User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
khub sundor..page quality o khub valo,.. pore moja paisi, thanks
Was this review helpful to you?
or
দেয়াল যেন ইতিহাস আর আবেগের..... বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট. প্রতিটি চরিত্র যেন জীবন্ত, প্রতিটি ঘটনা হৃদয়ে নাড়া দেয়.....
Was this review helpful to you?
or
লেখাটা আমার মোটেও ভালো লাগেনি। গল্পটা শেষ হলো কি করে আর গল্পের মধ্যে কি কি ঘটনা ঘটেছে সব মাথার উপর দিয়ে গেছে।
Was this review helpful to you?
or
বইটি পড়ে আমি অনুপ্রেরিত হলাম
Was this review helpful to you?
or
অসাধারণ একটি বই❤️
Was this review helpful to you?
or
"দেয়াল" শুধু একটি কাহিনি নয়, বরং একটি সময়ের প্রতিচ্ছবি, যা আমাদের দেশের ইতিহাস ও রাজনীতির গভীরতা বুঝতে সহায়তা করে। যারা ঐতিহাসিক ও রাজনৈতিক পটভূমির ওপর ভিত্তি করে লেখা সাহিত্য পছন্দ করেন, তাদের জন্য "দেয়াল" একটি অবশ্যপাঠ্য।
Was this review helpful to you?
or
খুব ভালো বই
Was this review helpful to you?
or
একজন অরাজনৈতিক ব্যক্তি হিসেবে লেখক হুমায়ূন আহমেদ বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ ও তার পরবর্তী সময়ের ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা ও তার দেখা ইতিহাস তুলে ধরেছেন এই বইটিতে।
Was this review helpful to you?
or
❤️
Was this review helpful to you?
or
Nice book
Was this review helpful to you?
or
বেস্ট একটা বই, এক কথায় অসাধারণ
Was this review helpful to you?
or
আলহামদুলিল্লাহ বইটা অনেক ভালো
Was this review helpful to you?
or
???বইটা খুব সুন্দর। আপনারা নিতে পারে
Was this review helpful to you?
or
It's a best book.Eirkm boi gula porle vlo lage.
Was this review helpful to you?
or
অসাধারণ একটি উপন্যাস যা ইতিহাসের উপর ভিত্তি করে লেখা। হুমায়ূন আহমেদ সত্যকে সাহসিকতার তুলে ধরেছেন এজন্য তাকে অনেক ধন্যবাদ। পুরোপুরি শেষ করতে পারলে হয়তো আরো কিছু জানতে পারতাম আমরা আল্লাহ তাকে উত্তম প্রতিদান দান করুন।
Was this review helpful to you?
or
অনবদ্য লেখা। আমার পড়া হুমায়ুন আহমেদের অন্যতম সেরা বই। এত সহজ সাবলীল ভাবে যুদ্ধকালীন সময়ের প্রতিচ্ছবি খুব কম লেখকই প্রকাশ করতে পেরেছেন। হুমায়ুন আহমেদ জীবনকে গল্পের ছলে প্রকাশ করতে পারিতেন। তেমনিভাবে দেয়াল উপন্যাস টি তেমনি সহজভাবে পাঠকের হৃদয়ে প্রবেশ করাতে পেরেছেন।
Was this review helpful to you?
or
সর্বশেষ এবং সর্বসেরা
Was this review helpful to you?
or
a master peace book by Humayen Ahmed.
Was this review helpful to you?
or
আমি এই বইটা কিনতে চাই কিন্তু অর্ডারের অপশন পাচ্ছিনা
Was this review helpful to you?
or
??❤️❤️ খুবই ভালো একটা বই পড়লাম
Was this review helpful to you?
or
যথা সময়ের আগেই বই গুলো হাতে পেয়েছি তার জন্য ধন্যবাদ ?
Was this review helpful to you?
or
আমার দেখায় হুমায়ুন আহমেদ এর শেষ্ঠ উপন্যাস এটি
Was this review helpful to you?
or
অনেকে মনে করেন হুমায়ূন আহমেদ বইটি শেষ করতে পারেননি বলে বইটি ভালো নয়। আগে পড়ে দেখেন মারাত্মক বই। খালেদ মোশাররফ গোট।
Was this review helpful to you?
or
অতীতের অনেক না-জানা গল্প জানা গেল।
Was this review helpful to you?
or
Great book.
Was this review helpful to you?
or
Good
Was this review helpful to you?
or
এক কথায় অসাধারণ ❤️❤️❤️❤️❤️
Was this review helpful to you?
or
অসাধারণ
Was this review helpful to you?
or
সুন্দর বই
Was this review helpful to you?
or
GOOD
Was this review helpful to you?
or
হুমায়ুন আহমেদ একটি নাম; একটি নাম যাতে রয়েছে জাদু করার ক্ষমতা। উনি রসায়নস্ত্রের পন্ডিত নন, বাংলা সাহিত্যের সম্রাট নন, নন উনি কোন বিপ্লব জাগানিয়া লেখক, উনি ছিলেন বিংশ - একবিংশ কালের সন্ধিক্ষণের সবচেয়ে বড় জাদুকর। "দেয়াল" উপন্যাসটি তেমনি এক জাদুর ছোয়া। যে ছোয়ায় মনের সকল উল্লাস, আকাঙ্খা , আনন্দ ছলছলিয়ে উঠে।"দেয়াল" উপন্যাসকে তিনি লিখেছিলেন ঠিক তেমনি মায়া দিয়ে, মমতা দিয়ে। জীবনের সত্য ইতিহাসকে তুলে ধরেছেন এক বৃহৎ গল্পের মাধ্যমে। "দেয়াল" শতাব্দীর অন্যতম আবেগস্পর্শী এক বই।
Was this review helpful to you?
or
বই গুলো পরে আমার অনেক ভালো লেগেছে ধন্যবাদ রকমারি
Was this review helpful to you?
or
অনেক ভাল একটা বই
Was this review helpful to you?
or
অসাধারণ একটা বই।ইতিহাস সম্পর্কে অনেক কিছু জানা যাই।
Was this review helpful to you?
or
Good
Was this review helpful to you?
or
ভালো
Was this review helpful to you?
or
আমার প্রিয় লেখক এর প্রিয় বই???।।।
Was this review helpful to you?
or
খুব সুন্দর।
Was this review helpful to you?
or
খুব ভালো একটা বই
Was this review helpful to you?
or
Its my audacity to write a review on my all time favorite writer "Humayun Ahmed" sir's book. Just want to say love this book so much, as a historical book it's teach me many thig about our heroic history.
Was this review helpful to you?
or
প্রিয় লেখকের তালিকায় হুমায়ূন স্যার নেই। তবে "দেয়াল" নিঃসন্দেহে ভাল লেগেছে।
Was this review helpful to you?
or
Nice book
Was this review helpful to you?
or
বইটি অনেক তথ্য বহুল
Was this review helpful to you?
or
চমৎকার
Was this review helpful to you?
or
good book
Was this review helpful to you?
or
দেয়াল খুব ই ভালো বই, আর আজাজেল একটি কাল্পনিক চরিত্রের গল্প, যেখানে সবই সম্ভব.. ?
Was this review helpful to you?
or
নতুন প্রজন্মের সকলেরই উচিত বইটি পড়া।
Was this review helpful to you?
or
অণেক প্রিয় একটা বই।
Was this review helpful to you?
or
Alhamdulillah.
Was this review helpful to you?
or
চমৎকার
Was this review helpful to you?
or
Captivating ?
Was this review helpful to you?
or
best
Was this review helpful to you?
or
ইতিহাস মিশ্রিত উপন্যাস হিসেবে খুবই ভাল লেগেছে। খু্বই ইনফরমেটিভ।
Was this review helpful to you?
or
অসাধারণ
Was this review helpful to you?
or
❤️
Was this review helpful to you?
or
Nice Book ?? . One of the best book based on the Liberation war...
Was this review helpful to you?
or
দেয়াল সম্পর্কে কি আর বলবো... অসাধারণ একটি বই
Was this review helpful to you?
or
হুমায়ূন আহমেদ এর শেষ গল্প হচ্ছে দেয়াল। মুক্তিযুদ্ধের সময়ের জানা অজানা অনেক গল্পই পাওয়া যাবে। আমার কাছে বেশ ভাল লেগেছে বইটি।
Was this review helpful to you?
or
boitate muktijudder poroborti prekkhapot niye golpo kinba golpo akare lekha hoise.... ekhane asole, juddo poroborti kaler sokol president der ku kormo ar tader mrittu niye alochona hoise. tobe jatir boshoye ektu kom kohtai bola hoise... manush mattroi asole vul . tai jatir pitar jegla jegla vul chilo, segla uposthapon kolle valo hoito.....
Was this review helpful to you?
or
সত্যিই অসাধারণ একটা উপন্যাস।
Was this review helpful to you?
or
দারুন একটি বই। ইতিহাসের দারুন চিত্রায়ণ
Was this review helpful to you?
or
I love it
Was this review helpful to you?
or
ভাদ্র মাসের সন্ধা। আকাশে মেঘ আছে। লালচে রঙের মেঘ। যে মেঘে বৃষ্টি হয় না, তবে দেকায় অপূর্ব। এই গাঢ় লাল, এই হালকা হলুদ, আবার চোখের নিমিষে লালের সঙ্গে খয়েরি মিশে সম্পূর্ণ অন্য রঙ। রঙের খেলা যিনি খেলছেন মনে হয় তিনি সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছেন।’
Was this review helpful to you?
or
~ #Rokomari_Book_Club_Review_Competition পোস্ট :- ৩ প্রতিযোগির নাম :- Mohammed Siddik বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদ(১৯৪৮-২০১২)।তিনি অত্যন্ত সহজ সরল ভাষায় গল্প উপস্থাপন করে পাঠক হৃদয় জয় করতে পেরেছিলেন।হুমায়ূন আহমেদ রচিত সর্বশেষ উপন্যাস 'দেয়াল'।এটি মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী ইতিহাসভিত্তিক উপন্যাস অসংখ্য উপন্যাসের মধ্যে এটি ব্যতিক্রমধর্মী উপন্যাস। হুমায়ূন আহমেদ 'দেয়াল' উপন্যাসটি লেখা সিদ্ধান্ত নেন একটি বিশেষ পেক্ষাপটে।যা ছিল রাজনৈতিক ভাবে সংবেদনশীল।তখন তিনি চিকিৎসার জন্য নিউইয়ার্কে ছিলেন।২৫ সেপ্টেম্বর ২০১১ জাতিসংঘের অধিবেশনে এসে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অসুস্থ হুমায়ূন আহমেদকে দেখতে তার নিউইয়র্কের জ্যামাইকায় বাসায় যান এবং উপহার হিসেবে ১০ হাজার ডলারের একটি চেক হস্তান্তর করেন।এর কয়েকদিন পরেই প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ আগ্রহের সরকারি অধ্যাদেশ বলে হুমায়ূন আহমেদকে নিউইয়র্কের বাংলাদেশ জাতিসংঘ স্থায়ী মিশনে উপদেষ্টা নিয়োগ দেয়া হয়।মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বদান্যতার হুমায়ূন আহমেদ ঘোষণা দেন তিনি জাতির জনকের নির্মম হত্যাকাণ্ড ও ১৫ আগস্ট ট্রাজেডি নিয়ে একটি বড় উপন্যাস লিখবেন। এরপরই 'দেয়াল' উপন্যাস লেখার জন্য তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহের কাজ শুরু করেন। উপন্যাসটি বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ এবং মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী রাজনৈতিক সময়ে রচিত। মুক্তিযুদ্ধকালীন গল্পের ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশের ইতিহাসে একটা অকথিত যুগসন্ধিক্ষণ কে তিনি তুলে ধরেছেন এই উপন্যাসে। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট থেকে শুরু করে মেজর জিয়ার মৃত্যু পর্যন্ত কালসীমায় ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলো গল্পের মত করে বলে গেছেন।এখানে তিনি বিভিন্ন চরিত্রের মাধ্যমে সাময়িকভাবে নিজকেও উপস্থাপন করেছেন।এই উপন্যাসের কয়েকটি উল্লেখযোগ্য চরিত্র হলো- বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান,সৈয়দ নজরুল ইসলাম,জিয়াউর রহমান ও কর্নেল তাহের,অবন্তি চা বিক্রেতা কাদের বাঙালি।বিশাল ক্যানভাসে উপন্যাসের যেন নতুন এক বাংলাদেশকে চেনায়।জানায় ইতিহাসের অনেক গোপন রহস্যময় ঘটনা। উপন্যাসটি শুরু হয়েছে এইভাবে-'ভাদ্র মাসের সন্ধ্যা।আকাশে মেঘ আছে।লালচে রঙের মেঘে।যে মেঘে বৃষ্টি হয় না,তবে দেখায় অপূর্ব এই গাঢ় লাল,এই হালকা হলুদ,আবার চোখের নিমিষে লালের সঙ্গে খয়েরি মিশে সম্পূর্ণ অন্য রঙ।খেলা খেলেছেন যিনি মনে হয় তিনি সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছেন।' উপন্যাসটির দুটি সমান্তরাল কাহিনী রয়েছে।প্রথম আখ্যানে প্রচলিতধারা বিরোধী এক চঞ্চলা মেয়ে অবন্তির কাহিনী।যার বাবা নিরুদ্দিষ্ট এবং মা ইসাবেলা স্বামীর সঙ্গে সম্পর্ক ত্যাগ করে ফিরে গেছেন স্বদেশ স্পেনে।অবন্তি দাদা সরফরাজ খানের সাথে ঢাকায় থাকে।সরফরাজ খান রক্ষণশীল এবং খেয়ালি।তিনি অবন্তীকে লেখা মায়ের চিঠি আগে গোপনে খুলে পড়েন,অবন্তীর শিক্ষকের উপর নজরদারি করেন এবং আরও অনেক কিছু করেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় নিরাপত্তার কারণে ঢাকা ছেড়ে গ্রামে যান।সেখানে থাকতে না পেরে আশ্রয় নেন এক পীরের বাড়িতে।এক পাকিস্তানি সেনা-কর্মকর্তা অবন্তিকে দেখে বিয়ে করতে চায়।বিপদ থেকে উদ্ধার পেতে পীর নিজের ছেলের সাথে অবন্তীকে বিয়ে দেন।এই নিয়ে কিছু জটিলতার সৃষ্টি হয়। অন্যদিকে সরফরাজ খান এর পুত্রের বন্ধুদের একজন মেজর খালেদ মোশাররফ।এই বাড়িতে তার আসা-যাওয়া আছে।তার সূত্রে কর্ণেল তাহের ও এখানে এসেছেন।এইভাবে প্রথম আখ্যানের সাথে দ্বিতীয় আখ্যানের যোগ সাধিত হয়। দ্বিতীয় আখ্যান সূচিত হয় মেজর ফারুকের বঙ্গবন্ধু হত্যার পরিকল্পনা নিয়ে।এই পরিকল্পনায় মেজর ফারুক ও মেজর রশিদ বিভিন্ন পর্যায়ের সামরিক ব্যক্তিদের জড়িত করেন।এরপর খালেদ মোশাররফের অভ্যুত্থান,কারাগারে চার নেতা হত্যা,কর্নেল তাহেরের নেতৃত্বে সিপাহী-জনতার বিপ্লব,জিয়াউর রহমানের মুক্তি ও ক্ষমতা লাভ,খালেদ মোশারফ ও কর্নেল হুদার হত্যা এবং কর্নেল তাহেরের ফাঁসি-এসব ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন।তারপর লেখক দ্রুত ঘটনা বলে গেছেন,উপন্যাসের সমাপ্তি হয়েছে ৩০ মে (১৯৮১) রাত এগারোটায় চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে মেজর জিয়ার হত্যাকাণ্ডের বিবরণ এর মধ্য দিয়ে।জিয়া নিহত হন এক সময়ের সাথী জেনারেল মঞ্জুরের পাঠানো এক ঘাতক বাহিনীর হাতে। লেখক উপন্যাসটি শেষ করেন এভাবে-'বলা হয়ে থাকে জেনারেল মঞ্জুর রূপবতী স্ত্রী দ্বারা পরিচালিত ছিলেন।এই স্ত্রী মঞ্জুরের শেষ পর্যন্ত তাঁর সঙ্গী ছিলেন।সেনা অভ্যুত্থান ঘটানো এবং জিয়া হত্যার পিছনে প্রলংকরী স্ত্রী বুদ্ধি কাজ করে থাকতে পারে।' দুটি আখ্যানের প্রকৃতি সম্পর্কে- উপন্যাসের ভূমিকায় ড. আনিসুজ্জামান বলেছেন-'প্রথমে আখ্যানের আমরা পরিচিত হুমায়ূন আহমেদকে পাই।চরিত্রের খেয়ালিপনা,সংলাপের সংঘাত, ঘটনার আকস্মিকতা ও কার্যকারণহীনতা আমাদের সবসময় রহস্যময় তার দিকে আকর্ষণ করে।দ্বিতীয় আখ্যানের ঐতিহাসিকতা প্রমাণের জন্য বইপত্রও মামলার কাগজ পত্রে শরণাপন্ন হয়েছে।তবে তার পরও তথ্যগত ত্রুটি রয়ে গেছে। কাহিনী বলা থামিয়ে লেখক কখনো তারিখ দিয়ে মোটাদাগে ঘটনার বিবরণ লিখে গেছে। শেষে এক লাফে ছয় বছর পেরিয়ে উপসংহারে পৌঁছেছে। 'দেয়াল' কোন রাজনৈতিক উপন্যাস নয়,এটি একটি ঐতিহাসিক আশ্রিত উপন্যাস।এতে ইতিহাসের খলনায়কদার খলনায়ক হিসেবে দেখানো হয়েছে।ড. সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম বলেছেন- 'বইটি পড়ে মনে হয়নি খলনায়কদের মহান করে দেখানো হয়েছে বরং সমগ্র বইটি পড়লে বঙ্গবন্ধুর জন্য একধরনের আন্তরিক শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা জন্মায় আমাদের মনে'।বইটিতে ঐতিহাসিক ঘটনার কিছু তথ্য কে'অসত্য'ও 'বিকৃত' করা হয়েছে বলে যে অভিযোগ উঠেছে।তার জবাবে সাহিত্য সমালোচক ড. সৈয়দ নজরুল ইসলাম আরও বলেন,ইতিহাস ও সাহিত্য এক নয়।ইতিহাসের আশ্রয় কল্পনাকে অবলম্বন করে সাহিত্য রচিত হয়।তবে,লক্ষ্য রাখতে হবে কল্পনা যেন ইতিহাসের সত্য থেকে দূরে সরে না যায়।হুমায়ূনের 'দেয়াল' এরকম একটি গ্রন্থ। ইতিহাস থেকে দূরে সরে যায়নি'। উপন্যাসের একটি আকর্ষণীয় চরিত্র ষোল বছর বয়সী মেয়ে অবন্তি।সে ভিকারুন্নেসা কলেজের ইন্টারমিডিয়েট এর ছাত্রী।অবন্তি নামের মেয়েটির রূপ ও ব্যক্তিত্ব এমন ভাবে বর্ণনা করা হয়েছে যে কেউ প্রতি আকৃষ্ট হবে।অবন্তির কি হলো সেটা জানার জন্য পাঠকের বইয়ের শেষ পর্যন্ত চলে যাবে।অবন্তিকে উপন্যাসের নায়িকা বলা যেতে পারে। আর পুরো উপন্যাস জুড়ে খালেদ মোশাররফ এবং কর্ণেল তাহেরের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা প্রকাশ পেয়েছে। জিয়ার আর্থিক সততা এবং জনগণের শ্রদ্ধা অর্জন এবং সামর্থের পাশাপাশি তাঁর ক্ষমতা লাভের কথাও বলা হয়েছে।সরকারি তথ্য উদ্ধৃত করে জানানো হয়েছে যে,১৯৭৭ সালের ৯ অক্টোবর পর্যন্ত গঠিত সামরিক আদালতের ১১৪৩ জন সৈনিক ও অফিসার ফাঁসির দড়িতে ঝুলতে হয়েছে। উপন্যাসের মাঝে লেখা কবিতার চরণ,খনার বচন ইত্যাদি ব্যবহার করেছেন। যেমন_ 'নিঃশেষে প্রাণ যে করিবে দান,ক্ষয় নাই তার ক্ষয় নাই। (রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর)।'যদি বর্ষে মাঘের শেষ,ধন্য রাজার পূর্ণ দেশ'( বচন)। এছাড়া উপন্যাসের ছড়িয়ে আছে তার স্বভাবসিদ্ধ শ্লেষাত্মক লেখকের উক্তি। যেমন_ ***মানবজাতির স্বভাব হচ্ছে সে সত্যের চেয়ে মিথ্যাটা আশ্রয় কি নিরাপদ মনে করে। ***কিছু বিদ্যা মানুষের ভেতরে থাকে। সে নিজেও তা জানেনা। ***মূর্খদের সঙ্গে কখনো তর্ক করতে যাবে না।কারণ হলো মূর্খরা তোমাকে তাদের পর্যায়ে নামিয়ে সে তর্কে হারিয়ে দিবে। ***যে লাঠি দিয়ে অন্ধ মানুষ পথ চলে,সেই লাঠি দিয়ে মানুষ খুন করা যায়। ***মানুষ আর পশু শুধু যে বন্ধু খুঁজে তা না,তারা প্রভু খুঁজে। ***এই পৃথিবীতে মূল্যবান শুধু মানুষের জীবন, আর সবই মূল্যহীন। দেয়াল উপন্যাস হলেও এর তথ্য-উপাত্ত ইতিহাস থেকে নেয়া হয়েছে।এবং যে গ্রন্থ থেকে এসব ঐতিহাসিক উপাদান গ্রহণ করেছেন তার একটি তালিকা উপন্যাসের শেষে লেখক সংযোজন করেছেন। ______________________________ বই:- "দেয়াল" লেখক:-হুমায়ূন আহমেদ প্রথম প্রকাশ:-ফেব্রুয়ারি,২০১৩ প্রকাশক:-অন্যপ্রকাশ মূল্য:-৩৮৫৳ ব্যক্তিগত রেটিং :- ৪.৮০/৫.০০ _____________________________
Was this review helpful to you?
or
biroktikor ekta golpo!!!!?
Was this review helpful to you?
or
অসাধারণ
Was this review helpful to you?
or
হুমায়ূন আহমেদ এর দূর্দান্ত একটি বই ।
Was this review helpful to you?
or
Great books but price too high
Was this review helpful to you?
or
গল্পটা সুন্দর কিন্তু বইয়ের কাগজের মান একদম ভালো না। কোয়ালিটি ইম্প্রুভ করলে ভালো হয়।
Was this review helpful to you?
or
হুমায়ূন আহমেদ, বাংলা সাহিত্যের একজন কিংবদন্তী। তিনি খুব যত্ন করে দেওয়াল উপন্যাসটি লিখেছেন। মুক্তিযুদ্ধকে কেন্দ্র করে লেখা অসাধারণ একটা উপন্যাস।
Was this review helpful to you?
or
আমার পড়া সেরা বইদের মধ্যে একটি
Was this review helpful to you?
or
অসাধারণ!
Was this review helpful to you?
or
good
Was this review helpful to you?
or
Nice book
Was this review helpful to you?
or
অসাধারণ একটি উপন্যাস। বইটি আসলেই মনে গেথে রয়েছে।
Was this review helpful to you?
or
Good service
Was this review helpful to you?
or
অসাধারণ
Was this review helpful to you?
or
বিভিন্ন বিষয় সামনে রাখার সাথে ইতিহাসের কিছু ঘটনা নিয়েও লিখেছেন যা আমার ভালো লেগেছে। আমার মনে হয়, পাঠকের পড়তে ভালো লাগবে।
Was this review helpful to you?
or
Good book indeed.
Was this review helpful to you?
or
সকল পড়া উচিত বইটা
Was this review helpful to you?
or
অতিরিক্ত বই পড়লে মাথা ব্যাথা করে তবে এই বই আমি একবার বসে শেষ না করে অন্যকিছু করতে ইচ্ছা হচ্ছেনা।আমার জীবনে পড়া সেরা বই?
Was this review helpful to you?
or
Another amazing book written by Mr.Humayun Ahmed
Was this review helpful to you?
or
history plus imagination makes this novel awesome
Was this review helpful to you?
or
ভালো
Was this review helpful to you?
or
Good book
Was this review helpful to you?
or
Good
Was this review helpful to you?
or
Great Book
Was this review helpful to you?
or
উপন্যাস তো উপন্যাস! গল্পের ফাকে ইতিহাস।বেশ লাগলো পড়ে।আজীবন হুমায়ূন স্যারের আলতু ফালতু লেখা পড়ে অভ্যস্ত(স্যার রাগ করবেন না।কারণ উনি আমার মত ছেলেকে ভালো বুঝেন)।তবে উনার মিসির আলী আলতু ফালতু না।আমি দেয়াল পড়ে অনেক আনন্দ পেয়েছি।কিছুটা জ্ঞানও লাভ করেছি।তবে জ্ঞানটা মূল ব্যাপার না। একজন মুক্তমনা আদর্শ মানুষের চিন্তায় দেশের রাজনৈতিক ব্যাপার স্যাপার পড়তে ভালোই লেগেছে ?
Was this review helpful to you?
or
~ বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদ(১৯৪৮-২০১২)।তিনি অত্যন্ত সহজ সরল ভাষায় গল্প উপস্থাপন করে পাঠক হৃদয় জয় করতে পেরেছিলেন।হুমায়ূন আহমেদ রচিত সর্বশেষ উপন্যাস 'দেয়াল'।এটি মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী ইতিহাসভিত্তিক উপন্যাস অসংখ্য উপন্যাসের মধ্যে এটি ব্যতিক্রমধর্মী উপন্যাস। হুমায়ূন আহমেদ 'দেয়াল' উপন্যাসটি লেখা সিদ্ধান্ত নেন একটি বিশেষ পেক্ষাপটে।যা ছিল রাজনৈতিক ভাবে সংবেদনশীল।তখন তিনি চিকিৎসার জন্য নিউইয়ার্কে ছিলেন।২৫ সেপ্টেম্বর ২০১১ জাতিসংঘের অধিবেশনে এসে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অসুস্থ হুমায়ূন আহমেদকে দেখতে তার নিউইয়র্কের জ্যামাইকায় বাসায় যান এবং উপহার হিসেবে ১০ হাজার ডলারের একটি চেক হস্তান্তর করেন।এর কয়েকদিন পরেই প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ আগ্রহের সরকারি অধ্যাদেশ বলে হুমায়ূন আহমেদকে নিউইয়র্কের বাংলাদেশ জাতিসংঘ স্থায়ী মিশনে উপদেষ্টা নিয়োগ দেয়া হয়।মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বদান্যতার হুমায়ূন আহমেদ ঘোষণা দেন তিনি জাতির জনকের নির্মম হত্যাকাণ্ড ও ১৫ আগস্ট ট্রাজেডি নিয়ে একটি বড় উপন্যাস লিখবেন। এরপরই 'দেয়াল' উপন্যাস লেখার জন্য তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহের কাজ শুরু করেন। উপন্যাসটি বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ এবং মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী রাজনৈতিক সময়ে রচিত। মুক্তিযুদ্ধকালীন গল্পের ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশের ইতিহাসে একটা অকথিত যুগসন্ধিক্ষণ কে তিনি তুলে ধরেছেন এই উপন্যাসে। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট থেকে শুরু করে মেজর জিয়ার মৃত্যু পর্যন্ত কালসীমায় ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলো গল্পের মত করে বলে গেছেন।এখানে তিনি বিভিন্ন চরিত্রের মাধ্যমে সাময়িকভাবে নিজকেও উপস্থাপন করেছেন।এই উপন্যাসের কয়েকটি উল্লেখযোগ্য চরিত্র হলো- বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান,সৈয়দ নজরুল ইসলাম,জিয়াউর রহমান ও কর্নেল তাহের,অবন্তি চা বিক্রেতা কাদের বাঙালি।বিশাল ক্যানভাসে উপন্যাসের যেন নতুন এক বাংলাদেশকে চেনায়।জানায় ইতিহাসের অনেক গোপন রহস্যময় ঘটনা। উপন্যাসটি শুরু হয়েছে এইভাবে-'ভাদ্র মাসের সন্ধ্যা।আকাশে মেঘ আছে।লালচে রঙের মেঘে।যে মেঘে বৃষ্টি হয় না,তবে দেখায় অপূর্ব এই গাঢ় লাল,এই হালকা হলুদ,আবার চোখের নিমিষে লালের সঙ্গে খয়েরি মিশে সম্পূর্ণ অন্য রঙ।খেলা খেলেছেন যিনি মনে হয় তিনি সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছেন।' উপন্যাসটির দুটি সমান্তরাল কাহিনী রয়েছে।প্রথম আখ্যানে প্রচলিতধারা বিরোধী এক চঞ্চলা মেয়ে অবন্তির কাহিনী।যার বাবা নিরুদ্দিষ্ট এবং মা ইসাবেলা স্বামীর সঙ্গে সম্পর্ক ত্যাগ করে ফিরে গেছেন স্বদেশ স্পেনে।অবন্তি দাদা সরফরাজ খানের সাথে ঢাকায় থাকে।সরফরাজ খান রক্ষণশীল এবং খেয়ালি।তিনি অবন্তীকে লেখা মায়ের চিঠি আগে গোপনে খুলে পড়েন,অবন্তীর শিক্ষকের উপর নজরদারি করেন এবং আরও অনেক কিছু করেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় নিরাপত্তার কারণে ঢাকা ছেড়ে গ্রামে যান।সেখানে থাকতে না পেরে আশ্রয় নেন এক পীরের বাড়িতে।এক পাকিস্তানি সেনা-কর্মকর্তা অবন্তিকে দেখে বিয়ে করতে চায়।বিপদ থেকে উদ্ধার পেতে পীর নিজের ছেলের সাথে অবন্তীকে বিয়ে দেন।এই নিয়ে কিছু জটিলতার সৃষ্টি হয়। অন্যদিকে সরফরাজ খান এর পুত্রের বন্ধুদের একজন মেজর খালেদ মোশাররফ।এই বাড়িতে তার আসা-যাওয়া আছে।তার সূত্রে কর্ণেল তাহের ও এখানে এসেছেন।এইভাবে প্রথম আখ্যানের সাথে দ্বিতীয় আখ্যানের যোগ সাধিত হয়। দ্বিতীয় আখ্যান সূচিত হয় মেজর ফারুকের বঙ্গবন্ধু হত্যার পরিকল্পনা নিয়ে।এই পরিকল্পনায় মেজর ফারুক ও মেজর রশিদ বিভিন্ন পর্যায়ের সামরিক ব্যক্তিদের জড়িত করেন।এরপর খালেদ মোশাররফের অভ্যুত্থান,কারাগারে চার নেতা হত্যা,কর্নেল তাহেরের নেতৃত্বে সিপাহী-জনতার বিপ্লব,জিয়াউর রহমানের মুক্তি ও ক্ষমতা লাভ,খালেদ মোশারফ ও কর্নেল হুদার হত্যা এবং কর্নেল তাহেরের ফাঁসি-এসব ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন।তারপর লেখক দ্রুত ঘটনা বলে গেছেন,উপন্যাসের সমাপ্তি হয়েছে ৩০ মে (১৯৮১) রাত এগারোটায় চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে মেজর জিয়ার হত্যাকাণ্ডের বিবরণ এর মধ্য দিয়ে।জিয়া নিহত হন এক সময়ের সাথী জেনারেল মঞ্জুরের পাঠানো এক ঘাতক বাহিনীর হাতে। লেখক উপন্যাসটি শেষ করেন এভাবে-'বলা হয়ে থাকে জেনারেল মঞ্জুর রূপবতী স্ত্রী দ্বারা পরিচালিত ছিলেন।এই স্ত্রী মঞ্জুরের শেষ পর্যন্ত তাঁর সঙ্গী ছিলেন।সেনা অভ্যুত্থান ঘটানো এবং জিয়া হত্যার পিছনে প্রলংকরী স্ত্রী বুদ্ধি কাজ করে থাকতে পারে।' দুটি আখ্যানের প্রকৃতি সম্পর্কে- উপন্যাসের ভূমিকায় ড. আনিসুজ্জামান বলেছেন-'প্রথমে আখ্যানের আমরা পরিচিত হুমায়ূন আহমেদকে পাই।চরিত্রের খেয়ালিপনা,সংলাপের সংঘাত, ঘটনার আকস্মিকতা ও কার্যকারণহীনতা আমাদের সবসময় রহস্যময় তার দিকে আকর্ষণ করে।দ্বিতীয় আখ্যানের ঐতিহাসিকতা প্রমাণের জন্য বইপত্রও মামলার কাগজ পত্রে শরণাপন্ন হয়েছে।তবে তার পরও তথ্যগত ত্রুটি রয়ে গেছে। কাহিনী বলা থামিয়ে লেখক কখনো তারিখ দিয়ে মোটাদাগে ঘটনার বিবরণ লিখে গেছে। শেষে এক লাফে ছয় বছর পেরিয়ে উপসংহারে পৌঁছেছে। 'দেয়াল' কোন রাজনৈতিক উপন্যাস নয়,এটি একটি ঐতিহাসিক আশ্রিত উপন্যাস।এতে ইতিহাসের খলনায়কদার খলনায়ক হিসেবে দেখানো হয়েছে।ড. সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম বলেছেন- 'বইটি পড়ে মনে হয়নি খলনায়কদের মহান করে দেখানো হয়েছে বরং সমগ্র বইটি পড়লে বঙ্গবন্ধুর জন্য একধরনের আন্তরিক শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা জন্মায় আমাদের মনে'।বইটিতে ঐতিহাসিক ঘটনার কিছু তথ্য কে'অসত্য'ও 'বিকৃত' করা হয়েছে বলে যে অভিযোগ উঠেছে।তার জবাবে সাহিত্য সমালোচক ড. সৈয়দ নজরুল ইসলাম আরও বলেন,ইতিহাস ও সাহিত্য এক নয়।ইতিহাসের আশ্রয় কল্পনাকে অবলম্বন করে সাহিত্য রচিত হয়।তবে,লক্ষ্য রাখতে হবে কল্পনা যেন ইতিহাসের সত্য থেকে দূরে সরে না যায়।হুমায়ূনের 'দেয়াল' এরকম একটি গ্রন্থ। ইতিহাস থেকে দূরে সরে যায়নি'। উপন্যাসের একটি আকর্ষণীয় চরিত্র ষোল বছর বয়সী মেয়ে অবন্তি।সে ভিকারুন্নেসা কলেজের ইন্টারমিডিয়েট এর ছাত্রী।অবন্তি নামের মেয়েটির রূপ ও ব্যক্তিত্ব এমন ভাবে বর্ণনা করা হয়েছে যে কেউ প্রতি আকৃষ্ট হবে।অবন্তির কি হলো সেটা জানার জন্য পাঠকের বইয়ের শেষ পর্যন্ত চলে যাবে।অবন্তিকে উপন্যাসের নায়িকা বলা যেতে পারে । আর পুরো উপন্যাস জুড়ে খালেদ মোশাররফ এবং কর্ণেল তাহেরের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা প্রকাশ পেয়েছে। জিয়ার আর্থিক সততা এবং জনগণের শ্রদ্ধা অর্জন এবং সামর্থের পাশাপাশি তাঁর ক্ষমতা লাভের কথাও বলা হয়েছে।সরকারি তথ্য উদ্ধৃত করে জানানো হয়েছে যে,১৯৭৭ সালের ৯ অক্টোবর পর্যন্ত গঠিত সামরিক আদালতের ১১৪৩ জন সৈনিক ও অফিসার ফাঁসির দড়িতে ঝুলতে হয়েছে। উপন্যাসের মাঝে লেখা কবিতার চরণ,খনার বচন ইত্যাদি ব্যবহার করেছেন। যেমন_ 'নিঃশেষে প্রাণ যে করিবে দান,ক্ষয় নাই তার ক্ষয় নাই। (রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর)।'যদি বর্ষে মাঘের শেষ,ধন্য রাজার পূর্ণ দেশ'( বচন)। এছাড়া উপন্যাসের ছড়িয়ে আছে তার স্বভাবসিদ্ধ শ্লেষাত্মক লেখকের উক্তি। যেমন_ ***মানবজাতির স্বভাব হচ্ছে সে সত্যের চেয়ে মিথ্যাটা আশ্রয় কি নিরাপদ মনে করে। ***কিছু বিদ্যা মানুষের ভেতরে থাকে। সে নিজেও তা জানেনা। ***মূর্খদের সঙ্গে কখনো তর্ক করতে যাবে না।কারণ হলো মূর্খরা তোমাকে তাদের পর্যায়ে নামিয়ে সে তর্কে হারিয়ে দিবে। ***যে লাঠি দিয়ে অন্ধ মানুষ পথ চলে,সেই লাঠি দিয়ে মানুষ খুন করা যায়। ***মানুষ আর পশু শুধু যে বন্ধু খুঁজে তা না,তারা প্রভু খুঁজে। ***এই পৃথিবীতে মূল্যবান শুধু মানুষের জীবন, আর সবই মূল্যহীন। দেয়াল উপন্যাস হলেও এর তথ্য-উপাত্ত ইতিহাস থেকে নেয়া হয়েছে।এবং যে গ্রন্থ থেকে এসব ঐতিহাসিক উপাদান গ্রহণ করেছেন তার একটি তালিকা উপন্যাসের শেষে লেখক সংযোজন করেছেন। ______________________________ বই:- "দেয়াল" লেখক:-হুমায়ূন আহমেদ প্রথম প্রকাশ:-ফেব্রুয়ারি,২০১৩ প্রকাশক:-অন্যপ্রকাশ মূল্য:-৩৮৫৳ ব্যক্তিগত রেটিং :- ৪.৮০/৫.০০ ____________________________
Was this review helpful to you?
or
excellent
Was this review helpful to you?
or
অসাধারণ বই।
Was this review helpful to you?
or
ফাউল
Was this review helpful to you?
or
amazing
Was this review helpful to you?
or
nice book . বইটি বাংলার ইতিহাস অনেক ইতিহাস জেনেছি ।
Was this review helpful to you?
or
অসাধারণ
Was this review helpful to you?
or
nice to read.
Was this review helpful to you?
or
১৯৭১ থেকে ১৯৭৫ সালের সমসাময়িক রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে রচিত দেয়াল উপন্যাস।অসাধারণ ররচনাশৈলী আবারও প্রমান করছে কেন হুমায়ুন আহমেদ শ্রেষ্ঠ......
Was this review helpful to you?
or
মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী কঠিন ইতিহাসের বর্ণনা ফুটে তুলা হয়েছে বইটিতে। অসাধারণ একটা বই
Was this review helpful to you?
or
আমার খুব একটা ভাল লাগেনি
Was this review helpful to you?
or
জিয়াউর রহমানের ক্ষমতায় আসা, কোর্ট মার্শালে বিদ্রোহের বিচার, ফারুক ও রশীদদের ছেড়ে দেওয়া, তাহেরর ফঁাসী, এবং গােলাম আজমকে দেশে আনা এসব বিবেচনায় তাঁর সমালােচনা করেছেন। কিন্তু সাধারণ জীবনযাপন, বিদেশের সাথে সুসম্পর্ক, দেশ পরিচালনা ইত্যাদি ইস্যুতে জিয়াকে প্রশংসা করেছেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতা পরবর্তী ঘটনা প্রবাহের উপর রচিত হয়েছে ইতিহাস আশ্রিত উপন্যাস 'দেয়াল'। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্মম হত্যাকাণ্ড ও পরবর্তী রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট এর মূল উপজীব্য। লেখক এখানে বঙ্গবন্ধুর শাসনামল, বাকশাল গঠন, রক্ষী বাহিনীর কার্যক্রম, হত্যা পরবর্তী প্রতিক্রিয়া, জেল হত্যা, এবং এসব ঘটনায় মেজর রশীদ, মেজর ফারুক, খন্দকার মােশতাক প্রমুখের ভূমিকার স্পষ্ট বর্ণনা দিয়েছেন। পাশাপাশি খালেদ মোশাররফের ক্যু, মেজর জিয়াউর রহমানের আটকাবস্থা, কর্নেল তাহেরের অভিযান, জিয়ার ক্ষমতায় আসা, তাহেরেরে ফঁাসী, জিয়ার শাসনামল, বহির্বিশ্বের সাথে জিয়ার সম্পর্ক ইত্যাদি আলােচনা করেছেন।
Was this review helpful to you?
or
valo lageni
Was this review helpful to you?
or
আমি এই বইটি অর্ডার করেছিলাম ২৫ এপ্রিল এবং এপ্রুভ হয় অর্ডারটি। ৩ মের মধ্যে ডেলিভারি দেয়ার কথা। কিন্তুু এখনও দেয়নি। ডেলিভারি না দিতে পারলে জানানো উচিত বলে আমি মনে করি। আজ আর একটা বই আর্ডার করেছি এবং এপ্রুভ হয়েছে। ১৩ জুনের মধ্যে নাকি ডেলিভারি দিবে। কিজানি পাবোকিনা.........!
Was this review helpful to you?
or
স্যারের বইগুলো অনেক ভালোলাগে
Was this review helpful to you?
or
হুমায়ন আহমেদের উপন্যাসটিতে চমৎকারভাবে প্রাইভেট শিক্ষকদের জিবনী ফোঁটিয়ে তুলতে চেষ্টা করেছেন চমৎকারভাবে।
Was this review helpful to you?
or
চেপে রাখা ইতিহাস সম্পর্কে কিছুটা হলেও জেনেছি। অসাধারণ লেখনী। স্যালুট হুমায়ুন স্যার।
Was this review helpful to you?
or
Deyal is a historical novel by Humayun Ahmed, published in 2013. The story of the novel is based on the socio-political crisis in the upshot of the war of independence of Bangladesh. It was the last novel of Humayun Ahmed, published one year after his death. The publication of the book faced a high court judgment. That’s why the publication was delayed. The first five chapters of Deyal were published in Anyadin magazine. When he was in the treatment of cancer in the United States, he again started writing the novel. There was a debate over the accuracy of a section related to the killing of Sheikh Russel on 15 August 1975. So, a case was brought in the Bangladesh High Court by Attorney General Mahbubey Alam. According to the high court's order, the first part of the book was changed by the author. The characters of Deyal are not fictional. Someone must read this book if he/she is so much interested to know the history.
Was this review helpful to you?
or
দেয়াল হুমায়ুন আহমেদের অত্যন্ত জনপ্রিয় ও রোমাঞ্চকর উপন্যাস। আশা সকল শ্রেণীর পাঠক বইটি পড়ে সাহিত্য ও ইতিহাসের অসাধারণ সংমিশ্রণ উপভোগ করতে পারবে।
Was this review helpful to you?
or
গুরুজী আপনাকে সালাম
Was this review helpful to you?
or
সত্যিই বইটি মুগ্ধ করার মতো।জ্ঞ্যানের তৃষ্ণা মেটানোর জন্য বইটি যথেষ্ট উপযোগী।শুধু এই বিষয়ের ছাত্র না, সবাই এই বইটি সমানভাবে উপভোগ করতে পারবে।শিখতেও পারবে অনেক কিছু।বইটি পড়ার পর ভালো লাগা কাজ করবেই।অনেক চিন্তার খোরাক যোগাবে বইটি।আমি সবাইকে রেফার করবো বইটি পড়ার জন্য।
Was this review helpful to you?
or
I haven't really read many historical fiction of my own country. After reading the book I think I should start reading them. Very fast paced book. I learnt about a lot that happened in our politics, I now know a bit more than what I did a few days ago. © Mehedi Shafi
Was this review helpful to you?
or
Great book. চরিত্রগুলোর সংমিশ্রন অসাধারন লেগেছে, উপন্যাসটা পড়তে পড়তে মনের অজান্তেই অবন্তির প্রেমে পরে গেসিলাম।লাস্ট ফিনিশিংটা জোর করে দিয়েছে বলে মনে হয়েছে।কিন্তু সবমিলিয়ে বইটি অসাধারণ।
Was this review helpful to you?
or
Its not a history book. This book plays with the history and also states the truth through the show case of different proof in the form of documentation. The book started as a journey and the ending was unexpected. This is really a fantastic creation of Humayun Ahmed.
Was this review helpful to you?
or
তথ্যবহুল, সুখপাঠ্য বই!
Was this review helpful to you?
or
হুমায়ুন আহমেদের বই নিয়ে কিছু বলার নেই কারন হুমায়ুন আহমেদ হুমায়ুন আহমেদ - ই। হুমায়ুন আহমেদের বইয়ের পাবলিসিটির প্রয়োজন হয়না । বইটি আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রাম ও স্বাধীন রাস্ট্রে ঘটে যাওয়া অপ্রকাশিত নানান বিষয় সুন্দর ভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন, বইটির চরিত্রে লেখক নিজেকে উল্লেখ করেছেন। দেয়াল মুলত একটি রাজনৈতিক উপন্যাস । বইয়ের একটি বিখ্যাত উক্তি.. .... 'মানবজাতির স্বভাব হচ্ছে সে সত্যের চেয়ে মিথ্যার আশ্রয়ে নিজেকে নিরাপদ মনে করে'।
Was this review helpful to you?
or
As a novel and history lover, I had to buy this book. And it proved to be a good investment. Humayun Ahmed is one of my favorite novelist. Learning about his another literature based on our freedom fighting encouraged me to buy this book.
Was this review helpful to you?
or
বাংলাদেশের ইতিহাসের অন্যতম দিক পরিবর্তনকারী সময় ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট।বলতে গেলে পুরো নভেম্বর আর ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহই পুরো বাংলাদেশের ইতিহাস পরিবর্তন করে দেয়।কিন্তু নানা কারনে এই সময়টা ভীষণ বিতর্কিত।তাই অতি গুরুত্বপূর্ণ হলেও এই সময় নিয়ে লিখিত বইয়ের সংখ্যা খুবই কম।সেই কাজটিই দারুণ দক্ষতায় নিজের স্টাইলে করেছেন জনপ্রিয় লেখক হুমায়ূন অাহমেদ।ইতিহাস আর কল্পনা মিশিয়ে নিজের জীবনের শেষ বই হিসেবে লিখে ফেলেন এই বইটি।একদিকে অবন্তি-শফিক আর জাহাঙ্গীর আর অন্যদিকে সেনা কর্মকর্তা,চার নেতা, শেখ মুজিব,কর্ণেল তাহেররা।দুইটি কাহিনিই সমান্তরালে চলেছে আর তাদের মধ্যে তো সংযোগ ছিলই।মুক্তিযুদ্ধে পাক বাহিনির বর্বরতা,স্বাধীনতা, শেখ মুজিবের শাসনামল, বাকশাল আর রক্ষী বাহিনি,শেখ পরিবারের হত্যা,খন্দকার মোশতাকের ক্ষমতালাভ,সিপাহি বিদ্রোহ, জিয়ার ক্ষমতালাভ,কর্ণেল তাহেরের বিচার, জিয়ার হত্যাকান্ডসহ ঐসময়ের সকল গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা স্থান পেয়েছে বইটিতে।একদিকে যেমন বইটাতে সমালোচনা করেছেন শেখ মুজিবের বাকশালের ঠিক তেমনি সমালোচনা করেছেন জিয়ার অন্যায় বিচারেরও।আর অন্যদিকে অবন্তি আর শফিকের কাহিনিও এগিয়েছে লেখকের স্বভাবসুলভ ভঙ্গিতে। মূলত লেখকের শেষ বই হিসেবেই বইটা পড়া শুরু করা।তারপর বলতে গেলে এক বসাতেই শেষ করেছি।কেবলমাত্র ইতিহাসের ঐ অংশটুকু বইটিতে আসলে একটা সম্ভবনা ছিল বিরক্ত লাগার কিন্তু দুইটা সমান্তরাল ঘটনার অবতারণা করে লেখক বইটিকে অনেক আকর্ষণীয় করে তুলেছেন।অন্যদিকে বইটিকে নিয়ে সৃষ্ট বিতর্ক বইটিকে আরো পাঠকপ্রিয় করেছে।আর বইয়ের শেষে রেফারেন্সগুলো বইটিকে ঐতিহাসিকভাবে আরো গ্রহণীয় করেছে।
Was this review helpful to you?
or
So, Beautiful Discussions..... I m also proud
Was this review helpful to you?
or
দেয়াল- এটি হুমায়ূন আহমেদের সর্বশেষ উপন্যাস। উপন্যাসটি মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী উত্তাল রাজনীতি নিয়ে রচিত। এর পাশাপাশি খানিকটা ফুটে উঠেছে জনজীবন ও লেখকের স্মৃতি। শফিক অবন্তীর গৃহশিক্ষক। শফিক খুব ভালো ছবি আঁকতে পারে আর অবন্তী খুবই সুন্দরী। লেখকের ভাষ্যে- এরকম সুন্দর নারী তিনি আর দেখেননি। এ দুজনের কাহিনী দিয়েই শুরু হয় উপন্যাস। কিন্তু শেষ হয় আওয়ামীলীগের শাসনামল, মুজিব হত্যাকান্ড, জিয়ার রাজনীতিতে প্রবেশ, তাহেরের ফাঁসি ও জিয়া হত্যাকান্ডের মাধ্যমে। বইটি রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে বিতর্কিত। সাহিত্যিক বিচারেও খামতি লক্ষণীয়। উপসংহার টানা হয়েছে হুট করে। মনে হয়েছে বেশ কিছু বিক্ষিপ্ত ঘটনা জোড়া দেয়া হয়েছে। অবশ্য শুনা যায়, এই বই থেকে বেশ কিছু কাটাছেঁড়া হয়েছে। এই বইয়ের দুটি প্রিয় উক্তি হলো ১. "যে লাঠি দিয়ে বৃদ্ধ পথ চলে, সে লাঠি দিয়ে মানুষও খুন করা যায়।" ২. "মানুষের জীবনের কিছু রহস্য কখনো জানা যায় না, মানুষ তার মৃত্যুর সাথে করে সেসব নিয়ে যায়।"
Was this review helpful to you?
or
ami
Was this review helpful to you?
or
এটা বেশি ইন্টারেস্টিং নয়
Was this review helpful to you?
or
হুট করে শেষ করে দিল। আরো কিছু আশা করেছিলাম যে থাকবে।তবে বইটা উনার অন্যতম সেরা বই।
Was this review helpful to you?
or
এত সুন্দর করিয়া সত্য কে বাহির করিয়া আনা এতো হুমায়ূন আহমেদ স্যার দিয়েই সম্ভব।
Was this review helpful to you?
or
কিছু ব্যাপারে লেখকের ব্যাক্তিগত মতামত প্রতিফলিত হয়েছে।
Was this review helpful to you?
or
হুমায়ূন আহমেদের ঐতিহাসিক উপন্যাসগুলো ব্যক্তিগতভাবে আমার খুব ভালো লাগে। ইতিহাসের সেই সময়টায় তিনি পাঠককে নিয়ে যান। এমনভাবে বর্ণনা করেন যেন ঘটনাগুলো আমার চোখের সামনে হচ্ছে। দেয়াল উপন্যাসের ক্ষেত্রেও এর ব্যতিক্রম হয়নি। মুক্তিযুদ্ধ এবং তার পরবর্তী সময়ের অংশবিশেষ খুব সুন্দর করে তুলে ধরেছেন। এছাড়া ঐতিহাসিক চরিত্রগুলোর ব্যবহার এই উপন্যাসে ভিন্ন মাত্রা যোগ করেছে।
Was this review helpful to you?
or
মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে হুমায়ূন আহমেদ স্যারকে অনেক বছর ধরেই বিভিন্ন প্রকাশনী থেকে লিখতে অনুরোধ করলেও তিনি কারো কথাতেই তেমন সাড়া দিচ্ছিলেন না। কে জানতো সেদিন যে তিনি নিজের জীবনের শেষ ভাগে এসে এমন সুন্দর একটা বই ইতিহাসের দলিল হিসেবে রেখে যাবেন। বইটি সম্পর্কে একটি কথাই শুধু বলবো যে, "যুদ্ধ পরবর্তী সময় নিয়ে লেখা এই বইটি যেকোন পাঠকের মন কাড়বেই"।
Was this review helpful to you?
or
দেয়াল হুমায়ুন আহমেদের অবর্তমানে প্রকাশিত হয়েছিল।এই উপন্যাস নিয়ে অনেক বিতর্ক থাকলেও আমার মনে হয়েছে লেখক ঐতিহাসিক সত্য তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন।হুমায়ুন আহমেদের লেখনীর ব্যাপারে কিছু বলার নেই।শুধু একটি কথাই বলব।বইটি আমাকে সম্মোহিত করে ফেলেছিল।আশা করি সবার ভালো লাগবে।আসলে ভালো না লেগে উপায় নেই।
Was this review helpful to you?
or
one of the best creation of humayun ahmed
Was this review helpful to you?
or
অসাধারণ লাগলো
Was this review helpful to you?
or
এই উপন্যাসটিকে দুটি ভাগে ভাগ করা যায়।প্রথম ভাগে আপনার মনে হবে অন্য আর পাঁচটা উপন্যাসের মতই।কিন্তু দ্বিতীয় ভাগে এসেই পাঠক চমকাবেন!কেন!কারণ তখন আর আপনার একে উপন্যাস মনে হবেনা।মনে হহবে অতিদ্রুত কেউ তার স্মৃতির পাতা উল্টেপাল্টে দেখেছে এবং হঠাৎই পাতা উল্টানোর সমাপ্তি ঘটিয়েছে। পুরো বইটাতে হুমায়ূন আহমেদের খামখেয়ালীপনার ছাপ স্পষ্ট।প্রথম ভাগে রক্ষণশীল ও খেয়ালি সরফরাজ,তাঁর চপলমতি ও প্রচলনবিরোধী নাতনী অবন্তি, গৃহশিক্ষক শফিক,অবন্তির বাবা-মাকে নিয়ে সুন্দর একটা উপন্যাস ফাঁদেন লেখক। মুক্তিযুদ্ধের সময় সরফরাজ নাতনিকে নিয়ে গ্রামের বাড়ি যান।সেখানে টিকতে না পেরে আশ্রয় নেন পীরের বাড়িতে। এক পাকিস্তানি সেনা কর্মকর্তা আবন্তিকে দেখে ফেলে বিয়ের প্রস্তাব দেন।তাকে উদ্ধার করতে পীর সাহেব তাঁর ছেলের সাথে অবন্তির বিয়ে দেন, কিন্তু অবন্তি এই বিয়ে মেনে নেয়নি। কিন্তু লেখক এখানে তাঁর স্বভাবসুলভ প্রহসন রেখে গেছেন। হাফেজ জাহাঙ্গীরকে অবন্তি স্বামী হিসেবে মেনে না নিলেও তার সাথে যোগাযোগ ছিন্ন করেনি। অবন্তির বাবার সাথে মেজর জেনারেল খালেদ মোশাররফ বন্ধুত্ব ছিল।তাঁর সূত্র ধরে কর্নেল তাহেরও অবন্তিদের বাড়িতে আসতো। এতটুক পর্যন্ত একটা স্বাভাবিক উপন্যাস বলা যেত এই বইটাকে। কিন্তু দ্বিতীয় ভাগে লেখক নিজেকে উপস্থাপন করেন,নিজের পারিবারিক কিছু বিপর্যয়ের ঘটনা তুলে ধরেন। যুদ্ধ পরবর্তী কিছু ঘটনা সংক্ষিপ্ত পরিসরে তুলে ধরেন। মেজর ফারুকের বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পরিকল্পনার মধ্য দিয়ে বইটির দ্বিতীয় ভাগের সূচনা হয়। মেজর ফারুক, মেজর রশীদ,মেজর জেনারেল জিয়াউর ও ওসমানী এই হত্যার সাথে জড়িত বলে লেখক উল্লেখ করেন।পরিকল্পনার সাফল্য খন্দকার মোশতাক আহমেদের ক্ষমতালাভ, যদিও ফারুক তাকে বাধ্য করেন।কারাগারে চার নেতা হত্যা। মোশতাককে ক্ষমতা থেকে উৎখাত করতে খালেদ মোশাররফ ও তাঁর কয়েকজন বন্ধু মিলে সেনা অভ্যুত্থান।জিয়াউর রহমানকে আটক।কর্নেল তাহেরের নেতৃত্বে সিপাহী -জনতার বিপ্লব, জিয়াউর রহমানের মুক্তিলাভ ও ক্ষমতাগ্রহণ,খালেদ মোশাররফ ও কর্নেল হুদার হত্যা এবং কর্নেল তাহেরের ফাঁসিতে বইটির দ্বিতীয় ভাগের সমাপ্তি ঘটেও ঘটলোনা।লেখক দ্রুত জিয়াউর রহমানের হত্যাকাণ্ডের কথা বলে সমাপ্তি টেনেছেন। উপন্যাসটির শেষ লাইনটি কেন লেখক এইরূপ লিখেছেন তা আমার বোধ-বুদ্ধির বাইরে,"রূপবতী স্ত্রী'র প্রলয়ংকরী স্ত্রীবুদ্ধি কাজ করতে পারে বলে অনুমান করা হয়েছে। " এখানে রূপবতী স্ত্রী বলতে জেনারেল মঞ্জুরের স্ত্রীকে বুঝিয়েছেন। কেন জানি আমার বারবার মনে হল লেখক পাঠকের অনুভুতি নিয়ে খেলেছেন। এমনিতে তাঁর এপিগ্রামগুলো পাঠকের অনুভুতি, চিন্তার জগতকে নাড়িয়ে দেয়।যুদ্ধোত্তর বাংলাদেশেরর ঘটে যাওয়া কিছু বাস্তব ঘটনার দ্রুত বিবরণ! লেখক যেন কোন দৌড় প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছেন!
Was this review helpful to you?
or
It gives a tale of what happened in the few years of post liberation in Bangladesh starting from 75 to 81! I am sure it could have been better knowing the strength of writer's writing. But its on too sensitive topics and he had to face court order to change some original paragraphs. Anyway, for new generation of Bangladesh, its a must read book.
Was this review helpful to you?
or
it' an amazing book of Late Humayun Ahmed Sir... his one of the best book it is... the history of our independent war which was held in 1971 ... sir Humayun Ahmed just make a story like novel from targerting the history of our liberation war.. i just love this book.. i had tead this book.. Love It!
Was this review helpful to you?
or
ভাদ্র মাসের সন্ধা। আকাশে মেঘ আছে। লালচে রঙের মেঘ। যে মেঘে বৃষ্টি হয় না, তবে দেকায় অপূর্ব। এই গাঢ় লাল, এই হালকা হলুদ, আবার চোখের নিমিষে লালের সঙ্গে খয়েরি মিশে সম্পূর্ণ অন্য রঙ। রঙের খেলা যিনি খেলছেন মনে হয় তিনি সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছেন।’ এভাবেই সূচনা ঘটেছে হুমাযূন আহমেদের চার দশকের বর্ণময় লেখকজীবনের শেষ উপন্যাস ‘দেয়াল’- এর। ২০১১ সালের মাঝামাঝিতে ‘দেয়াল’ রচনা শুরু করেছিলেন তিনি। সে-সময় উপন্যাসের পাঁচটি পর্ব ধারাবাহিকভাবে ‘অন্যদিন’-এর প্রকাশিত হয়। এরপর বেশ কিছুদিন বিরতির পর যুক্তরাষ্ট্রে তাঁর ক্যানসার চিকিৎসা চলাকালে নতুন করে ‘দেয়াল’ রচনায় মনোনিবেশ করেন তিনি, যদিও শেষ পর্যন্ত উপন্যাসটির চূড়ান্ত রূপ দেয়ার সুযোগ পান নি। সূচনা-অনুচ্ছেদে আকাশের রঙবদলের খেয়ায় যে সিদ্ধান্তহীনতার কথা বলা হচ্ছে তা বিশেষ ইঙ্গিতবহ। যে সময়কে উপজীব্য করা হয়েছে ‘দেয়াল’-এ, তা একটি সদ্যস্বাধীন জাতির ভাগ্যকাশের চরম অনিশ্চয়তার কাল। উপন্যাসের কিছু চরিত্র বাস্তব থেকে নেওয়া, নাম-ধাম সবই বাস্তব, ঘটনা-পরস্পরাও বাস্তবেরই অংশ। লেখক যেহেতু উপন্যাস লিখেছেন, তাই আছে কিছু কাল্পনিক চরিত্র। গল্প আবর্তিত হয়েছে এদের ঘিরেও। নানা ঘটনার ঘনঘটায় ঢাকা পড়ে নি জীবনসৌন্দর্য আর জীবন-সত্যের সন্ধান। ইতিহাসের সত্য আর লেখকের সৃজনী ভাবন্য-দুইয়ে মিলে ‘দেয়াল’ পরিণত হয়েছে একটি হৃদয়গ্রাহী উপাখ্যানে।
Was this review helpful to you?
or
মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে অনেক বই পড়েছি তার মধ্যে এটি আমার সবচেয়ে প্রিয়। রকমারির সুবাদে বইটি পড়া হয়েছে। বইটি এমন সময়ে লেখা যখন বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে অনেক তথ্য জানা যায়। যারা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছে তারা কেউই রেহাই পায় নাই। কোন না কোন ভাবে তারাও শাস্তি পেয়েছে। স্যারের লেখা যেমন অসাধারণ বইটিও তেমন। আমার মতে সবার পড়া উচিত
Was this review helpful to you?
or
এক বর্ণাঢ্য লেখক জীবন, অনেক প্রশংসা আর পুরস্কা। এই দুটো বিশেষণ দিয়েই হুমায়ুন আহমেদকে বিচার করা যায়না। তাঁর লেখার শক্তিটাই ছিল সবচেয়ে মুখ্য। যে লোক পাঠকের মনে প্রবেশ করতে পারেন, তিনি মরেন না! তবু জগৎ সংসারের মায়া কাটিয়ে চলে যেতে হয়। তিনিও ছেড়ে গেলেন। যাবার আগে দিয়ে গেলেন জনপ্রিয় সব উপন্যাস। তাঁর লেখা শেষ উপন্যাস দেয়াল। তাঁর মৃত্যুর পর ২০১৩ সালে প্রকাশিত হয়। এই উপন্যাসটি অন্যসবগুলোর থেকে একেবারেই আলাদা। যারা তাঁর হিমু, মিসির আলি পড়েছেন, সেই পাঠকেরা এবার ভিন্ন স্বাদ পাবেন। বাংলাদেশের জাতীয় রাজনীতির হালচাল খুব নিখুঁতভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে এতে। খন্দকার মোশতাক, ক্যাপ্টেন খালেদ মোশাররফ, শেখ মুজিবের কথা এসেছে বইটিতে। সংগ্রহে রাখবার মতন একটি বই।
Was this review helpful to you?
or
বইয়ের নামঃ দেয়াল লেখকঃ হুমায়ূন আহমেদ ভাষাঃ বাংলা ঘরনাঃ ঐতিহাসিক, রাজনৈতিক উপন্যাস বইয়ের পৃষ্ঠাঃ ১৯৮ মূল্যঃ ৩২৩ টাকা প্রকাশনীঃ অন্যপ্রকাশ ব্যক্তিগত অনুযোগ (রেটিং): ৪/৫ “মানুষ ও পশু শুধু যে বন্ধু খোঁজে তা না, তারা প্রভুও খোঁজে,” “সবাই চোখ কান খোলা রাখে, আমি নাকও খোলা রাখি,” “মানবজাতির স্বভাব হচ্ছে সে সত্যের চেয়ে মিথ্যার আশ্রয়ে নিজেকে নিরাপদ মনে করে!” পুরো উপন্যাসের তিনটি বেশ ভাবগাম্ভীর্যপূরক শব্দগুচ্ছ, যেখানে মানবসত্তার, ব্যক্তিসত্তার প্রাচীন রূপ, চরিত্রের দৃশ্যপট বাস্তবে রূপ পেয়েছে। আর, এটিকে বাস্তবতায় রূপ দিয়েছেন জনপ্রিয় লেখক ও কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদ। তবে, এই বইটি, দেয়াল, দেশের ক্ষমতার মসনদে থাকা ব্যক্তিদের লাল কলমের আঁচড় খেয়ে নিজস্ব স্বকীয়তা হারিয়েছে। বইয়ের শুরু...... ‘ভাদ্র মাসের সন্ধা। আকাশে মেঘ আছে। লালচে রঙের মেঘ। যে মেঘে বৃষ্টি হয় না, তবে দেকায় অপূর্ব। এই গাঢ় লাল, এই হালকা হলুদ, আবার চোখের নিমিষে লালের সঙ্গে খয়েরি মিশে সম্পূর্ণ অন্য রঙ। রঙের খেলা যিনি খেলছেন মনে হয় তিনি সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছেন।’ এভাবে সূচনা ঘটেছে হুমায়ূন আহমেদের চার দশকের বর্ণময় লেখকজীবনের শেষ উপন্যাস ‘দেয়াল’- এর। উপন্যাসের শুরুতে আকাশের রঙবদলের খেয়ায় যে সিদ্ধান্তহীনতার কথা বলা হচ্ছে তা বিশেষ ইঙ্গিতবহ। যে সময়কে উপজীব্য করা হয়েছে ‘দেয়াল’-এ, তা একটি সদ্যস্বাধীন জাতির ভাগ্যকাশের চরম অনিশ্চয়তার কাল। লেখক যেহেতু উপন্যাস লিখেছেন, তাই আছে কিছু কাল্পনিক চরিত্র। গল্প আবর্তিত হয়েছে এদের ঘিরেও। নানা ঘটনার ঘনঘটায় ঢাকা পড়ে নি জীবনসৌন্দর্য আর জীবন-সত্যের সন্ধান। ইতিহাসের সত্য আর লেখকের সৃজনী ভাবন্য-দুইয়ে মিলে ‘দেয়াল’ পরিণত হয়েছে একটি হৃদয়গ্রাহী উপাখ্যানে। আমাদের জাতীয় ইতিহাসের এসব শোকাবহ পর্বের বর্ণনায় যে-পরিসর ও ব্যাখ্যা বিশ্লেষণের প্রয়োজন ছিল, বইতে তা দেওয়া হয় নি। বঙ্গবন্ধুর শাসনকালে অনুবস্ত্রের অভাব এবং রক্ষী বাহিনীর অত্যাচার ও তাদের প্রতি সর্বসাধারণের ক্ষোভ ও ঘৃণার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। শেখ মুজিবকে বঙ্গপিতা, মহামানব ও বঙ্গবন্ধু বলা হলেও মৃত্যুতে তিনি লেখকের অতটা সহানুভূতি লাভ করেননি যতটা পেয়েছেন তাঁর পরিবারের শিশু ও নারীরা। অবন্তির গৃহশিক্ষক শফিক, যে নিজেকে খুবই ভীতু বলে পরিচয় দেয়, সে-কিন্তু রাস্তায় দাঁড়িয়ে ‘মুজিব হত্যার বিচার চাই’ চলে স্লোগান দেয়, গ্রেপ্তার হয় এবং নিপীড়ন সহ্য করে। খন্দকার মোশতাককে এ-বইতে সঠিক চরিত্ররূপে অঙ্কন করা হয়েছে। ‘অসীম সাহসী মুক্তিযোদ্ধা বীর উত্তম খালেদ মোশাররফ’ এবং ‘মহাবীর কর্নেল তাহেরে’র প্রতি লেখকের শ্রদ্ধা প্রকাশ পেয়েছে এবং উপন্যাসে কর্নেল তাহেররকেও দেখিইয়েছেন খালেদ মোশাররফের সাহসিকতা ও চরিত্রগুণের প্রশংসা করতে! জিয়াউর রহমানের আর্থিক সততার প্রশংসা আছে, জনগণের শ্রদ্ধা তিনি অর্জন করেছিলেন, তা বলা হয়েছে, সেই সঙ্গে তাঁর ক্ষমতালোভের কথা বলা হয়েছে এবং সরকারি তথ্য উদ্বৃত করে জানানো হয়েছে যে, ১৯৭৭ সালের ৯ অক্টোবর পর্যন্ত তাঁর গঠিত সামরিক আদালতের বিচারে ১১৪৩ জন সৈনিক ও অফিসারকে ফাঁসির দড়িতে ঝুলিতে হয়েছে! অনেক মিথ্যের আড়ালে সত্য গুটিসুটি হয়ে জমে যায়, হেলে যায়, পড়ে যায়। লেখকের মতে, এদের দীর্ঘনিশ্বাস জমা হয় চট্টগ্রামের সার্কিট হাউজে- সেখানে ‘জিয়া প্রাণ হারান তাঁর এক সময়ের সাথী জেনারেল মঞ্জুরের পাঠানো ঘাত বাহিনীর হাতে।’ এই সিদ্ধান্তের সমর্থনে বইতে কোনো তথ্য নেই, বরঞ্চ এই হত্যাকাণ্ডের পশ্চাতে মনজুরের ‘রূপবতী স্ত্রী’র প্রলয়ংকরী স্ত্রীবুদ্ধি কাজ করে থাকতে পারে বলে অনুমান করা হয়েছে। বঙ্কিমচন্দ্র যে বলেছিলেন, ‘উপন্যাস ইতিহাস নহে’, সে কথা যথার্থ। তবে ইতিহাসাশ্রিত উপন্যাসে ইতিহাসের সারসত্য অবিকৃত থাকবে বলে আশা করা হয় এবং কল্পনাপ্রসূত আখ্যানেও কার্যকারণ সম্পর্কের ব্যাখ্যা প্রত্যাশিত। দেয়াল উপন্যাসের প্রথমদিকে হুমায়ূন আহমেদ নিজের উল্লেখ করেছেন প্রথম পুরুষে, শেষদিকে এসে উত্তমপুরুষে নিজের কথা সে বলে গেছে। নিজের ব্যক্তিগত পাঠ প্রতিক্রিয়ায় বলবো যে, পুরো বইটি লেখক কাল্পনিক চরিত্র দিয়ে লিখেছেন। মুক্তিযুদ্ধের পরে দেশের ক্ষমতার মসনদে যে পরিবর্তন আসে, তা তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন। ’৭১ এর রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ, ৩০ লাখ শহীদের আত্মত্যাগ, মা-বোনের উপর অসহনীয় অত্যাচার। মুক্তিযুদ্ধ সম্বন্ধে কতটুকু বা জানি আমরা? কতটুকু জানে বাঙালি? তরুণ প্রজন্মের কাছে এর প্রভাব কতটুকু? এমন কিছু প্রশ্ন আছে যাদের উত্তর কুয়াশার মত। দূর থেকে আবছা শুধু দেখা না, সেগুলোকে ধরা বা ছোঁয়া যায় না। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্মম হত্যাকাণ্ড ও পরবর্তী রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট এর মূল উপজীব্য। লেখক এখানে বঙ্গবন্ধুর শাসনামল, বাকশাল গঠন, রক্ষী বাহিনীর কার্যক্রম, হত্যা পরবর্তী প্রতিক্রিয়া, জেল হত্যা, এবং এসব ঘটনায় মেজর রশীদ, মেজর ফারুক, খন্দকার মোশতাক প্রমুখের ভূমিকার স্পষ্ট বর্ণনা দিয়েছেন। পাশাপাশি খালেদ মোশাররফের ক্যু, মেজর জিয়াউর রহমানের আটকাবস্থা, কর্নেল তাহেরের অভিযান, সেনাবাহিনীর অফিসার থেকে দেশের রাষ্ট্রক্ষমতায় আসা জেনারেল জিয়ার কথা, তাহেরেরে ফাঁসি, রাষ্ট্রনায়ক জিয়ার শাসনামল, উনার শাসনামলে বহির্বিশ্বের সাথে সম্পর্ক ইত্যাদি আলোচনা করেছেন লেখক। আর এই সমস্যা থেকে রক্ষা করার জন্য আলো হাতে এগিয়ে এসেছেন অনেক কবি লেখক আর গন্যমান্য ব্যক্তিরা। তরুণ প্রজন্মের কাছে মুক্তিযুদ্ধকে করতে ছেয়েছেন আপন আলোয় আ্লোকিত। হুমায়ুন আহমেদ তাদের একজন। তিনি যেমন বলেছেন একাত্তরের কখা তেমনি পাঠকের সামনে তুলে ধরেছেন ১৯৭৫ এর ষড়যন্ত্র এবং রক্তঝরা নভেম্বরের কথা। চরিত্রের খেয়ালিপনা, সংলাপের সংঘাত, ঘটনার আকস্মিকতা ও কার্যকারণহীনতা আমাদের সবসময়ে রহস্যময়তার দিকে আকর্ষণ করে নিয়ে গিয়েছে, তাই বাঙালি জাত্তিসত্তায় বিশ্বাসী, সাহিত্যপ্রেমী সবাইকে দেয়াল বইটি পড়ার আমন্ত্রণ জানাচ্ছি......
Was this review helpful to you?
or
লেখক হুমায়ূন আহমেদের শেষ উপন্যাস ‘দেয়াল’।দেয়াল ইতিহাসাশ্রিত উপন্যাস হলেও,একইসাথে কিয়দাংশভাবে বলা যেতে পারে এতে তাঁর আত্মজীবনীর ছোঁয়া আছে। হুমায়ূন আহমেদের মৃত্যুর পর ২০১৩ সালে একুশে বইমেলায় প্রকাশিত হয় ‘দেয়াল’। দেয়ালের উপন্যাসাশ্রিত কেন্দ্রীয় চরিত্র অবন্তী সমাজ প্রচলন বিরোধী,বাক-স্বাধীনপ্রিয় এবং চঞ্চল। যেটা লক্ষ্য করা যায় অবন্তীর চরিত্র জনরায়। অবন্তীর গৃহশিক্ষক শফিকের কারণেই হুমায়ূন আহমেদ প্রথম পরিচিত হয়,শফিকের পোষা কুকুর ‘কালাপাহাড়’ এবং দ্বিতীয়ত অবন্তীর সাথে। লেখকের মতে — পৃথিবীতে সবচেয়ে সুন্দর চোখ নিয়ে এসেছিলো ইংরেজ কবি শেলী এবং বুদ্ধদেবপুত্র কুনাল। আর এদের দুজনের চোখের চেয়েও শতগুণ সুন্দর অবন্তীর চোখ। আমার মতে এটা হুমায়ূন আহমেদের আবেগের চূড়ান্ত বহিঃপ্রকাশ বৈ অন্য কিছু হওয়ার অপেক্ষা রাখতেছে না। অবন্তীর সঙ্গে দেখা হওয়ার একুশ বছর পর লেখক ‘লীলাবতী’ উপন্যাসে লীলাবতীর রূপ বর্ণনায় অবন্তীকে চোখে রেখেই উপন্যাসটি সম্পূর্ণ করে। শফিককে সন্দেহকারী অবন্তীর দাদাজান সরফরাজ খান মুক্তিযুদ্ধের সময়ে আত্মনিরপত্তার জন্য নিজ গ্রামে চলে যান এবং সেখান থেকে স্থানান্তরিত হয়ে খাতিম নগরের পীর হামিদ কুতুবির হুজুরখানায় আশ্রয় নেয়। হামিদ কুতুবির সাথে পাকিস্তানি মিলিটারি ক্যাপ্টেন সামসের সুসম্পর্ক স্থাপন হলে,তাকে খাতিমনগরের শান্তিকমিটির চেয়ারম্যান করা হয়। দৈবক্রমে অবন্তীকে দেখে ফেললে পাকিস্তানি লালসা বিধস্তের মতো,ক্যাপ্টেন সামস হামিদ কুতুবির কাছে অবন্তীর জন্য বিয়ের প্রস্তাব দেন।পরিস্থিতি সামাল দিতে হামিদ কুতুবির কোরানে হাফেজ হওয়া ছেলে জাহাঙ্গীরের সাথে অবন্তীর অমতে জোরপূর্বক বিয়ে সম্পন্ন করেন।(অবন্তীর নীরবতা হাদিসের মতে তার বিয়েতে মত রয়েছে) সরফরাজ খানকে সন্দেহ করেন অবন্তীর মা ইসাবেলা।ইসাবেলার মতে— সরফরাজ খান সেক্স ডিপ্রাইভড্ ব্যক্তি।সেক্স-ডিপ্রাইভড বৃদ্ধরা নানান কুকাণ্ড করে।এমন একজন ব্যক্তির সাথে অবন্তীর একা থাকাকে,তিনি ভালো চোখে নিচ্ছেন না। ইসাবেলা স্বামীর সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করে স্বদেশ স্পেনে চলে যায়।পরে তার স্বামী পুনরায় স্পেনে তার কাছে ফিরে ।তারা দুজনই অস্বাভাবিক পর্যায়ের মস্তিষ্কের ধারক। এরপর পরই উপন্যাসের বাইরের পর্বকে কিঞ্চিৎ সরিয়ে রেখে,চলে আসে উপন্যাসের মূল পর্ব;মুক্তিযুদ্ধের কালো উপাখ্যান। প্রথম দিকে লেখকের হাতে বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রীতি এবং নিজ দেশের মানুষের প্রতি অন্ধ বিশ্বাসের যে নমুনা তা প্রকাশের সাথে সাথে,চলে আসে লেখকের বঙ্গবন্ধুর প্রতি চাপা ক্ষোভ ও বিস্বাদ। চলে আসে লেখকের অর্থাভাবের চরম পর্যুবসতা,একইসাথে অপমানের শ্লেষাত্মক ব্যাখ্যা। সরকারের দেয়া বাড়ি জোরপূর্বক দখল নিয়ে নেয় রক্ষীবাহিনীর দল।একরাতে ওই শহীদ-পরিবারকে কঠিন অপমানের মুখে পড়তে হয় এবং নির্দয়ীভাবে রাস্তার নর্দমার পাশে অভুক্ততার স্বীকারে পরে থাকতে হয় তাঁদের। পরে তাঁদের জীবনীক রক্ষার্থে এগিয়ে আসেন বাংলাদেশের মহান সাহিত্যিক আহমেদ ছফা এবং মাসিক সাহিত্য পত্রিকার সমকালের সম্পাদক সিকানদার আবু জাফর।আহমেদ ছফার ব্যক্তিত্বের উপাখ্যান আমাদের অনেকেরই অজানা নয়।তিনি সিদ্ধান্ত নিলেন— বঙ্গভবনের সামনে গায়ে কেরোসিন ঢেলে আত্মাহুতি দিবেন।তার কোনো প্রয়োজন পরে নাই।দুজনেরই সমদ্যোগে নতুন করে প্রাণ ফিরে পায় লেখকের পরিবার। ১৫-ই আগস্টে শেখ মুজিবের সপরিবারের বর্ণনার বিষাদে কিছুটা কমতি থাকে। দেয়াল অনুযায়ী লেখককে যতোটা না প্রভান্বিত করেছে মুজিবের বীরত্ব, তার চেয়ে শতাধিক প্রভাব লক্ষ্য করা যায় ‘বীর উত্তম‘ খেতাব প্রাপ্ত কর্নেল তাহেরের প্রতি।হুমায়ূন আহমেদ কর্নেল তাহেরের মা বেগম আশরাফুন্নিসাকে তার মায়ের মতো করে দেখতেন।তার মুক্তিযোদ্ধা নিয়ে লেখা উপন্যাস ‘আগুনের পরশমণি’ বেগম আশরাফুন্নিসাকে উৎসর্গ করেন।দৈবচয়নে বেগমের নয় সন্তানই মুক্তিযোদ্ধা ছিলো;যা নিয়ে লেখকের মাঝে প্রশংসার পঞ্চমুখ ফুটে ওঠে!বঙ্গবন্ধু মৃত্যুর পর কর্নেল তাহের তার অনুগত সৈন্যবাহিনীর সাথে জেনারেল জিয়াকে মুক্ত করেন। সেই সুবাধে,লেখক কর্নেল তাহেরের প্রতি কৃতজ্ঞতার ভাব নিয়ে থাকা স্বার্থান্বেষী জেনারেল জিয়ার যে প্রতিজ্ঞা ছিলো, তা যতোটা না আবেগমথিতভাবে প্রকাশ করেছেন,ঠিক ততোটাই আক্ষেপ এবং ঘৃণায় জড় হওয়া অভিমান নিয়ে এটাও বলেছিলেন যে,‘‘জেনারেল জিয়া কর্নেল তাহেরের উপকার মনে রেখেছিলেন কিনা তা আমরা জানি না,তবে তিনি যে কর্নেল তাহেরকে ফাঁসির দড়িতে ঝুলিয়েছেন তা আমরা জানি।’’ কর্নেল তাহের তবুও নিজের ফাঁসির দড়ি,নিজেই গলায় রেখে শেষ পর্যন্ত বাঙলার বীরত্বকে স্মরণ করিয়েছে প্রতিটা মুহূর্তে। অন্যদিকে দারুণভাবে ফুটে ওঠে,নিজেকে ভীতু বলা এক ব্যক্তি,আদর্শ লিপি প্রেসের মালিক রাধানাথ বাবুর কোনো কার্যকারণ বিহীন সমস্ত বিষয়-সম্পত্তির ভাগীদার হওয়া শফিকের অত্যধিক সাহসী কর্মকান্ড। বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুর পর একবার এক রাতে বিধ্বস্ত বাংলাদেশের রাস্তায় নেমে শফিক একাই স্লোগান দেয়— ‘মুজিব হত্যার বিচার চাই।’ সিআইডি ইন্সপেক্টর শেখ হাসানুজ্জামান খান শফিকের আঙুলে আলপিন ঢুকালেও,অনেক নিপীড়ন সহ্য করেও শফিক বীরউত্তম কর্নেল তাহেরের প্রতি রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলায় সাক্ষ্য দেননি।পরে হাসানুজ্জামান খানের একক প্রচেষ্টাতেই শফিক জেল মুক্ত হন। ব্রিগেডিয়ান খালেদ মোশাররফ একজন উল্লেখযোগ্য মুক্তিযোদ্ধা।যিনি ক্ষমতালোভী খন্দকার মোশতাককে ক্ষমতা থেকে উচ্ছেদ করেন। বইটিতে উল্লেখ করেছেন;তিনি জিয়ার কুটিলতা,খাল কেটে কুমির আনা টাইপ মনোভাবকেই নির্দেশ দিয়ে, জিয়ার প্রতি ঘৃণার বিদ্বেষটা তাঁর ভাব গম্ভীরতার মাধ্যমে প্রকাশ করেছেন। উপন্যাসের শেষের দিকে জিয়ার মৃত্যুর পূর্বের বিষয়বস্তু সেইসব পাঠকবর্গ খুব নিখুঁতভাবে বুঝতে পারবে,যারা হুমায়ূন আহমেদের লেখার সাথে খুব কাছ থেকে পরিচিত।
Was this review helpful to you?
or
আমার অনেক প্রিয় একটা উপন্যাস! অসাধারণ ?
Was this review helpful to you?
or
সত্যি কথা বলতে এক কথায় বইটি অসাধারণ।তবে শুধু ইতিহাসনির্ভর না বইটি।যেমন জোছনা ও জননীর গল্প,মধ্যাহ্ন,মাতাল হাওয়া এই বইগুলিতে ইতিহাস ছাড়াও একটা গল্প আছে এই বইটিও ঠিক তেমনই।ওনার অদ্ভুত রহস্যের ছোয়া এই বইয়ের মধ্যেও বিদ্যমান।
Was this review helpful to you?
or
vlo
Was this review helpful to you?
or
ভাদ্র মাসের সন্ধ্যা। আকাশে মেঘ আছে। লালচে রঙের মেঘ। যে মেঘে বৃষ্টি হয় না। তবে দেখায় অপূর্ব। এই গাড় লাল, এই হালকা হলুদ, আবার চোখের নিমিষে লালের সঙ্গে খয়েরি মিশে সম্পূর্ণ অন্য রঙ। রঙের খেলা যিনি খেলছেন তিনি সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছেন। এভাবেই সুচনা ঘটেছে হুমায়ন আহমেদের চার দশকের বর্ণময় লেখক জীবনের শেষ উপন্যাস ‘দেয়াল’-এর। ২০১১ সালের মাঝামাঝিতে ‘দেয়াল’ রচনা শুরু করেছিলেন তিনি। সে সময় উপন্যাসের পাঁচটি পরব ধারাবাহিকভাবে ‘অন্যদিন’-এ প্রকাশিত হয়। এরপর বেশ কিছুদিন বিরতির পর যুক্তরাষ্ট্রে তার ক্যান্সার চিকিৎসা চলাকালে নতুন করে ‘দেয়াল’ রচনায় মনোনিবেশ করেন তিনি, যদিও শেষ পর্যন্ত উপন্যাসটির চূড়ান্ত রূপ দেওয়ার সুযোগ পান নি। সুচনা-অনুচ্ছেদের আকাশে রঙবদলের খেলায় যে সিদ্ধান্তহীনতার কথা বলা হচ্ছে তা বিশেষ ভাবে ইঙ্গিতবহ। যে সময়কে উপজীব্য করা হয়েছে ‘দেয়াল’-এ, তা একটি সদ্যস্বাধীন জাতির ভাগ্যকাশের চরম অনিশ্চয়তার কাল। উপন্যাসের কিছু চরিত্র বাস্তব থেকে নেওয়া, নাম-ধাম সবই বাস্তব, ঘটনা-পরম্পরাও বাস্তবেরই অংশ। লেখক যেহেতু উপন্যাস লিখেছেন, টাই আছে কিছু কাল্পনিক চরিত্র। গল্প আবর্তিত হয়েছে এদের ঘিরেও। নানা ঘটনার ঘনঘটায় ঢাকা পড়ে নি জীবনসৌন্দর্য আর জীবন-সত্যের সন্ধান। ইতিহাসের সত্য আর লেখকের সৃজনী ভাবনা দুইয়ে মিলে দেয়াল পরিনিত হয়েছে এক হৃদয়গ্রাহী উপাখ্যান।
Was this review helpful to you?
or
কিছু গল্প আছে যার ধারা পাঠককে বইয়ের ভেতর টেনে নিয়ে যায়। যে বইটি সম্পর্কে বলতে চলছি তা এমনি একটি গল্প যার ধারা আপনাকে মোহিত করবে। হৃদয়ের কোণে লুকিয়ে থাকা মুক্ত সত্তাকে নাড়া দেবে, নিঃশব্দে বলে যাবে অনেক কিছু ।
Was this review helpful to you?
or
অসাধারণ।
Was this review helpful to you?
or
রাজনীতি নিয়ে এতোটা নির্ভিক সত্য কেও প্রকাশ করার সাহস করে নি কখনো! একটা মাস্টার পিস!
Was this review helpful to you?
or
#রকমারি_রিভিউ_প্রতিযোগ_মার্চ রিভিউ নংঃ ৫ বইঃ দেয়াল লেখকঃ হুমায়ুন আহমেদ প্রকাশকঃ অন্যপ্রকাশ ধরণঃ ঐতিহাসিক উপন্যাস পৃষ্ঠা সংখ্যাঃ ১৯৫ মূল্যঃ ৩২৩ টাকা (রকমারি) লেখক পরিচিতিঃ হুমায়ূন আহমেদ (১৩ নভেম্বর, ১৯৪৮ – ১৯ জুলাই, ২০১২) ছিলেন একজন বাংলাদেশী ঔপন্যাসিক, ছোটগল্পকার, নাট্যকার এবং গীতিকার, চিত্রনাট্যকার ও চলচ্চিত্র নির্মাতা। তিনি বিংশ শতাব্দীর জনপ্রিয় বাঙালি কথাসাহিত্যিকদের মধ্যে অন্যতম। তাঁকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা পরবর্তী অন্যতম শ্রেষ্ঠ লেখক বলে গণ্য করা হয়। বাংলা কথাসাহিত্যে তিনি সংলাপপ্রধান নতুন শৈলীর জনক। অন্য দিকে তিনি আধুনিক বাংলা বৈজ্ঞানিক কল্পকহিনীর পথিকৃৎ। নাটক ও চলচ্চিত্র পরিচালক হিসাবেও তিনি সমাদৃত। তাঁর প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা তিন শতাধিক। তাঁর বেশ কিছু গ্রন্থ পৃথিবীর নানা ভাষায় অনূদিত হয়েছে, বেশ কিছু গ্রন্থ স্কুল-কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যসূচীর অন্তর্ভুক্ত। কাহিনী সংক্ষেপেঃ দেয়াল বাংলাদেশি লেখক হুমায়ুন আহমেদের মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও সামাজিক প্রেক্ষাপট ভিত্তিক উপন্যাস। এটি তাঁর রচিত সর্বশেষ উপন্যাস যা তার মৃত্যুর ১ বছর পর গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হয়। গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হবার পূর্বেই এই উপন্যাস নিয়ে বিতর্ক দেখা দেয় এবং তা আদালত পর্যন্তও গড়ায়। হাইকোর্টের পরামর্শানুযায়ী লেখক উপন্যাসটির প্রথম প্রকাশিত রূপের পরিবর্তন সাধন করেন। এই উপন্যাসে মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী তৎকালীন বাংলাদেশের প্রধানতম রাজনৈতিক চরিত্র এবং ঘটনাবলি লেখক নিজ ভাষা ও কল্পনাপ্রসূত ঢঙে চিত্রায়িত করেছেন। ২০১১ সালের মাঝামাঝিতে দেয়াল রচনা শুরু করেছিলেন হুমায়ুন আহমেদ। সেসময় উপন্যাসের পাঁচটি পর্ব ধারাবাহিকভাবে অন্যদিন পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। এরপর বেশ কিছুদিন বিরতির পর যুক্তরাষ্ট্রে তাঁর ক্যানসার চিকিৎসা চলাকালে নতুন করে এটি রচনায় মনোনিবেশ করেন তিঁনি, যদিও শেষ পর্যন্ত উপন্যাসটির চূড়ান্ত রূপ দেয়ার সুযোগ পান নি। ভাদ্র মাসের সন্ধা। আকাশে মেঘ আছে। লালচে রঙের মেঘ। যে মেঘে বৃষ্টি হয় না, তবে দেখায় অপূর্ব। এই গাঢ় লাল, এই হালকা হলুদ, আবার চোখের নিমিষে লালের সঙ্গে খয়েরি মিশে সম্পূর্ণ অন্য রঙ। রঙের খেলা যিনি খেলছেন মনে হয় তিনি সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছেন। রাধানাথ বাবুর সাথে ইউজিন বোস্টারের সম্পর্কের দূরতম ঈঙ্গিত’ও লেখায় নেই। নেই খন্দকার মাকড়সা মোশতাকের ষড়যন্ত্রের জাল। আছে ঠিক তিরিশটা তথ্যসূত্রের তালিকা, যদিও স্থানে স্থানে মাসকারেনহাসের উল্লেখ/উদ্ধৃতি দিয়ে লেখক তার আশ্রয়ের মূলটা নির্দেশ করেছেন। মাসকারেনহাসের বইটিও গল্পের ছলে লেখা। সবমিলিয়ে অসাধারণ। পাঠ্য প্রতিক্রিয়াঃ ঐতিহাসিক চরিত্রগুলোর মাঝে খালেদ মোশাররফকে বাস্তবের সবচেয়ে কাছাকাছি এঁকেছেন হুমায়ুন। তার কাছাকাছি পাঠক যেতে পারে।অস্থির রাজনৈতিক পটভূমি নিয়ে রচিত এই অাখ্যানে এসেছেন অনেক বিখ্যাত ও কুখ্যাত ঐতিহাসিক চরিত্র। কিছু তথ্য বেশ চমকপ্রদ, কিছু আগেই জানা। কোন চরিত্রই প্রস্ফুটিত নয় সম্পূর্ণ ভাবে। অ্যান্থনি মাসকারেনহাসের নাম এসেছে বেশ কয়েকবার তথ্যসুত্র হিসেবে।
Was this review helpful to you?
or
খুব ই সুন্দর একটা বই। অনেক কিছুই জানা যাবে
Was this review helpful to you?
or
#রকমারি_রিভিউ_প্রতিযোগিতা_নভেম্বর_২০১৮ উপন্যাসঃদেয়াল লেখকঃহুমায়ূন আহমেদ প্রকাশনঃ অন্যপ্রকাশ ধরনঃঐতিহাসিক মুল্যঃ ৩৮০ টাকা হুমায়ূন আহমেদ এর সর্বশেষ উপন্যাস "দেয়াল".. মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী সময়ে দেশের যে রাজনৈতিক হাল চাল ছিলো লেখক একটি সুন্দর গল্পের মাধ্যমে সেটা তুলে ধরেছেন। উপন্যাস টি তে যেমন আছে, মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ের বর্ননা, ঠিক তেমন আছে ১৯৭৫ সালের কিছু নির্মম বিশ্বাসঘাতকতা এবং ষড়যন্ত্রের বর্ননা। মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে লেখা খুব কমই উপন্যাস আছে যেগুলো কয়েকটা গল্প মিলিয়ে অথবা নাটকের মতো করে লেখা হয়েছে তার মধ্যে এটা একটি। গল্পে গল্পে মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে লেখা ইতিহাস পড়তে কার না ভালো লাগবে.. :) কিভাবে বঙ্গবন্ধু হত্যার ষড়যন্ত্র করা হয়,কিভাবে পর্যায়ক্রমে খালেদ মোশাররফ এবং তাহের কে খুন করা হয়,ছোট বড় কর্মকর্তা কিভাবে বিনা দোষে জড়িয়ে পড়ে, সবকিছুই লেখক সহজ সাবলীল ভাষায় বর্ননা করেছেন। এখানে জিয়াউর রহমানের চরিত্রের ও কিছু বিশেষ দিক ফুটে উঠেছে। এতো মানুষের আত্মত্যাগের বিনিময়ে আমরা যে বিজয় অর্জন করেছি, এটার গ্রহনযোগ্যতা বর্তমানে আমাদের নতুন প্রজন্মের কাছে কতোটুকু???? ইতিহাস সম্পর্কে জানানোরর জন্য আমাদের দেশের অনেক লেখক হাতে কলম তুলে নিয়েছেন, কিন্তু পরিপূর্ন ইতিহাস কি আমরা জানতে পেরেছি?? কথাটি এইজন্য লেখলাম কারন বইটিতে কিছু জায়গার তথ্য দুর্বল মনে হয়েছে। লেখকের সম্পর্কে নতুন করে কিছু বলার নেই তিনি বরাবরই কথার যাদুকর।। উনি সবকিছুর সাথে গল্পের চরিত্র গুলি মিলিয়ে অসাধারন একটি লেখনির সৃষ্টি করেছেন,,, কিন্তু পাঠকের কাছে কিছু প্রশ্ন বই গুলোর সকল তথ্যই কি সঠিক ছিলো?? পাঠ্য প্রতিক্রিয়াঃ পুরো বইটি পরে মনে হইছে ক্ষমতার প্রলোভনে পড়েই তারা এরকম নৃশংস একটা হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছিল।। আবার শেখ মুজিবের অগাধ বিশ্বাস ও মুগ্ধ করেছে, যে সাবধান করার পরও তিনি কোন গুরুত্ব দেয়নি।।। তৎকালিন সময়ের রাজনীতিতে উভয়পক্ষের দোষ লেখার মাধ্যমে প্রকাশ করেছেন লেখক। সবমিলিয়ে ভালো ছিলো।
Was this review helpful to you?
or
It's good
Was this review helpful to you?
or
#রকমারি_পাঠক_সমাগম_বুক_রিভিউ_প্রতিযোগিতা_৩ মাসঃ আগস্ট পর্বঃ ৩ বইঃ দেয়াল লেখকঃ হুমায়ূন আহমেদ প্রকাশকালঃ বইমেলা ২০১৩ (উল্লেখ্য যে এটা হুমায়ূন আহমেদের মৃত্যুর পর প্রকাশিত হয়) প্রকাশকঃ অন্যপ্রকাশ প্রচ্ছদঃ মাসুম রহমান পৃষ্ঠা সংখ্যাঃ ১৯৮ মূল্যঃ ৩৮০ টাকা . "দেয়াল" হুমায়ূন আহমদের শেষ উপন্যাস। হুমায়ূন আহমদের প্রায় সকল উপন্যাসই পারিবারিক গল্প নিয়ে রচিত। 'দেয়াল' উপন্যাসটিও প্রথমে মনে করেছিলাম কোন পারিবারিক সম্পর্কের হবে। সেখানে দুটি পরিবারের মধ্যে ঝগড়া লেগে যাবে এবং তাদের মাঝে ইট পাথরের দেয়াল উঠবে! এবং এর নাম হয়ছে 'দেয়াল'। আপনাদেরও নিশ্চয়ই তাই মনে হয়েছিল। কিন্তু এই উপন্্যাসটি সম্পূর্ণ ভিন্ন । প্রকাশ হওয়ার আগেই "দেয়াল"বইটি নিয়ে অনেক বিতর্কের সৃষ্টি হয়। এমনকি আদালত পর্যন্ত যায় এই বইয়ের পাণ্ডুলিপি। হাইকোর্টের পরামর্শ অনুযায়ী এই বইয়ের অনেক কিছুই পরিবর্তন করা হয়। সদ্য স্বাধীন হওয়া বাংলাদেশের রাজনৈতিক, সামাজিক, সামরিক বাহিনীদের হালচাল নিয়ে লেখা একটি রাজনৈতিক উপন্যাস ‘দেয়াল’। . #লেখক_পরিচিতি- হুমায়ূন আহমেদ (১৩ নভেম্বর, ১৯৪৮ — ১৯ জুলাই, ২০১২) বিংশ শতাব্দীর বাঙ্গালি জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিকদের মধ্যে অন্যতম। বাংলাদেশের স্বাধীনতা পরবর্তী শ্রেষ্ঠ লেখক হিসেবে তাকে বিবেচনা করা হয়। তিনি একাধারে ঔপন্যাসিক, ছোটগল্পকার, নাট্যকার এবং গীতিকার । নাটক ও চলচ্চিত্র পরিচালক হিসাবেও তিনি সমাদৃত। ২০১১ পর্যন্ত তাঁর প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা দুই শতাধিক। বাংলা কথাসাহিত্যে তিনি সংলাপপ্রধান নতুন শৈলীর জনক। অতুলনীয় জনপ্রিয়তা সত্বেও তিনি অন্তরাল জীবন-যাপন করেন এবং লেখলেখি ও চিত্রনির্মাণের কাজে নিজেকে ব্যস্ত রাখেন। তাঁর বেশ কিছু গ্রন্থ পৃথিবীর নানা ভাষায় অনূদিত হয়েছে, বেশ কিছু গ্রন্থ স্কুল-কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যসূচীর অন্তর্ভুক্ত। ১৯৭১ খ্রিস্টাব্দে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে পাকিস্তানী সেনাবাহিনী তাকে আটক করে এবং নির্যাতনের পর হত্যার জন্য গুলি চালায়। তিনি অলৌকিকভাবে বেঁচে যান। ২০১১-এর সেপ্টেম্বর মাসে তাঁর দেহে আন্ত্রীয় ক্যান্সার ধরা পড়ে। তবে টিউমার বাইরে ছড়িয়ে না-পড়ায় সহজে তাঁর চিকিৎসা সম্ভব হয়। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক হিসাবে দীর্ঘকাল কর্মরত ছিলেন । জুলাই ১৯,২০১২ এই নন্দিত লেখক ক্যান্সার নিয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় যুক্তরাষ্ট্রের একটি হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন। . #কাহিনী_সংক্ষেপঃ 'দেয়াল' বইটির গল্পের শুরু হয় ধানমন্ডি ১০ নং রোডের এক বাড়ি থেকে। উপন্যাসের প্রধান চরিত্রে রয়েছে অবন্তি। দোতলা বিশিষ্ট বিশাল এই বাড়িতে দাদা সরফরাজ খানের সাথে একা থাকে অবন্তী। অবন্তির বাবা অবন্তিকে তিন বছর বয়সে দাদার কাছে রেখে স্পেনে চলে যান। তারপর তিনি আর ফেরেননি। মা ইসাবেলা স্বামী সম্পর্ক ত্যাগ করে বাস করে নিজ জন্মভূমি স্পেনে। অবন্তীর দাদা সরফরাজ খান এক্স পাকিস্তানি পুলিশ, অত্যন্ত রক্ষনশীল, খেয়ালী এক মানুষ। আর আছে অবন্তীর গৃহশিক্ষক শফিক। শফিক কে তিনি সন্দেহের চোখে দেখেন। তার ধারনা শফিক তার আদরের নাতনীকে পটানোর তালে আছে। অবন্তির জন্মদিনে শফিক একটা বই গিফট করেছিল অবন্তিকে। সরফরাজ খানের ধারনা এই বইয়ের মধ্যে কোনও চিঠিপত্র আছে। অথবা বইয়ের কাহিনী হয়তোবা বড়লোকের মেয়ের সাথে গৃহশিক্ষকের প্রেম জাতীয়। তিনি সেটা বোঝার জন্য বইটি পড়ে দেখছেন। শফিক জিগাতলায় একা থাকে। অবন্তিকে পড়ানো ছাড়া সে আরেকটা কাজ করে, সেটা হলো রাধানাথ বাবুকে তথ্য সংগ্রহ করে দেয়া। তিনি একটা বই লিখছেন সে জন্যে বিভিন্ন তথ্য দরকার হয়। শফিক সেসব তথ্য জোগাড় করে দেয়। তথ্যপ্রতি ২০ টাকা করে পায়। সফিকের আরেকটা ভালো গুন হলো সে খুব ভালো পেন্সিল স্কেচ করতে পারে। অবন্তির একটা পেন্সিল স্কেচ সে করে দিয়েছে। ছবিটা এমন ভাবে জীবন্ত হয়েছে যে সরফরাজ খানের ধারনা এতো ভালো পেন্সিল স্কেচ যে করতে পারে সে সাক্ষাৎ শয়তান। শফিক কিন্তু নিজেকে ভিতু বলে পরিচয় দিলেও, বঙ্গবন্ধুর হত্যার প্রতিবাদে সে রাস্তার মোড়ে দাঁড়িয়ে স্লোগান দেয় "মুজিব হত্যার বিচার চাই"। অবন্তির মা ইসাবেলা তাকে প্রতি বছর দুটা চিঠি পাঠান। একটা তার জন্মদিনে, আরেকটা ক্রিসমাসে। কিন্তু কেন? মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে সরফরাজ খান অবন্তিকে নিয়ে তার গ্রামের বাড়ি চলে যান।কিছুদিন পর তার বাড়ি পাকিস্তানি মিলিটারিরা দখল করে নেয়। তিনি তখন অবন্তিকে খতিবনগরের পিরসাহেবের হুজরাখানায় রেখে যান। পাকিস্তানি ক্যাপ্টেন সামস উনার হুজরাখানায় আসেন। ক্যাপ্টেন সামস অবন্তিকে দেখে তাকে বিয়ে করার কথা পিরসাহেব কে জানান। তখন তিনি বলে দেন যে তার ছেলে জাহাঙ্গীর এর সাথে অবন্তির বিয়ের কথা হয়ে আছে। পরে একপ্রকার জোড় করে জাহাঙ্গীর এর সাথে অবন্তির বিয়ে দেয়া হয়।হঠাৎ এই বিয়ের জন্য অবন্তি মোটেও প্রস্তুত ছিল না। অবন্তি অবশ্য পরদিন ঢাকায় চলে আসে। জাহাঙ্গীর নিজেই তাকে ঢাকায় দিয়ে যায়। অবন্তী কি নতুন কাউকে নিয়ে জীবন কাটাবে নাকি জাহাঙ্গীরের কাছে ফিরে যাবে! অবন্তির বাবার বন্ধু মেজর জেনালের খালেদ মোশাররফ। তার সাথে পরিচয়ের সূত্র ধরে কর্নেল তাহের এরও অবন্তিদের বাড়িতে আসাযাওয়া আছে। বীরউত্তম খালেদ মোশাররফ মুক্তিযুদ্ধে "কে ফোর্স" এর কমান্ডার ছিলেন।।্ গল্প থেকে ধীরে ধীরে আমরা দেখতে পারবো যুদ্ধবিধ্বস্ত এক দেশের, দেশপ্রেমের আদর্শ নিয়ে যুদ্ধ করা মানুষগুলোর ক্ষমতার লোভ। গল্পের এ অংশে মেজর ফারুক, মেজর রশীদ, মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান, ওসমানি মিলে বঙ্গবন্ধু হত্যার এক ভয়ঙ্কর পরিকল্পনা করে। এদিকে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা "র" (RAW) তাদের এই পরিকল্পনা জেনে বঙ্গবন্ধুকে সর্তক করে। বঙ্গবন্ধু তাদের কথা আমলে নেননি। শুক্রবার ১৫ ই আগস্ট ১৯৭৫, স্বপরিবারে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান নিহত হন। ভোরবেলা বাংলাদেশ বেতারে ভেসে আসতে থাকে মেজর ডালিমের ঘোষণা। ঘোষনাটা কী ছিল? যে মানুষ প্রথম স্বপ্ন দেখিয়েছিল স্বাধীনতার সে নিজের বাসভবনে নিহত হয় স্বপরিবারে নিজের সন্তানতুল্য সেনা অফিসারদের হাতে। মেজর ফারুক, মেজর রশীদের পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ক্ষমতায় আসে খন্দকার মোশতাক, মেজর ফারুক, মেজর রশীদের নেতৃত্বে বন্দী করা হয় আওয়ামীলীগ নেতাদের। রাতের অন্ধকারে জেলখানায় খুন হয় চার নেতা। এরই মাঝে খালেদ মোশাররফ বঙ্গবন্ধু হত্যাকারীদের নির্মূল করতে উদ্যত হন। মেজর ফারুক, মেজর রশীদসহ ১৭ জন সেনা কর্মকর্তা ও তাদের পরিবার পালিয়ে যায় দেশ ছেড়ে। জিয়াউর রহমানকে গ্রেফতার করা হয়। প্রাণ ভিক্ষা চেয়ে সাহায্যের অনুরোধ করেন কর্ণেল তাহেরকে। কর্ণেল তাহেরের সহায়তায় মুক্ত জিয়াউর রহমান হত্যা করেন দেশের বীরসন্তান খালেদ মোশাররফকে। ক্ষমতায় আসেন জিয়াউর রহমান। শুরু হয় ক্ষমতার লড়াই। জিয়াউর রহমানের নির্দেশে ঘটিত সামরিক আদালতে একের পর এক ফাঁসিতে ঝোলানো হয় দেশের তরুন সব সৈনিক ও অফিসারদের।যার দয়ায় এ জীবন সেই কর্ণেল তাহেরকে মিথ্যা অভিযোগে ফাঁসির নির্দেষ দেন জিয়াউর রহমান। দেশে তখন বিশ্বাসঘাতকতার গন্ধ, বাতাস তখন বিষাক্ত সৈনিকদের দীর্ঘস্বাস আর হতাশা। উপন্যাসের সমাপ্তি হয় জিয়াউর রহমানের হত্যার ও সেনা অভ্যূত্থানের মধ্য দিয়ে। ঐতিহাসিক সত্য আর জীবনের মিলনগাঁথা এই উপন্যাস। লেখকের উপলব্ধি, সত্যের অনুসন্ধানে কে এখানে নায়ক হয়ে উঠেছে? #পাঠ_প্রতিক্রিয়া: হুমায়ূন আহমেদ এর শেষ উপন্যাস "দেয়াল"। দেয়াল মূলত ইতিহাস আশ্রিত উপন্যাস। ইতিহাস আশ্রিত উপন্যাসে কিছু তর্কবিতর্ক থাকবে এটা স্বাভাবিক। সত্যমিথ্যা ও কল্পনা নিয়ে এগিয়ে যায় গল্প। বইয়ের শেষে লেখক রেফারেন্স গ্রন্থের নাম উল্লেখ করেছেন। সেখান থেকে পাঠক বিতর্কিত বিষয় গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা নিতে পারবে। তবে অনেকাংশে লেখক নিরপেক্ষ থেকেছেন, আবার কিছু ক্ষেত্রে নয়। হুমায়ূন আহমদের প্রতিটি লেখা মানুষকে মুগ্ধ করে। বইটা আমাকে টেনে নিয়ে গিয়েছে ইতিহাসে। প্রচন্ড রাগ জন্মায় এই জাতির প্রতি যারা আসলেই জাতির পিতাকে তার যোগ্য সম্মান দিতে পারেনি। গল্পে শফিক-অবন্তী-জাহাঙ্গীর-রাধানাথবাবু উপন্যাসকে করেছে আরো প্রানবন্ত। সব মিলিয়ে উপন্যাসটি আমাকে মুগ্ধ করেছে। বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাবলী জানার জন্য দেয়াল নিঃসন্দেহে অত্যন্ত ভাল একটি উপন্যাস। যারা এই উপন্যাসটি এখনো পড়েননি তারা পড়ে নিবেন আশা করছি। #প্রিয়_উক্তি- "এই পৃথিবীতে মূল্যবান শুধু মানুষের জীবন, আর সবই মূল্যহীন।" #রেটিং-৪.৫/৫ #হ্যাপি_রিডিং রিভিউ লিখেছেনঃ রেহেনা বেগম
Was this review helpful to you?
or
একটি মৌলিক বই হুমায়ূন আহমেদ এর
Was this review helpful to you?
or
‘দেয়াল’ বইটি পাঠকের আকর্ষণ প্রথমেই কেড়ে নেবে তার কভারের “হুমায়ূন আহমেদ এর শেষ উপন্যাস” লেখাটার কারণে। বইটি মূলত ইতিহাসকে কেন্দ্র করে কাহিনী হলেও লেখক নিজের কল্পনাকেও প্রাধান্য দিয়েছেন। বইটিতে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের আগের, মুক্তিযুদ্ধের সময়কার, তার পরের চিত্র পাওয়া যায়। বঙ্গবন্ধু হত্যা, তারপর নতুন সরকার গঠন, জাতীয় চার নেতা হত্যা এবং জিয়া হত্যাও এই বইয়ে উঠে এসেছে। বইয়ে ইতিহাসের পাশাপাশি আরেকটি গল্প সমানতালে চলে গিয়েছে। অবন্তি নামে এক মেয়ে সেই গল্পের মূল চরিত্র। দেশের বিভিন্ন পরিস্থিতিতে লেখক সেই মেয়ের জীবনের অবস্থা বর্ণনা করেছেন। তার পাশাপাশি লেখক সেসময়ে তার নিজের অবস্থাও বর্ণনা করেছেন। লেখক বইটির শেষ রূপ দেয়ার আগেই তার মৃত্যু হয়। সে অর্থে আমরা এ উপন্যাসকে অসমাপ্তও বলতে পারি। বইটির আরেকটি বৈশিষ্ট্য হলো এখানে কোনো উৎসর্গপত্র নেই। হুমায়ূন আহমেদের অবর্তমানে বইটি প্রকাশ হওয়ার কারণেই তা নেই। বই আকারে প্রকাশিত হওয়ার আগেই ‘দেয়াল’ নিয়ে প্রচুর বিতর্ক দেখা গিয়েছিল। তারপর লেখক হাইকোর্টের পরামর্শ অনুযায়ী লেখার প্রকাশিত রূপের পরিবর্তন করেন। বইটিতে সেই পরিবর্তিত রূপই প্রকাশ হয়েছে। সবকিছুকে ছাপিয়ে বইটিতে বড় হয়ে উঠেছে হুমায়ূন আহমেদের সাবলীল কাহিনী বলার ভঙ্গি। সে কারণে যে কেউ বইটি পড়ে ফেলতে পারবে এক নিশ্বাসে।
Was this review helpful to you?
or
#রকমারি_বইপোকা_রিভিউ_প্রতিযোগিতা বইয়ের নাম- দেয়াল জনরা-উপন্যাস ঔপন্যাসিক-হুমায়ূন আহমেদ পৃষ্ঠা-১৯৮ মূল্য-৩৮০ অন্যপ্রকাশ দেয়াল উপন্যাসের পটভূমি হলো বাংলাদেশের স্বাধীনতা পরবর্তী সময়। রাজনীতির একটা কঠিন সময় যখন ১৯৭৫ সালের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়। সেই অস্থির সময়ের বর্ণনা সহ অবন্তি নামক মেয়ের গল্প দিয়ে উপন্যাসের শুরু। অবন্তির বাবার নেই। মা প্রবাসে। সে থাকে তার দাদার কাছে। দাদা সরফরাজ খান বেশ কটকটে স্বভাবের। অবন্তির সবকিছুতে তার সন্দেহ। অবন্তি মেয়ে হিসেবে ভালো এবং বেশ চঞ্চল। তাকে পড়াতে আসে শফিক নামের এক ছেলে। অবন্তির দাদা এই ছেলেকেও বেশ সন্দেহ করেন। শফিক ছেলে হলেও, মেয়েদের থেকে বেশি বোধহয় লাজুক আর ভীতু। অবন্তির আর তার দাদার গল্পে মুক্তিযুদ্ধের কিছু চিত্র দেখানো হয়েছে। এদের সাথে গল্পের আকারে উঠে আসে বাংলাদেশের স্বাধীনতার পরের রাজনৈতিক ইতিহাস। অবন্তির বাবার বন্ধু ছিলেন জেনারেল খালেদ মোশাররফ। এবং তাদের বাড়িতেও বেশ আনাগোনা ছিলো।এভাবে কর্নেল তাহেরও একদিন এসেছিলেন। সে সময়ের শান্তিরক্ষা বাহিনী, বাকশাল গঠন আলোচনায় ঔপন্যাসিক কিছু কথা উত্তম পুরুষে নিজের পরিবারের কথা বলেছেন। বঙ্গবন্ধু হত্যার পরিকল্পনায় মেজর ফারুক, মেজর রশীদ, মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান চরিত্রদের কথা বলা হয়েছে। ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু হত্যার পর জিয়াউর রহমানের অবস্থান, খালেদ মোশারফ অভূত্থান, চার নেতার হত্যাকান্ড, কর্নেল তাহেরের নেতৃত্বে বিপ্লব, জিয়াউর রহমানের ক্ষমতাগ্রহন, তাহেরের ফাঁসি, মেজর জিয়ার হত্যাকান্ড এসকল গঠনা গুলোও উল্ল্যেখ করা হয়েছে। মূলত অবন্তির গল্পের সাথে বাংলাদেশের একটা অস্থির সময়ের রাজনীতি তুলে ধরেছেন ঔপন্যাসিক। হুমায়ূন আহমেদকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা পরবর্তী শ্রেষ্ঠ লেখক হিসেবে গণ্য করা হয়। তিনি একাধারে ঔপন্যাসিক, ছোটগল্পকার, নাট্যকার এবং গীতিকার।এমনকি নাটক ও চলচ্চিত্র পরিচালক হিসাবেও তিনি পরিচিত। তাঁর প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা তিন শতাধিক।দেয়াল তার সর্বশেষ উপন্যাস। ব্যক্তিগত মতামতঃ দেয়াল উপন্যাস প্রকাশিত হওয়ার আগেই বেশ বিতর্কিত ছিলো। অনেক অংশে পরিবর্তন এবং পরিমার্জন করে প্রকাশিত হয়েছে। তারপরেও যুদ্ধ পরবর্তী বেশ কিছুটা সময় উল্ল্যেখ করা হয়েছে। যা অনেকটা পাঠকের জানা হয়ে যাবে তার উপর ঔপন্যাসিক ইতিহাসের মিশ্রনে মূলত দেয়াল উপন্যাস রচনা করেছেন। তাই সঠিক ইতিহাসেরও তিনি নিশ্চয়তা দেন নি। উপন্যাসে মুজিবুর রহমানকে তিনি সোজা চোখে দেখেননি তবে তার হত্যার পর কোন প্রতিবাদ মিছিল না হওয়ায় বেশ অবাক হয়েছেন। আবার ফারুককে তিনি বেশ মসলা দিয়ে উপস্থাপন করেছেন। তাহেরকে অন্যচোখে দেখেছেন এটা খুব স্পষ্ট। আবার শেষ দিকে জিয়াকেও তিনি বেশ সৎ বলে উপস্থাপন করেছেন। এই বই পড়ার সময় বেশ একটা ঘোর সৃষ্টি হয়।এতো বেশি তারাতারি রাজনীতির অবস্থান গুলো পাল্টে যায় অবাক করার মতো। এতো রক্তের বিনিময়ে দেশ স্বাধীন করবার পরও রাজনীতির একটা নগ্ন দিক যে সময় দেশের অবস্থা অনেকটা ঘোলাটে করে ফেলছিলো সে দিকটা অবলম্বন করে তিনি এই উপন্যাস তৈরি করেছেন। মূলত সে সময়টা জুড়ে জনগনের মাঝে রাজনৈতিক চরিত্র এবং ঘটনাবলি নিয়ে যে একটা দেয়াল তৈরি হয়েছিলো, তিনি তা কিছুটা দূর করতে চেয়েছেন। আর এইটুকু পড়ে হয়তো পুরো ইতিহাস না জানা গেলেও কিছুটা অন্তত টের পাওয়া যাবে। অবন্তিকে বেশ ভালো লাগে। পুরো উপন্যাস পড়ে যে কোন লেখকের ভালো লাগবে অবশ্যই। যুদ্ধের পরবর্তী রাজনৈতিক বিভিন্ন চরিত্র দ্বারা ঘটিত ঘটনাবলি তিনি নিজের মতো করে বর্ণনা করে দেয়াল উপন্যাসের রূপ দিয়েছেন। https://www.rokomari.com/book/62834/দেয়াল?ref=srbr_pg0_p1
Was this review helpful to you?
or
অপ্রাসংগিক চরিত্র এবং ঘটনা অনেক বেশি ছিল । এক টান দিয়ে গল্প দ্রুত শেষ করে দেওয়ার একটা প্রবণতা লক্ষ্য করেছি । ঐতিহাসিক চরিত্র চিত্রন ততটা মানসম্পন্ন মনে হয় নি । তবে বেশ কিছু হুবুহু তথ্য যেমন- রমার বর্ননা বা আইজি প্রিসন এর বক্তব্য বইটির গুরুত্ব কিছুটা হলেও বাড়াতে পেরেছে । কিন্তু চিরাচরিত অলৌকিক এবং একঘেয়েমি কিছু ঘটনা-চরিত্র এই ইতিহাসকেন্দ্রিক উপন্যাসটির সিরিয়াসনেস/গুরুত্ব নষ্ট করে দিয়েছে । তাই এক কথায় বলতে গেলে যতটুক আগ্রহ নিয়ে বইটা পড়া শুরু করেছিলাম সে অনুযায়ী মনের চাহিদা পূরণ করতে বইটি ব্যর্থ হয়েছে ।
Was this review helpful to you?
or
#রকমারি_বইপোকা_রিভিউ_প্রতিযোগিতা --- বইয়ের নামঃ দেয়াল ধরণঃ ঐতিহাসিক উপন্যাস লেখকঃ হুমায়ূন আহমেদ প্রকাশনঃ অন্যপ্রকাশ পৃষ্ঠা সংখ্যাঃ ১৯৮ মূল্যঃ ৩৮০/- (মলাট মূল্য) রেটিংঃ ৪.৮/৫ --- অনেকবার লক্ষ্য করেছি। মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে অনেক লেখকই বই লিখেছেন যেগুলো পড়তে গিয়ে বিরক্তি আসে। কারণ সেসব বই থাকে একঘেঁয়ে বিবরণে ভরা। অন্যদিকে হুমায়ূন আহমেদের বইতে নীরস ইতিহাসকেও এমনভাবে উপস্থাপন করা হয় যাতে মনেই হয়না ইতিহাস সম্পর্কিত কিছু পড়ছি। দেয়াল উপন্যাসটা পড়ার পর একই অনুভূতি হলো আবারো। বঙ্গবন্ধু হত্যার পরিকল্পনা থেকে শুরু করে জিয়া শাসনের অবসান পর্যন্ত বাংলাদেশের রাজনীতিতে যেসব উত্থান পতন ঘটেছে, সেগুলোকেই সংক্ষিপ্তাকারে ধারাবাহিকভাবে তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন লেখক। বইটি শুরু হয় অবন্তী নামের একটি মেয়েকে দিয়ে যার অদ্ভুতুড়ে ব্যক্তিজীবনের উল্লেখ উপস্থাপিত হয়েছে বইয়ের গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক ঘটনাবলির পাশাপাশি। হ্যারি পটার সিরিজ যারা পড়েছেন তারা জানেন, হ্যারির স্কুলের কালোজাদু প্রতিরোধ বিদ্যার শিক্ষকের পদটি ছিলো অভিশপ্ত। কোনো শিক্ষকই এক বছরের বেশি সে পদে থাকতো পারতো না। দেয়াল উপন্যাসটা পড়ার পর স্বাধীন বাংলাদেশের শাসকের পদটাকেও আমার তেমনই অভিশপ্ত মনে হয়েছে। যেই এই পদে আসীন হয়েছে, তাঁকেই গ্রাস করেছে ক্ষমতা। রক্তের দামে শোধ করতে হয়েছে শাসকের আসনের ঋণ। যাঁরা বেঁচে গেছেন, তাদেরকে বয়ে বেড়াতে হয়েছে আমৃত্যু গ্লানি। কি দুঃখজনক! বইটার তথ্যগুলো কতটা নির্ভুল জানি না। তবে বইটি পড়ে মাঝে মাঝেই চমকে উঠেছি। যেসব ব্যক্তিত্বকে এ যাবৎ মহান বলে মেনে এসেছি, তাদের সম্পর্কে হয়তো এমন কিছু জেনেছি যেটা জেনে মনে হয়েছে---"এই মানুষটা এমন ছিলো?!" আবার নেতিবাচক ব্যক্তিগুলোর এমন কিছু দিক উপস্থাপিত হয়েছে যেগুলোর কারণে তাদের প্রতিও একটা অদ্ভুত শ্রদ্ধাবোধের সৃষ্টি হয়েছে। কি অদ্ভুত দ্বিধাগ্রস্ততা! উপন্যাসে উপস্থাপিত তথ্যের সত্যতা ও গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে আমার মাথা ব্যথা নেই। এ ব্যাপারে বিতর্ক থাকতেই পারে। আমার যেটা ভালো লেগেছে সেটা হচ্ছে হুমায়ূন আহমেদের লেখনিশৈলি। হ্যাঁ, প্রথমদিকে একটু বিরক্ত হয়েছি অবন্তী চরিত্রটার বাড়াবাড়ি খামখেয়ালিতে। কিন্তু পরে অন্যান্য ঘটনার চুম্বক উপস্থাপন রীতিমতো মুগ্ধ করে রেখেছে। যত বিতর্কই থাকুক, জীবনের শেষ উপন্যাসেও হুমায়ূন আহমেদ পাঠককুলকে মুগ্ধ করে গেছেন। খুব খুব ভালো লেগেছে বইয়ের প্রচ্ছদটা। প্রচ্ছদটার কারণেও বইটার প্রতি একটা আকর্ষণ সৃষ্টি হয়। বইটাকে নিজের সম্পত্তি হিসেবে রাখবার ইচ্ছে জাগে। সবমিলিয়ে বইটা আমার অনেক ভালো লেগেছে। এ বইটা পড়ে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পালাবদল সম্পর্কে আরও বিশদ জানার আগ্রহ তৈরি হয়েছে। যদিও জানিনা এত চমৎকার করে রাজনীতির বিভৎস দিকগুলোর বর্ণনা আর কারো লেখায় পাবো কি না। তবে আশায় রইলাম। পাঠক, সুযোগ হলে পড়ে দেখতে পারেন হুমায়ূন আহমেদের সর্বশেষ উপন্যাস--- "দেয়াল।" হয়তো বিনোদনের ছলেই জেনে ফেলবেন অনেক অজানা কিছু...!
Was this review helpful to you?
or
অসম্ভব ভাল একটা বই।
Was this review helpful to you?
or
#রকমারি_বইপোকা_রিভিউ_প্রতিযোগিতা বই- দেয়াল লেখক- হুমায়ূন আহমেদ ধরন- ঐতিহাসিক উপন্যাস রকমারি মূল্য- ৩২৩ টাকা কাহিনী সংক্ষেপ: দেয়াল সেই উত্তাল সময়ের গল্প যখন এক স্বাধীন রাষ্ট্র মুখোমুখি হয় চরম সত্যের-'আবেগ-ভালোবাসা দিয়ে দেশ চলে না। রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য প্রয়োজন নিয়ম, কঠোর ব্যবস্থাপনা! রাষ্ট্রকে টিকিয়ে রাখতে দরকার কূটনৈতিক জ্ঞান...." ১৯৭১, ১৬ ই ডিসেম্বর জন্ম হয় স্বাধীন রাষ্ট্র বাংলাদেশের! আওয়ামীলীগ সরকার রাষ্ট্রপরিচালনায় চরমভাবে ব্যর্থ হয়! দেশে অরাজকতা, অভাব, ভোগ-দখল চরমে...এমন এক সময়ের গল্প দেয়াল! গল্পের শুরু হয় ধানমন্ডি ১০ নং রোডের এক বাড়িতে! দোতলা বিশাল এই বাড়িতে দাদা সরফরাজ খানের সাথে একা থাকে অবন্তী! ভবঘুরে বাবা জন্মের পরপরই দাদার কাছে রেখে নিরুদ্দেশ হয়। মা ইসাবেলা স্বামী সম্পর্ক ত্যাগ করে বাস করে নিজ জন্মভূমি স্পেনে! অবন্তীর দাদা সরফরাজ খান এক্স পাকিস্তানি পুলিশ, অত্যন্ত রক্ষনশীল, খেয়ালী এক মানুষ! আর আছে অবন্তীর গৃহশিক্ষক শফিক! নিজেকে ভীতু হিসেবে পরিচয় দেওয়া এই মানুষ এক পর্যায়ে চরক দুঃসাহসিক কাজ করে! অবন্তীর এই গল্পের অবশ্য আরেকজন মানুষ আছে!তার মিথ্যে স্বামী জাহাঙ্গীর! গল্প এই বাড়ি থেকে শুরু হলেও এখানে থেমে থাকেনা! ধীরে ধীরে দেখা মেলে যুদ্ধবিধ্বস্ত এক দেশের, দেশপ্রেমের আদর্শ নিয়ে যুদ্ধ করা মানুষগুলোর ক্ষমতার লোভ! গল্পের এ অংশে মেজর ফারুক, মেজর রশীদ, মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান, ওসমানি মিলে বঙ্গবন্ধু হত্যার এক ভয়ঙ্কর পরিকল্পনাকে বাস্তবে রূপ দেয়! যে মানুষ প্রথম স্বপ্ন দেখিয়েছিল স্বাধীনতার সে নিজের বাসভবনে নিহত হয় স্বপরিবারে নিজের সন্তানতুল্য সেনা অফিসারদের হাতে! যে মানুষটা দেশের মানুষদের জন্য জীবনের সিংহভাগ কাটায় বন্দী হিসেবে তার মৃত্যুতে দেশবাসী থাকে নির্বিকার,কেউ কেউ চরম নির্লজ্জতার প্রমাণ দিয়ে পথে নামে আনন্দ মিছিল করতে! মেজর ফারুক, মেজর রশীদের পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ক্ষমতায় আসে খন্দকার মোশতাক! মেজর ফারুক, মেজর রশীদের নেতৃত্বে বন্দী করা হয় আওয়ামীলীগ নেতাদের! রাতের অন্ধকারে জেলখানায় খুন হয় চার নেতা! এরই মাঝে খালেদ মোশাররফ বঙ্গবন্ধু হত্যাকারীদের নির্মূল করতে উদ্যত হন! মেজর ফারুক, মেজর রশীদসহ ১৭ জন সেনা কর্মকর্তা ও তাদের পরিবার পালিয়ে যায় দেশ ছেড়ে! জিয়াউর রহমানকে গ্রেফতার করা হয়! প্রাণ ভিক্ষা চেয়ে সাহায্যের অনুরোধ করেন কর্ণেল তাহেরকে! কর্ণেল তাহেরের সহায়তায় মুক্ত জিয়াউর রহমান হত্যা করেন দেশের বীরসন্তান খালেদ মোশাররফকে! ক্ষমতায় আসেন জিয়াউর রহমান! শুরু হয় ক্ষমতার লড়াই! জিয়াউর রহমানের নির্দেশে ঘটিত সামরিক আদালতে একের পর এক ফাঁসিতে ঝোলানো হয় দেশের তরুন সব সৈনিক ও অফিসারদের! যার দয়ায় এ জীবন সেই কর্ণেল তাহেরকে মিথ্যা অভিযোগে ফাঁসির নির্দেষ দেন জিয়াউর রহমান। দেশে তখন বিশ্বাসঘাতকতার গন্ধ, বাতাস তখন বিষাক্ত সৈনিকদের দীর্ঘস্বাস আর হতাশায়! এই স্বৈরাচারী প্রেসিডেন্টই সম্ভবত সবচেয়ে সফল রাষ্ট্রনায়ক ছিলেন, দেশ স্বাধীনতার পর প্রথম তার শাসনামনেই সাধারন মানুষ স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে।তবু যে ক্ষমতায় এসেছে মানুষের রক্তের বিনিময়ে তার জীবনাবসান সহজ হওয়ার কথা নয়! উপন্যাসের সমাপ্তি হয় জিয়াউর রহমানের হত্যার ও সেনা অভ্যূত্থানের মধ্য দিয়ে! ঐতিহাসিক সত্য আর জীবনের মিলনগাঁথা এই উপন্যাস! লেখকের উপলব্ধি, সত্যের অনুসন্ধানে কে এখানে নায়ক হয়ে উঠেছে? সম্ভবত সেই উত্তাল সময়, যা ধারন করেছে রক্ত, বিশ্বাসঘাতকতা, মৃত্যু আর হতাশাকে! পাঠ-প্রতিক্রিয়া: ইতিহাস বিজয়ী কর্তৃক লিখিত হয় এটা যেমন সত্যি তেমনি চরম সত্যি হলো Everything is not fare in love and war! বইটা আমাকে টেনে নিয়ে গিয়েছে সেই সময়ে! কিছু কিছু মুহুর্ত আমাকে কাঁদিয়েছে! যন্ত্রণা দিয়েছে! শেখ রাসেল মৃত্যুর আগে যখন বলে, ভাইয়া ওরা কি আমাকেও মেরে ফেলবে? কিংবা কর্ণেল তাহের-খালেদ মোশাররফের মৃত্যু! প্রচন্ড রাগ জন্মায় এই জাতির প্রতি যারা আসলেই জাতির পিতাকে তার যোগ্য সম্মান দিতে পারেনি! গল্পে শফিক-অবন্তী-জাহাঙ্গীর-রাধানাথবাবু উপন্যাসকে করেছে আরো প্রানবন্ত! সব মিলিয়ে উপন্যাসটি আমাকে মুগ্ধ করেছে। প্রিয় উক্তি- "এই পৃথিবীতে মূল্যবান শুধু মানুষের জীবন, আর সবই মূল্যহীন" এই মূল্যবান জীবনের করুন পরিণতির গল্পই "দেয়াল"
Was this review helpful to you?
or
#রকমারি_বইপোকা_রিভিউ_প্রতিযোগিতা বই-দেয়াল লেখক-হুমায়ূন আহমেদ ধরন- ঐতিহাসিক উপন্যাস পৃষ্ঠা-১৯৮ মূল্য-৩৮০ প্রকাশনী -অন্যপ্রকাশ হুমায়ূন আহমেদ আমার জন্য আলো। যেকোন খারাপ সময় চুপচাপ কাটিয়ে দিতে পারি মানুষটার বই পড়ে। এরকম একটা সময় ছিলো ২০১৬ সালের অক্টোবরের দিকে। পুরো হতাশ তখন সব দিক থেকে। যে কোন কিছুই তখন আমার খুব বিরক্ত লাগতো। এর মাঝে আউট বই পড়া ছেড়েছি প্রায় বছর দেড়। ঘরের লাইব্রেরীতে তালা দেওয়াই। বাহিরের গুলোর কার্ড কই আছে তার কোন হদিস জানা নেই তখন। সে সময় আলোর মতো এলো এই বই। কিন্তু , বই দেখে যতো টা খুশি হয়েছিলাম। তার থেকেও খারাপ সময় গেছে পড়ার এবং পরের সময় টুকু। শেখ মুজিবকে ব্যক্তিগত ভাবে আমি অসম্ভব পছন্দ করি। রাজনৈতিক কোন দলমত নেই আমার। কিন্তু ব্যক্তি মুজিবকে নিয়ে কোন প্রকার সমালোচনা একেবারেই আমি সহ্য করতে পারি না। আমি উনাকে চিনি, ভালো খারাপ সব টুকুই জানি। আমি জানি তার পরিনতির অনেকাংশে তিনি নিজে দায়ী। আর তার কাল হয়ে দাড়িয়েছিলো তার বিশ্বাস। এই বইয়ের গুরুত্বপূর্ণ একটা অংশে সেই মানুষটা আছেন। আমার প্রত্যাশার পারদ অনেক উচুতে ছিলো এমনিতেই। আর লেখকের লেখায় ইতিহাস! সে সময় এটা যে আমি কি পরিমাণ গোগ্রাসে গিলেছি তার প্রকাশ এতো দিন পর সম্ভব নয়। আমি অবাক হই, এই বই নিয়ে আমি কোথাও কিছু লিখি নি! প্রথম বারই পরপর তিনবার পড়েছি। কেন পড়েছি তার কারণ অবশ্য অনেক। ১৯৮ পৃষ্ঠার এই বই শুধু একটা বই নয়। এটা এক সময়কার কঠিন সত্য ইতিহাস। প্রকাশিত হওয়ার আগেই দেয়াল নিয়ে বিতর্ক হয় । এমন কি সেটা আদালত পর্যন্ত যায়। হাইকোর্টের নির্দেশে তা অনেকটা পরিবর্তিত হয়। আর সেই পরিবর্তিত রূপই আজকের "দেয়াল"।পরিবর্তন করার পরও এখানে থেকে যায় অনেক প্রশ্নের উত্তর। অনেক অজানা সত্য। যুদ্ধ পরবর্তি অনেকটা সময় আমাদের কাছে ধুয়াশার দেয়ালে আড়াল। লেখকের এ উপন্যাস হয়তো তার কিছুটা ভেদ করতে পেরেছে। উপন্যাসের শুরু অবন্তি নামে মেয়েকে নিয়ে। যে তার দাদু সরফরাজ খানের সঙ্গে ঢাকায় থাকে। তার বাবার কোন খোজ নেই, মা ইসাবেলা স্পেনে থাকেন। স্বামীর সাথে তার কোনরূপ সম্পর্ক নেই। দাদা সরফরাজ খান কে দেখি প্রচন্ড রক্ষনশীল, সন্দেহবাতিক। তিনি অবন্তিকে পাঠানো তার মায়ের চিঠি, অবন্তির কাছে পৌছাবার আগেই পড়ে ফেলেন। অবন্তিকে যে খুব সহজ ভাবে উপাস্থাপন করেছেন। তা কিন্তু নয়। সে বেশ চঞ্চল। অবন্তির দাদা অবন্তির গৃহশিক্ষক শফিককেও বেশ সন্দেহ করেন। কিন্তু লেখক শফিককে প্রকাশ করেছেন একেবার সহজ সরল ভীতু টাইপের চরিত্র হিসেবে। মুক্তিযুদ্ধের সময় সরফরাজ খান তার নাতনীকে নিয়ে গ্রামে চলে যান। কিন্তু গ্রামের বাড়ি দখল হওয়ায়। নিরাপত্তার অভাব থাকেন। আর তাই এক শান্তি কমিটি পীরের বাড়ি তার নাতনীকে রেখে যান। সেখানে এক পাকিস্তানি সেনাকর্মকর্তা অবন্তিকে দেখে বিয়ে করতে চায়। তখন পীর নিজের ছেলের সঙ্গে অবন্তির বিয়ে দিয়ে দেন। কিন্তু এতে মোটেও মত নেই অবন্তির। সরফরাজ খানের ছেলের বন্ধু ছিলেন মেজর জেনারেল খালেদ মোশাররফ। তিনি প্রায়ই অবন্তিদের বাড়ি আসেন। সে সুত্রে একদিন কর্নেল তাহেরও আসেন।লেখক এই গল্পের সাথে জুড়ে দেন বাংলাদেশের স্বাধীনতা পরবর্তি ইতিহাস। সেখানে প্রকাশ পায়, শান্তি রক্ষা বাহিনী আর বাকশাল গঠনের উত্তাপ। সে সময়ের বর্ণনা দিতে গিয়ে লেখেন নিজ পরিবারের কথা । শহীদ পরিবার হিসেবে তাদের জন্য যে বাসভবন দেওয়া হয়, শান্তিবাহীনির এক কর্মকর্তা তাদের সেখান থেকে উৎখাত করে রাস্তায় নামিয়ে দেয়। লেখকের মা তখন তাদের ভাইবোন নিয়ে প্রবল নিরাপত্তা হীনতায় ভুগেন। আবার তিনি যখন শিক্ষক হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে আসেন। তখন তাকে বাকশালে যোগ দেওয়ার জন্য চাপ দেওয়া হয়। সে সময় এটা নিয়েও তাকে অনেক দৌড়াদৌড়ি করতে হয়েছে । এসময়ের বর্ণনার শুরু করেছেন, মেজর ফারুকের বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পরিকল্পনা করার মধ্য দিয়ে । ফারুকের সাথে আরো জড়িত ছিলেন মেজর রশীদ, মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান ও ওসমানী।ফারুক ও মেজর রশীদ মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান ও খালেদ মোশাররফের অভ্যুত্থান, কারাগারে চার নেতা হত্যা, কর্নেল তাহেরের নেতৃত্বে সিপাহী-জনতার বিপ্লব, জিয়াউর রহমানের মুক্তিলাভ ও ক্ষমতাগ্রহণ, খালেদ মোশাররফ ও কর্নেল হুদার হত্যা এবং তাহেরের ফাঁসি। সব শেষে জিয়ার হত্যাকান্ড।এই ঘটনা গুলো একের পর এক বলা হয়েছে।সে সময় রক্ষী বাহিনীর অত্যাচার ও তাদের প্রতি সর্বসাধারণের ক্ষোভ ও ঘৃণার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। লেখক এটা ভেবে অবাক হলেন বঙ্গবন্ধু-হত্যায় মানুষের মধ্যে কোন প্রতিবাদ হলো না। অথচ হত্যায় কোথাও কোথাও আনন্দ মিছিলও হলো! লেখক বঙ্গবন্ধুকে মহামানব রূপে প্রকাশ করেন নি। হত্যাকান্ডে মুজিবকে তিনি ততটা সহানূভূতি দেখান নি যতোটা পরিবারের নারী ও শিশুদের জন্য দেখিয়েছিলেন। খন্দকার মোশতাককে এ-বইতে বলা হয়েছে ‘অসীম সাহসী মুক্তিযোদ্ধা বীর উত্তম খালেদ মোশাররফ’। কর্নেল তাহেরে’র প্রতি শ্রদ্ধা প্রকাশ পেয়েছে। কর্ণেল তাহের উপন্যাসে খালেদ মোশাররফের সাহসিকতা ও চরিত্রগুণের প্রশংসা করেন। জিয়াউর রহমানের আর্থিক সততার প্রশংসা আছে, জনগণের শ্রদ্ধা তিনি অর্জন করেছিলেন, তা বলা হয়েছে, সেই সঙ্গে তাঁর ক্ষমতালোভের কথা বলা হয়েছে।কর্নেল তাহের কর্তৃক জিয়ার মুক্তি, খালেদ মোশাররফের মৃত্যু, জিয়ার ক্ষমতায় আসা, কোর্ট মার্শালে বিদ্রোহের বিচার, ফারুক ও রশীদদের মুক্তি , তাহেরের ফাঁসী, এবং গোলাম আজমকে দেশে আনা এসব বিবেচনায় তাঁর সমালোচনা করেছেন। এসব ঐতিহাসিকতা প্রমাণের জন্যে হুমায়ূন বইপত্র এবং মামলার কাগজপত্রের শরণাপন্ন হয়েছে। বাংলাদেশের স্বাধীনতা পরবর্তী ইতিহাসের আশ্রিত উপন্যাস ‘দেয়াল’।মূল পটভূমি বঙ্গবন্ধুর নির্মম হত্যাকাণ্ড এবং পরবর্তী রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট। লেখক উপন্যাস আকারে বলে গেলেন সে সময়ের ইতিহাস। যদিও ইতিহাস, তবুও এটা উপন্যাস। কিছু কল্পনার মিশ্রন তো আছেই, তবুও ইতিহাসটাই যেন অনেক। দেয়াল লেখকের শেষ উপন্যাস। রেটিং:৫/৫ রকমারি লিংক- https://www.rokomari.com/book/62834/দেয়াল
Was this review helpful to you?
or
দেয়াল: বুক মিভিউ মাধ্যমিক পর্যায়ে আমাদের একটা উপন্যাস অবশ্যপাঠ্য ছিল। হাজার বছর ধরে। MCQ এর জ্বালায়-উপন্যাসের রস না ধরতে পারলেও লাইন বাই লাইন পড়ে আমাদের কষ বের করার জন্য যথেষ্ট ছিল। একবার একটা প্রশ্ন আসলো, মকবুল কোথায় কেটে ভাসিয়ে দিতে চেয়েছিল? ১। গাঙ্গে, ২। রাস্তায়, ৩। নদীতে, ৪। সমুদ্রে। স্বভাবতই আমি গাঙ্গে উত্তর দিয়েছিলাম। কিন্তু তা ঠিক নয়। উত্তর দেখে তাবদা যাকে বলে তাই খেয়েছিলাম। এখন হিমু পরিবহণ থেকে বলা হল-দেয়ালের উপর MCQ পরীক্ষা হবে। আমি একটা সিউর সাজেশন দিয়ে দিলাম-রাধানাথ বাবুকে কোন সাধুবাবা দেখেন? ক। কান্না-বাবা খ। অশ্রু-বাবা গ। জলবাবা ঘ। অগ্নি-বাবা। বিশেষত এই বই থেকে ইতিহাস পড়া অনুচিত। “উপন্যাস , উপন্যাস-উপন্যাস ইতিহাস নহে” ভাগ্যিস ভূমিকাতে এই লেখাটা ছিল। তবুও বলা আছে ইতিহাস মিশ্রিত উপন্যাসে ইতিহাসের সারসত্য অবিকৃত থাকবে বলে আশা করা হয়, এবং কল্পনাপ্রসূত আখ্যানেও কার্যকারণ সম্পর্কের ব্যাখ্যা প্রত্যাশিত। দেয়াল বইটি দুইবার পড়া হল। একবার বিসিএস দেবার আগে, আরেকবার বিসিএস দেবার পরে। দুইবার বই পড়ার সময় ও পরবর্তী মন মানসিকতা দুই ভাবে পরিবর্তিত হয়েছে। আগের বারে রিভিউ দিলে হয়তো সাহিত্যগুন প্রাধান্য পেত, এবারে পাচ্ছে ইতিহাস। দেয়াল বইটি পাড়ার দোকানেও পাবেন, কিন্তু মুনতাসির মামুনের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ও পরবর্তী চার খণ্ড লাইব্রেরিতেও পাবেন কিনা সন্দেহ। জাফর ইকবাল স্যারের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস স্বাধীন হয়েই শেষ। পরবর্তী পার্শ্ব চরিত্র তার আলোচনার বাইরে। তাই সঠিক ইতিহাস আমজনতার নাগালের বাইরে। তবুও ভাইবাতে যদি আপনাকে প্রশ্ন করা হয় ১৯৭৫ সালের নভেম্বর মাসের ঘটনা বিবৃত কর? ভাইবা কর্তার মনঃ পুত হতে খবর আছে। সেখানে হুমায়ুন আহমেদ এর দেয়ালের রেফারেন্স দিলে জান শেষ। আপনি হিমু হতে পারেন, এমনকি হিমু পরিবহণের সদস্য হতে পারেন। তার বই পছন্দ করতে পারেন। হুমায়ুন আহমেদ স্বভাব-বশতই তার আদুরে চরিত্রকে মোমের মত গড়ে তুলেন, আর বইয়ের শেষে তাকে আগুনে গলিয়ে দেন। দেয়ালেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। এখন বুঝে নেন দেয়ালের নায়ক কারা? যদিও অনেক বিতর্ক আছে অনেক চরিত্র তুলে ধরবার ক্ষেত্রে। আপাতত ইতিহাস বাদ। অবন্তীর চরিত্রটা মজার। অতি রূপসী, অতি জেদি মেয়েদের হাসলে নাকি গালে লাল টোল পড়ে। অবন্তীর ও মনে হয় পড়ে। ভেবেছিলাম শফিক কি মুক্তিযুদ্ধে যাবে? সেখানে মারা পড়বে? নাহ তখন ত মুক্তিযুদ্ধ ছিল না। তাহলে? ইতিহাসের সমান্তরালে চলা গল্প গুলোর কারো সাথে তুলনা চলেনা। আমরা সবাই আমাদের বিবেকের কাছে সত্য। যে আজ খুন করল তারও হয়তো বিবেক কে নানা উত্তর দিয়ে সে বুঝিয়েই যাচ্ছে। ২নং সেক্টরের উপর খালেদ মোশাররফের বইটা পড়েছি। বাংলাদেশের রক্তের ঋণ বইটা পড়লাম। ইতিহাস নাকি কাউকে ক্ষমা করেনা। ইতিহাস নাকি একসময় সত্য প্রকাশ করে। তাহলে বলতে হয় ইতিহাস দেশের জনগণকে ক্ষমা করেনি। দেয়াল পড়ে এতদূর চিন্তা করলাম। এও মন্দ কি।
Was this review helpful to you?
or
মুক্তিযুদ্ধ ও সমসাময়িক ঐতিহাসিক ঘটনা সমূহ তৎকালীন সাধারণ মানুষের প্রতিকৃয়ার সাথে মেলবন্ধন তৈরি করা হয়েছে দেয়াল উপন্যাসে। কল্পনা যোগ হওয়াটা খুবই স্বাভাবিক। সর্বোপরি এটা একটি উপন্যাস। তারপরে বিভিন্ন ঐতিহাসিক চরিত্রের সাথে লেখকের কল্পনা শক্তির মিশ্রণে ইতিহাস যে বিকৃত হয়নি তা আশ্বস্ত করে করে লেখকের সাথে চরিত্র গুলোর বেশ সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক। আর প্রেক্ষাপটও লেখকের স্বচক্ষে দেখা। তারপরও কিছু তথ্যের ত্রুটি থেকে যেতে পারে যা ঘটনার সত্যতায় কোনো প্রভাব ফেলে না। হুমায়ুন উপন্যাসের একটি সুন্দর দিক হলো তাঁর উত্তম পুরুষের লেখা। প্রাথমিক ভাবে স্বাভাবিক বর্ণনা করতে করতে লেখক মূল গল্পে প্রবেশ করেন। প্রাণবন্ত লেখনী শক্তি এবং বাস্তব অভিজ্ঞতার সংমিশ্রণে লেখক স্বাধীন ভাবে গল্পের সাথে ইতিহাসের যোগ করেছেন। যদিও বইটি সমালোচিত হয়ে ঘটনা আদালত চত্বর পর্যন্ত গড়ায়। তবে ঔপন্যাসিক কোথাও হেঁয়ালি করেননি। তিনি আপ্রাণ ভাবেই ব্যাপক তথ্যগত দলিল পত্র দেন যা গল্পের ঐতিহাসিক চরিত্র ও বাস্তব প্রেক্ষাপটের সাথে গল্পের মেলবন্ধন ও সত্যতার যৌক্তিক প্রমাণ করেন। গল্পে অবন্তি দাদা সরফরাজের সাথে থাকে। মা বিদেশিনী আর বাবা নিরুদ্দেশ। অবন্তির চরিত্রে হেঁয়ালি কিশোরী স্বভাব দেখা যায়। আবার তার ব্যতিক্রম সব যুক্তি দিয়ে রক্ষণশীল দাদার উপদেশ গুলোকে এড়িয়ে যেতে দেখা যায়। নারী রহস্যে ভরপুর অবন্তি চরিত্রটি। এদিকে খালেদ মোশাররফ সরফরাজের পুত্রের বন্ধু। যা গল্পের সাথে ঐতিহাসিক চরিত্র গুলোর যোগ করে। আবার অবন্তির মা ইসাবেলা গল্পে খুব হালকা চরিত্রে আছেন কিন্তু মেয়ের সাথে তার চিঠি যোগ থাকে। বাংলাদেশের অবস্থা যে খুব একটা ভালো না তা উল্লেখ করে চিঠিতে মেয়েকে তার কাছে চলে আসতে বলে। যুদ্ধের সময় অবন্তিকে এক রকমের অনিচ্ছুক ভাবে এক পীরের ছেলের সাথে বিয়ে দেয়া হয়। তাকে স্বামী হিসেবে মেনে না নিলেও। অবন্তি তার সাথে সৌহার্দ্যপূর্ণ আচরণ বজায় রাখেন। ঐতিহাসিক চরিত্র গুলোর মধ্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের রাষ্ট্রপতি থাকাকালীন তাঁর উপন্যাসে প্রবেশ ঘটে। দেশে নানা সমস্যা বিভিন্ন মহল থেকে তাঁর সম্পর্কে ভিন্ন ভিন্ন মতামত পাওয়া। এইসবের প্রকাশ পায় সাথে তার হত্যাকান্ড এবং হত্যাকান্ডের সাথে জড়িতদের চরিত্রও স্পষ্ট ভাবে ফুটে ওঠে গল্পে। যা সাহসী লেখকের বহিঃপ্রকাশ। আবার বঙ্গবন্ধুর প্রতি মানুষের ভালোবাসাও ফুটে ওঠে। বঙ্গবন্ধু পরিবারের সদস্যদের সম্পর্কেও অনেক কিছু উঠে। লেখক বঙ্গবন্ধুকে তথা দেশের অবিসংবাদিত নেতাকে পরিবার সহ হত্যা করাটা যেমন জাতীয় গ্লানিকর ঘটনা প্রকাশ করেছেন আবার মানুষ যে এ ঘটনায় ততটা শোকগ্রস্ত হয়নি তাও উঠে আসে। যা তৎকালীন সরকারের প্রতি মানুষের অস্বস্তির ও ঘৃণার প্রকাশ। ক্ষমতা মানুষকে বদলে দেয় তা এ উপন্যাসে বারবার দেখা গেছে। তারপর ধারাবাহিক ভাবে খন্দকার মোশতাকের ক্ষমতা লাভ, জেল খানায় জাতীয় চার নেতাকে হত্যা, খালেদ মোশাররফের আন্দোলন এবং পরাজয়, বন্দি জিয়াউর রহমানকে কর্নেল তাহের কর্তৃক মুক্তি করা। আবার সেই জিয়া কর্তৃক বন্ধু তাহেরে সহ অসংখ্য জাসদ কর্মীর হত্যা এবং শেষে বিশ্বস্ত সহচরদের দ্বারা রাষ্ট্রপতি জিয়ার হত্যা হয় সবই ইতিহাসের অংশ। বাংলাদেশের স্বাধীনতা লাভ এবং রক্ষি বাহিনীর অত্যাচার লেখকের নিজের অভিজ্ঞতা। পরিবর্তিতে গল্পের ধারাবাহিকতা এবং ইতিহাসের ধারাবাহিক ঘটনার মিশ্রণও লেখক খুব যত্ন সহকারে এবং সতর্কতার সাথে করেছেন। একদিকে রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ক্ষমতা ললুসা দেখা যায় আবার পক্ষান্তরে তার সততা এবং কঠোর রাষ্ট্র নায়কের ব্যক্তিত্ব প্রকাশ পায়। ব্যাক্তিগত ভাবে লেখক কোনো বিদ্বেষ লেখায় প্রকাশ পায়নি। সর্বোপরি "দেয়াল" একটি ঐতিহাসিক রাজনৈতিক উপন্যাস। যা পরিবর্তি প্রজন্মের কাছে ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে থাকবে।
Was this review helpful to you?
or
humayun sir ar ses book.onek bar poreci onek vlo legece.... sobar e akbar pora ucit..
Was this review helpful to you?
or
বই আকারে প্রকাশ হওয়ার আগেই "দেয়াল" নিয়ে অনেক বিতর্কের সৃষ্টি হয়। এমনকি আদালত পর্যন্ত যায় এই বইয়ের পাণ্ডুলিপি। হাইকোর্টের পরামর্শ অনুযায়ী এই বইয়ের অনেক কিছুই পরিবর্তন করা হয়। আমরা যে বইটি হাতে পেয়েছি সেটা আসলে পরিবর্তিত রূপ। তারপরেও এই বইয়ে যেসব তথ্য আছে তা আপনার চোখ খুলে দিবে। যাদের আপনি চিনেন তাদেরকে নতুনভাবে চিনতে পারবেন। আমার ধারনা, হুমায়ূন আহমেদ বেচে থাকলে আরও নানা রকম রাজনৈতিক ঝামেলায় পরতেন। রিভিউঃ এই বইয়ে দুটা অধ্যায় সমান্তরালভাবে চলেছে। প্রথম অধ্যায়ে অবন্তির কথা বলা হয়েছে।দ্বিতীয় অধ্যায়ে বঙ্গবন্ধুকে উৎখাত করার কথা বলা হয়েছে।আমিও দুটি অধ্যায় আলাদা ভাবে লিখলাম। প্রথম অধ্যায়ঃ অবন্তি অবন্তি তার দাদা সরফরাজ খানের সাথে থাকে। ওর মায়ের নাম ইসাবেলা। স্পেনিশ। অবন্তির বাবার সাথে ছাড়াছাড়ি হওয়ার পর তিনি স্পেনেই থাকেন। অবন্তির বাবা অবন্তিকে তিন বছর বয়সে দাদার কাছে রেখে স্পেনে চলে যান। তারপর তিনি আর ফেরেননি। সরফরাজ খান পাকিস্তান পুলিশের একজন রিটায়ার্ড এসপি।তিনি প্রচন্ড সন্দেহবাতিক। অবন্তির গৃহশিক্ষক শফিক কে তিনি সন্দেহের চোখে দেখেন। তার ধারনা শফিক তার আদরের নাতনীকে পটানোর তালে আছে। অবন্তির জন্মদিনে শফিক একটা বই গিফট করেছিল অবন্তিকে। বিভূতিভূষণের ইছামতি। সরফরাজ খানের ধারনা এই বইয়ের মধ্যে কোনও চিঠিপত্র আছে। অথবা বইয়ের কাহিনী হয়তোবা বড়লোকের মেয়ের সাথে গৃহশিক্ষকের প্রেম জাতীয়। তিনি সেটা বোঝার জন্য বইটি পড়ে দেখছেন। শফিক জিগাতলায় একা থাকে। অবন্তিকে পড়ানো ছাড়া সে আরেকটা কাজ করে, সেটা হলো রাধানাথ বাবুকে তথ্য সংগ্রহ করে দেয়া। তিনি একটা বই লিখছেন সে জন্যে বিভিন্ন তথ্য দরকার হয়। শফিক সেসব তথ্য জোগাড় করে দেয়। তথ্যপ্রতি ২০ টাকা করে পায়। সফিকের আরেকটা ভালো গুন হলো সে খুব ভালো পেন্সিল স্কেচ করতে পারে। অবন্তির একটা পেন্সিল স্কেচ সে করে দিয়েছে। ছবিটা এতটাই জীবন্ত হয়েছে যে সরফরাজ খানের ধারনা এতো ভালো পেন্সিল স্কেচ যে করতে পারে সে সাক্ষাৎ শয়তান। উল্লেখ্য যে শফিক নিজেকে ভিতু বলে পরিচয় দিলেও, বঙ্গবন্ধুর হত্যার প্রতিবাদে সে রাস্তার মোড়ে দাঁড়িয়ে স্লোগান দেয় "মুজিব হত্যার বিচার চাই"। অবন্তির মা ইসাবেলা তাকে প্রতি বছর দুটা চিঠি পাঠান। একটা তার জন্মদিনে, আরেকটা ক্রিসমাসে। জন্মদিনের চিঠির সাথে উপহার থাকে। ওর ১৬ তম জন্মদিনে ওকে পাঠিয়েছে ১৬টা পারফিউমের শিশি। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে সরফরাজ খান অবন্তিকে নিয়ে তার গ্রামের বাড়ি চলে যান।কিছুদিন পর তার বাড়ি পাকিস্তানি মিলিটারিরা দখল করে নেয়। তিনি তখন অবন্তিকে খতিবনগরের পিরসাহেবের হুজরাখানায় রেখে যান। পিরসাহেবের হুজরাখানায় জ্বিনদের নিয়ে মিলাদ পড়ানো হয়। এই কথা শুনে পাকিস্তানি ক্যাপ্টেন সামস উনার হুজরাখানায় আসেন। তিনি জ্বিনদের নিয়ে মিলাদ পড়ানোর বেপারে অভিভূত হন। তার পরামর্শে পিরসাহেব শান্তি কমিটির চেয়ারম্যান হয়ে যান। ক্যাপ্টেন সামস অবন্তিকে দেখে তাকে বিয়ে করার কথা পিরসাহেব কে জানান। তখন তিনি বলে দেন যে তার ছেলে জাহাঙ্গীর এর সাথে অবন্তির বিয়ের কথা হয়ে আছে। একপ্রকার জোড় করে জাহাঙ্গীর এর সাথে অবন্তির বিয়ে দেয়া হয়। অবন্তি অবশ্য পরদিন ঢাকায় চলে আসে। জাহাঙ্গীর নিজেই তাকে ঢাকায় দিয়ে যায়। পিরসাহেবের মৃত্যুর পর জাহাঙ্গীর গদিনশীন পির হয়। বিয়ে মেনে না নিলেও অবন্তি মাঝে মধ্যে জাহাঙ্গীর এর সাথে যোগাযোগ করে। দ্বিতীয় অধ্যায়ঃ বঙ্গবন্ধুকে উৎখাত অবন্তির বাবার বন্ধুদের মধ্যে একজন হলেন মেজর জেনারেল খালেদ মোশারফ। উনার সাথে মাঝে মধ্যে কর্নেল তাহেরও এবাড়িতে আসেন। কর্নেল তাহেরকে তো সবাই চিনেন। মেজর জেনারেল খালেদ মোশারফ কে চিনেন তো? মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি ২ নং সেক্টরের কমান্ডার ছিলেন। রুমী,আজাদ,বদিদের ক্র্যাক প্লাটুনের নাম তো শুনেছেন। কিভাবে ক্র্যাক প্লাটুন গঠিত হয় সেটা জানেন? সেক্টর কমান্ডার খালেদ মোশাররফের নির্দেশনা ছিলো হোটেল ইন্টার কন্টিনেন্টালে বিদেশী সাংবাদিক ও অতিথিরা থাকাকালীন ঢাকা শহরের পরিস্থিতি যে শান্ত নয় এবং এখানে যুদ্ধ চলছে তা বোঝানোর জন্য শহরের আশে-পাশে কিছু গ্রেনেড ও গুলি ছুড়তে হবে; কিন্তু দু:সাহসী এই তরুণেরা ঢাকায় এসে ৯ জুন তারিখে সরাসরি হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে গ্রেনেড হামলা করেন এবং বেশ কয়েকজনকে হত্যা করে যা ছিলো অত্যন্ত ঝুকিপূর্ণ ও অচিন্তনীয় কাজ। সন্ধ্যায় বিবিসির খবর থেকে খালেদ মোশাররফ এই অপারেশনের কথা জানতে পেরে বলেন, 'দিজ অল আর ক্র্যাক পিপল! বললাম, ঢাকার বাইরে বিস্ফোরণ ঘটাতে আর ওরা হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালেই বিস্ফোরণ ঘটিয়ে এসেছে।' তিনিই প্রথম এই দলটিকে "ক্র্যাক" আখ্যা দেন; যা থেকে পরবর্তীতে এই প্লাটুনটি "ক্র্যাক প্লাটুন" নামে পরিচিত হয়। তিনি কে-ফোর্সেরও কমান্ডার ছিলেন। মেজর রশীদ, ফারুক, লে. কর্নেল ওসমানি এইদিকে বঙ্গবন্ধুকে উৎখাত করার পরিকল্পনা করছেন। মিটিং বসেছে মেজর জিয়াউর রহমানের বাসায়। মিটিং এর এই খবর অবশ্য লিক হয়ে ভারতের "র" (RAW) এর কাছে চলে যায়। "র" এর রিসার্চ ও অ্যানালাইসিস উইং এর পরিচালক "কাও" ছদ্মবেশে বঙ্গবন্ধুর ধানমন্ডির ৩২ নাম্বার বাড়িতে আসেন। তিনি মেজর ফারুক, রশীদদের ষড়যন্ত্রের কথা বঙ্গবন্ধুকে বলেন। কিন্তু বঙ্গবন্ধু তার কথায় কান দেননি। তিনি বলেছিলেন তারা আমার সন্তান্সম, তারা আমার ক্ষতি করতে পারেনা। কাও বলেছিলেন, স্যার আপনি ভুল করছেন। সেই ভুলের মাশুল কি হয়েছিল তা আমরা সকলেই জানি। দিনটি ছিল শুক্রবার। ১৫ই আগস্ট ১৯৭৫। ভোরবেলা বাংলাদেশ বেতার থেকে মেজর ডালিম ঘোষনা করেছিলেন " আমি মেজর ডালিম বলছি, স্বৈরাচারী মুজিব সরকারকে এক সেনা অভ্যুত্থান এর মাধ্যমে উৎখাত করা হয়েছে। সারাদেশে মার্শাল ল জারি করা হল। এরপর খন্দকার মোশতাকের ক্ষমতালাভ,খালেদ মোশারফের অভ্যুত্থান, কারাগারে চার নেতা হত্যা,কর্নেল তাহেরের নেতৃত্বে সিপাহি জনতার বিপ্লব, জিয়াউর রহমানের মুক্তিলাভ ও ক্ষমতাগ্রহন। এরপর খালেদ মোশারফ ও কর্নেল হুদার হত্যা এবং তাহেরকে ফাসিতে ঝুলানোর মাধ্যমে দ্বিতীয় অধ্যায়ের সমাপ্তি। বই শেষ হয়েছে জিয়ার হত্যাকান্ডে। ব্যাক্তিগত মতামতঃ দেয়াল মূলত ইতিহাস আশ্রিত উপন্যাস।মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন ও যুদ্ধ পরবর্তি সময়ের কথা বলা হয়েছে এই বইয়ে। এই বইয়ে দেয়া প্রতিটা তথ্যের সত্যতা যাচাইয়ের জন্য বইয়ের শেষে সূত্র দেয়া আছে। আমার অসম্ভব পছন্দের একটা বই। ব্যাক্তিগতভাবে আমার অত্যন্ত পছন্দের বই "দেয়াল"। আমার ইচ্ছা আমার ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে আমি এই বই উপহার দিব, যেন তারা জানতে পারে সঠিক ইতিহাস কি ছিল। পছন্দের উক্তিঃ গল্প-উপন্যাস হল অল্পবয়সী মেয়েদের মাথা খারাপের মন্ত্র।
Was this review helpful to you?
or
এত সুন্দর ভাবে ইতিহাসকে উপন্যাসে তুলে ধরা যায়, বইটা না পড়লে জানতাম না...। মিস করবো হুমায়ুন আহমেদ এর নতুন বই কে।
Was this review helpful to you?
or
এই বইয়ে দুটা অধ্যায় সমান্তরালভাবে চলেছে। প্রথম অধ্যায়ে অবন্তির কথা বলা হয়েছে।দ্বিতীয় অধ্যায়ে বঙ্গবন্ধুকে উৎখাত করার কথা বলা হয়েছে।আমিও দুটি অধ্যায় আলাদা ভাবে লিখলাম। প্রথম অধ্যায়ঃ অবন্তি অবন্তি তার দাদা সরফরাজ খানের সাথে থাকে। ওর মায়ের নাম ইসাবেলা। স্পেনিশ। অবন্তির বাবার সাথে ছাড়াছাড়ি হওয়ার পর তিনি স্পেনেই থাকেন। অবন্তির বাবা অবন্তিকে তিন বছর বয়সে দাদার কাছে রেখে স্পেনে চলে যান। তারপর তিনি আর ফেরেননি। সরফরাজ খান পাকিস্তান পুলিশের একজন রিটায়ার্ড এসপি।তিনি প্রচন্ড সন্দেহবাতিক। অবন্তির গৃহশিক্ষক শফিক কে তিনি সন্দেহের চোখে দেখেন। তার ধারনা শফিক তার আদরের নাতনীকে পটানোর তালে আছে। অবন্তির জন্মদিনে শফিক একটা বই গিফট করেছিল অবন্তিকে। বিভূতিভূষণের ইছামতি। সরফরাজ খানের ধারনা এই বইয়ের মধ্যে কোনও চিঠিপত্র আছে। অথবা বইয়ের কাহিনী হয়তোবা বড়লোকের মেয়ের সাথে গৃহশিক্ষকের প্রেম জাতীয়। তিনি সেটা বোঝার জন্য বইটি পড়ে দেখছেন। শফিক জিগাতলায় একা থাকে। অবন্তিকে পড়ানো ছাড়া সে আরেকটা কাজ করে, সেটা হলো রাধানাথ বাবুকে তথ্য সংগ্রহ করে দেয়া। তিনি একটা বই লিখছেন সে জন্যে বিভিন্ন তথ্য দরকার হয়। শফিক সেসব তথ্য জোগাড় করে দেয়। তথ্যপ্রতি ২০ টাকা করে পায়। সফিকের আরেকটা ভালো গুন হলো সে খুব ভালো পেন্সিল স্কেচ করতে পারে। অবন্তির একটা পেন্সিল স্কেচ সে করে দিয়েছে। ছবিটা এতটাই জীবন্ত হয়েছে যে সরফরাজ খানের ধারনা এতো ভালো পেন্সিল স্কেচ যে করতে পারে সে সাক্ষাৎ শয়তান। উল্লেখ্য যে শফিক নিজেকে ভিতু বলে পরিচয় দিলেও, বঙ্গবন্ধুর হত্যার প্রতিবাদে সে রাস্তার মোড়ে দাঁড়িয়ে স্লোগান দেয় "মুজিব হত্যার বিচার চাই"। অবন্তির মা ইসাবেলা তাকে প্রতি বছর দুটা চিঠি পাঠান। একটা তার জন্মদিনে, আরেকটা ক্রিসমাসে। জন্মদিনের চিঠির সাথে উপহার থাকে। ওর ১৬ তম জন্মদিনে ওকে পাঠিয়েছে ১৬টা পারফিউমের শিশি। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে সরফরাজ খান অবন্তিকে নিয়ে তার গ্রামের বাড়ি চলে যান।কিছুদিন পর তার বাড়ি পাকিস্তানি মিলিটারিরা দখল করে নেয়। তিনি তখন অবন্তিকে খতিবনগরের পিরসাহেবের হুজরাখানায় রেখে যান। পিরসাহেবের হুজরাখানায় জ্বিনদের নিয়ে মিলাদ পড়ানো হয়। এই কথা শুনে পাকিস্তানি ক্যাপ্টেন সামস উনার হুজরাখানায় আসেন। তিনি জ্বিনদের নিয়ে মিলাদ পড়ানোর বেপারে অভিভূত হন। তার পরামর্শে পিরসাহেব শান্তি কমিটির চেয়ারম্যান হয়ে যান। ক্যাপ্টেন সামস অবন্তিকে দেখে তাকে বিয়ে করার কথা পিরসাহেব কে জানান। তখন তিনি বলে দেন যে তার ছেলে জাহাঙ্গীর এর সাথে অবন্তির বিয়ের কথা হয়ে আছে। একপ্রকার জোড় করে জাহাঙ্গীর এর সাথে অবন্তির বিয়ে দেয়া হয়। অবন্তি অবশ্য পরদিন ঢাকায় চলে আসে। জাহাঙ্গীর নিজেই তাকে ঢাকায় দিয়ে যায়। পিরসাহেবের মৃত্যুর পর জাহাঙ্গীর গদিনশীন পির হয়। বিয়ে মেনে না নিলেও অবন্তি মাঝে মধ্যে জাহাঙ্গীর এর সাথে যোগাযোগ করে। দ্বিতীয় অধ্যায়ঃ বঙ্গবন্ধুকে উৎখাত অবন্তির বাবার বন্ধুদের মধ্যে একজন হলেন মেজর জেনারেল খালেদ মোশারফ। উনার সাথে মাঝে মধ্যে কর্নেল তাহেরও এবাড়িতে আসেন। কর্নেল তাহেরকে তো সবাই চিনেন। মেজর জেনারেল খালেদ মোশারফ কে চিনেন তো? মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি ২ নং সেক্টরের কমান্ডার ছিলেন। রুমী,আজাদ,বদিদের ক্র্যাক প্লাটুনের নাম তো শুনেছেন। কিভাবে ক্র্যাক প্লাটুন গঠিত হয় সেটা জানেন? সেক্টর কমান্ডার খালেদ মোশাররফের নির্দেশনা ছিলো হোটেল ইন্টার কন্টিনেন্টালে বিদেশী সাংবাদিক ও অতিথিরা থাকাকালীন ঢাকা শহরের পরিস্থিতি যে শান্ত নয় এবং এখানে যুদ্ধ চলছে তা বোঝানোর জন্য শহরের আশে-পাশে কিছু গ্রেনেড ও গুলি ছুড়তে হবে; কিন্তু দু:সাহসী এই তরুণেরা ঢাকায় এসে ৯ জুন তারিখে সরাসরি হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্ টালে গ্রেনেড হামলা করেন এবং বেশ কয়েকজনকে হত্যা করে যা ছিলো অত্যন্ত ঝুকিপূর্ণ ও অচিন্তনীয় কাজ। সন্ধ্যায় বিবিসির খবর থেকে খালেদ মোশাররফ এই অপারেশনের কথা জানতে পেরে বলেন, 'দিজ অল আর ক্র্যাক পিপল! বললাম, ঢাকার বাইরে বিস্ফোরণ ঘটাতে আর ওরা হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালেই বিস্ফোরণ ঘটিয়ে এসেছে।' তিনিই প্রথম এই দলটিকে "ক্র্যাক" আখ্যা দেন; যা থেকে পরবর্তীতে এই প্লাটুনটি "ক্র্যাক প্লাটুন" নামে পরিচিত হয়। তিনি কে-ফোর্সেরও কমান্ডার ছিলেন। মেজর রশীদ, ফারুক, লে. কর্নেল ওসমানি এইদিকে বঙ্গবন্ধুকে উৎখাত করার পরিকল্পনা করছেন। মিটিং বসেছে মেজর জিয়াউর রহমানের বাসায়। মিটিং এর এই খবর অবশ্য লিক হয়ে ভারতের "র" (RAW) এর কাছে চলে যায়। "র" এর রিসার্চ ও অ্যানালাইসিস উইং এর পরিচালক "কাও" ছদ্মবেশে বঙ্গবন্ধুর ধানমন্ডির ৩২ নাম্বার বাড়িতে আসেন। তিনি মেজর ফারুক, রশীদদের ষড়যন্ত্রের কথা বঙ্গবন্ধুকে বলেন। কিন্তু বঙ্গবন্ধু তার কথায় কান দেননি। তিনি বলেছিলেন তারা আমার সন্তান্সম, তারা আমার ক্ষতি করতে পারেনা। কাও বলেছিলেন, স্যার আপনি ভুল করছেন। সেই ভুলের মাশুল কি হয়েছিল তা আমরা সকলেই জানি। দিনটি ছিল শুক্রবার। ১৫ই আগস্ট ১৯৭৫। ভোরবেলা বাংলাদেশ বেতার থেকে মেজর ডালিম ঘোষনা করেছিলেন " আমি মেজর ডালিম বলছি, স্বৈরাচারী মুজিব সরকারকে এক সেনা অভ্যুত্থান এর মাধ্যমে উৎখাত করা হয়েছে। সারাদেশে মার্শাল ল জারি করা হল। এরপর খন্দকার মোশতাকের ক্ষমতালাভ,খালেদ মোশারফের অভ্যুত্থান, কারাগারে চার নেতা হত্যা,কর্নেল তাহেরের নেতৃত্বে সিপাহি জনতার বিপ্লব, জিয়াউর রহমানের মুক্তিলাভ ও ক্ষমতাগ্রহন। এরপর খালেদ মোশারফ ও কর্নেল হুদার হত্যা এবং তাহেরকে ফাসিতে ঝুলানোর মাধ্যমে দ্বিতীয় অধ্যায়ের সমাপ্তি। বই শেষ হয়েছে জিয়ার হত্যাকান্ডে। ব্যাক্তিগত মতামতঃ দেয়াল মূলত ইতিহাস আশ্রিত উপন্যাস।মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন ও যুদ্ধ পরবর্তি সময়ের কথা বলা হয়েছে এই বইয়ে। এই বইয়ে দেয়া প্রতিটা তথ্যের সত্যতা যাচাইয়ের জন্য বইয়ের শেষে সূত্র দেয়া আছে। আমার অসম্ভব পছন্দের একটা বই। ব্যাক্তিগতভাবে আমার অত্যন্ত পছন্দের বই "দেয়াল"। আমার ইচ্ছা আমার ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে আমি এই বই উপহার দিব, যেন তারা জানতে পারে সঠিক ইতিহাস কি ছিল। পছন্দের উক্তিঃ গল্প-উপন্যাস হল অল্পবয়সী মেয়েদের মাথা খারাপের মন্ত্র। রিভিউ লেখার অনুভূতিঃ আমি যে কয়টা রিভিউ এই পর্যন্ত লিখেছি, তার মধ্যে সব থেকে ভয় পেয়েছি এই রিভিউ লিখতে গিয়ে।লেখক যেভাবে সুন্দর একটা গল্পের মাধ্যমে ইতিহাস বলেছেন, তা দুচার কথায় লেখা মানে সাহসিকতা দেখানো। আমি সাহস করে কি লিখতে কি লিখেছি জানিনা। সে বিচার আপনাদের
Was this review helpful to you?
or
লেখক হুমায়ুন আহমেদের লেখা সর্বশেষ উপন্যাস 'দেয়াল' যা তার মৃত্যুর বছরখানেক পর গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হয়। গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হবার পূর্বেই এই উপন্যাস নিয়ে বিতর্ক দেখা দেয় এবং যা আদালত পর্যন্ত গড়ায়। এই উপন্যাসের পূর্ব সংস্করণে এমদেশটির প্রতিষ্ঠাতা রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার ঘটনার বিবরণে তথ্যগত ভুল রয়েছে, এমন অভিযোগ রাষ্ট্রপক্ষের এটর্নি জেনারেল আদালতের নজরে এনেছিলেন। ‘বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডে খন্দকার মোশতাক আহমেদ জড়িত ছিলেন বলে মামলার সাক্ষ্য প্রমাণে উঠে এসেছে। কিন্তু মোশতাক আহমেদ কিছুই জানতেন না, এমনটাই তুলে ধরা হয়েছে ঐ উপন্যাসে।’ মাহবুবে আলম বলেন সে কারণেই তিনি বিষয়টি আদালতের নজরে এনেছেন। হাইকোর্টের আদেশ অনুযায়ী লেখক পরবর্তীতে উপন্যাসটির প্রথম প্রকাশিত রূপের পরিবর্তন করেন। এই উপন্যাসে মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী বাংলাদেশের প্রধানতম রাজনৈতিক চরিত্র এবং ঘটনাবলি লেখক নিজের মত করে বর্ণনা করেছেন। ২০১১ সালের মাঝামাঝিতে দেয়াল রচনা শুরু করেছিলেন হুমায়ুন আহমেদ। সে-সময় উপন্যাসের পাঁচটি পর্ব ধারাবাহিকভাবে অন্যদিন পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। এরপর অনেকদিনের বিরতি শেষে যুক্তরাষ্ট্রে ক্যান্সারের চিকিৎসা চলাকালীন আবার লেখা শুরু করেন। যদিও শেষ পর্যন্ত উপন্যাসটির চূড়ান্ত রূপ দেয়ার সুযোগ পান নি। উপন্যাসটি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের পটভুমিতে রচিত। এখানে তিনি বিভিন্ন চরিত্রের মাধ্যমে সমসাময়িকভাবে নিজেকেও উপস্থাপন করেছেন। এই উপন্যাসের কয়েকটা চরিত্র এর মধ্যে হল: আবন্তি, চা বিক্রেতা কাদের বাঙ্গালী,শেখ মুজিবর রহমান, সৈয়দ নজরুল ইসলাম, জিয়াউর রহমান, কর্নেল তাহের ইত্যাদি। বঙ্গবন্ধু পরিবারের হত্যাকান্ড, জিয়ার ক্ষমতা দখল ও সেনা অভ্যুত্থান কে ঘিরে 'দেয়াল' উপন্যাসের কাহিনী আবর্তিত হয়েছে। বইটিতে দুটি আখ্যান সমান্তরালে চলেছে। প্রথমটি অবন্তি নামে এক চপলমতি ও প্রচলবিরোধী মেয়ের কাহিনি। দ্বিতীয় আখ্যানটি সূচিত হয় মেজর ফারুকের বঙ্গবন্ধু হত্যার পরিকল্পনা নিয়ে। শুরু থেকেই উপন্যাসটিকে ঘিরে বহু আলোচনা সমালোচনা হয়েছে। আনিসুজ্জামান 'দেয়াল' সম্পর্কে লিখেছেন, "বঙ্কিমচন্দ্র যে বলেছিলেন, ‘উপন্যাস উপন্যাস-উপন্যাস ইতিহাস নহে’, সে কথা যথার্থ। তবে ইতিহাসাশ্রিত উপন্যাসে ইতিহাসের সারসত্য অবিকৃত থাকবে বলে আশা করা হয় এবং কল্পনাপ্রসূত আখ্যানেও কার্যকারণ সম্পর্কের ব্যাখ্যা প্রত্যাশিত।"
Was this review helpful to you?
or
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী সময়ের এক ঔপন্যাসিক দলিল। অনেক নিগূড় সত্য, বাস্তবতা, আফসোস ফুটে ঊঠেছে স্যারের লেখনীতে। ভবিষ্যতে কেউ ১৯৭১ সালের পরের দিনকাল সমর্কে জানতে চাইলে বইটি পড়তে পারবে।
Was this review helpful to you?
or
oshomvhob shundor akta boi..amra onek kichu na jenei comment kori ,support kori..boi pipashu der jonno chomotkar akta boi.onek kichu jenechi boita pore..ja jana asholei dorkar chilo.
Was this review helpful to you?
or
আমি বইপোকা না, কিনবা বই পড়তে অমন পছন্দও করিনা। কিন্তু হুমায়ন আহম্মেদের লেখাগুলো মনে হয় আমাকে দিন দিন বই পড়ার জন্য নতুন আগ্রহ তৈরি করছে। এটা আমার জীবনের ২য় উপন্যাস। সত্যি, ইতিহাসকে তিনি এত সুন্দর রস-কষের সাথে মিলিয়ে তৈরি করেছেন, মনেই হয় না যে আমি ইতিহাস পড়ছি। ইতিহাসও এত আগ্রহ নিয়ে পরা যায় তা ভাবা মুশকিল। প্রতিটা অংশ পাঠকের মনে একটা এক্সাইটমেন্ট তৈরি করে পরের অংশটা পড়ার জন্য। যায় হোক এবার আসি বইয়ের লেখা নিয়ে। বইয়ের যে একটা বিষয় আমার খারাপ লেগেছে সেটি হলো, তিনি হয়তো বইটা লেখার সময় নিরপেক্ষ হয়ে লেখেনি। ইতিহাস লিখতে গেলে অবশ্যই কোনো দল বা গোষ্ঠীর প্রতি ব্যক্তিগত সমর্থন থাকা উচিত না। কিন্তু এখানে হয়তো তিনি অনেকটা বঙ্গবন্ধুকে হাইলাইট করার চেষ্টা করেছে, কিনবা তার প্রতি লেখকের ব্যক্তিগত সমর্থন ছিল। ১৯৭২-১৯৭৫ সালে মুজিবুর রহমানের দেশ শাসন তিনি নিজ চোখে দেখেও তার প্রতি কোনো কোনো ক্ষোভ প্রকাশ করেননি। তার শাসন আমলে তারই নেতারা হুমায়ন আহমেদ এর বাড়ি দখল করে রেখেছিল, অনেক অভাব অনাটনে তার দিন কাটছিল, তারপরও সরকারের প্রতি তার কোনো ক্ষোভ ছিলনা। এমনকি মুজিবের অনেক কুকীর্তির কথাও বইয়ে উল্লেখ করা হয়, এরপরও মুজিবের মৃত্যুতে কেন কেউ প্রতিবাদ করলো না সেটা নিয়ে লেখক আফসোস করেন। তবে এছাড়া বইয়ের অন্যান্য লেখাগুলো চরম ভাবে ভালো লাগার মতো। তবে অবনতি আর শফিকের ভবিষ্যত নিয়ে আমার খুব জানতে ইচ্ছে করছিল। হুমায়ন আহমেদ যদি এটুকু লিখে যেতেন তাহলে লেখাগুলো আর পূর্ণতা পেত। তবে কিছু জিনিষ অজানা থাকায় ভালো। সবশেষে এটা আমর জীবনে বাংলাদেশের ইতিহাস নিয়ে পরা অন্যতম একটা পছন্দের বই হয়ে থাকবে।❤️
Was this review helpful to you?
or
বইটি পড়ে অনেক কিছু নতুন ভাবে জানলাম। আমার পড়া সেরা রাজনৈতিক উপন্যাস।
Was this review helpful to you?
or
এক কথায় হুমায়ূন আহমেদ এর ঐতিহাসিক ও শেষ উপন্যাস অনেক তৃপ্তি নিয়ে পড়েছি, অনেক অজানা ইতিহাস জানা হয়েছে। ধন্যবাদ হুমায়ূন আহমেদ স্যার ?।
Was this review helpful to you?
or
এই টা আমার পরা সেরা বই গুলোর মধ্যে একটা। আমি হুমায়ুন স্যার এর একজন বড় ভক্ত । 'দেয়াল' নামক বই টি পরে আমি অনেক কিছু শিখতে পেরেছি এবং এই বইটি পরে আমার অনেক ভালো লেগেছে ।
Was this review helpful to you?
or
এই বই এটাও প্রমাণ করে যে, হুমায়ূন আহমেদ কোন লেবেলের পরিশ্রমী মানুষ ছিলেন! ❤️
Was this review helpful to you?
or
বইটা আমার খুবই ভালো লেগেছে। হুমায়ূন আহমেদ এর বই মানেই অন্যকিছু...❤️
Was this review helpful to you?
or
হুমায়ুন আহমেদের শেষ উপন্যাস এর নাম 'দেয়াল'। এই বইয়ের মলাট দেখেই কিছু টা ধারণ করা যতে পারে যে, এইটা মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক উপন্যাস। কিন্তু ভিতরে কি লেখা আছে তা না পরে আপনি ধারণাও করতে পারবেন না যে, এই বইটা রোমান্টিক উপন্যাসের মধ্যেও ফেলা যায়। এই উপন্যাসে শুধু রোমান্টিক বা মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে আলোচনা হয় নি। এই বইয়ে আমাদের কুসংস্কার নিয়ে সুন্দর কিছু যুক্তি দিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। এই বই মুক্তিযুদ্ধের নির্যাতিত, ধর্ষিতা নারীদের কষ্টের কথা বলে। এই বই বঙ্গবন্ধুর সেই নির্মম হত্যা কান্ডের কথা বলে। এই বই অকৃতজ্ঞ বাঙালিদের কথা বলে। এই বই সেই কুসংস্কারাচ্ছন্ন বাঙালীদের কথা বলে। কিন্তু দুঃখিত, এই বইটা হুমায়ুন আহমেদ শেষ করে যেতে পারেন নি। এই বইটা অসমাপ্ত হলেও একটা সার্থক উপন্যাসের চেয়ে কম না। এই বইটা যদি হুমায়ুন আহমেদ শেষ করে যেতে পারতেন, তাহলে তা ওনার কয়েকটা BEST বইয়ের লিস্ট এ নাম লিখাতো?.
Was this review helpful to you?
or
Eti tar shesh uponnash.muktijuddho nie leka sundor ekti uponnash .ar maje maje obonti tar ma tar teacher tar dada eshob choritro die mojar ekti poristiti toiri kora hoeche ja sobar valo lagbe.suru hoeche obonti ke die tar ma thake bideshe.tar ma khub chonchol prokitir ja tar lika chitir maddome jana jai.e uponnase muktijdder kicu tottho somporkeo jana jai ja amder ojana chilo .erpor kahini krome obontir bie hoi ek hujurer cheler sathe erpor mach nie kahini .shob milie uponnash ti jemon sikkonio temni moja r o asha kori sobar e valo lagbe .
Was this review helpful to you?
or
মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও সামাজিক প্রেক্ষাপট ভিত্তিক উপন্যাস। এটি তাঁর রচিত সর্বশেষ উপন্যাস যা তার মৃত্যুর ১ বছর পর গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হয়। গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হবার পূর্বেই এই উপন্যাস নিয়ে বিতর্ক দেখা দেয় এবং তা আদালত পর্যন্তও গড়ায়। হাইকোর্টের পরামর্শানুযায়ী লেখক উপন্যাসটির প্রথম প্রকাশিত রূপের পরিবর্তন সাধন করেন। এই উপন্যাসে মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী তৎকালীন বাংলাদেশের প্রধানতম রাজনৈতিক চরিত্র এবং ঘটনাবলি লেখক নিজ ভাষা ও কল্পনাপ্রসূত ঢঙে চিত্রায়িত করেছেন।
Was this review helpful to you?
or
হুমায়ূন আহমেদের শেষ উপন্যাস এটি। উপন্যাসটিতে নানা ধরনের চমক আছে যা আপনি পড়লে বুঝতে পারবেন। গল্পটি শুরু হয় প্রথমে অবন্তীকে নিয়ে। অবন্তীর মা থাকে বিদেশে বাবা নিরুদ্দেশ। সেই অবন্তীকে তার দাদা সরফরাজ নিজের মেয়ের মতো আগলে রেখেছেন। অবন্তীর প্রাইভেট টিউটর শফিক। প্রথমে তাকে দেখে মনে হতে পারে সে ভীতু কিন্তু পরবর্তীতে সেই মুজিব হত্যার একজন সাহসী যুবকের মত মুজিব হত্যার বিচার চেয়ে রাস্তায় নামে। অন্যদিকে অবন্তীকে যুদ্ধের সময় তার দাদা একটা হুজুর খানায় রেখে এসেছিল। সেখানকার হুজুর তার মেয়েকে বাঁচানোর জন্য তার ছেলে জাহাঙ্গিরের সাথে বিবাহ দিয়ে দেয়। কিন্তু অবন্তী সে বিয়ে মেনে নেয়নি। সে একজন সাহসী যুবতীর মতো বিয়েটিকে প্রত্যাখ্যান করে। এই কাহিনীটি তাদের মতো করে এগিয়ে গিয়েছে। অন্যদিকে যুদ্ধপরবর্তী বাংলাদেশ মুজিব হত্যার মতো জঘন্য তম যে কাজগুলি হয়েছে তার পিছনে থাকা ব্যক্তিদের নিয়ে লেখকের নিজের মতামত প্রকাশ করেছেন। একই সাথে বিভিন্ন বই-পুস্তকে হত্যা সম্পর্কে নানা ধরনের মতামত নিজের ভাষায় ব্যক্ত করেছেন। অর্থাৎ বইটি পড়লে স্বাধীনতা পরবর্তী বাংলাদেশের রাজনীতি সম্পর্কে কিছুটা ধারনা পাবেন। বইটি পড়ার মতো এবং সংগ্রহে রাখার মত একটি বই। আশা করি পড়বেন ,ভালো লাগবে।
Was this review helpful to you?
or
এক নিমিষে শেষ করার মতো একটি বই। হুমায়ূন আহমেদ এর অন্যান্য বই এর থেকে এই বইটি একেবারেই ভিন্ন। ইতিহাসের সাথে সমান্তরালে চলেছে উপন্যাস। আছে নিখুঁত বর্ণনা। জানার মতো অনেক অনেক বিষয়। বইটি পড়ার পর নিজেদের অতীত ইতিহাস নতুন করে পড়ে দেখতে ইচ্ছে করে। বই পড়ার পর মনে হয়েছে বইটি যেন ঠিক মতো শেষ হয়নি, হয়তোবা আরো কিছু বাকি আছে ...
Was this review helpful to you?
or
বইঃ দেয়াল লেখকঃ- হুমায়ূন আহমেদ প্রচ্ছদঃ- মাসুম রহমান প্রকাশনীঃ- অন্যপ্রকাশ মুদ্রিত মুল্য ঃ- ৩৮০ /- পৃষ্ঠা - ১৯৮ মুক্তিযুদ্ধের গল্প আমাদেরকে সেই ছোটোবেলা থেকেই জোর করে গিলে খাবানো হয়েছে। ৫২ ভাষা আন্দোলন, ৬৯, ৭০, ৭১ এ মুক্তিযুদ্ধ, এইযে আমাদের দেশে একটা বিশাল ইতিহাস রয়েছে এইগুলো আমাদের মাঝে ফিল করানোর মত কিছুই করানো হয়নি, সব কিছুই জোর করে মুখস্থ এবং পরিক্ষার খাতায় উগলে দেবার মত ব্যাবস্থা করা হয়েছে। সবচেয়ে বড় দুঃখের ব্যাপার হল আমরা এমন এক জাতি যে কিনা ওই বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযোদ্ধা, জিয়া এর মত গুটিকয়েক বীর ছাড়া আর কারো সম্পর্কে জানিই না যেমন ধরেন খালেদ মোশারফ, কর্নেল তাহের, কর্নেল শাফায়াত জামিল দের চিনিই না, কারন সরকার আমাদেরকে এইসব বীর দের সাথে কখোনো পরিচয়ই করায়নাই, এছাড়া আমরা আমাদের এই জাতির অপরাধী, দেশোদ্রোহী বলতে চিনি রাজাকারদের, কিন্তু এইছাড়া আমাদের দেশে যে আরো বড় মাপের কুচক্রি ছিলো যারা মুভির ভিলেইন দের থেকে কোনো অংশে কম না, তাদেরও চিনিনা যেমন মেজর ফারুক, মেজর রশীদ, জেনারেল মঞ্জুর, মেজর ডালিম যারা কিনা দেশের মহাবীর সুর্যসন্তান দের হত্যা করেছিলো। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর আমাদের দেশে অনেক বড় বড় কয়েক টা সেনা অভ্যুত্থান হয়েছিলো যেগুলো আমাদের থেকে গায়েব করে দেয়া হিয়েছিলো যাস্ট গায়েব। মানে এই কেসের সংশ্লিষ্ট নত্রিপত্র, লোকজন, রাজসাক্ষী ধামাচাপা করে দেয়া হয়েছিলো যেমন বঙ্গবন্ধু হত্যা, জিয়া হত্যা, কর্নেল তাহের হত্যা, ১৭৫৫ জন সামরীক অফিসার দের একের পর এক হত্যা, পিলখানার হত্যা দেশের বড় বড় ঘটনা গুলোকে এই জাতির থেকে দূরে সরিয়ে নেয়া হয়েছিলো। বঙ্গবন্ধু অবশ্যই আমাদের দেশের জন্য অনেক বড় নেতা ছিলো এবং তাকে মারার মধ্যে দিয়ে কয়েক দশক স্থবির হয়ে ছিলো এরপর জিয়া এসে ঠিক করেছেন (মতবিরোধ থাকবেই।) কিন্তু বঙ্গবন্ধুর পাশাপাশি তখন অনেক বীর ছিলো যাদের কারনে অন্তত বাংলাদেশ টিকে আছে। সেই সব বীর দের আমাদের জানা প্রয়োজন.. হুমায়ূন আহমেদ আমাদের সামনে শেষ বয়সে এসে দেয়াল লিখার মাধ্যমে এই মহান বীরদের আমাদের সাথে পরিচয় করে দিয়েছেন, তার জন্য উনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ, ভালোবাসা জ্ঞাপন করছি। উনি ইতিহাস লিখতে পারতেন মানে নিখাদ ইতিহাস, কিন্তুক সেটি হয়তো অনেক বিরক্তিকর হত তাই তিনি ইতিহাস আশ্রিত উপন্যাস লিখেছেন। যার কারনে এটি দারুন একটি উপন্যাস হয়েছে। যদিও জিনিষ টা জগাকিছুড়ে অবস্থা মনে হবে, যদি আপনি উপন্যাসের চরিত্র এবং বাস্তব চরিত্র দের আলাদা করতে চান তবে। কারন স্যার দুইটার সংমিশ্রণ এমন ভাবে তৈরি করে গিয়েছেন যে আপনি কোনটা উপন্যাসের কল্পনার চরিত্র কোনটা বাস্তব চরিত্র আলাদা করতে পারবেন না। যদিও চরিত্রের খামখেয়ালিপনা, দার্শনিক মতবাদ, কমেডি এবং অন্যান্য উপন্যাস পড়া থাকলে অনেকাংশেই আলাদা করতে পারবেন। তারপরেও আলাদা করতে বেগ পোহাতে হবে। দেয়াল বইটি দুইটি আখ্যানে পরষ্পর সমান্তরালে এগিয়েছে। একটি অবন্তী নামের এক চঞ্চল ও প্রচলনবিরোধী মেয়ে এবং তাকে ঘিরে কাহিনি নিয়ে অন্যটি রাজনৈতিক কাহিনি মুলত যেটি শুরু হয়েছে মেজর ফারুকের বঙ্গবন্ধুকে মারার পরিকল্পনা দিয়ে শেষ হয়েছে জিয়ার হত্যাকান্ডের মধ্য দিয়ে। কাহিনি আর না বলি কারন হুমায়ূন আহমেদের গল্পের কোনো রিভিউ লাগেনা এইটা হুমায়ূন আহমেদ লিখেছে এটিই যথেষ্ট। তাই, আপনারা পড়ে নিবেন কাহিনি জানার জন্য! আমাদের দেশে যে কত অদ্ভুত ঘটনা ঘটেছিলো তা জানতাম না, এই যে মেজর রশীদ, মেজর ফারুকের চক্রান্ত কিভাবে বঙ্গবন্ধুর পরিবার কে মারে। জাতীয় চার নেতাকে যেইভাবে মারে আওয়ামী লীগ কে নিশ্চিন্ন করে দেবার যেইসব পরিকল্পনা করে তা ভয়াবহ, এছাড়া তাহের হত্যাকান্ড, খন্দকার মোশতাক নামে মাত্র ক্ষমতায় বসেছে সে ছিলো শুধুমাত্র একটা দাবার গুটি, খালেদ মোশারফের অসীম সাহসীকতা যেমন জানতাম না.. ঠিক তেমনি জিয়ার তাহেরের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা এবং মিথ্যা মামলায় তাকে দোষী সাবাস্ত করে মৃত্যুদন্ড দেয়া এইটা আমার চিন্তা ভাবনার বড় সর পরিবর্তন করে। যেই তাহের জিয়াকে বাচায় রশীদ, ফারুক দের হাত থেকে, যেই তাহের সিপাহী বিদ্রোহ করে ক্ষমতা দখল করে মেজর জিয়াকে ক্ষমতায় বসায়, যেই তাহের মুক্তিযুদ্ধে একটি পা হারায় তার মত বীরকে কিভাবে পারলো মারতে? ব্যাপার টা সত্যিই লজ্জাজনক। জাতি হিসেবে এটা আমাদের জন্য অনেক বড় লজ্জার বিষয় যে আমরা বীরকে সম্মান করতে জানিনা! যদিও তাহেরের মৃত্যুর অনেক বছর পর তার রায় অবৈধ্য ঘোষনা করে। কিন্তু এই কারনে আমরা একজন বীরকে হারাই। আমি যেটা বলবো সেটা হচ্ছে হুমায়ূন আহমেদের এই বই লিখার প্রেক্ষাপট নিয়ে... ব্যাক্তিগত মতামতঃ- বইটির সমালোচনা বা কোনো কিছু লিখারও প্রয়োজন বোধ করিনা কারন শুরুতেই আনিসুজ্জামান স্যার এতো দুর্দান্ত একটা ভুমিকা লিখেছেন সেখানে আমার মত নগন্য পাঠকের কিছু বলা সাজেনা উনি ভুমিকা বলার পাশাপাশি হুমায়ূনের দুর্দান্ত সমালোচনা করেছেন, প্রথমে পড়ে মেজাজ বিগড়ে গেলেও বই শেষ করার পর অনেকাংশে সঠিক মনে হয়েছে, যেমন উনি বলেছেন আমাদের জাতীয় ইতিহাসের এইসব শোকাবহ পর্বের যে পরিমান ব্যাখ্যা বিশ্লেষনের প্রয়োজন ছিলো উনি তার একটুও দেননি কাহিনি বঙ্গবন্ধু কে মারার পর খুব দ্রুত বলে গিয়েছেন মাঝে উপন্যাসের চরিত্র অবন্তি, সরফরাজ খান কে নিয়েও বলেছেন তাই কিছুটা দ্রুত ও গোলমেলে হয়ে গিয়েছে, এছাড়া আমার পড়তে মাঝে খটকা লেগেছে মনে হয়েছে এই অংশটা হুমায়ূন স্যার লিখেননি কোনো যায়গায় উনি প্রশ্নবোধক ইউজ করেছেন যেইটা কখোনো ব্যাবহার করতে দেখিনি। বইটা যে মারাত্তক বিতর্ক সৃষ্টি করেছে সেটি পড়লেই বুঝা যায়। কিন্তু তারপরেও দেয়াল সফল। পাঠক সমাদৃত, কারন এতো সুন্দর সাবলীল ভাষায় আমাদের মুক্তিযুদ্ধের ঘটনাবলিকে এতো প্রাঞ্জল ভাষায় উপস্থাপন করে গিয়েছেন সেটা প্রশংসার দাবীদার৷ দেয়াল সর্ব বয়সী লোকদের জন্য। যেকোনো বয়সী ছেলে মেয়ে বৃদ্ধা বনিতাদের জন্য যাদের মুক্তিযুদ্ধ বই পড়তে বোরিং লাগে তাদের জন্যও উৎকৃষ্ট! বরাবরের মতই এই বইতে দারুন সব উক্তি আছে * এই পৃথিবীতে মুল্যবান শুধু মানুষের জীবন, আর সবই মুল্যমান :: মানব জাতির স্বভাব হচ্ছে সে সত্যের চেয়ে মিথ্যার আশ্রয়ে নিজেকে নিরাপদ মনে করে। * চট করে কারও প্রেমে পড়ে যাওয়া কোনো কাজের কথা না। অতি রূপবতীদের কারও প্রেমে পড়তে নেই অন্যরা তাদের প্রেমে পড়বে তাই ই নিয়ম। অনেক দিন পর কোনো বই পড়লাম, রিভিউ লিখলাম, লিখতে ইচ্ছা করেনা। ভালো রেসপন্স পেলে লিখতে ইচ্ছা করবে আবার!
Was this review helpful to you?
or
উপন্যাসটি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের পটভুমিতে রচিত। এখানে তিনি বিভিন্ন চরিত্রের মাধ্যমে লেখক সমসাময়িকভাবে নিজেকেও উপস্থাপন করেছেন। এই উপন্যাসের কয়েকটা চরিত্র এর মধ্যে হল: আবন্তি, চা বিক্রেতা কাদের বাঙ্গালী,শেখ মুজিবর রহমান, সৈয়দ নজরুল ইসলাম, জিয়াউর রহমান, কর্নেল তাহের ইত্যাদি।
Was this review helpful to you?
or
প্রারম্ভিক কথাঃ বই আকারে প্রকাশ হওয়ার আগেই "দেয়াল" নিয়ে অনেক বিতর্কের সৃষ্টি হয়। এমনকি আদালত পর্যন্ত যায় এই বইয়ের পাণ্ডুলিপি। হাইকোর্টের পরামর্শ অনুযায়ী এই বইয়ের অনেক কিছুই পরিবর্তন করা হয়। আমরা যে বইটি হাতে পেয়েছি সেটা আসলে পরিবর্তিত রূপ। তারপরেও এই বইয়ে যেসব তথ্য আছে তা আপনার চোখ খুলে দিবে। যাদের আপনি চিনেন তাদেরকে নতুনভাবে চিনতে পারবেন। আমার ধারনা, হুমায়ূন আহমেদ বেচে থাকলে আরও নানা রকম রাজনৈতিক ঝামেলায় পড়তেন। রিভিউঃ এই বইয়ে দুটা অধ্যায় সমান্তরালভাবে চলেছে। প্রথম অধ্যায়ে অবন্তির কথা বলা হয়েছে।দ্বিতীয় অধ্যায়ে বঙ্গবন্ধুকে উৎখাত করার কথা বলা হয়েছে।আমিও দুটি অধ্যায় আলাদা ভাবে লিখলাম। প্রথম অধ্যায়ঃ অবন্তি অবন্তি তার দাদা সরফরাজ খানের সাথে থাকে। ওর মায়ের নাম ইসাবেলা। স্প্যানিশ। অবন্তির বাবার সাথে ছাড়াছাড়ি হওয়ার পর তিনি স্পেনেই থাকেন। অবন্তির বাবা অবন্তিকে তিন বছর বয়সে দাদার কাছে রেখে স্পেনে চলে যান। তারপর তিনি আর ফেরেননি। সরফরাজ খান পাকিস্তান পুলিশের একজন রিটায়ার্ড এসপি। তিনি প্রচন্ড সন্দেহবাতিক। অবন্তির গৃহশিক্ষক শফিক কে তিনি সন্দেহের চোখে দেখেন। তার ধারনা শফিক তার আদরের নাতনীকে পটানোর তালে আছে। অবন্তির জন্মদিনে শফিক একটা বই গিফট করেছিল অবন্তিকে। বিভূতিভূষণের ইছামতি। সরফরাজ খানের ধারনা এই বইয়ের মধ্যে কোনও চিঠিপত্র আছে। অথবা বইয়ের কাহিনী হয়তোবা বড়লোকের মেয়ের সাথে গৃহশিক্ষকের প্রেম জাতীয়। তিনি সেটা বোঝার জন্য বইটি পড়ে দেখছেন। শফিক জিগাতলায় একা থাকে। অবন্তিকে পড়ানো ছাড়া সে আরেকটা কাজ করে, সেটা হলো রাধানাথ বাবুকে তথ্য সংগ্রহ করে দেয়া। তিনি একটা বই লিখছেন সে জন্যে বিভিন্ন তথ্য দরকার হয়। শফিক সেসব তথ্য জোগাড় করে দেয়। তথ্যপ্রতি ২০ টাকা করে পায়। সফিকের আরেকটা ভালো গুন হলো সে খুব ভালো পেন্সিল স্কেচ করতে পারে। অবন্তির একটা পেন্সিল স্কেচ সে করে দিয়েছে। ছবিটা এতটাই জীবন্ত হয়েছে যে সরফরাজ খানের ধারনা এতো ভালো পেন্সিল স্কেচ যে করতে পারে সে সাক্ষাৎ শয়তান। উল্লেখ্য যে শফিক নিজেকে ভিতু বলে পরিচয় দিলেও, বঙ্গবন্ধুর হত্যার প্রতিবাদে সে রাস্তার মোড়ে দাঁড়িয়ে স্লোগান দেয় "মুজিব হত্যার বিচার চাই"। অবন্তির মা ইসাবেলা তাকে প্রতি বছর দুটা চিঠি পাঠান। একটা তার জন্মদিনে, আরেকটা ক্রিসমাসে। জন্মদিনের চিঠির সাথে উপহার থাকে। ওর ১৬ তম জন্মদিনে ওকে পাঠিয়েছে ১৬টা পারফিউমের শিশি। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে সরফরাজ খান অবন্তিকে নিয়ে তার গ্রামের বাড়ি চলে যান।কিছুদিন পর তার বাড়ি পাকিস্তানি মিলিটারিরা দখল করে নেয়। তিনি তখন অবন্তিকে খতিবনগরের পিরসাহেবের হুজরাখানায় রেখে যান। পিরসাহেবের হুজরাখানায় জ্বিনদের নিয়ে মিলাদ পড়ানো হয়। এই কথা শুনে পাকিস্তানি ক্যাপ্টেন সামস উনার হুজরাখানায় আসেন। তিনি জ্বিনদের নিয়ে মিলাদ পড়ানোর ব্যাপারে অভিভূত হন। তার পরামর্শে পিরসাহেব শান্তি কমিটির চেয়ারম্যান হয়ে যান। ক্যাপ্টেন সামস অবন্তিকে দেখে তাকে বিয়ে করার কথা পিরসাহেব কে জানান। তখন তিনি বলে দেন যে তার ছেলে জাহাঙ্গীর এর সাথে অবন্তির বিয়ের কথা হয়ে আছে। একপ্রকার জোড় করে জাহাঙ্গীর এর সাথে অবন্তির বিয়ে দেয়া হয়। অবন্তি অবশ্য পরদিন ঢাকায় চলে আসে। জাহাঙ্গীর নিজেই তাকে ঢাকায় দিয়ে যায়। পিরসাহেবের মৃত্যুর পর জাহাঙ্গীর গদিনশীন পির হয়। বিয়ে মেনে না নিলেও অবন্তি মাঝে মধ্যে জাহাঙ্গীর এর সাথে যোগাযোগ করে। দ্বিতীয় অধ্যায়ঃ বঙ্গবন্ধুকে উৎখাত অবন্তির বাবার বন্ধুদের মধ্যে একজন হলেন মেজর জেনারেল খালেদ মোশারফ। উনার সাথে মাঝে মধ্যে কর্নেল তাহেরও এবাড়িতে আসেন। কর্নেল তাহেরকে তো সবাই চিনেন। মেজর জেনারেল খালেদ মোশারফ কে চিনেন তো? মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি ২ নং সেক্টরের কমান্ডার ছিলেন। রুমী,আজাদ,বদিদের ক্র্যাক প্লাটুনের নাম তো শুনেছেন। কিভাবে ক্র্যাক প্লাটুন গঠিত হয় সেটা জানেন? সেক্টর কমান্ডার খালেদ মোশাররফের নির্দেশনা ছিলো হোটেল ইন্টার কন্টিনেন্টালে বিদেশী সাংবাদিক ও অতিথিরা থাকাকালীন ঢাকা শহরের পরিস্থিতি যে শান্ত নয় এবং এখানে যুদ্ধ চলছে তা বোঝানোর জন্য শহরের আশে-পাশে কিছু গ্রেনেড ও গুলি ছুড়তে হবে; কিন্তু দু:সাহসী এই তরুণেরা ঢাকায় এসে ৯ জুন তারিখে সরাসরি হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে গ্রেনেড হামলা করেন এবং বেশ কয়েকজনকে হত্যা করে যা ছিলো অত্যন্ত ঝুকিপূর্ণ ও অচিন্তনীয় কাজ। সন্ধ্যায় বিবিসির খবর থেকে খালেদ মোশাররফ এই অপারেশনের কথা জানতে পেরে বলেন, 'দিজ অল আর ক্র্যাক পিপল! বললাম, ঢাকার বাইরে বিস্ফোরণ ঘটাতে আর ওরা হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালেই বিস্ফোরণ ঘটিয়ে এসেছে।' তিনিই প্রথম এই দলটিকে "ক্র্যাক" আখ্যা দেন; যা থেকে পরবর্তীতে এই প্লাটুনটি "ক্র্যাক প্লাটুন" নামে পরিচিত হয়। তিনি কে-ফোর্সেরও কমান্ডার ছিলেন। মেজর রশীদ, ফারুক, লে. কর্নেল ওসমানি এইদিকে বঙ্গবন্ধুকে উৎখাত করার পরিকল্পনা করছেন। মিটিং বসেছে মেজর জিয়াউর রহমানের বাসায়। মিটিং এর এই খবর অবশ্য লিক হয়ে ভারতের "র" (RAW) এর কাছে চলে যায়। "র" এর রিসার্চ ও অ্যানালাইসিস উইং এর পরিচালক "কাও" ছদ্মবেশে বঙ্গবন্ধুর ধানমন্ডির ৩২ নাম্বার বাড়িতে আসেন। তিনি মেজর ফারুক, রশীদদের ষড়যন্ত্রের কথা বঙ্গবন্ধুকে বলেন। কিন্তু বঙ্গবন্ধু তার কথায় কান দেননি। তিনি বলেছিলেন তারা আমার সন্তান্সম, তারা আমার ক্ষতি করতে পারেনা। কাও বলেছিলেন, স্যার আপনি ভুল করছেন। সেই ভুলের মাশুল কি হয়েছিল তা আমরা সকলেই জানি। দিনটি ছিল শুক্রবার। ১৫ই আগস্ট ১৯৭৫। ভোরবেলা বাংলাদেশ বেতার থেকে মেজর ডালিম ঘোষনা করেছিলেন " আমি মেজর ডালিম বলছি, স্বৈরাচারী মুজিব সরকারকে এক সেনা অভ্যুত্থান এর মাধ্যমে উৎখাত করা হয়েছে। সারাদেশে মার্শাল ল জারি করা হল। এরপর খন্দকার মোশতাকের ক্ষমতালাভ,খালেদ মোশারফের অভ্যুত্থান, কারাগারে চার নেতা হত্যা,কর্নেল তাহেরের নেতৃত্বে সিপাহি জনতার বিপ্লব, জিয়াউর রহমানের মুক্তিলাভ ও ক্ষমতাগ্রহন। এরপর খালেদ মোশারফ ও কর্নেল হুদার হত্যা এবং তাহেরকে ফাসিতে ঝুলানোর মাধ্যমে দ্বিতীয় অধ্যায়ের সমাপ্তি। বই শেষ হয়েছে জিয়ার হত্যাকান্ডে। ব্যাক্তিগত মতামতঃ দেয়াল মূলত ইতিহাস আশ্রিত উপন্যাস। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন ও যুদ্ধ পরবর্তি সময়ের কথা বলা হয়েছে এই বইয়ে। এই বইয়ে দেয়া প্রতিটা তথ্যের সত্যতা যাচাইয়ের জন্য বইয়ের শেষে সূত্র দেয়া আছে। আমার অসম্ভব পছন্দের একটা বই। ব্যাক্তিগতভাবে আমার অত্যন্ত পছন্দের বই "দেয়াল"। আমার ইচ্ছা আমার ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে আমি এই বই উপহার দিব, যেন তারা জানতে পারে সঠিক ইতিহাস কি ছিল। পছন্দের উক্তিঃ গল্প-উপন্যাস হল অল্পবয়সী মেয়েদের মাথা খারাপের মন্ত্র। রিভিউ লেখার অনুভূতিঃ আমি যে কয়টা রিভিউ এই পর্যন্ত লিখেছি, তার মধ্যে সব থেকে ভয় পেয়েছি এই রিভিউ লিখতে গিয়ে।লেখক যেভাবে সুন্দর একটা গল্পের মাধ্যমে ইতিহাস বলেছেন, তা দু চার কথায় লেখা মানে সাহসিকতা দেখানো। আমি সাহস করে কি লিখতে কি লিখেছি জানিনা। সে বিচার আপনাদের।
Was this review helpful to you?
or
বাংলাসাহিত্যের কিংবদন্তি লেখক হুমায়ূন আহমেদের আর্বিভাব হয়েছিল অনেকটা ধূমকেতুর মত...আর প্রস্থানটাও ঠিক একইভাবে।খুব স্বল্প সময়ের মধ্যে তিনি আমাদের মৃতপ্রায় সাহিত্যজগতে এক তুমুল তোলপাড় সৃষ্টি করেন।তাঁর এক একটি বই বাজারে আসত আর পাঠক সমাজ যেন নতুন কোনো উৎসবে মেতে উঠত। এই জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিকের শেষ উপন্যাস "দেয়াল"।মৃত্যুর সাথে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার এক ফাঁকেই তিনি রচনা করেছিলেন তাঁর শ্রেষ্ঠ কীর্তিগুলোর একটি।ইতিহাস আর স্বভাবসিদ্ধ সত্যান্বেষী জীবনভাবনার সমন্বয়ে তিনি গড়ে তুলেছেন এক মহান আখ্যান। উপন্যসটিতে ২টি কাহিনী পাশাপাশি অগ্রসর হয়েছে। প্রথম উপাখ্যান অবন্তি নামের এক মেয়েকে ঘিরে আর দ্বিতীয়টির সূচনা অবন্তির দাদা সরফরাজ খানের পরিচিত মেজর খালেদ মোশাররফ ও সেই সূত্রে কর্ণেল তাহেরের আগমনের মধ্য দিয়ে।এর পর তিনি খুব দ্রুততার সাথে একে একে বর্ণনা করেছেন মুজিব হত্যার পরিকল্পনা,তার সাফল্য,খন্দকার মোশতাকের ক্ষমতা লাভ,খালেদ মোশাররফের অভ্যুত্থান,চার নেতা হত্যা,কর্ণেল তাহেরের সিপাহী জনতা বিপ্লব,জিয়াউর রহমানের মুক্তিলাভ ও ক্ষমতাগ্রহণ,তাহেরের ফাঁসি ইত্যাদি নাটকীয় ঘটনাবলি। যদিও মুজিব হত্যাকাণ্ড সম্পর্কিত অংশটুকু নিয়ে কিছু বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছির,তবুও বইটির গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলার ন্যূনতম অবকাশ নেই।মূলত এই বইটিই লেখক হিসেবে তাঁর জীবনকে পরিপূর্ণতা দান করেছে। বইটি সম্পর্কে আনিসুজ্জামান বলেছেন,"সমালোচক যা-ই বলুক না কেন,আমি জানি,হুমায়ূন আহমেদের অন্য বইয়ের মতো দেয়ালও পাঠকের সমাদর লাভ করবে।" সত্যিই...এই উপন্যসটি হুমায়ূনের বর্ণাঢ্য জীবনকে এক ভিন্ন মাত্রা দান করেছে।
Was this review helpful to you?
or
হুমায়ুন আহমেদের সব বই আমার ভালো লাগে। আমার মনে হয় দেয়াল হুমাযূন আহমেদের চমৎকার একটা বই। এই বইয়ে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের পরে যে ক্ষমতা লাভের লড়াই চলছিল তার পূনাঙ্গ চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। আশা করি সবার কাছে এই বইটা ভালো লাগবে। এমন একটা বই লেখার জন্য হুমাযূন আহমেদকে ধন্যবাদ। তার বিদেয়ী আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি।
Was this review helpful to you?
or
ইতিহাস না জানার দায় মেটাতেই গত তিনটি রাত বিনিদ্র রজনী কাটিয়েছি। বলতে একটুও দ্বিধা নেই, হুমায়ূন আহমেদের ‘দেয়াল’ উপন্যাসটি না পড়লে কোনদিনই এই দায় আমার মেটানো হতো না। জোর দিয়েই বলতে পারি, হুমায়ূন আহমেদ ও তাঁর ‘দেয়াল’ ইতিহাসের একটি অধ্যায়ের দায় শোধ করে গেল। প্রিয় লেখক তার ‘দেয়াল’ উপন্যাসে 'হুমায়ুনি স্টাইলে' ইতিহাসের কিছু অধ্যায়ের তথ্যগুলোকে করেছেন আরও আকর্ষণীয়। ইতিহাসকে বর্ণনা করেছেন 'ঘরোয়াভাবে'। ‘দেয়াল’ পড়ে মুগ্ধতাড মন ভরে মন গিয়েছে, তেমনি হাহাকার করে উঠেছে বুকের গহিনে। হায় লেখক কি আরও কিছুদিন পারতেন না এ নশ্বর পৃথিবীতে মধ্যে থাকতে? জীবনের চরম সত্যকে মেনে নিয়ে আকাশে পাড়ি জমালেন। একটি দেশের সঠিক ইতিহাস প্রতিটি মানুষকে জানতে হয়, জানাতে হয়। আর এই জানানোর দায়িত্ব যাদো নেওয়ার কথা তারা কেন যে নেন না, তা সাধারণ মানুষের বোধগম্য কখনোই হয়নি। সেকারণে ইতিহাসবিদ তার সীমিত ক্ষমতা থেকে আলগোছে দায়িত্ব পালন করে যান। কিন্তু দেশের হর্তাকর্তা নিজেদের সুযোগ-সুবিধা মতো দেশের ইতিহাসকে কাটাছেঁড়া করেন নির্লজ্জো মতো। কিন্তু একজন লেখক তার বিবেকের তাড়না থেকেই সঠিক ইতিহাস জানাতে কখনোই কার্পন্য করেন না। সরাসরি ইতিহাসের আদলে না লিখলেও ইতিহাসের সত্য ঘটনাকেই লেখক তার কলমের যাদুতে মোড়কবন্দি করে পাঠকের হাতে তুলে দিয়েছেন। দেয়াল উপন্যাসে জাতিকে ইতিহাসের একটি কালো অধ্যায় এবং কয়েকটি বছরের পটভূমিকার ইতিহাস জানিয়ে দিয়েছেন অবলীলায়। লেখক সম্পূর্ণ সততার সাথে বাংলাদেশের ঘটনাবহুল কয়েকটি দিনের ইতিহাস অথবা রাজনৈতিক ঘটনা বাঁক, কালো অধ্যায় একটি গল্পের আবরণে তুলে ধরেছেন অত্যন্ত দক্ষতার সহিত। যদিও এ কাজটি ইতিহাসবিদরাই করে থাকেন নিয়মিত, কিন্তু আমাদের প্রিয় হুমায়ূন সে কাজটি করে গেলেন। ১৯৭৫-১৫ই আগস্ট এবং পরবর্তী অধ্যায়গুলো ছিল ক্যান্টনমেন্ট ও বঙ্গভবন কেন্দ্রিক। যা কিনা সাধারণ জনগণের উপর লঘু প্রভাব ফেলেছিল, কিন্তু সুদূর প্রসারী প্রভাবের ধারা যে আজো বয়ে চলেছে -তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। রাজনৈতিক ভাবে সচেতন প্রতিটি মানুষই তা সহজেই অনমান করতে পারেন। সে সময়গুলোর থেকে স্বাধীন বাংলাদেশে পার®পরিক অবিশ্বাসের জন্ম দিয়েছে। ১৯৭৫-এ বঙ্গবন্ধুর নির্মম হত্যাকাণ্ড ও পরবর্তী রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট দেয়ালে’র মূল উপজীব্য। লেখক এখানে বঙ্গবন্ধুর শাসনামল, বাকশাল গঠন, রক্ষী বাহিনীর কার্যক্রম, হত্যা পরবর্তী প্রতিক্রিয়া, জেল হত্যা, এবং এসব ঘটনায় মেজর রশীদ, মেজর ফারুক, খন্দকার মোশতাক প্রমুখের ভূমিকার ¯পষ্ট বর্ণনা দিয়েছেন। পাশাপাশি খালেদ মোশাররফের কর্মকান্ড, মেজর জিয়াউর রহমানের আটকাবস্থা, কর্নেল তাহেরের অভিযান, জিয়ার ক্ষমতায় আসা, তাহেরেরে ফাঁসী, জিয়ার শাসনামলসহ আরো কিছু বিষয় আলোচনা করেছেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতা পরবর্তী বিষণ ইতিহাস থেকে রসদ নিয়ে ‘দেয়াল’ উপন্যাসটি লিখেছেন হুমায়ূন আহমেদ। ‘দেয়াল’ নিয়ে উপর শত শত রিভিউ লেখা হচ্ছে এবং হবে। সে পর্যালোচনাও হবে একক রকম। আমি ইতিহাস বিষয়েই পুরোমাত্রায় বিশেষভাবে অজ্ঞ। কোনো যোগ্যতাই রাখি না, বাংলাদেশের ক্রান্তিকাল এবং প্রিয় হুমায়ূন আহমেদের ‘দেয়াল’ উপন্যাসটি নিয়ে কোনো প্রকার বিচার-বিশ্লেষনের। শুধু একজন মনোযোগী পাঠক হিসেবে বলতে পারি, হুমায়ূন আহমেদ নিজে একজন ১৯৭৫ এবং পরবর্তী সময়গুলোর দ্রষ্টা ছিলেন, ‘দেয়ালে’ তাই ঘটনা বর্ণনায় তিঁনি ছিলেন শতভাগ সৎ (এ আমার বিশ্বাস)। তাই বইটি হয়তো ইতিহাসের টেক্সট বুক হবে না। হলেও কোনো অশুদ্ধ হবে না। বরং ‘দেয়াল’ ইতিহাস বর্ণনায় বিশুদ্ধ হতো নিঃসন্দেহে। দেয়াল উপন্যাসটি ইতিহাস নির্ভর হলেও বইটি বাংলাদেশের ৫-৬টি বছরের সংক্ষিপ্ত নোট বুক বলতে পারি। সর্বোপরি পাঠক তথা মানুষের মনের অনুভূতিতে নাড়া দিতে পারা এবং চিন্তার রেখাকে নাড়িয়ে দিতে পেরেছেন লেখক হুমায়ূন আহমেদ তাঁর ‘দেয়াল’ উপন্যাসটি দিয়ে। আগ্রহী পাঠক হিসেবে আর একটি কথা না বললেও নয়, উপন্যাসটির ব্যাপ্তী আর একটু বড় হলে পাঠক এবং আগামী প্রজন্মের জন্য মঙ্গলই হতো বৈকি। ‘দেয়াল’ ইতিহাস অবলম্বনে লেখা একটি উপন্যাস। দেয়াল উপন্যাসে ইতিহাস প্রধানত এর মানবিকতা-অমানবিকতার দ্বন্দ্বেই বর্ণিত। পাত্র-পাত্রী আছে, ঘটনা-উপঘটনা আছে। কিন্তু বাকিটুকু গল্প। হুমায়ূন আহমেদের পাঠক মাত্র জানেন তাদের প্রিয় লেখক একজন অত্যন্ত সংবেদনশীল মানুষ। লেখক হিসেবেও ঠিক তাই। হুমায়ূনের প্রতিটি লেখা এবং লেখার চরিত্রগুলো অত্যন্ত সংবেদনশীল হয়ে থাকে। যথারীতি দেয়াল উপন্যাসেও সংবেদী বর্ণনায় হুমায়ূন আহমেদ তাঁর দেয়ালের চরিত্রগুলো, ঘটনাগুলো তুলে ধরেছেন। স্বল্প পরিসরে দীর্ঘ উপন্যাসটির সম্পর্কে বিশদ আলোচনার প্রয়োজন দেখছি না, আর তা কাম্যও নয়। অল্প করে বললে বলা যায়Ñদেয়াল উপন্যাসে শফিক নামের এক কেন্দ্রীয় চরিত্র, সত্যবাদী, তবে একটু ভীতু সে। গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র ১৬ বছর বয়সী অবন্তীর গৃহশিক্ষক হলো শফিক। অবন্তী ও শফিকের মধ্যকার কথন উপন্যাস থেকে তুলে দেয়ার লোভ সংবরন করতে পারলাম না। “অবন্তীর বয়স ষোল। সে ভিকারুনিসা কলেজে ইন্টারমিডিয়েটে পড়ে। শফিক তাকে বাসায় অংক শেখায়। আজ অবন্তীর জন্মদিন। জন্মদিনের অনুষ্ঠানে শফিককে বলা হয় নি। অবন্তী শুধু বলেছে, তের তারিখ আপনি আসবেন না। ওই দিন আমাদের বাসায় ঘরোয়া একটা উৎসব আছে। আমার জন্মদিন। শফিক বলেছে, ও আচ্ছা! অবন্তী বলেছে, জন্মদিনে আমি আমার কোনও বন্ধুবান্ধবকে ডাকি না। দাদা জান তার বন্ধুবান্ধব কে খেতে বলেন। শফিক আবারও বলেছে, ও আচ্ছা! অবন্তী বলেছে, আপনাকে জন্মদিনে নিমন্ত্রন করা হয় নি এই নিয়ে মন খারাপ করবেন না। শফিক ৩য় বারের মত বলল, ও আচ্ছা! শেষ বারে ‘ও আচ্ছা’ না বলে বলা উচিত ছিল ‘মন খারাপ করব না’ উভয়ের মধ্যে একটা অসম্পূর্ণ সম্পর্কে সৃষ্টি হয় বইয়ের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত। এই রেশটুকু নিয়েই পাঠককে মুগ্ধ হতে হয়। পাঠক, অবন্তীর বিয়ে কিন্তু শফিকের সাথে হয় না। বিয়ে হয় এব যুবক পীর হাফেজ জাহাঙ্গীরের সাথে। যাকেও পাঠক আপন করে নেবেন। অবন্তীর বাবা নিরুদ্দেশ। অবশেষে ¯েপনে খোঁজ মেলে। সাথে অবন্তীর মা ইসাবেলা থাকেন। কালেভদ্রে মেয়েকে চিঠি লেখেন। এদিকে অবন্তী থাকে তার দাদা সরফরাজ খানের সঙ্গে। একজন কঠিন হৃদয়ের মানুষ। যার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা খালেদ মোশাররফ এবং কর্নেল তাহেরের। মূলত দেয়াল উপন্যাসে শফিক,অবন্তী, হাফেজ জাহাঙ্গীর এবং সরফরাজ খান-দের নিয়ে মূল গল্প এগিয়ে গেছে। তবে মূল সূত্র সেই ১৯৭৫ এর কালো অধ্যায়। দেয়াল উপন্যাসটিতে পাঠক বঙ্গবন্ধুকে তাঁর আপন মহিমায় খুঁজে পাবেন। বইটিতে বঙ্গবন্ধুর চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য এসেছে। বঙ্গবন্ধুকে ঘিরে চাটুকার আর সুবিধাভোগী শ্রেণীর কথা পাঠক জানতে পারবে। সবচেয়ে গুরুত্ব পেয়েছে রক্ষিবাহীনীর অপকর্ম। লেখককে ধন্যবাদ না দিলেই নয়। রক্ষীবাহিনীর দ্বারা লেখকের পরিবার তাদের বরাদ্দকৃত শহিদ পরিবারের বাড়ি বেদখল হয়েছিল এবং অনেক দেন দরবার করে বাসার দোতলাতে থাকার সুযোগ পেয়েছেন এবং নীচের তলা রক্ষীবাহিনীর একজন সুবেদারের জন্য ছেড়ে দিতে হল। বঙ্গবন্ধুর হত্যার পর নিগৃহীত সে রক্ষীবাহিনীর সুবেদার পালিয়ে গেলেন। তাঁর দুটি মেয়ে এসে লেখকের মাকে অনুরোধ করছে, তাদের কে আশ্রয় দেয়ার জন্য। কারণ, এখন তাদের পাবলিক মেরে ফেলবে! ক্ষোভ আছে তুখোড় ছাত্র নেতা হিসেবে খ্যাত তোফায়েল আহমেদকে নিয়েও। তিনিও ছিলেন রক্ষিবাহীনির সাথে। গল্পে আরো আবির্ভূত হন, খন্দকার মোশতাক আহমদ, খালেদ মোশাররফ। হুমায়ূন আহমেদ তাঁর প্রত্যেকের প্রাপ্য মর্যাদা দিয়েছেন। কর্নেল তাহেরকে বীরের মর্যাদা দিয়েছেন, যা কর্নেলের প্রাপ্য। এ উপন্যাসে জিয়াউর রহমানও আছেন তাঁর মতো করেই। উপন্যাসটিতে হুমায়ূন আহমেদ নিজেও আছেন। লেখক দেয়ালবন্দী একটা অধ্যায়কে ভাঙ্গার চেষ্টা করেছেন তাঁর ‘দেয়াল’ উপন্যাসটি দিয়ে।
Was this review helpful to you?
or
ek buk kanna niye boita porlum..ei shesh... ar konodin tar jadukori khomotai amader kadate,hashate parben na tini..pathok hridoyer onek khani shunno kore diye chole gelen na ferar deshe..mone hochchilo boiti opurno/oshomapto..eti keno tini purno kore jete parlen na....
Was this review helpful to you?
or
দেয়াল উপন্যাসটি পড়ে শেষ করলাম। এবং স্বভাবতই একটানে। পড়ে স্বভাবতই মুগ্ধ। হুমায়ূনসুলভ লেখা পড়ে আবেগগুলো, অনুভূতিগুলো বারবারই একদিক থেকে আরেকদিক ছুটোছুটি করলো। কখনো সূক্ষ্ম রসিকতায় তৃপ্তির কিংবা স্থূল রসিকতায় অট্টহাসিতে ফেটে পড়া, কখনো উত্তেজনায় কি হবে কি হবে না, এই ভেবে অস্থির হয়ে কয়েক পাতা না পড়েই পরের পাতাগুলো পড়ে ফেলা। কখনো দেশের সূর্যসন্তানদের জন্য কষ্ট পেয়ে চোখের কোণে পানি জমে যাওয়া, কখনো রাষ্ট্রপরিচালনার লোভে কতিপয় মূর্খ লোকেদের মূর্খতা দেখে ক্রোধে অস্থির হয়ে যাওয়া। কখনো বা সেইসব নির্বোধদের নির্বুদ্ধিতা দেখে কিংবা সরল বিশ্বাস দেখে আক্ষেপ নিয়ে করুণা করা। বইয়ের শুরুতে বিশেষ নির্দেশ লেখক এবং প্রকাশকের লিখিত অনুমতি ছাড়া কোথাও প্রকাশ করার নিষেধনামা থাকায় বইয়ের কিছু উল্লেখযোগ্য অংশ প্রকাশ করতে পারলাম না বলে খুবই খারাপ লাগছে। খারাপ লাগছে বললে ভুল হবে, হাত নিশপিশ করছে। সব কথার শেষ কথা। হুমায়ূন আহমেদকে খুব করে মিস করছি। আর কোন সাহিত্য তার থেকে পাবো না। সূক্ষ্ম হোক স্থূল হোক হাসির গল্প যে আর পাবো না, অন্যরকম ভয়ের অনুভূতি কিংবা বিজ্ঞানকে নিয়ে নাড়াচাড়া করা অন্যরকম অনুভূতির সব সায়েন্স ফিকশন কিংবা জটিল কিছু রহস্যকে খুবই সহজ সরল্ভাবে ভেঙে দেওয়া গল্প অথবা আমার আপনার চারপাশের পরিবেশকে ঘিরে লেখা সুখ-দুঃখ হাসি কান্না, অনুভূতিকে নিয়ে লেখা জীবনঘনিষ্ঠ কোন গল্পও আর পাবো না। সবকিছুর পাট চুকিয়ে তিনি যে চলে গেলেন না ফেরার দেশে। এই কথাটা বারবারই মনে পড়ে। খুবই খারাপ লাগে তখন। কিছু অপ্রাপ্তি, কিছু শূন্যতা। হায় রে, এই মানুষটা আর কটা দিন কেন আমাদের মাঝে থাকলেন না? থাকলে কি খুব কোন সমস্যা হতো? কতো খারাপ মানুষই বেঁচে থাকে, কত দুশ্চরিত্রবান, স্বার্থপর, ভণ্ড লেখকই তো বেঁচে আছে এই সমাজে। তারা বেঁচে থাকে সগৌরবে। ভালো মানুষেরা চলে যায়। জগত সত্যিই বড় নিষ্ঠুর। আমরাও বড়ই অভিমানী। বড়ই আবেগী।
Was this review helpful to you?
or
বইটি পড়ে আরো অনেক বইয়ের রেফারেন্স পেয়ে গেলাম যা আগে পড়া হয়নি।
Was this review helpful to you?
or
ইতিহাস আশ্রিত মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী সময়কে উপজীব্য করে ‘দেয়াল’ রচনা করা হয়েছে, একটি সদ্যস্বাধীন জাতির ভাগ্যকাশের চরম অনিশ্চয়তার কাল নিয়ে। এই উপন্যাসটি হুমায়ূন আহমেদের এক অনবদ্য সৃষ্টি, বইটি পড়ে খুব ভাল লাগছে...............
Was this review helpful to you?
or
বইটা খুব ই ভালো লেগেছে... লেখক স্বাধীনভাবে বাংলাদেশের ইতিহাস তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন (মুক্তিযুদ্ধকালীন) । বেশ সুন্দর বর্ণনাই লেখক এর কলমে উঠে এসেছে। তবে এক্ষেত্রে তৎকালীন সকল রাজনীতিবিদদের,মুক্তিযোদ্ধা, পুলিশের (এবং হুমায়ূন আহমেদের নিজের প্রথম জীবনের অবস্থা) অবদান, ভূমিকা দায়িত্ব, কুকর্ম ফুটে উঠলেও কিছু কিছু জায়গায় কমতি রয়েই গেছে.. যেমন : এরশাদের কোনো কথা আসে নি. একই সাথে বর্তমান সরকার শেখ হাসিনার কোন কথা এমন উঠে আসেনি... তবে বইটা বেশ ভাল ছিল আলহামদুলিল্লাহ! দুঃখের সাথে বলতে হয়, মহান লেখক,, "হুমায়ুন আহমেদ "এখন আর আমাদের মাঝে নেই.. তবে লাখো পাঠকের হৃদয়ে তিনি জায়গা করে গিয়েছেন..
Was this review helpful to you?
or
#রকমারি_বইপোকা_রিভিউ_প্রতিযোগিতা বইয়ের নাম:দেয়াল লেখকের নাম:হুমায়ূন আহমেদ প্রকাশনী:অন্যপ্রকাশ মুল্য:২৭০টাকা দেয়াল। হুমায়ূন আহমেদের শেষ উপন্যাস। অনেক অনেক তথ্য আছে আবার অনেক জায়গাতেই খাপছাড়া মনে হয়েছে। তবে অনেক অজানা ইতিহাস জানা গিয়েছে। বইটাতে বঙ্গবন্ধুর অসাধারণ ব্যক্তিত্বর কথা যেমন আছে, তেমন দেশ চালনায় তার কিছু বেঠিকের কথাও আছে, তার অনুগতদের সামলানোর ব্যর্থতার কথাও আছে। জিয়ার কর্নেল তাহেরকে হত্যা এরপর হাজার হাজার সেনাবাহিনীর সৈনিক, অফিসার হত্যার কথা, গোলাম আজমকে সসম্মানে ফিরিয়ে আনার কথা যেমন আছে আবার তার সাধারন জীবনযাপনের কথাও আছে, বর্হীবিশ্বের সাথে সুসম্পর্কের কথাও আছে। দেয়াল উপন্যাসটি পড়ার মাধ্যমে আরো অনেক বিষয় জানা যায়। দেয়াল উপন্যাসটি পরে জানা পঁচাত্তরে বাঙালি চরিত্রে যে স্খলনগুলো দেখেছি, যে পচন, তা ধ্রুব নয়, চিরস্থায়ী নয়। পঁচাত্তরের অন্ধকারের বিপরীতে আলো আছে, যে আলো আমরা চোখ খুলে একটু তাকালেই দেখত পারি। আমরা আয়নায় চোখ ফেলতে আর ভয় পাই না। খুব সংবেদী বর্ণনায় হুমায়ূন আহমেদ তাঁর চরিত্রগুলো, ঘটনাগুলো তুলে ধরেছেন। তাঁর পাঠকেরা তাঁদের পরিচিত দু-একটি চরিত্র অথবা সেগুলোর আদলে তৈরি কিছু মানুষজন পাবেন এই উপন্যাসে। এরগল্পটি অজটিল, কিন্তু বোধ-অনুভূতিগুলো তীব্র এবং তীক্ষ, মন আচ্ছন্ন করা অথবা অশান্ত করা। শফিক এই গল্পের কেন্দ্রীয় এক চরিত্র, অনেকটা হিমুর মতো—সত্যবাদী কিন্তু কিছুটা ভীতু। সে যার গৃহশিক্ষক, যার নাম অবন্তী, বয়স ১৬, সে আরেক গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র। তাদের ভেতর একটি সম্পর্ক হয়, আবার পুরো যে হয়, তা-ও নয়। এই কাছে আসা-দূরে থাকার ভেতর একটা রহস্য এবং রোমাঞ্চ আছে, যা শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত অটুট থাকে। অবন্তীর সঙ্গে বিয়ে হয় এক গদিনশীন যুবক পিরের, যাকে এক ট্র্যাজিক মানুষ হিসেবে পাঠক ভালোবাসবেন। গল্পে তাঁর নিঃশব্দ আনাগোনা আছে, যাতে অবন্তীর সম্মতি থাকে, অথচ অবন্তীর ওপর স্বামীসুলভ কোনো অধিকার খাটাতে আগ্রহী হয় না এই মানুষটি, যার নাম হাফেজ জাহাঙ্গীর। অবন্তীর বাবা নিরুদ্দেশ, তবে দীর্ঘদিন পর ভেসে ওঠেন স্পেনে, যেখানে অবন্তীর মা ইসাবেলা থাকেন এবং মাঝেমধ্যে মেয়েকে চিঠি লেখেন। অবন্তী থাকে তার দাদা সরফরাজ খানের সঙ্গে, যিনি কঠিন হূদয়ের একজন মানুষ এবং যার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা খালেদ মোশাররফ এবং কর্নেল তাহেরের। এই উপন্যাসে শফিক-অবন্তী-হাফেজ জাহাঙ্গীর-সরফরাজ খানের গল্পটাই প্রধান, কিন্তু একে চালিয়ে নিয়ে যায় পঁচাত্তরের নানা ঘটনা। ফলে বঙ্গবন্ধু গল্পের কয়েক জায়গায় আবির্ভূত হন। তাঁকে খুব অন্তরঙ্গ, কিছুটা আমোদপ্রিয় মানুষ হিসেবে আমরা দেখি, অথচ তাঁকে ঘিরে ভয়ানক যে কূটচালগুলো খেলতে থাকে খলনায়কেরা, সেগুলো যখন বর্ণনা করেন ঔপন্যাসিক, আমরা বুঝি বঙ্গবন্ধু মানুষ চিনতে কখনো কখনো ভয়ানক ভুল করেছেন, ট্র্যাজিক নায়কদের মতো, যেমন খন্দকার মোশতাক আহমদকে, খালেদ মোশাররফকে; হুমায়ূন আহমেদ তাঁর প্রাপ্য মর্যাদা দিয়েছেন। কর্নেল তাহেরকে পুনরধিষ্ঠিত করেছেন তাঁর বীরের আসনটিতে। এ দুই চরিত্রের এক আশ্চর্য নিরাবেগ চিত্রায়ণ করেছেন লেখক ইতিহাসের দায় থেকেই। এ উপন্যাসে জিয়াউর রহমানও আছেন এবং আছেন তাঁর ভূমিকাতেই। জিয়ার প্রাণ রক্ষাকারী বন্ধু কর্নেল তাহেরকে যখন ফাঁসিতে ঝোলানো হলো, দেখা গেল কর্নেল তাহেরের কোনো অভিযোগ নেই কারও বিরুদ্ধে, শুধু অসম্ভব এক স্থিরচিত্ততার প্রকাশ ঘটিয়ে তিনি বীরত্ব এবং দেশপ্রেম কাকে বলে তার এক অসাধারণ উদাহরণ সৃষ্টি করে গেলেন। উপন্যাসটিতে হুমায়ূন আহমেদ নিজেও আছেন, যেহেতু নিজেও তিনি পঁচাত্তরের ইতিহাসে ছিলেন। এই ইতিহাসকে দেয়ালবন্দী হতে দেখেছেন, ফলে দেয়ালটা ভাঙার একটা উদ্যোগ নিয়েছেন। ইতিহাসের কাছে হয়তো এ তাঁর নিজস্ব দায়মুক্তি।
Was this review helpful to you?
or
মহান মুক্তিযুদ্ধ আমাদের অত্যন্ত গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস । কিন্তু স্বাধীনতার পর আমাদের বাংলায় ঘটে গেছে নানান রাজনৈতিক পট পরিবর্তন । যে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য আমরা রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের মাধ্যমে স্বাধীনতা ছিনিয়ে এনে এই বাংলায় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছিলাম, সেই গণতন্ত্রকে গলাটিপে হত্যা করা হয় ১৯৭৫ সালের ১৫ আগষ্ট । বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ড এবং তার পরবর্তী ঘটনাসমূহ কেন্দ্র করেই রচিত হয়েছে হুমায়ূন আহমেদের শেষ উপন্যাস "দেয়াল" । বইটিতে ২টি আখ্যান সমান্তরালে চলেছে । প্রথম আখ্যানে রয়েছে অবন্তি নামের এক চপলমতি ও প্রচলনবিরোধী মেয়ের কাহিনী যে তার দাদা সরফরাজ খানের সাথে ঢাকায় থাকে । আর দ্বিতীয় আখ্যানটি হচ্ছে মেজর ফারুকের বঙ্গবন্ধু হত্যার পরিকল্পনা নিয়ে । পর্যায়ক্রমে পরিকল্পনার সাফল্য,খন্দকার মোশতাকের ক্ষমতালাভ,খালেদ মোশারফের অভ্যুথান,কারাগারে চারনেতা হত্যা,কর্নেল হুদার হত্যা এবং তাহেরের ফাঁসিতে উপাখ্যানের সমাপ্তি । উপন্যাসের কিছু চরিত্র বাস্তব থেকে নেয়া, নাম-ধাম, ঘটনা পরম্পরা সবই বাস্তব । কিন্তু লেখক যেহেতু উপন্যাস লিখেছেন, তাই লেখক এতে কাল্পনিক কিছু চরিত্রের আশ্রয় নিয়েছেন । গল্প আবর্তিত হয়েছে এদের ঘিরেই । এই বইতে লেখকের নিজের জীবনের অংশও বর্ণিত হয়েছে । তবে এটা তো বলাই হয় যে প্রতিটি লেখক মাত্রই প্রতিটি লেখাতে নিজেকে মিশিয়ে দেন । লেখক বর্ণনা করেছেন তাঁর নিজের এবং পরিবারের উপর নানা চাপ ও অত্যাচারের কথা । রক্ষীবাহিনী কর্তৃক তাঁদের সরকার কর্তৃক বরাদ্দকৃত বাড়ি দখল এবং তাঁদের উচ্ছেদ, তরুণ শিক্ষক হুমায়ূন আহমেদকে বাকসালে যোগদানে চাপ প্রদান - সবকিছুই বর্ণিত আছে । এতসব কিছুর মাঝেও ছড়িয়ে আছে হুমায়ূন আহমেদের স্বভাবসিদ্ধ হৃদয়গ্রাহী এপিগ্রাম । দেয়াল নিয়ে অনেক বিতর্ক হয়েছে এবং এখনও হয় । এমনকি বিতর্ক হাইকোর্ট পর্যন্ত গড়িয়েছে । তারপরও দেয়াল আজ সর্ব সমাদৃত । কিন্তু আফসোস! যে মানুষটি এই বইটি লিখলেন তিনি ের প্রকাশ দেখে যেতে পারেননি । তিনি আজ অন্য জগতের বাসিন্দা ।।
Was this review helpful to you?
or
না উপন্যাস, না ইতিহাস, না আত্মজীবনী...অখাদ্য!
Was this review helpful to you?
or
অসাধারণ অসাধারণ অসাধারণ
Was this review helpful to you?
or
মানুষ ও পশু যে শুধু বন্ধই খুজে , তা না , তারা প্রভুও খোঁজে " --- শফিক " মানবজাতির স্বভাব হচ্ছে সে সত্যের চেয়ে মিথ্যার আশ্রয়ে নিজেকে নিরাপদ মনে করে " ---- গদিনসীন পীর জাহাঙ্গীর " আমি মোটেই সাহসী নই , আমি ভীতু , তবে মাঝে মাঝে সময় ভীতুদের সাহসী করে তোলে " -- শফিক " সবাই চোখ কান খোলা রাখে , আমি নাকও খোলা রাখি " -- মেজর জিয়া --- ডায়লগ অফ দা বুক --- -- " আমার জীবনে অনেক ক্ষুদ্র মানুষ দেখেছি , কিন্তু আপনার মতন ক্ষুদ্র মানুষ দেখিনি!! " -- কর্নেল তাহের , বিচারের সময় প্রধান বিচারপতি কর্নেল ইউসুফ - কে -- বাংলার বীর সন্তানদের " দেয়াল " উপন্যাসে গল্পের ছলে তুলে আনায় হুমায়ুন আহমেদ কে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি ---
Was this review helpful to you?
or
পড়বো পড়বো করেও পড়া হচ্ছিলো না হুমায়ুন আহমেদের সর্বশেষ উপন্যাস “দেয়াল”। বইটি, ইতিহাস আশ্রিত। যেহেতু ইতিহাস আশ্রিত তাই একটা প্রশ্ন করা যেতেই পারে। ইতিহাসের সকল কথা কি সত্য?? ২০১১ সালের মাঝামাঝি সময়ে হুমায়ুন আহমেদ “দেয়াল” বইটি লেখা শুরু করেন। যার পাচঁটি পর্ব “অন্যদিনে” প্রকাশিত হয়। এরপর লেখকের ক্যান্সার চিকিৎসা চলাকালে বইটি লেখা চালিয়ে যান। যদিও চূড়ান্ত রূপ দিতে পারেননি। লেখকের অবর্তমানে বইটি প্রকাশের পর থেকেই বিতর্ক ছড়িয়ে পড়ে এবং সেই বিতর্ক আদালত পর্যন্ত গড়ায়। এরপর আদালতের রায়ে পরিবর্তিত রুপই আমরা পড়ছি। এই বইটি মুক্তিযুদ্ধের সময় থেকে বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ড এবং শেষ হয় মেজর জিয়াউর রহমানের হত্যাকান্ডের ঘটনা বর্ণনার মাধ্যমে। এই উপন্যাসটিতে লেখক সবগুলো ঘটনাকে একই সুতোয় বাঁধার চেষ্টা করেছেন। বইটি পড়াশেষ হলে দেখা যাবে কী নিপুন ভাবে অনেক গুলো চরিত্র এবং অনেকগুলো ঘটনা কিভাবে একটি আরেকটির সাথে যুক্ত!! এই বইয়ের ঘটনা ব্যাপ্তি ১৯৭১ থেকে ১৯৮১ পর্যন্ত লক্ষ্য করা যায়। এই সময়ের সমাজ, রাজনীতি, রাষ্ট্রব্যবস্থা সবই ছিলো ধোয়াশাপূর্ণ। এইজন্যই হয়তো হুমায়ুন আহমেদ তার চিরাচরিত ঢঙ্গে লিখেছেন, “ভাদ্র মাসের সন্ধ্যা। আকাশে মেঘ আছে। লালচে রঙ্গের মেঘ। এই মেঘে বৃষ্টি হয় না তবে দেখায় অপূর্ব। এই গাঢ় লাল, এই হালকা হলুদ, লালের সাথে খয়েরি মিলে সম্পুর্ণ অন্য রঙ। যিনি এই রঙ্গের খেলা খেলছেন তিনি মনে হয় সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছেন ” আমিও লেখকের সাথে একমত, ১৯৭১ থেকে ১৯৮১ এর দিকে যদি তাকাই তাহলে যে ঘটনা প্রবাহ আমরা দেখতে পাই তাতে সবই চমকে দেবার মত। আগে থেকে এই ঘটনা অনুমান করা অসম্ভবের কাছাকাছি। এই সময়ও বোধহয় প্রকৃতি সীদ্ধান্তহীনতায় ভুগছিলেন। আমরা, এই উপন্যাসকে বিশ্লেষন করলে কয়েকটা ভাগে ভাগ করতে পারি- ১) হুমায়ুন আহমেদের নিজের জীবন এবং তার পরিবারের ঘটনা। ২) অবন্তি এবং তার পরিবারের মাধ্যমে খালেদ মোশারফ, শফিক, কর্ণেল তাহের কে যুক্ত করা। যুদ্ধকালীন সময়ের চিত্র দেখাতে মাদ্রাসা, পীর পুত্র জাহাঙ্গীরের সাথে অবন্তির বিয়ে, এবং সেখান থেকে পালিয়ে আসাও ছিলো লক্ষ করার মত। ৩) এছাড়া, বাকশাল, বঙ্গবন্ধুর হত্যাকান্ড, রক্ষীবাহিনীর অত্যাচার, বঙ্গবন্ধুর হত্যার পর মানুষের উল্লাশ, জেল হত্যা, হত্যার পরিকল্পনাকারীদের বিরোধ এবং হত্যা, ক্ষমতার পালাবদল এবং শেষে মেজর জিয়াউর রহমানের কাছের মানুষের হাতে তার হত্যা। লেখক তার এই উপন্যাসে প্রশংসা এবং নিন্দা দুটোই করেছেন। একজায়গায় যেখানে সত্যবাদিতা এবং নিষ্টার কথা বলেছেন সেই মেজরের জোর করে ক্ষমতা দখলের নিন্দাও করেছেন। বইটি অনেকের কাছে অগোছালো লাগতে পারে কিন্তু পড়া শেষে আমার অনুভূতি হল, আপনি ঐ সময়ের প্রেক্ষাপট এবং অনেক প্রশ্নের উত্তর জানবেন হুমায়ুনীয় ঢঙ্গে। #হ্যাপি_রিডিং
Was this review helpful to you?
or
বইঃ দেয়াল লেখকঃ হুমায়ূন আহমেদ প্রকাশনীঃ অন্যপ্রকাশ এই বই নিয়ে তেমন কিছু বলবোনা!!!! আমরা অনেকেই মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস পড়তে ভালোবাসি মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বলতে আমরা শুধু ১৯৭১ সনের যুদ্ধকেই বুঝি কিন্তু, ১৯৭১ সনের পরে স্বাধীন বাংলার রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং বাংলাদেশের সার্বিক অবস্থা কিরকম হয়েছিল তা আমাদের অনেকেই জানিনা। ১৯৭১ সালের পরবর্তী সময় এর বাংলাদেশের করুণ দশা লেখক ফুটিয়ে তুলেছেন এই বইয়ে। কিভাবে ক্ষমতার জন্য কামরা-কামরি লেগেছিলো একটি স্বাধীন দেশের সেনাবাহিনীর কিছু কতিপয় সেনা সদস্য। কিভাবে ক্ষমতার লোভ মানুষ থেকে হায়নায় পরিনত করতে পারে, কিভাবে নিজের আপনজনদের সঙ্গেই বেঈমানী করা হয়েছিলো, কিভাবে এক শহিদ পরিবার রাস্তায় ঘুরছিলো আর অন্য শহিদ(?) পরিবার সরকারি সব সুবিধা ভোগ করছিলো। যুগ পাল্টে যায় পাল্টে যায় বেঈমানদের চেহারা, কিন্তু থেকে যায় তাদের পদচিহ্ন, থেকে যায় তাদের ইতিহাস। ধন্যবাদ প্রিয় লেখককে এই ইতিহাস গুলো বইবন্দি করে রাখার জন্য৷। ব্যাক্তিগত অভিমতঃ ৯/১০
Was this review helpful to you?
or
ami Deyal pore sontusto na.amar mone hoyese eta na upannash na etihas hoyese.information incomplete legese.
Was this review helpful to you?
or
বাংলাদেশের স্বাধীনতা পরবর্তী ঘটনা প্রবাহের উপর রচিত হয়েছে ইতিহাস আশ্রিত উপন্যাস ‘দেয়াল’ । বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্মম হত্যাকাণ্ড ও পরবর্তী রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট এর মূল উপজীব্য। লেখক এখানে বঙ্গবন্ধুর শাসনামল, বাকশাল গঠন, রক্ষী বাহিনীর কার্যক্রম, হত্যা পরবর্তী প্রতিক্রিয়া, জেল হত্যা, এবং এসব ঘটনায় মেজর রশীদ, মেজর ফারুক, খন্দকার মোশতাক প্রমুখের ভূমিকার স্পষ্ট বর্ণনা দিয়েছেন। পাশাপাশি খালেদ মোশাররফের ক্যু, মেজর জিয়াউর রহমা্নের আটকাবস্থা, কর্নেল তাহেরের অভিযান, জিয়ার ক্ষমতায় আসা, তাহেরেরে ফাঁসী, জিয়ার শাসনামল, বহির্বিশ্বের সাথে জিয়ার সম্পর্ক ইত্যাদি আলোচনা করেছেন। ২০১১ সালের শেষার্ধে ‘দেয়াল’ লেখার কাজ শুরু হয়। লেখকের জীবদ্দশায়েই দেয়ালের কয়েকটি অধ্যায় একটি বাংলা পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। এতে ‘দেয়াল’ ধাক্কা খায় কোর্টের দেয়ালে। ধারা বর্ণনায় পরিবর্তন আনায় যার মুক্তি মেলে। ২০১২ সালের মাঝামাঝি সময়ে লেখকের মৃত্যুকে দ্বিতীয় ধাক্কা হিসেবে দেখা যেতে পারে। এরপরও ২০১৩ এর বই মেলার শেষে এসে বইটি প্রকাশিত হয়। দাদা সরফরাজ খান আর নাতনি অবন্তি এক সাথে থাকে। তাদের বাবা মা বিদেশে অস্বাভাবিক জীবন যাপন করেন। অবন্তির গৃহ শিক্ষক শফিক। এদের মিথস্ক্রিয়ায় ঘটনা প্রবাহ এগুতে থাকে। মুক্তিযুদ্ধের সময় ঘটনাক্রমে পীর পুত্র জাহাঙ্গীরের সাথে অবন্তির বিবাহ। অবন্তির বাধাহীন বিবাহ প্রত্যাখ্যান। কাককালীয় ভাবে ‘র’ এর এজেন্ট রাধানাথের সাথে শফিকের সম্পর্ক এবং এর সুবাদে খন্দকার মোশতাক, খালেদ মোশাররফ প্রমুখ ব্যক্তিবর্গের সাথে শফিকের পরিচয়, কারাবরণ এবং আরো নানা বৈচিত্রময় ঘটনা উপন্যাসে প্রাণবন্ততা আনে। রক্ষীবাহিনী ভূমিকা ও বাকশাল গঠন নিয়ে আলোচনা করেন। নিজের জীবন ঘনিষ্ঠ উদাহরণ পেশ করেন। বিশেষ করে শহীদ পরিবার হিসেবে প্রাপ্ত বাড়ি থেকে এ বাহিনী কর্তৃক লেখক পরিবারের হয়রানির বিষয়টিও উল্লেখ করেন। বঙ্গবন্ধুকে রক্ষায় তাঁর ‘বিখ্যাত তর্জনী’ কে ফরমেশন সাইন করে গঠিত রক্ষীবাহিনীর নির্লিপ্ততাকে সমালোচনা করেন।এন্থনি মাসকারেনহাসের উদ্ধৃতি দিয়ে আওয়ামী নেতা কর্মীদের বঙ্গবন্ধুর কাছ থেকে অন্যায় স্বার্থ ভাগিয়ে নেয়া এবং তাঁকে কেন্দ্র করে চাটুকার ও অবৈধ সুবিধাকামী মানুষদের দেয়াল তৈরীর বিষয়টি উল্লেখ করেছেন। কোর্টের নির্দেশনানুযায়ী বঙ্গবন্ধুর সপরিবারে নিহত হওয়ার বর্ণনা সংশোধন করে ‘বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার’ রায় অনুসারে দেয়া হয়েছে। জেল হত্যার বর্ণনাও এসেছে জেল হত্যা মামলার রায় অনুযায়ী। মোশতাক সরকারে মেজর রশিদের ভূমিকা এবং তাদের নিবৃত করতে খালেদ মোশাররফের চেষ্টা, অতপর খালেদ মোশাররফের ক্ষমতা দখলের সাবলীল বর্ণনা এ বইতে উঠে এসেছে। কর্ণেল তাহের কে ‘মহাবীর’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। লেখকের সাথে তাহেরের পরিবারের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক থাকায় তিনি প্রভাবিত হতে পারেন বলে আনিসুজ্জামান বইয়ের ভূমিকায় উল্লেখ করেন। বন্দিদশা থেকে জিয়ার মুক্তিতে তাহেরের ভূমিকা, খালেদ মোশাররফের মৃত্যু, জিয়ার ক্ষমতায় আসা এবং তাহেরের ফাঁসীর দৃশ্য গুলো লেখক কালির অক্ষরে চিত্রিত করছেন। জিয়াউর রহমানের ক্ষমতায় আসা, কোর্ট মার্শালে বিদ্রোহের বিচার, ফারুক ও রশীদদের ছেড়ে দেওয়া, তাহেরর ফাঁসী, এবং গোলাম আজমকে দেশে আনা এসব বিবেচনায় তাঁর সমালোচনা করেছেন। কিন্তু সাধারণ জীবনযাপন, বিদেশের সাথে সুসম্পর্ক, দেশ পরিচালনা ইত্যাদি ইস্যুতে জিয়াকে প্রশংসা করেছেন। অন্যান্য উপন্যাসের মত এ উপন্যাসেও লেখক হুমায়ুন আহমেদের চমক সৃষ্টির বিষয় লক্ষণীয়। দুই পীরের উপস্থিতি এর গতিপ্রবাহে অন্য বাঁক এনেছে। বিভিন্ন কুসংস্কারের মাঝে তাদের ব্যবহারিক জীবনে বেশ ভাল কিছু দিক আছে। যেমন মেহমান ছাড়া খাবার না খাওয়া।অন্যদিকে হঠাৎ করে মানষমনের একান্ত ব্যক্তিগত কামনা, ছল-চাতুরী ইত্যাদি প্রকাশ্যে এনে পাঠকদের চমকে দেয়ার চেষ্টা রয়েছে।
Was this review helpful to you?
or
হুমায়ূন আহমেদ মানে অতি সাধারণ বিষয়গুলোকে অসাধারণ করে তোলা।সহজ সরল ভাষ্য কিন্তু প্রত্যেকটির যুক্তিগত ব্যাখ্যা। এই মানুষটিই শুধু পারে আমাদের প্রতিদিনের বেঁচে থাকার মুহূর্তগুলো সুন্দরভাবে উপস্থাপন করতে।যখন উনার বই পড়ি মনে হয় এটা কোন গল্প উপন্যাস নয় এটাতো আমার চতুর্দিকে ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলো যেগুলো তিনি কাগজে কলমে রূপ দিয়েছেন।তাঁর চলে যাওয়াটা আমার জন্য মেনে নেওয়া বেশ কঠিন ছিল।আমি জানি আমার চেয়েও আরো অনেকে এই মানুষটিকে ভালবেসে অনেক পাগলামি করে।দেয়াল হুমায়ূন আহমেদ এর শেষ উপন্যাস।এটি রাজনৈতিক ও মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক উপন্যাস।অনেকটা কষ্ট নিয়ে উপন্যাসটি পড়েছিলাম।এটিতে বঙ্গবন্ধু হত্যা পরিকল্পনা তা বাস্তবায়ন করা,, কারাগারে চার নেতা হত্যা সহ মুক্তিযুদ্ধের পরের সময়ের কিছু ঘটনার উল্লেখ এবং পরিশেষে জিয়ার হত্যাকান্ড দিয়ে সমাপ্ত ঘটেছে।এর সাথে সমান্তরালে চলেছে একটি চপলামতী অবন্তীর কাহিনী।অবন্তীর বাবার কোন খোঁজ নেই মা বাহিরে থাকে।দাদার সাথেই তার বসবাস।দুটি ভিন্ন আঙ্গিকের কাহিনী যুক্ত হয়ে রূপ পেয়েছে একটি। বইটি পড়লেই বোঝা যাবে :) বইটি যদিও প্রথমে বিতর্কিত ছিল এরপর কিছুটা পরিবর্তন আনা হয়েছে এবং পরিবর্তিত লিখাটাই প্রকাশিত হয়েছে।বইটি তথ্যবহুল।বইটি পড়ে যা জেনেছি তার অনেক কিছুই আমি আগে জানতাম না।এটা পড়ার পর জানার আগ্রহ বেড়ে গিয়েছিল। ইতিহাস পড়তে অনেকের হয়তো ভাল লাগেনা তাদের জন্য এই বইটি সহায়ক হিসেবে কাজ করবে।বাস্তবিক চরিত্র গুলো,ঘটনাগুলো লেখক তুলে ধরেছে তার সুন্দর লেখনীর মাধ্যমে। উপন্যাসের একটি অংশে লেখক তাঁর নিজের জীবনের সম্পর্কেও কিছু লিখেছেন। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত অনেক তথ্য রয়েছে এবং বই এর নাম রয়েছে।উপন্যাস এর যে অংশটা কাঁদিয়েছে সেটি হল বঙ্গবন্ধু এবং তাঁর পরিবারের হত্যাকান্ড। ছোট রাসেলের প্রতিও পশুগুলোর কোন মায়া কাজ করলোনা। নৃশংসভাবে পুরো পরিবারকে খুন করে ফেললো মানুষ নামের পশুগুলো।এছাড়া জেলে ৪ নেতার হত্যা সহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য রয়েছে।প্রত্যেকটি ঘটনাকে কেউ যদি আলাদাভাবে জানতে চায় তাহলে উপন্যাসে উল্লেখিত বইগুলো অনুসরণ করলেই হবে।হুমায়ূন প্রেমিক যেমন অনেক আছে উনাকে পছন্দ করেনা এমন কিছু মানুষও আছে। তারাও যদি একবার দেয়াল পড়ে তাহলে আফসোস করতে হবেনা বরং উপকৃত হবার জন্য হুমায়ূন আহমেদকে ধন্যবাদ জানাতে হবে 3
Was this review helpful to you?
or
বইটি মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক সাহিত্য। বইটির মেয়ে চরিত্রের নাম অবন্তি ..... নামটা পছন্দ হয়েছে ...... কিন্তু হাফেজ জাহাঙ্গিরের নাথে অবন্তি আর তার দাদাজান সরফরাজ খানের আচরণ ভালো লাগে নি ............ হাফেজ জাহাঙ্গির আধ্যাত্মিক মানুষ........... বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের পর পর সমসময়টা ছিল দারিদ্র ও দুর্ভিক্ষে জর্জরিত জননী। দেশের সার্বিক অবস্থা কেমন ছিল তার কিছু ধারণা বইটিতে পাওয়া যায় ..... মানুষ ক্ষমতার লোভে যে আচরণ করে, সেটা অবশ্যই সেই সমসময়ের একটি যুদ্ধ বিদ্ধোস্ত দেশের জন্য বাঞ্চনিয় নয় কিন্তু যা ঘটেছে ........ এখন সেটাই ইতিহাস, এখানে বলতে ইচ্ছা করছে ........ বাহিরের শত্রু খুব সহজেই চেনা যায় কিন্তু ঘরের শত্রু সনাক্ত করা খুব খুব কঠিন আবার প্রকৃতি তার নিজের নিয়মে চলতে থাকে ........... আর ইতিহাস ডিমান্ড করে দেশপ্রেমির তাজা রক্ত। ১৯৭৫-১৯৭৬ সাল বাংলদেশের ইতিহাসের কালো অধ্যায় লেখক (হুমায়ূন আহমেদ স্যার) সুন্দরভাবে উপন্যাসের আকারে তুলে এনেছেন। কুকুর আমার প্রিয় প্রাণীদের মধ্যে একটা। শফিকের দেওয়া তার (কুকুরটির) নাম কালাপাহাড় ........ এই নামটাও অস্থির, কালাপাহাড় শফিকের কথা বুঝতে পারতো ........ কালাপাহাড় হ্যাঁ সূচক উত্তরে একবার ঘেউ করে আর না সূচক হলে দুই বার ঘেউ ঘেউ করে ....... * স্যার উপন্যাসটি শেষ করতে পারেন নি
Was this review helpful to you?
or
অসম্ভব রকমের ভালো লাগলো।
Was this review helpful to you?
or
বিপুল মুগ্ধতা নিয়ে আসে প্রতিটি বছর আমার কাছে একুশের বইমেলা । অন্যবারের মত এবার আর মেলায় যাওয়া হয়নি , ভাবছিলাম মিস হবে এবার বই কেনা অবশেষে পাইলাম তা রকমারিতে। কারন কিছু সরলতার সাথে কিছু বইচিত্রতা তো পাব 'তাঁর' কাছে । নাহ আজ আর হবার নয় সে চলে গেছে অনেক দূরে সেই নাহ ফেরার দেশে । আমি চাওয়া মাত্রই পেয়েছি বইটি।
Was this review helpful to you?
or
মুক্তিযুদ্ধ। ৭১ এর রক্তহ্ময়ী আন্দলন।৩০ লাখ শহীদের আত্মত্যাগ।মা-বোনের উপর অসহনীয় অত্যাচার।মুক্তিযুদ্ধ সম্বন্ধে কতটুকুই বা জানি আমরা ?তরুণ প্রজন্মের কাছে এর প্রভাব কতটুকু ? এমন কিছু প্রশ্ন আছে যাদের উত্তর কুয়াশার মত।দূর থেকে আবছা শুধু দেখাই যায়,ধরা বা ছোয়া যায় না। এই প্রশ্নের উত্তরগুলুও তেমনি। আর এই সমস্যা থেকে রক্ষা করার জন্য আলো হাতে এগিয়ে এসেছেন অনেক কবি লেখক আর গন্যমান্য ব্যক্তিরা। তরুণ প্রজন্মের কাছে মুক্তিযুদ্ধকে করতে ছেয়েছেন আপন আলোয় আ্লোকিত। হুমায়ুন আহমেদ তাদেরই একজন। তিনি যেমন বলেছেন একাত্তরের কখা তেমনি পাঠকের সামনে তুলে ধরেছেন ১৯৭৫ এর ষড়যন্ত্র এবং রক্তঝরা নভেম্বরের কথা। তার রচিত দেয়াল বইটি এই ধারনারই বহিপ্রকাশ। ১৯৭৫এ জাতির জনক শেখ মুজিবুর রহমান কে হত্যা,তার হত্যামামলায় নিযুক্ত ব্যক্তি,খালেদ মোশারফ কে হত্যা এবং বীরযোদ্ধা তাহের কে ঠান্ডা মাথায় খুন,আবং হাজার হাজার তরুন অফিসার ষড়যন্ত্রের শিকার-এই বিষয়গুলো তিনি পাঠকদের কাছে স্পষ্ট করে তুলতে চেয়েছেন এই বইটির মাধ্যমে।পাশাপাশি তিনি জিয়াউর রহমানের চরিত্রের ২টি বিচিত্র দিকের ও উল্লেখ করেছেন।এসব পড়ার মাধ্যমে পাঠক অজানা অন্ধকারের পথ হতে আলোর পথে হাটতে শিখবে।১৯৭৫ এর ষরযন্ত্র ৭১ থেকে কিছু কম ছিল না।৭১ এর পর ৭৫ হল সবচেয়ে বড় আন্দোলনের আরেকটি ধাপ। বইটিতে ফাসি হবার কয়েক মিনিট আগের তাহেরের সাহসিকতা আমাকে সত্যি মুগ্ধ করেছে।তিনি বলেছিলেন,'এভাবে আত্ম্ত্যাগ না করলে সাধারন মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হবে কিভাবে?' এমনকি,তাকে যখন বলা হয়েছিল,ফাসির আগে তার শেষ ইচ্ছা কি ? তিনি বললেন,'আমার আত্মত্যাগের বিনিময়ে যেন মানুষেরা মুক্তি পায়।' আজ এই নতুন প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশে দাঁড়িয়ে আমরা যদি তার বলা কথাটি ভাবি তাহলে,আমরা কি সত্যি পেরেছি তার মহান আত্মত্যাগের মাধ্যমে সাধারন মানুষের সব অধিকার প্রতিষ্ঠিত করতে? এটি পাঠকের ব্যক্তিগত মতামত হতে পারে।
Was this review helpful to you?
or
হুমায়ুন আহমেদ স্যার এর এই উপন্যাসটি তার এক অতুলনীয় সৃষ্টি। মুক্তিযুদ্ধের উপর খুব কম বই এরকম নাটকীয় এবং সাবলিল ভাবে লিখা হয়েছে। আমাদের দুর্ভাগ্য স্যার আমাদের সাথে নেই। নাহলে তিনিও দেখতে পারতেন তার উপন্যাস টি কীরকম বিপুল পাঠক-প্রিয়তা পেয়েছে। আমি মনে করি, একজন দেশপ্রেমিক এবং একজন সচেতন ব্যাক্তি হিসেবে প্রত্যেকের বইটি পরা উচিৎ। সংগ্রহে রাখার মত ১ টি বই। স্যালুট হুমায়ুন আহমেদ!
Was this review helpful to you?
or
#রিভিউ বইঃ দেয়াল লেখকঃ হুমায়ুন আহমেদ প্রকাশকঃ অন্যপ্রকাশ ধরণঃ ঐতিহাসিক উপন্যাস পৃষ্ঠা সংখ্যাঃ ১৯৫ মূল্যঃ ৩২৩ টাকা (রকমারি) সার-সংক্ষেপঃ ‘ভাদ্র মাসের সন্ধা। আকাশে মেঘ আছে। লালচে রঙের মেঘ। যে মেঘে বৃষ্টি হয় না, তবে দেকায় অপূর্ব। এই গাঢ় লাল, এই হালকা হলুদ, আবার চোখের নিমিষে লালের সঙ্গে খয়েরি মিশে সম্পূর্ণ অন্য রঙ। রঙের খেলা যিনি খেলছেন মনে হয় তিনি সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছেন।’ এভাবেই সূচনা ঘটেছে হুমাযূন আহমেদের চার দশকের বর্ণময় লেখকজীবনের শেষ উপন্যাস ‘দেয়াল’- এর। ২০১১ সালের মাঝামাঝিতে ‘দেয়াল’ রচনা শুরু করেছিলেন তিনি। সে-সময় উপন্যাসের পাঁচটি পর্ব ধারাবাহিকভাবে ‘অন্যদিন’-এর প্রকাশিত হয়। এরপর বেশ কিছুদিন বিরতির পর যুক্তরাষ্ট্রে তাঁর ক্যানসার চিকিৎসা চলাকালে নতুন করে ‘দেয়াল’ রচনায় মনোনিবেশ করেন তিনি, যদিও শেষ পর্যন্ত উপন্যাসটির চূড়ান্ত রূপ দেয়ার সুযোগ পান নি। সূচনা-অনুচ্ছেদে আকাশের রঙবদলের খেয়ায় যে সিদ্ধান্তহীনতার কথা বলা হচ্ছে তা বিশেষ ইঙ্গিতবহ। যে সময়কে উপজীব্য করা হয়েছে ‘দেয়াল’-এ, তা একটি সদ্যস্বাধীন জাতির ভাগ্যকাশের চরম অনিশ্চয়তার কাল। উপন্যাসের কিছু চরিত্র বাস্তব থেকে নেওয়া, নাম-ধাম সবই বাস্তব, ঘটনা-পরস্পরাও বাস্তবেরই অংশ। লেখক যেহেতু উপন্যাস লিখেছেন, তাই আছে কিছু কাল্পনিক চরিত্র। গল্প আবর্তিত হয়েছে এদের ঘিরেও। নানা ঘটনার ঘনঘটায় ঢাকা পড়ে নি জীবনসৌন্দর্য আর জীবন-সত্যের সন্ধান। ইতিহাসের সত্য আর লেখকের সৃজনী ভাবন্য-দুইয়ে মিলে ‘দেয়াল’ পরিণত হয়েছে একটি হৃদয়গ্রাহী উপাখ্যানে। পাঠ-প্রতিক্রিয়াঃ দেয়াল হুমায়ুন আহমেদ স্যারের লেখা শেষ উপন্যাস। অনেকে গল্পটিকে অসমাপ্ত বললেও আমার কাছে তেমনটা মনে হয়নি। বরং বেশ ভালোভাবেই শেষ করা হয়েছে উপন্যাসটি। দেয়াল বইয়ের কাহিনী আবর্তিত হয়েছে ইতিহাসকে ঘীরে। ইতিহাস বলতে স্বাধীনতা পরবর্তিকালীন এদেশে ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলোকে নিয়ে তৈরী হয়েছে বইটি। দেয়ালের কাহিনীকে আমরা মূলত ৩টি আখ্যানে ভাগ করতে পারি। প্রথম আখ্যানটি হচ্ছে একটি মেয়েকে ঘিরে। নাম তার অবন্তি। বাবা নেই। মা থাকে বিদেশে অন্য মানুষের সাথে। অবন্তি থাকে তার দাদার কাছে। তার দাদা সরফরাজ খান কিছুটা রক্ষণশীল আর সেকেলে মানুষ। অবন্তিকে লেখা তার মায়ের চিঠি তিনি গোপনে খুলে পড়েন। অবন্তি তার দাদাকে চেনে। তবুও সে তাকে ছেড়ে যায় না। অন্যদিকে অবন্তির গৃহশিক্ষক শফিকের সাথেও তার একটি সূক্ষ্ম মিথষ্ক্রিয়া লক্ষ্য করা যায়। কাহিনীর দ্বিতীয় আখ্যানটি শুরু হয় বঙ্গবন্ধু হত্যার কাহিনী দিয়ে। তাকে হত্যার পরিকল্পনা, বাস্তবায়ন তুলে ধরা হয়েছে বইটিতে। এর মাঝে জেলহত্যা, কর্ণেল তাহেরের সামরিক প্রতিবাদের কথাও উঠে এসেছে কয়েকবার। কাহিনীর তৃতীয় আখ্যানে লেখক তুলে ধরেছেন তৎকালীন দেশের আর্থ-সামাজিক পরিস্থিতি। স্বাধীনতার পরবর্তি সময় দেশ ও জনগনের অবস্থার চিত্র বেশ ভালোভাবেই প্রকাশিত হয়েছে বইটিতে। এমনকি পরিস্থিতির বাস্তবতা তুলে ধরার জন্যে লেখক নিজের জীবনেরো কিছু বাস্তব অভিজ্ঞতার কথা বলেছেন গল্পে। একবার আমার এক বন্ধু আমাকে বলেছিল যে স্বাধীনতা পরবর্তি সময় থেকে জিয়া হত্যার আগ পর্যন্ত ইতিহাসটা কেমন যেন ধোয়াশা। এই ব্যাপারে কোন সরকারই কথা তোলে না। বাছা বাছা কিছু ঘটনা ছাড়া বাকি পুরোটাই ঘোলাটে। তৎকালীন দেশের অবস্থা কেমন ছিল, কেন বঙ্গবন্ধু মারা গেলেন, কেন জেলহত্যা হলো... এসব প্রশ্নের উত্তর সবাই ধরাবাঁধা নিয়মে দেয়। উওরে স্পষ্টতা পাই না।কথাটা আমার মাথায়ও যে আসে নি তা না। তবে এসব প্রশ্নের কিছুটা প্রচ্ছন্ন জবাব পেয়েছি দেয়াল উপন্যাসটিতে। দেয়াল উপন্যাসটি শুরু হয়েছে বঙ্গবন্ধু হত্যার পরিকল্পনা থেকে। আর শেষ হয়েছে জিয়া হত্যা দিয়ে। তবে পাঠকদের এটা জেনে রাখা উচিত যে এটি একটি উপন্যাস। ইতিহাস না। যদিও ইতিহাসকে ব্যবহার করা হয়েছে, তারপরেও কল্পনার জায়গাটা নিতান্তই কম না। দেয়াল উপন্যাসের আরো একটি ইতিবাচক দিক হচ্ছে এই গল্পের অনেক চরিত্রই বাস্তবে এখনো বিদ্যমান এবং বেশ ভালো অবস্থানে আছেন সমাজের। তার ভেতরেও লেখক তাদের কারো সম্পর্কে বলতে এতটুকু আটকাননি। এখানে আমাদের ইতিহাসের শোকাবহ পর্বের বর্ণনায় চিরারতিত গালভরা ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ দেওয়া হয় নি। বরং বঙ্গবন্ধুর শাসনকালে অনুবস্ত্রের অভাব এবং রক্ষী বাহিনীর অত্যাচার ও তাদের প্রতি সর্বসাধারণের ক্ষোভ ও ঘৃণার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। শেখ মুজিবকে বঙ্গপিতা, মহামানব ও বঙ্গবন্ধু বলা হলেও মৃত্যুতে তিনি লেখকের অতটা সহানুভূতি লাভ করেননি যতটা পেয়েছেন তাঁর পরিবারের শিশু ও নারীরা। বঙ্গবন্ধু-হত্যায় মানুষের মধ্যে থেকে যে প্রবল প্রতিবাদ হলো না, বরঞ্চ কোথাও কোথাও আনন্দ-মিছিল হলো... এসব কথাও উল্লেখ হয়েছে গল্পে। এমনকি লেখক মেজর জিয়া সম্পর্কেও বলতে ছাড়েন নি। তার ভাষ্যমতে, “শারিরিক অসুস্থতায় কাতর হয়ে প্রেসিডেন্ট সায়েম জিয়াকে প্রেসিডেন্ট বানাননি। জিয়া এই ঘোষণা দিতে তাকে বাধ্য করেছিলেন।“ এজন্য অবশ্য উপন্যাসটিকে বিতর্ক, সমালোচনা ও কোর্ট-কাচারীর মুখ দেখতে হয়েছে। তবে লেখকের এই সাহসিকতা আসলেই প্রশংশাযোগ্য। সবশেষে এটাই বলতে চাই, দেয়াল উপন্যাস লেখক হুমায়ুন আহমেদের অন্যান্য উপন্যাসের মত মুখরোচক ডায়লগ ও কাহিনীতে ভরা বই না। তার অন্যান্য বইয়ের তুলনায় এই বইটি একটু বেশিই আলাদা, একটু বেশিই ম্যাচুরড! সবার জন্যে এই বই না। তাছাড়া ইতিহাস নির্ভর বলে অনেকের কাছে বোরিংও লাগতে পারে। তবে ধর্য্য ধরে শেষ করতে পারলে পাঠক আসলেই মুগ্ধ হবেন। লেখক যত কাহিনী এগিয়েছে, ততই পাঠককে টেনে ধরেছেন। তাই যারা এখনো পড়েননি, দ্রুত পড়ে ফেলুন! নাহলে স্যারের অন্যতম মাস্টারপিস মিস করবেন। আর হ্যাঁ। প্রেম, ইতিহাস, বাস্তবতার পাশাপাশি স্যারের স্পেশালিটিও কিন্তু ছড়িয়ে আছে সারা বই জুড়ে। যেমন... # মানুষ ও পশু শুধু যে বন্ধু খোজে তা না, তারা প্রভুও খোজে। # এই পৃথিবীতে মূল্যবান শুধু মানুষের জীবন, আর সবই মূল্যহীন # কিছু বিদ্যা আম্নুষের ভেতরে থাকে, তা সে নিজেও জানে না। # মানবজাতির স্বভাব হচ্ছে সে সত্যের চেয়ে মিথ্যার আশ্রয়ে নিজেকে নিরাপদ মনে করে! রেটিংঃ ৪/৫
Was this review helpful to you?
or
দাদা সরফরাজ খান আর নাতনি অবন্তি এক সাথে থাকে। তাদের বাবা মা বিদেশে অস্বাভাবিক জীবন যাপন করেন। অবন্তির গৃহ শিক্ষক শফিক। এদের মিথস্ক্রিয়ায় ঘটনা প্রবাহ এগুতে থাকে। মুক্তিযুদ্ধের সময় ঘটনাক্রমে পীর পুত্র জাহাঙ্গীরের সাথে অবন্তির বিবাহ। অবন্তির বাধাহীন বিবাহ প্রত্যাখ্যান। কাককালীয় ভাবে ‘র’ এর এজেন্ট রাধানাথের সাথে শফিকের সম্পর্ক এবং এর সুবাদে খন্দকার মোশতাক, খালেদ মোশাররফ প্রমুখ ব্যক্তিবর্গের সাথে শফিকের পরিচয়, কারাবরণ এবং আরো নানা বৈচিত্রময় ঘটনা উপন্যাসে প্রাণবন্ততা আনে। রক্ষীবাহিনী ভূমিকা ও বাকশাল গঠন নিয়ে আলোচনা করেন। নিজের জীবন ঘনিষ্ঠ উদাহরণ পেশ করেন। বিশেষ করে শহীদ পরিবার হিসেবে প্রাপ্ত বাড়ি থেকে এ বাহিনী কর্তৃক লেখক পরিবারের হয়রানির বিষয়টিও উল্লেখ করেন। বঙ্গবন্ধুকে রক্ষায় তাঁর ‘বিখ্যাত তর্জনী’ কে ফরমেশন সাইন করে গঠিত রক্ষীবাহিনীর নির্লিপ্ততাকে সমালোচনা করেন।এন্থনি মাসকারেনহাসের উদ্ধৃতি দিয়ে আওয়ামী নেতা কর্মীদের বঙ্গবন্ধুর কাছ থেকে অন্যায় স্বার্থ ভাগিয়ে নেয়া এবং তাঁকে কেন্দ্র করে চাটুকার ও অবৈধ সুবিধাকামী মানুষদের দেয়াল তৈরীর বিষয়টি উল্লেখ করেছেন। কোর্টের নির্দেশনানুযায়ী বঙ্গবন্ধুর সপরিবারে নিহত হওয়ার বর্ণনা সংশোধন করে ‘বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার’ রায় অনুসারে দেয়া হয়েছে। জেল হত্যার বর্ণনাও এসেছে জেল হত্যা মামলার রায় অনুযায়ী। মোশতাক সরকারে মেজর রশিদের ভূমিকা এবং তাদের নিবৃত করতে খালেদ মোশাররফের চেষ্টা, অতপর খালেদ মোশাররফের ক্ষমতা দখলের সাবলীল বর্ণনা এ বইতে উঠে এসেছে। কর্ণেল তাহের কে ‘মহাবীর’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। লেখকের সাথে তাহেরের পরিবারের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক থাকায় তিনি প্রভাবিত হতে পারেন বলে আনিসুজ্জামান বইয়ের ভূমিকায় উল্লেখ করেন। বন্দিদশা থেকে জিয়ার মুক্তিতে তাহেরের ভূমিকা, খালেদ মোশাররফের মৃত্যু, জিয়ার ক্ষমতায় আসা এবং তাহেরের ফাঁসীর দৃশ্য গুলো লেখক কালির অক্ষরে চিত্রিত করছেন। জিয়াউর রহমানের ক্ষমতায় আসা, কোর্ট মার্শালে বিদ্রোহের বিচার, ফারুক ও রশীদদের ছেড়ে দেওয়া, তাহেরর ফাঁসী, এবং গোলাম আজমকে দেশে আনা এসব বিবেচনায় তাঁর সমালোচনা করেছেন। কিন্তু সাধারণ জীবনযাপন, বিদেশের সাথে সুসম্পর্ক, দেশ পরিচালনা ইত্যাদি ইস্যুতে জিয়াকে প্রশংসা করেছেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতা পরবর্তী ঘটনা প্রবাহের উপর রচিত হয়েছে ইতিহাস আশ্রিত উপন্যাস ‘দেয়াল’ । বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্মম হত্যাকাণ্ড ও পরবর্তী রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট এর মূল উপজীব্য। লেখক এখানে বঙ্গবন্ধুর শাসনামল, বাকশাল গঠন, রক্ষী বাহিনীর কার্যক্রম, হত্যা পরবর্তী প্রতিক্রিয়া, জেল হত্যা, এবং এসব ঘটনায় মেজর রশীদ, মেজর ফারুক, খন্দকার মোশতাক প্রমুখের ভূমিকার স্পষ্ট বর্ণনা দিয়েছেন। পাশাপাশি খালেদ মোশাররফের ক্যু, মেজর জিয়াউর রহমা্নের আটকাবস্থা, কর্নেল তাহেরের অভিযান, জিয়ার ক্ষমতায় আসা, তাহেরেরে ফাঁসী, জিয়ার শাসনামল, বহির্বিশ্বের সাথে জিয়ার সম্পর্ক ইত্যাদি আলোচনা করেছেন।
Was this review helpful to you?
or
এটি না ইতিহাসগ্রন্থ, না উপন্যাস, না কোন দলিল দস্তাবেজ, না প্রবন্ধগ্রন্থ না গল্পগ্রন্থ। একটি জগাখিচুরি পুস্তক অথবা জ্যাক আব অলট্রেড...
Was this review helpful to you?
or
আমি হুমায়ুন আহমেদের বিশাল ভক্তশ্রেণীর একজন নই । তবে দেয়াল উপন্যাসটি এককথায় অনবদ্য । এর প্রধান কারণ হল,উপন্যাসের পটভূমি রচিত হয়েছে সেই সময়টিকে ঘিরে,যাকে নিয়ে প্রচুর জল্পনা থাকলেও লেখা খুব বেশি নেই । একজন ঔপন্যাসিকের দৃষ্টিতে তত্কালিন সোশ্যো-পলিটিকাল পরিস্থিতির চিত্রায়ন সত্যিই অসাধারণ । এর মাধ্যমে আরেকটি জিনিস সবার জানার সুযোগ হয়েছে । সেটি হল ইতিহাসের প্রতিশোধ । বঙ্গবন্ধু ও চারনেতা হত্যার পেছনের মানুষগুলা কিন্তু কেউ রেহাই পায়নি । নিজেরাই নিজেদের একে একে নিশ্চিহ্ন করেছে । ইতিহাস এভাবেই সমতা রক্ষা করে ।