User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
খুব বেশি কাছ থেকে মিশে হুমায়ূন আহমেদ সম্পর্কে যতজন কিছু লিখেছেন, তার মাঝে একজন খালিদ মাহমুদ মিঠু। পেশায় তিনি চিত্রগ্রাহক থেকে পরিচালকে পরিবর্তিত, স্বভাবে যিনি আবার একজন চিত্রকর। হুমায়ূন আহমেদের প্রথম দিককার বেশিরভাগ নাটক এবং সিনেমার ক্যামেরার দায়িত্বে ছিলেন তিনি। তাই তার কথায় সত্যিকার অর্থেই কিছুটা ভিন্নভাবে উঠে এসেছেন প্রিয়লেখক হুমায়ূন। বইয়ের শুরুতেই তার সরল স্বীকারোক্তি তিনি লেখক নন, তাই কেউ যেন তার স্মৃতিচারণ থেকে শৈল্পিক কোন মূল্য না খোঁজে। শিল্পের মানদণ্ডে হয়তো অনেক কিছু তিনি লিখেন নি, তবে ছোট-ছোট কিংবা টুকরো-টুকরো হুমায়ূন-সংশ্লিষ্টতা নিয়ে তার যে উল্লেখ্যগুলি, সময়ের মানদণ্ডে তার অবস্থান অনেক উচুতে। এবং হুমায়ূন-ভক্ত ও গবেষকদের জন্য তা অনেক কিছুর আখরও হয়তো। ভেঙ্গে বললেই কিছু জিনিস স্পষ্ট হবে। অনেকেই হয়তো অনেক ভাবে হুমায়ূন আহমেদকে অতিমানবীয় পর্যায়ে নিয়ে যান, তার বাইরেও যে তিনি যে রক্তমাংসের কেউ ছিলেন, ভুলও হয়তো করেছেন (হয়তো হুমায়ুন আহমেদের কাছে তার ব্যাখ্যা ছিলো।), তার কিছু ছোঁয়া এখানে পাওয়া যাবে। রক্তমাংসের হুমায়ুন অনেক বেশি আড্ডাপ্রিয় ছিলেন, মাঝে মাঝে সেজন্যে বড় বড় নায়ক-নায়িকারাও তার প্রতি বিরক্ত হতেন। হয়তো সামনা-সামনি বলতেন না তারা, স্যার দেখে। তবে সকালে শুরু হওয়ার নাম নেয়া শ্যুটিং গল্পের তালে তালে বিকেল গড়িয়ে শুরু না হলে রাগের কিছু আছে বৈকি। লেখক মিঠু তার অনেক কিছুর সাক্ষী, এবং একপর্যায়ে এরকম বেশ কিছু জিনিস তিনি নিজ হাতে ঠিক করেছেন বলে উল্লেখ করেছেন, তাতে হুমায়ূন আহমেদের মাহাত্ম্য বেড়েছে বৈ কমেনি। আরেকটা (কিছুটা বিব্রতকর বটে!!) ঘটনার উল্লেখ করেছেন তিনি। সে সময়ে হুমায়ূন আহমেদ তার নাটকের পারিশ্রমিক নাকি গতানুগতিক সময়ের তুলানআয় অনেক কম দিতেন। একবার ফ্ল্যাট কেনা নিয়েও স্যার কিছুটা বিপদে হয়তো ফেলেছিলেন তাকে। ঘটনাগুলি হয়তো হুমায়ূনের মানস-জাত সত্তার প্রকাশ ঘটায়, তবে এর বাইরে হুমায়ূন আহমেদের অন্য ঘটনাগুলির উল্লেখ কিন্তু তাকে অন্যমাত্রায় তুলে নিয়ে যায়। যেমন তিনি শ্যুটিঙ-এর সময় যে পরিমাণ মজা করতেন তার তুলনা দ্বিতীয়টি নেই। পাশাপাশি সে সময়ের খাওয়া-দাওয়াকে হুমায়ূন আহমেদ শিল্পের পর্যায়েই নিয়ে গিয়েছিলেন। এ প্রসঙ্গে বেশ কিছু ঘটনার উল্লেখ পাবেন পাঠক। ব্যক্তি হুমায়ূন আহমেদের আতিথেয়তা ও বদান্যতার অনেক উদাহরণও টেনে এনেছেন খালিদ মাহমুদ মিঠু। তার বর্ণনায় গিয়ে পাঠককে আর বঞ্চিত করবো না, তবে এটা বলা যায়, খালিদ মিঠুর ব্যক্তিগত কোণ থেকে দেখতে গেলেও এক অসাধারণ মানুষের ছবিই পাবেন পাঠক। একটা কথা বাদ পড়ে গেলো, খালিদ মিঠু কিন্তু ব্যক্তিগত জীবনে একজন সফল চিত্রকরও। এটা নিয়ে তার অনেক ত্যাগ ও সাধনার গল্পও আছে এখানে। পাঠক বেশ মজা ও কিছু করার অনুপ্রেরণা পাবেন কয়েকটি ঘটনা জানলে। একটা কথা দিয়েই শেষ টানি। হয়তো খুব বেশি ব্যক্তিগত সম্পর্ক থেকে মিঠুর বইটি লেখা, যা শিল্পোত্তীর্ণ হতে পারেনি হয়তো (পাতায় পাতায় নিজ হাতে আঁকা চিত্রগুলো বাদে), কালোত্তীর্ণ হয়েছে কিনা সে কথাও সময়ই বলে দেবে। তবে হুমায়ূন আহমেদের কালের অনেক নাজানা, কম-জানা ঘটনাকে এক মলাটে এনেছেন বলে মিঠুর লেখাটি অবশ্যই অনেক হুমায়ূন ভক্তের জানার খোরাক হিসেবে থাকবে, তা বলা যায়।