User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
প্রাঞ্জল ভাষায় লিখা।
Was this review helpful to you?
or
very
Was this review helpful to you?
or
This book will take you to a most common yet heartiest environment of Bengal in mid Twentieth century.
Was this review helpful to you?
or
বইটির কিছু অংশ...‘আমার কথায় শোভা খুব দুঃখ পেল। পড়ার ঘরে কিছুক্ষণ গুম হয়ে বসে থেকে শেষে অনুমতি না নিয়েই চলে গেল। মূলত এভাবেই শোভার সঙ্গে আমার ভাঙন। যদিও এক দিনে তা হয়নি, ভবিষ্যতের আরও ঘাত-প্রতিঘাত ও অবজ্ঞা শোভাকে সরিয়ে নিয়ে যায়। তবু এ কথা আজ কী করে অস্বীকার করি, আমার কবিতাই আমার প্রথম কিশোরী সঙ্গিনীকে বিবেকহীনভাবে বিচ্ছিন্ন করে দেয়। কবিতার সঙ্গে এই অসমযুদ্ধে যদিও শোভার মতো এক সামান্য কিশোরী পরাজয় স্বীকারে একদা বাধ্য হয়েছিল, তবু এ কথাও আমি স্বীকার করি, সে-ও কবিতাকে সহজে ছেড়ে দেয়নি। তার আর্ত চোখ দুটি দিয়ে সে-ও কবিতাকে আমার উদ্ভাবিত বহু উপমা ও প্রতিতুলনাকে ছিন্নভিন্ন করে দিতে সক্ষম হয়েছিল।’ আশা করি বুঝতেই পারছেন কবি আল মাহমুদ সম্পর্কে জানতে পারবেন,আরও গভীর ভাবে,আরও বিশদ।সবাইকে বইটি পড়ার জন্য রিকমেন্ড করতেই পারেন।
Was this review helpful to you?
or
আল মাহমুদ বাংলা ভাষার প্রধান কবি। লোকজ ও মাটিবর্তী অনুষঙ্গকে তিনি সাবলীলভাবে তুলে আনেন তাঁর কবিতায়। ফলে, আধুনিক হয়েও তিনি শিকড়বিচ্ছিন্ন নন। ১৯৭৩ সালে প্রকাশিত কবির তৃতীয় কাব্যগ্রন্থ সোনালী কাবিন বাংলা কবিতার ইতিহাসে একটি মাইলফলক। কবিতার পাশাপাশি কথাসাহিত্যেও আল মাহমুদ সমান গুরুত্বপূর্ণ। ১৯৭৫ সালে কবির প্রথম ছোটগল্প সংকলন পানকৌড়ির রক্ত প্রকাশিত হলে তা ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায়। পরিমিতিবোধের কারণে সমূহ প্রশংসার জোয়ারে ভেসে যাননি তিনি। গল্প লিখেছেন পরিকল্পিতভাবে। কাবিলের বোন ও উপমহাদেশ উপন্যাস দুটি আমাদের মুক্তিযুদ্ধের পটভূমিকায় লেখা উল্লেখযোগ্য উপন্যাস হিসেবেই বিবেচিত হচ্ছে। কবিতা, ছোটগল্প, উপন্যাস, প্রবন্ধ ইত্যাদি মিলিয়ে তাঁর প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা ৪০টির বেশি। ১১ জুলাই ১৯৩৬ সালে জন্ম নেওয়া এই কবির শৈশব কেটেছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়। যেভাবে বেড়ে উঠি কবির আত্মজৈবনিক উপন্যাস। আল মাহমুদের শৈশব, বেড়ে ওঠা, রাজনীতি, কবিতায় আসক্তি, দ্বিতীয় মহাযুদ্ধ, ভাষা আন্দোলন ইত্যাদি প্রসঙ্গ সাবলীলভাবে উঠে এসেছে এ উপন্যাসে। কবির পূর্বপুরুষেরা আনুমানিক ১৫০০ সালের দিকে বাংলাদেশের ভাটি অঞ্চলে প্রবেশ করেন। মূলত ইসলাম প্রচারের জন্যই তাঁরা এ অঞ্চলে আসেন। কবির বাল্যকালের যে বর্ণনা এখানে রয়েছে, তার মাধ্যমে বিশ শতকের প্রথমার্ধের বাংলাদেশের সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারের সংস্কৃতির সঙ্গে আমরা পরিচিত হয়ে উঠি। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার তৎকালীন পরিবেশ, হিন্দু-মুসলিম সংস্কৃতি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ইত্যাদি বিষয় সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা হয় পাঠকের। বিদ্যালয়ে পড়ার সময় সংখ্যাগরিষ্ঠ হিন্দু ছেলেদের নির্যাতন এবং সে সময়ের একজন মুসলিম ছাত্রের নানা অসুবিধার কথা ফুটে উঠেছে কবির শিক্ষাজীবনের বর্ণনায়। উপমহাদেশের বাস্তবতায় মুসলমানরা ইংরেজি শিক্ষা এবং সংস্কৃতি গ্রহণ করে হিন্দুদের অনেক পরে। ফলে ওই সময়ে স্কুলপড়ুয়া মুসলিম ছাত্র ছিল হাতেগোনা। আর এসব মুষ্টিমেয় ছাত্র প্রতিনিয়ত ধনবান হিন্দু অভিভাবকের সন্তান কর্তৃক নিগ্রহের শিকার হতো। ও রকম পরিবেশের মধ্য দিয়েও কবির যে শিক্ষাজীবন চলছিল, তাতে সাময়িক ছেদ পড়ে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কারণে। কাপড়ের ব্যবসা নষ্ট হলে কবির বাবা বেঙ্গল ফায়ার সার্ভিসে কর্মকর্তা পদে চাকরি নেন। মূলত এই যুদ্ধই কবির মানসলোক এবং বাস্তব পৃথিবীকে ওলট-পালট করে দেয়। পরিচিত পৃথিবীর দৃশ্যপট বদলাতে থাকে। শৈশব-কৈশোরের নারী চরিত্রেরা, আলকি, সাদেকা, সুফিয়া, শোভা কিংবা বিশিদিদি, যাদের বিভিন্ন ভূমিকা প্রভাবিত করেছে কবির পরবর্তী জীবনকে, উপন্যাসটি পাঠের প্রাক্কালে তাদের আমরা চিনে ফেলি, তারা যেন আমাদেরই শৈশব-কৈশোরের পরিচিতজন। তাদের মমতা আর ভালোবাসায় গ্রামীণ বাংলার একটি দুরন্ত কিশোরের বেড়ে ওঠাকে চিত্রকল্পময় করে কবি আমাদের সামনে হাজির করেন। নজরুল এবং রবীন্দ্রনাথ পড়া থাকলেও কবির ভেতরে কবিতা লেখার প্রথম অনুপ্রেরণা আসে সম্ভবত জীবনানন্দ দাশের কাছ থেকে। মহাপৃথিবী কাব্যগ্রন্থ পাঠের পর তাঁর এ রূপান্তর ঘটে। তখনকার অনুভূতি সম্পর্কে কবি বলছেন, ‘হঠাৎ মনে হলো, এ ধরনের বক্তব্য আমারও আছে, আমিও লিখতে পারি।...বারবার নিজের লেখা লাইনগুলো পড়তে লাগলাম। যতবার পড়ি, ব্যবহূত শব্দ বদলে আরও অর্থবহ নতুন শব্দ নিজের অজান্তেই আমাকে প্ররোচনা দেয়। হঠাৎ মনে হলো, শব্দের বুঝি অদ্ভুত গন্ধ আছে, যা কেবল কবিরাই টের পায়। আমার মধ্যেও সেই অলৌকিক ঘ্রাণশক্তি অনুভব করে আমি মেতে উঠলাম।’ কবির পরবর্তী জীবনে আর কখনোই এ মুগ্ধতা কাটেনি, একের পর এক রূপরসগন্ধময় সব কবিতা লিখে বাংলা কবিতাকে উত্তরোত্তর সমৃদ্ধ করে তুলেছেন। কৈশোরে বামপন্থী রাজনীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন ঘটনাচক্রে। ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ভাষা আন্দোলনের পক্ষে সক্রিয় কর্মকাণ্ড চালাতে থাকেন। আন্দোলনের পক্ষে প্রচারিত লিফলেটে ব্যবহূত হয় কবির কবিতা, যে কারণে পুলিশের নজরে পড়েন তিনি এবং কিছুদিন আত্মগোপন করে থাকেন। যেভাবে বেড়ে উঠি উপন্যাসে আল মাহমুদ তাঁর কৈশোরের বাংলাদেশের একটি মনোগ্রাহী বর্ণনা দিয়েছেন। কবি হিসেবে পরবর্তী সময় তাঁর বেড়ে ওঠার পেছনে যেসব অনুষঙ্গ বড় ধরনের প্রভাব রেখেছে, তারই কাব্যিক বয়ানে এটি হয়ে উঠেছে অনন্য।