User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
awsome
Was this review helpful to you?
or
ছোট্ট মেয়ে দূর্গার বিস্তৃতিও খুব ছোট। সারাদিন দূর সম্পর্কের পিসীমা ইন্দির ঠাকরুনের সঙ্গে সঙ্গে থাকা, সন্ধাবেলায় পিসীমার জীর্ণ ঘরের রোয়াকে ছেড়া মাদুর পেতে জ্যোৎস্নায় ভিজে গল্প শোনা আর মায়ের হালকা শাষন এই নিয়েই তার দিন গুলো যায় বেশ। এমন সময় মায়ের কোল আলোয় ভাসিয়ে আসে তার ফুটফুটে একটা ছোট ভাই 'অপু'। সুচনা হয় ভাইবোন নামের একটি মধুর সম্পর্কের। তারা ধীরে ধীরে বড় হতে থাকে। অপুও আজকাল খুব দুরন্ত। দুর্গা আর অপু মিলে সদা চিরঞ্জীব গ্রাম্য প্রকৃতির প্রত্যেকটি বিষয়কে যেন আবিষ্কার করে নতুনভাবে। প্রত্যেকটি ছোট কিন্তু সদা সুন্দর প্রাকৃতিক পরশগুলোকে তারা অনুভব করতে থাকে আর আশ্চর্য হতে থাকে। হঠাৎ বিধাতার মূঢ়তায় দারিদ্র্যের কষাঘাতে জর্জরিত তাদের ছোট্ট পরিবারের একজন সদস্য কমে যায়। দারিদ্র্যের অভিশাপ থেকে বাঁচতে তাই আর দেরী না করে একটু আশার আলোর সন্ধানে তাকে গ্রামের ছায়ার পাহাড়ায় রেখেই পরিবারটি পাড়ি জমায় নতুনের পানে। রচিত হয় আরেকটি অধ্যায়ের যা পাঠকমনে নতুন আবেশ সৃষ্টি করতে বাধ্য করে। পাঠ প্রতিক্রিয়া: উপন্যাসটিতে শহুরে উপাদান গুলোকে রীতিমত উপেক্ষা করে গ্রামীন পরিবেশ প্রাধান্য পেয়েছে। হরিহর কিংবা সর্বজয়ার মতো প্রধান চরিত্র গুলোকে অতিক্রম করে, দারিদ্র দূর্দশার চিত্রকে ছাপিয়ে ভাইবোনের অকৃত্রিম সম্পর্কই উপন্যাসটিতে জীবন্ত হয়ে উঠেছে। তবে বাস্তব জীবনের কঠোর যুদ্ধও অত্যন্ত দারুনভাবে প্রতীয়মান হয়েছে।
Was this review helpful to you?
or
একজন নারীর কিরকম অনুভূতি হয় যখন সে ক্রমাগতভাবে নির্যাতিত হয়, কারণ তার কোন আয়ের উৎস নেই? যখন একজন নারী তার জীবনের শেষ পর্যায়ে চলে আসে, তখন তার সামাজিক পরিস্থিতি কেমন হয়? যখন কোন নারী অল্পবয়সে স্বামীহারা হয় এবং সমাজ তাকে আবার বিয়ে করবার অনুমতি দেয় না তখন সেই নারীর সামাজিক অবস্থান কোথায় দাঁড়ায়? এই সব প্রশ্নের উত্তর বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের পথের পাঁচালী বইয়ে রয়েছে। এই উপন্যাসের প্রথম অংশে আমরা তৎকালীন সমাজ ব্যবস্থার অন্যতম ত্রুটি বাল্যবিবাহ ও যৌতুককে প্রকট আকার ধারণ করতে দেখি। নিশ্চিন্দিপুর গ্রামকে কেন্দ্র করে এ উপন্যাসের প্রেক্ষাপট। গ্রামের মেয়ে ইন্দিরঠাকুরনের বিয়ে অল্পবয়সে এমনই এক লোকের সাথে লোকের সাথে দেয়া হয়, যে বেশি যৌতুকের লোভে অন্যত্র বিয়ে করেন এবং আর কখনও ফিরে আসে না। তখন আয়হীন ইন্দিরঠাকুরনের স্থান হয় তার বাবার বাড়িতে এবং তাদের ও তার ভাইয়ের মৃত্যুর পর তার দূরসম্পর্কের আত্মীয় হরিহরের বাড়িই তার স্থান হয়। সেখানে প্রতিমুহূর্তে তাকে মনে করিয়ে দেয়া হত যে সে একজন আশ্রিতা ছাড়া আর কেউ নয়। সে প্রায়শই বাড়ি থেকে বেরিয়ে যেত, কিন্তু দিনশেষে তার পথ এসে শেষ হত হরিহরের বাড়িতেই। একবার ঘটনাক্রমে বাড়ি থেকে তাকে একেবারে বের করে দেয়া হয় এবং মর্মান্তিকভাবে তার জীবনের ইতি ঘটে। আম-আঁটির ভেঁপু এই উপন্যাসের দ্বিতীয় অংশ ‘আম আঁটির ভেঁপু’। হরিহর আর সর্বজয়ার দুই সন্তান মেয়ে দূর্গা ও ছোট ছেলে। এই চারটি প্রধান চরিত্রকে কেন্দ্র করেই উপন্যাসের এ অংশের বিকাশ। গ্রামের অবারিত পরিবেশে বেড়ে ওঠা অপু দূর্গা দুই ভাইবোন একে অপরেরর প্রতি অন্তপ্রান। তাদের বাবা বংশে কুলীন ব্রাহ্মণ হলেও তাহারা অর্থ অভাবে কোন মতে দিনগুজরান করেন। মা সর্বজয়া সন্তানদের মুখে ভালো খাবার তুলে দিতে পারেন না বলে মরমে ব্যাথিত থাকেন।দুই ভাইবোন বনেবাদাড়ে ঘুরে বেতফল, পানিফল,অপরিপক্ক আমের গুটি, কুল, বুচিফল ইত্যাদি খেয়ে মহাতৃপ্ত হয়।জীবনে এরা কোন ভাল খাবার খায়নি। রেলগাড়ির রাস্তা দেখার জন্য তারা অনেক দূর চলেযায় কাউকে না বলে। অভাবের জন্য স্বাভাবিক ভাবেই কিশোরী দূর্গার ছিল কিছুটা হাতটান স্বভাব।এজন্য পাড়ার জেঠিমা এসে কয়েক বার দূর্গা ও তার মাকে অপদস্থ করে যায়। তাদের বাবা ভাগ্যের সন্ধানে নানান জায়গায় ঘুরে বেড়ায়।বাড়িতে সংসার চালানোর মত টাকা না থাকায় সর্বজয়া ঘটিবাটি বিক্রি করে খেয়ে না খেয়ে দিনপাত করে।অপুর পড়ার আগ্রহ থাকলেও তা আর হয়ে ওঠেনা দরিদ্রের কষাঘাতে। বহুদিন ম্যালেরিয়ায় ভুগে দূর্গা শয্যাশায়ী।এমন দূর্দিনে নেমে আসে প্রাকৃতিক দূর্যোগ। বৃষ্টি-বন্যা-ঝড়। প্রায় বিনা চিকিৎসায় মারা যায় দূর্গা নামের সদাচঞ্চল কিশোরী। অপু হয়ে পড়ে সাথীহারা প্রানহীন বালক। অক্রুর সংবাদ সন্তান হারানো হরিহর আর সর্বজয়ার কিছুতেই আর মন টেকেনা এ গায়ে। হরিহর সব কিছু পানির দামে বেচে দিয়ে গায়ের পাঠ চুকিয়ে কাশী চলে যান পরিবার নিয়ে। সেখানে নতুন সংসার প্রথমে ভালোই চলছিল কিছুদিন। স্বাচ্ছন্দ্যের স্বাদ পেতে না পেতেই হরিহর নিউমোনিয়া বাধিয়ে বসেন। কিছুদিন শয্যাশায়ী থেকে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। বিদেশ বিভূইয়ে বালকপুত্র অপুকে নিয়ে তার মা অথই পাথারে পড়লেন। কোন উপায় না পেয়ে এক ধনী গৃহস্থের বাড়িতে রাধুনীর চাকুরি নেন সর্বজয়া। সেখানে না আছে স্বাধীনতা না আছে সন্মান।রাধুনির ছেলে হয়ে বাড়ির ছেলেদের সাথে মেশার অপরাধে অপুকে মার খেতে হয়।সর্বজয়া কষ্টে চুরমার হতে থাকে ভিতরে ভিতরে। মনে পড়ে অতীতের পুরানো দিনের কথা। মনে পড়ে সেই নিশ্চিন্দিপুর গ্রাম। অপু একদিন বড়হয়ে আয় রোজগার করবে, তাদের কষ্টের দিন পাল্টে যাবে এমনি স্বপ্নে নিজেকে বিভোর রেখে আত্মপ্রসাদ পেতে চান অপুর মা সর্বজয়া। সর্বজয়ার চোখের অশ্রু মোছার জন্যও কেউ ছিল না। সবাই তার কষ্টের সুযোগ নিতে চায়। সাহায্যের হাত কেউ বাড়ায় না। অবশেষে সে অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে ছেলে অপুকে নিয়ে তার নিজ গ্রাম নিশ্চিন্দিপুরের পথে রওনা হয়। কিন্তু সে তার সঠিক পথ খুঁজে পায় না। কিন্তু বলাই বাহুল্য যে এই সামাজিক বৈষম্য আজকের একবিংশ শতাব্দিতে এই উন্নত সমাজেও পরিলক্ষিত হয়। বস্তুত এই উপন্যাস আদি ও বর্তমান সামাজিক উত্থান-পতন ও সামাজিক কুসংষ্কারেরই প্রতিচ্ছবি। মন্তব্য- পথের পাচালী কালজয়ী অমর সৃষ্টি।উপন্যাসের আড়ালে এটি লেখকের আত্মজীবনী বলে অনেক সাহিত্য সমালোচকের ধারনা।অপু দূর্গা পাঠকের হৃদয়ে বেচে থাকবে চিরকাল।
Was this review helpful to you?
or
পথের পাঁচালী হলো প্রখ্যাত সাহিত্যিক বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত একটি বিখ্যাত উপন্যাস। বাংলার গ্রামে দুই ভাইবোন অপু আর দুর্গার বেড়ে ওঠা নিয়েই বিখ্যাত এই উপন্যাস।সমগ্র উপন্যাসটি তিনটি খণ্ড ও মোট পঁয়ত্রিশটি পরিচ্ছেদে বিভক্ত। খণ্ড তিনটি যথাক্রমে বল্লালী বালাই (এখানে ইন্দির ঠাকরূনের বর্ণনা দেওয়া হয়েছে), আম-আঁটির ভেঁপু (এখানে অপু-দুর্গার একসাথে বেড়ে ওঠা, চঞ্চল শৈশব, দুর্গার মৃত্যু, অপুর সপরিবারে কাশীযাত্রার বর্ণনা দেওয়া হয়েছে) এবং অক্রূর সংবাদ।এই খন্ডে অপুদের কাশীজীবন, হরিহরের মৃত্যু, সর্বজয়ার কাজের জন্য কাশীত্যাগ এবং পরিশেষে নিশ্চিন্দিপুরে ফিরে আসার কাহিনী বর্ণিত হয়েছে।বইটিতে পাঠের মাধ্যমে একজন পাঠক প্রাচীনকালের সমাজ ব্যবস্থা,পল্লী প্রকৃতি,সামাজিক ত্রুটি যেমন: বাল্যবিবাহ ও যৌতুক প্রথা,স্বামীহারা নারীদের জীবন সংগ্রাম,গ্রামের মানুষের সরলতা ইত্যাদি সম্পর্কে জানতে পারবে।বইটি অামাদের অাবার শৈশবে ফিরিয়ে নিয়ে যাবে।বইটি পড়ে আমি অনেক সচেতন হয়েছি এবং অসহায় মানুষের পাশে দাড়ানোর জন্য আরেকটু অনুপ্রেরণা পেয়েছি ।খুবই চমৎকার ছিলো উপন্যাসটি। পরবর্তী কালে বিখ্যাত বাঙালি চলচ্চিত্র পরিচালক সত্যজিৎ রায় এই উপন্যাসটি অবলম্বনে পথের পাঁচালী (চলচ্চিত্র) নির্মান করেন যা দর্শকদের কাছে ব্যাপক সাড়া পায়। তাই পাঠক দেরি না করে বাংলা সাহিত্যের অন্যতম সেরা এই উপন্যাসটি এখনোই পড়ে ফেলুন।
Was this review helpful to you?
or
'পথের পাঁচালী' প্রখ্যাত সাহিত্যিক বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়-এর লেখা একটি উপমহাদেশখ্যাত সামাজিক উপন্যাস। এটি উপন্যাস হলেও পড়ার সময় একটিবারের জন্যও মনে হয় না যে এটা উপন্যাস। বরং লেখকের স্বচ্ছ-সাবলীল ভাষায় আমাদের সমাজের বাস্তব ও জীবন্ত ছবিটিরই একটি সহজ-স্বাভাবিক প্রতিফলন ঘটেছে এই উপন্যাসে। আমরা, তরুণ প্রজন্ম, কখনও কী ভেবেছি যে একজন নারীর কিরকম অনুভূতি হয় যখন সে ক্রমাগতভাবে নির্যাতিত হয়, কারণ তার কোন আয়ের উৎস নেই? যখন একজন নারী তার জীবনের শেষ পর্যায়ে চলে আসে, তখন তার সামাজিক পরিস্থিতি কেমন হয়? যখন কোন নারী অল্পবয়সে স্বামীহারা হয় এবং সমাজ তাকে আবার বিয়ে করবার অনুমতি দেয় না, তখন সেই নারীর সামাজিক অবস্থান কোথায় দাঁড়ায়? এই সব প্রশ্নের উত্তর বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের “পথের পাঁচালী” বইয়ে রয়েছে। এই উপন্যাসের প্রথম অংশে আমরা তৎকালীন সমাজ ব্যবস্থার অন্যতম ত্রুটি বাল্যবিবাহ ও যৌতুককে প্রকট আকার ধারণ করতে দেখি। ইন্দিরঠাকুরনের বিয়ে অল্পবয়সে এমনই এক লোকের সাথে লোকের সাথে দেয়া হয়, যে বেশি যৌতুকের লোভে অন্যত্র বিয়ে করেন এবং আর কখনও ফিরে আসে না। তখন আয়হীন ইন্দিরঠাকুরনের স্থান হয় তার বাবার বাড়িতে, এবং তাদের ও তার ভাইয়ের মৃত্যুর পর তার দূরসম্পর্কের আত্মীয় হরিহরের বাড়িই তার স্থান হয়। সেখানে প্রতিমুহূর্তে তাকে মনে করিয়ে দেয়া হত যে সে একজন আশ্রিতা ছাড়া আর কেউ নয়। সে প্রায়শই বাড়ি থেকে বেরিয়ে যেত, কিন্তু দিনশেষে তার পথ এসে শেষ হত হরিহরের বাড়িতেই। একবার ঘটনাক্রমে বাড়ি থেকে তাকে একেবারে বের করে দেয়া হয় এবং মর্মান্তিকভাবে তার জীবনের ইতি ঘটে। এই উপন্যাসের দ্বিতীয় অংশ ‘আম আঁটির ভেঁপু’-এ অত্যন্ত সুচারুভাবে হরিহরের সন্তানদ্বয়- বড়মেয়ে দূর্গা ও ছোট ছেলে অপুর টক-মিষ্টি সম্পর্ক তুলে ধরা হয়েছে। দূর্গা একপর্যায়ে অপুকে মারে, কারণ সে প্রতিবেশীর বাড়ি থেকে চুরি করে আম খাওয়ার ঘটনা বলে দেয়। এই কারণে তাকে প্রতিবেশীর কথাও শুনতে হয়। রাগের মাথায় দুর্গার মা সর্বজায়া ওকে বকাবকি করেন। উপন্যাসের এক পর্যায়ে ম্যালেরিয়া জ্বরের শেষ পর্যায়ে এসে দুর্গা মারা যায়। উপন্যাসের শেষ অংশ ‘অক্রুর সংবাদে’ চিরাচরিত বাংলার বড়লোক-গরীবের বৈষম্যের কথা তুলে ধরা হয়েছে। লেখক সাফল্যের সাথে দেখিয়েছেন, যে একজন ব্রাক্ষ্মণ নারীর(সর্বজয়া) কি অবস্থা হয়, যখন অর্থের জন্য তাকে কাজের লোকের কাজ করতে হয়। দুর্গার মৃত্যুর পর তারা গ্রাম ত্যাগ করে অন্যত্র চলে যায়। সেখানে এক পর্যায়ে জ্বরে স্বামী হরিহরও মারা যায়। তার চোখের অশ্রু মোছার জন্যও কেউ ছিল না। সবাই তার কষ্টের সুযোগ নিতে চায়। সাহায্যের হাত কেউ বাড়ায় না। অবশেষে সে অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে ছেলে অপুকে নিয়ে তার নিজ গ্রাম নিশ্চিন্দিপুরের পথে রওনা হয়। কিন্তু সে তার সঠিক পথ খুঁজে পায় না। কিন্তু বলাই বাহুল্য যে এই সামাজিক বৈষম্য আজকের একবিংশ শতাব্দিতে এই উন্নত সমাজেও পরিলক্ষিত হয়। বস্তুত এই উপন্যাস আদি ও বর্তমান সামাজিক উত্থান-পতন ও সামাজিক কুসংষ্কারেরই প্রতিচ্ছবি।