User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
excellent moral
Was this review helpful to you?
or
এরিক মারিয়া রেমার্কের যেকোন বই পড়লেই মনটা কেমন যেন উদাশ হয়ে যায়।দ্য ব্ল্যাক অবিলিস্ক ও তার ব্যতিক্রম নয়।করুন রসে সিক্ত রোমাঞ্চকর এই কাহিনীর মূল চরিত্র লাডউইগ বডমার । প্রথম মহাযুদ্ধ তখন মাত্র শেষ হয়েছে, ধীরে ধীরে মাথাচাড়া দিচ্ছে হিটলারী আতঙ্ক, মুদ্রাস্ফীতির অভিশাপে সবাই দিশেহারা । বলা যায় হঠাৎ করেই শহর ছেড়ে চলে যেতে হলো লাডউইককে, ফিরল সতের বছর পর । প্রাণপ্রিয় বন্ধু জর্জ কি আজও বেঁচে আছে? আর ইসাবেল? তার কী খবর?বইটি পড়লে পাওয়া যাবে সবকিছুর উত্তর।অসাধারণ একটি বই।
Was this review helpful to you?
or
‘একজন মাত্র মানুষের মৃত্যু বিয়োগান্তক কিছু, কিন্তু লাখ লাখ মানুষের মৃত্যু পরিসংখ্যান মাত্র’—এই স্মরণীয় উক্তিটি জার্মান সাহিত্যিক এরিক মারিয়া রেমার্কের; প্রথম ও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের মধ্যবর্তী সময়ের পটভূমিতে লেখা বিখ্যাত উপন্যাস দ্য ব্লাক অবিলিস্ক-এ এমনটাই বলেছেন তিনি। ১৯২৩ সালের জার্মানিতে তখন মুদ্রাস্ফীতি চরম আকার ধারণ করেছে, ৩৬ হাজার মার্কের বিনিময়ে পাওয়া যাচ্ছে এক ডলার, ১০ হাজার মার্কের বিনিময়ে পাওয়া যাচ্ছে বড়জোর একটা রুমাল। কফিন, কবরের ওপরে বসানো ফলক, ক্রস ইত্যাদি বিক্রি করা ক্রল কোম্পানির একজন কর্মচারী লাডউইক বডমার হলেন প্রথম পুরুষে লিখিত দ্য ব্লাক অবিলিস্ক-এর প্রধান চরিত্র, প্রথম বিশ্বযুদ্ধে যিনি সরাসরি রণাঙ্গনে লড়েছেন। তাঁরই জবানিতে লিখিত এ উপন্যাসের পুরোটাই টান টান স্নায়বিক উত্তেজনা আর জীবনের কঠিন সব সত্যের নগ্নতায় ভরা। খুব দীর্ঘ নয় এটি, মাত্র ৯০ পৃষ্ঠার, তবু এখানে অনেক ঘটনা, ছোট কিন্তু তাৎপর্যপূর্ণ, উপস্থাপন করে নানা দল উপদলে বিভক্ত তখনকার জার্মানির বিচিত্র রাজনৈতিক অবস্থা, ক্লাব সংস্কৃতি, ভয়ংকর অর্থনৈতিক সংকট এবং সাধারণ মানুষের চরিত্র ও অসহায়তাকে। উপন্যাসের শুরুটা হয়েছে বেশ নিরাসক্তভাবে, যেখানে লিবারম্যান, যিনি পৌরসভার করব খোঁড়ার কাজ করেন- ৮০ বছর বয়সে ১০ হাজারেরও বেশি কবর খুঁড়েছেন; বলছেন, ‘বেশির ভাগ মানুষ বসন্ত আর হেমন্তকালেই মরে।... নিয়মিত যথেষ্ট সংখ্যায় মানুষ মরতে থাকলে কবরখনকদের আর দুঃখ করার কিছু থাকে না।’ পুরো উপন্যাসটিই আসলে লেখক বর্ণনা করেছেন নিরাসক্ত এক দার্শনিকের ভঙ্গিমায়। কেননা যুদ্ধকালে প্রতিটি আলাদা মৃত্যু ক্রমশ পরিসংখ্যান হয়ে উঠেছে তার চোখের সামনেই। ফলে, অন্যান্য দুঃখময় ঘটনারাশি তিনি বর্ণনা করেন কোনোরকম আবেগাক্রান্ত না হয়ে। কালো গ্রানাইট পাথরের একটা স্মৃতিস্তম্ভ, অভিধানের ভাষায় যাকে বলা হয় অবিলিস্ক, এ উপন্যাসের ঘটনাসমূহের মধ্যে একটা যোগসূত্র স্থাপন করে। ক্রল কোম্পানির বর্তমান মালিকদ্বয়ের বাবা এটি আমদানি করেছিলেন কিন্তু তাঁর জীবদ্দশায় এবং তার পরও বহুদিন এটি অবিক্রীত থেকে গেছে। উপন্যাসের পরিসর যেটুকু, তার তুলনায় চরিত্র এখানে অনেক বেশি, তবু প্রতিটি চরিত্রই অত্যন্ত ক্রিয়াশীল আর স্পস্ট, সম্ভবত উপন্যাসের সবচেয়ে বড় সার্থকতার জায়গাও এটি। দুই বিশ্বযুদ্ধের মাঝামাঝি সময়টাতে জার্মানির কেন্দ্রীয় শাসনব্যবস্থা শিথিল হয়ে পড়ায় সেখানে প্রচুর ছোট ছোট ক্লাব গড়ে ওঠে। এসব ক্লাবের সদস্যরা একে অন্যের ওপর যেকোনো সময় চড়াও হতো। ফলে, এদের থেকে আত্মরক্ষার জন্য আরও আরও ক্লাবের জন্ম হয়। আবার, মুদ্রাস্ফীতি অসহনীয় আকার ধারণ করলে প্রায়ই মানুষজন আত্মহত্যা করতে থাকে। জার্মান জাতির একটা অংশের প্রবল ইহুদি বিদ্বেষ স্পস্ট হয়ে উঠেছে এ উপন্যাসে। মেজর উলকেনস্টাইন, অবসরপ্রাপ্ত এক সেনা কর্মকর্তা এবং তার ‘প্রবীণ সৈনিক সংঘে’র কর্মকাণ্ডে এই বিদ্বেষ বিশেষভাবে লক্ষ করা যায়। তখনকার পরিস্থিতিতে সরকারি কর্মকতাদের কার্যকলাপে প্রশাসনের সুবিধাবাদী দিকটি তুলে ধরেন লেখক। একটি খুনের ঘটনা মেয়র যেভাবে তার চোখের সামনে ঘটতে দেন এবং নেহাতই ‘দুর্ঘটনা’ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেন, তার মাধ্যমে ওই সময়ের প্রশাসনের চেহারাটি পরিষ্কার হয়। পাগলাগারদে চিকিৎসা নিতে আসা জেনেভিব টারোভান, একজন সিজোফ্রেনিয়ার রোগী, লাডউইক বডমার যাকে অধিকাংশ সময়ে ডাকছেন ইসাবেল নামে, রোগাক্রান্ত সময়ে তার জীবনদর্শন এবং রহস্যময় কথাবার্তা দ্রুত একটি ঘোর থেকে অন্যতর ঘোরের ভেতর পাঠককে ধাবিত করে। এ পাগলাগারদেরই প্রধান ডাক্তার ওয়ার্নিকের সঙ্গে বডমারের আলাপ ভয়ংকর সত্য ভাষণে স্নায়ুকে বিচলিত করে তোলে। তাদের নৈশকালীন আলাপের একপর্যায়ে মোমের আলোয় একটি পতঙ্গের অন্তিম ওড়াউড়ি লক্ষ করে বডমারের উদ্দেশ্যে ডাক্তার বলছেন, ‘আমি একজন বিজ্ঞানী, বিজ্ঞানী হিসেবে আমার কাজ পর্যবেক্ষণ করা, বিশ্বাস করা নয়। কিন্তু পাদরি বোডেনডিকের কাজই হলো বিশ্বাস করা, যুক্তি-প্রমাণের তোয়াক্কা না করেই বিশ্বাস করা। বিজ্ঞানী আর পাদরির মাঝখানে তুমি হতভাগা ওই নাছোড়বান্দা পোকাটার মতো ফরফর করে উড়ে বেড়াচ্ছো।’ সমগ্র জার্মানি ভয়ানক অর্থনৈতিক সংকটে থাকলেও শেষ পর্যন্ত দেখা যায় বডমারের শৈশব স্মৃতিজড়িত এলাকার নর্তকীদের একটি নিবাস এর আওতামুক্ত থাকে। এদের কাছে ডলার দুষ্প্রাপ্য নয়, কেননা এরা বিভিন্ন দেশে নাচগানের নিমন্ত্রণ পান। সে রকমই একজন নর্তকী মিলড্রেড স্যাঙ্কে, যিনি তাঁর শারীরিক কাঠামোর কারণে ‘আয়রন হর্স’ নামে পরিচিত, বিদেশ থেকে প্রচুর ডলারের সঙ্গে প্রাণঘাতী রোগ বহন করে আনেন এবং মারা যান। তাঁর কবরে ব্যবহারের জন্য আড়াই শ ডলারে বিক্রি হয় সেই কালো অবিলিস্কটি, যা বহু বছর অযত্নে বাগানের এক কোণে পড়ে ছিল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর বডমার ওডেনব্রাক শহরে এলে সেই ধ্বংসস্তূপের নগরে একমাত্র স্মৃতি হিসেবে ওই অবিলিস্কটিই তার চোখে পড়ে।