User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
Good
Was this review helpful to you?
or
excellent
Was this review helpful to you?
or
Oshadharon....
Was this review helpful to you?
or
Nice
Was this review helpful to you?
or
দারুণ!
Was this review helpful to you?
or
তথ্য সমৃদ্ধ সুন্দর একটি বই।
Was this review helpful to you?
or
আলেক্স রাদারফোর্ডের এম্পায়ার অব দ্য মোগল সিরিজের দ্বিতীয় বই। এই বইতে সম্রাট হুমায়ূনের জীবন কাহিনী তুলে ধরেছেন হিস্টোরিকাল ফিকশনের মাধ্যমে। লেখক এই বইতে হুমায়ূনের চরিত্রে কোমলতা আর কাঠিন্যের এক অভূতপূর্ব সংমিশ্রণ দেখিয়েছেন। সম্রাট হুমায়ূনের ভাইদের প্রতি তার অগাধ বিশ্বাস ভরসা আর ভালোবাসা কিভাবে তাকে রাজ্য হারা করেছিল, কীভাবে তিনি স্ত্রীকে সাথে নিয়ে তার বেদুইন জীবন কাটিয়েছন, রোদ্রতপ্ত মরুভূমিতে সর্বকালের শ্রেষ্ঠ সম্রাট আকবরের জন্ম এসমস্ত কিছুর এক মর্মস্পর্শী কাহিনী তুলে ধরা হয়েছে বইটিতে। এই চমতকার বইটি সংগ্রহে রাখার জন্য রকমারি ডট কম কে ধন্যবাদ।
Was this review helpful to you?
or
আদতে হুমায়ূনের ভাইদের সাথে তার ‘যুদ্ধ’ না হলেও লেখক এই বইয়ের নাম এভাবে রেখেছেন। ‘এম্পায়ার অব দ্য মুঘল’ সিরিজের দ্বিতীয় বই, যার গল্প হুমায়ূনকে কেন্দ্র করে আবর্তিত। বাবরের হঠাৎ মৃত্যুতে তার প্রতিষ্ঠিত সাম্রাজ্য আসে হুমায়ূনের হাতে। পিতার সাথে বেশ কিছু যুদ্ধে বীরের মত যুদ্ধ করলেও খেয়ালী মানসিকতা তার জন্য বিপদ ডেকে আনে। তিন সৎ ভাই-কামরান, আসকারি আর হিন্দালের সাথে দূরত্বের বা সংঘাতের কারনে সাম্রাজ্য হারাতে হয়। ঠিক পিতা বাবরের মত নিয়তি হুমায়ূনের। সাম্রাজ্য হারিয়ে যাযাবর জীবন যাপনের পর পারস্যের শাহ-র সাহায্যে আবার সাম্রাজ্য ফিরে পান। তারপর পিতার মতই অল্প বয়সে হঠাৎ মৃত্যু
Was this review helpful to you?
or
"ব্রাদার্স অ্যাট ওয়ার" আ্যালেক্স রাদারফোর্ডের মোঘল সিরিজের দ্বিতীয় কিস্তি। অসাধারণ ও সাবলীলভাবে মোঘল ইতিহাস ঐতিহ্য তুলে ধরেন অনুবাদক সাদেকুল আহসান কল্লোল
Was this review helpful to you?
or
ভারতবর্ষের ইতিহাসের অসংখ্য শাসকের মাঝে মাত্র দুজনকে দ্যা গ্রেট উপাধী দেয়া হয়। তাদের মাঝে একজন ছিলেন সম্রাট আকবর। দীর্ঘ ৫০ বছর ধরে শুধু ভারতবর্ষকে শাসন করার জন্য নয়, বরং সম্রাট আকবরকে গ্রেট বলা হয় তাঁর শাসনামলে গৃহীত বিচক্ষণ সিদ্ধান্তগুলোর জন্য, যার প্রতিফলন আজ প্রায় চারশো বছর পরেও ভারতবর্ষের মাটিতে উজ্জ্বল হয়ে আছে। উপন্যাসের নামঃ রুলার অভ দা ওয়ার্ল্ড লেখকঃ অ্যালেক্স রাদারফোর্ড অনুবাদকঃ এহসান উল হক জেনারঃ ঐতিহাসিক প্রকাশকালঃ ফ্রেরুয়ারী, ২০১৩ প্রকাশকঃ রোদেলা প্রকাশনী পৃষ্ঠা সংখ্যাঃ ৪৩২ সম্রাট আকবরের পূর্ণ নাম ছিল আব্দুল-ফথ জালাল উদ্দিন মোহাম্মদ আকবর। পিতা সম্রাট হুমায়ূনের আকস্মিক মৃত্যুর পর আকবর হিমু নামের এক সেনাপতির বিশ্বাসঘাতকায় অল্প সময়ের সিংহাসন হারান। কিন্তু মাত্র প্রধান সেনাপতি এবং অভিভাবক বৈরাম খানের সহযোগিতায় মাত্র তের বছর বয়সে তিনি পুনরায় ১৫৫৬ সালে সিংহাসন আহরণ করেন। কিন্তু উচ্চাকাঙ্ক্ষী আকবরের সিদ্ধান্তগুলোকে বৈরাম খান বার বার প্রভাবিত করার চেষ্টা করলে আকবর তাঁকে হজ্ব করার উদ্দেশ্য ভারতবর্ষ ত্যাগ করতে বলে। পথে আততায়ীদের আক্রমণে ১৫৬১ সালে বৈরাম খান নিহত হন। কোন উপযুক্ত প্রমাণ না থাকলেও অনেক ইতিহাসবিদ ধারনা করে এই হত্যাকান্ডের পিছনের সম্রাট আকবরের ভূমিকা ছিল। অতঃপর সম্রাট আকবরের দুধ ভাই আধম খান সম্রাট সাথে বিশ্বাসঘাতকা করলে আজীবন সম্রাট আর কাউকে বিশ্বাস করতে পারেননি। এমনকি নিজের সন্তানদেরকেও না। আকবরের শাসনকাল তাঁর বিচক্ষণতার কারণে মোটামুটি মসৃণভাবে অতিবাহিত হয়েছিলো। তিনি শাসক হিসাবে ছিলেন উদার এবং দূরদৃষ্টিসম্পন্ন। রাজপুতদের শক্তির বিরুদ্ধে না গিয়ে তিনি তাদের দিকে মিত্রতার হাত এগিয়ে দেন। অ্যালেক্স র্যাদারফোর্ড উনাদের বইতে যোধবাঈকে তাঁর পুত্রবধূ, সেলিমের স্ত্রী হিসাবে উপস্থাপন করা হলেও অনেক ইতিহাসবিদ তাঁকে আকবরের স্ত্রী হিসাবে দাবী করে। সম্রাট আকবর একাধিক হিন্দু রাজপুত রাজকন্যাকে বিবাহ করেছিলেন। এছাড়াও সম্রাটের অনেক পত্নী এবং উপপত্নী ছিল। সম্রাটের স্থপতি তুহিন দাশ ফতেহপুর সিক্রিতে যে হেরেমের নির্মাণ করেন সেখানে একসাথে পাঁচশো রমনীর বসবাসের ব্যবস্থা ছিল। অনেকের মতে আকবরের হেরেমের নারীর প্রকৃত সংখ্যা ছিল প্রায় পাঁচ হাজার। আকবর সব ধর্মের মানুষকে সমান মর্যাদা প্রদানে বিশ্বাসী ছিলেন। অম্বরের রাজা ভগবান দাসের পুত্র মানসিংহ ছিল তাঁর বিশাল সেনাবাহিনীর প্রধান সেনাপতি। এছাড়া রাজা টোডর মল্ল ছিল আকবরের অর্থমন্ত্রী। আকবরের বহু সাফল্যে মাঝে একজন রাজপুত শাসক তাঁর সমগ্র জীবনে কাটার মত বিঁধে ছিল। তিনি ছিলে মেওয়ারের শাসক মহারানা উদয় সিং। চিতর দুর্গ আকবর দখল করে নিলে উদয়পুর থেকে তিনি মেওয়ার শাসন করেছেন এবং কখনো মোঘলদের কাছে বশ্যতা স্বীকার করেননি। সম্রাট আকবরের জীবন সবচেয়ে বড় তিক্ততার স্বাদ লাভ করেন তাঁর নিজের জৈষ্ঠ্য পুত্র সেলিমের ( পরবর্তী সম্রাট জাহাঙ্গীর) নিকট থেকে। প্রশাসনিক ক্ষমতার ভাগ না দেবার কারণে সেলিম অনেক হিংসাপরায়ণ পদক্ষেপ গ্রহন করেছিলেন। এগুলো মধ্যে প্রখ্যাত আইন-ই-আকবরী গ্রন্থের লেখকে সম্রাট আকবরের সবথেকে ঘনিষ্ঠ মিত্র আবুল ফজলকে হত্যা করা। সেলিম আবুল ফজলকে তাঁর আর সম্রাট আকবরের মাঝে সবথেকে বড় প্রতিবন্ধকতা মনে করতেন। এছাড়াও সেলিম নিজের পিতার হেরেমের রক্ষিতাদের উপর নজর ছিল বলে জানা যায়। এমনকি সেলিম এলাহাবাদে পঞ্চাশ হাজার মোগল সৈনিকদের সমাবেত করে বিদ্রোহ করার চেষ্টা করে। সেলিমের অন্যতম একটি অদ্ভুত দিক ছিল নিজের পুত্র এবং সম্রাট আকবরের নাতি খসরুর বিরুদ্ধে সিংহাসনের জন্য প্রতিযোগতা করা। আকবর তাঁর দুই পুত্র এবং জেষ্ঠ্য নাতিদের ব্যবহারে অসন্তুষ্ট হয়ে কনিষ্ঠ নাতি খুররমের ( জাহাঙ্গীরের পরবর্তী সম্রাট শাহজাহান ) প্রতি দুর্বল হয়েছিলেন। এমনকি খুররমের প্রতিপালনও নাকি সম্রাট আকবর নিজে করেছিলেন। অবশ্য ৬৩ বছর বয়সে ১৬০৫ সালে আকবর মৃত্যুর আগে সেলিমকেই সম্রাট হিসাবে নির্বাচন করে যান। ব্যক্তিগত অভিমতঃ রুলার অভ দা ওয়ার্ল্ড বইটি অ্যাালেক্স রাদারফোর্ডের মোগল সিরিজের তৃতীয় বই। এর বইটির কেন্দ্রীয় চরিত্র সম্রাট আকবর। বইটিতে কিছুক্ষেত্রে পর্যাপ্ত তথ্য অনুপস্থিতি মনে হবার কারণে বাড়তি কিছু তথ্য সংযুক্ত করলাম। ইতিহাসবিদদের মতে সম্রাট আকরব অশিক্ষিত ছিলেন। তিনি লিখতে কিংবা পড়তে জানতেন না। কিন্তু তাই বলে তিনি জ্ঞান আহরণে উদাসীন ছিলেন না। তিনি তাঁর পরিচারকদের দিয়ে নিজের ধর্মের কিতাবের পাশাপাশি হিন্দু ধর্মের রামায়ণ, উপনিষদ এমনকি ক্যাথলিকদের বাইবেল সম্পর্কে ধারনা লাভের চেষ্টা করেছিলেন। একই সাথে সম্রাট আকবর নিষ্ঠুর এবং উদারতার উদাহরণ ছিলেন। ভারতবর্ষের দুই তৃতী য়াংশ অঞ্চল জুড়ে তাঁর সম্রাজ্যের বিস্তার ছিল সেখানে প্রায় ১২ কোটি মানুষ বাস করতো। তিনি তাঁর বিশাল হিন্দু জনতার জন্য যেসকল ব্যবস্থা গ্রহন করেছিলেন সেগুলো আজও অসাম্প্রদায়িকার দৃষ্টান্ত হিসাবে গন্য করা হয়। তাঁর মধ্যে হিন্দু তীর্থ যাত্রীদের তীর্থকর প্রত্যাহার করা অন্যতম। তিনি সতীদাহ প্রথার বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন। তিনি প্রথম বাংলাদেশে ফসলের উত্তম ফলনের জন্য বাংলা পঞ্জিকা প্রনয়ণ করেন। তিনি প্রথম বিশ্বে ইটের তৈরি ভবন নির্মাণ প্রচলন করেন। তিনি পর্তুগাল এবং ইংরেজদের ভারতবর্ষে বানিজ্য করার অনুমতি প্রদান করেন। তিনি বহুত্ববাধে বিশ্বাস করতেন। তাই তিনি দিন-এ-এলাহী নামে সকল ধর্মের সংমিশ্রণে এক নতুন ধর্মের প্রচলন করেছিলেন। সর্বোপরি সম্রাট আকবর এক বিশাল হৃদয়ের মানুষ ছিলেন। তিনি তাঁর প্রজাদের নিজের সন্তানের অধিক ভালোবাসতেন। তিনি নিজেকে উত্তর থেকে আগত কোন উদ্ধাস্তু নয় বরং ভারতবর্ষের সন্তান ভাবতে বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করতেন। তিনি মোগলদের শুধু শ্রেষ্ঠ শাসক ছিলেন না তিনি সমগ্র ভারতের ইতিহাসের শ্রেষ্ঠ সম্রাট ছিলেন। অনুবাদ রেটিংঃ ৪/৫
Was this review helpful to you?
or
Good one. But Raiders From the North was better one.
Was this review helpful to you?
or
#রকমারি_বইপোকা_রিভিউ_প্রতিযোগিতা বইয়ের নামঃ অ্যাম্পেয়ার অব দ্য মােগল : ব্রাদার্স অ্যাট ওয়ার মূলঃ অ্যালেক্স রাদারফোর্ড অনুবাদঃ সাদেকুল আহসান কল্লোল প্রচ্ছদঃ অনন্ত আকাশ প্রথম প্রকাশঃ সেপ্টেম্বর ২০১২ প্রকাশনীঃ রোদেলা মূল্যঃ ৩৭৫.০০ টাকা পৃষ্ঠাঃ ৫০৩ 'ভ্রাতৃসম আবেগ নিসর্জন দাও, যদি তুমি সম্রাট হিসাবে অভিষিক্ত হওয়ার আকাঙ্খা পোষণ কর... কেউ কারো ভাই নয়! ওরা সবাই তোমার সাম্রাজ্যের শত্রু!' - হুমায়ুনের সৎ-বোন গুলবদন (হুমায়ুননামা)। ১৫৩০ সাল, ভারতবর্ষের উত্তরাঞ্চলের শহর, আগ্রা। হুমায়ুন, সদ্য অভিষিক্ত দ্বিতীয় মোগল সম্রাট। নিঃসন্দেহে একজন ভাগ্যবান ব্যক্তি। তাঁর আব্বাজান বাবর, তাঁর জন্য অঢেল প্রাচুর্য, গৌরব এবং সেই সাথে খাইবার গিরিপথের দক্ষিণে হাজার মাইল প্রসারিত একটা সাম্রাজ্য রেখে ইন্তেকাল করেছেন। তাঁকে এখন অবশ্যই উত্তরাধিকার সূত্রেপ্রাপ্ত এই সাম্রাজ্য মজবুত করে গড়ে তুলতে এবং মোগলদের তাদের পূর্বপুরু, তৈমুরের উপযুক্ত হিসেবে প্রমাণ করতে হবে। কিন্তু, হুমায়ুন নিজের অজান্তে ইতিমধ্যে ভয়ঙ্কর এক বিপদে অধঃপতিত হয়েছে। তাঁর সৎ ভাইয়েরা তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের জাল বিস্তার করেছে; তাদের ধারণা মোগল সেনাবাহিনীর অধিনায়কত্ব করার জন্য আর তাঁদের আরও গৌরবময় সম্মান দান করার মতো যথেষ্ট পরিমাণ শক্তি, ইচ্ছা আর নিষ্ঠুরতার অভাব রয়েছে। সম্ভবত তাদের কথাই ঠিক। হুমায়ুন অচিরেই ভয়ঙ্কর লড়াইয়ের মাঝে নিজেকে আবিস্কার করবে; নিজের সিংহাসনের জন্য না, নিজের জীবন বাঁচাতে, নিজের সাম্রাজ্যের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে তাঁকে প্রাণপণে লড়তে হবে। রেটিংঃ ১০/১০ রকমারি লিংকঃ https://www.rokomari.com/book/62057/অ্যাম্পেরার-অব-দ্য-মোগল-ব্রাদার্স-অ্যাট-ওয়ার
Was this review helpful to you?
or
উপমহাদেশের মুঘল শাসকদের নিয়ে “অ্যালেক্স রাদারফোর্ড” এর অমর সৃষ্টি “এম্পায়ার অফ দ্য মুঘল” সিরিজ । এই সিরিজের বইগুলো হল – “রেইডারস ফ্রম দ্য নর্থ” , “ব্রাদারস অ্যাট ওয়ার” , “রুলার অফ দ্য ওয়ার্ল্ড” এবং “টেইন্টেড থর্ন” । সিরিজের দ্বিতীয় বই “ব্রাদারস অ্যাট ওয়ার”, যেখানে বর্নিত হয়েছে দ্বিতীয় মুঘল সম্রাট হুমায়ুনের কাহিনী । কাহিনীর শুরু ১৫৩০ সালে । ভারতবর্ষে মোগল সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠার মাত্র চার বছরের মাথায় সম্রাট বাবর মৃত্যু বরণ করেন । মৃত্যুর আগে তিনি হুমায়ূনকে সম্রাট ঘোষণা করেন এবং সাথে হুমায়ূনকে শেষ অনুরোধ করেন, তিনি যেন কখনো তার সৎ ভাইদের বিরুদ্ধে কোন পদক্ষেপ না নেন, সেটা যতই তাদের প্রাপ্য হোক । টালমাটাল অবস্থায় সিংহাসনে আরোহন করেন হুমায়ূন । মোগল সাম্রাজ্য তখনো ভালো করে শেকড় বসাতে পারেনি ভারতবর্ষে এবং চারদিকে শত্রুরা তখনো তৎপর । হুমায়ূনরা ছিলেন ৫ ভাই-বোন । হুমায়ূনের সৎ ভাই কামরান, আসকারি ও হিন্দাল এবং সৎ বোন গুলবদন । সম্রাট হবার পর পরই হুমায়ূন মুখোমুখি হন প্রাসাদ ষড়যন্ত্রের । কামরানের নেতৃত্বে অন্য সব ভাই ষড়যন্ত্র করে হুমায়ূনকে মেরে ফেলার । গুপ্তচরের মাধ্যমে হুমায়ুন আগে ভাগে টের পেয়ে তাদের সবাইকে বন্দী করলেও, পরে তাদের ক্ষমা করেন এবং পুনরায় তাদের নিজ নিজ রাজ্যে ফেরত পাঠান । ষড়যন্ত্র শুরু হয় আবার । কামরানের মা গুলরুখ চাতুর্যের সাথে সম্রাট হুমায়ূনকে আফিমে আসক্ত করেন এবং সেই নেশায় পড়ে সম্রাট হয়ে পড়েন খামখেয়ালী, রাজ্যশাসনে নিরাসক্ত । এই সুযোগে শেরশাহ শক্তিশালী হয়ে ওঠেন এবং নিজেকে স্বাধীন ঘোষনা করেন । চরম বিপদে হুমায়ূনের বিবেক জাগ্রত হয় । তিনি আফিম ত্যাগ করেন এবং শেরশাহকে দমনের জন্য যুদ্ধযাত্রা করেন । কিন্তু শেরশাহের অসামান্য রনকৌশল এবং ধুর্ততার কাছে পরাজিত হন তিনি । পর পর দুবার পরাজয়ের পর সপরিবারে পালিয়ে যান তিনি কাবুলের উদ্দেশ্যে । ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে কামরান বিশ্বাসঘাতকতা করেন এবং কাবুল দখল করে নেন । হুমায়ূনকে পাওয়া মাত্রই মেরে ফেলার অভিপ্রায় ব্যক্ত করেন কামরান । অন্য অনুগত রাজ্যগুলোও মুখ ফিরিয়ে নেয় হুমায়ূন থেকে এবং শেরশাহকে তাদের সমর্থন দেয় । পালাতে শুরু করেন হুমায়ুন । সাথে ফুফু খানজাদা, সৎবোন গুলবদন এবং হাতে গোনা কিছু বিশ্বস্ত সহচর । এর মাঝেই হামিদা কে বিয়ে করেন তিনি । প্রাণ নিয়ে পালিয়ে বেড়ানোর মাঝেই জন্ম নেয় আকবর । দীর্ঘ ১৫ বছর কখনো ইরান, কখনো আফগানিস্তান, কখনো পাঞ্জাব আবার কখনো সিন্ধু-রাজস্থানের মরু পান্তরে কাটানোর পর পারস্য সম্রাটের আনুকুল্যে সুসজ্জিত একটি সেনাবাহিনী নিয়ে আবার যুদ্ধযাত্রা করেন তিনি এবং সিংহাসন পুনরুদ্ধার করেন ১৫৫৫ সালে । হুমায়ূন ইতিহাসের অন্যতম এক খেয়ালী চরিত্র । অন্য তুলিতে আঁকা এক বৈচিত্র্যময় ব্যক্তিত্ব । একই সাথে তিনি যেমন মহানুভব, তেমনি নিষ্ঠুর; যেমন সুবিবেচক শাসক, তেমনি ক্ষেত্রবিশেষে খামখেয়ালী । যুদ্ধ থেকে পালানোর সময় এক ভিস্তিওয়ালা তার প্রান রক্ষার্থে সাহায্য করলে তিনি তাকে সম্রাট বানানোর প্রতিশ্রুতি দেন এবং পরবর্তীতে সত্যি তাকে কয়েক ঘন্টার জন্য ভারতবর্ষের সিংহাসনে বসান । আফিমের নেশায় বুদ হয়ে তিনি আদেশ দেন দিনের সাথে মিলিয়ে বিভিন্ন বর্ণের কাপড় পরিধানের, যা তিনি সহ সব রাজন্যবর্গ দরবারে পড়তেন । তার এমন অনেক খেয়ালীপনা, অজানা-অপ্রচলিত তথ্য আর তার পিছনের কারণগুলো সুন্দর ভাবে বিধৃত হয়েছে এই বইতে । শুধু বৈচিত্রময় চরিত্র নয়, হুমায়ুনের বিশেষত্ব তার নাটকীয়তায় ভরা “ট্র্যাজিক” জীবন । আর এই নাটকীয়তাই উপন্যাসটিকে করে তুলেছে গতিময় এবং চমকে ভরপুর । যে কোন কল্পিত উপন্যসের চেয়েও তা যেন বেশী বৈচিত্র্যময় । নিজের ভাইদের দ্বারা হীন ষড়যন্ত্রের স্বীকার হুমায়ূন ১৫৩০ এ সিংহাসনে আরোহণ করে শেরশাহের কাছে পরাজিত হয়ে পালিয়ে যান ১৫৪০ সালে । কখনো মরু প্রান্তরে, কখনোবা পাহাড়ের বরফশৃঙ্গে ক্ষুৎপিপাসায় কাতর আর সহায়-সম্বলহীন হয়ে পালিয়ে বেড়ান তিনি । এত কষ্টের পর ১৫৫৫ তে সিংহাসন পুনরুদ্ধার করলেও তা ভোগ করতে পারেননি তিনি । এর মাত্র কয়েক মাসের মধ্যে ১৫৫৬ সালে তিনি মৃত্যু বরণ করেন । সারাটা জীবন হয় ষড়যন্ত্রের মুখে, নতুবা পালিয়ে, নতুবা যুদ্ধে পার করেছেন তিনি । এই উপাখ্যান অত্যন্ত সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে বইটিতে । ততকালীন ভারতবর্ষের রাজনৈতিক উপাখ্যান, সামাজিক অবস্থা আর সংস্কৃতিও যেন ধরা দেয় পাঠকের সামনে এই বইয়ের মাধ্যমে । উপন্যাসের লেখক বস্তুত দুজন, দিয়ানা এবং মাইকেল প্রেস্টন দম্পতি । তাদের ছদ্দনাম অ্যালেক্স রাদারফোর্ড । অনেকদিনের গবেষনা’র পর তারা লিখতে শুরু করেন মুঘলদের নিয়ে এই উপন্যাস । এমনকি, বাবরের জন্মভূমি থেকে শুরু করে বেশ কিছু উল্লেখযোগ্য জায়গায় তারা ভ্রমণ করেছেন শুধু মাত্র উপন্যাস গুলোকে সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তোলার জন্য । এই বইকে সম্পূর্ন ইতিহাস না বলে ঐতিহাসিক উপন্যাস বলাই শ্রেয় । লেখকরাও স্বীকার করেছেন, গল্পের প্রয়োজনে বেশ কিছু চরিত্র এবং সংলাপ তারা নিজেরা কল্পনা করে নিয়েছেন । তবে সান্তনার কথা, সিরিজের প্রথম বই “রেইডারস ফ্রম নর্থ” এ এই কল্পনার পরিমান বেশী হলেও “ব্রাদারস অ্যাট ওয়ার” বইতে তা অনেকটাই তথ্যনিষ্ঠ, কেননা হুমায়ূনের সৎবোন গুলবদনের লেখা “হুমায়ূন নামা”, হুমায়ূনের সভাষদ জওহর রচিত “তাকদিরাত আল-ওয়াকিয়াত” এবং সম্রাট আকবরের উপদেষ্টা আবুল ফজল রচিত “আকবরনামা” থেকে তারা হুমায়ূনের ব্যপারে অনেক তথ্য এবং ধারনা নিয়েছেন । “রোদেলা” প্রকাশনী অনুদিত “ব্রাদারস অ্যাট ওয়ার” এর মোট পৃষ্ঠা ৫০৪ , মূল্য ৫০০ টাকা । অনুবাদক সাদেকুল হাসান কল্লোল । বেশ ভালো হয়েছে অনুবাদ । যে কোন বইপ্রেমী’র জন্য অনেক উপভোগ্য একটি উপন্যাস আর ঐতিহাসিক উপন্যাসের ফ্যান হলে তো কথাই নেই !