগ্রাফি তাই আর কাহিনী সংক্ষেপ দিলাম না। নিজেরাই পড়ুন আর জানুন এই মহান ব্যক্তি সম্পর্কে। কি ছিল তার শেষ পরিনতি, কেমন ছিল তার জীবন, তার জীবনের মূলমন্ত্র কি ছিলো? । জানতে হলে অবশ্যই বইটি পড়ুন৷ শুধু কর্নেল তাহের নয় জানতে পারবেন বাংলাদেশের অজানা এক অধ্যায়৷
Was this review helpful to you?
or
কেঁদেছি শেষ পাতায় এসে
Was this review helpful to you?
or
বইঃক্রাচের কর্ণেল। লেখকঃশাহাদুজ্জামান। রিভিউঃএকজন যুদ্ধাহত কর্ণেল। যুদ্ধে যিনি হারিয়েছেন একটা পা। তাই ক্রাচে ভর দিয়েই পথ চলতে হয় তাকে। তিনি আর কেউ নন, তিনি বাংলাদেশের ইতিহাসের ট্রাজেডিক হিরো কর্ণেল আবু তাহের। নানা স্বপ্ন নিয়ে যিনি যোগদান করেন সেনাবাহিনীতে। দেশে যখন যুদ্ধ শুরু হয় তাহের তখন পাকিস্তানে। যুদ্ধে যোগ দিতে পাকিস্তান থেকে থেকে পালিয়ে আসেন দেশে। তিনি ময়মনসিংহ সীমান্তের ১১ নং সেক্টরের অধিনায়ক হিসেবে যুদ্ধ করে দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে রাখেন বড় ভূমিকা। তাহের ছিলেন একজন কমিউনিস্ট চেতনাধারী। তিনি মনে প্রাণে চেয়েছিলেন বাংলাদেশ স্বাধীন হোক। কিন্তু এত তাড়াতাড়ি হোক তিনি সেটা চান নি। কারণ তিনি চেয়েছিলেন বাংলাদেশ একটা সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্র হোক। তিনি চেয়েছিলেন সর্বোস্তরের মানুষের অধিকার নিশ্চিত হোক। তিনি সর্বদা বৃহৎ স্বার্থের কথা ভেবেছেন। তিনি ভেবেছিলেন মাত্র নয় মাসের যুদ্ধে বৃহৎ স্বার্থের চেয়ে ক্ষুদ্র স্বার্থই প্রাধাণ্য পাবে বেশি। কারণ এত অল্প সময়ে যুদ্ধ জয়ের ফলে মানুষ বৃহৎ স্বার্থের বিষয়টি ঠিক উপলব্ধি করতে পারবে। তারা তাদের ব্যক্তিগত স্বার্থের পূর্ণতাটুকু পেলেই খুশি হবে। কারণ পাকিস্তান সরকারের জাতাঁকলে পিষ্ট জাতি, তাদের হাত থেকে রেহাই পেয়েই হয়তো ভাববে তারা সব পেয়ে গেছে। কিন্তু তারা যদি যুদ্ধে আরেকটু বেশি সময় অতিবাহিত করতো, তবে তারা তাদের বৃহৎ স্বার্থটুকু উপলব্ধি করতে পারতো। কারণ বেশি সময় ধরে যুদ্ধ করলে, তারা একে অপরের উপর হয়তো আরও বেশি আস্থা অর্জন করতে পারতো। তারা হয়তো সমাজতন্ত্রের মূল বিষয়টি বুঝতে পারতো। কিন্তু মাত্র নয় মাসের যুদ্ধে তারা নিজেদের স্বার্থরক্ষার ঘোর কাটিয়ে ওঠার আগেই স্বাধীনতা লাভ করেছিলো। তাই বৃহৎ স্বার্থের বিষয়টি তাদের উপলব্ধির সময় হয়ে ওঠে নি। এই বিষয়টিই ভেবেছিলেন কর্ণেল তাহের। এটি যে শুধু তার ভাবনা ছিলো না, তা আমরা বাংলাদেশের যুদ্ধ পরবর্তী কিছু অপ্রীতিকর ঘটনা প্রত্যক্ষণ থেকেই বুঝতে পারি। যে মহান নেতার আহ্বানে একদিন বাঙালি যুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়েছিলো, সেই মহান নেতাকেই সেনাবাহিনীর কয়েকজন তরুণ মুক্তিযোদ্ধার হাতেই শাহাদাৎ বরণ করতে হলো। কিন্তু কেন? এর নেপথ্যের কারণ কি ছিলো? এখানেও কি কর্ণেল তাহেরের দুশ্চিন্তার বিষয়টি মূখ্য নয়? তিনি চেয়েছিলেন মানুষের মাঝে ব্যক্তি চিন্তার চেয়ে বৃহৎ চিন্তার উদয় হোক। মাত্র নয় মাসের যুদ্ধে তা যে হয়নি, তা আমরা শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকাণ্ড থেকে বুঝতে পারি। কারণ সব যুদ্ধই শুরু হয় ব্যক্তি স্বাধীনতাকে মাথায় রেখে, কিন্তু পরে তা হয়ে ওঠে সর্বসাধারণের স্বাধীনতার যুদ্ধ। যা বাংলাদেশের ক্ষেত্রে ঠিক ঘটেনি। তাই দেশের কথা বাদ দিয়ে ব্যক্তিগত আক্রোশ প্রাধান্য পেয়েছে শেখ মুজিবুর রহমানের মৃত্যুর পেছনে। এই উপন্যাসে আমরা দেখেছি, কিভাবে বিশ্বাসঘাতকতার কাছে প্রবল বিশ্বাস হেরে যায়। এ উপন্যাস আমাদের মনে করিয়ে দেয় কাদায় আঁটকে থাকা সে বাঘের গল্পের গল্প। যে বাঘ তার উদ্ধারকারীকে শেষমেশ ভক্ষণ করতে চাই। গল্পে হয়তো তা শেষমেশ সম্ভব হয়ে ওঠে না। কিন্তু এখানে তা সম্ভব হয়েছে। এ উপন্যাসে আমরা দেখেছি 'জাসদের' উত্থান। এ উপন্যাসে আমরা দেখেছি এক প্রহসনের বিচারকার্য। যা থেকে গেছে দেয়ালের ওপাশে লোকচক্ষুর অন্তরালে। এ উপন্যাসে আমরা দেখেছি একজন খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধার বিচারের দায়িত্ব যুদ্ধের সময় পাকিস্তানে লুকিয়ে থাকা একটি লেংটি ইঁদুরের উপর পড়ে। যা আমাদের হাসির উদ্রেগ করেনি, বরং কাঁদিয়েছে অন্যায়ের কাছে ন্যায়কে ভূলুণ্ঠিত হতে দেখে। এ উপন্যাসে আমরা দেখেছি একজন স্বপ্নবাজ মানুষকে। যিনি স্বপ্ন দেখতেন একটি সমাজতান্ত্রিক বাংলাদেশের। যেখানে সর্বসাধারণের অধিকার সর্বদা সমুন্নত থাকবে। যে দেশের জন্য তিনি প্রাণ বাজি রেখে যুদ্ধ করে দেশকে স্বাধীন করেছিলেন। সেই স্বাধীন দেশের ফাঁশির কাষ্ঠে তাকে ঝুলতে হয়েছে। যা এতটাই হৃদয়বিদারক যে, তা যে কোন বিবেকবান মানুষের চোখের কোণে জল আনতে বাধ্য। তবে তারা তা রুমালে মুছে ফেলতে পারে। কিন্তু ইতিহাসের চোখের কোণে যে জল এসেছিলো তা হয়তো কেউ মোছাতে পারবে না কোনদিন। কারণ ইতিহাস যে শাশ্বত। তাই ইতিহাস নতুন করে লেখা হয়, পুরোনো চরিত্রগুলো বদলে নতুন চরিত্র আসে। ইতিহাসের এ অনন্ত চক্র চলতেই থাকে। কিন্তু আগের চরিত্রগুলোর সাথে ঘটে যাওয়া অবিচার, ইতিহাসকে বয়ে বেড়াতে হয় আজীবন।
Was this review helpful to you?
or
অসাধারণ একটি বই।
Was this review helpful to you?
or
#রিভিউ প্রতিযোগ-মার্চ,২০১৯ বইয়ের নাম:ক্রাচের কর্নেল লেখক-শাহাদুজ্জামান "এক কর্নেলের গল্প শোনা যাক।যুদ্ধাহত, ক্রাচে ভর দিয়ে হাঁটা এক কর্নেল।কিংবা এ গল্প হয়তো শুধু ঐ কর্নেলের নয়।জাদুর হাওয়া লাগা আরও অনেক মানুষের।নাগরদোলায় চেপে বসা এক জনপদের।ঘোর লাগা এক সময়ের।" গল্পটা কর্নেল তাহেরকে নিয়ে।তাহের,তার স্ত্রী লুৎফা,ছেলে মিশু,তার মা,বাবা আর ভাইদের নিয়েই মূলত কাহিনী এগিয়ে চলে।ব্যক্তিগত গল্পের পাশাপাশি আছে ইতিহাসের গল্পও।আইয়্যুব খানের আমল থেকে শুরু করে ৭৫' এর মুজিব হত্যা পর্যন্ত নানান সত্য কাহিনী গল্পের মধ্য দিয়ে তুলে ধরা হয়েছে।উঠে এসেছে মুক্তিযুদ্ধের ঘটনাবলি। সমাজতন্ত্রের মধ্যে কিভাবে তাহের ও তার ভাইয়েরা সম্পৃক্ত হয়ে পড়ে,তার গল্প আছে।সমাজতন্ত্রের প্রচার আর সত্য খুঁজে বের করার জন্য তাহের ও তার ভাইরা যে দুর্গম পথ পাড়ি দিয়ে,পাহাড়ে জঙ্গলে থেকেছিল,তার গল্প বলা হয়েছে।মতিয়া চৌধুরীর সাথে ট্রেনে যেতে যেতে রাজনৈতিক আলাপচারীতার মধ্য দিয়ে আইয়্যুব খানের সময়কার পরিস্থিতি বর্ণনা করা হয়েছে।মুক্তিযুদ্ধে কর্নেল তাহেরের ভূমিকা,সেই সময়ের অবস্থা,পাকিস্তানিদের বর্বরতা সুবিস্তারে লেখক পাঠকদের বুঝিয়ে দিয়েছেন।মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী করুণ সময়ের ধারণা পাবেন পাঠকরা।বুঝতে পারবে বঙ্গবন্ধু কিভাবে দিশেহারা হয়ে পড়েন যুদ্ধাহত বাংলাদেশকে গড়ে তুলতে,কিছু ভুল সিদ্ধান্ত নেন যার করুন পরিণাম তাকে ও দেশকে ভোগ করত হয়েছিল। মুজিব হত্যার বাস্তবতা অনেকেই জানেন না।ক্রাচের কর্নেলে বিস্তারিত ভাবে দেয়া হয়েছে এর পেছনের গল্প।কারা কারা জড়িত,কেন জড়িত,কিভাবে নৃশংসভাবে বঙ্গবন্ধু কে হত্যা করা হয়েছিল সবকিছুর সত্যতা প্রকাশ করে দিয়েছেন শাহাদুজ্জামান।হাসানুল হক ইনু,মতিয়া চৌধুরি,খন্দকার মোশতাক আহমেদ,খালেদ মোশাররফ আর জিয়াউর রহমান দের সাথে কর্নেল তাহেরের কথোপকথনের মাধ্যমে তাদের চরিত্র, ব্যাবহার ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।জিয়া কিভাবে ষড়যন্ত্র করে তাহেরকে ফাঁসিকাঠে ঝুলিয়ে দিয়েছিল শুধুমাত্র নিজের স্বার্থরক্ষার জন্য,খন্দকার মোশতাকের পাকিস্তান প্রীতি এবং কেন তিনি বঙ্গবন্ধুকে হত্যার ছক কেটেছিলেন,খালেদ মোশাররফের প্ল্যান সহ আরো অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্যের সাথে আছে মজার কিছু গল্পও। যারা ইতিহাস পছন্দ করেন,ইতিহাস জানতে যান,সত্যের অন্বেষণ করতে চান বইটি তাদের জন্যে।সত্যের পাশাপাশি লেখকের অসাধারণ সাহিত্য জ্ঞানের পরিচয় পাওয়া যায়।ভাল লাগার মতো বই। "তুমুল বৃষ্টি নামে একদিন।কি মনে হয় লুৎফার,ছাতা মাথায়,কাদা পথ হেঁটে হেঁটে কবরের কাছে চলে যান তিনি।বাতাসের ঝাপটায় ভিজে যায় তার শাড়ি।ঘন বৃষ্টিতে আবছা দেখা যায় অস্ত্র হাতে রেইনকোট পরা সিপাইরা দাঁড়িয়ে আছে এদিক ওদিক।বৃষ্টিতে ঝুম ভিজছে কবরটি।পানি চুইয়ে চুইয়ে ঢুকছে কবরের অনেক ভেতরে।সেখানে শুয়ে আছে এক অমীমাংসিত মানুষ।লুৎফা ভাবেন:মানুষটা ভিজছে।"
Was this review helpful to you?
or
I know the meaning of strong personality now.
Was this review helpful to you?
or
#রকমারি_পাঠক_সমাগম_বুক_রিভিউ_প্রতিযোগিতা_৪ পর্ব - ৪ বইয়ের নামঃ ক্রাচের কর্নেল লেখকঃ শাহাদুজ্জামান প্রকাশনীঃ মাওলা ব্রাদার্স পৃষ্ঠাঃ ৩৫১ মূল্যঃ ৪০০ টাকা রিভিউঃ শাহাদুজ্জামানের গল্প বলার নিজস্ব একটা ধাঁচ আছে।বইটি পড়া শুরু করে শেষ না করা পর্যন্ত একটা অতৃপ্তি কাজ করে।বইটির প্রধান চরিত্র কর্ণেল তাহের হলেও বেশ কিছু চরিত্র প্রধান চরিত্রের মতোই গুরুত্ব বহন করে। এদের মধ্যে একজন হচ্ছেন আশরাফুন্নেসা।কর্ণেল তাহেরের মা।এমন মা যদি ঘরে ঘরে থাকতো তাহলে দেশটাকে অনেকখানিই পাল্টে দেয়া যেত। একজন মা তার পরিবারের সবকটি ছেলেমেয়ে কীভাবে এতো দেশপ্রেমী,সুসংগঠিত আর আত্মপ্রত্যয়ী করে গড়ে তুলতে পেরেছিলেন তা আশরাফুন্নেসাকে দেখলে বোঝা যায়।যুদ্ধের সময় এই পরিবারের কেউই নিষ্ক্রিয় ছিলেননা এমনি আশরাফুন্নেসা নিজেও। বইটির মূল চরিত্র কর্ণেল তাহের।ছোটবেলা থেকেই তার লিডারশিপ কোয়ালিটি চোখে পরার মতো।সংগঠন করার ক্ষমতা তার মধ্য ছিলো ব্যাপক।তার সাহসী আর দৃঢ় আত্মপ্রত্যয়ী গুণটি বুঝা যায় বেশ।যখন থেকে তিনি সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থা বুঝতে শুরু করেন, তখন থেকেই দেশকে সেদিকে নিয়ে যেতে নিজের জীবনের ছক সাজাতে শুরু করেন। তার ভাই-বোনবগুলোর মধ্যেও ছিলো তার চারিত্রিক গুণের ছায়া যুদ্ধের সময় তো বটেই পরবর্তী সময়ে তাহেরের নেতৃত্বে বিপ্লবের সময় তারা রেখেছিলেন সাহসীকতার পরিচয়।তার এক বোন গেরিলা যুদ্ধেও অংশ নিয়েছিলেন।দেশের জন্য তার ভাই তো নিজের বাসাতেই ট্রেনিং এর ব্যবস্থা করেছিলেন।মানুষ হিসেবে তারা ছিলেন সৎ ও স্পষ্টবাদী। বৈচিত্র্যময় লেখনিতে ১৯৭৫ এর পর থেকে পরপর যে তিনটি অভ্যুত্থান তা নিয়ে বেশ স্পষ্ট আইডিয়া আছে।বইটিতে বিভিন্ন রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের বর্ণনা সহ ওই সময় গুলোতে বিভিন্ন ব্যক্তিত্বের ভূমিকা।অনেকটা আশ্চর্য হয়েছি জিয়াউর রহমানের দিকটা পড়ে।এরকম আচরণের পরেও কীভাবে তিনি মানুষের কাছে এতোটা জনপ্রিয় বোঝা হয়ে ওঠেনি।আর কর্ণেল তাহেরের রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গিকে সমর্থন করিই বা না করি,তার মতো এমন দেশপ্রেমি মানুষের জন্য সন্মান একদম ভেতর থেকে আসে। মোটকথায় ইতিহাস নিয়ে আগ্রহ না থাকলেও শাহাদুজ্জামান তার এই বইটির মাধ্যমে একপ্রকার বাধ্য করবে সেই উত্তাল দিনগুলোতে নিয়ে যেতে। লিখেছেনঃ সাদিয়া তামান্না নিশাত
Was this review helpful to you?
or
এক কর্নেলের গল্প শোনা যাক,যুদ্ধাহত ক্রাচে ভর দিয়ে হাটা এক কর্নেল--কথাগুলো আমার না একটা বইয়ের ;নাম:ক্রাচের কর্নেল লেখক:শাহাদুজ্জামান প্রথমেই বলে রাখি অনেক কিছু লিখব পারলে পইড়েন আশা করি অনেক কিছু জানতে পারবেন।ভুল হইলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। আমার নিজের কাছে নিজেকে ছোট মনে হচ্ছে এখন এত মহৎ মানসিকতা,বিপ্লবী,দেশপ্রেমিক মানুষ এর সম্পর্কে এতদিন কিছুই জানতাম না??আমরা বাংগালী আসলেই আজব ক্যারেক্টার,আমি যার কথা বলছি তার নাম কর্নেল তাহের,বিপ্লবির ঘোরে সারাজীবন স্বপ্নবাজের মত ভেসে বেড়িয়েছেন তিনি।ভাবতে অবাকই লাগে আমরা অনেকেই হয়ত জানি না বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ এর ১১ নং সেক্টরের সেক্টর কমান্ডার তিনি,কিন্ত বিধি বাম এর মতো মহৎ এক দেশপ্রেমিক কে ঘায়েল হতে হল সমসাময়িক কিছু ক্ষমতালোভী শাসক,যেই লোকটা উদ্ধুদ্ধ হয়েছিল ছোটবেলা চিটাগাং এর পাহাড়ে মাস্টারদা সুর্যসেন এর বিপ্লবী চেতনায় আগেই আন্দাজ করেছিলেন আমাদের স্বাধীনতার সংগ্রামের,যে সারাজীবন ভারতএর কাছে জিম্মি হয়ে থাকার ভয়ে ভারতের বা কোন আন্তর্জাতিক মহলের সাহায্যের ধার ধারেনি তাকেই কি ৭৬ এ এক অমানিশাময় রাতে ফাসিতে ঝুলতে হলো,যে মানুষটা সারাজীবন রক্তপাতহীন সংগ্রামের কথা চিন্তা করে আসছে তাকে ফাসিতে ঝোলাতে কি কারো একটুও বাধল না,কার ই বা বাধবে,আমরা যে অধম।স্বাধীনতা পরবর্তিতে ক্ষমতার লোভে যে সকল বিকৃত মস্তিস্কের জন্ম হয়েছিল তাদের জন্মপরিচয় নিয়ে সবাই সন্দেহ করবে এটাই স্বাভাবিক।খন্দকার মোশতাক,,চাষী,ঠাকুরের মত কিছু পশুদের নাম।মহিউদ্দিনের পরিবারের ১১ সন্তানের একজন তাহের বাবা মা নান্টু নামে ডাকত,একটা পরিবারের সবাই যখন বিপ্লবি ছোটভাই আনোয়ার,বেলাল,বাহার এবং বড় ভাই ইউসুফ সবাই যেন এক একটা জীবন্ত গোলাবারুদ। তবুও সফল হয়নি আমাদের কর্নেলের জীবনের স্বপ্ন।আমি এটা নিশ্চিত বলতে পারি তার মত দেশপ্রেমিক,মুক্ত চিন্তাধারার মানুষ যদি দেশে আর কয়েকটা থাকত যে কিনা ফাসির মঞ্চে উঠেও কোন আপোস করেনি এক হাতে ক্রাচে ভর করে উঠেছিলেন মঞ্চে কারো সাহায্য ছাড়াই বলেছিলেন জন্ম আরর মৃত্যুর দুটি বিশাল পাথর রেখে গেলাম সেই পাথরের নিচে শোসক আর শাসকের কবর দিলাম, তাহলে আমাদের আর ভাবতে হতো না।কর্নেল তাহের এর সকল সম্ভাবনাই সত্যি হয়েছিল,সে একক সিপাহী বিপ্লবের জন্ম দিয়েছিল যেন মনে হল আবার যেন জেগে উঠেছে বাংলার লেনিন,যা সংগঠিত হয় ১৯৭৫ এর ৭ নভেম্বর যাকে আমরা বিপ্লব ও সংহতি দিবস নামে জানি তারই রুপকার ছিলেন আমাদের ক্রাচের কর্নেল।যে কিনা প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছিলেন একটা সমাজতান্ত্রিক সমাজ ব্যাবস্থার কিন্ত আমাদের দেশের হর্তাকর্তা রা তখন পরিনত হয়েছিল সেরা মূর্খতে তারা জানে না যে যুদ্ধবিদ্ধস্ত দেশের জন্য ধনতন্ত্র কাল সাপ সমাজ তন্ত্র যদি সে সময়ই প্রতিষ্ঠা হতো তাহলে হয়তো আমরা আরো উঁচু পর্যায়ে থাকতে পারতাম।সবচেয়ে অবাক লাগে জেনারেল ওসমানী এর ব্যাপারে যার কথায় বাঘে মহিষে একঘাটে জল খেত সে এই সংকটময় মুহুর্তে কেমনে নিরবতার এক প্রতীক ছিল তা আজও আমার কাছে রহস্য মনে হয়,আর কি বলব খন্দকার মোশতাকের কথা দেশের সেরা চার নক্ষত্র কে ঝরে ফেলতে তার কি একটুও হাত কাপল না?মাত্র ৮১ দিনের রাজত্বে সে কি করতে পেরছিল বরং জন্ম দিয়েছিল অবিশ্বাস আর সন্দেহ এর এক নতুন অধ্যায় এর যে কিনা আবার বংগবন্ধু হত্যার মূল পরিকল্পনাকারি ভাবতেই অবাক লাগে স্বাধীনতার ডাক দেয়া এই মহান মানূষটাকে মারতে তার কি একটুও বুক কাপেনি?সে আবার বেচে আছে? এত নির্মম একজন মানুষের জন্ম দিতে ইতিহাসের ও তো ভয় পাবার কথা,যাক আর কিছু বলব না একটা কথা বলেই শেষ করব,জিয়াউর রহমান এই আমাদের নায়ককে ফাসিতে ঝোলানোর জন্য মূল পরিকল্পনাকারী তার মনে রাখা উচিৎ ছিল যে কর্নেল ই তাকে বন্দিদশা থেকে বের করল তাকে রাষ্ট্রনায়ক করল সে তাকেই কিনা মিথ্যা মামলায় ফাসিয়ে নৃশংস ভাবে হত্যার পরিকল্পনা করে বিশ্বাসঘাতকতার পরিচয় দিল?জাতির কাছে আমার প্রশ্ন? আর কি বলব আমরা আমাদের আসল পরিচয় তো ৭৫ এই দিয়ে দিছি তারপরে একটানা অনেক ঘটনার পালা বদল হয়েছে আস্তে আস্তে প্রত্যেক দিনই যেন নতুন ইতিহাসের জন্ম দিয়েছে সেগুলো না হয় আরেকদিন বলব,, বি:দ্র:অভিমতগুলা সম্পুর্ন আমারর নিজের কোন ব্যক্তিগত বা রাজনৈতিক ইস্যু হিসেবে নেবেন না।
Was this review helpful to you?
or
Nastik
Was this review helpful to you?
or
অসাধারণ একটি বই। মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে যাদের জানার আগ্রহের কমতি নেই তাদের জন্য অবশ্যপাঠ্য।
Was this review helpful to you?
or
দেশদ্রোহী তাহেরের গপ্পো মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস হল কবে থেকে রকমারি? এটা বড়জোর বামদের ইতিহাস পাতিহাস হতে পারে...
Was this review helpful to you?
or
ক্রাচের কর্ণেল আমার পড়া (আমার পড়ার গণ্ডি ছোট, আগেই স্বীকার করছি) বাংলাদেশী কোন লেখকের লেখা ঐতিহাসিক রাজনৈতিক উপন্যাস। আমরা পড়া অন্যান্য ঐতিহাসিক উপন্যাসগুলো সাধারণত একটি নির্দিষ্ট সময়ের প্রেক্ষাপটে রাজনৈতিক-সামাজিক-অর্থনৈতিক সব কিছুর চিত্রই ফুটে ওঠে কিন্তু ক্রাচের কর্ণেল-এ আমি খুঁজে পেয়েছি তৎকালীন রাজনৈতিক পরিস্থিতির চিত্র সুর্নিদিষ্ট চরিত্রের কার্যক্রমের আলোকে। এই কারণেই রাজনৈতিক বলা। অবশ্য উপন্যাসিকের ভাষ্য মতে, দুধরনের ইতিহাস আশ্রয়ী উপন্যাস পাওয়া যায়। এক ধরনের উপন্যাসে কালটি ঐতিহাসিক কিন্তু চরিত্রগুলো কাল্পনিক আর এক ধরনের উপন্যাসে কাল এবং চরিত্র দুটোই ঐতিহাসিক। তার উপন্যাসটি দ্বিতীয় ধারার। শুরুতেই বলে রাখা ভাল, শাহাদুজ্জামানের লেখা এই প্রথমবারের মতই পড়লাম। অনেকদিন থেকেই তার নাম শুনছিলাম কিন্তু ঠিক কি কারণে জানি না পড়া হয়ে উঠেনি। প্রথম বইটা পড়ে মুগ্ধ হলাম। খুব সাবলীল ভঙ্গিতেই তিনি এক ঐতিহাসিক নায়ক কর্ণেল তাহের-কে উপস্থাপন করেছেন। তবে কর্ণেল তাহের-এর রাজনৈতিক চিন্তা-ভাবনা যতটা স্বত্বঃফূর্তভাবে এখানে ফুটে উঠেছে; ব্যক্তি কর্নেল তাহের ততটা সাবলীল ছিলেন না। ১৯৬৯ থেকে শুরু করে ১৯৭৬ সালের রাজনৈতিক পট পরিবর্তন খুব সুন্দর আর ধারাবাহিকভাবে কর্নেল তাহেরকে কেন্দ্র করে এখানে প্রকাশিত হয়েছে। পরিশিষ্টে লেখক যে লিস্ট এবং ব্যক্তিবর্গের নাম উল্লেখ করেছেন তাতে বোঝা যায় তাঁকে গবেষণাই করতে হয়েছে কর্নেল তাহেরকে নিয়ে যদিও তিনি স্বীকার করেছেন এটি গবেষণাধর্মী বই নয়। আমরা যারা আশির দশকের জন্ম নিয়েছি, আমাদের সবাই পড়তে হয়েছে পরিবর্তিত ইতিহাস। নানান কারণে নানান জনের হাত ধরে আমাদের মুক্তিযুদ্ধ এবং যুদ্ধ পরবর্তি ইতিহাসের হয়েছে নানা পরিবর্তন। এখনও তা হচ্ছে। সম্ভবত বাংলাদেশই একমাত্র দেশ, যে দেশের স্বাধীনতার ইতিহাস নিয়ে এত দ্বন্ধ। এই রকম পরিস্থিতে সঠিক ইতিহাস জানা বা সঠিক ইতিহাস খুঁজে বের করা খুবই কঠিন। সেই প্রেক্ষাপট বিবেচনা করলে এই বইটি অবশ্যই একটি দলিল। কর্নেল তাহের-এর চিন্তা-ভাবনার (বইয়ের বর্ণায় প্রকাশিত) সাথে যদিও একমত হতে পারিনি, তবে মনে মনে স্বীকার করেছি তিনি আসলেই একজন প্রকৃত বীর। একজন প্রকৃত বীরের পক্ষেই সম্ভব ফাঁসির মঞ্চে কবিতা আবৃত্তি করার। মেজর জিয়াউদ্দিনের কর্ণেল তাহের-কে নিয়ে লেখার আসাধারণ সেই কবিতা উল্লেখ করার লোভ সামলাতে পারলাম না। "জন্মেছি সারা দেশটাকে কাঁপিয়ে তুলতে কাঁপিয়ে গেলাম। জন্মেছি তাদের বুকে পদচিহ্ন আঁকব বলে এঁকেই গেলাম। জন্মেছি মৃত্যুকে পরাজিত করব বলে করেই গেলাম। জন্ম আর মৃত্যুর দুটি বিশাল পাথর রেখে গেলাম। সেই পাথরের নিচে শোষক আর শাসকের কবর দিলাম। পৃথিবী অবশেষে এবারের মত বিদায় নিলাম।" বইটি পড়ার শেষ করার পরও জানার আকাঙ্ক্ষা থেকে যায় লুৎফা'র পরবর্তী সংগ্রাম জানার। ছোট ছোট তিনটি শিশু নিয়ে এই কঠিন পৃথিবীর পথ পাড়ি দেওয়ার গল্প হয়তো আরেকটি উপন্যাসের জন্ম দিবে। বইয়ের প্রচ্ছদ আর বাঁধাই খুবই চমৎকার তবে বেশ কিছু বানান ভুল চোখের জন্য পীড়াদায়ক। আশা করছি পরবর্তী সংস্করণে তা সংশোধন হয়ে যাবে।
Was this review helpful to you?
or
ভালো বই
Was this review helpful to you?
or
অসাধারণ বই। আর রকমারির সার্ভিসের ব্যাপারে নতুন করে বলার কিছু নাই
Was this review helpful to you?
or
fabulous .. One of the best I have ever read. However , there is some misconception in the way the novel ended ... Khaled mosharraf was almost narrated as one more army person willing to get the supreme power of the country.. and that's the only thing the book describes about him.. but without any doubt , he deserved more attention as the main think tank and trainer of the legendary "Crack Platoon".. Overall, shahaduzzan's writing ... mind blowing and the book, it's a must read..
Was this review helpful to you?
or
গল্পটি ঘোরলাগা এক সময়ের যুদ্ধাহত, ক্রাচে ভর দিয়ে চলা এক কর্ণেলের। কিংবা গল্পটি হয়তো শুধু ওই কর্ণেলের নয়। জাদুর হাওয়া লাগা আরো অনেক মানুষের। কিংবা বলা যায় আত্মঅভিমানী এক জাতির গল্পে। বইটিতে কর্ণেল তাহেরের জীবনী , তার চিন্তা ভাবনা সম্পর্কে অনেক ধারণা পাওয়া যাবে।
Was this review helpful to you?
or
#রকমারি_বইপোকা_রিভিউ_প্রতিযোগিতা মানুষ টা ভিজছে । হ্যা সেই যে শুয়ে পরেছে তারপর আর ওঠেনি । কেউ ডাকলে ও জবাব দেন না । না তার সেই ক্ষমতাও নেই । মানুষটা এসে ছিল পৃথিবীর সমান বয়সী স্বপ্ন নিয়ে । গড়তে চেয়েছিল এক সুন্দর পৃথিবী । যেখানে তিনি সোনার বাংলাদেশ দেখতে পেতেন । যে দেশ তার স্বপ্নের দেশ । পাকিস্তান থেকে পালিয়ে মুক্তিযুদ্ধে যোগদান করতে হবে । মুক্ত করতে হবে দেশ কে । গড়তে হবে স্বপ্নের দেশ । বহু কষ্টে পালিয়ে মুক্তিযুদ্ধে যোগ দান । মুক্তিযুদ্ধের সময় হারিয়েছেন এক পা । ক্রাচে ভর দিয়ে দেশ গড়ায় নেমে পরেন । কিন্তু অদৃশ্য যেন তার জন্য রেখেছিল অন্য কিছু । এক এক করে বাধায় পরতে থাকে তার দেশ গড়ার স্বপ্ন । অনেক স্বপ্ন নিয়ে শুরু হয়ে ছিল তার দেশ গড়ার ইচ্ছে । স্ত্রী সন্তানের চেয়ে দেশ যার কাছে হয়ে উঠেছিল সব কিছু । যিনি সবার মাঝে দিয়ে দিয়ে গিয়েছেন আদর্শ । কিন্তু বিশ্বাসঘাতকতা আর ক্ষমতার বেড়াজালে আটকা পরে যান । ইতিহাসের অন্যতম ঘৃণ্যতম বিচার যার ফাসির আদেশ এ ফাসি দেয়া হয় । যিনি হাসতে হাসতে পরে নেন ফাসির রজ্জু । ক্রাচে ভর দিয়ে দেশ গড়ার স্বপ্নের এই নায়ক হচ্ছেন কর্নেল আবু তাহের । ক্রাচের কর্নেল ।
Was this review helpful to you?
or
সমাজতন্ত্রের স্বপ্নে বিভোর কর্নেল তাহের, যে কিনা যুদ্ধের কৌশল শেখার জন্য যোগ দেয় তৎকালীন পাকিস্তানী সেনাবাহিনীতে । তবে স্বাধীনচেতা এই কর্নেল যুদ্ধ শুরু হলে পাকিস্তান থেকে সুকৌশলে পালিয়ে যুদ্ধের ১১ নং সেক্টর কমান্ডার হিসাবে যোগ দেন । এই ইতিহাস আশ্রিত উপন্যাস কর্নেল তাহের এর জীবন নিয়েই। তবে লেখক এই বই কে মুক্তিযুদ্ধের অকাট্য দলিল হিসাবে দাবি করেন নি। বাংলাদের মুক্তিযুদ্ধ পূর্ব আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধ এর সময়কার ঘটনা, এবং মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী ৩ টি সেনা অভ্যুত্থান নিয়ে বিস্তারিত জানা যাবে এই বই এ । বই এর কিছু বিষয় আমার কাছে খটকা লেগেছে, যেমন মেজর খালেদ মোশাররফ এর ভূমিকা অত্যন্ত ক্ষুদ্র ভাবে দেখানো হয়েছে । জাসদ এর নেতিবাচক দিকগুলো অনেকটা এড়িয়ে জাওয়া হয়েছে ।
Was this review helpful to you?
or
ঠিক কবে এমন অক্ষর দাবড়িয়ে রুদ্ধশ্বাসে কোনো বই পড়েছি মনে পড়ে না। বলছি সময়ের শক্তিমান কথাসাহিত্যিক শাহাদুজ্জামানের ক্রাচের কর্নেলের কথা। প্রায় সাড়ে তিনশ পৃষ্ঠার এই বই্টি যখন পড়েছি তখন এটি আমার প্রাত্যহিক জীবনযাপনের সাথে মিশে গিয়েছিল। ক্রাচের কর্নেলের শিল্পমান নিয়ে বেশি কথা বলব না। এই উপন্যাসের শুরুর আবহ ছিল দুর্দান্ত। কিন্তু পরবর্তীতে ঘটনার ঘনঘটায় লেখক সেই অাবহ ধরে রাখতে পারেননি। যা শাহাদুজ্জামানের মতো লেখকের জন্য খামতিই বলব। তিনি যদি আরেকটু নিয়ন্ত্রিত আবেগ এবং মোহমুক্ত হয়ে লিখতেন, আমারা ধারণা, বাংলাসাহিত্য আরো একটি চিলেকোঠার সেপাই পেত। এই বই পড়তে গিয়ে আমার যেভাবে শ্বাস রুদ্ধ হয়ে অাসছিল, লেখকও সম্ভবত বৃহৎ কলেবরে একজন বিরলপ্রজ বিপ্লবীর জীবনের গল্প বলতে গিয়ে ঘোরগ্রস্থ হয়ে পড়েছিলেন, তাই এই খামতি। আমি সবাইকে বইটি পড়ার অনুরোধ করব।
Was this review helpful to you?
or
একাত্তরের সমসাময়িক (ঠিক আগে এবং পরে) সময় নিয়ে জানবার ইচ্ছা বেশ কিছুদিন ধরেই। এই বইটাতে ৭১ থেকে ৭৫-৭৬ পর্যন্ত সময়টা নিয়ে বেশ বিস্তারিত আলাপ আছে, আক্ষরিক অর্থেই "রুদ্ধ-শ্বাসে" পড়েছি। যে কেউ এই সময় নিয়ে ধারণা পেতে চাইলে পড়তে পারেন, অকাট্য দলিল তা লেখকও দাবী করেননি তবে সুখপাঠ্য অবশ্যই! এই লেখকের পড়া প্রথম বই এটি আমার, ইতোমধ্যেই লেখকের লেখনীর ভক্ত হওয়া সাড়া! প্রথম ৭০-৮০ পৃষ্ঠা একটু ধরে পড়তে হয়েছিল তবে একবার সেটুকু পার হয়ে গেলে আর পিছে ফিরে তাকাতে হয় নি। উপন্যাস ভেবে কখন যে একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা, অকুতোভয় সৈনিক এবং তুখোর শারীরিক ও মানুষিক শক্তি সম্পন্ন মানুষের জীবনী পরে ফেলেছি জানিনা।
Was this review helpful to you?
or
মাঝে মাঝে আমি পত্র-পত্রিকা, ম্যাগাজিন অথবা কখনো মানুষ মুখে কর্নেল তাহেরের কথা শুনেছিলাম কিন্তু তার বিষয়ে বিস্তারিত বিশদ কিছুিই জানতে পারিনি। সে থেকেই একটা অজানা কৌতূহল ছিল, কর্ণেল তাহের বিষয়ে বিশদ জানার । একদিন জানতে পারলাম যে, শাহাদুজ্জামানের লেখা “ক্রাচের কর্নেল’’ বইটি কর্ণেল তাহেরকে নিয়ে লেখা । বইটি এখন কোথায় পাই ..!? সংগ্রহ করে পড়তে হবেই আমাকে । অবশেষে রকমারি.কম থেকে অর্ডার করে বইটি পড়ে ফেললাম । বইটি পড়ে জানতে পারলাম ৭১ পরবর্তী বঙ্গবন্ধু হত্যা, ভয়াবহ সামরিক অভ্যুত্থান, সিপাহি বিদ্রোহ এবং একজন বীরউত্তম খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধার নির্মম ফাঁসি । যুদ্ধ পরবর্তী একটা স্বাধীন দেশে কি ঘটেছিলো তা সুন্দরভাবে শাহাদুজ্জামান এই বইটিতে ফুটিয়ে তুেলেছেন । সময় করে বইটি সবাইকে পড়ার অনুরোধ জানাচ্ছি .....
Was this review helpful to you?
or
#রকমারি_বইপোকা_রিভিউ_প্রতিযোগিতা বই-ক্রাচের কর্নেল লেখক-শাহাদুজ্জামান ধরন- মুক্তিযুদ্ধ নির্ভর উপন্যাস মূল্য-৪৫০ প্রকাশনী-মাওলা ব্রাদার্স মুক্তিযুদ্ধ! আমাদের পরাধীন দেশের স্বপ্ন পূরণের জন্য রক্তের খেলা! শত শত জীবনত্যাগী অর্জন! কতো ইতিহাস! রাজনৈতিক কতো ঘোর প্যাচ! যে মানুষটাকে সামনে নিয়ে পুরো একটা আস্ত দেশ এক জোঁট হয়েছিল, সে মানুষটাই এই স্বাধীন দেশে পুরো পরিবার নিয়ে নৃশংস ভাবে হত্যা হলো! যে মানুষটাকে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীরা এতটুকু স্পর্শ করতে সাহস পায় নি। আর সেই মানুষ টাকে কতো গুলো নেড়ি কুত্তা খুবলে খেয়ে নিলো! শোকাবহ ১৫'ই আগস্ট পড়ে কেঁদে ছিলাম খুব। আরো একবার কেঁদেছি অসমাপ্ত আত্মজীবনী পড়ে। এর পর কেঁদেছি ক্রাচের কর্ণেল পড়ে। ক্রাচের কর্নেল। যে কর্নেলের এক পা নেই, ক্রাচে ভর দিয়ে হাটে। তবুও তার সাহসিকতার অন্ত নেই। চোখ ভরা স্বপ্ন দেশ সাজানোর। ১৫ আগস্টের কালো সময়ে, এই লোকটিই জিয়াকে এসব মানুষ রূপী পশুদের থেকে মুক্ত করলো, ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে তাকেই, জিয়াউর রহমানের কু চক্রে ফাসিতে ঝুলতে হল! যে ছিলো বীর মুক্তিযুদ্ধা, সম্মুখ সমরে যুদ্ধ করে মুক্তিযুদ্ধের সময় এক পা হারালো! যার ১১ জন ভাই বোন, স্বশরীরে মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহন করেছিলো। কর্ণেল এর পদ ত্যাগ করে শুধু মাত্র তার স্থির লক্ষ পূরণ না হওয়ায়! যে বীর চেয়েছিলো, দেশ জুড়ে অর্ধ উলঙ্গ শিশুগুলোর যেন আর ছুটাছুটি করতে না হয়! স্বাধীন বাংলাদেশে খুব সাধারন একটা স্বপ্ন দেখেছিলেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সাহসী অফিসার "কর্নেল আবু তাহের বীরবিক্রম"। কিন্তু ভাগ্যবিরূপ। তার এই সৎ চাওয়া নিতে পারিনি আমাদের মতো দূর্ভাগা অসহায় দেশবাসী। সূর্য বা চন্দ্র গ্রহনের মতো তাকেও গ্রহন করেনিয়েছে লোভী শকুনের দল। তিনি পারেননি তার স্বপ্ন পূরণ করতে। বাংলাদেশের ইতিহাসের সবথেকে ঘৃনিত অন্ধকার সময় তাকে গ্রাস করে নিলো।চিরতরে হারিয়ে গেলো বাংলার ইতিহাসের এক অসমসাহসী বিপ্লবী নেতা। যাদুর হাওয়া লাগা অনেকগুলো মানুষ, নাগরদোলায় চেপে বসা একটি জনপদ, ঘোর লাগা এক সময়, একটি যুদ্ধ, কয়েকটি অভ্যুথান, রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র, একজন যুদ্ধাহত কর্নেল, একজন অসমসাহসী বিপ্লবি নেতা, ক্রাচে ভর করে চলা এক নির্ভীক কর্নেলের জীবনীমুলক ঐতিহাসিক উপন্যাস শাহাদুজ্জামানের ক্রাচের কর্নেল। যা না পড়লে অজানা থেকে যেত অনেক বড় সত্য। ইতিহাসকে অবলম্বন করে তার এই রচনা। মূলত একে কর্ণেল তাহেরের জীবনীও বলা যেতে পারে। সে সাথে লেখক তুলে ধরেছেন, ৬৯ এর অভ্যুথান, ৭০ এর রাজনৈতিক অস্থিরকাল, ৭১ এর মুক্তিযুদ্ধ, যুদ্ধ পরবর্তী সমস্যা জর্জরিত স্বাধীন দেশ, ৭৫ এর অগণিত কালরাত্রি ও রাজনৈতিক পটভুমির পরিবর্তন এবং ৭৬ এর কর্নেল তাহেরের ফাঁসি। মুক্তিযুদ্ধ সময়কালের কর্নেল তাহেরের বীরত্ব। মুক্তিযুদ্ধ এবং যুদ্ধ পরবর্তী ইতিহাস নির্ভর করে রচিত বই। লেখক তুলে এনেছেন, বীর নায়ক কর্নেল তাহের এবং মুক্তিযুদ্ধের গল্প, মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী সময়ের গল্প । কর্নেল তাহেরকে যিনি অকুতো ভয়। কোনকিছুই তাকে দমিয়ে রাখতে পারে না। এই সাহসী বীর পাকিস্তান আমলেই কোর্ট মার্শালের ভয় তোয়াক্ষা করে দেশে তরুনদের যুদ্ধের প্রশিক্ষণ দিয়ে গেছেন, যুদ্ধের জন্য । ৭১ সালে যুদ্ধের সময় পালিয়ে চলে এসেছেন দেশে। সেক্টর কমান্ডর হয়ে যুদ্ধ করেছেন হানাদারদের বিপক্ষে লড়তে। সম্মুখ যুদ্ধ করে হারিয়েছেন পা। সব থেকে আশ্চর্য লাগে তিনি এমন মায়ের সন্তান! যিনি তার মোট ১১ সন্তান, সব গুলোকেই দেশের কল্যানে যুদ্ধে পাঠিয়েছেন। তাহের ভাইবোনদের তিন নাম্বার হয়েও তিনি ছিলেন সকল ভাই বোনদের লিডার। তাকে ঘিরে ছিলো সকলেই। তিনি সাহস ও শক্তি যুগিয়েছেন চলেছেন স্রোতের মতো, সেই স্রোতে সঙ্গী হিসেবে পেয়েছিলেন , স্ত্রী লুৎফাকে। ভাবা যায়! একটি পরিবারের সকল ব্যক্তিই এরকম দেশপ্রেমী হতে পারে! এরকম নজির আরো আছে! বিহ্বল হয়ে যাই। কর্নেল তাহের ও তার পরিবার ছাড়াও উপন্যাসে যাদের বর্ণনা আছে তারা হলেন, তখন কার সময়ে রাজনৈতিক মাথা গুলো, যেমন - মুজিবর রহমান, জিয়াউর রহমান তাজউদ্দীন আহমেদ, মাওলানা ভাসানী, খন্দকার মোশতাক, খালেদ মোশারফ, এ.কে খন্দকার, শাফায়েত জামিল, তাহেরের চার ভাই সহ আরও অনেকে । লেখক চরিত্র গুলোর উপর একটুও মসলা ছিটান নি, যতোটুকু নিরপেক্ষ থেকে পারা যায়, ঠিক ততটুকুতেই তিনি সব চরিত্র গুলো প্রকাশ করেছেন। এমনকি, মহান নেতা শেখ মুজিবও সে বিশ্লেষণ থেকে আলাদা হন নি। ব্যক্তি এবং নেতা হিসেবেই তাকে সেরকম করে তুলে ধরেছেন। যেরকম তিনি ছিলেন। চরিত্র বিশ্লেষনে তিনি তার ভালো মন্দ দুটোই উল্ল্যেখ করেছেন। মহান নেতা হিসেবে তার ভুল গুলোও এ থেকে বাদ পড়েনি। অসীম ব্যক্তিত্ব শালী নেতা, তার পতনের কারণ সবিস্তরে নির্মম ভাবে বর্ণনা করে গেছেন। আরো একটি চরিত্র মেজর জিয়াউর রহমান। বাংলাদেশ স্বাধীনতার ঘোষক তার যে রূপ প্রকাশ তিনি দিয়েছেন। তার সত্যতা আমি আরও অনেক গ্রন্থে পেয়েছি। এই গ্রন্থে এই চরিত্র পাঠক কে যথেষ্ট হতবাক করে দিবে। তার বিশ্বাস ঘাতকতা নিশ্চুপ করে দিবে পাঠকদের। বইয়ের শেষ দিকের বর্বরতা হানাদাদের বর্বরতাও উপেক্ষা করবে। শাহাদুজ্জামান তাঁর ক্রাচের কর্নেল উপন্যাস নিয়ে বললেন , 'সমকালের রাজনীতিকে বুঝতে হলে কর্নেল তাহেরকে জানতে হবে।'লেখকের মতে, ‘স্বপ্নের যেমন মৃত্যু হয় না, কর্নেল তাহেরের মতো বিপ্লবীদেরও মৃত্যু নেই। তিনি ছিলেন সময়ের চেয়ে এগিয়ে থাকা এক ব্যতিক্রমী চরিত্র। এটি সাহিত্য হিসেবে কতটুকু মানোত্তীর্ণ হয়েছে তা পাঠকরা বিবেচনা করবেন। তবে লেখক হিসেবে আমি ইতিহাসের প্রতি বস্তুনিষ্ঠ থেকেছি। বইটির ঐতিহাসিক তথ্যগুলি নিয়ে এ পর্যন্ত কেউ প্রশ্ন তোলেননি।' লেখক নিরপেক্ষ চোখে ইতিহাস বর্ণনা করেছেন। যুদ্ধের সময় তাজউদ্দীনেরর অবদান, মুক্তিযোদ্ধাদের অবদান, দেশমাতার দেশের ভেতরকার শত্রুদের কথা। নোংরা রাজনীতির ভেতর কার গল্প। শাহাদুজ্জামান বিশেষ সাবধানী হয়ে উপন্যাসে ইতিহাসের সত্যতা রক্ষা করে চলেছেন । মুক্তি যুদ্ধের উপন্যাসে কি আসে নি! মুক্তিযুদ্ধপূর্ব এবং পরের রাজনৈতিক অবস্থার বিচারে? আইয়ুব পতনের, ইয়াহিয়ার উত্থান, শেখ মুজিব-ভাসানির শক্তিশালি অবস্থান, নির্বাচন গণহত্যার, মুক্তিযুদ্ধ, তাহেরের যুদ্ধ, বিজয়। যুদ্ধে ছিন্ন ভিন্ন দেশটাকে নতুন রূপে ফিরিয়ে নেওয়ার উদ্যোগ। এর মধ্যে শেখ মুজিবের কিছু মারাত্মক ভুল,১৫ আগস্ট, স্বাধীন দেশেরর উলট পালট অবস্থা। ক্ষমতা লোভীদের প্রবেশ, তাহের, কিন্তু ভরসার জায়গাটাতেই তিতিনি ঠকে গেলেন! তার ফলে একেবারে হারিয়ে গেলেন। যে মানুষটি বিপ্লবের স্বপ্ন দেখতেন, যে এতো সাহসের সাথে মোকাবেলা করলো সবকিছু। যাকে লিডার মেনে পুরো পরিবার দেশের জন্য নিবেদিত প্রাণ। আর সে মানুষটাই বলি হলো রাষ্ট্রীয় ষড়যন্ত্রের! তবুও বীরের মতো মৃত্যুকে বরণ করে ফাঁসির দড়ি নিজ হাতে পরে হারিয়ে গেলো। শাহাদুজ্জামানের লিখনশৈলী, কর্নেল তাহেরের মতো চরিত্র সব মিলিয় উপন্যাস বা আত্মজীবনী যাই হোক না কেন, হয়ে উঠেছে অসাধারণ। রেটিং৫/৫ রকমারি লিংক https://www.rokomari.com/book/5321/ক্রাচের-কর্নেল-(বাংলা-একাডেমী-পুরুস্কারপ্রাপ্ত)
Was this review helpful to you?
or
your review #রকমারি_বইপোকা_র িভিউ_প্রতিযোগিতা মুক্তিযুদ্ধ এবং যুদ্ধ পরবর্তী দুই দশকের ইতিহাসের উপর ভিত্তি করে রচিত বই পড়ার মধ্যে বেশ বিপদ আছে । অধিকাংশ লেখকই যেহেতু আওয়ামী লীগ আর বিএনপি এই দুই রাজনৈতিক মতবাদে বিভক্ত, তাদের লেখায় তারা দলীয় ইতিহাসটাই তুলে ধরেন । এজন্যে কোন বইয়ে বঙ্গবন্ধুর সাত-ই মার্চের ভাষণই স্বাধীনতার ঘোষনা এবং যুদ্ধে মেজর জিয়ার কোন ভূমিকাই নেই । আবার কোন বইয়ে মেজর জিয়া মহানায়ক, স্বাধীনতার ঘোষক আর বঙ্গবন্ধু পাকিস্তানে কারাবরণ করে আছেন আইওয়াশ হিসেবে । সেই সময়টায় আর যুদ্ধ পরবর্তী কয়েক বছরের টালমাটাল সময়ে দেশে আসলেই কি ঘটেছিলো তা সম্ভবত যারা ঐ সময়টাতে জীবিত ছিলেন তারাই জানেন, আমরা পরবর্তী প্রজন্ম তা কখনোই সেভাবে বুঝতে পারবো না । আর সামনের বিশ - ত্রিশ বছর পর প্রকৃতির স্বাভাবিক নিয়মেই দেশে মুক্তিযোদ্ধারা যখন আর জীবিত থাকবেন না, ইতিহাস বিকৃত হবে আরও ভয়ংকর ভাবে । এতো সমস্যার পরও কিছু উৎস থাকে যা তুলনামূলক বিশ্বাসযোগ্য । " ক্রাচের কর্নেল " - এর লেখক শাহাদুজ্জামান আমার কাছে তেমনই একজন । লেখক কর্নেল তাহেরের জীবনের আবহে তৃতীয় দৃষ্টিতে তুলে এনেছেন মুক্তিযুদ্ধের গল্প, মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী জাদুর মতো এক সময়ের গল্প । কর্নেল তাহেরকে আমার মনে হয়েছে একজন বিপদপ্রেমী মানুষ, যিনি বিপদকে ভয় পাওয়া তো দূরে থাকুক, ভালোবাসেন । সেজন্যে পাকিস্তান আমলেই কোর্ট মার্শালের ভয় উপেক্ষা করে দেশে তরুনদের যুদ্ধের প্রশিক্ষণ দিয়ে গেছেন, প্রস্তুত করেছেন বিপ্লবের জন্যে । যুদ্ধ শুরু হলে ক্যান্টনমেন্ট থেকে পালিয়ে চলে এসেছেন নিজের দেশের পক্ষে লড়তে, কাঁধে তুলে নিয়েছেন সেক্টর কমান্ডারের দায়িত্ব । তার মা, সব ভাই - বোনেরা তার নেতৃত্বে পাশাপাশি অংশ নিয়েছেন তার সব কাজে, সম্মুখ যুদ্ধে একসাথে চালিয়েছেন স্টেনগান । আর শক্তির পেছনের রুধির ধারার মতো তাহেরকে সবসময় উৎসাহ - প্রেরণা যুগিয়েছেন তার অসামান্যা স্ত্রী লুৎফা ..... অদ্ভুত এক পরিবার । পরিবারের একেক সদস্য একেক রকম, কিন্তু দেশের জন্যে সবাই নিবেদিত প্রাণ। কর্নেল তাহের পরিবারের নিউক্লিয়াস, তাকে ঘিরে আবর্তিত সবাই । তাহের যেন রুপকথার পাতা থেকে উঠে আসা দুর্ধর্ষ এক নাইট । একই সাথে তিনি প্রেমিক এবং স্বপ্নবাজ বিপ্লবীও । হৃদয়বান, সাহসিকতা, বোকামী, জটিলতা এবং সারল্যের মিশ্রণে তৈরি তার চরিত্র ব্যাখ্যা করে বোঝানো দুষ্কর । তাহেরের মতো মানুষ ইতিহাসে দুই-একবারই আসে ... আসে, এবং বদলে দিয়ে যায় স্বয়ং ইতিহাসকেই । তাহের ছাড়াও বইয়ের পাতায় পাতায় নিজস্ব ক্যারিশমা নিয়ে আছেন দেশের ইতিহাসের মহারথীরা - মুজিব, জিয়া, সিরাজ শিকদার, তাজউদ্দীন, ভাসানী, খন্দকার মোশতাক, ডালিম, ফারুক, খালেদ মোশারফ, এ.কে খন্দকার, শাফায়েত জামিল, তাহেরের চার ভাই সহ আরও অনেকে । বইটা পরিচিত এসব চরিত্রের অনেকের ব্যাপারেই আমাদের ধারণা বদলে দেবে । লেখক শেখ মুজিবের চরিত্রকে উপস্থাপন করেছেন নির্মোহভাবে । তুলে এনেছেন মুদ্রার দুই পিঠ-ই, লিখেছেন মানব দেবতার উত্থান এবং পতনের পেছনের কথা । আর মেজর জিয়ার শীতলতা, নিস্পৃহতা, ব্যক্তিত্ব, অসম্ভব ধী শক্তি আর নিষ্ঠুরতা পাঠককে বিহ্বল করে দেবে । বইয়ের নামঃ ক্রাচের কর্নেল। লেখকঃ শাহাদুজ্জামান। প্রকাশনীঃ মাওলা ব্রাদার্স। মূল্যঃ ৩৩৮ ৳ (রকমারি মূল্য)। ধরনঃ মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক।
Was this review helpful to you?
or
অসাধারণ বই!
Was this review helpful to you?
or
#রকমারি_বইপোকা_প্রকাশনা_রিভিউ_প্রতিযোগিতা ক্রাচের কর্নেল লেখকঃ শাহাদুজ্জামান (কথাসাহিত্যে বাংলা একাডেমী সাহিত্য পুরষ্কার ২০১৬) প্রকাশনীঃ মাওলা ব্রাদার্স প্রথম প্রকাশঃ ফেব্রুয়ারী ২০০৯ মুদ্রিত মূল্যঃ ৪০০ টাকা "এক কর্নেলের গল্প শোনা যাক। যুদ্ধাহত, ক্রাচে ভর দিয়ে হাঁটা এক কর্নেল। কিংবা এ গল্প হয়তো শুধু ঐ কর্নেলের নয়। জাদুর হাওয়া লাগা আরও অনেক মানুষের। নাগরদোলায় চেপে বসা এক জনপদের। ঘোর লাগা এক সময়ের।" -ক্রাচের কর্নেল উপন্যাসের শুরুতে এই অল্প অথচ শৈল্পিক ক'টা কথা পুরো উপন্যাসকে ধারন করে। এই মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক ও রাজনৈতিক উপন্যাসের মূল উপজীব্য বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের অন্যতম নায়ক কর্নেল তাহের। স্টেশনমাস্টার মহিউদ্দীনের দুরন্ত ছেলে নান্টু কিভাবে সময়ের প্রতিকূলে বুক চিতিয়ে দাঁড়িয়ে স্বাধীনতা পরবর্তী বাংলাদেশের অন্যতম প্রভাবশালী আপোসহীন নেতা কর্নেল তাহেরে পরিণত হলেন, এই উপন্যাস তারই উপাখ্যান। "ক্রাচের কর্নেল" এর আরেক উপজীব্য হল সময়। লেখকের নিপুণ গদ্যশৈলীতে উঠে এসেছে ঊনসত্তুরের গণ অভ্যুত্থান, মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী অস্থির বাংলাদেশ, পঁচাত্তরের বঙ্গবন্ধু-হত্যা। কর্নেল তাহেরের পাশাপাশি চিত্রিত হয়েছেন তাজউদ্দীন আহমেদ,জিয়াউর রহমান, খালেদ মোশাররফ, মোজাফফর আহমেদ, খন্দকার মোশতাক, মতিয়া চৌধুরী, হাসানুল হক ইনু এবং আরও অনেকে। চরিত্র-চিত্রায়নে মুন্সিয়ানার জন্য লেখকের বড় একটা হাততালি প্রাপ্য। পাকিস্তান থেকে পালিয়ে সেনা কর্মকর্তা তাহেরের মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেয়া, যুদ্ধে নির্ভীক নেতৃত্ব প্রদান, যুদ্ধ-পরবর্তী রাজনৈতিকভাবে অস্থিতিশীল বাংলাদেশের হাল ধরার চেষ্টা এমন দক্ষতার সাথে বর্ণিত হয়েছে, আমরা যেন নির্লোভ, অনেক রঙের স্বপ্ন দেখা মানুষটাকে জীবন্ত দেখতে পাই। প্রহসনের বিচারে তাহেরের যখন ফাঁসির রায় হয়, হাস্যমুখে নিরুত্তাপ কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে থাকা তাহেরের চোখে চোখ তুলে তাকাতে কুন্ঠিত হই। হাঁটু ভেঙ্গে বসে বলি, আমাদের ক্ষমা করবেন, তাহের। অবশ্য, এসবই আমার ব্যক্তিগত অনুভূতি। পাঠকভেদে তারতম্য হওয়াটাই স্বাভাবিক। এছাড়া, বঙ্গবন্ধু-হত্যার পর দেশকে উলটপালট করে দেয়া সিরিজ সেনা অভ্যুত্থ্যানের বর্ণ্না এই উপন্যাসের অন্যতম আকর্ষণীয় অংশ। ক্যান্টনমেন্টের ভেতরের-বাইরের উত্তেজনা ও বিক্ষোভের কথা চমৎকারভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন লেখক। ঐতিহাসিক উপন্যাসের ক্ষেত্রে স্বভাবতই প্রশ্ন আসতে পারে, তথ্য-উপাত্ত ও কাহিনী পরিক্রমা কতটুকু বাস্তবতানির্ভর? এ প্রসঙ্গে তথ্যসূত্রে মুদ্রিত লেখকের নিজের উক্তি তুলে দিচ্ছি- "যেহেতু এ উপন্যাসের ঘটনা, চরিত্র কোনোটিই কাল্পনিক নয় ফলে এর নানা তথ্যগত যথার্থতার ব্যাপারে আমাকে সতর্ক থাকতে হয়েছে।" ক্রাচের কর্নেল কেবল একজন পোড় খাওয়া মানুষের গল্প নয়, একটি পোড় খাওয়া সময়ের গল্প। দেশপ্রেম এবং দেশদ্রোহীতার গল্প। বিশ্বাস এবং বিশ্বাসঘাতকতার গল্প। আমার মতে, সমসাময়িক সাহিত্যের অন্যতম সেরা একটা বই। কিছু বই শেষ হলেই শেষ, আর কিছু বইয়ের রেশ থেকে যায় অনেকদিন। হ্যাপী রিডিং।
Was this review helpful to you?
or
বাংলাদেশের রাজনীতি নিয়ে যারা ভাবেন, কিংবা ভাবেন না, সকলেরই এই বই পড়া উচিত। বাংলাদেশের জন্ম, এবং এদেশের রাজনীতি নিয়ে চিন্তার ভিত্তি নাড়িয়ে দেবার মতো একটি বই এটি। কর্নেল তাহের এবং বাংলাদেশ ওতপ্রোতভাবে জড়িত! তাহের এর জীবন এবং বাংলাদেশের জন্মের সূচনা থেকে তাহের এর মৃত্যু পর্যন্ত ঘটে যাওয়া প্রায় প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনার ধাপে ধাপে বর্ণনা দেয়া আছে এই বই এ। এতোটা গোছানো একটি বই এটি, হয়তো একটা সময় যখন আমাদের মুক্তিযুদ্ধ, এবং মুক্তিযুদ্ধে নানা মানুষের অবদান নিয়ে দন্দ দেখা দেবে, তখন এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ দলিল হিসেবে কাজে লাগতে পারে! সবশেষে এটুকু বলতে চাই, নিজের দেশকে যারা ভালোবাসেন, তাদের কর্নেল তাহের এর মতো অকুতোভয় একজন বীরের কথা জানা উচিত। কতোটা ত্যাগ তিনি এই দেশের জন্য করেছেন তা এই বই না পড়লে হয়তো পুরোপুরি বোঝা যাবেনা! আর তাছাড়া বাংলাদেশের জন্মে দেশের রাজনীতিবিদ দের অবস্থানও আপনাদের কাছে অনেকটাই পরিষ্কার হবে। মোটকথা, এই বই শেষে আপনি বাংলদেশ নিয়ে নতুনভাবে ভাবতে শিখবেন, বাংলাদেশকে নিয়ে হতাশ হবেন, এবং দেশের জন্য নতুন কিছু করার প্রত্যয় নেবেন।
Was this review helpful to you?
or
শাহাদুজ্জামানের ক্রাচের কর্নেল না হলে হয়ত আমাদের কাছে অজানা থেকে যেত কর্নেল তাহেরের মত অসমসাহসী বিপ্লবি। ক্রাচের কর্নেল না হলে হয়ত অকুতোভয় দেশপ্রেমিক মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর কমান্ডার থেকে যেত বিতর্কিত। শাহাদুজ্জামানের ক্রাচের কর্নেল তাই শুধু বই নয়, ইতিহাসের অন্ধকারে আটকে থাকা সত্যের প্রদীপকে প্রজ্বলিত করার প্রচেষ্টাও বটে।
Was this review helpful to you?
or
ক্রাচের কর্নেল সম্প্রতি পড়া শেষ হলো। শাহাদুজ্জামানের লেখার সাথে আমার প্রথম পরিচয় এই বইয়ের মাধ্যমেই। পড়া শুরু করেই কাহিনীর ভেতর ঢুকে যেতে বাধ্য হয়েছি। একাকার হয়েছি গল্পের চরিত্রের সাথে, কাহিনীর সাথে আর চিন্তা-চেতনার সাথে। মুক্তিযুদ্ধের পূর্বের আর পরের সময়টুকু বর্ণনা হয়েছে নিখুতভাবে। জানতে পেরেছি কর্নের তাহেরকে। তাঁর চিন্তা-চেতনা আর উপলব্ধিকে। ক্রাচের কর্নের না পড়লে মুক্তিযুদ্ধকে জানা অস্পূর্ণ থেকে যাবে বলেই আমার মনে হয়।
Was this review helpful to you?
or
ক্রাচের কর্নেল। শাহাদুজ্জামানের লেখা।রাজনিতিক দৃষ্টিকোণ এর জন্য এই বই নয়। শুধুমাত্র কিছু সত্য প্রকাশ করার জন্যই হয়তো এই বইটি শাহাদজ্জামান লিখেছেন। কর্নেল তাহের এই বইয়ের প্রধান চরিত্র। আমাদের ক্রাচের কর্নেল। একজন মুক্তিযোদ্ধা, সমাজতন্ত্রের অনুসারী, একজন স্বাধীনতা-প্রিয় মানুষ। আমাদের মুক্তিযুদ্ধের একজন খেতাব প্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা। তার একটা সত্যিকারের সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্ন ছিল। তিনি তার এই স্বপ্ন পূরণ করার জন্য স্বীকার করেছেন অনেক আত্মত্যাগ। একটি সশস্ত্র সংগ্রাম করার জন্যে যোগ দিয়েছিলেন পাকিস্তান আর্মিতে, যাতে করে একটি জাতিকে তার প্রকৃত স্বাধীনতা অর্জনের দিকে এগিয়ে যেতে পারে। তার স্বপ্নের কথা তুলে ধরা হয়েছে এই বইয়ে খুব চমতকারভাবে। তার স্বপ্ন ছিল- " আমি এমন একটা বাংলাদেশের কল্পনা করি যার নদীর দুপাশে উঁচু বাধ। সে বাঁধের উপর দিয়ে চলে গেছে সোজা পাকা রাস্তা, চলে গেছে রেল লাইন, ইলেক্ট্রিসিটি, গ্যাস, টেলিফোন, টেলিগ্রাফ লাইন। বাঁধের দুই পাশে ছড়ানো গ্রাম। সেখানে নির্দিষ্ট দূরত্বে সুন্দর নক্সার অনেক বাড়ি নিয়ে এক একটা জনপদ। প্রতিটা বাড়ির সামনে একটা সবুজ ঘাসে ঢাকা বাগান, সেখানে ফুল। একদিকে খোলা মাঠ। বিকেল বেলা বুড়োরা এই মাঠের চারপাশে বসে গল্প করে। ছেলে মেয়েরা মেতে উথে নানা খেলায়। সকালবেলা সামনের সোজা রাস্তা দিয়ে বাসের হর্ন শোনা যায়। হৈ চৈ করে ছেলে মেয়েরা যায় স্কুলে।" এই বইয়ে আর প্রকাশ পেয়েছে স্বাধীনতা সংগ্রাম, প্রহসন, চক্রান্ত, বিশ্বাসঘাতকতা, ফাসির উদ্ভট রায়, ফাঁসিকাঠে দাড়িয়ে কবিতার আবৃতি, মুলত কর্নেল তাহেরের পাশাপাশি বাংলাদেশের স্বাধীনতার এক অবাক উপাখ্যান।
Was this review helpful to you?
or
বাংলাদেশের রাজনীতিতে বিতর্কিত কিন্তু স্বাপ্নিক এবং অস্পষ্ট কিন্তু বর্ণাঢ্য এক নাম কর্নেল তাহের। শাহাদুজ্জামান ‘ক্রাচের কর্নেল’ বইয়ের কেবল লেখকই নন বরং তিনি যেন বাংলাদেশের রাজনীতির একজন কৌতূহলী পর্যবেক্ষকও বটে। রাজনৈতিক চাদরে ঢেকে রাখা একটি চরিত্রকে লেখক পাঠকের দ্বারে টেনে তুলে এনেছেন অপার সাহসিকতা আর সামগ্রিকতায়। বাংলাদেশের ইতিহাসকে পতিত করে অবিরাম জন্ম দেয়া হয়েছে ধোঁয়াচ্ছন্নতা আর মিথ্যার বেসাতি। লেখক প্রায় সম্পূর্ণ ভাবে নির্মোহ থেকে তুলে ধরেছেন সিনেম্যাটিক অভিযানের মধ্য দিয়ে পশ্চিম পাকিস্তানের ক্যান্টনমেন্ট থেকে পালিয়ে যোগদান করা মুক্তিযোদ্ধা, দুর্ধর্ষ কামালপুর অপারেশনে পা হারানো কমান্ডার, যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশে ক্রাচে ভর দেয়া এক স্বাপ্নিক নাগরিক, বিরল আর আপাত ব্যর্থ এক সেপাই অভ্যুথানের নায়ক এবং সর্বোপরি ক্ষুদিরামের পথের অভিযাত্রী কর্নেল তাহের ও সেই ঘোর লাগা সময়ের কুশীলবদের। আসাম বেঙ্গল রেলওয়ের বিভিন্ন স্টেশনে বেড়ে ওঠা একজন স্টেশনমাষ্টারের ছেলে আবু তাহেরের বেড়ে উঠা, ঈশ্বরগঞ্জের সরকারি ডাক্তার খুরশীদুদ্দিনের মেয়ে লুৎফার সাথে সামরিক কায়দায় বরযাত্রী সেজে আসা তরুণ আর্মি অফিসারের বিয়ে থেকে শুরু করে প্রহসনের বিচারের মাধ্যমে চিরবিপ্লবী ও স্বপ্নবাজ এক সৈনিকের ফাঁসির আখ্যান রচিত হয়েছে এই বইয়ে। দশ সন্তানের বিশাল পরিবারের মা আশরাফুন্নেসা কোন বাস্তব রক্ত-মাংস-অশ্রুজলে তৈরি নন, যেন উপন্যাসে ঠাঁই করে নেবার এক সামগ্রিক চরিত্র। যার ফলশ্রুতিতে শুধুমাত্র এই পরিবারের নয়জনই ছিলেন মহান মুক্তিযুদ্ধের সরাসরি যোদ্ধা। নামকরা ডাকাতের মোকাবিলা, গহিন জংগলে অভিযান, পাক মন্ত্রী নুরুল আমিনের ট্রেনে দল বেঁধে ঢিল ছোঁড়া, আরবির বদলে সংস্কৃতি পড়াবার জন্য স্কুলে তুলকালাম কান্ড ঘটানো ইত্যাদি বিছিন্ন ঘটনা তুলে লেখক জানান দিতে চেয়েছেন ভবিষ্যতের এক বিপ্লবীর নাম। চট্টগ্রাম প্রবর্তক স্কুলে পড়বার সময় বিপ্লবী সূর্যসেনের সঙ্গী এক শিক্ষকের সাহচর্য, সিলেটের এম সি কলেজের তরুণ তাহেরের প্রতিজ্ঞা, ১৯৬৯ সালে লুকিয়ে সিরাজ শিকদারের সাথে সশস্ত্র সংগ্রামের প্রস্তুতপর্ব ইত্যাদি যাত্রাপথ এঁকে লেখক সংগ্রামী তাহেরকে তুলে ধরেছেন। লেখক একইসাথে মহান মুক্তিযুদ্ধের গৌরবময় কালপর্বটিকে তুলে ধরেছেন তাহেরের যুদ্ধকালীন খন্ডচিত্রের মাধ্যমে। রক্তাক্ত ৭৫’র সুচারু ও বেদনাদায়ক পর্বটি তুলে এনেছেন নিপুণ দক্ষতায়। ১৫ আগষ্টের ভোরে ক্রাচে ভর দেয়া তাহের, তাহেরের ভাই আনোয়ার এবং জাসদ নেতা ইনুর শাহবাগ রেডিও স্টেশনে ছুটে আসা, কাপুরুষ খন্দকার মোশতাক এবং মেজর রশিদকে তাহেরের অবস্থান স্পষ্ট করা, দোসরা নভেম্বর মুক্তিযুদ্ধের বীর সেনানী খালেদ মোশারফের পাল্টা অভ্যুথান, তেসরা নভেম্বর ইতিহাসকে রক্তাক্ত করা জেল হত্যা, ৭ নভেম্বরের সেপাই জনতার ঐতিহাসিক প্রতিবিপ্লব, তৎকালীন জাসদের মিশ্র, রহস্যজনক ও দ্বিধান্বিত অবস্থান, জিয়াকে মুক্ত করা, দৃশ্যপট থেকে সম্পূর্ণ ছিটকে পড়া জেনারেল জিয়ার নাগরদোলায় চেপে ইতিহাসের চাকা ঘুরিয়ে দৃশ্যপটের মধ্যমণি হওয়া এবং জিয়ার জীবন রক্ষাকারী সেপাই জনতার মহানায়ক তাহেরকেই প্রহসনের বিচারের মাধ্যমে মৃত্যুদন্ডের ব্যবস্থা করার সীমাহীন নাটকীয়তার সামগ্রিক কিন্তু পুঙ্খানুপুঙ্খ ও নির্মোহ বর্ণনা ও কার্যকরণ চিত্রিত হয়েছে ‘ক্রাচের কর্নেল’ বইটিতে। এরপর লেখক একে একে বর্ণনা করেছেন তাহেরকে উদ্ধারের জন্য ভারতীয় হাইকমিশনার সমর সেনকে কিডন্যাপ করার ব্যর্থ অভিযান, প্রহসনের বিচার, বীরউত্তম তাহেরকে ‘দেশদ্রোহী’ প্রমাণ, জেলখানায় তাহেরের অবিচল মনোবল, শেষ দিনগুলোতে তাহেরের জেল জীবন, তৎকালীন সরকারের সীমাহীন নিষ্ঠুরতা, ফাঁসির মঞ্চে যাবার অকুতোভয় প্রস্তুতি, কবিতায় শাসকের প্রতিবাদকারী আসামী তাহেরের অস্বাভাবিক দ্রুততায় ফাঁসি কার্যকর ও সর্বশেষে নির্বাক লুৎফার অপলক চেয়ে থাকা আমৃত্যু বিপ্লবী তাহেরের কবর ভিজে যাওয়ার চোখ ভেজানো দৃশ্য। লেখক অত্যন্ত নিষ্টার সাথে কাহিনীর ঘোড়াদৌড়ে হাজির করেছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান, মাওলানা ভাসানী, তাজউদ্দিন আহমেদ, মোজাফফর আহমদ, মতিয়া চৌধুরী, জেনারেল ওসমানী, খালেদ মোশারফ, জিয়াউর রহমান, মেজর মঞ্জুর, শাফায়েত জামিল, বঙ্গবন্ধুর খুনিসহ আরও অনেক সেনা কর্মকর্তা, সিরাজ শিকদার, জাসদের তাত্ত্বিক নেতা সিরাজুল আলম খান, হাসানুক হক ইনু সহ আরও অনেক বিখ্যাত ও আলোচিত, সমালোচিত ব্যক্তিত্বকে। প্রচলিত কায়দায় রচিত নয় বলে কিংবা কাঠামোগত কারণে অনেকে একে উপন্যাস হিসেবে মানতে রাজী নন, কিন্তু ইতিহাস, গবেষণা আর উপন্যাস এই তিনের অপূর্ব সম্মিলন ঘটেছে ‘ক্রাচের কর্নেল’-এ। কিছু কিছু জায়গায় পাঠকের কাছে তাহের চরিত্রটিকে লেখকের ভাবনাতুর পক্ষপাতিত্ব মনে হতে পারে। কিন্তু চিরাচরিত সাফল্য বা ব্যর্থতার খেরো খাতায় হিসাব না করে লেখক এখানে স্পষ্ট করতে চেয়েছেন মগজে স্বপ্ন আর করোটিতে বারুদের চাষ করা স্বাপ্নিক চাষ, ক্রাচে ভর দেয়া এক কর্নেলের অমিমাংসিত চরিত্রকে। ইতিহাসের দৈবাৎ ঘূর্ণনে তাহেরের হাত থেকে ফসকে যাওয়া আপাত ব্যর্থ বিপ্লবও যে কখনও হয়ে উঠতে পারে তথাকথিত সাফল্যের চেয়ে উজ্জ্বল তারই এক কৌতূহলী গাঁথা ক্রাচের কর্নেল।
Was this review helpful to you?
or
কর্নেল তাহের-কে নিয়ে বাংলাদেশের মানুষকে সবসময়ই অন্ধকারে রাখা হয়েছে। ১৯৭৫ থেকে আজ পর্যন্ত কোন রাজনৈতিক দলই প্রকাশ করেনি ৭ই নভেম্বর, ১৯৭৫-এর সিপাহি বিপ্লব কেন হয়েছিল। কোন রাজনৈতিক দলই ওই বিপ্লবে কর্নেল তাহেরের ভুমিকা নিয়ে পরিষ্কারভাবে কিছু বলেনি। তার কারন রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণে কর্নেল তাহের-এর চিন্তাধারা সব প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে অগ্রহণযোগ্য। কারন, তিনি সবসময়ই গণ-মানুষের অধিকারের কথা বলেছেন, গণ-মানুষের জন্য রাজনীতির কথা বলেছেন, গণ-মানুষের উন্নতির কথা বলেছেন। যার ফলে মাস্টার দা সূর্য সেনের পর তিনিই একমাত্র বিপ্লবী যাকে ১৯৭৬ সালে এক মিথ্যা মামলার রায়ে ফাঁসি দেয়া হয়। যার সঠিক চিত্রায়ন আমরা 'ক্র্যাচের কর্নেল' বইটিতে পাই। লেখক শাহাদুজ্জামান'র টান টান উত্তেজনায় ভরা 'ক্র্যাচের কর্নেল' বইটিকে শুধুমাত্র একটি উপন্যাস বললে কম বলা হবে। কারন, এই অসাধারণ বইটি পরলেই বুঝা যায় লেখক অনেক সময় নিয়ে, অনেক গবেষণার পর এই বইটি লিখেছেন। তার লেখনি ক্ষমতার গুণে এই বইটি একটি উপন্যাস থেকে কর্নেল তাহের-এর অসাধারণ জীবনী হয়ে উঠে। যারাই এই বইটি পড়বেন, তাদের কেউই যে বইটি শেষ না করে উঠতে পারবেন না এ ব্যাপারে নিশ্চিতভাবে বলে দেওয়া যায়। সবাইকে এক অসাধারণ বিপ্লবী-মুক্তিযুদ্ধা কর্নেল তাহের সম্পর্কে জানার আমন্ত্রণ রইলো।
Was this review helpful to you?
or
একটি স্বপ্নঃ "আমি এমন একটা বাংলাদেশের কল্পনা করি যার নদীর দুপাশে উঁচু বাধ। সে বাঁধের উপর দিয়ে চলে গেছে সোজা পাকা রাস্তা, চলে গেছে রেল লাইন, ইলেক্ট্রিসিটি, গ্যাস, টেলিফোন, টেলিগ্রাফ লাইন। বাঁধের দুই পাশে ছড়ানো গ্রাম। সেখানে নির্দিষ্ট দূরত্বে সুন্দর নক্সার অনেক বাড়ি নিয়ে এক একটা জনপদ। প্রতিটা বাড়ির সামনে একটা সবুজ ঘাসে ঢাকা বাগান, সেখানে ফুল। একদিকে খোলা মাঠ। বিকেল বেলা বুড়োরা এই মাঠের চারপাশে বসে গল্প করে। ছেলে মেয়েরা মেতে উথে নানা খেলায়। সকালবেলা সামনের সোজা রাস্তা দিয়ে বাসের হর্ন শোনা যায়। হৈ চৈ করে ছেলে মেয়েরা যায় স্কুলে।" -কর্নেল তাহের স্বাধীন বাংলাদেশে খুব সাধারন একটা স্বপ্ন দেখেছিলেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর চৌকস অফিসার কর্নেল আবু তাহের বীরবিক্রম। কিন্তু তিনি জন্মেছিলেন বড্ড এক ভুল সময়ে। তাঁর সময়টা ছিল ঘোর লাগা এক অন্ধকারাচ্ছন্ন সময়। তিনি পারেননি তাঁর মনের মাঝে একে যাওয়া এই স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করতে। তিনি বাস্তবায়ন করতে পারেননি একটি বৈজ্ঞানিক সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবের রূপরেখাকে। বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে নাটকীয় কালপর্বের, ঘোর লাগা এক অন্ধকার সময়ের এক কুশীলব হয়েই পৃথিবী থেকে বিদায় নিতে হল আমাদের ইতিহাসের এক অনন্য অসমসাহসী বিপ্লবী নেতাকে। যাদুর হাওয়া লাগা অনেকগুলো মানুষ, নাগরদোলায় চেপে বসা একটি জনপদ, ঘোর লাগা এক সময়, একটি যুদ্ধ, কয়েকটি অভ্যুথান, রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র, একজন যুদ্ধাহত কর্নেল, একজন অসমসাহসী বিপ্লবি নেতা, ক্রাচে ভর করে চলা এক নির্ভীক কর্নেলের জীবনীমুলক ঐতিহাসিক উপন্যাস শাহাদুজ্জামানের ক্রাচের কর্নেল। কথাসাহিত্যিক শাহাদুজ্জামানকে আমাদের সময়ের এক শক্তিশালী গল্পকার হিসেবেই দেখা হয়। দুর্ভাগ্যজনকভাগে এর আগে তাঁর কোন উপন্যাস বা গল্প আমার নজরে আসে নি এবং পড়াও হয়নি। এই বইমেলায় শাহাদুজ্জামানের কয়েকটি বইয়ের সাথে বহুশ্রুত ক্রাচের কর্নেলও সংগ্রহ করি। ক্রাচের কর্নেল পড়ার আগে লেখকের লেখনীর সাথে একটু পরিচিত হতে 'কেশের আড়ে পাহাড়' থেকে কয়েকটি গল্প পড়ে নিই এবং মুগ্ধও হই। কোন একজন লেখকের মাত্র ৩/৪ টি ছোটগল্প পড়েই তাঁর লেখনী সম্বন্ধে ধারনা পাওয়া গেলেও সেই লেখকের সাহিত্যের মান নিয়ে উপসংহারে পৌছে যাওয়া উচিত না। কিন্তু সত্যি বলতে কি, মাত্র অল্প কয়েকটি গল্পও শাহাদুজ্জামানের সাহিত্যের শক্তিমত্তা নিয়ে আমাকে একটা উপসংহারে নিয়ে আসতে বাধ্য করল। তো অনেক উচ্চাশা নিয়েই মাত্র দুইরাতেই এই ৩৪২ পৃষ্ঠার বিশাল উপন্যাস পড়ে শেষ করলাম। ইতিহাস আশ্রয়ী উপন্যাস দুই ধরনের হয়ে থাকে। ১) কাল ঐতিহাসিক, তবে চরিত্রগুলো কাল্পনিক হয়ে থাকে। ২) কাল এবং চরিত্র দুটাই বাস্তব হয়ে থাকে। ক্রাচের কর্নেল দ্বিতীয় ধারায় পড়বে। কাল এবং চরিত্র বাস্তবের হওয়ার দরুন একজন পাঠক সবসময় একটি ইতিহাস নির্ভর উপন্যাসে শুধুই ইতিহাসকে খুঁজে বেড়ায়। ইতিহাস কতটুকু শুদ্ধভাবে আনা হয়েছে এই উপন্যাসে সেই বিতর্কে যেতে চাইনা। তবে সেই সময়কালের কিছু ব্যাক্তির মুখে শুনা ঘটনার সাথে আমি অন্তত অমিল পাইনি। লেখক ইতিহাসকে পুঁজি করে যথেষ্ট নিরপেক্ষ থাকার চেষ্টা করেছেন এবং সেটাই তাঁর লেখায় ফুটে উঠেছে। তিনি কাউকে দোষারোপ করেননি। দোষী সাব্যস্ত হয়েছে সেই অস্থির সময়, সেই ঘোর লাগা অন্ধকারাচ্ছন্ন কাল, স্বাধীন মুক্তিকামী মানুষের আকাংখা। কর্নেল আবু তাহের বীরবিক্রমের জীবনীমুলক গ্রন্থ হিসেবে যদি ক্রাচের কর্নেল মুল্যায়ন করি তাহলে অবশ্যই বলতে হবে লেখকের প্রচেষ্টা মোটামোটি সফল। যদি আমি এই উপন্যাসকে ৬০/৭০ দশকের একটি নিপাট ঐতিহাসিক উপন্যাস হিসেবে দেখতে চাই তাহলেও বলব ঠিকই আছে। কারন লেখক এই ৩৪০ পৃষ্ঠার মধ্যে সেই অস্থির কঠিন সময়ের বর্ননা সাবলীল ও যতটুকু বিস্তারিত দেয়া সম্ভব তা করেছেন। ৬৯ এর অভ্যুথান, ৭০ এর রাজনৈতিক অস্থিরকাল, ৭১ এর মুক্তিযুদ্ধ, যুদ্ধ পরবর্তী সমস্যা জর্জরিত স্বাধীন দেশ, ৭৫ এর অগণিত কালরাত্রি ও রাজনৈতিক পটভুমির পরিবর্তন এবং ৭৬ এর কর্নেল তাহেরের ফাঁসি এক মলাটের ভিতরে আগে একসাথে আমি অন্তত পড়িনি। তবে লেখক কিছু কিছু অংশে গুরুত্বপুর্ন অনেক ইতিহাস শুধু হালকা ছুঁয়ে গেছেন। আরও বিস্তারিত বিবরন দিলে ভাল হত। যেহেতু কর্নেল তাহেরকে নিয়েই এই উপন্যাস তাই মুক্তিযুদ্ধ সময়কালের কর্নেল তাহেরের বীরত্বগাথা বর্ননা থাকাটাই স্বাভাবিক। তবে আমার কাছে মনে হয়েছে সেই সময়কালের কাহিনী অতটা সবিস্তারে না লিখে লেখক যদি ৭৫ এর সময়কালের অভ্যুথানের পর অভ্যুথানের কাহিনীগুলো আরও বিস্তারিত লিখতেন তাহলে হয়ত আরও ভাল হত। ক্রাচের কর্নেল এর সাহিত্যের মানদণ্ড নিয়ে একটু প্রশ্ন উঠবেই। শাহাদুজ্জামানের সাহিত্যশক্তির পুরোপুরি বিকশিত হয়নি। উপন্যাসের মাঝে মাঝে কিছু কিছু অংশে ছিটেফোটা পাওয়া গেলেও শাহাদুজ্জামান তাঁর নামের প্রতি সুবিচার করেননি। এই উপন্যাস এক বিপ্লবীকে নিয়ে এবং দেশের প্রতি তাঁর আবেগ নিয়ে। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত একজন উচুমানের সাহিত্যিকের যেখানে এই ধরনের উপন্যাসে আবেগের সমারোহ ঘটানো উচিত ছিল, সেখানে বরং উল্টোটাই দেখা গেছে। অনেকটাই আবেগ বিবর্জিত ক্রাচের কর্নেল। কেবলমাত্র শেষের ৫/৬ পৃষ্ঠা ছাড়া বাকি ৩৩০ পৃষ্ঠায় লেখক আমাকে আবেগে আক্রান্ত করাতে সক্ষম হননি। বাস্তবের চরিত্রের ইতিহাস আশ্রিত উপন্যাস আমাকে সবসময় টানে। সাহিত্যের মানদণ্ডে কিছুটা হতাশ হলেও শাহাদুজ্জামানের লেখনীর জাদুতেই আমি নিশ্চিত যে কেউই এই উপন্যাস পড়া শুরু করে শেষ না করে সহজে উঠতে পারবে না। লেখকের কাহিনী বিন্যাস বা ঘটনাক্রমিকে কাহিনীকে তাঁর সাবলীল, প্রাঞ্জল ভাষায় টেনে নেয়ার এক সুন্দর ক্ষমতা দেখিয়েছেন। আপনাকে ডানে থাকতে হবে না, বামেও থাকতে হবে না। আমাদের দেশের এক অসমসাহসী যোদ্ধার, মেধাবী রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, অকুতোভয় দেশপ্রেমিক, এক নির্ভীক বিপ্লবীর, দেশমাতৃকা নিয়ে এক সামান্য স্বপ্ন দেখা এক মানুষের গল্প জানতে হলে পড়ুন শাহাদুজ্জামানের ক্রাচের কর্নেল। কর্নেল তাহেরের প্রতি ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে এক ধরনের আক্ষেপ সৃষ্টি হয় মনে। ফাঁসিতে ঝোলানোর আগের বর্ণনা পড়ে কান্না পেয়ে যাওয়াটাই স্বাভাবিক। এক আদিম বিষণ্নতায় মন দ্রবীভূত হয়ে যেতে বাধ্য। নিজের হাতে ফাঁসির দড়ি তুলে নেয়ার আগে কর্নেল তাহের সহযোদ্ধা মেজর জিয়াউদ্দীনের লেখা একটা কবিতা আবৃত্তি করেন। জন্মেছি সারা দেশটাকে কাঁপিয়ে তুলতে, কাঁপিয়েই গেলাম । জন্মেছি তাদের বুকে পদচিহ্ন আঁকব বলে, এঁকেই গেলাম । জন্মেছি মৃত্যুকে পরাজিত করব বলে, করেই গেলাম । জন্ম আর মৃত্যুর দুটো বিশাল পাথর রেখে খেলাম । সেই পাথরের নিচে শোষক আর শাসকের কবর দিলাম । পৃথিবী, অবশেষে এবারের মতো বিদায় নিলাম । ক্রাচের কর্নেল আমার দৃষ্টিতে একটি অবশ্যপাঠ্য বই।
Was this review helpful to you?
or
কত বই-ই তো পড়ি ... পাতার পর পাতা উল্টে যাই দ্রুত, বই শেষ হলে রেখে দেই শেলফে । তারপর একসময় ভুলেও যাই । কিন্তু কিছু বই পড়ার সময় বারবার থামতে হয়, খোলা জানলা দিয়ে বাইরের আকাশের দিকে চোখ চলে যায় একটু পরপর । বইয়ের পাতায় শব্দেরা যে গল্প শোনাচ্ছে তা অবিশ্বাস্য ঠেকে । মনে হয়- এমন অদ্ভুত সময়ও পার করেছে আমার দেশ! দ্রুত পড়তে মন সাড়া দেয় না, ইচ্ছে হয় বইটা শেষ না করি । শেষ করলে তো শেষই হয়ে গেলো । কিছু বই আসলে সমাপ্তি ডিজার্ভ করে না, ডিজার্ভ করে আত্নীকরণ, নিজের মধ্যে ধারণ করা । ক্রাচের কর্নেল এমনই এক বই । মুক্তিযুদ্ধ এবং যুদ্ধ পরবর্তী দুই দশকের ইতিহাসের উপর ভিত্তি করে রচিত বই পড়ার মধ্যে বেশ বিপদ আছে । অধিকাংশ লেখকই যেহেতু আওয়ামী লীগ আর বিএনপি এই দুই রাজনৈতিক মতবাদে বিভক্ত, তাদের লেখায় তারা দলীয় ইতিহাসটাই তুলে ধরেন । এজন্যে কোন বইয়ে বঙ্গবন্ধুর সাত-ই মার্চের ভাষণই স্বাধীনতার ঘোষনা এবং যুদ্ধে মেজর জিয়ার কোন ভূমিকাই নেই । আবার কোন বইয়ে মেজর জিয়া মহানায়ক, স্বাধীনতার ঘোষক আর বঙ্গবন্ধু পাকিস্তানে কারাবরণ করে আছেন আইওয়াশ হিসেবে । সেই সময়টায় আর যুদ্ধ পরবর্তী কয়েক বছরের টালমাটাল সময়ে দেশে আসলেই কি ঘটেছিলো তা সম্ভবত যারা ঐ সময়টাতে জীবিত ছিলেন তারাই জানেন, আমরা পরবর্তী প্রজন্ম তা কখনোই সেভাবে বুঝতে পারবো না । আর সামনের বিশ - ত্রিশ বছর পর প্রকৃতির স্বাভাবিক নিয়মেই দেশে মুক্তিযোদ্ধারা যখন আর জীবিত থাকবেন না, ইতিহাস বিকৃত হবে আরও ভয়ংকর ভাবে । এতো সমস্যার পরও কিছু উৎস থাকে যা তুলনামূলক বিশ্বাসযোগ্য । " ক্রাচের কর্নেল " - এর লেখক শাহাদুজ্জামান আমার কাছে তেমনই একজন । লেখক কর্নেল তাহেরের জীবনের আবহে তৃতীয় দৃষ্টিতে তুলে এনেছেন মুক্তিযুদ্ধের গল্প, মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী জাদুর মতো এক সময়ের গল্প । কর্নেল তাহেরকে আমার মনে হয়েছে একজন বিপদপ্রেমী মানুষ, যিনি বিপদকে ভয় পাওয়া তো দূরে থাকুক, ভালোবাসেন । সেজন্যে পাকিস্তান আমলেই কোর্ট মার্শালের ভয় উপেক্ষা করে দেশে তরুনদের যুদ্ধের প্রশিক্ষণ দিয়ে গেছেন, প্রস্তুত করেছেন বিপ্লবের জন্যে । যুদ্ধ শুরু হলে ক্যান্টনমেন্ট থেকে পালিয়ে চলে এসেছেন নিজের দেশের পক্ষে লড়তে, কাঁধে তুলে নিয়েছেন সেক্টর কমান্ডারের দায়িত্ব । তার মা, সব ভাই - বোনেরা তার নেতৃত্বে পাশাপাশি অংশ নিয়েছেন তার সব কাজে, সম্মুখ যুদ্ধে একসাথে চালিয়েছেন স্টেনগান । আর শক্তির পেছনের রুধির ধারার মতো তাহেরকে সবসময় উৎসাহ - প্রেরণা যুগিয়েছেন তার অসামান্যা স্ত্রী লুৎফা ..... অদ্ভুত এক পরিবার । পরিবারের একেক সদস্য একেক রকম, কিন্তু দেশের জন্যে সবাই নিবেদিত প্রাণ। কর্নেল তাহের পরিবারের নিউক্লিয়াস, তাকে ঘিরে আবর্তিত সবাই । তাহের যেন রুপকথার পাতা থেকে উঠে আসা দুর্ধর্ষ এক নাইট । একই সাথে তিনি প্রেমিক এবং স্বপ্নবাজ বিপ্লবীও । হৃদয়বান, সাহসিকতা, বোকামী, জটিলতা এবং সারল্যের মিশ্রণে তৈরি তার চরিত্র ব্যাখ্যা করে বোঝানো দুষ্কর । তাহেরের মতো মানুষ ইতিহাসে দুই-একবারই আসে ... আসে, এবং বদলে দিয়ে যায় স্বয়ং ইতিহাসকেই । তাহের ছাড়াও বইয়ের পাতায় পাতায় নিজস্ব ক্যারিশমা নিয়ে আছেন দেশের ইতিহাসের মহারথীরা - মুজিব, জিয়া, সিরাজ শিকদার, তাজউদ্দীন, ভাসানী, খন্দকার মোশতাক, ডালিম, ফারুক, খালেদ মোশারফ, এ.কে খন্দকার, শাফায়েত জামিল, তাহেরের চার ভাই সহ আরও অনেকে । বইটা পরিচিত এসব চরিত্রের অনেকের ব্যাপারেই আমাদের ধারণা বদলে দেবে । লেখক শেখ মুজিবের চরিত্রকে উপস্থাপন করেছেন নির্মোহভাবে । তুলে এনেছেন মুদ্রার দুই পিঠ-ই, লিখেছেন মানব দেবতার উত্থান এবং পতনের পেছনের কথা । আর মেজর জিয়ার শীতলতা, নিস্পৃহতা, ব্যক্তিত্ব, অসম্ভব ধী শক্তি আর নিষ্ঠুরতা পাঠককে বিহ্বল করে দেবে । লেখক শাহাদুজ্জামানের ব্যাপারে কিছু বলাই বাহুল্য । তার প্রতি মুগ্ধতা প্রকাশের মতো উপযুক্ত বিশেষণ আমার জানা নেই । তার লেখা যেকোন বই চোখ বন্ধ করে হাতে তুলে নেয়া যায় । আর ক্রাচের কর্নেল তার অন্যতম উল্লেখযোগ্য কাজ । ক্রাচের কর্নেল এমনই এক বই যা আমার বিশ্বাস যুগ যুগ ধরে মানুষকে মুগ্ধ করে যাবে, প্রেরণা যোগাবে । কিছু বই না পড়লে আসলে পাঠকত্বই বোধহয় আসে না । বইটা আমাদের সবার পড়া উচিত, নিজের দেশকে জানার জন্যে, আমাদের শেঁকড়ের ইতিহাস জানার জন্যে । এ বইয়ের প্রধান সমালোচনাগুলোর মধ্যে আমার কাছে যেটা বেশী দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে তা হল লেখক এখানে নির্মোহ ভাবে তাহের কে উপস্থাপন করেন নি , তাহেরকে তিনি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মহামানব হিসেবেই দেখিয়েছেন, ব্যক্তি তাহেরের নানা দোষ - ত্রুটি তুলে আনতে আগ্রহ দেখান নি । কথা সত্যি । তবে এই পক্ষপাতদুষ্টতার জন্যই " ক্রাচের কর্নেল " কে আমার কাছে বেশী ভালো লেগেছে , মানবিক মনে হয়েছে । বাদবাকি সমালোচনার বেশীরভাগই মনে হয়েছে সমালোচকদের জ্ঞান ফলানোর প্রচেষ্টা, নিজেকে অতি উৎকৃষ্ট পাঠক প্রমাণের এজেণ্ডা । সৃষ্টিশীলতার চেয়ে সমালোচনা বরাবরই সহজ কাজ ছিল , আছে , থাকবেও । থাকুক সেসব ..... নাগর দোলায় চেপে বসা এ জনপদের ঘোর লাগা অদ্ভুততম সময়ের এ বাস্তব গল্প যারা এখনও পড়েন নি, তাদের নিমন্ত্রণ । আমার রেটিং: ৫/৫ . কোন আবেগী রেটিং নয়, ঠান্ডা মাথায় ভেবে দেওয়া । নম্বারের বেঁড়াজালে বইয়ের মান বুঝিয়ে ফেলতে চাওয়ার চেষ্টাটাই যদিও আমার খুব একটা পছন্দ না, তবুও পাঠকের স্বার্থেই দেয়া .... এবং আমার মুগ্ধতা প্রকাশের ব্যর্থ চেষ্টা স্বরুপও।