User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
দেশ ও কালের চলমান প্রবাহ থেকেই শুধু নয়, আন্তর্জাতিক পরিসর থেকেও তিনি তুলে ধরেছেন মনীষীবৃন্দের মাতৃভাষা চর্চাবিষয়ক দৃষ্টান্তের পর দৃষ্টান্ত। ফলে এ বইয়ের পাঠ আমাদের সামনে উন্মুক্ত করে এমন ভাবনার জগৎকে , যার আন্দোলনে আমরা উদ্দীপিত হই প্রতিটি মুহূর্তে।লেখক বাংলা ভাষায় বুলিমিশ্রণের সাম্প্রতিক প্রবণতা সম্পর্কে বিভিন্ন মত তুলে ধরেছেন ‘হালের শবপোড়া মড়াদাহের দল’ প্রবন্ধে। তবে সেগুলোর পর্যালোচনা বা বিশ্লেষণ তিনি করেননি। স্পষ্ট করেননি নিজের কোনো মতও। ‘আদিবাসীদের ভাষা সমস্যা’ প্রবন্ধে লেখক গুরুত্ব আরোপ করেছেন আদিবাসীদের ভাষার পুনরুজ্জীবন, ব্যবহার, উন্নয়ন ইত্যাদির ওপর। মাতৃভাষা সম্পর্কে বিভিন্ন ভাষায় যেসব কবিতা লেখা হয়েছে সেগুলো সম্পর্কে হাবিবুর রহমানের গভীর আগ্রহের পরিচয় পাওয়া যায় ‘ভাষা ও মাতৃভাষার কবিতা’ প্রবন্ধে। এখানে বিভিন্ন ভাষায় রচিত মাতৃভাষাবিষয়ক বেশ কিছু কবিতার বাংলা অনুবাদ উপহার দিয়েছেন তিনি পাঠককে। ভাষার আপন-পর গ্রন্থটি প্রচুর তথ্য ও উদ্ধৃতিসমৃদ্ধ। এসব তথ্য আহরণ ও পরিবেশনে তাঁর নিষ্ঠা প্রশংসনীয়। তিনি যুগপৎ ক্রিয়া ও প্রতিক্রিয়া, ইতিবাচক ও নেতিবাচক দিক তুলে ধরায় সচেষ্ট। এখানেই তাঁর বিশিষ্টতা। এ বইয়ের লেখক মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান একজন ভাষা সৈনিক। তাঁর ভাবনাজগতের বৃহৎ এক এলাকা জুড়ে থাকে ভাষা ভাবনা,ভাষা প্রেম। ভাষার আপন পর গ্রন্থেও এর পরিচয় মিলবে। তবে অন্য অনেকের মতো ভাষা বিষয়ে ,সে তাঁর মাতৃভাষা বাংলা হোক বা বিশ্বের অন্য যেকোন ভাষাই হোক, তাঁর একদেশদর্শী মনোভাব নেই। বরং প্রতিটি ভাষা, সে ছোট বা বড় ,এমনকি বিলুপ্ত হতে বসা আদি কোন ভাষাই হোক, সে ব্যপারে রয়েছে তার অশেষ কৌতূহল। সে কৌতূহলের বশবর্তী হয়েই তিনি এ গ্রন্থের সাতটি প্রবন্ধে ধারাবাহিক ভাবে তুলে ধরেছেন মাতৃভাষা বিষয়ে এমন সব প্রশ্ন ,যা শুধু ভাবনারই সঙ্গী করে না। , আমাদের শিক্ষা ও দৈনন্দিন জীবনচর্চায় আন্তরিক ব্যবহারে উদ্যোগী হতেও সমভাবে প্রাণিত করে।
Was this review helpful to you?
or
কর্মজীবনে আইনজীবী ও বিচারপতি মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান বাংলা প্রবন্ধ ও গবেষণায় ঈর্ষণীয় কৃতিত্বের অধিকারী। একদা তিনি দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলেন কোরআনসূত্র ও যথাশব্দ লিখে। পরে তিনি খ্যাতি অর্জন করেছেন রবীন্দ্রব্যাখ্যায় ও ভাষাচর্চায়। সম্প্রতি প্রথমা থেকে প্রকাশিত হয়েছে তাঁর ভাষাবিষয়ক প্রবন্ধগ্রন্থ ভাষার আপন-পর। এতে সংকলিত প্রবন্ধগুলো হচ্ছে ‘অমর একুশের ষাট বছর’, ‘ভাষার আপন-পর’, ‘বাংলা ভাষার সংগ্রাম চলবেই চলবে’, ‘অপদার্থতার এক মিনার’, ‘হালের শবপোড়া মড়াদাহের দল’, ‘আদিবাসীদের ভাষা সমস্যা’, ‘ভাষা ও মাতৃভাষার কবিতা’। প্রবন্ধগুলোতে লেখকের ভাষাচেতনা ও ভাষা-ভাবনার নানা প্রসঙ্গ উঠে এসেছে। মুহাম্মদ হাবিবুর রহমানের ভাষাচেতনার ভিত্তি মাতৃভাষার প্রতি গভীর অনুরাগ। এই অনুরাগ থেকেই তাঁর বিচরণ ভাষার উদার আকাশে। সে আকাশে বিশ্বের প্রতিটি ভাষাই মর্যাদার আসনে আসীন। সেসব ভাষার সবলতা, দুর্বলতা কিংবা বিলীয়মানতা ইত্যাদি সম্পর্কে তাঁর কৌতূহল অসীম। সেসব কৌতূহল ও অনুসন্ধানের পরিচয় মিলবে ভাষার আপন-পর বইয়ের পাতায় পাতায়। বইয়ের প্রথম প্রবন্ধ ‘অমর একুশের ষাট বছর’। তথ্যপূর্ণ এ প্রবন্ধে সংক্ষিপ্ত পরিসরে উঠে এসেছে ভাষা আন্দোলনের ইতিহাসের রাজনৈতিক-সাংস্কৃতিক পটভূমি, আন্দোলনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা, বর্তমান বিশ্বে বাংলা ভাষার অবস্থান, উচ্চ আদালতে বাংলা প্রচলনের সমস্যা, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে শহীদ দিবসের স্বীকৃৃতিলাভ ইত্যাদি। লেখক নিজেও একজন ভাষাসংগ্রামী। ভাষা আন্দোলনে তাঁর ভূমিকা ও অবস্থানের স্মৃতিখণ্ডও উঠে এসেছে এ প্রবন্ধে। মাতৃভাষার গুরুত্ব স্বীকার করেও লেখক ভাষার ব্যবহারে আপন-পর ভেদের পক্ষপাতী নন। ‘ভাষার আপন-পর’ প্রবন্ধে স্বভাবতই দ্বিভাষিকতা ও বহুভাষিকতার পক্ষে তাঁর অবস্থান। প্রবন্ধটিতে মাতৃভাষা বাংলার পাশাপাশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে ইংরেজির মাধ্যমে জ্ঞান-বিজ্ঞান চর্চার ওপর। বহুভাষিকতার গুরুত্ব আলোচনা করতে গিয়ে এখানে লেখক নানা উদ্ধৃতি, দৃষ্টান্ত ও তথ্য ব্যবহার করেছেন। তবে তাঁর একটি তথ্য কিছুটা অস্পষ্ট। তিনি লিখেছেন, ‘লন্ডন শহরে ছেলেমেয়েরা আজ ৩০৭টি ভাষায় নাকি কথা বলে।’ এ কথাটা কী বোঝাচ্ছে? সেখানকার ছেলেমেয়েরা সবাই ৩০৭টি ভাষায় পারদর্শী, নাকি সেখানে ছেলেমেয়েদের মধ্যে ৩০৭টি ভাষা প্রচলিত? ‘বাংলা ভাষার সংগ্রাম চলবেই চলবে’ প্রবন্ধে লেখক জ্ঞানবিজ্ঞান চর্চার ক্ষেত্রে মাতৃভাষার অপ্রতুল ব্যবহারে মর্মাহত। তিনি জোর দিয়েছেন সর্বস্তরে মাতৃভাষাচর্চার এবং তার প্রসার ও উন্নতির ওপর। এই ভাবনারই অনুসৃতি ঘটেছে ‘অপদার্থতার এক মিনার’ প্রবন্ধে। সর্বস্তরে বাংলা প্রচলনে ব্যর্থতাকে তিনি দেখেছেন অপদার্থতার মিনার হিসেবে। লেখক বাংলা ভাষায় বুলিমিশ্রণের সাম্প্রতিক প্রবণতা সম্পর্কে বিভিন্ন মত তুলে ধরেছেন ‘হালের শবপোড়া মড়াদাহের দল’ প্রবন্ধে। তবে সেগুলোর পর্যালোচনা বা বিশ্লেষণ তিনি করেননি। স্পষ্ট করেননি নিজের কোনো মতও। ‘আদিবাসীদের ভাষা সমস্যা’ প্রবন্ধে লেখক গুরুত্ব আরোপ করেছেন আদিবাসীদের ভাষার পুনরুজ্জীবন, ব্যবহার, উন্নয়ন ইত্যাদির ওপর। মাতৃভাষা সম্পর্কে বিভিন্ন ভাষায় যেসব কবিতা লেখা হয়েছে সেগুলো সম্পর্কে হাবিবুর রহমানের গভীর আগ্রহের পরিচয় পাওয়া যায় ‘ভাষা ও মাতৃভাষার কবিতা’ প্রবন্ধে। এখানে বিভিন্ন ভাষায় রচিত মাতৃভাষাবিষয়ক বেশ কিছু কবিতার বাংলা অনুবাদ উপহার দিয়েছেন তিনি পাঠককে। ভাষার আপন-পর গ্রন্থটি প্রচুর তথ্য ও উদ্ধৃতিসমৃদ্ধ। এসব তথ্য আহরণ ও পরিবেশনে তাঁর নিষ্ঠা প্রশংসনীয়। তিনি যুগপৎ ক্রিয়া ও প্রতিক্রিয়া, ইতিবাচক ও নেতিবাচক দিক তুলে ধরায় সচেষ্ট। এখানেই তাঁর বিশিষ্টতা। এ বইয়ের প্রবন্ধগুলো মাতৃভাষার প্রতি গভীর মমতা ও প্রীতির ফসল। মাতৃভাষাচর্চায় আমাদের অনীহা ও অবহেলা দেখে লেখক হতাশ ও ক্ষুব্ধ। তিনি গুরুত্ব দিয়েছেন মাতৃভাষায় দক্ষতা অর্জনের ওপর, পাশাপাশি প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেছেন পরভাষা থেকে আলোকিত হওয়ার। এ বই বাংলা ভাষা ও ভাষা-ভাবনাসংক্রান্ত নানা তথ্যে ঋদ্ধ। ভাষাপ্রেমী পাঠকের সংগ্রহে রাখার মতো উল্লেখযোগ্য বই এটি।