User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
মুক্তিযুদ্ধের সত্য কাহিনি নিয়ে রচিত আনিসুল হকের অসাধারণ একটি একটি উপন্যাস সংকলন
Was this review helpful to you?
or
আনিসুল হকের অনেক বই পড়েছি, ব্যক্তিগতভাবে আমার কাছে মনে হয়েছে "মা" উপন্যাসটি তার শ্রেষ্ঠ সৃষ্টি। মহান মুক্তিযুদ্ধে আমাদের কত কিছুর বলিদান করা লেগেছিল সেটা আমরা এই প্রজন্মেরা ভাবতেও পারি না,মা উপন্যাসটি আমাকে শহীদ আজাদের মায়ের কবরে টেনে নিয়েগেছে। এই উপন্যাস টি আমি আমার মাকে উপহার দিয়েছি।
Was this review helpful to you?
or
আমার পড়া সেরা বইগুলোর একটি,,,,
Was this review helpful to you?
or
ভালো
Was this review helpful to you?
or
Informative.
Was this review helpful to you?
or
nice book
Was this review helpful to you?
or
মাত্র ৫ দিনে ডেলিভারি পায়েছি
Was this review helpful to you?
or
বইতি খুব ভাল
Was this review helpful to you?
or
good
Was this review helpful to you?
or
'মা' অসাধারণ একটি উপন্যাস। সম্ভবত আমার পড়া সেরা একটি বই।
Was this review helpful to you?
or
Excellent books...every youngstars should read it
Was this review helpful to you?
or
amazing
Was this review helpful to you?
or
অত্যন্ত হৃদয়স্পর্শী একটি বই ।
Was this review helpful to you?
or
-মা,কী করব?এরা তো খুব মারে।স্বীকার করতে বলে।সবার নাম বলতে বলে। -বাবা,তুমি কারো নাম বলোনি তো! -না, মা বলিনাই।কিন্তু ভয় লাগে,যদি আরো মারে,যদি বলে ফেলি। -বাবা রে,যখন মারবে,তুমি শক্ত হয়ে থেকো।সহ্য কোরো।কারো নাম যেন বলে দিও না। -আচ্ছা।মা,ভাত খেতে ইচ্ছে করে।দুইদিন ভাত খাই না। কালকে ভাত দিয়েছিল,আমি ভাগ পাইনাই। -আচ্ছা,কালকে যখন আসব,তোমার জন্যে ভাত নিয়ে আসব৷ মা সাফিয়া বেগমের একমাত্র সন্তান আজাদ৷ আজাদের বাবা ইউনুস চৌধুরী ছিলেন তখনকার সময়ে শহরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এবং ধনী ব্যক্তিদের একজন৷ তিনি আজাদের মায়ের নামে ইস্কাটনে বিশাল বাড়ি তৈরী করেছিলেন। যা ছিল শহরের সবচেয়ে দর্শনীয় বাড়ি৷ "ডাকে পাখি,খোলো আঁখি, দেখো সোনালি আকাশ" সিনেমার গানের এই শ্যুটিং ও হয়েছিল ইস্কাটনের এই বাড়িতেই৷ আজাদের বাবা দ্বিতীয় বিবাহ করলে ছোট্ট আজাদকে নিয়ে সাফিয়া বেগম স্বামীর গৃহ,অর্থ-প্রতিপত্তি ত্যাগ করে আলাদা হয়ে যান৷ তখন শুরু হয় তার সংগ্রামের এক নতুন অধ্যায়। কষ্ট করে আজাদকে লেখাপড়া শেখান৷ সে এম এ পাশ করে৷ এমন সময় দেশে শুরু হয় মুক্তিযুদ্ধ। দেশের মানুষের ওপর অত্যাচার ও নির্যাতন সইতে না পেরে যক্ষের ধনের মতন আগলে রাখা আজাদকে অনুমতি দেন যুদ্ধে যাওয়ার৷ বন্ধুদের সাথে আজাদ যোগ দেয় ঢাকার আরবান গেরিলা দলে৷ ১৯৭১সালের ৩০ শে আগস্ট রাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীদের হাতে ধরা পরে আজাদ,জুয়েল,রুমী,বাশার,আলতাফসহ আরো অনেকে৷ ক্যান্টনমেন্টে নিয়ে শুরু করে অকথ্য নির্যাতন৷ কথা বার করার জন্যে আজাদের ওপর ও চালানো হয় অমানুষিক অত্যাচার৷ আজাদের মায়ের সাথে যখন দেখা হয়,তখন তিনি শক্ত হয়ে থাকতে বলেন,যেন কারো নাম না বলে দেয়৷ আজাদ তার মায়ের কাছে ভাত খেতে চায়। কিন্তু পরের দিন বন্দীশিবিরে ভাত নিয়ে গেলে তিনি আজাদের দেখা পান না৷ যুদ্ধের ১৪ বছর পর মারা যান আজাদের মা,একদম নিঃস্ব,অসহায় বেশে৷ এই ১৪ টা বছর তিনি একদলা ভাত মুখে দেন নি৷ একবেলা পাউরুটি ভিজিয়ে খেয়ে থেকেছেন।কারো কাছ থেকে কোনো প্রকার সাহায্য ও নেন নি৷ প্রায়ই ছেলের জন্যে অপেক্ষা করে থেকেছেন টেবিলে ভাত বেড়ে! কিন্তু আজাদ আর আসে না! বইটি পড়ার পর আজাদের মায়ের প্রতি শ্রদ্ধায় মাথা নত হয় আসে৷ আর নত হয়ে আসে সেসব মায়েদের প্রতি শ্রদ্ধায় যাদের সন্তানেরা দেশকে স্বাধীন করতে নিজেদের জীবন উৎসর্গ করতেও দ্বিধা বোধ করে নি! শহিদ মিনারের নিচু হয়ে থাকা মধ্য মিনারটা যেন সেই সকল একাকী স্মরণ সংগ্রামের মায়েদের প্রতীক,দুপাশে চারটি মিনার চারটি সন্তান সমেত,দিন নাই,রাত্রি নাই, কী রোদ, কী বৃষ্টিতে!
Was this review helpful to you?
or
আনিসুল হকের সেরা কাজ❤
Was this review helpful to you?
or
সেরা বই
Was this review helpful to you?
or
Words are not enough to describe the emotion of the story. Must read book for any book lover.
Was this review helpful to you?
or
চমৎকার
Was this review helpful to you?
or
Probably the best book written by Anisul Haque.
Was this review helpful to you?
or
One of the Best book by the writer
Was this review helpful to you?
or
স্বাধীনতার সংগ্রাম যে কেমন ত্যাগ এর মধ্য দিয়ে পেয়েছি আমরা তা এই বইয়ের পাতায় পাতায় স্পষ্ট।
Was this review helpful to you?
or
এটি গল্প নয়, বাস্তব চরিত্রের পরিস্ফূটন। আনিসুল হকের লেখা এই এক অমর সৃষ্টি। বইটি পড়লে মা গল্পটি সবাইকে ১৯৭১-এর মুক্তিযুদ্ধে নিয়ে যাবে। কী সুন্দর এক শহীদ জননীর অনড় ও অসাধারণ গুণাবলি! আজাদ ভাত চেয়েছিল। কিন্তু মা ভাত নিয়ে যাওয়ার আগেই পাকিস্তানিরা আজাদকে হত্যা করে। তাঁর আর ভাত খাওয়া হয়নি। তাই আজাদের মা-ও কোনোদিন ভাত খাননি। কোনদিন বিছানায় ঘুমাননি। কীভাবে ঘুমাবেন? তাঁর আজাদ যে বিছানায় নেই। অসীম সাহসী এক মায়ের ব্যক্তিত্ব ফুটে উঠেছে বইটিতে। আমি হলফ করে বলতে পারি মা বইটি পড়লে যেকোনো পাঠকের শরীরের লোম দাঁড়িয়ে যাবে। চমৎকার এই বইটি পড়তে পারেন সবাই।
Was this review helpful to you?
or
বুক রিভিউ: বইয়ের নাম: মা, বইয়ের লেখক: আনিসুল হক বইয়ের ধরন:মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক উপন্যাস প্রথম প্রকাশ: ফেব্রুয়ারি ২০০৩ প্রকাশনী: সময় প্রকাশনী এই বই একজন আদর্শবান ব্যক্তিত্বসম্পন্ন মা কে নিয়ে লেখা। লিখেছন প্রিয় লেখক আনিসুল হক।বইটিতে রয়েছে শত আঘাতের পরও মাথা উচুঁ করে বেচেঁ থাকা হার না মানা এক মায়ের গল্প। সেই মা শহীদ আজাদের মা সাফিয়া বেগম।আজাদ ছিলো তার বাবা-মায়ের একমাত্র সন্তান। এটি একটি বাস্তব ঘটনাভিত্তিক উপন্যাস। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ আজাদ। মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক উপন্যাসগুলোর মধ্যে মা উপন্যাসটি অন্যতম। আজাদের বাবা ইউনুস চৌধুরীর ছিলেন একজন ইন্জিনিয়ার এবং ঢাকার প্রভাবশালী ব্যক্তিদের মধ্যে অন্যতম। কিন্তু সাফিয়ার সংসারে কালো মেঘ নেমে আসে ইউনুস চৌধুরীর দ্বিতীয় বিবাহের কারনে। আত্মমর্যাদাসম্পন্ন সাফিয়া বেগম কিছুতেই স্বামীর দ্বিতীয় বিয়েকে মেনে নিতে পারেননি। তাই এসব কিছু ছেড়ে আজাদকে নিয়ে উঠলেন এক খুপড়ি ঘরে। সেই থেকে শুরু হলো জীবনযুদ্ধ। অভাব-অনাটন, দুঃখ-দুর্দশায় কেটে গেল কয়েক বছর। হার মানেননি সাফিয়া বেগম।আশা ছিলো, ছেলে আজাদ একদিন বড় হয়ে মায়ের দুঃখ ঘোচাবে। কিন্তু বিধি বাম! যেসময় আজাদের পড়াশোনা শেষে চাকরি করার কথা ঠিক সেসময়ই শুরু হয় দেশে মুক্তিযুদ্ধ। স্বাধীনতার ডাক দিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। সারা দেশের মানুষ ঝাঁপিয়ে পড়ল মুক্তিযুদ্ধে। দেশমাতৃকাকে রক্ষা করতে সব বন্ধুদের সাথে মুক্তিযুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়লেন আজাদও। সহসী জননী সাফিয়া বেগম তাকে বাধা দেন নাই বরং উৎসাহ দিয়ে বলেছিলেন, "আমি কী তোকে শুধু আমার জন্যই মানুষ করেছি। এদেশটাও তোর মা। যা দেশটাকে স্বাধীন করে আয়।’’ মায়ের আশীর্বাদ নিয়ে আজাদ গেলেন মুক্তিযুদ্ধে। ঢাকার ক্র্যাক প্লাটুনের একজন গেরিলা যোদ্ধা ছিলেন আজাদ। মুক্তিযুদ্ধের মাঝখানে আগস্ট মাসে রাজাকারদের হাতে ধরা পড়লেন তিনি। হানাদাররা তথ্য জানার জন্য অকথ্য নির্যাতন করত। নির্মম অত্যাচারের মুখেও আজাদ কিছু বলেননি। তখন তার মাকে বলা হয়, ছেলে যদি সবার নাম-পরিচয় বলে দেয়, তাহলে তাকে ছেড়ে দেওয়া হবে। তা শুনে আজাদের মা ছুটে গেলেন আজাদের কাছে, তিনি ছেলেকে বললেন, "বাবারে, যখন মারবে, তুমি শক্ত হয়ে থেকো। সহ্য করো। কারো নাম যেন বলে দিও না।" আজাদ তার মাকে কথা দিয়েছিলেন। বলেছিলেন জেলের দুর্বিষহ জীবনের কথা, প্রচণ্ড নির্যাতনের কথা। আরও বলেছিলেন, "মা, ভাত খেতে ইচ্ছা করে। দুইদিন ভাত খাই না। কালকে ভাত দিয়েছিল, আমি ভাগে পাই নাই।" আজাদের মা তাকে অভয় ও সান্তনা দিয়ে বলেছিলেন, "কালকে আমি ভাত নিয়ে আসবো।" কথামতো ভাত নিয়ে গিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু আজাদ চলে গিয়েছিল না ফেরাদের দেশে। আর কখনোই তিনি আজাদকে খুঁজে পাননি। তারপর ১৪ বছর বেঁচে ছিলেন সাফিয়া বেগম। প্রতীক্ষায় ছিলেন তার ছেলের ফিরে আসার জন্য। কিন্তু আজাদ আর ফেরেননি। আজাদের শোকে স্বাধীনতার পর যে ক’বছর বেঁচে ছিলেন আর কখনও তিনি ভাত খাননি, সবসময় মাটিতে শুতেন মাদুর বিছিয়ে। কারণ তার ছেলে মৃত্যুর আগে জেলে মাদুরে শুতেন। ১৯৮৫ সালের ৩০ শে আগস্ট তিনি পরলোক গমন করেন। এই কাহিনীকে কেন্দ্র করে আনিসুল হক রচনা করেন তার বিখ্যাত উপন্যাস 'মা'। প্রকাশের পর থেকে এখন পর্যন্ত অনেকগুলো মুদ্রণ হয়েছে। দেশ-বিদেশে অনেক প্রশংসিত হয়েছে। পাঠ প্রতিক্রিয়া: বাস্তব কাহিনী নিয়ে লেখা একটি বই। খুব বেশি কিছু বলার নেই। তবে এই বই পড়ে চোখের কোন ভিজবে না তা হতে পারে না। নিজের অজান্তেই চোখের কোণ ভিজে যায়।শহীদ আজাদের মায়ের আত্মবিশ্বাস আর সাহস সত্যিই প্রশংসনীয়। তা না হলে নিজের কষ্ট করে মানুষ করা ছেলেকে দেশের জন্য উৎসর্গ কয়জন মা করতে পারে? অসম্ভব সুন্দর একটি বই। ভীষণ প্রিয় বই। বইটি থেকে মুক্তিযুদ্ধের সময় একজন সাহসী জননীর সহসী সংগ্রামের ইতিহাস সম্পর্কে জানতে পারবেন।
Was this review helpful to you?
or
বইটি পড়ে আমার খুব ভালো লেগেছে।এই রকম বাস্তব উপন্যাস আর কোথাও খুজে পাবো না হয়ত।।
Was this review helpful to you?
or
আলহামদুলিল্লাহ !!
Was this review helpful to you?
or
পৃথিবীর মধ্যে এক অক্ষরের সবচেয়ে সুন্দর শব্দটি হল ' মা '। আনিসুল হকের এই বইটি আপনার মনে এমন প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করবে , যেন বইটি পড়ে আপনি উপলদ্ধি করতে পারবেন যে , মায়ের মত নিঃস্বার্থ মানুষ আর নেই। বইয়ের বাস্তব এই ঘটনাটির প্রেক্ষাপট ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ। শহিদ আজাদের মাকে নিয়ে লেখা। আজাদের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে ধনী স্বামীকে ফেলে চলে আসেন যাযাবর জীবনযাপনে। স্বপ্ন একটিই , আজাদ একদিন অনেক বড় হবে। একসময় মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়ে যায় । জাহানারা ইমামের ছেলে রুমির সাথে সেও যায় মুক্তিযুদ্ধে। কিন্তু শেষ পর্যায়ে এসে সে ধরা পড়ে। পাকিস্তানিরা তাকে আটক করে রেখে ভয়াবহ নির্যাতন করে। কিন্তু তার মা ঘরে বসে থাকতে পারে না। একসময় ছেলের সাথে দেখা হয়। দেখেন , ছেলের কোন বিছানা নেই। মেঝেতে ঘুমায়। ভাল কোন খাবার নেই। খালি শুকনাে রুটি খাওয়ায়। মা, ছেলের এ বেহাল দশা সহ্য করতে পারেন না। ছেলেকে জিজ্ঞাসা করেন সে কি খেতে চায়। ছেলে বলে । মা বাড়িতে ফিরে এসে সারা দিন, সারা রাত ছেলের পছন্দের খাবার রান্না করেন। কিন্তু পরদিন গিয়ে দেখেন , তার ছেলে নেই। পাকিস্তানিরা তাকে অন্য কোথাও সরিয়ে ফেলেছে। মা দিশেহারা হয়ে যান। ছেলের খোঁজ করেন সারা দেশে। কিন্তু খোঁজ মেলে না। একসময় দেশ স্বাধীন হয়। কিন্তু আজাদকে খুঁজে পাওয়া যায় না। সবাই তার মাকে বলে যুদ্ধে সে শহিদ হয়েছে। কিন্তু মা তা মানতে নারাজ যতদিন বেঁচে ছিলেন , কখনাে খাটে শােননি। মেঝেতে শুয়েছেন। শুকনাে রুটি খেয়েছেন। ভাত মুখে দেন নি। কারন আজাদকে পাকিস্তানিরা এই অবস্থায় রেখেছিল । একসময় তিনি বুঝতে পারেন , আজাদ আসলেই শহিদ হয়েছে । মৃত্যুর পর তার কবরের পাশে তার নিজের নাম লেখা হয় নি। তার ইচ্ছানুযায়ী লেখা হয়েছিল ' শহিদ আজাদের মা '।
Was this review helpful to you?
or
Good
Was this review helpful to you?
or
অসাধারন বই।
Was this review helpful to you?
or
good
Was this review helpful to you?
or
বইটি খুব সুন্দর।
Was this review helpful to you?
or
" মা - অানিসুল হক " মাগো, ভাত খেতে ইচ্ছে করে। জেলে সবাইকে ভাত দিয়েছিলো, অামাকে দেয়নি। মা ভাত নিয়ে গিয়েছিলেন কিন্তু সেখানে অাজাদ ছিলো না। মা চৌদ্দ বছর ছেলের প্রতীক্ষায় ছিলেন কিন্তু ছেলে ভাত খেতে ফেরেনি। মা অার কোনদিন ভাত খাননি। শুধু মৃত্যুর অাগে বলেছিলেন ওরে অামি যে মা, তোমরা অামার কবরের ফলকে নাম লিখো শহীদ অাজাদের মা! শহীদ জননী সাফিয়া বেগমের উপাখ্যানের গল্প "মা"। সত্য কাহিনীর সাথে উপন্যাসের ঢং বইকে নতুন মাত্রা দিয়েছে। লেখক আনিসুল হক এই কাহিনীর সন্ধান পেয়েছিলেন মুক্তিযোদ্ধা ও নাট্যব্যক্তিত্ব নাসিরউদ্দিন ইউসুফ বাচ্চুর নিকট থেকে। বাংলা ছাড়াও উপন্যাসটি Freedom's Mother নামে ইংরেজিতে ও La Madre নামে স্পেনীয় ভাষাতে অনূদিত হয়েছে। এতসময় শুনে মনে হতে পারে এ কোন মায়ের মহিষী হয়ে উঠার গল্প। কিন্তু এ গল্প তার থেকেও বেশি কিছু। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সত্যিকারের ইতিহাস লেখা অাছে এই বইয়ের পাতায়। মুক্তিযুদ্ধের উপর সত্য ঘটনা নিয়ে হাতে গোনা যে দু চারখানি গল্প পাওয়া যায় তন্মধ্যে অানিসুল হকের মা উল্লেখযোগ্য। কি গল্পে অাগ্রহ হচ্ছে? একটু স্পয়লার এলার্ট দেওয়া যাক। সনামধন্য ধনী পরিবারের সুখী ঘরনি সাফিয়া বেগম। স্বামী সন্তান নিয়ে সুখী পরিবারের বাস স্কাটনের খানদানী বাড়িতে। কিন্তু সেখানে ঝড় ওঠে যখন স্বামী দ্বিতীয় বিয়ে করেন। অাত্মসম্মানবোধে বলিয়ান এই নারী ঐশ্বর্যের প্রচুর্য থেকে বেরিয়ে অাসেন। ছোট্ট এক কুঁড়েঘরে সন্তানের হাত ধরে নতুন যুদ্ধে নামে সাফিয়া বেগম। একটুখানি দুধের বাচ্চা থেকে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত করা, মানুষের মতো মানুষ করা চারটে খানিক কথা নয়। এপর্যন্ত পড়ে মনে হয় যেন সাধারণ মায়েদের গল্প। বাংলার অানাচে কানাচে এমন গল্পেরা অানাগোনা করে। এপর্যন্ত পড়ে মনে হতে পারে অানিসুল হক যদি অামার মায়ের গল্পটা লিখতেন। এ পর্যন্ত গল্প হয়তো সব মায়েদের হার নাও মানাতে পারে কিন্তু এরপরের অংশ অাপন মহিমায় বলিয়ান। অামি বলি এ গল্প বলিদানের গল্প। দেশের জন্য নিজের ছেলেকে বলিদান দেয় যে মা সে তো মহিষী। " আমি কী তোকে শুধু আমার জন্যই মানুষ করেছি। এ দেশটাও তোর মা। " মা দেশটাকে ওরা গ্রাস করেছে। অামার বন্ধুরা মুক্তিফৌজে যোগ দিচ্ছে। অামিও যুদ্ধে যেতে চাই। যে পুত্রকে ঘিরে সাফিয়া বেগমের সারাটা জীবন তাকে বদ্ধ ঘরে বন্ধী করে রাখেননি। শুধু ছেলেকে দেশোদ্ধারে পাঠায়নি। নিজেও সহযোগিতা করেছেন নানা ভাবে। যুদ্ধের সময় অাজাদের মায়ের ঘর যেন ছোটখাটো এক সেনানিবাস। মাগফার আহমেদ চৌধুরী আজাদ এখন ঢাকার ক্র্যাক প্লাটুনের গেরিলা যোদ্ধা। সম্মুখ যুদ্ধ অার নানাবিধ অপারেশন করে চলছে সে। কিন্তু আগস্টে রাজাকারদের হাতে ধরা পড়ে অাজাদ। হানাদাররা তথ্য জানার জন্য অকথ্য নির্যাতন চালাতে থাকে। নির্মম অত্যাচারের মুখেও আজাদ কিছু বলেননি। জেলে রাখা হয় অাজাদকে, মা দেখতে যায়। অাজাদের মাকে বলা হয় ছেলেকে বোঝান, ছেলে যদি সবার নাম-পরিচয় বলে, তাহলে ছেড়ে দেওয়া হবে। না, ছেলেকে মুক্ত করার বাসনা নেই মনে! তিনি ছেলের সাথে দেখা করলেন মুক্ত করার বাসনায় নয়। বরং তিনি আজাদকে বললেন, বাবারে, যখন মারবে, তুমি শক্ত হয়ে থেকো, সহ্য করো। কারো নাম যেন বলে দিও না। "আজাদ তাকে কথা দিয়েছিলেন। বলেছিলেন জেলের দুর্বিষহ জীবনের কথা, প্রচণ্ড নির্যাতনের কথা। আর শেষে বলেছিলো, মাগো, খুব ভাত খেতে ইচ্ছা করে। দুইদিন ভাত খাই না।" তারপর ১৪ বছর বেঁচে ছিলেন সাফিয়া বেগম। প্রতীক্ষায় ছিলেন তার ছেলে ফিরে আসবে। কিন্তু আজাদ আর ফেরেননি। আজাদের শোকে স্বাধীনতার পর যে ক’বছর বেঁচে ছিলেন আর কখনও তিনি ভাত খাননি। হাপাঁনী থাকা সত্ত্বেও শুয়েছেন মাটিতে মাদুর বিছিয়ে। ১৯৮৫ সালের ৩০ শে আগস্ট, মারা যাওয়ার আগেই তিনি বলে গিয়েছিলেন তার কবরের ফলকে পরিচয় হিসেবে লিখতে 'শহীদ আজাদের মা'। তাই আজও জুরাইনে একটি কবর দেখা যায়। যাখানে লেখা 'মোসাঃ সাফিয়া বেগম, শহীদ আজাদের মা'। এক পাল্লায় মা অন্য পাল্লায় অানিসুল হক, অামি বলবো মা এর পাল্লা ভারী থাকবে অাজীবন। কালের পরিক্রমায় মানুষ হয়তো ভুলে যেতে পারে লেখককে নাম কিন্তু এই সৃষ্টি অমর। কিন্তু এই উপন্যাসে লেখকের অাবেগ যুক্ত হওয়াকে দুর্বলতা মনে হয়েছে। যা সাহিত্য মানকে ক্ষুন্ন করে। অাবার কখনো মনে হয়েছে এখানে মনঃতত্ত্বিক বিশ্লেষণের থেকে অাবেগ বেশি জরুরি। বাস্তবিক কাহিনীর সাথে লেখকের কল্পনাশক্তি ও লেখনশৈলী যুক্ত হলে এই উপন্যাস বিশ্বসাহিত্যে এতদিন রাজত্ব করতো বলে অামি মনে করি। কারণ বাঙালী হিসাবে মুক্তিযুদ্ধ এবং মা নিয়ে অাবেগ থাকা বাঞ্ছনীয় কিন্তু বিশ্বসাহিত্য! অামি বলবো লেখকের অাবেগ উপন্যাকে নতুন মাত্রা দিয়েছে নতুবা দুর্বল করেছে! বই পড়ার অাগে অামি সাহিত্য খুঁজি। লোকে বলে এটুকু বয়স কি এমন বুঝিস। অাসলেই প্রথমবার যখন বইটা পড়ি তখন মস্তিষ্ক থেকে বিস্মৃত হয়েছিল সাহিত্যের মানদন্ডের কথা। খুঁজেছিলাম একজন মহিষী নারী ও তার সন্তানকে। অস্পষ্টে বলে যেতাম মা, মা। লেখকের সার্থকতা হয়তো এখানেই। একজন পাঠক এবং একজন বাংলাদেশী হিসাবে অাপনাকে অানিসুল হকের মা পাঠ করা উচিত বলে অামি মনে করি। একজন মা এবং তার বীর সন্তান অাজাদের জীবন কাহিনীর সাথে সাথে মুক্তিযুদ্ধের সময়ে ঢাকার গেরিলা অাক্রমণ ও জনজীবন সম্পর্কে জানতে অাপনাকে মা পাঠে স্বাগতম। বইঃ মা। লেখকঃ অানিসুল হক। প্রকাশনীঃ সময় প্রকাশন। মূল্যঃ চারশত চল্লিশ টাকা।
Was this review helpful to you?
or
এই বইটার সমতুল্য কোনো বই নেই।অসম্ভব ভালো,সুন্দর,স্মৃতিবিজরিত ও দুঃখবিজরিত একটি বই।একবার পড়তে শুরু করলে শেষ না করা পর্যন্ত যেন শান্তি নেই।এই কাহিনী এক শহিদের,একজন ছেলেহারা মায়ের।লেখককে অসংখ্য ধন্যবাদ এমন একটি সুন্দর বই আমাদের উপহার দেবার জন্য।একটি বার কাহিনীটা পড়লে শুরু করলে................
Was this review helpful to you?
or
Oshadharon abong chokhe pani anar moto boi...
Was this review helpful to you?
or
khub bhalo
Was this review helpful to you?
or
অসাধারণ একটা বই।
Was this review helpful to you?
or
খুব সুন্দর একটা বই। মন ভরেছে বইটি পরে।মায়ের চেয়ে ভাল কিছুই হতে পারে না।???
Was this review helpful to you?
or
"সংগ্রামী এক মায়ের কথা" চরিত্রটি কাল্পনিক নয়, বাস্তব! | মা বইটি সম্পর্কে প্রথমেই একটি শব্দ দিয়ে আমার অনুভূতি বােঝাতে চাই, ‘রােমহর্ষক’ | সত্যিই গল্পটি। আমাকে ১৯৭১-এর মুক্তিযুদ্ধতে নিয়ে যায়। প্রতিটা বিষয় যেন আমি। নিজের চোখে দেখছি। কী আশ্চর্য!! কী সুন্দর! এই মা একজন শহীদ জননী। এর চেয়েও বড় পরিচয় তার। অনড় ও অসাধারণ গুণাবলি। আজাদ। ভাত চেয়েছিল। কিন্তু মা ভাত নিয়ে। যাওয়ার আগেই তাকে হত্যা করে। পাকিস্তানিরা। তার আর ভাত খাওয়া। হয়নি। তাই আজাদের মা-ও আর কোনােদিন ভাত খাননি। কোনােদিন বিছানায় ঘুমাননি। কীভাবে ঘুমাবেন? তার আজাদ যে বিছানায় নেই! অসীম সাহসী এই মায়ের ব্যক্তিত্ব। সবার জন্যই অনুসরণীয়। মা বইটির কথা মনে পড়লেই শরীরের লােম দাঁড়িয়ে যায়। সত্যি আজাদের মায়ের মতাে এককথার মানুষ এবং অসাধারণ ব্যক্তিত্বসম্পন্ন মানুষ, আমি কমই দেখেছি। আর । সবচেয়ে বেশি অবাক হই এই কথা ভেবে যে চরিত্রটি কল্পনার নয়, পুরােপুরি বাস্তব! এমন একজন অসামান্য বাস্তব চরিত্রকে নিয়ে। লেখার জন্য ধন্যবাদ আনিসুল হক স্যারকে।
Was this review helpful to you?
or
সত্যিই বইটি মুগ্ধ করার মতো।জ্ঞ্যানের তৃষ্ণা মেটানোর জন্য বইটি যথেষ্ট উপযোগী।শুধু এই বিষয়ের ছাত্র না, সবাই এই বইটি সমানভাবে উপভোগ করতে পারবে।শিখতেও পারবে অনেক কিছু।বইটি পড়ার পর ভালো লাগা কাজ করবেই।অনেক চিন্তার খোরাক যোগাবে বইটি।আমি সবাইকে রেফার করবো বইটি পড়ার জন্য।
Was this review helpful to you?
or
অবশ্যই পড়তে হবে এমন একটা বই।ভীষণ ভাবে নাড়া দেয় মনকে।কাঁদায়ও!!! আনিসুল হক স্যারের অন্যতম একটা লেখনী।'মা' এবং ছেলের হৃদয়স্পর্শী উপন্যাস। আজাদ দেশেষ জন্য লড়ে।জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত হার মানেনি হায়নাদের কাছে।হার না মানাটাও শিখিয়েছিলো তার "মা"।মায়ের সুযোগ্য সন্তান। শেষ পর্যন্ত মা যতদিন বেঁচে ছিলেন ততদিন সে আর কিছু খাননাই।তাই আসা ছিলো আজাদ একদিন ফিরে আসবে।এবং আমরা জানি আজাদেরা মরে নাহ।
Was this review helpful to you?
or
খুব সম্ভবত আনিসুল হকের লেখা বইগুলোর মধ্যে এই বইটাই সেরা ছিল। এছাড়া আর কোনো বই-ই তেমন ছুঁয়ে যেতে পারেনি।
Was this review helpful to you?
or
Its a good book Fall in love
Was this review helpful to you?
or
দেশমাতৃকা এবং গর্ভধারিণী মা উভয়ের প্রতি শহীদ আজাদের ভালোবাসা এবং সন্তানের প্রতি মায়ের ভালোবাসা এবং ত্যাগ উপলব্ধির জন্য বইটির তুলনা মেলা ভার ।
Was this review helpful to you?
or
আমার সৌভাগ্যই হোক কুভাগ্যই হোক আমি আনিসুল হকের প্রথম যে বইটা পড়ি সেটা হল মা। অন্য কিছু বলার আগে বইটা নিয়ে লাইফের মজার একটা অভিজ্ঞতা শেয়ার করি। তখন ক্লাস ৫ কি ৬ এ পড়ি । আব্বু আমাকে "মা" নামের একটা বই নিয়ে বিশাল জ্ঞান গর্ভ বক্তৃতা দিয়ে ফেলল। আমি জেনারালি আব্বুর পছন্দের বই সযত্নে এড়িয়ে চলি কিন্তু "মা"বইটার কথা আব্বু এমন ভাবে বলছিল যে আমি আকর্ষণ এড়াতে পারি নি - পৃথিবী ইতিহাসে নাকি এর চেয়ে অসাধারন বই আর নাই। আমিও পটে গিয়ে মা বইটা কিনে আনি - সমস্যা লাগল কিছুদূর পড়ার পর বই অসাধারন লাগতেছে ,কিন্তু কোথায় সেই আব্বুর শ্রমজীবী মানুষের গল্প কোথায় ট্রান্সসাইবেরিয়ান রেলপথ (স্মৃতি যদি বিশ্বাস ঘাতকতা না করে) কোথায় রাশিয়ার গল্প। এইটা তো বাংলাদেশের কাহিনী । আমিও প্রবল বিক্রমে বই নিয়ে আব্বুর কাছে গেলাম আব্বু তুমি "মা" বইটা ঠিক মত পড় নি এইটা তো আমাদের মুক্তিযুদ্ধের সময়ের গল্প। আমি জীবনে অনেক অদ্ভুত এক্সপ্রেশন দেখেছি,দেখব কিন্তু আমার হাতে মা বাই আনিসুল হক দেখে আব্বুর যে এক্সপ্রেশন ছিল সেটার মত ফ্যান্টাবুলাস এক্সপ্রেশন সম্ভবত এই জীবনে আর দেখব না । এই অসাধারন লেভেলের ভুলটার দায় আমার,তখন অল্প সল্প বই পড়ি,বইয়ের নামটাই ছিল মুখ্য বিষয় । লেখক আনিসুল হক নাকি ম্যাক্সিম গোরকি সেটা কোন বিষয় না। যে বয়সে বইটা পড়েছিলাম সেটা মুগ্ধ হবার বয়স। অল্প বয়সে মা এর ভালবাসা, আজাদের সাহসিকতা ক্রাকপ্লটুন আমাকে এক কথায় আচ্ছন্ন করে ফেলেছিল, ভাললাগা ভালবাসার আচ্ছনতা । ঠিক জানি না কতবার মনে মনে বিধাতার কাছে রিকোয়েস্ট করেছি আজাদকে বাঁচিয়ে দাও প্লিজ। যে বয়সে ক্লাসে সবাই ব্যাকহাম না রোনালডোর উপরে ক্রাশ খাবে চিন্তা করত সেই বয়সে আমি আজাদের উপরে ভয়াবহ লেভেলের ক্রাশ খেয়েছিলাম, আজাদের মাকে নিজের অজান্তে ভালবেসে ফেলেছিলাম। সাহিত্য কতটুকু কি হয়েছে জানি না, তবে এইটা সত্য এই বইটা পড়ে আমি মুক্তিযুদ্ধ রিলেটেড বইগুলো মন দিয়ে পড়া শুরু করি। অল্প বয়সে আজাদ, রুমি, ক্রাকপ্লটুন এর প্রতি যে ভালবাসাটা ,সম্মানটা জন্মেছিল সেটা পরে দিন দিন শুধু বেড়েছে। বাংলাদেশের অসাধারন ভাগ্য বাংলাদেশ তার জন্মের সময় অসাধারন খাটি কিছু মানুষের স্পর্শ পেয়েছে । বাংলাদেশের অসম্ভব দুর্ভাগ্য বাংলাদেশ কিছু অমানুষের নোংরা স্পর্শ ও গায়ে মেখে আছে । বইটা এখন পড়লে হয়ত রেটিং ৩ এর বেশি দিব না বয়স বাড়লে মুগ্ধতা কমে , তার চেয়ে বইটা আমার কাছে কিছু সুপার হিউম্যানকে পরিচয় করে দেবার গল্প হয়েই থাকুক ।
Was this review helpful to you?
or
When criticizing the book, I constantly feel how it feels inside me because Sardar Fazlul Karim has said, "I say two mothers. Maxim Gorky's mother" and Anisul Haque's "mother". Before criticizing the writing, it should be said that Anisul Haque is the first in line to be a fiction writer. As a columnist, I will be at the very top. I personally think this column could not be left out of the writer's essence when the author was writing 'Mother'. One day I very much wanted to ask the author Anisul Haque very kindly whether my mother was really a novel or a newspaper report. During the post-independence era, I do not think there is a beautiful plot, as this novel involves two of the most emotional issues of the people of Bangladesh, freedom and mother. But the plot of a story that is so heartbreaking and that any writer could do so cruelly in his own hands, I would not know if it was not read 'Mother'.
Was this review helpful to you?
or
anisul hoquer lekha ma boi ta amar khub valo legece karon boi tar lekhar quality onek valo ami pore khub annondo pelam apnara caile pore dekhte paren.
Was this review helpful to you?
or
বুক রিভিউ বইঃ মা লেখকঃ আনিসুল হক বইটি মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক একটা বই। অন্য আর পাঁচ দশটা মুক্তিযুদ্ধের বইয়ের মত এ বই নয়। তবে মুক্তিযুদ্ধ মানে ৭১ সালের যুদ্ধই- এর অন্য কোন মানে নেই। এ বইটি লেখা হয়েছে ১৯৭১ সালে একজন আত্বত্যাগী যোদ্ধা ও তার মায়ের সংগ্রামের জীবনি মানুষের কাছে তুলে ধরার জন্য। আজাদ, সাফিয়া বেগম ও ইউনুস চৌধুরির একমাত্র ছেলে। আজাদের যখন স্কুলে পড়ে তখন আজাদের মা আজাদকে নিয়ে এক কাপড়ে স্বামী ও সংসার ছেড়ে বেরিয়ে পড়েন। শুরু হয় সাফিয়া বেগমের সংগ্রাম। বাড়ি ছাড়ার পর তিনি তার স্বামীর কোন টাকা গ্রহন করেননি। নিজরা খেয়ে না খেয়ে ছেলেকে লেখাপড়া শিয়েছেন। তার আশা ছিল ছেলে একদিন অনেক বড় হবে। আর তখন সবাই তাকে আজাদের মা বলে জানবে। এভাবে আজাদ আইএ পাশ করে। বিএ পাশ করেন করাচি থেকে। তারপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন এমএ পড়ার জন্য। এর মধ্যেই দেশে শুরু হয় পাক বাহিনীর অকথ্য, অমানবিক, পাশবিক নির্যাতন এ হত্যাযজ্ঞ। ২৫ মার্চ রাতের নারকীয় হত্যাকান্ড আজাদ নিজে প্রত্যক্ষ করেন। এর পর তিনি মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহন করার জন্য যোগ দেন ২ নং সেক্টরের ২য় প্লাটুন গেরিলা দলে। আজাদের বাড়িটি ছিল মুক্তিযোদ্ধাদের অস্ত্রসস্ত্র রাখার ও তাদের থাকার জায়গা। একদিন আজাদ ও তার সহযোদ্ধােরা বসে গল্প করছিলেন হঠ্যাৎ মিলিটারিরা তাদের বাসায় হানা দেন। ধরে নিয়ে যান আজাদ ও তার বন্ধুদের। সাফিয়া বেগমের একমাত্র ছেলে আজাদ । সে ছিল তার সমস্ত অস্তীত্ব জুড়ে ও বেঁচে থাকার একমাত্র আশা। চোখের সামনে থেকে ছেলেকে তুলে নিতে দেখে দিশেহারা হয়ে পড়েন সাফিয়া বেগম। তিনদিন পর তিনি ছেলের সাথে দেখা করার সুযোগ পান। রমনা থানায় আছে আজাদ । সহযোদ্ধাদের নাম বলার জন্য নির্মম ও নিষ্ঠুর অত্যাচার করা হয়েছে তাকে, সাফিয়া বেগম ছেলের চেহারায় তার স্পষ্ঠ দাগ দেখতে পান। মায়ের মন কেঁদে উঠলেএ সাফিয়া বেগম তার ছেলেকে কারো নাম না বলার জন্য আদেশ করেন। দুইদিন থেকে ভাত খেতে পায়নি আজাদ তাই তার মাকে বলে যেন পরেরদিন আশার সময় ভাত আনে। আজাদের মা সারা রাত জেগে সকাল সকাল ভাত নিয়ে চলে যান রমনা থানায় কিন্তু আজাদ কোথায়? আজাদ নেই। রমনা থাকা, ঢাকা কারাগার, এমপি হোস্টেলে ছেলেকে খুজতে খুজতে টিফিকারিতে ভাত পচে যায় কিন্তু ছেলেকে আর কোথাও তিনি খুজে পান না। সেইদিন তারিখটা ছিল ৩০ আগষ্ট, ১০৭১। এরপর দীর্ঘ ১৪ বছর , সাফিয়া বেগমের মৃত্যর আগ পর্যন্ত, তিনি কখনো আর ভাত মুখে তোলেননি। শুধু রুটি, পাউরুটি খেয়ে বাকি জীবন পার করেছিলেন। জেলখানায় আজদ মেঝেতে শুয়ে থাকত তাই আজাদের মা এ কখনো আর খাটে ঘুমোননি, গ্রীস্ম, বর্ষা, শীতে, অসুখে-বিসুখে তিনি ও মেঝেতেই থেকেছেন। ১৯৮৫ সালে ৩০ আগষ্ট, শেষ নিশ্বাঃ ত্যাগ করেন এই মা। তার কবরে প্রস্তর উৎখান ছিল, সাফিয়া বেগম, শহীদ আজাদের মা। আজ মায়ের স্বপ্ন স্বার্থক। তিনি চেয়েছিলেন তার ছেলে একদিন অনেক বড় হবে। হ্যা, আজাদ আজ অনেক বড়, তার স্থান আমাদের সকলের উর্ধ্বে। তিনি মহান, বীর। তিনি অমর হয়ে আছেন আমাদের সকলের হৃদয়ে। অমর হয়ে আছেন ইতিহাসের পাতায়। উপন্যাসটি পড়তে পড়তে নিজের অজান্তেই চোখের দুই কোন বেঁয়ে অস্রু ঝরেছে তা বুঝতেই পারিনি। আমার মতে এটি একটি স্বর্থক ও অমর বই। যারা এখনো পড়েননি তাদের অনুরোধ করব বইটি পড়ার জন্য।
Was this review helpful to you?
or
আমার পড়া এখন পর্যন্ত শেরা উপন্যাস। এই বইয়ের প্রতি প্রেম সারা জিবন অক্ষুন্ন থাকবে।
Was this review helpful to you?
or
আনিসুল হক এর লেখা একটি বাংলা মুক্তিযুদ্ধের উপন্যাস বই। সময় প্রকাশন হতে প্রকাশিত । দামঃ ৩৭৪ টাকা । ২০০৩ বইটি প্রকাশিত হয়।উপন্যাসের কাহিনী মুক্তিযোদ্ধা মাগফার আহমেদ চৌধুরী আজাদ এবং তাঁর মায়ের জীবন নিয়ে । অসাধারণ একটি উপন্যাস । যারা পড়েন নি তারাতারি পড়ে ফেলুন
Was this review helpful to you?
or
বইয়ের নাম: মা লেখকের নাম: আনিসুল হক ক্যাটেগরি : মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক উপন্যাস ব্যক্তিগত রেটিং: ১০/১০ প্রকাশনীঃসময় প্রকাশনী মলাট মূল্যঃ৪৪০টাকা! পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর জিনিসটা কি,জানেন? -সন্তানের প্রতি মায়ের ভালবাসা। আজ আমি এক অন্যরকম মায়ের কথা বলব যার জীবনী ইতিহাসে বিরল । মূলত শহিদ আজাদ ও তাঁর মা কে কেন্দ্র করেই "মা" উপন্যাসটি রচিত হয়েছে।আজাদি আজাদি বলে যখন পাগল হয়ে উঠেছিল গোটা ভারতবর্ষ তখন জন্ম হয় বলে তাঁর নাম রাখা হয় আজাদ।আজাদের বাবা দ্বিতীয় বিয়ে করায় বালক আজাদকে নিয়ে তাঁর মা স্বামীর গৃহ-অর্থ-বিত্ত ত্যাগ করে আলাদা হয়ে যান।মা বড় কষ্ট করে ছেলেকে এমএ পাস করান।এই সময় দেশে শুরু হয় মুক্তিযুদ্ধ।আজাদের বন্ধুরা যোগ দেয় ঢাকার আরবান গেরিলা দলে।আজাদ মা থেকে অনুমতি নিয়ে যুদ্ধে যায়। ১৯৭১ সালের ৩০ আগস্ট রাতে ঢাকার অনেক মুক্তিযোদ্ধা নিবাসে হামলা চালায় পাকিস্তানিরা।আজাদের ওপরে পাকিস্তানীরা অত্যাচার চালিয়েও কথা বের করতে পারে না।তখন তাঁর মাকে বলা হয়,ছেলে যদি সবার নাম-ধাম বলে দেয় ,তাকে ছেড়ে দেওয়া হবে।আজাদের মা ছেলের সঙ্গে দেখা করে বলেন-শক্ত হয়ে থেক,কারও নাম বলে দিও না।আজাদ বলে,মা দুদিন ভাত খাই না,ভাত নিয়ে এসো ।মা পরের দিন ভাত নিয়ে হাজির হন বন্দিশিবিরে,কিন্তু ছেলের দেখা আর মিলে না।এই মা আর কোনোদিনও জীবনে ভাত খাননি। যুদ্ধের ১৪ বছর পরে মা মারা যান,নিঃস্ব,রিক্ত-বেশে। একটা লোক যখন মরে যায় ,ভাইয়ের কাছে সেটা চলে যাওয়া ,বোনের কাছে সেটা শুন্যতা ,বাবার কাছে নিজেরই ধারাবাহিকতার ছেদ,বন্ধুর কাছে সেটা অতীত স্মৃতি আর বিস্মৃতির দোলাচল,দেশের কাছে কালের কাছে হয়ত তা প্রিয়তম পাতার ঝরে যাওয়া,কিন্তু মায়ের কাছে ?মায়ের কাছে সন্তানের মৃত্যু হলো সমস্ত সত্তাটাই মৃতের দ্বারা দখল হয়ে যাওয়া। আজও যদি কেউ যায় জুরাইন গোরস্তানে ,দেখতে পাবে কবরটা,আর দেখতে পাবে প্রস্তরফলকে উৎকীর্ণ মায়ের পরিচয় ; মোসাম্মৎ সাফিয়া বেগম, শহিদ আজাদের মা । সকল মায়ের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা রইল।❤️
Was this review helpful to you?
or
দূর্দান্ত একটা বই। একজন মা কতটা আদর্শনিষ্ঠ চরিত্রবান হতে পারে এই বইটা তার শ্রেষ্ঠ প্রমান। লেখক আনিসুল হক খুব সুন্দরভাবে কাহিনীগুলো লিখেছেন। আমার কাছে বেশি আর্শ্চয্য লেগেছে শহীদ আজাদের মায়ের মৃত্যুর ব্যাপারটা, পুরোপুরি আলৌকিত। দাফনের সময় আকাশ থেকে বৃষ্টি, বাতাসে মৃদ্যু সুগন্ধ। ছেলের প্রতি যার এমন ভালোবাসা, যে সাড়াজীবন এতটা দুঃখকষ্ট সয়েছেন; তার জন্য এমনটা হওয়া স্বাভাবিক। সবাইকে পড়ার জন্য অনুরোধ রইলো।
Was this review helpful to you?
or
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে বহু মর্মস্পর্শী গ্রন্থ রচিত হয়েছে । কিন্তু আমার মতে, আনিসুল হক স্যারের লেখা "মা" উপন্যাসটি সবচেয়ে আলাদা। এই গ্রন্থে তুলে ধরা হয়েছে এক আত্মমর্যাদাসম্পন্ন নারীকে, দেশপ্রেমী নারীকে এবং মমতাময়ী নারীকে। স্বামী দ্বিতীয় বিয়ে করায় আত্মমর্যাদাসম্পন্ন সাফিয়া বেগম আরাম বিলাসিতার বাড়ি ত্যাগ করে ছেলেকে নিয়ে বেরিয়্ব গেলেন, সংগ্রাম করলেন , ছেলেকে মানুষ করলেন, ছেলে যুদ্ধে যেতে চাইলে অনুমতি দিলেন, ছেলে পাক সেনাদের হাতে ধরা পড়লে মা বারণ করলেন কোনো মুক্তিযোদ্ধার নাম বলতে, সন্তান হারিয়ে দীর্ঘ চৌদ্দ বছর একবেলা রুটি খেয়ে থাকলেন, শীত - গ্রীষ্ম - বর্ষা ঠাণ্ডা মেঝেতে শুয়ে কাটালেন - এক মায়ের এই সংগ্রামী জীবন সত্যিই আলোড়িত করেন পাঠকহৃদয়কে । বারংবার আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়তে হয় এই উপন্যাস পড়ে। আমার পড়া শ্রেষ্ঠ উপন্যাস আনিসুল হক স্যারের লেখা এই "মা" উপন্যাসটি।
Was this review helpful to you?
or
এই উপন্যাসে একজন মায়ের জীবনের সংগ্রাম উপস্থাপন করা হয়েছে। যিনি একমাত্র ছেলেকে অবলম্বন করে বেঁচে ছিলেন। তারপরও মুক্তিযুদ্ধে নিজের ছেলেকে উৎসর্গ করতে পিছপা হননি। একজন মা যিনি সুখের সংসার ছেড়ে নিজের ছেলেকে নিয়ে বেঁচে ছিলেন এবং ছেলেকে কষ্ট করে মানুষ করেছিলেন তাকে মুক্তিযুদ্ধে হাড়ান।
Was this review helpful to you?
or
আজাদের মা কে নিয়ে শুরু করে মুত্তিযুদ্ধ ভিত্তিক অসাধারণ উপন্যাস। সংগ্রহে রাখার মত বই।
Was this review helpful to you?
or
আনিসুল হকের মা বইটি পড়তে যেয়ে আর পড়ার পর কতযে কেঁদেছি তা আর বলার অপেক্ষা রাখেনা। ম্যাক্সিম গোর্কির মা বইয়ের পর অনায়াসে এই বইটি সেরা। সব মায়েরাই সন্তানের জন্য সেরা কিন্তু এই বইটিতে মায়ের যে ভূমিকাটি উল্লেখ করা হয়েছে তা সত্যিই অতুলনীয় এবং এটি কোন গল্প নেই পুরো বাস্তব জীবন থেকে নেয়া। মা না হলে সন্তানের প্রতি যে মায়ের ভিতরে কি ভালবাসা আল্লাহ তৈরী করেছেন তা বোঝা যায়না।
Was this review helpful to you?
or
উপন্যাস 'মা' আনিসুল হকের লেখা মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে লেখা একটি উপন্যাস।কিন্তু,মুক্তিযুদ্ধের পাশাপাশি উঠে এসেছে একজন মা ও তার ছেলের দেশের জন্য তার ছেলেকে অনুমতি দিয়ে কঠিন আত্মত্যাগের এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন। আজাদ যুদ্ধে যায় আলতাফ মাহমুদ,জুয়েল,বদি,রুমিদের সাথে। ৭১ এর এক কালো দিনে ধরা পরে যায় আজাদ। মাকে ডাকা হয়, বলা হয় সহযোদ্ধাদের খবর দিতে পারলে ছেড়ে দেয়া হবে। কিন্তু মাতৃভূমির জন্য আরেক মা বললেন কঠিন হও, কারো নাম বলো না... আজাদ সেদিন ভাত খেতে চেয়েছিলেন, মা নিয়েও গিয়েছিলেন কিন্তু আজাদের দেখা আর তার মেলেনি। এরপরের কাহিনি পাঠক হৃদয়কে এতটা মর্মাহত করে যে উপন্যাসটি হয়ে যায় কালজয়ী উপন্যাস।
Was this review helpful to you?
or
লেখক উপন্যাসটি লিখেছেন তার হৃদয় দিয়ে।প্রকৌশলী সিভিল সার্ভিসের সদস্য হওয়া সত্ত্বেও লেখকের সাহিত্যমান সত্যি প্রশংসার দাবিদার। পরিশেষে, 'মা' সম্পর্কে সরদার ফজলুল করিমের একটি উক্তি দিয়ে শেষ করতে চাই-"আমি বলি দুই মা, ম্যাক্সিম গোর্কির মা আর আনিসুল হকের মা।"
Was this review helpful to you?
or
"মা "বাংলাদেশের কথাসাহিত্যিক ও সাংবাদিক আনিসুল হক রচিত একটি উপন্যাস। বইটি ২০০৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে প্রকাশিত হয়। উপন্যাসটি প্রচুর পাঠকপ্রিয়তা লাভ করেছে। এটি একটি বাস্তব ঘটনাভিত্তিক উপন্যাস। লেখক এই কাহিনীর সন্ধান পান মুক্তিযোদ্ধা ও নাট্যব্যক্তিত্ব নাসিরউদ্দিন ইউসুফ বাচ্চুর নিকট থেকে। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ আজাদ ও তার মায়ের জীবনের সত্য ঘটনা নিয়ে রচিত এই উপন্যাসটির আবেদন মর্মস্পর্শী। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের উপন্যাসগুলোর মধ্যে এটির স্থান অন্যতম। উপন্যাসটি Freedom's Mother নামে ইংরেজিতে ও La Madre নামে স্পেনীয় ভাষাতে অনূদিত হয়েছে। উপন্যাসের কাহিনী সংক্ষেপ: এই বই একজন মা কে নিয়ে লেখা। একজন আদর্শবান ব্যক্তিত্বসম্পন্ন মা কে নিয়ে তৈরী এই উপন্যাস। লড়াই করে বেচেঁ থাকা, শত আঘাতেও মাথা উচুঁ করে বেচেঁ থাকা হার না মানা মায়ের গল্প নিয়ে লেখা এই বই! সেই মা শহীদ আজাদের মা সাফিয়া বেগম! আজাদ ছিলো তার বাবা-মায়ের একমাত্র সন্তান। আজাদের বাবা ইউনুস চৌধুরী ছিলেন ইঞ্জিনিয়ার, টাটা কোম্পানিতে কর্মরত। তার পোস্টিং যখন কানপুর আজাদের তখন জন্ম। আজাদের জন্মের আগে অবশ্য আরো একটি মেয়ে হয়েছিলো সাফিয়া বেগমের। মেয়ের নাম রেখেছিলো বিন্দু। বিন্দু মেয়েটি মারা যায় বসন্ত রোগে। আজাদের পরে অবশ্য আরেকটি ছেলে হয়। সেও আতুর ঘরে মারা যায়। ১৯৪৭ সালে দেশ ভাগের পর এ দেশে চলে আসেন তারা। সে সময় সাফিয়া বেগম ছিলেন ঢাকার প্রভাবশালী ব্যক্তিদের মধ্যে একজনের স্ত্রী। আজাদরা থাকতো ইস্কাটনে। আজাদদের ইস্কাটনের বাড়িটা ছিলো দেখার মতো একটা বাড়ি! এসবকিছু পায়ে ঠেলে এক কাপড়ে বের হয়ে এসেছিলেন ছেলের হাত ধরে সাফিয়া বেগম। যেদিন ইউসুফ চৌধুরী আরেকটা বিয়ে করে এ বাড়িতে বউ নিয়ে আসেন। সুখের জীবন ছেড়ে কষ্টের সাথে লড়াই করতেও আপোষ করেন নি। কিন্তু তবুও মেনে নেন নি স্বামীর অন্যায়। আশা ছিলো, ছেলে আজাদ একদিন বড় হয়ে মায়ের দুঃখ ঘোচাবে। কিন্তু বিধি বাম! যেসময় আজাদের পড়াশোনা শেষে চাকরি করার কথা ঠিক সেসময়ই শুরু হয় দেশে মুক্তিযুদ্ধ। ঘুরে যায় কাহিনীর মোড়। সুখের দিন আর দেখা হয় না মা সাফিয়া বেগমের। শত আঘাতে জর্জরিত হয়েও নিজের আত্মবিশ্বাসে অটল ছিলেন। হার মানেন নি কখনো। মনের জোরে বেচেঁ ছিলেন। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে আজাদ তার বন্ধুদের সাথে যোগ দেয় । ঢাকায় ক্র্যাক প্লাটুনের এক জন যোদ্ধা ছিলেন তিনি। এই গেরিলা দলটি তৎকালীন সময়ে “হিট এন্ড রান" পদ্ধতিতে বেশ কিছু সংখ্যক আক্রমণ পরিচালনা করে পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর মধ্যে ব্যাপক ত্রাসের সঞ্চার করে । ১৯৭১ সালের ২৯ আগস্ট পাকিস্তানি বাহিনী রেইড চালিয়ে ক্র্যাক প্লাটুন এবং সংশ্লিষ্ট অনেক বিশিষ্ট ব্যক্তিদের ধরে নিয়ে যায় । আজাদের বাড়িতেও রেইড হয়, আজাদ তার সহযোদ্ধাদের সাথে ধরা পড়েন । পাকিস্তানিরা তাদের নির্মমভাবে নির্যাতন করে তথ্য জানতে চায়। প্রচণ্ড অত্যাচারের মুখেও তারা আজাদের মুখ থেকে কিছু বের করতে পারে না। তখন তার মাকে বলা হয়, ছেলে যদি সবার নাম-ধাম ইত্যাদি বলে দেয়, তাকে ছেড়ে দেওয়া হবে। আজাদের মা ছেলেকে বলেন কিছুই না বলতে । আজাদ বলে, মা দুদিন ভাত খাই না, ভাত নিয়ে এসো। মা পরের দিন ভাত নিয়ে হাজির হন কারাগারে। কিন্তু ছেলের দেখা মেলে না। ইতোমধ্যে আজাদকে হত্যা করা হয়েছে। আজাদকে ভাত খাওয়াতে না পেরে আজাদের মা নিজে জীবনে আর কোনোদিনও ভাত খাননি। যুদ্ধের ১৪ বছর পরে মা মারা যান, নিঃস্ব অবস্থায়। মুক্তিযোদ্ধারা তাকে কবরে শায়িত করলে আকাশ থেকে ঝিরঝির করে ঝরতে থাকে বৃষ্টি । প্রশংসা উপন্যাসটি প্রকাশের পর পাঠক মহলে ব্যাপক জনপ্রিয় হয় । সাহিত্য সমালোচকেরা এই উপন্যাসটিকে মুক্তিযুদ্ধের পর এবং মাকে নিয়ে যেকোন সময়ে লেখা একটি প্রধান উপন্যাসের মর্যাদা দিয়েছেন । বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও দার্শনিক সরদার ফজলুল করিম বলেছেন, "আমি বলি দুই মা; ম্যাক্সিম গোর্কির ''মা'' আর আনিসুল হকের মা : ... এই দুই মা যথার্থ মা হয়ে উঠেছেন আমার কাছে ।" সরোজিনী সাহু মন্তব্য করেছেন, "One of the best novels of Indian sub-continent.It made my eyes watery. Perhaps the success lies behind the strong theme of humanity." শেখর ইমতিয়াজ উপন্যাসের ইতিহাস ও প্রেক্ষাপটের আঙ্গিকে আবেগাপ্লুত হয়ে বলেছেন "প্রায় ৩০ বছর আগে ম্যাক্সিম গোর্কির মা উপন্যাসটি পড়ে কৈশোরিক দুরন্ত সাহস অর্জন করেছিলাম , আজ আনিসুল হকের মা উপন্যাসটি পড়ে নিজেদের ইতিহাসের বিস্মৃতির লীলায় প্রৌঢ়ত্বের বুকে ভীষণ কষ্ট হচ্ছে।" সমালোচনাঃ আনিসুল হকের মা উপন্যাসটি জনপ্রিয়তা পেলেও কাহিনী হিসেবে এর দুর্বলতা হলো অতিনাটকিয়তা যদিও আখ্যানভাগ বাস্তব ঘটনাকে অবলম্বন করে গড়ে উঠেছে। আধুনিক উপন্যাসের অন্যতম গুণ হলো পাত্রপাত্রীর চরিত্র থেকে লেখকের প্রশ্নাতীত দূরত্ব। বিপরীতে এ উপন্যাসে লেখকের ব্যক্তিগত আবেগ সর্বাংশে প্রকটিত হয়ে রচনাশৈলীকে তরল করে তুলেছে। এ উপন্যাসে যতটা সাংবাদিকতা আছে ততটা ঔপন্যাসিকতা নেই; ফলে আজাদের মা চরিত্রটি বিশ্বজনীন হয়ে উঠতে পারে নি। একাত্তুরের মুক্তিযুদ্ধের উপন্যাস হিসেবে এ গ্রন্থটির দালিলিক অবদান থাকলেও এর শিল্পমান বিশ্বসাহিত্যের সমশ্রেণীর অন্যান্য উপন্যাসের তুলনায় উচ্চ মাত্রায় উন্নীত হয় নি। এর বাস্তব কাহিনীটি চমকপ্রদ ও মর্মস্পর্শী হলেও একটি আধুনিকতা উপন্যাস যে ধরনের মন:স্তাত্ত্বিক অনুসন্ধিৎসা আশা করে তা এতে অনুপস্থিত। লেখক তার কল্পনাশক্তিকে প্রয়োগ করে কাঠামোকে আরো ঘনবদ্ধ করতে পারতেন, অন্যদিকে মূল কাহিনীকে অক্ষূণ্ন রেখেই আখ্যানভাগকে আরও বৈচিত্রময় করে তুলতে পারতেন ও মানব চরিত্রের যুদ্ধকালীন বিবর্তনকে ফুটিয়ে তুলতে পারতেন। কাহিনীর একরৈখিকতা উপন্যাসটির মহৎ সম্ভাবনাকে সংকুচিত করে ফেলেছে।
Was this review helpful to you?
or
Awesome Book
Was this review helpful to you?
or
Boi porata amar shokh-er o valolagar bisoy . Sai shokh o valo laga hote amra gore tulesi amader office library . Thanks Rokomari amader sokol boi thik quality te ena dewar jonno . And aro thanks alokito bangladesh gorar proyash newar jonno . Thanks the all team member of Rokomari .
Was this review helpful to you?
or
একই সাথে দুটি বিষয় একটি সংগ্রামী মায়ের জীবনি ও মুক্তিযুদ্ধকালীন ঘটনা। আনিসুল হক স্যার চমৎকার ভাবে সাবলীল ভাষায় উপন্যাসটি ফুটিয়ে তুলেছেন, যা পাঠকের হ্রদয় ছুয়ে যায়। মা যে সন্তানে জন্য কি না করতে পারে এটা তারই প্রমান। বইটি শুধু মুক্তিযোদ্ধা আজাদের মায়ের প্রতি শ্রদ্ধা ভালোবাসা জন্মাবেনা আপনার নিজের মায়ের প্রতি ভালোবাশা ও দায়িত্ববোধ জেগে উঠবে। বাংলা সাহিত্য "মা " উপন্যাসটি অমূল্য সম্পদ। আমার মতে মা সকলের পড়া উচিৎ। আর আনিসুল হক স্যারের প্রতি ভালোবাসা রইল , বইটিতে তার সু নিপুণ ছোঁয়ায় পাঠাকের অনুভূতি গুলো জেগে উঠে।
Was this review helpful to you?
or
উপন্যাসটি নতুন করে পরিচয় করিয়ে দেয় একজন মায়ের সাথে। যার নাম শহীদ আজাদের মা। এই ভদ্রমহিলা মারা যাওয়ার আগে বলে গিয়েছিলেন মারা গেলে কবরে যেন তার নাম লিখা না হয়। লিখতে হবে শহীদ আজাদের মা। তার ইচ্ছে অনুযায়ি তাই লিখা হয়। মায়ের ভালবাসার হাজার হাজার উদাহরন সারা বিশ্বে ছড়িয়ে আছে। সন্তান জন্ম দেয়া থেকে সন্তান বড় হওয়া পর্যন্ত মায়েদের যে যন্ত্রনা এবং কষ্টের ভিতর দিয়ে যেতে হয় তা মোটামুটি সব দেশেই কমন। মুক্তিযুদ্ধ আরাম্ভ হলে আজাদ যুদ্ধে চলে যায়। মুক্তিযুদ্ধের শেষ পর্যায়ে এসে আজিদ ধরা পড়ে পাকিস্থানিদের কাছে। আজাদের মা জেনেছিলেন পাকিস্থানিরা তার ছেলেকে মেঝেতে শোয়ায় এবং তাকে ভাত খেতে দেয় না। দেশ স্বাধিন হওয়ার পরে মা যতদিন বেঁচে ছিলেন, কখনো খাটে শোননি। মেঝেতে শুয়েছেন। শুকনো রুটি খেয়েছেন। ভাত মুখে দেন নি। কারন আজাদকে পাকিস্তানিরা এই অবস্থায় রেখেছিল। আমার মনে হয় এমন মায়ের সন্তান হতে হলে অনেক পুণ্য করতে হয়। আজাদ অতি ভাগ্যবান একজন ছেলে। বাস্তব কাহিনী নিয়ে লেখা একটি বই। খুব বেশি কিছু বলার নেই। তবে এই বই পড়ে চোখের কোন ভিজবে না তা হতে পারে না। নিজের অজান্তেই চোখের কোণ ভিজে যায়।
Was this review helpful to you?
or
খুবই ভাল বই। আমি পরে আবেগাপ্লুত হয়ে গিয়েছি।
Was this review helpful to you?
or
আনিসুল হকের লেখা 'মা' ঐতিহাসিক পটভূমিতে রচিত একটি উপন্যাস। ১৯৭১ এর উত্তাল স্বাধীনতা যুদ্ধ সময়ের ঘটনা কে কেন্দ্র করে উপন্যাসটি লেখা। উপন্যাসে দেখা যায় সব বন্ধুদের সাথে আজাদও যুদ্ধে যেতে। দেশকে শত্রুদের হাত থেকে বাঁচানোর জন্যে আজাদের মত ছেলেরা এগিয়ে না আসলে কে আসবে? এই কারণে আজাদ যখন যুদ্ধে গেল তখন তার মা তাকে না করতে পারেন নি। যুদ্ধ চলাকালীন সময় আজাদেরা মেলাঘর থেকে ট্রেনিং নিয়ে এসে ঢাকার ভিতরে অসাধারণ দুঃসাহসী সব অপারেশন করতে লাগলো। কিন্তু একদিন একটু অসতর্কতার কারণে হানাদার বাহিনীর হাতে ধরা পড়ে গেল তারা। তাদের মধ্য থেকে কয়েকজনকে থানায় রাখা হয়েছিলো। সেখানেই আজাদের সাথে তার মায়ের শেষ দেখা করেন। মা দেখেন, ছেলের কোন বিছানা নেই, মেঝেতে ঘুমায়। ভাল কোন খাবার নেই, খালি শুকনো রুটি খাওয়ায়। মা, ছেলের এ বেহাল দশা সহ্য করতে পারে না। ছেলেকে জিজ্ঞাসা করে সে কি খেতে চায়। ছেলে বলে। মা বাড়িতে ফিরে এসে সারা দিন, সারা রাত ছেলের পছন্দের খাবার রান্না করে। কিন্তু পরদিন গিয়ে দেখেন, তার ছেলে নেই। পাকিস্তানিরা তাকে অন্য কোথাও সরিয়ে ফেলেছে। মা দিশেহারা হয়ে ছেলের খোঁজ করেন সারা দেশে। কিন্তু খোঁজ মেলে না। এরি মাঝে দেশ স্বাধীন হয়। কিন্তু আজাদকে খুঁজে পাওয়া যায় না গেলে সবাই তার মাকে বলে যুদ্ধে সে শহীদ হয়েছে। কিন্তু মা তা মানতে নারাজ। যতদিন বেঁচে ছিলেন, কখনো খাটে শোননি, মেঝেতে শুয়েছেন। শুকনো রুটি খেয়েছেন, ভাত মুখে দেন নি। কারন আজাদকে পাকিস্তানিরা এই অবস্থায় রেখেছিল। একসময় তিনি বুঝতে পারেন, আজাদ আসলেই শহীদ হয়েছে। মৃত্যুর পর তার কবরের পাশে তার নিজের নাম লেখা হয় নি। তার ইচ্ছানুযায়ী লেখা হয়েছিল ‘শহীদ আজাদের মা’।
Was this review helpful to you?
or
এই বই একজন মা কে নিয়ে লেখা। একজন আদর্শবান ব্যক্তিত্বসম্পন্ন মা কে নিয়ে তৈরী এই উপন্যাস। লড়াই করে বেচেঁ থাকা, শত আঘাতেও মাথা উচুঁ করে বেচেঁ থাকা হার না মানা মায়ের গল্প নিয়ে লেখা এই বই! সেই মা শহীদ আজাদের মা সাফিয়া বেগম! আজাদ ছিলো তার বাবা-মায়ের একমাত্র সন্তান। আজাদের বাবা ইউনুস চৌধুরী ছিলেন ইঞ্জিনিয়ার, টাটা কোম্পানিতে কর্মরত। তার পোস্টিং যখন কানপুর আজাদের তখন জন্ম। আজাদের জন্মের আগে অবশ্য আরো একটি মেয়ে হয়েছিলো সাফিয়া বেগমের। মেয়ের নাম রেখেছিলো বিন্দু। বিন্দু মেয়েটি মারা যায় বসন্ত রোগে। আজাদের পরে অবশ্য আরেকটি ছেলে হয়। সেও আতুর ঘরে মারা যায়। ১৯৪৭ সালে দেশ ভাগের পর এ দেশে চলে আসেন তারা। সে সময় সাফিয়া বেগম ছিলেন ঢাকার প্রভাবশালী ব্যক্তিদের মধ্যে একজনের স্ত্রী। আজাদরা থাকতো ইস্কাটনে। আজাদদের ইস্কাটনের বাড়িটা ছিলো দেখার মতো একটা বাড়ি! এসবকিছু পায়ে ঠেলে এক কাপড়ে বের হয়ে এসেছিলেন ছেলের হাত ধরে সাফিয়া বেগম। যেদিন ইউসুফ চৌধুরী আরেকটা বিয়ে করে এ বাড়িতে বউ নিয়ে আসেন। সুখের জীবন ছেড়ে কষ্টের সাথে লড়াই করতেও আপোষ করেন নি। কিন্তু তবুও মেনে নেন নি স্বামীর অন্যায়। আশা ছিলো, ছেলে আজাদ একদিন বড় হয়ে মায়ের দুঃখ ঘোচাবে। কিন্তু বিধি বাম! যেসময় আজাদের পড়াশোনা শেষে চাকরি করার কথা ঠিক সেসময়ই শুরু হয় দেশে মুক্তিযুদ্ধ। ঘুরে যায় কাহিনীর মোড়। সুখের দিন আর দেখা হয় না মা সাফিয়া বেগমের। শত আঘাতে জর্জরিত হয়েও নিজের আত্মবিশ্বাসে অটল ছিলেন। হার মানেন নি কখনো। মনের জোরে বেচেঁ ছিলেন। সেই সকল ঘটনা নিয়েই লেখা আনিসুল হকের "মা" বইটি। ম্যাক্সিম গোর্কির "মা" আর আনিসুল হকের "মা" দুই বইয়ের মধ্যে আমার কাছে ভালো লেগেছে আনিসুল হকের "মা" বইটি। উপন্যাসটি নতুন করে পরিচয় করিয়ে দেয় একজন মায়ের সাথে। যার নাম শহীদ আজাদের মা। এই ভদ্রমহিলা মারা যাওয়ার আগে বলে গিয়েছিলেন মারা গেলে কবরে যেন তার নাম লিখা না হয়। লিখতে হবে শহীদ আজাদের মা। তার ইচ্ছে অনুযায়ি তাই লিখা হয়। মায়ের ভালবাসার হাজার হাজার উদাহরন সারা বিশ্বে ছড়িয়ে আছে। সন্তান জন্ম দেয়া থেকে সন্তান বড় হওয়া পর্যন্ত মায়েদের যে যন্ত্রনা এবং কষ্টের ভিতর দিয়ে যেতে হয় তা মোটামুটি সব দেশেই কমন। মুক্তিযুদ্ধ আরাম্ভ হলে আজাদ যুদ্ধে চলে যায়। মুক্তিযুদ্ধের শেষ পর্যায়ে এসে আজিদ ধরা পড়ে পাকিস্থানিদের কাছে। আজাদের মা জেনেছিলেন পাকিস্থানিরা তার ছেলেকে মেঝেতে শোয়ায় এবং তাকে ভাত খেতে দেয় না। দেশ স্বাধিন হওয়ার পরে মা যতদিন বেঁচে ছিলেন, কখনো খাটে শোননি। মেঝেতে শুয়েছেন। শুকনো রুটি খেয়েছেন। ভাত মুখে দেন নি। কারন আজাদকে পাকিস্তানিরা এই অবস্থায় রেখেছিল। আমার মনে হয় এমন মায়ের সন্তান হতে হলে অনেক পুণ্য করতে হয়। আজাদ অতি ভাগ্যবান একজন ছেলে। বাস্তব কাহিনী নিয়ে লেখা একটি বই। খুব বেশি কিছু বলার নেই। তবে এই বই পড়ে চোখের কোন ভিজবে না তা হতে পারে না। নিজের অজান্তেই চোখের কোণ ভিজে যায়। আজাদের মায়ের আত্মবিশ্বাস আর সাহস সত্যিই প্রশংসনীয়। তা না হলে নিজের কষ্ট করে মানুষ করা ছেলেকে দেশের প্রতি কুরবান কয়জন মা করতে পারে?
Was this review helpful to you?
or
অসাধারণ একটা বই। বইটি পড়লেই বোঝা যাবে মায়ের মতো আপন আর কেউ নেই।এই উপন্যাসটির মূল কাহিনী ১৯৭১ সালের বাংলাদেশের স্বাধীনতার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে।১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে ছেলেহারা শহীদ আজাদের মা সাফিয়া বেগমমের সংগ্রামী জীবনের কাহিনী সুন্দরভাবে ফুটে উঠেছে এই উপন্যাসটিতে।বইটি পড়ুন, অসম্ভব ভালো লাগবে।
Was this review helpful to you?
or
বিংশ শতাব্দীর ঢাকা সম্পর্কে ও মুক্তিযুদ্ধের সম্পর্কে জানতে হলে অবশ্যই বই টি পড়তে হবে । বই টি পড়ার পর ম্যাক্সিম গোর্কির বিখ্যাত "মা" উপন্যাস পড়ার কৌতুহল জেগেছে । এককথায় অন্যান্য অসাধারণ উপন্যাস টি, অসাধারণ প্রামন্যদলিল উপস্থাপন এর মাধ্যমে
Was this review helpful to you?
or
পৃথিবীতে প্রত্যেকটি সন্তানের কাছেই মা হচ্ছে সবচেয়ে শ্রদ্ধেয়, সম্মানিত ও প্রিয় চরিত্র। সন্তানের জন্য মায়ের মত আর কেউ হয় না। আনিসুল হক তার এই বইটিতে যেভাবে মাকে উপস্থাপন করেছেন তার প্রশংসা না করে পারা যায় না। শহিদ আজাদের মায়ের মতই পৃথিবীর সকল মা। এই বইটিতে আমাদের মুক্তিযুদ্ধে শহিদ আজাদের মাকে নিয়ে লেখা হয়েছে। সালাম সেই সব মাকে যারা নিজের প্রিয় সন্তানকে অকাতরে বিলিয়ে দিয়েছেন দেশের জন্য।
Was this review helpful to you?
or
বইয়ের নাম – মা লেখক – আনিসুল হক পৃষ্ঠা – ২৬৮ প্রকাশনী- সময় মুদ্রিত মূল্য – ৩০০ টাকা মা মূলত মুক্তিযুদ্ধকাহিনী ভিত্তিক উপন্যাস । আনিসুল হকের বই বেশি পড়া হয় না । তবে এই বইয়ের অনেক সুনাম শুনে পড়েছি । আমার মতে মা আনিসুল হকের সবেচেয়ে সেরা বই । আনিসুল হক একটা ধন্যবাদই পেতে পারেন অসাধারন গল্প লেখার পাশাপাশি এমন অসাধারণ একটি কাহিনী খুঁজে বের করার জন্য । মা গল্পের মুখ্য চরিত্র মূলত আজাদ ও তার মা। আজাদের বাবা দ্বিতীয় বিয়ে করার পর তার মা তাকে নিয়ে তার বাবার বাড়ি ছেড়ে দেন । শুরু হয় তার সংগ্রামী জীবন । অনেক কষ্টের মাঝেও আজাদকে লেখাপড়া করিয়ে মানুষ করে তোলেন । আজাদ পরিবারের হাল ধরতে শুরু করে আর তার মা সাফিয়া বেগম এর দুঃখের জীবনের অবসান হয় ।এদিকে তখন বাংলাদেশ ভীষণ উত্তপ্ত । শেখ মুজিবর রহমান ৭ই মার্চ বাঙালিকে স্বাধীনতা যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হতে বলেন । ২৫ শে মার্চ পাকিস্তান আর্মির নৃশংসতা খুব কাছে থেকে প্রত্যক্ষ করে আজাদ । সে তার মায়ের কাছে যুদ্ধে যাওয়ার জন্য অনুমতি দেয় । তার মার মন অনুমতির জন্য সায় না দিলেও দেশের কথা ভেবে , দেশের মানুষের কথা ভেবে , মানবতার বৃহৎ স্বার্থে তাকে অনুমতি দিয়ে দেন । এদিকে একসময় আজাদ পাকিস্তান আর্মির হাতে ধরা পড়ে । দেশ স্বাধীন হয়ে গেলে একে একে সবাই ফিরে আসলেও আজাদ ফিরে আসে না । সাফিয়া বেগম প্রতিদিন অপেক্ষার প্রহর গুনতে থাকেন । কিন্তু আজাদরা তো আর ফিরে আসেনা ... এই গল্পটা এক সংগ্রামী মায়ের বেঁচে থাকার গল্প , এ গল্পটা আজাদের মত শত শত আজাদের গল্প , এ গল্প না ফিরে আসার গল্প , এ গল্পটা পাঠকহৃদয়ে দাগ কাটার মত গল্প । আজাদদের গল্প জানতে , তার মায়ের গল্প জানতে এখনই পড়ে ফেলুন আনিসুল হকের ‘মা’ বইটি
Was this review helpful to you?
or
বইটি মূলত উপন্যাস হলেও একদম সত্য ঘটনা অবলম্বনে লেখা হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধে শহীদ মাগফার চৌধুরী আজাদ এবং তাদের মা এই উপন্যাসের কেন্দ্রীয় চরিত্র। প্রাচুর্যের মধ্যে বেড়ে ওঠা আজাদ একদিন মুক্তিযুদ্ধে যায় এবং সাহসের সাথে যুদ্ধ করে। এক পর্যায়ে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর হাতে ধরা পড়লে আজাদের মা তাঁকে বলেন সে যেন শত অত্যাচারেও সঙ্গীদের কথা না বলে। আজাদ বলেছিল, সে অনেকদিন ভাত খেতে পায় না। আজাদের মা পরদিন ছেলের সাথে দেখা করতে গিয়েছিলেন ভাত নিয়ে। ছেলে সেখানে ছিল না। বাকি জীবন আজাদের মা ভাত খাননি, বিছানায় ঘুমান নি। আনিসুল হকের এই উপন্যাসটি নিয়ে বিস্তর সমালোচনা, সাহিত্যমান নিয়ে প্রশ্ন উঠলেও এই উপন্যাসে আজাদ এবং আজাদের মায়ের মাধ্যমে উঠে এসেছে যুদ্ধকালীন সময়ের কথা। আজাদের সঙ্গী মুক্তিযোদ্ধা, বন্ধুদের যে কথা লেখক লিখেছেন তাও বাস্তব সত্য।
Was this review helpful to you?
or
শহীদ আজাদের মা সাফিয়া বেগম ছিলেন ঢাকার সবচেয়ে প্রভাবশালী ব্যক্তিদের মধ্যে একজনের স্ত্রী। তিনি ছিলেন আত্মমর্যাদাবান। তাই তার স্বামী যখন দ্বিতীয় বিবাহ করলেন, তখন তিনি তা মেনে নেননি। ছোট্ট আজাদকে নিয়ে শত বিলাসিতা আর প্রাচুর্যের ঘেরাটোপ পেরিয়ে নেমে এসেছিলেন নিজের গড়া যুদ্ধক্ষেত্রে। সেই যুদ্ধের তিনি ছিলেন সফল যোদ্ধা। অভাব অনটনকে পেছনে ফেলে নিজ হাতে তিনি মানুষের মত মানুষ করে তুলেছিলেন আজাদকে। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে আজাদ তাঁর বন্ধুদের সাথে যোগ দেয় । এক সময় পাক হানাদারদের নির্মম নির্যাতনে শাহাদাত বরণ করে। এই উপন্যাসের যে দিক আমার কাছে ভালো লেগেছে তা হলো আবেগ।উপন্যাসের সাথে শুধু লেখক নয় আমাদের আবেগও জড়িয়ে আছে। লেখক বইটি একাগ্রতার সাথে লিখেছেম যার দরুন তিনি আজাদের দ্বিতীয় মা,ভাই,সহপাঠীদের সাথে দেখা করেছেন। মোট কথা হারিয়ে যেতে বসা এক মুক্তিযুদ্ধা আর তার মায়ের আত্মত্যাগ বইয়ের পাতায় লিপিবদ্ধ হয়েছে। এর নেগেটিভ দিক হলো কাহিনীর দুর্বলতা,অতিনাটকীয়তা যা লেখক পরিহার করলেও পারতেন।এই উপন্যাসের কাহিনী চমকপ্রদ ও মর্মস্পর্শী হলেও আধুনিক উপন্যাসে আমরা যে ধরনের মনঃস্তাত্ত্বিক অনুসন্ধিৎসা আসা করি তা অনুপস্থিত। লেখকের কাহিনির উপস্থাপন আমার ভালো লাগেনি। এই উপন্যাস মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক উপন্যাস হিসেবে গ্রহনযোগ্য হলেও বিশ্বসাহিত্যের অন্যান্য উপন্যাস কে টক্কর দিতে পারবে কিনা এ ব্যাপারে আমি যথেষ্ট সন্দিহান। একটা লোক যখন মারা যায় তখন ভাইয়ের কাছে সেটা চলে যাওয়া, বোনের কাছে সেটা শূন্যতা বাবার কাছে তার নিজেরই ধারাবাহিকতা ছেদ,বন্ধুর কাছে সেটা অতীত স্মৃতি আর ছেদ,পড়শীর কাছে সেটা দীর্ঘ শ্বাস, দেশের কাছে হয়ত প্রিয়তম পাতার ঝড়ে যাওয়া,কিন্তু মায়ের কাছে? এই প্রশ্নের উত্তরই খোজা হয়েছে উপন্যাসে।কিন্তু উত্তর কি মিলেছে? নাকি এই উত্তর খোঁজার নয়? পাঠক মাত্রই মা উপন্যাসটি পড়তে গিয়ে চোখে জল ফেলবে।মুক্তিযুদ্ধের দিনগুলির কথা জানতে,মায়েদের আর্তনাদ শুনতে, বন্ধুর কান্না দেখতে, আত্মত্যাগের ইতিহাস জানতে এই উপন্যাস টি অসাধারণ।
Was this review helpful to you?
or
"মা" আনিসুল হক বিজয়ের মাসে আবার হাতে তুলে নিলাম আনিসুল হক এর লেখা মা বই টি। বই টির কাহিনী সম্পর্কে কম বেশি সবাই জানেন তাই নতুন করে জানা কথা গুলো লিখলাম না৷ আমার মতে আনিসুল হক যদি এই উপন্যাসটি না লিখতেন তাহলে আমরা আজাদের মাকে জানতাম না। হাজার মানুষের মায়ের প্রতীক হয়ে ওঠা এমন একজন মা আমাদের প্রয়োজন ছিল। এই কাহিনি আজাদ তাঁর বুকের রক্ত দিয়ে লিখেছেন। আজাদের মা তাঁর অশ্রু দিয়ে লিখেছেন। যা তাঁর নিজস্ব সংগ্রাম। যারা পড়েন নি তারা সময় সুযোগ করে অবশ্যই পড়বেন।
Was this review helpful to you?
or
#book_review বইয়ের নাম: মা লেখক: আনিসুল হক জাহানারা ইমাম যখন আজাদের মাকে জিজ্ঞেস করেছিলেন আপনার ছেলে কি বলল? তখন আজাদের মা বললেন, 'বলল, মা, খুব মারে।ভয় লাগে, যদি মারের চোটে বলে দিই সবকিছু।' 'আপনি কি বললেন?' "বললাম, বাবা, কারো নাম বলোনি তো। বোলো না। যখন মারবে শক্ত হয়ে থেকো সহ্য করো।" এই কথাগুলো বলেছিলেন এমন একজন মা যে মাকে তার একমাত্র সন্তান একদিন বলেছিল, 'মা, তুমি কিন্তু আমাকে কোন দিনও মারো নাই, আশ্চর্য, না!" যে ছেলেকে কোনদিন ফুলের ঠোকাও লাগতে দেননি সে ছেলেকে বলে এসেছেন, "যখন মারবে শক্ত হয়ে থেকো সহ্য করো"। এই ছেলেই যখন সাফিয়া বেগমকে(শহীদ আজাদের মা) এসে বলেছিল, মা, আমিও যুদ্ধ করব।তখন সাফিয়া বেগম খানিকটা দ্বিধাদ্বন্দেই পড়ে গিয়েছেলেন।কারণ উনি রাগ করে উনার স্বামীর ইস্কাটনের বাড়ি এক বস্ত্রে ছেড়ে আসার পর আজাদ তার একমাত্র অবলম্বন যাকে নিয়ে তিনি স্বপ্ন বুনে চলেছেন প্রতিনিয়ত। স্বপ্ন বুনাও প্রায় শেষের পথে ছেলে তার এমএ পড়ছে,সাথে ব্যবসাও করছে, এখন পরিবারেও মোটামুটি সচ্ছলতা ফিরে এসেছে।ছেলের বিয়ে দেওয়ার জন্য কন্যাও প্রায় ঠিক করে রেখেছেন।এই অবস্থায় ছেলেকে কি মৃত্যুর মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দিতে পারেন উনি? হ্যা, এই দৃঢ়চেতা মহিলা তার ছেলেকে দেশমাতৃকার আহ্বানে সাড়া দিতে সম্মতি দিয়েছিলেন। বন্দী অবস্থায় ছেলেকে যখন মা দেখতে গিয়েছিলেন তখন ছেলে তার বলেছিল, 'আচ্ছা।মা,ভাত খেতে ইচ্ছে করে। দুই দিন ভাত খাই না।কালকে ভাত দিয়েছিল, আমি ভাগ পাই নাই।' সাফিয়া বেগম পরদিনই তার ছেলের জন্য ভাত রান্না করে নিয়ে গিয়েছিলেন,কিন্তু তার ছেলেকে কোথাও খুঁজে পাননি, না থানায় না এমপি হোস্টেলে, কোথাও না। তারপর তিনি ভাত রেঁধে, রাতে দরজা খুলে অপেক্ষা করতেন, কখন তার ছেলে ফিরে আসবে, এসে যদি ভাত না পায়। বিজয়ের প্রাক্কালে সবাই যখন ফিরে আসছিল তখন তিনিও তার ছেলের জন্য ভাত রেঁধে অপেক্ষা করছিলেন। কিন্তু ফিরে আসে নি আজাদ। একবার আমাকে দুদিন ভাত না খেয়ে রুটি খেয়ে থাকতে হয়েছিল।তৃতীয় দিন আমার কাছে মনে হয়েছিল পৃথিবীর সবচেয়ে সুস্বাদু খাবারও যদি আমার সামনে রাখা হয় তা ভাতের কাছে তুচ্ছ। আর এই দৃঢ়চেতা মা ১৯৭১ সালের ৩১ আগস্ট থেকে ১৯৮৫ সালের ৩০ আগস্ট পর্যন্ত, এই ১৪ বছর তিনি কোন দিন মুখে ভাত দেননি। একবেলা রুটি খেয়েছেন, কখনো কখনো পাউরুটি খেয়েছেন পানি দিয়ে ভিজিয়ে। মাঝেমধ্যে আটার মধ্যে পেয়াঁজ-মরিচ মিশিয়ে বিশেষ ধরনের রুটি বানিয়েও হয়তো খেয়েছেন। কিন্তু ভাত নয়।শুধু কি তাই! তিনি এই ১৪ বছর কোনদিন বিছানায় শোননি। শুয়েছেন মেঝের উপর বিছানো একটা পাটিতে। মাথায় বালিশের বদলে দেন একটা পিঁড়ি।কারণ তার ছেলে যে জেলখানায় এইভাবেই ঘুমাতো। শুধু কি ভাত না খেয়ে থাকা বা মাটিতে শুয়া,যখনই তিনি রুটি মুখে দিতেন তখনকি তার মনে হয়নি তার ছেলে ভাত না খেয়ে কষ্ট পাচ্ছিল,তিনি কি প্রতিক্ষণে সেই কষ্টে পীড়িত হননি? বিজয়ের পর সাফিয়া বেগমের আর্থিক অবস্থা খারাপ হতে লাগলো। একসময় রানীর মত থাকা নারী বস্তির ন্যায় একটি জায়গায় বাসা নিয়ে থাকতে হয়।তার এ অবস্থায় তার অনেক শুভাকাঙ্ক্ষীই পীড়িত হন। তাকে সাহায্য করতে চান কিন্তু তিনি কারো সাহায্য নেননি। এমনকি উনার ছেলে নেই একপ্রকারের নিশ্চিত জেনেও উনি ছেলের বউয়ের জন্য রাখা গয়নায়ও হাত দেননি।এটা তেমন অবাক করা কোন ঘটনা নয়।অবাক তো তখন হতে হয় যখন ট্রাঙ্ক খুলে দেখা গেল প্রায় একশ ভরি সোনার গয়না। শুধু কি তাই তিনি ছিলেন তাদের ইস্কাটনের রাজপ্রাসাদের ন্যায় বাড়ির মালিক, ছিলেন ফরাশগঞ্জের একটি বাড়ির ও বহু জমিজমার মালিক। এত ধনসম্পদের মোহ ত্যাগ করে এত কষ্টে দিনাতিপাত করেছিলেন এই মা। এ কাহিনী শুধু এক ভালবাসার নিদর্শন নয় এটি এক নারীর আত্মমর্যাদার লড়াই। আর এটা কোন লেখকের কল্পনার রাজ্যে রচিত কোন নারীর আখ্যান নয়,এটা বঙ্গোপসাগরের তীরবর্তী ৫৬৯৭৭ বর্গমাইলের ছোট্ট একটি দেশ, বাংলাদেশে ঘটে যাওয়া নিরেট সত্য এক ঘটনা।
Was this review helpful to you?
or
অসাধারণ একটি বই
Was this review helpful to you?
or
কিছু গল্প আছে যার ধারা পাঠককে বইয়ের ভেতর টেনে নিয়ে যায়। যে বইটি সম্পর্কে বলতে চলছি তা এমনি একটি গল্প যার ধারা আপনাকে মোহিত করবে। হৃদয়ের কোণে লুকিয়ে থাকা মুক্ত সত্তাকে নাড়া দেবে, নিঃশব্দে বলে যাবে অনেক কিছু ।
Was this review helpful to you?
or
#রকমারি_রিভিউ_প্রতিযোগ_মার্চ রিভিউ নংঃ ১২ উপন্যাসঃ মা লেখকঃ আনিসুল হক, ক্যাটাগরিঃ মুক্তিযুদ্ধের উপন্যাস, মূল্যঃ৩৭৪ টাকা প্রকাশনীঃসময় লেখক পরিচিতিঃ আনিসুল হক (জন্ম: মার্চ ৪, ১৯৬৫) একজন বাংলাদেশী কবি, লেখক, নাট্যকার ও সাংবাদিক। বর্তমানে তিনি বাংলাদেশের দৈনিক প্রথম আলোর সহযোগী সম্পাদক এবং কিশোর আলোর সম্পাদক পদে কর্মরত আছেন। মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ের সত্য ঘটনা নিয়ে তাঁর লেখা মা বইটি বেশ জনপ্রিয়।বাংলা ভাষার পাশাপাশি বইটি দিল্লী থেকে ইংরেজি ভাষায় এবং ভুবনেশ্বর থেকে উড়ে ভাষায় প্রকাশিত হয়েছে। কাহিনী সংক্ষেপেঃ একজন আদর্শবান ব্যক্তিত্বসম্পন্ন মা -কে ঘিরে রচিত এই উপন্যাসটি। লড়াই করে বেঁচে থাকা ! শত আঘাতেও মাথা উঁচু করে বেঁচে থাকা হার না মানা এক আদর্শবান মায়ের বাস্তব জীবনী নিয়ে লেখা এই বই। শহীদ আজাদের মা সাফিয়া বেগম ছিলেন ঢাকার সবচেয়ে প্রভাবশালী ব্যক্তিদের মধ্যে একজনের স্ত্রী। তিনি ছিলেন আত্মমর্যাদাবান। তাই তার স্বামী যখন দ্বিতীয় বিবাহ করলেন, তখন তিনি তা মেনে নেননি। ছোট্ট আজাদকে নিয়ে শত বিলাসিতা আর প্রাচুর্যের ঘেরাটোপ পেরিয়ে নেমে এসেছিলেন নিজের গড়া যুদ্ধক্ষেত্রে। সেই যুদ্ধের তিনি ছিলেন সফল যোদ্ধা। অভাব অনটনকে পেছনে ফেলে নিজ হাতে তিনি মানুষের মত মানুষ করে তুলেছিলেন আজাদকে। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে আজাদ তাঁর বন্ধুদের সাথে যোগ দেয় । ১৯৭১ সালের ২৯ আগস্ট পাকিস্তানি বাহিনী রেইড চালিয়ে ক্র্যাক প্লাটুন এবং সংশ্লিষ্ট অনেক বিশিষ্ট ব্যক্তিদের ধরে নিয়ে যায় । আজাদের বাড়িতেও রেইড হয় , আজাদ তাঁর সহযোদ্ধাদের সাথে ধরা পড়েন । পাকিস্তানিরা তাদের নির্মমভাবে নির্যাতন করে তথ্য জানতে চায় । প্রচণ্ড অত্যাচারের মাঝেও তারা আজাদের মুখ থেকে কিছু বের করতে পারে না । তখন তার মাকে বলা হয়, ছেলে যদি সবার নাম-ধাম ইত্যাদি বলে দেয়, তাকে ছেড়ে দেওয়া হবে । আজাদের মা ছেলেকে বলেন কিছুই না বলতে । আজাদ বলে, মা দুদিন ভাত খাই না, ভাত নিয়ে এসো। মা পরের দিন ভাত নিয়ে হাজির হন বন্দিশিবিরে, কিন্তু ছেলের দেখা মেলে না। আজাদের মা আর কোনোদিনও জীবনে ভাত খাননি। পাঠ্য প্রতিক্রিয়াঃ কিছু বই থাকে যেগুলোর রেটিং হয়না, এককথায় বলতে গেলে আমার জীবনের শ্রেষ্ঠ এক মা এর কাহিনী পড়লাম। আর চোখে পানির ধারা আটকানো যাচ্ছে না। আমি বাজি ধরে বলবো এমন কোন বই পড়ুয়া কে পাবোনা যে কি না বইটি পড়ে কিছুক্ষণ চুপ করে বসে থাকবে না। জীবনে এই একটা বই হলেও পড়ে দেখা উচিত।
Was this review helpful to you?
or
আমার পড়া বাংলাদেশি লেখকের প্রথম উপন্যাস আনিসুল হক স্যারের "মা"। "মা" বইটি আমাকে পড়তে বলেছিলেন আমার বাবা। আসলে আমার মতে - এটা শুধুমাত্র একটা বই নয়, দলিল বলা যায়। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকে নিয়ে নতুন করে ভাবতে ইচ্ছা করে এই বই পড়লে। রিভিউ দিতে দেরি হলো। কেননা বইটি ২০১৯ এর জানুয়ারিতে কেনা হলেও, বইটির প্রতিটা শব্দ মনের মধ্যে গেঁথে রাখার জন্য এখন অবধি ৪ বার পড়েছি। সামনে বারংবার পড়ব। ২০২১ এ বইটির ১০০তম মুদ্রণ বের হবে - তার জন্য শুভকামনা।
Was this review helpful to you?
or
মা ভালবাসা
Was this review helpful to you?
or
মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে প্রিয় উপন্যাস আনিসুল হকের "মা" এই উপন্যাস টি প্রিয় হওয়ার পেছনে বড় কারন আজাদের মা। এতো সংকল্পবদ্ধ আর জেদী হওয়ার কারনে ওনার চরিত্র আমার আমার মনে গভীর দাগ কেটেছিলো। একটি নারীর জীবনে স্বামী চলে যাওয়ার পরে যখন সন্তান বেঁচে থাকার অবলম্বন হয়, তাকেও যদি অকালে প্রান হারাতে হয় তাহলে এক মায়ের জীবন কতোটা দুর্বিষহ হতে পারে তা বলার অপেক্ষা রাখেনা। এই বিষয়বস্তুর সাথে আরো যোগ হয়েছিল মায়ের প্রতি আজাদের শ্রদ্ধাবোধ। সবকিছু মিলিয়ে বইটা অসাধারন ছিলো। কাহিনী সংক্ষেপ: আজাদ সেই সময়ে ঢাকার সবগুলো ধনী পরিবারের মধ্যে একটিতে বেড়ে ওঠে। তাই কোন কিছুর অভাব ছিলোনা তার জীবনে। কিন্তু অনেক সুখী পরিবার থাকার পরেও তার বাবা আরেকটি বিয়ে করে নিয়ে আসে। আর এটা দেখামাত্রই আজাদের মা আজাদ কে নিয়ে এক কাপড়ে বের হয়ে আসে সেই সুখের রাজ্য ছেড়ে। আর আজাদ কে অনেক কষ্টে মানুষের মতো মানুষ করার দৃঢ় প্রতিজ্ঞা করেন। আজাদ করাচি থেকে পড়াশোনা শেষ করে দেশে ফেরে। কিন্তু ঠিক ঐ সময়টাতেই দেশের অবস্থা ভালো না থাকার কারনে মায়ের দোয়া নিয়ে আজাদকে যুদ্ধে যেতে হয়। পরবর্তী তে অনেক ঘটনার মাধ্যমে গল্প টা সামনের দিকে এগোতে থাকে। সাবধানতা অবলম্বন করার পর ও শকুনিদের চোখ কে ফাকি দিতে পারেনা। অবশেষে আজাদ কে শকুনিদের হাতে জীবন দিতে হয় কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত তার লাশ দেখার ও সৌভাগ্য হয়না এই দুঃখীনী মায়ের। শেষ যেদিন কারাগারে দেখা হয়েছিল, আজাদ তার মায়ের কাছে ভাত খেতে চেয়েছিল। তাই আজাদের মা ভাত নিয়ে পরেরদিন দেখা করতে আসলেও ছেলের আর খোজ পায়না। এই জেল থেকে ঐ জেল ঘুরেও ছেলের মুখে আর ভাত তুলে দিতে পারেনি। তাই ঐ দিনের পর থেকে উনি যে বাকি ১৪ বছর বেচে ছিলেন, সম্পুর্ন ভাত না খেয়ে এবং মাটিতে শুয়ে কাটিয়ে দিয়েছিলেন।
Was this review helpful to you?
or
একটা দেশ স্বাধীন হওয়া চারটেখানি কথা না।স্বাধীন দেশের পতাকা যেকোন কিছুর চেয়েও সুন্দর।সেখানে আমাদের মুক্তিযুদ্ধটা ছিল আলাদা,আমাদের কোন সেনা-সৈন্য নেই,শিক্ষক ছাত্র থেকে সবাই যোদ্ধা।এমন একটা অবস্থায় ধরে নেয়াই যায় দেশ স্বাধীন হবে না,কয়েক্টা ছাত্র,মজুর মিলে কীভাবে দেশ স্বাধীন করবে?কিন্তু আমাদের মধ্যে ছিল দৃঢ় মনোবল।মাথায় ছিল তখন এক্টাই চিন্তা 'জয় বাংলা' মুক্তি পেতে হবে জন্তুদের কাছ থেকে। যুদ্ধে কত মা তাদের সন্তানকে হারিয়েছেন তার কোন ইয়াত্তা নেই।কিন্তু তারমধ্যে আজাদের মা ছিলেন ব্যতিক্রম মা। ঢাকা শহরে ধনীদের তালিকায় প্রথম দিকে ছিলেন আজাদের বাবা।ভাই,বোন আরও থাকলেও কেও বেঁচে নেয়,শুধু আছে আজাদ।একমাত্র ধন।চালচলনও তার আলাদা।তিন টাকার বিদেশি সিগারেট কিনতে তিন টাকা রিকশা ভাড়া দিতে তার কার্পণ্য নেই।সেই আজাদ আর তার মা'র ভাগ্য পুড়ে যখন তার বাবা আরেকটা বিয়ে করে নিয়ে আসে।আজাদ আর তার মা চলে আসেন রাজপ্রাসাদ তুল্য বাড়ি থেকে।বড়লোকি জীবন থেকে একেবারে নিম্নবিত্ত জীবন।তবুও আজাদ তার আগের অবস্থা পরিবর্তন করতে পারতো না যার কারণে সংসারে টান পড়ত খুব,কিন্তু এক্টামাত্র ছেলে মা কিছু বলতেও পারেন না।সবচেয়ে আশ্চর্য্যের কথা মা কখনো তার ছেলেকে গায়ে হাত পর্যন্ত দেননি।সেই ছেলে একসময় মুক্তিযুদ্ধে যেতে চায়। মা কীভাবে যেতে দেবে?তার একমাত্র ছেলে যে ছেলেকে তিনি কখনো বাস্তবতা বুঝতে দেননি যে ছেলের গায়ে তিনি কখনো হাত দেননি সে ছেলে এসব যুদ্ধ টুদ্ধ কীভাবে করবে? আনিসুল হকের 'মা' এক মায়ের কাহিনী, মা শহীদ আজাদের মায়ের কাহিনী, মা শহীদ আজাদের কাহিনী। গল্পটা সত্য ঘটনা অবলম্বনে লেখা।তাই বলে লেখক যে কল্পনার আশ্রয় নেননি তা না।ভূমিকাতেই তিনি এ কথা জানিয়েছেন,কল্পনা না হলে যে সাহিত্য দাঁড় করানো যায় না! আনিসুল হক যথেষ্ট সুন্দর করে লিখেছেন তবুও বারবার মনে হয়েছে ইশ যদি হুমায়ূন আহমেদ লিখত! পড়ার আমন্ত্রণ রইলো।
Was this review helpful to you?
or
"বইটা সংগ্রহে রাখার মতন কিছু না" এমন মন্তব্য শোনার পরেও জেদ করে বইটা না পড়লে এই ৩১৭ পৃষ্টার 'মা' কে আর জানাই হতোনা। পড়তে গিয়ে যখন মাত্র শেষ ক'টা পৃষ্টা বাকি, আমার মনে হচ্ছিল আজাদ আসবে,এই শেষ ক'টা পৃষ্টাতেই হয়ত আজাদ ফিরবে। স্বাধীনতার ১৪ বছর পর ১৯৮৫ তেও না, স্বাধীনতার ৪৬ বছর ১০মাস ২৫ দিন পর ২০১৮তেও না, আজাদ মগবাজার বা মালিবাগের কোনো বাসাতেই আর ফেরেনি। মেজর খালেদ মোশারফ তো বলতেনই,স্বাধীন দেশ জীবিত গেরিলা চাইবেনা,তার শহীদ চাই... জুরাইন গোরস্থানে একটা কবর,যার প্রস্তরফলকে উৎকীর্ণ মায়ের পরিচয়: "মোসাম্মৎ সাফিয়া বেগম,শহীদ আজাদের মা" এই ফলক নিজের চোখে দেখার সৌভাগ্য হয়ত কোনদিনও হবেনা। শহীদ আজাদের শেষ ইচ্ছে ছিল বলা যায়, মা'র সম্পর্কে পৃথিবীকে জানানো। আজাদের মত দিনের পর দিন মায়ের মুখ মনের মাঝে প্রতিচ্ছবি করে রেখে শত অত্যচারেও মুখ না খোলা নিযুত ছেলের ইচ্ছে টা যেন আনিসুল স্যার একাই পূরণ করলেন 'মা' উপন্যাসের মাধ্যমে।
Was this review helpful to you?
or
মা নিয়ে পড়া আমার সেরা বই গুলোর মধ্যে একটা।
Was this review helpful to you?
or
অসাধারণ একটি বই । “মা” পৃথিবীর শ্রেষ্ঠতম এবং সবচেয়ে সুন্দর শব্দ । স্যার আনিসুল হকের “মা” উপন্যাসের মা সাফিয়া বেগমের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা জ্ঞাপন করছি ।
Was this review helpful to you?
or
#রকমারি_বইপোকা_রিভিউ_প্রতিযোগিতা। বই:- মা লেখক:- আনিছুল হক ঘরানা:- মুক্তিযুদ্ধের উপন্যাস প্রকাশনী:- সময় প্রকাশন প্রচ্ছদ:- ধ্রুব এষ পৃষ্ঠা:- ২৬৮ রকমারি মূল্য:- ২৫৫ টাকা আনিসুল হক একাধারে বাংলাদেশী কবি, লেখক, নাট্যকার ও সাংবাদিক। বর্তমানে তিনি "দৈনিক প্রথম আলো" পত্রিকার সহযোগী সম্পাদক এবং "কিশোর আলোর" সম্পাদক পদে কর্মরত আছেন। মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ের সত্য ঘটনা নিয়ে তাঁর লেখা মা বইটি বেশ জনপ্রিয়। বাংলা ভাষার পাশাপাশি বইটি দিল্লী থেকে ইংরেজি ভাষায় এবং ভুবনেশ্বর থেকে উড়ে ভাষায় প্রকাশিত হয়েছে । #রিভিউ বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে শহীদ আজাদের মা "সাফিয়া বেগম" এই এই উপন্যাসের মূল চরিত্র। আজাদের বাবা ইউনুস চৌধুরী। তিনি টাটা কোম্পানির ইঞ্জিনিয়ার ছিলেন। কানপুর থাকা কালীন আজাদের জন্ম হয়। আজাদের বড় বোন বিন্দু বসন্ত রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়। আজাদের একটি ছোট ভাই হয় সেও জন্মের সময় মারা যায়। সেই হিসাবে আজাদই ছিলো তার বাবা-মায়ের একমাত্র সন্তান। ১৯৪৭ সালে দেশ ভাগের সময় আজাদরা এ দেশে চলে আসে। সে সময় আজাদের বাবা "ইউনুস চৌধুরী" ছিলেন দেশের প্রথম সারির ধনীদের একজন। তারা ইস্কাটনে থাকতো। তাদের সেই বাড়িটিও ছিলো দেখার মতো সুন্দর। টাটা কম্পানির চাকরি ছেড়ে স্ত্রীর গয়না বিক্রির টাকায় ব্যবসা শুরু করেন আজাদের বাবা। এবং ধীরে ধীরে গড়ে তোলেন এই প্রাচুর্য্য। আজাদের বাবা ২য় বিয়ে করেন। অধীক ভালোবাসা থেকেই অধীক ঘৃনার সৃষ্টি হয়। মায়ের ক্ষেত্রেও এর ব্যাতিক্রম হয় না। স্বামী এবং তার অর্থ দুইটি একসাথে বর্জন করেন মা। স্বামীর প্রাচুর্য্য পায়ে ঠেলে এক কাপড়ে বাড়ি ছেড়েছেন ছেলের হাত ধরে। আজাদের বাবা "ইউসুফ চৌধুরি" অনেক চেষ্টা করেছেন তার স্ত্রীকে বাড়ি ফিরিয়ে আনতে পারেন নি। এমনকি তার অর্থে কেনা কিছুও স্পর্শ করতেন না মা। আজাদের মায়ের একটিই স্বপ্ন ছিলো তার "ছেলে একদিন বড় হয়ে মায়ের দুঃখ ঘোচাবে"। আজাদ সবে মাত্র পড়াশোনা শেষে করেছে। এমন সময় দেশে শুরু হয় মুক্তিযুদ্ধ। আজাদের এবং তার মার শেষ পরিনতি জানতে হলে পড়তে হবে উপন্যাসটি। #পাঠ_প্রতিক্রিয়া:- বইটিতে জীবনযুদ্ধের পাশাপাশি ফুটে উঠেছে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সত্য ইতিহাস। এমন একটি বইয়ের প্রচ্ছদ কিনা লাল। বইটা পড়ার পরে আমি এই প্রচ্ছদের দিকে তাকাতেই বিরক্ত হয়ে গেলাম। বিয়ের শাড়ি লাল হতে পারে। এই বইয়ের সাথে রংটা জীবনেও যায় না। আমার কাছে আপাদত না। বিয়ের শাড়ি লাল হলে মানায়। কিন্তু এই বইয়ের জন্য প্রচ্ছদটা মোটেও ভালো হয় নি। লড়াই করে বেচেঁ থাকা, শত আঘাতেও মাথা উচুঁ রাখা, হার না মানা এক দুঃখিনি মায়ের জীবনগাথা বলা যেতে পারে এই উপন্যাসটিকে। আমার দৃষ্টিতে মনে হচ্ছে বহু নারী-পুরুষ অনুপ্রেরণা পাবে আজাদের মায়ের কাছে। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক বই আমার বরাবরই প্রিয়। মায়ের যেমন তুলতা হয় না ঠিক তেমনই মাকে নিয়ে লেখা কোন বইয়েরও অন্যকিছুর সাথে তুলনা হয় না। সবারই বইটি পড়া প্রয়োজন। #প্রিয়_বাক্য:- বাবা তোমাকে যতই মারুক তুমি কারো নাম বলবা না। আমি কাল সকালে তোমার জন্য গরম ভাত রান্না করে নিয়ে আসবো। এই দুইটা বাক্য এখনো কানে বাজছে বারবার।
Was this review helpful to you?
or
রেটিং তিন দেয়ার কারণ একটাই - লেখনী অনেক দুর্বল। এতটাই যে তা কাহিনীটি থেকে মনযোগ বিচ্যুত করে ফেলে প্রায়ই। এটি ঐতিহাসিক উপন্যাস, ইতিহাস অনেক থাকলেও উপন্যাসের সৌন্দর্য বইটিতে খুবই কমই আছে। যেমন ১৪৫ পৃষ্ঠাতে একটি লাইন হলো "দুই হাতে ছেঁড়া জুতা পরে নিয়ে তারা ডাম্বেলের মত বাজাতে বাজাতে যাচ্ছে।" যতদূর জানি ডাম্বেল বাজাবার কোন জিনিস নয়। একই ধরনের কথা ঘুরেফিরে বলা হয়েছে বার বার কোন বৈচিত্র্য ছাড়াই যা একঘেয়ে হয়ে উঠে সহজেই। বইয়ের শেষে আছে গ্রন্থপঞ্জী ও তথ্যসূত্র - বলা যেতে পারে সেই বইগুলিই ৮০ শতাংশ এই বইয়ের মালমসলা যোগাড় দিয়েছে। Intertextuality বলে একটা জিনিস আছে, কিন্তু সেটার প্রয়োগ হতে হয় সূক্ষ্মভাবে, লেখক তাতে যথেষ্ট মুন্সিয়ানা দেখাতে পারেননি। অনেকই খুঁত ধরলাম, কিন্তু বইটির ভাল দিক বলাটা এর থেকে বেশি প্রয়োজন। এই বইয়ের কল্যাণেই জানতে পেরেছি এক মহীয়সী নারী সাফিয়া বেগমের কথা ও তার যোগ্য সন্তান শহীদ আজাদের কথা। যে দুঃখ, বেদনা ও অত্যাচার তারা সহ্য করেছেন এ দেশের জন্য তা জাতির জানা জরুরী। ব্যক্তিত্বময়ী শহীদ আজাদের মায়ের আত্বসম্মানবোধ বাংলার প্রতিটি নারীর মাঝে সঞ্চারিত হওয়া প্রয়োজন। বইটির সবচেয়ে শক্তিশালী দিক হল শহীদ আজাদের খালাত ভাই জায়েদ ও অন্যান্য আরবান গেরিলার সাক্ষাৎকার। এ কথা অস্বীকার করার উপায় নেই যে বইটি পড়ে অনেক কিছু জানা যাবে। লেখক আনিসুল হককেও বেশি দোষ দেয়া যায় না, বিদেশের বইগুলোতে একজন এডিটর থাকেন, তারা লেখার ব্যপারে নানা দিকনির্দেশনা দেন ও লেখা আরো সমৃদ্ধ করার জন্য সাহায্য করেন, বাংলাদেশে মনে হয় এ জিনিসটা একক প্রয়াস হিসেবেই দেখা হয়। কেউ যদি মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে, বিশেষ করে ঢাকার মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধাদের ব্যাপারে জানতে চান, এই বইটি তাদের কাজে লাগবে।
Was this review helpful to you?
or
এই বই একজন মা কে নিয়ে লেখা। একজন আদর্শবান ব্যক্তিত্বসম্পন্ন মা কে নিয়ে তৈরী এই উপন্যাস। লড়াই করে বেচেঁ থাকা, শত আঘাতেও মাথা উচুঁ করে বেচেঁ থাকা হার না মানা মায়ের গল্প নিয়ে লেখা এই বই! সেই মা শহীদ আজাদের মা সাফিয়া বেগম! আজাদ ছিলো তার বাবা-মায়ের একমাত্র সন্তান। আজাদের বাবা ইউনুস চৌধুরী ছিলেন ইঞ্জিনিয়ার, টাটা কোম্পানিতে কর্মরত। তার পোস্টিং যখন কানপুর আজাদের তখন জন্ম। আজাদের জন্মের আগে অবশ্য আরো একটি মেয়ে হয়েছিলো সাফিয়া বেগমের। মেয়ের নাম রেখেছিলো বিন্দু। বিন্দু মেয়েটি মারা যায় বসন্ত রোগে। আজাদের পরে অবশ্য আরেকটি ছেলে হয়। সেও আতুর ঘরে মারা যায়। ১৯৪৭ সালে দেশ ভাগের পর এ দেশে চলে আসেন তারা। সে সময় সাফিয়া বেগম ছিলেন ঢাকার প্রভাবশালী ব্যক্তিদের মধ্যে একজনের স্ত্রী। আজাদরা থাকতো ইস্কাটনে। আজাদদের ইস্কাটনের বাড়িটা ছিলো দেখার মতো একটা বাড়ি! এসবকিছু পায়ে ঠেলে এক কাপড়ে বের হয়ে এসেছিলেন ছেলের হাত ধরে সাফিয়া বেগম। যেদিন ইউসুফ চৌধুরী আরেকটা বিয়ে করে এ বাড়িতে বউ নিয়ে আসেন। সুখের জীবন ছেড়ে কষ্টের সাথে লড়াই করতেও আপোষ করেন নি। কিন্তু তবুও মেনে নেন নি স্বামীর অন্যায়। আশা ছিলো, ছেলে আজাদ একদিন বড় হয়ে মায়ের দুঃখ ঘোচাবে। কিন্তু বিধি বাম! যেসময় আজাদের পড়াশোনা শেষে চাকরি করার কথা ঠিক সেসময়ই শুরু হয় দেশে মুক্তিযুদ্ধ। ঘুরে যায় কাহিনীর মোড়। সুখের দিন আর দেখা হয় না মা সাফিয়া বেগমের। শত আঘাতে জর্জরিত হয়েও নিজের আত্মবিশ্বাসে অটল ছিলেন। হার মানেন নি কখনো। মনের জোরে বেচেঁ ছিলেন। সেই সকল ঘটনা নিয়েই লেখা আনিসুল হকের "মা" বইটি।
Was this review helpful to you?
or
বুক রিভিউ : মা, ৬০ তম মুদ্রণোত্তর বিশেষ সংস্করণ
Was this review helpful to you?
or
বইঃ মা লেখকঃ আনিসুল হক প্রকাশকালঃ ২০০৩ (প্রথম) পরবর্তীতে আরো পরিমার্জিত করে ২০০৪ এ নতুন করে প্রকাশিত হয়, এবং এরপর থেকে মুদ্রিত হয়েছে বেশ অনেকবার মুল্যঃ ২৫৫৳ (ছাড়ে) পৃষ্ঠা ঃ ২৭২ প্রকাশনীঃ সময় প্রকাশন ধরনঃ মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক উপন্যাস সার-সংক্ষেপঃ আনিসুল হক কে নিয়ে অনেকে অনেক কথা বলেন অনেকে পছন্দ করেন না, আশা করি এরকম কিছু শোনা লাগবে না.. মা বাংলাদেশের সাহিত্যিক আনিসুল হক রচিত একটি উপন্যাস। লেখক এই কাহিনীর সন্ধান পান মুক্তিযোদ্ধা নাট্যব্যক্তিত্ব নাসিরউদ্দিন ইউসুফ বাচ্চুর কাছ থেকে । বাচ্চু শহীদ রুমির সহযোগী ছিলেন, রুমি, আজাদ, বাচ্চু, জুয়েল উপন্যাসের কাহিনী শহীদ মুক্তিযোদ্ধা মাগফার আহমেদ চৌধুরী আজাদ এবং তাঁর মায়ের জীবন নিয়ে । আজাদ ছিল তাঁর বাবা মায়ের একমাত্র সন্তান। শহীদ আজাদের মা সাফিয়া বেগম ছিলেন সেই সময়ের ঢাকার সবচেয়ে প্রভাবশালী ব্যক্তিদের মধ্যে একজনের স্ত্রী। আজাদের বাবা ইউনুস চৌধুরী ছিলেন ইঞ্জনিয়ার, টাতটা কোম্পানি তে কর্মরত ছিলেন, পোস্টিং ছিল কানপুর, আজাদের জন্ম সেখানে। বিন্দু নামের এক মেয়ে ছিল তাদের বসন্তের কারণে মেয়েটি মারা যায়, ভেঙ্গে পড়েন সাফিয়া।এরপরে আজাদের জন্ম, পরে আরেকটি ছেলে হয়, সেও মারা যায় আতুর ঘরে। আজাদের জন্ম ১১ জুলাই, ১৯৪৬। ভারত পাকিস্তান আলাদা হয় ১৯৪৭ সালে, এরপরে দেশে ফিরে আসেন আজাদের মা-বাবা, ব্যবসা শুরু করেন আর বিষয়-আশয় বাড়তে থাকে। আজাদ দের ইস্কাটনের বাড়ি ছিল সে সময়ের ঢাকার দর্শনীয় স্থান। মজার ব্যাপার হচ্ছে, এই বাড়ী টার রেকর্ড রয়ে গেছে ৩৫মিলিমিটার সেলুলয়েডে, “ডাকে পাখি, খোলো আঁখি দেখো সোনালি আকাশ, বহে ভোরের ও বাতাস” এ গান টি এই বাড়িতে ধারণকৃত।। ইউনুস চৌধুরীর সফলতার পেছনের গল্পে আজাদের মায়ের ভূমিকা অনেক আছে, তার পড়ার খরচ যে তিনিই দিয়েছিলেন। তিনি ছিলেন আত্মমর্যাদাবান। তাই তার স্বামী যখন দ্বিতীয় বিবাহ করলেন, তখন তিনি তা মেনে নেননি। ঠিক সেদিনই রাতে ছোট্ট আজাদকে নিয়ে শত বিলাসিতা আর প্রাচুর্যের জীবন ছেড়ে এক কাপড়ে আর বাবার দেয়া অবশিষ্ট গহনা হাতে নিয়ে নেমে ছিলেন যুদ্ধের মঞ্চে। আজাদের সাথে ছিল রিভলবার......। অনেক কষ্টে আজাদ কে মানুষ করেছেন... বইটা পড়লে বুঝতে পারবেন। কিভাবে অভাব অনটনকে সাথে রেখেই নিজ হাতে তিনি মানুষের মত মানুষ করে তুলেছিলেন এক সময় আজাদ এমএ পাস করে। বাবার মতই সুদর্শন ছিলেন তিনি। ঠিক সেই সময় দেশে শুরু হয় মুক্তিযুদ্ধ। আজাদের বন্ধুরা যোগ দেয় ঢাকার গেরিলা দলে। আজাদ মাকে বলে, আমিও যুদ্ধে যাব। মা তাকে অনুমতি দেন। ছেলে যুদ্ধে যায়। ঢাকায় ক্র্যাক প্লাটুন এর দলে তিনি ছিলেন। ১৯৭১ সালের ৩০ আগস্ট ধরা পড়ে রুমী, বদি, আলতাফ মাহমুদ, জুয়েল এবং আজাদ। কিন্তু আজাদের ওপরে পাকিস্তানীরা প্রচন্ড অত্যাচার চালিয়ে কথা বের করতে পারে না। তখন তার মাকে বলা হয়, ছেলে যদি সবার নাম বলে দেয়, তাকে ছেড়ে দেওয়া হবে। ঐদিন আজাদ মা কে বলে, “মা দুদিন ভাত খাই না, ভাত নিয়ে এসো”। মা পরের দিন ভাত নিয়ে হাজির হন কিন্তু আর কোনোদিন ছেলের দেখা পাননি। সেদিনের পর থেকে মা কোনোদিন এক লোকমা ভাতও খাননি............ যুদ্ধের ১৪ বছর পরে ঠিক সেই ৩০ এ আগস্ট আজাদের মা মারা যান, মুক্তিযোদ্ধারা তাঁকে কবরে শায়িত করলে আকাশ থেকে ঝিরঝির করে ঝরতে থাকে বৃষ্টি। জাহানারা ইমামের ভাষায় তার রুমী আজাদেরা পুষ্প বৃষ্টি করছে স্বর্গ থেকে..................... ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে আজাদ তাঁর বন্ধুদের সাথে যোগ দেয় । । এই গেরিলা দলটি তৎকালীন সময়ে “হিট এন্ড রান" পদ্ধতিতে অসংখ্য আক্রমণ পরিচালনা করে পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর মধ্যে ব্যাপক ত্রাসের সঞ্চার করে । ১৯৭১ সালের ২৯ আগস্ট পাকিস্তানি বাহিনী রেইড চালিয়ে ক্র্যাক প্লাটুন এবং সংশ্লিষ্ট অনেক বিশিষ্ট ব্যক্তিদের ধরে নিয়ে যায় । আজাদের বাড়িতেও রেইড হয় , আজাদ তাঁর সহযোদ্ধাদের সাথে ধরা পড়েন । পাকিস্তানিরা তাদের নির্মমভাবে নির্যাতন করে তথ্য জানতে চায় । প্রচণ্ড অত্যাচারের মাঝেও তারা আজাদের মুখ থেকে কিছু বের করতে পারে না । তখন তার মাকে বলা হয়, ছেলে যদি সবার নাম-ধাম ইত্যাদি বলে দেয়, তাকে ছেড়ে দেওয়া হবে । আজাদের মা ছেলেকে বলেন কিছুই না বলতে । আজাদ বলে, মা দুদিন ভাত খাই না, ভাত নিয়ে এসো। মা পরের দিন ভাত নিয়ে হাজির হন বন্দিশিবিরে, কিন্তু ছেলের দেখা মেলে না। আজাদের মা আর কোনোদিনও জীবনে ভাত খাননি। যুদ্ধের ১৪ বছর পরে মা মারা যান, নিঃস্ব, রিক্ত-বেশে। মুক্তিযোদ্ধারা তাঁকে কবরে শায়িত করলে আকাশ থেকে ঝিরঝির করে ঝরতে থাকে বৃষ্টি । পাঠ_প্রতিক্রিয়াঃ যেহেতু পুরো ঘটনা টা বাস্তব তাই খুব বেশি কিছু বলার নেই, বইটা পড়ে মন খারাপ হয়ে যায় খুব.........। আজাদের মায়ের চরিত্র টা এত শক্তিশালী, এত ইচ্ছাশক্তি, আজকে আমাদের অনেকের ই নেই, সম্পুর্ন রিক্ত হাতে নেমে এক ছেলে কে এম এ পাস করানো এটা কি সহজ ছিল?? না সহজ না। লেখকের ভূমিকা বেশ ভালো, সব তথ্য সংগ্রহ করে সাজানো কাজ টি বেশ নিপুণ ভাবে করেছেন। এই বই দিয়ে আজাদ আর তার মা বেঁচে থাক অনন্ত যুগ। রেটিংঃ ৫/৫
Was this review helpful to you?
or
লেখক আনিসুল হক তার ‘মা’ উপন্যাসের কাহিনীর সন্ধান পান মুক্তিযোদ্ধা নাট্যব্যক্তিত্ব নাসিরউদ্দিন ইউসুফ বাচ্চুর কাছ থেকে । বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ আজাদ ও তাঁর মায়ের জীবনের সত্য ঘটনা নিয়ে রচিত এই উপন্যাসটি ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হয় এবং প্রচুর পাঠকপ্রিয়তা পায়। উপন্যাসটি Freedom's Mother নামে নয়া দিল্লি হতে ইংরেজিতে অনূদিত হয়।উপন্যাসের কাহিনী মুক্তিযোদ্ধা মাগফার আহমেদ চৌধুরী আজাদ এবং তাঁর মায়ের জীবন নিয়ে । শহীদ আজাদের মা সাফিয়া বেগম ছিলেন ঢাকার সবচেয়ে প্রভাবশালী ব্যক্তিদের মধ্যে একজনের স্ত্রী। এই আত্মমর্যাতদাবান মহিলা তার স্বামীর দ্বিতীয় বিবাহ মেনে নেননি। ছোট্ট আজাদকে নিয়ে জীবনযুদ্ধে নেমে পড়েন। অভাব অনটনকে পেছনে ফেলে নিজ হাতে তিনি মানুষের মত মানুষ করে তুলেছিলেন আজাদকে। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে আজাদ তাঁর বন্ধুদের সাথে যোগ দেয় । ঢাকায় ক্র্যাক প্লাটুন এর দলে তিনি ছিলেন । এই গেরিলা দলটি তৎকালীন সময়ে “হিট এন্ড রান" পদ্ধতিতে অসংখ্য আক্রমণ পরিচালনা করে পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর মধ্যে ব্যাপক ত্রাসের সঞ্চার করে । ১৯৭১ সালের ২৯ আগস্ট পাকিস্তানি বাহিনী রেইড চালিয়ে ক্র্যাক প্লাটুন এবং সংশ্লিষ্ট অনেক বিশিষ্ট ব্যক্তিদের ধরে নিয়ে যায় । আজাদের বাড়িতে রেইড হলে তিনি সহযোদ্ধাদের সাথে ধরা পড়েন । পাকিস্তানিরা তাদের নির্মমভাবে নির্যাতন করেও আজাদের মুখ থেকে কিছুই জানতে পারে না।তখন তার মাকে বলা হয়, ছেলে যদি সবার নাম-ধাম ইত্যাদি বলে দেয়, তাকে ছেড়ে দেওয়া হবে । আজাদের মা ছেলেকে নিষেধ করেন, বলেন কিছুই না বলতে । আজাদ বলে, মা দুদিন ভাত খাই না, ভাত নিয়ে এসো। মা পরের দিন ভাত নিয়ে হাজির হন বন্দিশিবিরে, কিন্তু ছেলের দেখা মেলে না। ছেলে বেঁচে আছে না মরে গেছে তা-ও সঠিকভাবে জানতে পারেন না। তবে আশঙ্কা হয় যে ...... আজাদের মা আর কোনোদিনও জীবনে ভাত খাননি। যুদ্ধের ১৪ বছর পরে মা মারা যান, নিঃস্ব, অসহায়ভাবে। মুক্তিযোদ্ধারা তার দাফন কার্য সমাপ্ত করেন। তাঁকে কবরে শায়িত করলে আকাশ থেকে ঝিরঝির করে ঝরতে থাকে বৃষ্টি । শিক্ষাবিদ ও দার্শনিক সরদার ফজলুল করিম বলেছেন , "আমি বলি দুই মা । ম্যাক্সিম গোর্কির মা আর আনিসুল হকের মা । ......... এই দুই মা যথার্থ মা হয়ে উঠেছেন আমার কাছে ।
Was this review helpful to you?
or
অসাধারণ একটি বই। ১৯৭১ সালের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে একজন মায়ের গল্প অসাধারণ ভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। বইটি লেখকের অন্যতম সেরা বই।
Was this review helpful to you?
or
এই বইটি নিঃসন্দেহে লেখকের অন্য তম সৃষ্টি। যে কোনো পাঠকের ভালো লাগবে।
Was this review helpful to you?
or
ব্যক্তিগত কারণেই আনিসুল হকের লেখার জগত আমার বই পড়ার জগত থেকে ভিন্ন।কোন এক কারণে তার বই পড়ার প্রতি আমার অনীহা ছিল। ঘটনাক্রমে এক বৈশাখে আনিসুল হকের মা উপন্যাসটি আমার হাতে এসে পৌছে। ম্যাক্সিম গোর্কিওর মা উপন্যাসটি পড়তে শুরু করে আর শেষ পাতা পর্যন্ত আমাকে টানতে পারেনি। তাই ভাবনাতে ছিল আনিসুল হকের মা উপন্যাসটিও তার ব্যতিক্রম হবে না। তাই বৈশাখে পাওয়া বইটি আমাকে পড়তে হয়েছিল আষাঢ়ের শেষ দিনে। কিন্তু একি ! আমি এতদিন কেন বইটা উপেক্ষা করে এসেছি ? রাগ ও আফসোস হচ্ছিল নিজের উপর। মুক্তিযুদ্ধের এমন তথ্যসমৃদ্ধ ইতিহাসই খুঁজছিলাম। পেলাম সাতচল্লিশ থেকে একাত্তর পর্যন্ত ইতিহাসের বাকেবাকে ঘুরে ফিরে আসা ঘটনা কি করে ঘটতে পারে ! সাতচল্লিশে জন্ম নেয়া আজাদ একাত্তরে পূর্ণ মুক্তিযোদ্ধা। আজাদের মা যে সংগ্রামী জীবন অতিবাহিত করেছেন এ যেন মুক্তিযুদ্ধের মধ্যে আরেক বেঁচে থাকার সংগ্রাম ! এখানে আরেকটি চরিত্র ছিল জায়েদ যিনি আজাদের খালাত ভাই। জায়েদ হচ্ছে যুদ্ধাহত কিশোর মুক্তিযোদ্ধা। আমি কিশোর বলেই জায়েদের চরিত্রে কথন আমি খুজে ফিরতাম নিজেকে।মা উপন্যাস নাম করণে পূর্ণ সার্থকতা রয়েছে আনিসুল হকের।পৃথিবী এমন নিঃস্বার্থ ভালবাসা শুধু একজন মা- ই পারেন সন্তানের জন্য এমন ভালবাসা দেখাতে। আজাদের মা একাত্তরের পর চৌদ্দ বছর বেঁচে ছিলেন, মা শুকনো রুটি খেয়ে ফ্লরে শুধু চাদর বিছিয়ে দীর্ঘ চৌদ্দ বছর কাটিয়েছেন অর্থনৈতিক দৈনতায় নয় একমাত্র সন্তানের ভালবাসায়। আজাদকে যেদিন রমনা থানায় দেখতে গিয়েছিল আজাদ বলেছিন মা ভাত খেতে মন চায়। ঘুমাতে পারি না রাতে। সেই যে আজাদের মা বিছানা ছেড়েছে ভাত ছেড়েছে আর বিছানায় যেমন ঘুমায়নি ভাতও খায়নি জীবদ্দশাতে।ওহ আর কথা তো বলাই হয়নি আজাদ ভাইয়ার মায়ের অতিথি সেবার কথা কেউ বাসায় যাবে আর খালি মুখে ফিরে আসবে তা অকল্পনীয়। আসলে কেউ বইটা পড়ে থাকলে তাকে মনে করে দিতে পারি কিন্তু না পড়ে থাকলে আমার ক্ষুদ্র জ্ঞানে বোঝান অসম্ভব। এই ভাল লাগা শুধু পড়লেই অনুভব করা যায়।
Was this review helpful to you?
or
‘আজাদ ভাইয়ের মাকে নিয়ে একটা নাটক লিখে দাও। একুশে টেলিভিশনে মুক্তিযুদ্ধের নাটক করব।’ নাসির উদ্দীন ইউসুফ বললেন আমাকে। আজাদের মায়ের গল্পটা তাঁর মুখ থেকেই প্রথম শোনা, ‘শোনো। আজাদ ভাইয়ের মা ভাত খেতেন না জানো। খুব কষ্ট করেছেন ভদ্রমহিলা। আজাদ ভাই তাঁর একমাত্র সন্তান ছিলেন। একাত্তর সালে আজাদ ভাই ধরা পড়লেন। মা ছেলের সঙ্গে দেখা করতে গেলেন রমনা থানায়। আজাদ ভাই বলেছিলেন, আমার জন্য ভাত এনো। মা ভাত নিয়ে গিয়েছিলেন। গিয়ে দেখলেন, ছেলে নেই। এই ছেলে আর কোনো দিন ফিরে আসেনি। আর এই মা ১৯৮৫ সাল পর্যন্ত বেঁচে ছিলেন। এই ১৪টা বছর তিনি কোনো দিনও ভাত খাননি।’ গল্প শুনে আমি স্তম্ভিত হয়ে যাই। আমি বলি, ‘এই গল্প নিয়ে টেলিভিশনের নাটক নয়, আমি একটা উপন্যাস লিখতে চাই। আমাকে বিস্তারিত বলেন।’ নাসির উদ্দীন ইউসুফ, নাট্যজন ও মুক্তিযোদ্ধা, শূন্যের মধ্যে কী যেন খুঁজছেন, দূরাগত কণ্ঠে বলেন, ‘শোনো, আমি তো আজাদ ভাইয়ের ঘনিষ্ঠ ছিলাম না, ঘনিষ্ঠ ছিলেন হাবিবুল আলম বীর প্রতীক। একটা কাজ করি। আমি তোমাকে হাবিব ভাইয়ের সঙ্গে বসিয়ে দিই।’ ২০০২ সাল। একদিন নাসির উদ্দীন ইউসুফ ভাইয়ের পল্টনের বাসায় সন্ধ্যার সময় আমরা বসি। হাবিব ভাই তাঁর মুক্তিযুদ্ধে যাওয়ার গল্প বিশদভাবে বলেন। শিমূল ইউসুফ শোনান সেই ভোরের গল্প, যেদিন বালিকা তিনি, গলা সাধছিলেন হারমোনিয়ামে, আর পাকিস্তানি সৈন্যরা ঘিরে ফেলে তাঁদের বাসা, আলতাফ মাহমুদ কৌন হ্যায়। আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারীর সুরকার আলতাফ মাহমুদের কপালে বেয়নেট চালায় পাকিস্তানিরা, তাঁর কপালের চামড়া ঝুলে পড়ে চোখের ওপরে, তিনি কোদাল চালিয়ে বের করে দিতে থাকেন মুক্তিযোদ্ধাদের লুকিয়ে রাখা অস্ত্র। ওই একই রাতে ধরা পড়েছিলেন আজাদ। তাঁদের বাড়ি থেকে মিলিটারি ধরে নিয়ে যায় মুক্তিযোদ্ধা ক্রিকেটার জুয়েলসহ অনেককে, আর পাকিস্তানি কর্তার অস্ত্র কেড়ে নিয়ে গুলি করতে করতে জন্মদিনের পোশাকে পালিয়ে যেতে সক্ষম হন কাজী কামাল (বীর বিক্রম, এখন প্রয়াত)। সারা রাত গল্প চলে। ভোরবেলা নাসির উদ্দীনদের বাড়ি থেকে বের হই। আস্তে আস্তে আজাদের গল্পটা স্পষ্ট হচ্ছে। কিন্তু আজাদের মায়ের বিশদ বিবরণটা কই পাওয়া যাবে? মাসের পর মাস চলে যাচ্ছে। আমি একটা গল্পের ঘোরের মধ্যে নিশিপাওয়া মানুষের মতো তড়পাচ্ছি। অনন্যোপায় হয়ে বিজ্ঞাপন দিই প্রথম আলোয়। একাত্তর সালের শহীদ মুক্তিযোদ্ধা আজাদ, যিনি ধরা পড়েছিলেন জুয়েল, বদি প্রমুখের সঙ্গে, তাঁর কোনো খোঁজ কি কেউ দিতে পারেন। নিচে আমার নাম, আর মোবাইল নম্বর। পরের দিন পত্রিকা প্রকাশিত হলে প্রথম আসে উড়ো কল। গালিগালাজ হজম করি। দ্বিতীয় ফোনটি করেন আজাদের দ্বিতীয় মা। যাঁকে আজাদের বাবা বিয়ে করেছিলেন বলে প্রতিবাদে আজাদের মা স্বামীর প্রাসাদোপম বাড়ি ত্যাগ করেছিলেন সন্তানের হাত ধরে। আশ্রয় নিয়েছিলেন এক ছোট্ট ভাড়া বাসায়। মগবাজারে এখন যেখানে কুইনস গার্ডেন সিটি নামে অ্যাপার্টমেন্ট উঠেছে, সেখানে ছিল আজাদের বাবার বাড়ি। তারই পেছনে একটা দোতলা বাসায় থাকতেন আজাদের দ্বিতীয় মা। তিনি আমার সঙ্গে খুবই ভালো ব্যবহার করেন। আজাদের ছোটবেলার গল্প শোনান বিস্তারিত। তিনিই বলেন, কীভাবে গাড়ি চালিয়ে তিনি আজাদকে নিয়ে গিয়েছিলেন গুলিস্তানে, কিনে দিয়েছিলেন এলভিস প্রিসলির গানের রেকর্ড। দ্বিতীয় ফোনটি করেন গাজী আমিন আহমেদ, বামপন্থী রাজনীতিক, আজাদের দূর-সম্পর্কের ভাই, আমি ছুটে যাই তাঁর বাড়িতে। সেখান থেকে আমি সন্ধান পাই আজাদের নিত্যসহচর ও খালাতো ভাই জায়েদের। জায়েদ ভাইকে পাওয়া মানে সোনার খনি পেয়ে যাওয়া। আজাদের বাড়ির খবর, হাঁড়ির খবর, চিঠিপত্র, ফটোগ্রাফ—সব হাতে এসে যায়। একজনের পর একজন মুক্তিযোদ্ধার সন্ধান পাই আমি। কাজী কামাল উদ্দিন থেকে শুরু করে শহিদুল্লাহ খান বাদল—আমি ছুটে যাই সবার কাছে। তখন ৫১বর্তী ধারাবাহিক নাটকটার শুটিং হচ্ছে ডিওএইচএস মহাখালীর একটা বাড়িতে। রোজ সেখানে যাই শুটিং দেখার নাম করে, আর সেখানে না থেকে দুই বাড়ি পরে সাংবাদিক শাহাদত চৌধুরীর বাসভবনে ঢুকে পড়ি। দিনের পর দিন শাহাদত চৌধুরী আমাকে বলেন মুক্তিযুদ্ধের দিনগুলোর গল্প। কফি খেতে খেতে শাহাদত ভাই একবার কাঁদেন, একবার হাসেন। আমি আজাদের খালাতো ভাইবোন সবার সঙ্গে কথা বলতে তাঁদের বাড়ি বাড়ি যাই। টগর কিংবা মহুয়া—সবার কাছে আমি গেছি। একদিকে আমি সাক্ষাৎকার নিচ্ছি, বাড়িঘরগুলো দেখতে যাচ্ছি, অন্যদিকে মুক্তিযুদ্ধের বইপত্র, ইতিহাস পড়ছি। হাবিবুল আলম ভাই তাঁর ব্রেভ অব হার্ট বইয়ের পাণ্ডুলিপি দিয়ে দিলেন, জাহানারা ইমামের একাত্তরের দিনগুলি থেকে শুরু করে মুক্তিযুদ্ধের দলিলপত্র—দিন নাই রাত নাই আমি পড়ে চলেছি। তথ্য মোটামুটি যা পেয়েছি, হয়ে যাবে। এবার দরকার লেখাটাকে সাহিত্য করে তোলার প্রস্তুতি। গোর্কির মা, ব্রেশটের জননী সাহসিকা, মহাশ্বেতা দেবীর হাজার চুরাশির মা—মা নিয়ে কে কোথায় কী লিখেছেন, জোগাড় করে এনে আবারও পড়তে লাগলাম। আমার মতো স্বার্থপর পাঠক জগতে দ্বিতীয়টা নাই, আপনি একটা বই দিয়ে পড়তে বললেই আমি পড়ব না, আলস্যবশতই; কিন্তু যে বই আমার দরকার, সেটা পড়ে ফেলতে আমার পঞ্চ-ইন্দ্রিয় এতটুকুনও শ্রান্ত হবে না। তারপর এক সকালে লিখতে শুরু করলাম। তিন পৃষ্ঠা লেখা হলো। পছন্দ হলো না। স্রেফ ওই ফাইল বন্ধ করে আরেকটা ফাইল খুললাম। আবার প্রথম থেকে লেখা শুরু হলো। মায়ের সেই প্রথম তিন পৃষ্ঠার পরিত্যক্ত পাণ্ডুলিপি আমার কম্পিউটারে এখনো আছে। মা উপন্যাসের সংক্ষেপিত সংস্করণ প্রথম বেরোল প্রথম আলোর প্রথম ঈদসংখ্যায় ২০০২ সালে। বেরোনোর সঙ্গে সঙ্গে হইচই। আমাকে চিঠি লিখেছেন লেখকদের মধ্যে জিয়া হায়দার আর রফিকুর রশীদ, পাঠকদের কত চিঠি যে পেলাম। বই হয়ে বেরোল ২০০৩ সালে। এর মধ্যে আরও কয়েকজনের কাছ থেকে আরও নতুন তথ্য পেয়ে বইটাকে বড় করতে হলো ২০০৩ সালেই। আমার কাছে আজাদের চিঠিপত্র, ফটোগ্রাফ ইত্যাদি যা ছিল, তা আমি তুলে দেব মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের হাতে। তাই একটা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হলো মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর মিলনায়তনেই। আনিসুজ্জামান স্যার ছিলেন, নাসির উদ্দীন ইউসুফ ছিলেন, জায়েদ ভাই ছিলেন, আরও বেশ কজন ঢাকার গেরিলা উপস্থিত ছিলেন সেদিন। আজাদের মায়ের প্রিয় গান ছিল—আজি বাংলাদেশের হূদয় হতে কখন আপনি, তুমি এই অপরূপ রূপে বাহির হলে জননী। শিমূল ইউসুফ আমার অনুরোধে সেই গানটা গাইতে শুরু করলেন। আমি দর্শকসারিতে বসে হাউমাউ করে কাঁদতে লাগলাম। আমার কান্না কেউ থামাতে পারে না। গত দেড়টা বছর আমি ভীষণ একটা আবেগকে আমার বুকের মধ্যে পাথরচাপা দিয়ে রেখেছিলাম। আজ শিমূল ইউসুফের গান আমার বুকের পাথরটাকে সরিয়ে দিল। মা বইটি লিখে আমি কী পেয়েছি? একটা ছোট ঘটনা বলি। আজাদের খালাতো ভাই জায়েদ একদিন আমাকে বললেন, আপনার জন্ম কবে? আমি বললাম, কেন? তিনি বললেন, আপনি বইয়ে এমন কিছু ঘটনা লিখেছেন, যা আমি আপনাকে বলিনি। কিন্তু আপনি সেটা নির্ভুলভাবে লিখেছেন। যেমন আজাদ দাদা করাচি যাওয়ার আগে আমাকে হাতঘড়ি দিয়ে গিয়েছিল, এটা তো আমি আপনাকে বলিনি। আপনি কোথায় পেলেন। আমি বললাম, এটা আমি পেয়েছি রবিঠাকুরের ছুটি গল্পে। ফটিক কলকাতায় যাওয়ার সময় মাখনলালকে তার ঘুড়ি নাটাই সব দিয়ে যায়। জায়েদ বললেন, ‘না না, হতেই পারে না। আজাদ দাদারও কান বড় ছিল। আপনারও কান বড়। আপনার জন্ম কবে?’ আমি বললাম, ‘আমার জন্ম ১৯৬৫ সালে, আর আজাদ শহীদ হয়েছেন ১৯৭১ সালে। পাগলামো কইরেন না।’ আমি জায়েদ ভাইয়ের মনে এই ধন্দ যে তৈরি করতে পেরেছি একটা বই লিখে, একজন লেখক হিসেবে এর চেয়ে বেশি আমি কী চাইতে পারি। তবু বলি, এ দেশের বীর মুক্তিযোদ্ধারা বুকের রক্ত দিয়ে আর বীর মায়েরা অশ্রু দিয়ে মায়ের কাহিনি রচনা করেছেন। ব্যর্থতার দায় লেখকের, গৌরবের ভাগ নয়!
Was this review helpful to you?
or
Boiti jotobar porechhi totobar i kanna peyechhe.. emotional hoye porechhi. amar pora shorboshrestho boigulor majhe eti ekti. Anisul haq k dhonnobad ebong boitir sob shohid muktijoddha choritrogulor jonno valobasha, onek onek valobasha.
Was this review helpful to you?
or
মা আনিসুল হক আমি মাকে তিনটি শব্দ দিয়ে বোঝার চেষ্টা করি ।আত্মপ্রত্যয়ী ,দৃঢ়চেতা এবং অপেক্ষাপ্রিয় ।শুরুতেই বলে নেই মা কোন উপন্যাস নয় ,উপন্যাসের মোড়কে জীবনের গল্প ,কোনো ক্ষেত্রে হয়তো গল্পের ঊর্ধ্বে উঠে উপলব্ধির জায়গা । গল্পটি শুরু হয় আজাদের মাকে দিয়ে ,বিত্তশালী কিন্তু অহংকারী নয়। ক্রমে ক্রমে আজাদের মা অর্থাৎ সাফিয়া বেগমের বিত্তশালীতার মাপকাঠি পরিবর্তিত হয়েছে ।কখনো মধ্যবিত্ত ,কখনো নিম্নবিত্ত ,কখনো আবার বিত্তকেই প্রশ্ন করে শহীদ আজাদের মা হয়ে বেঁচে থাকা ,শুধুই বেঁচে থাকা জীবিত থাকা নয় ।এবার প্রসঙ্গ আজাদ ।আজাদ ছিল সেই সময়ের এক দর্শনীয় যুবরাজ ।আপনার মতোই হয়তো ছিলো ।ছবি দেখতে পছন্দ করতো , বই পড়তে ভালোবাসতো ,বন্ধুদের সাথে সময় কাটাতো ।পাকিস্তানের সমবয়সী আজাদ কিন্ত চাইলেই পারতো আপনার মতো থেকে যেতে ।আজাদের মা কেন চাবেন তার ছেলেকে যুদ্ধে পাঠাতে কিংবা আজাদই কেন চাবে লুকিয়ে লুকিয়ে নয় ,তার মায়ের কাছে বলে যুদ্ধে যেতে ?উপন্যাসের শুরুতেই আজাদের একটি কথা আমাকে তাঁকে নিয়ে ভাবতে অনুপ্রাণিত করেছে ।আজাদ করাচিতে পড়াশুনা করার প্রেক্ষিতে বলেন ,করাচি আর যাই হোক দেশ নয় ,বিদেশ ।আজাদ কোনো রাজনৈতিক দলের অনুসারী ছিলেন না ।কিন্তু পারিপার্শ্বিক ঘটনা তাঁকে আটকে রাখতে পারি নি ।কাজী কামাল ,জুয়েল ,বদি ভাই ,রুমি ,আজাদ সবাই যেন আমরা একই পাড়ার লোক ,বহুদিনের পরিচয় আমাদের ।এই উপন্যাসের বহু স্বার্থকতার মাঝে একটি হলো নিজস্বতা বুঝানো ,সবাইকে এক পরিবারের ভাবা ,আর পরিবারটি হলো দেশ ।সাফিয়া বেগমের কথায় আসি ।অনেকেই তো বলে তুমি আরেকটি বিয়ে করলে আমাকে আর পাবে না ।কিন্তু কয়জন পারে এই কথাকে মুখগহ্বরের মাঝে সীমাবদ্ধ না রেখে অন্তরে ধারণ করতে ।হ্যাঁ ,সাফিয়া বেগম পারেন ,অর্থপ্রাপ্তির বাসনাকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে সাধারনের বেশ ধরে অসাধারণ হতে ।খালেদ মোশারফের একটি কথা আমাকে উপন্যাস শেষ করতে বাধ্য করেছে ।স্বাধীন দেশ জীবিত গেরিলাদের চায় না ,সে চায় শহীদ ........।উপন্যাসটি শুধুই আজাদ কেন্দ্রিক কিংবা সাফিয়া বেগম কেন্দ্রিক নয় ।শিক্ষা আইন ,আইয়ুব বিরোধী কার্যক্রম , নতুন পয়সা আসা ,টিভির প্রতি ঝোঁক সৃষ্টি হওয়া ,কালো রাত্রি ,বঙ্গবন্ধুর ভাষণ ,স্বাধীনতা , বিজয় সবগুলো যেন সমান্তরালে চলেছে ।একবারের জন্যও মনে হয়নি কোনো কিছু জোর করে ঢুকানো হয়েছে ।আজাদের সাথে জায়েদের সম্পর্কটুকু যেভাবে চিত্রায়িত করা হয়েছে ,তা মুগ্ধ হবার মতোই ।জায়েদকে সিনেমা দেখতে যাওয়ার জন্য টাকা দেওয়া,টিভি দেখার জন্য জায়েদ বকা খেলে ওইদিন রাতেই জায়েদের জন্য টিভি কিনে নিয়ে আসা ।কয়জন পারে এই প্রশ্নে আসবো না কিন্তু হ্যা আজাদ পারেন ।গুলিবিদ্ধ জায়েদ আজও হয়তো স্মৃতি রোমন্থন করতে যেয়ে পানিকে অক্ষিকোটরের মধ্যে রাখতে পারেন না ।আজাদ বলেই হয়তো পেরেছিলো নিজের বাসাকে অস্ত্রের অভয়ারণ্য বানাতে , সামরিক অফিসার বন্ধুকে নির্দ্বিধায় বাসায় ঢুকতে দিতে ,সাংবাদিক বন্ধু বাশারকে নিজের বাসায় রেখে দিতে ।আর সাফিয়া বেগম ? আজাদের কোনো বন্ধু আজও মনে করতে পারে না কবে তাঁরা আজাদের বাসা থেকে না খেয়ে ফিরেছে , এমনকি মুক্তিযুদ্ধের মতো জটিল পরিস্থিতিতেও ।তাজ হোটেল হয়তো আজও আক্ষেপ করে কোথায় গেলো অসম্ভব সাহসী ,প্রসারিত হাসির মুখগুলো ? জুয়েল ,মোশতাক ,আজাদ ,সৈয়দ আশরাফুল ,ইব্রাহিম সাবের ,কাজী কামাল ।উপন্যাসের একটি জায়গায় আবারো দৃষ্টিপাত করি । রাজনৈতিক আদর্শিক ভিন্নতা থাকা সত্ত্বেও দেশমাতৃকার প্রশ্নে এক হয়ে যাওয়া ,নিজের রক্ত দিয়ে ভ্রাতৃত্ব প্রতিষ্ঠা করা ।উপরে লেখা তিনটি শব্দকে আমি এখন ভাঙবো না ,ভেঙে নেওয়ার দায়িত্ব আপনাদের ।গল্পটি শুরু হয়েছিলো আজাদের মাকে দিয়ে কিন্তু শেষ হয়েছে রুমির মা ,জুয়েলের মা সহ হাজারও মাকে অকপটে স্মরণ করার মধ্য দিয়ে ।মার কাছে যে সন্তানের চলে যাওয়া নিজের অস্তিত্বকে মৃত্যু দিয়ে ঢেকে দেওয়া ।উপন্যাসটি আমার কাছে স্বার্থক কারণ আবার আগস্ট আসবে ।জুরাইন কবরস্থানে লোক সমাগম বাড়বে ।আমিও থাকবো সেই ভরদুপুরে ,ব্যাপক সমাগমের মাঝে ।কারণ আমিও চাই শহীদ আজাদের মাকে শ্রদ্ধা জানাতে ,আমিও তার জন্য মোনাজাত ধরতে চাই ।এই ত্রিভুবনের সর্বশ্রেষ্ঠ শব্দকে মহিমান্বিত করার জন্য আমি মোনাজাত ধরতে চাই ।এই অপেক্ষাপ্রিয় মানুষটিকে সশ্রদ্ধায় স্মরণ করতে চাই ।
Was this review helpful to you?
or
অসাধারণ একজন মা সাফিয়া বেগম।আজাদের মৃত্যুর পর ১৪বছর বেঁচে ছিলেন কিন্তু এই মা আর কোনোদিন ভাত মুখে তুলেন নি! শুধুমাত্র একবেলা রুটি খেয়ে বেঁচেছিলেন। কারণ শহীদ আজাদ মৃত্যুর আগে মাকে বলেছিল...২দিন ধরে ভাত না খেয়ে আছে মা যেন রান্না করে খাবার নিয়ে আসে!মা পরদিন রান্না করে নিয়ে আসলেও আজাদকে আর পায় নি!.......
Was this review helpful to you?
or
কিছু কিছু বই নিয়ে আসলে রিভিউ লেখা যায় না। এই বইটি এমনই একটি বই। শুধু বলব আপনি একজন বাংলাদেশি, আপনি শিক্ষিত- তাহলে বইটি আপনার জন্য অবশ্যপাঠ্য! মুক্তিযুদ্ধ এমনিতেই আমাদের আবেগের জায়গা- সেই আবেগকে আরো যেন ধারণ করে আছে এই বই। এই বইটি মুক্তিযুদ্ধের বই, একজন নির্ভীক ও দৃঢ় চরিত্রের মায়ের জীবনযুদ্ধের কাহিনির বই, মা- সন্তানের ভালবাসার বই। সে মা যে জীবনের শেষ ১৪ বছর ভাত খাননি কেননা একমাত্র ছেলে জীবনে শেষবারের মত ভাত খেতে চেয়ে খেতে পায়নি। ছেলেকে দেখেছেন মাটিতে চাটাইয়ে ঘুমাতে তাই তিনি আর খাটে ঘুমাননি। শহীদ মুক্তিযোদ্ধা আজাদ ও তার মায়ের এই সত্য কাহিনীর উপন্যাসরূপ এই 'মা' বইটি। মুক্তিযুদ্ধের যোদ্ধাদের অনেক বীরত্ব আর ত্যাগের কথা আমরা জানি কিন্তু তাঁদের স্বজনদের ত্যাগ-তিতিক্ষা আমরা খুব কমই জানি । এই বইটি অন্তত একজন মায়ের কাহিনী জানাবে। মুক্তিযুদ্ধের দিনগুলির কথাও সেই সাথে জানা হয়ে যাবে।
Was this review helpful to you?
or
ভালো মানের বই
Was this review helpful to you?
or
it's just great.thanks to anisul sir for his writing.hats off.
Was this review helpful to you?
or
আলহামদুলিল্লাহ! আসলে পৃথিবীতে মায়ের মতো মমতাময়ী আর কেউ নেই। মা নিজের জীবনের সর্বস্ব দিয়ে আগলে রাখেন তার সন্তানকে। সেটার আরো একবার প্রমান মেলে "মা" বইটিতে বইটা পড়ে দুঃখিনী মায়ের কষ্টে জর্জরিত জীবনযুদ্ধ দেখে কান্না ধরে রাখতে পারি নাই আবার ক্ষিপ্ত ও হয়েছি ভয়ার্ত রাজাকার ও বেঈমানগুলার কর্মকান্ডে। ধন্যবাদ জানাই আনিসুল হককে এরকম নান্দনিক এক গল্প উপহার দেয়ার জন্য।
Was this review helpful to you?
or
কিছু কিছু বই আছে যেগুলো পড়লে বার বার চশমাটা খুলতেই হয়।আনিসুল হক স্যারের লেখা 'মা' উপন্যাসটি ঠিক তেমন একটি বই যে বইটা পড়তে গিয়ে চোখ হয়েছে বার বার অশ্রুসিক্ত আর গলা হয়েছে ব্যথায় ভারী। কখনো মোটা বই আমি একটানা পড়ে শেষ করতে পারিনা।আশ্চর্যের বিষয় 'মা' বইটা আমি একরাতেই শেষ করে ফেলি। বার বার আফসোস হচ্ছিল বইটা আরও আগে কেন পড়িনি। আমরা অনেকেই আজাদ কিংবা তাঁর মাকে চিনতাম না।লেখকের অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলেই আমরা এক সাহসী ও মমতাময়ী মাকে জানলাম আর তার বীর সন্তানকে চিনলাম। আমি তো মুক্তিযুদ্ধ দেখিনি কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের ভয়াবহতা আর নৃশংসতা বার বার চোখে ফুটে উঠছিল এ বইটি পড়ে।
Was this review helpful to you?
or
এই বইটি পড়ার আগে কেউ বুঝতেও পারবেন না যে, দুই মলাটের একটি বইয়ে এতকিছু ফুটিয়ে তোলা যায়। মা থেকে শুরু করে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ সহ অনেক কিছুই এই বইয়ে খুব সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।
Was this review helpful to you?
or
উপন্যাসের কাহিনী মুক্তিযোদ্ধা আজাদ এবং তাঁর মায়ের জীবন নিয়ে । শহীদ আজাদের মা সাফিয়া বেগম ছিলেন ঢাকার সবচেয়ে প্রভাবশালী ব্যক্তিদের মধ্যে একজনের স্ত্রী। তিনি ছিলেন আত্মমর্যাদাবান। তাই তার স্বামী যখন দ্বিতীয় বিবাহ করলেন, তখন তিনি তা মেনে নেননি। ছোট্ট আজাদকে নিয়ে শত বিলাসিতা আর প্রাচুর্যের ঘেরাটোপ পেরিয়ে নেমে এসেছিলেন নিজের গড়া যুদ্ধক্ষেত্রে। অভাব অনটনকে পেছনে ফেলে নিজ হাতে তিনি মানুষের মত মানুষ করে তুলেছিলেন আজাদকে। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে আজাদ তাঁর বন্ধুদের সাথে যোগ দেয় । ঢাকায় ক্র্যাক প্লাটুন এর দলে তিনি ছিলেন । এই গেরিলা দলটি তৎকালীন সময়ে “হিট এন্ড রান" পদ্ধতিতে অসংখ্য আক্রমণ পরিচালনা করে পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর মধ্যে ব্যাপক ত্রাসের সঞ্চার করে । ১৯৭১ সালের ২৯ আগস্ট পাকিস্তানি বাহিনী রেইড চালিয়ে ক্র্যাক প্লাটুন এবং সংশ্লিষ্ট অনেক বিশিষ্ট ব্যক্তিদের ধরে নিয়ে যায় । আজাদের বাড়িতেও রেইড হয় , আজাদ তাঁর সহযোদ্ধাদের সাথে ধরা পড়েন । পাকিস্তানিরা তাদের নির্মমভাবে নির্যাতন করে তথ্য জানতে চায় । প্রচণ্ড অত্যাচারের মাঝেও তারা আজাদের মুখ থেকে কিছু বের করতে পারে না । তখন তার মাকে বলা হয়, ছেলে যদি সবার নাম-ধাম ইত্যাদি বলে দেয়, তাকে ছেড়ে দেওয়া হবে । আজাদের মা ছেলেকে বলেন কিছুই না বলতে । আজাদ বলে, মা দুদিন ভাত খাই না, ভাত নিয়ে এসো। মা পরের দিন ভাত নিয়ে হাজির হন বন্দিশিবিরে, কিন্তু ছেলের দেখা মেলে না। আজাদের মা আর কোনোদিনও জীবনে ভাত খাননি।
Was this review helpful to you?
or
মুক্তিযুদ্ধের বাস্তব ঘটনা ও চরিত্রের সমন্বয়ে অভিনব, সুখপাঠ্য, হৃদয়ছোয়া ভাষা শৈলীর এক অসাধারণ উপন্যাস।
Was this review helpful to you?
or
সময়ের সেরা বই।
Was this review helpful to you?
or
একটা লোক যখন মরে যায়, ভাইয়ের কাছে সেটা চলে যাওয়া, বোনের কাছে সেটা শূন্যতা, বাবার কাছে তার নিজেরই ধারাবাহিকতার ছেদ, বন্ধুর কাছে সেটা অতীত স্মৃতি আর বিস্মৃতির দোলাচল, পড়শীর কাছে তা দীর্ঘশ্বাস, দেশের কাছে কালের কাছে হয়ত তা প্রিয়তম পাতার ঝরে যাওয়া, কিন্তু মায়ের কাছে? ঠিক এই প্রশ্নেরই উত্তর খোঁজা হয়েছে 'মা' উপন্যাসে। না, সেই উত্তর পাওয়া যায়নি। কিন্তু আরও বৃহৎ পরিসরে সেই প্রশ্নটাকে তুলে ধরা সম্ভব হয়েছে। কারণ আনিসুল হকের 'মা' কেবল একটা উপন্যাসই না। এক সংগ্রামী নারীর জীবনের মহাকাব্যিক অধ্যায়ের গভীর স্মৃতিচারণা। তিনি ছিলেন এমনই একজন মা, যিনি তার জীবনে আর কোনো পরিচয়ে পরিচিত হতে চাননি। তিনি শুধু একটি পরিচয়কেই ভিতরে এবং বাইরে লালন করে গেছেন, তা হল তিনি একজন মা, শহীদ আজাদের মা। শহীদ আজাদের মা সাফিয়া বেগম ছিলেন ঢাকার সবচেয়ে প্রভাবশালী ব্যক্তিদের মধ্যে একজনের স্ত্রী। কিন্তু তিনি অহংকারী ছিলেন না। ছিলেন আত্মমর্যাদাবান। তাই তার স্বামী যখন দ্বিতীয় বিবাহ করলেন, তখন তিনি তা মেনে নেননি। ছোট্ট আজাদকে নিয়ে শত বিলাসিতা আর প্রাচুর্যের ঘেরাটোপ পেরিয়ে নেমে এসেছিলেন নিজের গড়া যুদ্ধক্ষেত্রে। সেই যুদ্ধের তিনি ছিলেন সফল যোদ্ধা। অভাব অনটনকে পেছনে ফেলে নিজ হাতে তিনি মানুষের মত মানুষ করে তুলেছিলেন আজাদকে। কিন্তু তারপরই এল আরেক যুদ্ধ। বাঙালীর জীবনের সবচেয়ে বড় যুদ্ধ, স্বাধীনতার যুদ্ধ। আজাদ সেই যুদ্ধে যেতে পিছপা হয়নি। তার মাও তাকে বাধা দেননি। কিন্তু তারপর কি হল, যখন আজাদকে ধরে নিয়ে গেল মিলিটারিরা? আজাদের মা কি তখন স্রেফ একা আজাদের মা হয়ে বাংলার অন্য মায়েদের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করলেন? না, আজাদের মা শুধু আজাদেরই মা নন। তিনি সমগ্র বাংলা মায়ের প্রতিমূর্তি। তাই তো তার মুখ থেকে সন্তানের প্রতি বেরিয়েছিল এক অমোঘ বাণী, ''বাবা রে, যখন মারবে, তুমি শক্ত হয়ে থেকো। সহ্য কোরো। কারো নাম যেন বলে দিও না।'' এভাবেই আজাদের মা দেশের তরে নিজের ছেলেকে কুরবানি দিয়েছিলেন। কিন্তু নিজের মাতৃসত্তা কি তা মেনে নিয়েছিল? তাহলে কেন জীবনের বাকি কটা দিন তিনি ছেলের ফেরার অপেক্ষায় দিন গুজরান করবেন? কেন মাটিতে শোবেন, ভাতের বদলে রুটি খাবেন? তার একটাই কারণ, তিনি মা। তিনি সেই মা যার দ্বৈত সত্তা। দেশমাতৃকা হয়ে দেশের উদ্দেশ্যে একমাত্র সন্তানকে উৎসর্গ করতে তিনি দুবার ভাবেননি। আবার আজাদের মা হয়ে আজাদের হারিয়ে যাওয়াকেও তিনি মেনে নিতে পারেননি। তাই সারাজীবন তিনি শক্ত পাথুরে ভাবমূর্তির আড়ালে সন্তানের জন্য কোমল মাতৃহৃদয় নিয়ে একার লড়াই লড়ে গেছেন। 'মা' উপন্যাস এই মায়েরই জীবন সংগ্রামের অমর গাথা। 'মা' উপন্যাসের ভাল-মন্দ বিচারের ধৃষ্টতা আমি কখনো দেখাব না। শুধু একটা কথাই বলব, 'মা' পড়তে পড়তে কখনো পাঠকের দুচোখ গড়িয়ে যেমন জলের ধারা বয়ে চলবে, তেমনি আবার কখনো এক শহীদ জননীর মত জীবনে হার না মানার চেতনায় পাঠককে উজ্জীবিত করবে। সরদার ফজলুল করিমের কথা না মেনে উপায় নেই। বস্তুতই পাঠকের চোখে ম্যাক্সিম গোর্কির 'মা' আর আনিসুল হকের 'মা' এক হয়ে উঠতে বাধ্য।
Was this review helpful to you?
or
আনিসুল হকের লেখার ব্যাপারে বলতে গেলে প্রথমেই বলতে হয়, তাঁর লেখা কলামগুলো বেশ সুখপাঠ্য হয়। লেখকের লেখা কিছু বইও অসাধারণ। তিনি যে বেশ পরিশ্রমী লেখক এটা সব সময়ই স্পষ্ট। তিনি লেখালেখির জন্যে প্রচুর পড়াশোনা করেন, এটা তাঁর লেখা পড়লেই বোঝা যায়। তবে বাস্তবতা হল তাঁর কিছু উপন্যাস একদমই তাঁর মানের সাথে যায় না। তবে আনিসুল হকের লেখালেখির প্রসঙ্গে বোধহয় সবচেয়ে আলোচিত বিষয় হবে ‘মা’ উপন্যাসটি। সব লেখকেরই লেখার ক্ষমতার একটা সীমা থাকে। ‘মা’ উপন্যাসটিতে লেখক তাঁর সৃষ্টির সর্বোচ্চ চূড়াকে স্পর্শ করেছেন। আনিসুল হকের সব লেখাও যদি হারিয়ে যায় কোনদিন, শুধুমাত্র এই একটি লেখার জন্যেই তিনি পাঠক হৃদয়ে অমর হয়ে থাকবেন। ‘মা’ উপন্যাসটি হল শহীদ আজাদের মায়ের জীবনাখ্যান। এক এমন এক বাস্তব কাহিনী যা গল্প-উপন্যাসকেও হার মানায়। শহীদ আজাদের মা ছিলেন তৎকালীন ঢাকা শহরের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তিদের একজনের স্ত্রী। কিন্তু অন্যায়ের সাথে আপোষ করার মানসিকতা এই মায়ের কখনোই ছিল না। তাই তিনি তাঁর স্বামীর অন্যায় আচরণ মেনে নেন নি। তাঁর ছেলে আজাদকে নিয়ে এক কাপড়ে স্বামীর ঘর ছেড়ে চলে এসেছেন। তারপর শুধুই জীবনসংগ্রামের কাহিনী। যেই সংগ্রাম আজাদের মা মৃত্যু অবধি করে গেছেন। তিনি আজাদকে অনেক কষ্টে লেখাপড়া শেখান। করাচি বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠান উচ্চশিক্ষার জন্যে। সব কষ্টের দিন যখন শেষ হয়ে আসছিল, তখনই আসলো ১৯৭১ এর উত্তাল স্বাধীনতা যুদ্ধ। সব বন্ধুদের সাথে আজাদও যুদ্ধে গেল। আজাদ যখন যুদ্ধে গেল তখন আর তার মা তাকে না করতে পারেন নি। কারণ, দেশকে শত্রুদের হাত থেকে বাঁচানোর জন্যে আজাদের মত ছেলেরা এগিয়ে না আসলে কে আসবে? তারপর যা হল তা আরেক ইতিহাস। আজাদেরা মেলাঘর থেকে ট্রেনিং নিয়ে এসে ঢাকার ভিতরে অসাধারণ দুঃসাহসী সব অপারেশন করতে লাগলো। কিন্তু একদিন একটু অসতর্কতার কারণে হানাদার বাহিনীর হাতে ধরা পড়ে গেল। তাদের একাংশকে প্রথমে থানায় রাখা হয়েছিলো। সেখানেই আজাদের সাথে তার মায়ের শেষ দেখা হয়। শেষ দেখার সময় আজাদ তার মায়ের কাছে ভাত খেতে চেয়েছিল। পরের দিন ভাত রেঁধে নিয়ে গিয়ে আজাদের মা আর তাঁর ছেলের দেখা পান নি। তারপর থেকে এই দুঃখিনী মা যতদিন বেঁচে ছিলেন আর কোনদিন মুখে ভাত তোলেন নি। ‘মা’ উপন্যাসটিকে একটি ঐতিহাসিক উপন্যাস বলা যায়। তবে পাঠকদের বইটি পড়ার সময় মাথায় রাখতে হবে, এটা কোন ইতিহাসের বই নয়। এখানে প্রয়োজনে-অপ্রয়োজনে অনেক জায়গাতেই ইতিহাসের সাথে লেখকের কল্পনার সংমিশ্রণ ঘটেছে। আর এই কাজটি আনিসুল হক অত্যন্ত দক্ষতার সাথে করেছেন। এছাড়া অসাধারণ সাবলীল বর্ণনাভঙ্গি এবং সময়কে কলমের আঁচড়ে ধরে রাখতে পারার কৃতিত্বই ‘মা’ উপন্যাসটিকে লেখকের শ্রেষ্ঠ সৃষ্টিতে পরিণত করেছে।
Was this review helpful to you?
or
পৃথিবীর মধ্যে এক অক্ষরের সবচেয়ে সুন্দর শব্দটি হল 'মা'। আনিসুল হকের এই বইটি আপনার মনে এমন প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করবে, যেন বইটি পড়ে আপনি উপলদ্ধি করতে পারবেন যে, মায়ের মত নিঃস্বার্থ মানুষ আর নেই। বইয়ের বাস্তব এই ঘটনাটির প্রেক্ষাপট ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ। শহিদ আজাদের মাকে নিয়ে লেখা। আজাদের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে ধনী স্বামীকে ফেলে চলে আসেন যাযাবর জীবনযাপনে। স্বপ্ন একটিই, আজাদ একদিন অনেক বড় হবে। একসময় মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়ে যায়। জাহানারা ইমামের ছেলে রুমির সাথে সেও যায় মুক্তিযুদ্ধে। কিন্তু শেষ পর্যায়ে এসে সে ধরা পড়ে। পাকিস্তানিরা তাকে আটক করে রেখে ভয়াবহ নির্যাতন করে। কিন্তু তার মা ঘরে বসে থাকতে পারে না। একসময় ছেলের সাথে দেখা হয়। দেখেন, ছেলের কোন বিছানা নেই। মেঝেতে ঘুমায়। ভাল কোন খাবার নেই। খালি শুকনো রুটি খাওয়ায়। মা, ছেলের এ বেহাল দশা সহ্য করতে পারেন না। ছেলেকে জিজ্ঞাসা করেন সে কি খেতে চায়। ছেলে বলে। মা বাড়িতে ফিরে এসে সারা দিন, সারা রাত ছেলের পছন্দের খাবার রান্না করেন। কিন্তু পরদিন গিয়ে দেখেন, তার ছেলে নেই। পাকিস্তানিরা তাকে অন্য কোথাও সরিয়ে ফেলেছে। মা দিশেহারা হয়ে যান। ছেলের খোঁজ করেন সারা দেশে। কিন্তু খোঁজ মেলে না। একসময় দেশ স্বাধীন হয়। কিন্তু আজাদকে খুঁজে পাওয়া যায় না। সবাই তার মাকে বলে যুদ্ধে সে শহিদ হয়েছে। কিন্তু মা তা মানতে নারাজ। যতদিন বেঁচে ছিলেন, কখনো খাটে শোননি। মেঝেতে শুয়েছেন। শুকনো রুটি খেয়েছেন। ভাত মুখে দেন নি। কারন আজাদকে পাকিস্তানিরা এই অবস্থায় রেখেছিল। একসময় তিনি বুঝতে পারেন, আজাদ আসলেই শহিদ হয়েছে। মৃত্যুর পর তার কবরের পাশে তার নিজের নাম লেখা হয় নি। তার ইচ্ছানুযায়ী লেখা হয়েছিল ' শহিদ আজাদের মা'।
Was this review helpful to you?
or
এখন ও যারা বই টি পড়েন নি তাদের বলছি । তারা খুব জলদি বইটি পড়ে ফেলুন ।