User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
জীবন চলে জীবনের নিয়মে। আমাদের প্রত্যেককেই কমবেশি জীবনে সামনে এগুতে কিছু ত্যাগ করতে হয়েছে সেই রকমই এই বইটিতেও লেখক জীবনের বিভিন্ন প্রাসঙ্গিক ব্যাপার স্যাপার নিয়ে টুনির চাওয়ার লাগাম টেনে ধরেছেন ,সামাজিক সীমাবদ্ধতার কথাও এখানে খুব চমৎকার ভাবে উপস্থাপিত হয়েছে। মন্তু হোক আর মকবুলের সাথে টুনির সম্পর্ক টানলে বলতে হয় একজন হলো ভালোলাগা আর একজন হলো সামাজিক নিয়মের অভ্যাস মাত্র। যারা কিনতে চান কিনে ফেলুন।
Was this review helpful to you?
or
ভালো
Was this review helpful to you?
or
উপন্যাসটি অনেক সুন্দর। উপন্যাসটি পড়ে একদম গ্রামীণ জীবনের কথা মনে পড়ে গেল
Was this review helpful to you?
or
that's a great Nobel
Was this review helpful to you?
or
It is a good book and I like this book very much
Was this review helpful to you?
or
অসাধারণ
Was this review helpful to you?
or
Best!
Was this review helpful to you?
or
অসাধারণ
Was this review helpful to you?
or
হাজার বছর ধরে। জহির রায়হানের হাজার বছর ধরে আমার পড়া দ্বিতীয় বই। সবসময় সেরা।❤️
Was this review helpful to you?
or
হাজার বছর ধরে উপন্যাসটি জহির রায়হানের একটি কালজয়ী উপন্যাস। তার লেখা উপন্যাস এর মধ্যে একটি অন্যতম উপন্যাস এটি। উপন্যাসটি খুবই চমৎকার ভাষায় লিখেছেন কবি। তিনি উপন্যাসের মাধ্যমে গ্রাম বাংলার হাজার বছরের ঐতিহ্য তুলে ধরেছেন এছাড়াও ওই সময় গ্রামের কলেরা ডায়রিয়াকে ওলাবিবি নামে ডাকা হতো অর্থাৎ ওলাবিবি যে গ্রামে যেতো সেই গ্রামের সকলকে উজার করে দিত । এছাড়াও তিনি মকবুল বুড়োর পরিবারের কাহিনী, নারী নির্যাতন তার বাল্যবিবাহ, বহুবিবাহ ,কঠিন অচলায়তন সমাজে যাই হোক নারীর কোন অধিকার নাই, নারী হাতের পুতুল মাত্র ,পুরুষ থাকে যেমন চায় তেমন নাচায় ।নিজের ইচ্ছামত কাউকে বিয়ে করা এমন সমাজে অপরাধ ,গুরুতর অপরাধ, অন্ধকারে সমাজ আনাচে-কানাচে বাস করে কুসংস্কার এই বিষয়গুলো সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন। আমাদের আবহমান গ্রামের সামাজিক চিত্র দেখেছি একটা ধারা ছিল আমাদের গ্রামে যারা মুরুব্বী ছিল তারা সব সময় বহুবিবাহ করত তার প্রতিনিধিত্ব করেছিল মকবুল বুড়ো। তিনি তার ঘরে বাহিরে জমিজমার সবগুলো কাজ করে নিতেন তার বউদের দিয়ে ।এটি ছিল নারী নির্যাতনের অন্যতম লক্ষণ । এছাড়াও টুনি যে ছিল মকবুলের সবথেকে ছোট বউ যার সমাজের বাঁধাধরা নিয়মগুলো মানতে পারছিল না এ ছাড়াও মকবুল বুড়ো তার দাদুর বয়সে হাওয়াই তার প্রতি কোনো আকর্ষণ কাজ করছিল না ।টুনি ভালবাসে তার সম্পর্কের দেবর মন্টুকে কিন্তু কালের পরিক্রমায় মন্টু কে বিয়ে করতে হয় করিম শেখের বোন আম্বিয়া কে । গ্রামটি পরি দিঘীরপাড় কে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছিল এই পরিদিঘি নিয়ে নানা রুপকথা তুলে ধরা হয়েছে।
Was this review helpful to you?
or
Boook Ta amar Valo laksa
Was this review helpful to you?
or
অসাধারণ
Was this review helpful to you?
or
বই টা খুব ই সুন্দর
Was this review helpful to you?
or
great book
Was this review helpful to you?
or
বেস্ট"
Was this review helpful to you?
or
So far so good
Was this review helpful to you?
or
সব মিলিয়ে ভালো ছিলো
Was this review helpful to you?
or
খুবই চমৎকার একটা বই!?
Was this review helpful to you?
or
Not Bad
Was this review helpful to you?
or
আলোচিত লেখকের আলোচিত একটি বই। সুখপাঠ্য। যদিও পুরানো সময়ের গ্রামীণ পরিবেশের উপর রচিত। রবীন্দ্র-শরৎ পাঠকেরা সুখ পাবেন আশা করি।
Was this review helpful to you?
or
Bar bar porte mon chay.
Was this review helpful to you?
or
10/10
Was this review helpful to you?
or
Good
Was this review helpful to you?
or
ভালোই
Was this review helpful to you?
or
প্রিয় একটি বই।
Was this review helpful to you?
or
??
Was this review helpful to you?
or
♥️♥️♥️♥️
Was this review helpful to you?
or
অসাধারন খুব ভালো লেগেছে,, আমি আরো বই অডার্র করব
Was this review helpful to you?
or
বইটা আমি পড়েছি। আমার ভালো লেগেছে।
Was this review helpful to you?
or
nice
Was this review helpful to you?
or
nice,really satified
Was this review helpful to you?
or
বাংলা সাহিত্যের অনন্য সৃষ্টি
Was this review helpful to you?
or
চমৎকার
Was this review helpful to you?
or
অসাধারণ একটা বই।বিশেষ করে টুনি আর মন্তু ক্যারেক্টরটা।
Was this review helpful to you?
or
বারবার পড়ার মত একটি বই।
Was this review helpful to you?
or
onek shundor ekta upponash..
Was this review helpful to you?
or
Portrayed the life and lifestyle of the countryside with great skill which can mesmerize a reader
Was this review helpful to you?
or
মানসম্মত একটি বই
Was this review helpful to you?
or
Very good
Was this review helpful to you?
or
অসাধারণ একটি উপন্যাস। ২০১২ সালে প্রথম পড়ি। আজো মনে হয় পুরো উপন্যাস টি এখনো স্মৃতিতে সমুজ্জ্বল
Was this review helpful to you?
or
wow
Was this review helpful to you?
or
?
Was this review helpful to you?
or
Very good product with good packaging
Was this review helpful to you?
or
প্রেক্ষাপট খুব সুন্দর ছিলো?
Was this review helpful to you?
or
good
Was this review helpful to you?
or
পড়ে দেখতে পারেন। ছোট বই,
Was this review helpful to you?
or
মানুষের ব্যবচ্ছেদ
Was this review helpful to you?
or
গুড
Was this review helpful to you?
or
রাখ! তোর বদনা! বদনা!!! অগো বেবাকটিরে ক পুকুর ঘাটে যাইয়া হাতমুখ ধুইয়া আইতে। যখনই পড়ি তখনই যেন বইটাকে নতুন বলে মনে হয়।
Was this review helpful to you?
or
Excellent
Was this review helpful to you?
or
এক কথায় অসাধারণত ?
Was this review helpful to you?
or
উপন্যাসের সারসংক্ষেপ: কথাশিল্পী জহির রায়হানের অমর সৃষ্টি হাজার বছর ধরে। গ্রাম বাংলার চিরায়ত রূপে কিছু বিচিত্র গল্প ফুটে উঠেছে এই উপন্যাসে। পরী দিঘীরপাড়কে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে গ্রাম, সেই গ্রামের শিকদার বাড়িতে আট ঘর লোকের বসবাস। এ বাড়ির প্রধান মকবুলের তিনটি স্ত্রী। বড় বউ আমেনা, মেজ বউ ফাতেমা এবং ছোট বউ টুনি। মকবুলের একমাত্র মেয়ে হিরণ আর টুনি প্রায় সমবয়সী। টুনির মনে তাই কিশোরের অদম্য উচ্ছ্বাস, সংসার ধর্ম তাকে অতটা আষ্টেপৃষ্ঠে বাঁধতে পারেনা। টুনির মন জুড়ে থাকে মকবুলের দূর সম্পর্কের ভাই মন্তু। মন্তু ও টুনিকে পছন্দ করে কিন্তু আবার পাশের বাড়ির আম্বিয়া ও তার মনে দাগ কাটে। উপন্যাসে জড়ো হতে থাকে আরও অনেক চরিত্র ফকিরের মা, সালেহা, গনি মোল্লা, আবুল, রশিদ। তার সাথে জড়ো হতে থাকে আরো নানান গল্প। এক অপ্রীতিকর বিবাদে আহত হয়ে মারা যায় মকবুল, মন্ত টুনিকে নিয়ে হারিয়ে যেতে চায় বহুদূর। কিন্তু টুনি কি তার প্রস্তাবে রাজি হয় নাকি বদলে যায় আজীবনের জন্য? উপন্যাস পর্যালোচনা: হাজার বছর ধরে গ্রাম্য জীবন কেন্দ্রিক অসম্ভব চমৎকার একটি উপন্যাস। এর কাহিনী যতটা শক্তিশালী, ঠিক ততটাই চমৎকার এর বর্ণনা। জহির রায়হান কত গভীরভাবে উপলব্ধি করে যে উপন্যাস লিখেছেন তাই উপন্যাসের প্রতিটা বাক্য বলে দেয়। ওলাবিবির উৎপাত থেকে শুরু করে গ্রাম্য কলহ, গ্রামীণ হাটের অসম্ভব চমৎকার বর্ণনা থেকে শুরু করে রাত জেগে সেই পুরনো পুঁথি পাঠ- কি নেই এই উপন্যাসে। গ্রামীণ জীবনের অসাধারণ বর্ণনা পাওয়া যায় এই উপন্যাস থেকে। উপন্যাসের প্রতিটি বাক্য পাঠকের মনে জন্ম দেয় এক অদ্ভুত অনুভূতির, কল্পনার চোখে যেনো জীবন্ত হয়ে ওঠে প্রতিটি চরিত্র।
Was this review helpful to you?
or
জহির রায়হানের অমর কীর্তি। বাংলার ইতিহাস ঐতিহ্য জানতে চাইলে বইটি নিতে পারেন। কিন্তু বইয়ের কভার অন্যরকম দিয়েছেন তাই একটু খারাপ লাগলো রকমারি।
Was this review helpful to you?
or
good
Was this review helpful to you?
or
বাংলাদেশে এমন বই খুব কম আছে।
Was this review helpful to you?
or
হাজার বছর ধরে। বাংলা সাহিত্যের অসাধারণ এক বই! একবার হলেও পড়ে দেখা উচিত সবার।
Was this review helpful to you?
or
Just wow❤
Was this review helpful to you?
or
অসাধারণ একটা বই।
Was this review helpful to you?
or
আমার পড়া একটি দারুণ বই এটি। চিরায়ত উপন্যাসের মধ্যে এর থেকে দারুণ বই এর আগে কখনো পড়িনি। অতএব এটি আমি পাঠকদের রেকোমেন্ড করবো।
Was this review helpful to you?
or
আমার পড়া সেরা একটি উপন্যাস
Was this review helpful to you?
or
জহির রায়হানের অসম্ভব ভালো একটা উপন্যাস। যেটা আমার উপজেলার অন্তর্ভুক্ত একটা গ্রামের কাহিনী।সবসময় উপভোগ্য।
Was this review helpful to you?
or
জহির রায়হানের চমৎকার একটি বই
Was this review helpful to you?
or
বইয়ের নামঃ হাজার বছর ধরে লেখকঃ জহির রায়হান ক্যাটাগরিঃ চিরায়ত উপন্যাস প্রথম প্রকাশকালঃ ১৯৯৮ প্রকাশকঃ অনুপম প্রকাশনী(অনুপম সংস্করণ) ---------------------------------------------------------- পরী দিঘীরপাড়কে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে একটি গ্রাম এবং সেই গ্রামেরই কিছু বিচিত্র গল্প নিয়ে গড়ে উঠেছে এই উপন্যাসের উপজীব্য। এই গ্রামের শিকদার বাড়িতে আট ঘরের বসবাস,আর বাড়ির প্রধান হলো মকবুল,যার তিনটি স্ত্রী আছে।বড় বউ আমেনা,মেঝ বউ ফাতেমা আর ছোট বউ টুনি,,মকবুলের তিন বউই জীবিত ছিল।টুনি ছিল কিশোরী,যার মনে সংসার জীবনের গভীরতা স্থান করে নিতে পারেনি।তার মনে ছিল কিশোরের উচ্ছাস,অদম্য প্রাণশক্তি।আর এই টুনির মনজুড়ে থাকে মকবুলের দূর সম্পর্কের ভাই মন্তু।এই মন্তু ও টুনিকে ঘিরেই মূলত সমস্ত উপন্যাসের কাহিনী।
Was this review helpful to you?
or
হাজার বছর ধরে যেই জীবনধারা বযে চলেছে, তাতে আশা -নিরাশা, পরেম-ভালবাসা, চাওযা-পাওযার খেলা চললেও তা সহজে চোখে পডে না, অনধকারে ঢাকা থাকে। হাজার বছর ধরে জহির রায়হানের অনবদ্য সৃষ্টি, অসম্ভব ভালো লাগার উপন্যাস।
Was this review helpful to you?
or
Hazar bosor dhore novel ta really awesome!! Just feel like the real charecter
Was this review helpful to you?
or
হাজার বছর ধরে উপন্যাসটি জহির রায়হানের অনবদ্য এক সৃষ্টি। বাঙালির হাজার বছরের গ্রাম্য ঐতিহ্য এবং চিন্তা চেতনার প্রকাশ ঘটেছে এই বইয়ের কাহিনীতে। বইতে টুনি আর মন্তুর মধ্যে না বলা ভালোবাসার কাহিনী পাঠক মনকে আকৃষ্ট করে। এছাড়া গ্রামের বিভিন্ন কুসংস্কারের ছবিও আমরা বইতে দেখতে পাই। পুরুষশাষিত সমাজের বিরুদ্ধে জহির রায়হানের এই বইটি যেন এক নিরব প্রতিবাদ। উপন্যাসের শুরুটা একটু ধীর হলেও যতই উপন্যাসের গভীরে যাওয়া হবে ততই পাঠক বইটির প্রতি এক ধরনের টান অনুভব করবে। সর্বপরি, বইটি আসলেই খুব সুন্দর এবং যুগোপযোগী বই
Was this review helpful to you?
or
আমার জীবনে সবচেয়ে বেশিবার পড়া উপন্যাসের নাম হাজার বছর ধরে। উপন্যাসে বাংলার গ্রাম্য জীবনের ঘাত প্রতিঘাত নির্মম বাস্তবতার সাথে তুলে ধরা হয়েছে। একটি একান্নবর্তী পরিবারের নারী পুরুষ সবার জীবনের ঘটনা প্রবাহ, গ্রাম্য কুসংস্কার, বাল্য বিবাহ, নারীদের মূল্যহীনতা, বহুবিবাহ, নারী নির্যাতন প্রায় সবকিছু দারুণভাবে ফুটিয়ে তোলার দক্ষতা দেখিয়েছেন লেখক জহির রায়হান। বাড়ির প্রধান কর্তা মকবুলের কিছু কিছু সংলাপ খুবই মজার লেগেছে। টুনির সাথে মন্তুর সম্পর্কটাও ছিল দারুণ। এক বসায় পড়ে শেষ করার মতই উপভোগ্য এই উপন্যাস।
Was this review helpful to you?
or
This is one of the best social fictions in Bangla literature history. Famous writer Zahir Raihan depicted old, rural society of Bangladesh which has been existing for very long time. Hard labour, love, relation, torture, superstition etc were described very precisely. Actually Mokbul, Tuni, Ambia, Montu Mia, Mother of Abul, Gonu Mia etc are the realistic symbol of our unchanged rural country. In my opinion, this is the best fiction of Zahir Raihan.
Was this review helpful to you?
or
হাজার বছর ধরে জহির রায়হানের শ্রেষ্ঠ কীর্তি। যারা শহরের মানুষ তারা হয়তো চিরায়ত গ্রামীন জীবনের সম্পর্কে অবগত নন। তাদের জন্য হাজার বছর ধরে উপন্যাস গ্রামীণ রূপ-প্রতিরূপের মহাকাব্য। আর আমরা যারা গ্রামের আলো-বাতাস, ধূলো-কালিতে গড়া মানুষ, তারা জানি আমরাই হাজার বছরের সে মানুষ। আর আমাদের যাপিত জীবন, হাজার বছরের সে চিরায়ত জীবন। উপন্যাসের শেষ লাইনটা কখনো ভুলবো বলে মনে হয় না। রাত বাড়ছে, হাজার বছরের পুরনো সেই রাত...
Was this review helpful to you?
or
কথাশিল্পী জহির রায়হানের জন্ম ১৯৩৫ সালের ১৯ শে আগস্ট, ফেনী জেলার মজুপুর গ্রামে। তার প্রাথমিক শিক্ষাজীবন কেটেছে কলকাতা মিত্র ইনস্টিটিউট ও আলিয়া মাদ্রাসায়। ফেনীর আমিরাবাদ হাই স্কুল থেকে প্রবেশিকা পাশ করার পর জগন্নাথ কলেজ থেকে আইএসসি এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএ সম্মান পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। তিনি তৎকালীন পশ্চিম পাকিস্তানের প্রখ্যাত চিত্রপরিচালক জে.এ. কারদারের সহকারী হিসেবে কাজ করেছেন। তার প্রথম চলচ্চিত্র কখনো আসেনি মুক্তি লাভ করে ১৯৬১ সালে। এছাড়া তিনি বেশ কিছু উপন্যাস এবং গল্প রচনা করেছেন। ১৯৬৪ সালে তা হাজার বছর উপন্যাসটির জন্য তিনি আদমজী পুরস্কার লাভ করেন। ১৯৭২ সালের ৩০ জানুয়ারি, তার বড় ভাই শহীদুল্লাহ কায়সারকে খুঁজতে গিয়ে তিনি নিখোঁজ হন। সাহিত্যকর্মের জন্য জহির রায়হান বাংলা একাডেমি পুরস্কার ও স্বাধীনতা দিবস পুরস্কার লাভ করেছেন। উপন্যাসের সারসংক্ষেপ: কথাশিল্পী জহির রায়হানের অমর সৃষ্টি হাজার বছর ধরে। গ্রাম বাংলার চিরায়ত রূপে কিছু বিচিত্র গল্প ফুটে উঠেছে এই উপন্যাসে। পরী দিঘীরপাড়কে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে গ্রাম, সেই গ্রামের শিকদার বাড়িতে আট ঘর লোকের বসবাস। এ বাড়ির প্রধান মকবুলের তিনটি স্ত্রী। বড় বউ আমেনা, মেজ বউ ফাতেমা এবং ছোট বউ টুনি। মকবুলের একমাত্র মেয়ে হিরণ আর টুনি প্রায় সমবয়সী। টুনির মনে তাই কিশোরের অদম্য উচ্ছ্বাস, সংসার ধর্ম তাকে অতটা আষ্টেপৃষ্ঠে বাঁধতে পারেনা। টুনির মন জুড়ে থাকে মকবুলের দূর সম্পর্কের ভাই মন্তু। মন্তু ও টুনিকে পছন্দ করে কিন্তু আবার পাশের বাড়ির আম্বিয়া ও তার মনে দাগ কাটে। উপন্যাসে জড়ো হতে থাকে আরও অনেক চরিত্র ফকিরের মা, সালেহা, গনি মোল্লা, আবুল, রশিদ। তার সাথে জড়ো হতে থাকে আরো নানান গল্প। এক অপ্রীতিকর বিবাদে আহত হয়ে মারা যায় মকবুল, মন্ত টুনিকে নিয়ে হারিয়ে যেতে চায় বহুদূর। কিন্তু টুনি কি তার প্রস্তাবে রাজি হয় নাকি বদলে যায় আজীবনের জন্য? উপন্যাস পর্যালোচনা: হাজার বছর ধরে গ্রাম্য জীবন কেন্দ্রিক অসম্ভব চমৎকার একটি উপন্যাস। এর কাহিনী যতটা শক্তিশালী, ঠিক ততটাই চমৎকার এর বর্ণনা। জহির রায়হান কত গভীরভাবে উপলব্ধি করে যে উপন্যাস লিখেছেন তাই উপন্যাসের প্রতিটা বাক্য বলে দেয়। ওলাবিবির উৎপাত থেকে শুরু করে গ্রাম্য কলহ, গ্রামীণ হাটের অসম্ভব চমৎকার বর্ণনা থেকে শুরু করে রাত জেগে সেই পুরনো পুঁথি পাঠ- কি নেই এই উপন্যাসে। গ্রামীণ জীবনের অসাধারণ বর্ণনা পাওয়া যায় এই উপন্যাস থেকে। উপন্যাসের প্রতিটি বাক্য পাঠকের মনে জন্ম দেয় এক অদ্ভুত অনুভূতির, কল্পনার চোখে যেনো জীবন্ত হয়ে ওঠে প্রতিটি চরিত্র। উল্লেখযোগ্য অংশ: ১. জীবনের হাটে সকল বেচাকেনা শেষ করে দিয়ে একদিন অকস্মাৎ কোথায় যেন হারিয়ে গেছে ওরা। ২. রাত বাড়ছে। হাজার বছরের পুরনো সেই রাত। উপন্যাসের ভালো দিক: সম্পূর্ণ উপন্যাসটি অত্যন্ত চমৎকার। প্রতিটি ঘটনা এবং চরিত্র সাবলীল এবং প্রাসঙ্গিক। আর তাছাড়া উপন্যাসের ভাষা যথেষ্ট প্রাঞ্জল এবং সহজবোধ্য।
Was this review helpful to you?
or
গ্রামীণ বাংলার প্রতিচ্ছবি তুলে ধরা হয়েছে বইটিতে। সবার পড়া উচিত।
Was this review helpful to you?
or
জহির রায়হান এর হাজার বছর ধরে বেচে থাকবে মানুষের মনে হাজার বছর ধরে। এই উপন্যাসের প্রধান দুটি চরিত্র হলো মন্তু আর টুনি। গ্রামীণ মানুষের জীবন যাপনের চড়াই-উৎরাই নিয়েই উপন্যাস। দু চার পাতা যারা পড়বেন তারা শেষ পর্যন্ত না পড়ে থাকতে পারবে না। এটা নিয়ে চলচিত্রও নির্মিত হয়েছে। অনেক ছোট থাকতে দেখেছিলাম আবার দেখার ইচ্ছা হয়। তবে উপন্যাস টা আমার পড়া সেরা উপন্যা। আর কিছু বলার নাই। বইটি আমি রকমারি থেকে কিনেছিলাম ২৬ শে এপ্রিল ২০১৮। আপনারা সবাই কিনবেন আশা করি।
Was this review helpful to you?
or
"হাজার বছর ধরে" উপন্যাসটি ঔপন্যাসিক জহির রায়হানের অমর কীর্তিগুলোর একটি। যুগ যুগ ধরে চলতে থাকা গ্রাম বাংলার মানুষের জীবনের ক্ষুদ্র একটি তিনি কিছু চরিত্রের সার্থক চরিত্রায়নের মধ্য দিয়ে এই উপন্যাসটিতে তুলে ধরেছেন। পুরো উপন্যাসের কাহিনি আবর্তিত হয়েছে একটি বাড়িকে কেন্দ্র করে। বাড়িটির নাম শিকদার বাড়ি। প্রতিষ্ঠাতা কাশেম শিকদার। বাড়িটি একটি একান্নবর্তী পরিবারের বাড়ি (একান্নবর্তী পরিবার হলো যৌথ পরিবার)। মোট আটঘর লোকের বসবাস সেই বাড়িতে। বাড়ির কর্তা মকবুল বুড়ো। সদস্যদের সবাই নিম্নবিত্ত শ্রেণির মানুষ। জিবিকার তাগিয়ে নারীপুরুষ সবাই সমানভাবে কাজ করে যায়। এদের আবার একেকজনের একেক চাহিদা, একেক স্বপ্ন, একেক ইচ্ছা, একেক আকাঙ্ক্ষা। স্বভাবেও কারোর সাথে কারোর মিল নেই। গল্পে উঠে এসেছে সামাজিক কুসংস্কারের চিত্রও। সামাজিক, পারিবারিক টানাপোড়নের ব্যাপারটিও চোখে পরে। মোট কথা বাংলা সাহিত্যের জন্য এটি এমন একটি সম্পদ যার মূল্য অসামান্য।
Was this review helpful to you?
or
জহির রায়হানের "হাজার বছর ধরে" একটি চিরায়ত উপন্যাস । ক্লাস নাইনের বাংলা ১মপত্র বইয়ের উপন্যাসের অংশে ছিল"হাজার বছর ধরে "!।উপন্যাসটি মূলত আমি তখনই পড়েছি কিন্তু সেই পড়াটা ছিল হয়ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার জন্য,পরীক্ষায় ভালো নাম্বর উঠানোর লক্ষ্যে। প্রতিটি গ্রামেই বুঝি একজন মকবুল বুড়ো,টুনি,মন্টু,আমেনা,আবুল, থাকে, থাকে হাজার বছরের সেইসব দিন-রাত্রি!!!
Was this review helpful to you?
or
জহির রায়হানের ‘হাজার বছর ধরে’ একটি সামাজিক উপন্যাস। এতে তিনি তুলে ধরেছেন যুগ-যুগান্তরের বিবর্তনহীন গ্রামীণ জীবনের ছায়াচিত্র। ক্ষুদ্র একটি গ্রামের একান্নবর্তী পরিবারের সংঘাতময় জীবনের কাহিনী বর্ণনা করেছেন। উপন্যাসে দেখা যায় জীবিকার তাগিদে নারী-পুরুষ সবাইকে কঠোর পরিশ্রম করতে হয়। হাজার বছর ধরে চলে আসছে গ্রাম বাংলার মানুষের এ জীবনযুদ্ধ। এযুদ্ধে কখনও তারা জয়ী হয়; আবার কখনও হয় পরাজিত। জীবিকার তাগিদে বাড়ির পুরুষদের কাজ করতে হয় ঘরে বাইরে, দিন রাত যেন অক্লান্ত পরিশ্রম। বাড়ির নারী সদস্যরাও বাদ যায়না। তাদের লড়তে হয় কঠিনতম জীবন সংগ্রামে। এরপরে আছে নানারকম কুসংস্কার, নানাবিধ ধর্মীয় গোঁড়ামী আর বিধি নিষেধের বেঁড়া জাল। যা সবকিছু ছাপিয়ে উজ্জ্বল হয়ে উঠেছে তাদের কঠিন সেই জীবন সংগ্রামের গল্প। লেখক এই উপন্যাসে আবহমানকালের গ্রাম-বাংলার প্রায় সব দিকই তুলে এনেছেন।
Was this review helpful to you?
or
hajar bachar dhore-uponnase lekhok tule dhorechen gram jug jugantorer bibortonhin gramin chayachitro.akti akannoborti poribar.sei poribarer korta makbul.tar poribare at ghor loker bas.jibikar tagide nari purus uvoy e kei kothor porisrom korte hoy.
Was this review helpful to you?
or
চিরায়ত গ্রাম বাংলার আবহ ফুটে উঠেছে উপন্যাসে। একান্নবর্তী পরিবারের জীবনের কাহিনী সুন্দর ভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন লেখক। দারুণ একটা উপন্যাস। লেখক তার লেখণীর মাধ্যমে সুনিপণ ভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন। অনেকেই এই উপন্যাসের সিনেমাও দেখে থাকবেন। সিনেমা টিও সুন্দর হয়েছে। অনেকের কাছেই সেটা উপন্যাসের মত ভালো লেগেছে। তবে উপন্যাস পড়া আরো ভালো লাগে। কারণ লেখাতে কল্পনার করার সুযোগ থাকে। যেটা সিনেমাতে নেই।
Was this review helpful to you?
or
আবহমান বাংলার চিরচেনা এক গ্রাম। চিরচেনা গ্রামের মানুষ। চিরচেনা তাদের একান্নবর্তী পরিবারের গল্পটা। একটা উপন্যাস যে সময়কে বেঁধে রাখতে পারে, তা 'হাজার বছর ধরে' না পড়লে বোঝা যায় না। জহির রায়হান তাঁর অসামান্য কারিশমায় তুলে এনেছেন এক একান্নবর্তী পরিবারের আদলে গ্রামবাংলার হাজার বছরের চালচিত্রটা। পরিবারের কর্তা মকবুলের তিন বউয়ের সবচেয়ে ছোট টুনিবিবির সাথে এতিম যুবক মন্টু মিয়ার প্রেমটা সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করে। কিন্তু টুনি চঞ্চল হলেও কোনো এক অদৃশ্য টানে তো সে বাধাই ছিল। তাই তার সাথে মন্টুর মিলনটা আর হয়ে ওঠেনি। একসময় মকবুলের মৃত্যু আর যুবতী আম্বিয়ার সাথে মন্টু মিয়ার বিয়ে, এরপর মন্টু মিয়ার কর্তা হওয়া - সবটুকু এত নিখুঁত হাতে লেখকের আঁকা যে, আপনাকে টেনে নিয়ে যাবে হাজার বছর ধরে চলে আসা চিরাচরিত নিয়মের এক গন্ডীতে। অনুভব করতে পারবেন,চিরায়ত এক নিয়মে বন্দী একান্নবর্তী গ্রামীণ জীবনটাকে। হাজার বছরের পুরনো সে বন্দীশালা। বেরোবার পথ আজও হলো না!
Was this review helpful to you?
or
জহির রায়হানের অমর সৃষ্টি 'হাজার বছর ধরে' উপন্যাসটি। এ উপন্যাসে তিনি আবহমান বাংলার স্বকীয়তা ও ধারাবাহিকতাকে বেঁধেছেন যে শব্দসুতোয়; এক কথায় তা অসামান্য। বাংলা সাহিত্যে এমন কালজয়ী উপন্যাস হাতে গোনা। উপন্যাসের প্রেক্ষাপট গড়ে উঠেছে গ্রামীণ জীবনকে কেন্দ্র করে। যেই গ্রাম যুগের পর যুগ বেঁচে আছে। দীঘির পাড়কে কেন্দ্র করে কয়েক বাড়ি গড়ে উঠেছে আজ বহু বছর ধরে। এই বাড়ির কয়েকটি ঘর, পরিবার ও মানুষদের জীবনের প্রেম-ভালোবাসা, হাসি-কান্না, আন্দ-বেদনার দোল দোলানো জীবনের গল্পই হাজার বছর ধরে উপন্যাসের মূল উপজীব্য। উপন্যাসে একটি দীঘিকে কেন্দ্র করে মন্টু ও টুনির প্রেম। তাদের জীবনে আনন্দ আসে, আসে দুঃখ। আবার কখনও তাদের পারস্পরিক বিভিন্ন সমস্যায় তারা জড়িয়ে পড়ে। হাসি-আনন্দের এক মিশেল হয়ে থাকে তাদের গ্রামীণ জীবন। এ গ্রামীণ জীবনে থাকে গ্রামীণ বিভিন্ন ভুল ধারণা, ভুল বিশ্বাস; যাকে আঁকড়ে ধরে তারা যুগের পর যুগ তাদের জীবন অতিবাহিত করে। বাংলাদেশের চলচ্চিত্র জগতে এবং জীবনস্পর্শী প্রতিবাদী সাহিত্যধারায় জহির রায়হান এক বিশিষ্ট শিল্পী। চলচ্চিত্র প্রতিভা পরবর্তী আশ্রয়স্থল হলেও তার আবির্ভাব ঘটেছিল কথাসাহিত্যে। সাংবাদিক, কথাসাহিত্যিক, রাজনৈতিক কর্মী, চিত্রপরিচালক- নানা পরিচয়ে তার কর্মক্ষেত্রের পরিধি স্পষ্ট। বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন ও একাত্তরের মুক্তিসংগ্রামে অংশগ্রহণ দ্বারা একজন গণমুখী শিল্পীর ভূমিকা কেমন হবে- জীবন দিয়ে তিনি তার উদাহরণ হয়ে আছেন। বাংলা সাহিত্য ভুবনে জহির রায়হানের 'হাজার বছর ধরে' উপন্যাসটি বিশেষ স্থান দখল করে আছে। উপন্যাসে লেখক বাঙালির ঐতিহ্য, যাপন, সংস্কার, দ্বন্দ ও প্রেম তুলে ধরেছেন বিশেষ পারঙ্গমতায়। ঐতিহ্যের উপস্থাপন ও শিল্পশৈলীর গুরুত্বের কারণে 'হাজার বছর ধরে' বাংলা ভাষার বহুল পঠিত ও সমাদৃত উপন্যাস।
Was this review helpful to you?
or
নামের মধ্যেই রয়েছে এক অদ্ভুত ব্যঞ্জনা। এবং সে বিস্তারের ব্যঞ্জনা সমস্ত উপন্যাসের সব জায়গায় বিদ্যমান। মূলত এ উপন্যাস, বাংলাদেশের গ্রামাঞ্চলের আখ্যান। কেবল তা-ই নয়, যে গল্প জহির রায়হান বলেছেন এমন গল্প আমাদের আবহমান গ্রাম বাংলায় ঘটে চলে নিরন্তর। গল্পের মূল চরিত্ররা অনেকটা জ্ঞাতি সম্পর্কে আবদ্ধ। একই উঠান ঘিরে তাদের একেকজনের ঘর। কোন একদিন পত্তন হয়েছিল, তারপর পুরুষানুক্রমে সেখানেই তাদের বসবাস। মকবুল বুড়ো, গনু মোল্লা, আবুল, ফকিরের মা, মন্তু, আম্বিয়া, টুনি চরিত্রগুলোর মধ্য দিয়ে তিনি ফুটিয়ে তুলেছেন গ্রামীণ মানুষের জীবন যাপন। সেই সুত্রে জড়িয়ে থাকে তাদের জীবিকা, প্রেম, কামনা, লোভ, লালসা আর একে ওপরের সঙ্গে জড়িয়ে থাকার ইতিহাস। ধল পহর বা খুব সকালে শাপলা তোলার মনোজ্ঞ বর্ণনা হতে উপন্যাসের সূচনা। ধীরে ধীরে একেকটি চরিত্র পরিচিত হয় পাঠকের কাছে। তিন বিবি সহ বুড়ো মকবুল, একাকী মন্তু, ফকিরের মা এদের দৈনন্দিন জীবনের চিত্র, কথোপকথনের মধ্যে দিয়ে আবহমান গ্রামীণ সমাজই প্রকাশিত। টুনি আর মন্তুর প্রেমের কথাই অনেকে এ উপন্যাসের উপজীব্য মনে করেন কিন্তু আসলে পুঁথি পাঠ, একাধিক বিবির আশা, গ্রামীণ হাট, ইতিকথা ছড়ানো এ উপন্যাস আমাদের বোঝায় কি করে এক চক্রের মতো পুনরাবৃত্তি হয় মানুষের জীবনের। উপন্যাসের শেষে এসে সে সত্যটি লেখক প্রকাশ করেন খুব সহজে।
Was this review helpful to you?
or
আবহমান গ্রাম বাংলার মানুষ কিভাবে জীবন যাপন করে। তাদের দৈনন্দিন জীবন কেমন হয়। জহির রায়হানের এই উপন্যাস পড়লে আপনি তা জানতে পারবেন। শুধু তাই নয়। এর মধ্যে লেখক লিখেছেন ঐতিহ্যের কথা। অনেকদিন ধরে চলে আসা মানুষ যেভাবে দিন কাটায় লেখক এই উপন্যাসে বলেছেন। মন্তু, আম্বিয়া, মকবুল, টুনি চরিত্রগুলো খুব ভালো লাগে। গ্রামের বাড়িতে একসাথে থাকা কয়েকটি পরিবারের মধ্যে ঝগড়া বিবাদ হয় আবার মিটে যায়। তারপর ছোটরা বড় হয়, বড় রা হারিয়ে যায়। কিন্তু জীবন চলতে থাকে জীবনের মতো। তা থেমে থাকে না।
Was this review helpful to you?
or
জহির রায়হানের এক অনবদ্য সৃস্টি হাজার বছর ধরে। লেখক মন্তু মিয়া, অন্যান্য চরিত্রের মাধ্যমে হাজার বছরের বাংলা ও বাংগালীর ইতিহাস ঐতিহ্য আর সামাজিক সংস্কৃতির চিত্র খুব সুন্দর করে ফুটিয়ে তুলেছেন। গ্রাম বাংলার মানুষের জীবনচিত্র এর থেকে সুন্দর করে ফুটিয়ে তোলা বোধহয় আর সম্ভব নয়। লেখক অসাধারণ নৈপুন্যের পরিচয় দিয়েছেন।
Was this review helpful to you?
or
ভালোবাসার একটি উপন্যাস। এই উপন্যাসের মাধ্যমেই আবার নতুন করে বই পড়া শুরু হয় এবং আজ পর্যন্ত তা চলছেই। উপন্যাসটি কয়েকবার পড়া হয়েছে আর যতবার পড়া হয়েছে ততবারই নতুন করে ভালো লাগার সৃষ্টি হয়েছে।
Was this review helpful to you?
or
ভালো
Was this review helpful to you?
or
বইটি অসম্ভব সুন্দর।যারা পড়েননি তারা পড়ে ফেলুন।আমি বইটি সংগ্রহ করেছি।
Was this review helpful to you?
or
#রকমারি_রিভিউ_প্রতিযোগ_মার্চ রিভিউ নংঃ২ উপন্যাসঃহাজার বছর ধরে লেখকঃজহির রায়হান ধরনঃ চিরায়ত প্রকাশনঃঅনুপম মুল্যঃ৭০টাকা লেখক পরিচিতিঃ জহির রায়হান (১৯ আগস্ট ১৯৩৫ - ৩০ জানুয়ারি ১৯৭২) একজন প্রখ্যাত বাংলাদেশী চলচ্চিত্র পরিচালক, ঔপন্যাসিক, এবং গল্পকার। বাংলা সাহিত্যের গল্প শাখায় অবদানের জন্য তিনি ১৯৭২ সালে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার লাভ করেন। চলচ্চিত্রে অবদানের জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে ১৯৭৭ সালে মরণোত্তর বাংলাদেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা একুশে পদক এবং সাহিত্যে অবদানের জন্য ১৯৯২ সালে মরণোত্তর বাংলাদেশের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা স্বাধীনতা পুরস্কারে ভূষিত করে। চলচ্চিত্রে তার সামগ্রিক অবদানের জন্য ১৯৭৫ সালে ১ম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে তাকে মরণোত্তর বিশেষ পুরস্কার প্রদান করা হয়। কাহিনী সংক্ষেপেঃ হাজার বছর ধরে" উপন্যাসে তিনি তুলে ধরেছেন যুগ-যুগান্তরের বিবর্তনহীন গ্রামীণ জীবনের ছায়াচিত্র।ক্ষুদ্র একটি গ্রামের একান্নবর্তী পরিবারের সংঘাতময় জীবনের কাহিনী তিনি বর্ণনা করেছেন এতে। পরিবারটির কর্তা বুড়ো মকবুল।তার এই পরিবার এবাড়িতে ৮ঘর লোকের বাস;সবাই নিম্নবিত্ত শ্রেণীর।জীবীকার তাগিদে নারী-পুরুষ সবাইকে কঠোর পরিশ্রম করতে হয়।হাজার বছর ধরে চলে আসছে গ্রাম বাংলার মানুষের এ জীবনযুদ্ধ।এযুদ্ধে কখনও তারা জয়ী হয়;আবার কখনও হয় পরাজিত। জীবিকার তাগিদে বাড়ির পুরুষদের কাজ করতে হয় ঘরে বাইরে , দিন রাত যেন অক্লান্ত পরিশ্রম । বাড়ির নারী সদস্যরাও বাদ যায়না । তারা চাটাই বোনা,অন্যের ধান ভাঙা,শাপলা তোলা এরকম আরো অনেক কাজ করে যতটা পারা যায় তারা পরিবারের আয় উন্নতিতে সাহায্য করে । তবুও তাদের লড়তে হয় কঠিনতম জীবন সংগ্রামে । এরপরেও আছে নানারকম কুসংস্কার,নানাবিধ ধর্মীয় গোঁড়ামী আর বিধি নিষেধের বেঁড়া জাল । তবুও সবকিছু ছাপিয়ে উজ্জ্বল হয়ে উঠেছে তাদের কঠিন সেই জীবন সংগ্রামের গল্প । কাল ভোর সকালে পরির দীঘীর পাড়ে শুকনো ডাল পাতা কুড়োতে গিয়েছিলো মেয়েটা। দুপুর গড়িয়ে বিকেল হল মেয়ে আর ফিরে না। ওদিকে মেয়ের মা তো ভেবে আকুল। বয়স্কা মেয়ে কে জানে আবার কোনো বিপদে পড়লো। প্রথমে ওকে দেখলো কাজি বাড়ির থুরথুরে বুড়িটা। লম্বা তেঁতুল গাছের মগডালে উঠে দুপা দুদিকে ছড়িয়ে দিয়ে টেনে টেনে দিব্যি গান গাইছে মেয়েটা। বুড়ি তো অবাক, বলি লজ্জা শরমের কি মাথা খাইছ? দিন দুপুরে গাছে নাহি উইঠা গীত গাইবার লাগছ। ও মাইয়্যা, বলি লজ্জা শরম কি উইঠা গেছে দুনিয়ার ওপর থ্যাইকা? ধীরে ধীরে রাত বাড়তে লাগলো। চাঁদ হেলে পড়লো পশ্চিমে। উঠোনের ছায়া দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হলো। পরীর দীঘির পারে একটা রাতজাগা পাখির পাখা ঝাপটানোর আওয়াজ শোনা গেলো। রাত বাড়ছে। হাজার বছরের পুরনো সেই রাত। পাঠ্য প্রতিক্রিয়াঃ উপন্যাসটি আমি ঠিক কতবার পড়েছি তার সঠিক কোনো হিসাব নেই। ক্লাস নাইন থেকে শুরু করে এস.এস.সি পরীক্ষা দেবার আগ পর্যন্ত কম করে হলেও ১৫ বার তো পড়েছিই। নৈর্বত্তিক এর জন্য তো দাগ দিয়েছিলাম প্রায় প্রতিটি শব্দের নিচে। উপন্যাস তো উপন্যাস, পাঠ্য বইয়ে লেখা বিশ্লেষণটাও প্রায় সমান সংখ্যক বার পড়েছি। খালি পড়তে বাদ ছিল এর মাধুর্য, ধরতে বাদ ছিল এর মমত্ববোধ। আগাগোড়া নিজের মমতার আচল দিয়ে উপন্যাসটিকে বেঁধে রাখা টুনি কই হারিয়ে গিয়েছিল কারণ আমার তো প্রমাণ করতে হবে কেন্দ্রীয় চরিত্র বুড়ো মকবুল, নায়িকা আম্বিয়া আর নায়ক মন্তু।
Was this review helpful to you?
or
#রকমারি_রিভিউ_প্রতিযোগিতা_নভেম্বর_২০১৮ উপন্যাসঃহাজার বছর ধরে লেখকঃজহির রায়হান ধরনঃ চিরায়ত প্রকাশনঃঅনুপম মুল্যঃ৭০টাকা বইটির শেষ উক্তি, “রাত বাড়ছে। হাজার বছরের পুরনো সেই রাত”। প্রজন্মের পর প্রজন্ম বেঁচে থাকার নিয়ম পালন করে গেছে অভিন্ন রীতিতে হাজার বছর ধরে। আর সেই হাজার বছরের অকৃত্রিম বেঁচে থাকার ইতিহাসের দলিল হলো জহির রায়হানের হাজার বছর ধরে উপন্যাসটি। আপাতদৃষ্টিতে এই কাহিনীর প্রেক্ষাপট বড্ড সাদামাটা। একটি দীঘিকে কেন্দ্র করে কয়েকটি গ্রামের পত্তন। নাম পরির দীঘি। সেই দীঘিকে ঘিরে কিছু রূপকথার গল্প। দীঘির পাড়ে একটি গ্রামের বাড়ির ছোট ছোট খুপরি ঘরে অনেকগুলো পরিবারের খেঁটে খাওয়া মানুষের বাস। সেই বাড়ির নাম শিকদার বাড়ি যেখানে কেউ নিজের স্ত্রীদের দিয়ে কায়িক শ্রম দিয়ে উপার্জন করে, কেউ অন্যের জমিতে চাষ করে, আবার কেউবা এত পরিশ্রমের মাঝেও পুঁথি পাঠ করে অন্যদের বেঁচে থাকার রসদ জোগায়। অন্যদিকে তাঁদের পরিশ্রান্ত জীবনাচরণ যার অনেকটাই কুসংস্কার প্রভাবিত। এই উপন্যাসের নায়ক মন্তু। শিকদার বাড়ির একমাত্র অকৃতদার পুরুষ। বাড়ীর প্রধান অভিভাবক মকবুল বুড়োর কনিষ্ঠা স্ত্রী টুনি বয়সের কারণেই সম্ভবত মন্তুর মাঝে নিজের বন্ধু খুঁজে নিয়েছিলো। সেই নিদ্রাহীন মাছ ধরার রাত গুলো। বাপের বাড়ি থেকে ফিরে আসার নৌকাযাত্রায় মন্তু টুনিকে এতটা কাছে পেয়েও নিজের সীমা লঙ্ঘনের চিন্তা মনে ঠাই দেয়নি। পরপর দুই স্ত্রীকে হত্যা করার পর আবুলের তৃতীয় স্ত্রী হালিমা যখন মৃত্যুর মুখে ঢলে পরে আমার খারাপ লাগেনি। কারণ হালিমারা অতীত হয়নি, তারা আজও বর্তমানকে দখল করে রেখেছে। হাজার বছর ধরে পশুরা পশুই রয়ে গেছে। তাই আজও প্রতিদিন কোন না কোন হালিমা কোন না কোন আবুলের হাতে মৃত্যুর কোলে ঢলে পরে নিঃশব্দে। বুড়ো মকবুলের মৃত্যুর পর যখন মন্তু টুনিকে যখন শান্তির হাঁটে নিয়ে বিয়ে করতে চাইলো। তখন টুনি অতিচাপা স্বরে ফিসফিস করে বলেছিল, “না তা আর হয়না মিয়া,তা আর হয়না”। তাহলে শেষ পর্যন্ত গল্পটি ইতি টানে কোথায়?? কি হয় মন্তুর?? ছটফটে টুনি কি করে শেষ পর্যন্ত?? কোথায় গিয়ে ঠাই হয় তার?? জানতে হলে পড়ে ফেলুন "হাজার বছর ধরে উপন্যাসটি।। :) :) বইটা যে কতোবার পড়েছি হিসেব নেই,,, সব মিলিয়ে ভালো লাগতো অনেক।। :) :)
Was this review helpful to you?
or
#রকমারি_পাঠক_সমাগম_বুক_রিভিউ_প্রতিযোগিতা মাস : জুলাই সপ্তাহ : তৃতীয় পর্ব : ১ বইয়ের নাম : হাজার বছর ধরে লেখক : জহির রায়হান প্রকাশনী : অনুপম প্রকাশনী পৃষ্ঠা সংখ্যা : ৬৪ মূল্য : ৭০ টাকা #রিভিউ আবহমান গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও সাধারণ মানুষের জীবন কাহিনী নিয়েই লেখা উপন্যাস "হাজার বছর ধরে"। পরীর দীঘির পাড়ে গড়ে উঠা একটি গ্রামকে ঘিরে কাহিনীর সূত্রপাত হয়। লোক মুখে প্রচলিত আছে পরীরা এই দীঘি তৈরি করেছে বলে এই দীঘির নাম পরীর দীঘি। তবে এই গ্রামের গোড়াপত্তন কখন হয়েছিল তা কেউ বলতে পারে না। কাশেম শিকদার আর তার স্ত্রী ছমিরন বিবিকে এই গ্রামের প্রথম বাসিন্দা হিসেবে বলা হয়। কোনো এক বানের জলে ভাসতে ভাসতে তারা এই গ্রামে আশ্রয় নেয় এবং এখানেই বসবাস শুরু করে। নিঃসন্তান থাকায় ছমিরন বিবি স্বামীকে দ্বিতীয় বিয়ে দেন এবং নিজে পরীর দীঘির পাড়ে গিয়ে গুণে গুণে চারটি ধুতরা ফুল খেয়ে চিরদিনের জন্য ঘুমিয়ে পড়েন। এসব অনেকদিন আগের কথা। কালের বিবর্তনে এখন শিকদার বাড়ির প্রধান হলো বুড়ো মকবুল। শিকদার বাড়িতে মকবুল এবং তার তিন স্ত্রী সহ আট পরিবার বাস করে। এই বাড়ির আরেক সদস্য আবুল যার প্রধান কাজ বউ মারা। এমনকি দুই বউকে মেরেই ফেলেছে। বাড়ির দক্ষিণ দিকের সবচেয়ে ছোট্ট ঘরে থাকে গল্পের নায়ক অনাথ মন্তু। বৃদ্ধ মকবুলের ছোট বউয়ের নাম টুনি। অল্প বয়সী টুনি মকবুলের শাসন মানতে চায় না। টুনি সঙ্গী হিসেবে চায় মন্তুকে। রাতের বেলায় সবার অগোচরে মন্তু আর টুনি যায় মাছ ধরতে, বর্ষায় যায় শাপলা তুলতে। অজান্তেই টুনি ভালবেসে ফেলে মন্তুকে। অব্যক্ত ভালবাসার জোয়ারে দিনের পর দিন দুজনই ভাসতে থাকে। এই সময় একদিন বাড়ির আরেক সদস্য হীরনের বিয়ে ঠিক হয়। বিয়ে উপলক্ষ্যে আসে-পাশের দশ বাড়ির সবাই আনন্দ করতে থাকে। এই আনন্দের মাঝে কোনো একদিন ঐ গ্রামের মেয়ে আম্বিয়া আর মন্তুকে নিয়ে সবাই ঠাট্টা করলে টুনির সেটা সহ্য হয় না। আবার এটা সে প্রকাশ্যে বলতেও পারে না। মন্তু আর আম্বিয়ার বিয়ের কথা শুনে মনে চাপা কষ্ট নিয়েও টুনি খিল খিল করে হেসে উঠে। এই অবস্থাতে কী করবে টুনি? বুড়ো মকবুলকে ছেড়ে মন্তুর সাথে ঘর বাঁধবে নাকি আম্বিয়া আর মন্তুর বিয়ে মেনে নেবে? মকবুলের শেষ পরিণতিই বা কী হবে? একদিকে টুনি অন্যদিকে আম্বিয়া। মন্তু কাকে বিয়ে করবে? কাহিনী কী অন্যদিকে বাঁক নেবে? অনেকগুলো প্রশ্নের উত্তর পেতে আর কাহিনীর শেষাংশে জীবনের করুণ পরিণতি জানতে হলে অবশ্যই পড়তে হবে জহির রায়হানের কালজয়ী উপন্যাস "হাজার বছর ধরে"। #পাঠ_প্রতিক্রিয়া কিছু উপন্যাস আছে যা কখনো পুরানো হবার নয়। "হাজার বছর ধরে" এমনই একটি উপন্যাস যা বার বার পড়ার পরও মনে হবে আর একবার পড়ি। প্রতিবার যেন নতুনের স্বাদ পাই। গ্রামের সাদামাটা সাধারণ জীবনগুলোকে যে অসাধারণ ভাবে ফুটিয়ে তোলা যায় সেটা জহির রায়হানের এই উপন্যাস পড়ে বুঝেছি। অতি নিম্নবিত্ত জীবন থেকে শুরু করে বহুবিবাহ, পুরুষ কর্তৃক নারী নির্যাতন, বাল্যবিবাহ, পরকীয়া, কুসংস্কারসহ গ্রামীণ জীবনের প্রায় সবগুলো দিক উপন্যাসে আছে। উপন্যাসের প্রতিটা লাইন যেন আবহমানকাল ধরে চলে আসা বাঙালি জীবনের সুনিপুণ আখ্যান। প্রতিটা শব্দ যেন গ্রামীণ জীবনের কঠিন বাস্তবতার সাক্ষী। সাবলীল, সহজ ও স্বাভাবিক সংলাপগুলো উপন্যাসটির সৌন্দর্য বৃদ্ধির সাথে সাথে সহজেই বোধগম্য করে তুলেছে। কাহিনীর প্রধান একটি চরিত্র টুনির জন্য মনটা খুব খারাপ লাগে। টুনির মত বর্তমানে হাজারো নারী আছে যারা তাদের চাওয়া-পাওয়া থেকে বঞ্চিত। সব মিলিয়ে টুনি, মন্তু, আম্বিয়া, বুড়ো মকবুল, আবুল, ফকিরের মা, রশীদ, সুরত আলীসহ কাহিনীর স্বার্থে তুলে আনা প্রতিটা চরিত্র এক একটা জীবন্ত প্রতীক। এদের সংগ্রামী জীবনের উত্থান-পতন, জয়-পরাজয় উপন্যাসের স্বাদ বাড়িয়ে দিয়েছে বহুগুণ। চিত্র, পটভূমি, লেখকের বর্ণনাভঙ্গি এবং পরিপূর্ণ সমাপ্তি সব মিলিয়ে কালজয়ী এ উপন্যাসটি পড়া শেষ হয়ে গেলেও এর রেশটুকু রেখে দেয় প্রবল এক ঘোর লাগায়। উপন্যাসটি যেন বাঙালির হাজার বছরের চলমান এক জীবন কাহিনী। #সেরা_বাক্য : রাত বাড়ছে। হাজার বছরের পুরানো সেই রাত। মারিয়া সুলতানা রজনী
Was this review helpful to you?
or
সেরা একটা বই, ভালোবাসার আরেক নাম জহির রায়হান।
Was this review helpful to you?
or
#রকমারি_বইপোকা_রিভিউ_প্রতিযোগিতা আমি সত্যিই দ্বিধান্বিত এই বইটি সম্পর্কে কিছু লিখতে। কিছু উপলদ্ধি থাকে যেগুলো শব্দের আশ্রয়ে প্রকাশ করা যায় না, অনুভূতির আশ্রয়ে প্রকাশ করতে হয়। তবুও আমি সেই অনুভূতি থেকে কিছু অভিব্যক্তি লেখার চেষ্টা করবো। বইটির শেষ উক্তিদ্বয় ছিল, “রাত বাড়ছে। হাজার বছরের পুরনো সেই রাত”। উক্তিটি পড়তে যেয়ে আমার তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিখ্যাত উপন্যাস গনদেবতার একটি কোটেশন মনে পরে গিয়েছিলো। সেখানে লেখক ভারতের গ্রামীণ জীবন সম্পর্কে Sir Charles Matcalfe এর উক্তিটি তুলে ধরেছিলেন। “They seem to last where nothing else last. Dyanasty after dynasty tumbless down. Revolution succeeds revolutions! Hindu, Pathan, Moghul, Maratha, Sikh, English are masters in turn, but the village community remains the same.’ হ্যা উপমহাদেশের সেই ভিলেজ কমিউনিটি একই রয়ে গেছে হাজার বছর ধরে। প্রজন্মের পর প্রজন্ম বেঁচে থাকার নিয়ম পালন করে গেছে অভিন্ন রীতিতে হাজার বছর ধরে। আর সেই হাজার বছরের অকৃত্রিম বেঁচে থাকার ইতিহাসের দলিল হলো জহির রায়হানের হাজার বছর ধরে উপন্যাসটি। উপন্যাসের নামঃ হাজার বছর ধরে লেখকঃ জহির রায়হান প্রকাশনীঃ অনুপম প্রকাশকালঃ অক্টোবর, ২০১২ পৃষ্ঠাসংখ্যাঃ ৬৪ জনরাঃ সামাজিক পুরস্কারঃ আদমজী সাহিত্য পুরস্কার (১৯৬৪) চলচিত্রঃ হাজার বছর ধরে/Symphony of Agony (২০০৫) আপাতদৃষ্টিতে এই কাহিনীর প্রেক্ষাপট বড্ড সাদামাটা। একটি দীঘিকে কেন্দ্র করে কয়েকটি গ্রামের পত্তন। নাম পরির দীঘি। সেই দীঘিকে ঘিরে কিছু রূপকথার গল্প। দীঘির পাড়ে একটি গ্রামের বাড়ির ছোট ছোট খুপরি ঘরে আটটি পরিবারের খেঁটে খাওয়া মানুষের বাস। সেই বাড়ির নাম শিকদার বাড়ি যেখানে কেউ নিজের স্ত্রীদের দিয়ে কায়িক শ্রম দিয়ে উপার্জন করে, কেউ অন্যের জমিতে চাষ করে, আবার কেউবা এত পরিশ্রমের মাঝেও পুঁথি পাঠ করে অন্যদের বেঁচে থাকার রসদ জোগায়। অন্যদিকে তাঁদের পরিশ্রান্ত জীবনাচরণ যার অনেকটাই কুসংস্কার প্রভাবিত। কিন্তু এই প্রত্যন্ত অঞ্চলের জীবনবোধের গল্প একটুও সাদামাটা নয় বরং প্রজন্ম পর প্রজন্মকে তাঁদের এই জীবনবোধ নিয়ে গভীর ভাবে চিন্তা করতে বাধ্য করেছে। আমি কাহিনীতে বিস্তারিত যাবো না। শুধু উপন্যাসে যেসব চরিত্র আমাকে প্রভাবিত করেছে তাঁদের সম্পর্কে কিছু বলার চেষ্টা করবো। এই উপন্যাসের নায়ক মন্তু। শিকদার বাড়ির একমাত্র অকৃতদার পুরুষ। বাড়ীর প্রধান অভিভাবক মকবুল বুড়োর কনিষ্ঠা স্ত্রী টুনি বয়সের কারণেই সম্ভবত মন্তুর মাঝে নিজের বন্ধু খুঁজে নিয়েছিলো। সেই নিদ্রাহীন মাছ ধরার রাত গুলো। বাপের বাড়ি থেকে ফিরে আসার নৌকাযাত্রায় মন্তু টুনিকে এতটা কাছে পেয়েও নিজের সীমা লঙ্ঘনের চিন্তা মনে ঠাই দেয়নি। একজন অশিক্ষিত গ্রামের খেঁটে খাওয়া যুবকের সহিষ্ণুতার মাঝে আমরা দেখতে পাই এদেশের লক্ষ মন্তুকে যাদের কাঁধে রেখে আজ নিঃশ্বাস ফেলে অর্জিত নব্য সভ্যতা। কিন্তু আজ তথাকথিত শিক্ষিত পুরুষেরা যখন নারীদের অসম্মান করে তখন ঐ হাজার বছরের পুরাতন মন্তুর কাছে তারা যে কিভাবে হেরে যায় তারা হয়তো সে খবর রাখেনা। পরপর দুই স্ত্রীকে হত্যা করার পর আবুলের তৃতীয় স্ত্রী হালিমা যখন মৃত্যুর মুখে ঢলে পরে আমার খারাপ লাগেনি। কারণ হালিমার অতীত হয়নি তারা আজও বর্তমানকে দখল করে রেখেছে। হাজার বছর ধরে পশুরা পশুই রয়ে গেছে। তাই আজও প্রতিদিন কোন না কোন হালিমা কোন না কোন আবুলের হাতে মৃত্যুর কোলে ঢলে পরে নিঃশব্দে। বুড়ো মকবুলের মৃত্যুর পর যখন মন্তু টুনিকে যখন শান্তির হাঁটে নিয়ে বিয়ে করতে চাইলো। তখন টুনি অতিচাপা স্বরে ফিসফিস করে বলেছিল, “না তা আর হয়না মিয়া। তা আর হয়না”। কেন টুনি তার আরাধ্য প্রেমকে প্রত্যাখান করেছিল যার জন্য সে প্রতিবেশী রশীদের স্ত্রী সালেহাকে নির্মমভাবে প্রহার করতেও দ্বিধা করেনি। হয়তো স্বামী বুড়ো মকবুলের মৃত্যু জন্য নিজের দায়বদ্ধতা এড়াতে পারেনি। তার বিবেক তাঁকে এক মূহুর্তে জন্য ভুলতে দেয়নি, সে আম্বিয়াকে বিয়ে করার মন্ত্রনা দিয়ে মকবুল বুড়োকে দিয়েছে সেখান থেকে উৎপন্ন বচসায় আবুলের আঘাতেই মকবুল বুড়োর মৃত্যু হয়। বিবেকের দংশনের একজন স্বল্প বয়সী তরুণী তার সমগ্র জীবন নিঃসঙ্গতার অন্ধকারে ডুবিয়ে দেয়। এমন প্রায়শ্চিত্তের যে জীবন দর্শন যে নারীরা বুকে ধারন করে গ্রাম, শহর, অতীত, বর্তমান দিয়ে তাঁদের কি আসলেই বিচার করা যায়? ব্যক্তিগত অভিমতঃ শীত যায়, আসে বসন্ত। আসে নতুন যুগ। হাজার বছরের পরম্পরায় ভাঁটা দিয়ে এসেছে একাবিংশ শতাব্দী। অন্ধকার রাত্রি পেরিয়ে এই শতাব্দীর নিজেকে আলোর স্বত্বাধিকারী দাবী করে। কিন্তু আলো মানে কি শুধু যন্ত্রের উৎকর্ষতা। মানে কি শুধু ভালো খাওয়া, ভালো পরা। নতুন শতাব্দীর আলো যদি তরুণের মাঝে মন্তুর মত সহিষ্ণুতা, সম্মানবোধ জাগ্রত করতে না পারে, টুনির মত জীবনকে বিবেকের দৃষ্টিতে না দেখতে না পারে, সুরত আলীর পুঁথি পাঠের মত স্বস্তি না দিতে না পারে সেই আলো ব্যর্থ। সুখের সন্ধানের মানুষ আজ স্বস্তির অর্থ ভুলে গেছে। আজও মন্তুর ঐ ছাউনি দেয়া ছোট্ট নৌকাটায় টুনিকে নিয়ে কখনো স্রোতের অনুকূল আবার কখনো প্রতিকূলে ভেসে বেড়ানো, মাঝপথে মুঠো মুঠো শুকনো চিড়ে নিঃশেষ করার মাঝেই সুখ লুকিয়ে বাঁকা হাসে। আর সবাই তাঁকে দাম দিয়ে কেনা মানুষের ভিড়ে খুঁজে মরে।
Was this review helpful to you?
or
#রকমারি_বইপোকা_রিভিউ_প্রতিযোগিতা বইয়ের নাম-হাজার বছর ধরে জনরা-উপন্যাস ঔপন্যাসিক-জহির রায়হান পৃষ্ঠা-৬৪ মূল্য-৭০ শহীদ কথাশিল্পী জহির রায়হান মধ্যবিত্ত সমাজের সুখ দুঃখ, আশা-আকাঙ্ক্ষাকে রূপ দিতে চেষ্টা করেছেন তার কথাসাহিত্যে। চারপাশের মানুষের সুখ দুঃখ ও আনন্দ বেদনার রূপকার সামাজিক জীবনের বৈষম্য এবং অসংঙ্গতির বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন। এসব বৈষম্য ও সামাজিক জীবনের অন্যান্য দিক তিনি তুলে ধরেন তাঁর "হাজার বছর ধরে" উপন্যাসে। সমাজ এবং পরিবেশের আর্ত-সামাজিক অপরিবর্তনের কারনে বৃহত্তর গ্রামীণ জীবনকে জীর্ণ অবস্থা থেকে আজো মুক্তি দেয়নি। ঔপন্যাসিক অন্তরঙ্গ ভাবে এই সত্যের স্বরূপ উম্মেচন করেছেন এই উপন্যাসে। সমাজ ব্যবস্থার যে অসঙ্গতি তা তিনি তুলে এনেছেন উপন্যাসের কতিপয় চরিত্রের মাধ্যমে। সুরত আলী এবং তার ছেলের ভিন্ন পরিস্থিতিতে পুঁথি পাঠের মধ্যে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মের একটা সঙ্গতি বিদ্যমান এবং তার এই সুর করে কমলাসুন্দরী, ভেলুয়া সুন্দরী বা গাজী কালুর পুঁথি পাঠের মতোই বহমান গ্রামবাংলার জীবন। বড় কোন পরিবর্তন থাকেনা। ঔপন্যাসিক এর মাঝেই জীবনের সৌন্দর্য খুঁজে ফেরেন। যেখানে বুড়ো মকবুল, সুরত আলী, ছমির শেখ, গনু মোল্লা, রশীদ, আব্দুল, মন্তু, টুনি, আম্বিয়া, হালিমা, হীরণ, সালেহা, আমেনা, ফাতেমা চরিত্র গুলোর পুর্ণবৃত্ত জীবনের একেকটা রূপ । এদের জীবন খুব সাধারণ। তাদের জীবনের নিত্য সঙ্গী দারিদ্র্য, ঈর্ষা, কলহ, অবুঝ ভালবাসা। জহির রায়হান এই জীবনের চিরন্তনতার বিশ্বস্ত ছবি এঁকেছেন উপন্যাসে। ব্যক্তিগত মতামতঃ উপন্যাস জুড়ে সমাজের ভেতরের অসঙ্গতি, শ্রমনির্ভর শোষণমূলক সমাজে নারীর বিপন্ন অস্তিত্ব , মানবতার চরম অবনতি এবং রোমান্টিক আবেগে সিক্ত চিত্র চিত্রায়িত করতে ঔপন্যাসিক সফল বলা যায়। বুড়ো মকবুলের বউ দের দিয়ে হালের বলদের খাটানো, টুনির মতো ফুটফুটে মেয়ে যখন বুড়োর বউ হয়ে আসে তখন বুঝতে পারা যায় আপত গ্রামীণ জীবনে নারীদের অবস্থান।বউ পিঠানো, কথায় কথায় বউ তালাক দেওয়া নারীদের অবমূল্যায়ন চোখে পড়ে। বিমূঢ় হয়ে যাই তখন। উপন্যাসে গ্রামীন কুসংস্কারের উপস্থিতি পাওয়া যায়। গ্রামের গোড়া পত্তনে পূর্বপুরুষের কথা জানা যায়। বিভিন্ন কল্পকাহিনীও শোনা যায়। সব গুলো চরিত্র ছাপিয়ে পাঠক কে মুগ্ধ করে টুনির চাঞ্চলতা। একজন সুন্দর, সরল পল্লীবধূর বাস্তবোচিত প্রতিরূপ হলো টুনি। ঔপন্যাস বিচারে জহির রায়হানের "হাজার বছর ধরে" শোষণ মূলক পিছিয়ে পড়া গ্রাম বাংলার চিত্রপট। প্রতিটি চরিত্রই ভীষণ ভাবে আকর্ষণ করে। উপন্যাসের শুরু থেকে ঝিমিয়ে পড়া সমাপ্তের মাধ্যমে আমরা আমাদের গ্রামীণ সমাজকেই অনুভব করি। গ্রাম বাংলার জনজীবন নিয়ে রচিত অন্যতম শ্রেষ্ঠ উপন্যাস। যা অনেক বার পড়েও পৃষ্ঠা গুলো পুরোনো করা যায় না। জহির রায়হানের অন্যতম শ্রেষ্ঠ কৃর্তী এই "হাজার বছর ধরে" উপন্যাস। https://www.rokomari.com/book/7655/হাজার-বছর-ধরে
Was this review helpful to you?
or
অনলাইনে কয়েকপাতা পড়েছিলাম,ভালো লেগেছিলো।তাই অর্ডার করে ফেললাম।এখন পড়ে দেখবো,আশা করি ভালোই লাগবে।
Was this review helpful to you?
or
'হাজার বছর ধরে' লেখক- জহির রায়হান। এই উপন্যাসের কেন্দ্রীয় নারী চরিত্র টুনি,অবশ্য অনেকে আম্বিয়াকেও কেন্দ্রীয় চরিত্র বলে আখ্যায়িত করে থাকেন। তবে আম্বিয়ার চেয়ে টুনির জীবনের উত্থান পতনকেই লেখক বেশী গুরুত্ব দিয়েছেন। টুনি গ্রামের সহজ, সরল, চঞ্চল এক মেয়ে। টুনির পরিণতি হয়েছে হৃদয় চিরে যাওয়ার মতো কষ্টকর। শেষ পর্যন্ত শূন্য বুকে বাপের বাড়ি ফিরে টুনি,তবুও শৃংখল ভাঙ্গেনি। নিজের পছন্দের উপর ভিত্তি করেই বই পড়া উচিত। অন্যের পছন্দ বা ভাললাগার মূল্য না দিয়ে নিজের পছন্দ অনুসারে বই বাছাই করুন। অনেকের কাছে ভাল লেগেছে, এমন বই আপনার পছন্দ নাও হতে পারে। এছাড়া কোন বই অনেকেই পড়েছে বলে আপনাকেও পড়তে হবে এমন কোন কথা নেই। অন্যের পছন্দের বই আপনাকেও পড়তে হবে, এমন মনে করাটা বোকামী। প্রত্যেকের নিজস্ব একটি ভাললাগার জগৎ থাকে। কারো ভূতের গল্প পছন্দ, কারো ফুটবল আবার কারো বা ভ্রমণকাহিনী। কারো পছন্দ বা প্ররোচনায় বই বাছাই না করে নিজের দিকে তাকান। নিজে যা চান তাই করুন, অন্যের চাপে নয়। নিজের যে বইটি পড়তে ভাল লেগেছে, অন্যকেও সেই বই পড়তে উৎসাহ দিন। পছন্দের বই নিয়ে অন্যদের সাথে আলোচনা করুন। ভাই-বোনকে নিজের পছন্দের বই পড়তে উৎসাহ দিন। তাদেরকে তাড়াতাড়ি বইটি শেষ করতে তাগাদা দিন, যাতে আপনি তাদের সাথে কথা বলতে পারেন। বই পড়ার আনন্দ ভাগাভাগি করা বই পড়ার চেয়ে আরো বেশি আনন্দদায়ক।
Was this review helpful to you?
or
আপাতদৃষ্টিতে এই কাহিনীর প্রেক্ষাপট বড্ড সাদামাটা। একটি দীঘিকে কেন্দ্র করে কয়েকটি গ্রামের পত্তন। নাম পরির দীঘি। সেই দীঘিকে ঘিরে কিছু রূপকথার গল্প। দীঘির পাড়ে একটি গ্রামের বাড়ির ছোট ছোট খুপরি ঘরে আটটি পরিবারের খেঁটে খাওয়া মানুষের বাস। সেই বাড়ির নাম শিকদার বাড়ি যেখানে কেউ নিজের স্ত্রীদের দিয়ে কায়িক শ্রম দিয়ে উপার্জন করে, কেউ অন্যের জমিতে চাষ করে, আবার কেউবা এত পরিশ্রমের মাঝেও পুঁথি পাঠ করে অন্যদের বেঁচে থাকার রসদ জোগায়। অন্যদিকে তাঁদের পরিশ্রান্ত জীবনাচরণ যার অনেকটাই কুসংস্কার প্রভাবিত। কিন্তু এই প্রত্যন্ত অঞ্চলের জীবনবোধের গল্প একটুও সাদামাটা নয় বরং প্রজন্ম পর প্রজন্মকে তাঁদের এই জীবনবোধ নিয়ে গভীর ভাবে চিন্তা করতে বাধ্য করেছে। আমি কাহিনীতে বিস্তারিত যাবো না। শুধু উপন্যাসে যেসব চরিত্র আমাকে প্রভাবিত করেছে তাঁদের সম্পর্কে কিছু বলার চেষ্টা করবো। এই উপন্যাসের নায়ক মন্তু। শিকদার বাড়ির একমাত্র অকৃতদার পুরুষ। বাড়ীর প্রধান অভিভাবক মকবুল বুড়োর কনিষ্ঠা স্ত্রী টুনি বয়সের কারণেই সম্ভবত মন্তুর মাঝে নিজের বন্ধু খুঁজে নিয়েছিলো। সেই নিদ্রাহীন মাছ ধরার রাত গুলো। বাপের বাড়ি থেকে ফিরে আসার নৌকাযাত্রায় মন্তু টুনিকে এতটা কাছে পেয়েও নিজের সীমা লঙ্ঘনের চিন্তা মনে ঠাই দেয়নি। একজন অশিক্ষিত গ্রামের খেঁটে খাওয়া যুবকের সহিষ্ণুতার মাঝে আমরা দেখতে পাই এদেশের লক্ষ মন্তুকে যাদের কাঁধে রেখে আজ নিঃশ্বাস ফেলে অর্জিত নব্য সভ্যতা। কিন্তু আজ তথাকথিত শিক্ষিত পুরুষেরা যখন নারীদের অসম্মান করে তখন ঐ হাজার বছরের পুরাতন মন্তুর কাছে তারা যে কিভাবে হেরে যায় তারা হয়তো সে খবর রাখেনা। পরপর দুই স্ত্রীকে হত্যা করার পর আবুলের তৃতীয় স্ত্রী হালিমা যখন মৃত্যুর মুখে ঢলে পরে আমার খারাপ লাগেনি। কারণ হালিমার অতীত হয়নি তারা আজও বর্তমানকে দখল করে রেখেছে। হাজার বছর ধরে পশুরা পশুই রয়ে গেছে। তাই আজও প্রতিদিন কোন না কোন হালিমা কোন না কোন আবুলের হাতে মৃত্যুর কোলে ঢলে পরে নিঃশব্দে। বুড়ো মকবুলের মৃত্যুর পর যখন মন্তু টুনিকে যখন শান্তির হাঁটে নিয়ে বিয়ে করতে চাইলো। তখন টুনি অতিচাপা স্বরে ফিসফিস করে বলেছিল, “না তা আর হয়না মিয়া। তা আর হয়না”। কেন টুনি তার আরাধ্য প্রেমকে প্রত্যাখান করেছিল যার জন্য সে প্রতিবেশী রশীদের স্ত্রী সালেহাকে নির্মমভাবে প্রহার করতেও দ্বিধা করেনি। হয়তো স্বামী বুড়ো মকবুলের মৃত্যু জন্য নিজের দায়বদ্ধতা এড়াতে পারেনি। তার বিবেক তাঁকে এক মূহুর্তে জন্য ভুলতে দেয়নি, সে আম্বিয়াকে বিয়ে করার মন্ত্রনা দিয়ে মকবুল বুড়োকে দিয়েছে সেখান থেকে উৎপন্ন বচসায় আবুলের আঘাতেই মকবুল বুড়োর মৃত্যু হয়। বিবেকের দংশনের একজন স্বল্প বয়সী তরুণী তার সমগ্র জীবন নিঃসঙ্গতার অন্ধকারে ডুবিয়ে দেয়। এমন প্রায়শ্চিত্তের যে জীবন দর্শন যে নারীরা বুকে ধারন করে গ্রাম, শহর, অতীত, বর্তমান দিয়ে তাঁদের কি আসলেই বিচার করা যায়?
Was this review helpful to you?
or
এই উপন্যাসে জহির রায়হান হাজার বছর ধরে বাংলার গ্রামীন ইতিহাস তুলে ধরেছেন।আমার কাছেবইটি খুবই ভালো লাগছে।এই বইয়ে মন্তু ও টুনির ভালোবাসা দেখা যায়।উপন্যাসের প্রত্যেকটি চরিত্র জহির রায়হান সুন্দর করে তুলে ধরেছেন।আর রকমারির সার্ভিসের তো কোনো তুলনা নেই।তাদের ডেলিভারি ম্যান খুবই ভদ্র ও আন্তরিক।
Was this review helpful to you?
or
গ্রামীণ বাংলার চিরন্তন রূপ, বৈশিষ্ট্য, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি নিয়ে লেখা "হাজার বছর ধরে" উপন্যাসের মূল কাহিনী। এই গ্রামের পত্তন কবে কেউ জানে না। পরীর দিঘির পাড়ে গড়ে উঠা এক গ্রাম। এই পরীর দিঘিও কে বা কারা তৈরী করেছে তাও কেউ জানে না। লোকমুখে প্রচলিত এই দিঘি পরীরা তৈরি করেছে। কাশেম শিকদার এই গ্রামের প্রথম বাসিন্দা বলেই ধরা হয়। বানের জলে ভাসতে ভাসতে কাশেম শিকদার স্ত্রী ছমিরন বিবিকে নিয়ে এই গ্রামে আসেন। নিঃসন্তান এক দম্পতি তারা। ছমিরন বিবি বুঝেন ভিটেতে আলো দিতে হলে একটা সন্তান খুব দরকার। স্বামীকে বিয়ের পাগড়ি পড়িয়ে নতুন বউ ঘরে এনে ছুটে যান পরীর দিঘির পারে। গুনে গুনে চারটি ধুতরা ফুল খেয়ে ঘুমিয়ে পড়েন ছমিরন বিবি। সেই শিকদার বাড়ির প্রধান এখন মকবুল। তিন বউ তার। তিন বউয়ের সবচেয়ে ছোট বউয়ের নাম টুনি। অল্প বয়সী একটা মেয়ে। এই বাড়িতে আট পরিবারের বসবাস। সবচেয়ে ছোট্ট যে ঘরটা দক্ষিণ দিকে। সেই ঘরে থাকে মন্তু। সবার চোখে একরোখা, একগুঁয়ে, বদমেজাজি হলেও টুনির চোখে সে মাটির মানুষ। এই আট ঘরের সদস্যদের মাঝে যেমন অনেক মিল আবার অমিলও আছে। একেকজনের বৈশিষ্ট্য একেকরকম। এই পরিবারেরই একজন আবুল। বউ মারাই যায় নিত্যনৈমিত্তিক কাজ। দুই বউকে তো মেরেই ফেলেছে। কারো কথা শুনে না বলে কেউ তার সাতে পাঁচে নেই। এভাবেই বয়ে চলে এসব মানুষের জীবন। প্রতিনিয়ত সংগ্রাম করে বাচেঁ এসব মানুষেরা। তাদের গল্প সংগ্রামী মানুষের জীবন গাথা। কখনো এসব গল্পে দেখা যায় তাদের জয়ী হওয়ার কথা, কখনোবা তাদের পরাজয়ের গল্প। তবুও তাদের জীবন সংগ্রাম থামে না কখনো। দেখতে দেখতে পার হয়ে যায় সময়। দিন আসে দিন যায়, নামে রাত, হাজার বছরের পুরোনো সেই রাত।
Was this review helpful to you?
or
ষাটের দশকে আমাদের সাহিত্যজগত যখন ভয়ের কাছে নতী স্বীকার করে আর জাগতিক মোহে পড়ে সমাজসত্যকে এড়িয়ে যেতে শুরু করেছিল ঠিক সেই সময় সমাজ ও রাজনীতি-সচেতন জহির রায়হান তাঁর লেখনি ধারন করেন। "হাজার বছর ধরে" উপন্যাসে তিনি তুলে ধরেছেন যুগ-যুগান্তরের আবহ-সংকুল অথচ বিবর্তনহীন পূর্ববাংলার গ্রামীণ জীবনের ছায়াচিত্র।ক্ষুদ্র একটি গ্রামের একান্নবর্তী পরিবারের সংঘাতময় জীবনের কাহিনী তিনি বর্ণনা করেছেন এতে। পরিবারটির কর্তা বুড়ো মকবুল।তার এই পরিবার বাংলার বাষট্টি হাজার গ্রামের প্রতিটি পরিবারকে প্রতিনিধিত্ব করে।এবাড়িতে ৮ঘর লোকের বাস;সবাই নিম্নবিত্ত শ্রেণীর।জীবীকার তাগিদে নারী-পুরুষ সবাইকে কঠোর পরিশ্রম করতে হয়।হাজার বছর ধরে চলে আসছে গ্রাম বাংলার মানুষের এ জীবনযুদ্ধ।এযুদ্ধে কখনও তারা জয়ী হয়;আবার কখনও হয় পরাজিত। তাছাড়া অশিক্ষিত এ জনগণের মধ্যে কুসংস্কারেরও অভাব নেই।তাদের ধারনা কলেরা,বসন্ত,যক্ষা ইত্যাদি হলো দেব-দেবীর কুদৃষ্টির ফল।জ্বীন-ভূতের বিশ্বাসও তাদের মধ্যে প্রবল।গ্রাম্য কোন্দল আর পারিবিরিক ঝগড়া-বিবাদ থেকেও তারা বিরত নয়। এসমাজে নারী সত্ত্বার কোনো মূল্য নেই;এখানে তারা নির্যাতিত এক ভারবাহী জীব সদৃশ;তাদের প্রতিব্দ করারও কোনো পথ নেই।আর ভুলেও যদি কেউ তা করে,তাহলে তার ভাগ্যে জোটে সীমাহীন নির্যাতন। এসব কিছুই আবহমান বাংলার চিরন্তন চিত্র।এচিত্র আমাদের গ্রাম্য জীবনেরই প্রতিচ্ছবি।ঔপোন্যাসিক জহির রায়হান অত্যন্ত দক্ষতার সাথে অনবদ্য ভাষাচিত্রের সাহায্যে "হাজার বছর ধরে" উপন্যাসের মাধ্যমে আমাদের সামনে এই প্রতিচ্ছবি তুলে ধরেছেন
Was this review helpful to you?
or
ভালো লেগেছে। পড়ার মতো উপন্যাস। ভাটি এলাকার চিএ খুব ভালো করে ফুটে উঠেছে। তাছারা মেয়েদের মন নিয়ে যে টুয়িস্টটা ছিলোনা, ওটা দারুণ!
Was this review helpful to you?
or
রাত বাড়ছে। হাজার বছরের পুরনো সেই রাত। শেষ দুটি লাইন পাঠককে স্তব্ধ করে দিবে। মনে হয়ে যেনো পুরো উপন্যাসটা এই দুই লাইনের মাঝে আটকে আছে। জহির রায়হান বেঁচে থাকলে বাংলা সাহিত্য আরও সমৃদ্ধ হতো।
Was this review helpful to you?
or
হাজার বছর ধরে প্রখ্যাত বাংলাদেশী ঔপন্যাসিক ও চলচ্চিত্রকার জহির রায়হান রচিত একটি কালজয়ী সামাজিক উপন্যাস। ১৯৬৪ সালে এ উপন্যাসটির জন্য তিনি আদমজী পুরষ্কারে সম্মানিত হন। গ্রাম-বাংলায় যা হয়, কলেরা বসন্তের বাতাস লাগলে উজাড় হয়ে যায় কয়েক ঘর মানুষ। ডাক্তার না দেখিয়ে তারা টুকটাক তাবিজ করে, এভাবেই দিন চলে। মকবুলের আকস্মিক মৃত্যুর পর মন্তু যখন মনের কথা টুনিকে খুলে বলে তখন অনেক দেরি হয়ে গেছে। গনু মোল্লা, আম্বিয়া, রশিদ, ফকিরের মা, সালেহা কেউই নেই। টুনির সঙ্গে মন্তুর অনেক দিন দেখা হয়নি। টুনি হারিয়ে গেছে ওর জীবন থেকে। তবুও টুনিকে মাঝে মাঝে মনে পড়ে মন্তুর। এমনি করে অনেকটা সময় পার হয়েছে। রাতের বেলা সুরত আলীর ছেলে ওর বাপের মতোই পুঁথি করে- “শোন শোন বন্ধুগনে শোন দিয়া মন, ভেলুয়ার কথা কিছু শান সর্বজন।” ভেলুয়া সুন্দরীর কথা সবাই শানে। একই তালে, একই সুরে হাজার বছরের অন্ধকার এক ইতিহাস নিয়ে এগিয়ে চলে সবাই। হাজার বছরের পুরনো জোৎস্না ভরা রাতে একই পুঁথির সুর ভেসে বেড়ায় বাতাসে। কালের আবর্তে সময় গড়ায়। প্রকৃতিতেও পরিবর্তন আসে। শুধু পরিবর্তন আসেনা অন্ধকার, কুসংস্কারাচ্ছন্ন গ্রাম বাংলার আচলায়াতন সমাজে।
Was this review helpful to you?
or
আবহমান গ্রাম বাংলার একটি একান্নবর্তী পরিবারের জীবনগাথাকে পরম মমতায় সাজিয়ে লেখক জহির রায়হান "হাজার বছর ধরে" উপন্যাসটিকে কালজয়ী উপন্যাসে পরিণত করেছেন।তার ‘হাজার এই বছর ধরে’ উপন্যাসটি হয়ে থাকবে বাঙালির হাজার বছরের ইতিহাস, ঐতিহ্যের অসামান্য দলিল। ‘হাজার বছর ধরে’ উপন্যাসে তিনি একটি পরিবারের মাধ্যমে গ্রাম-বাংলার শত শত পরিবারের বাস্তবতা, জীবনধারা আমাদের সামনে নিয়ে এসেছেনে।এই উপন্যাসে জীবনযুদ্ধে টিকে থাকার জন্য পুরুষদের মাঠে কঠিন পরিশ্রমের পাশাপাশি মেয়েরাও ঘরে চাটাই বোনা,শাপলা তোলা,ধান ভাঙ্গার কাজ করে সংসারে উন্নতির আপ্রান চেষ্টার কথা তুলে ধরেছেন।লেখক এই উপন্যাসে বাল্যবিবাহের দিকটা ভাল করে তুলে ধরেছেন তার সাথে বহু বিবাহ ছিল নিত্যনৈমন্ত ব্যাপার।তখনকার সমাজে ধর্মীয় গোঁড়ামি ও নারীদের মুল্যহীনতার কথা ভাল ভাবে ফুটে উঠেছে এমনকি বউ পিটিয়ে মারা তেমন কোন কঠিন কাজ ছিল না।উপন্যাসটিতে বাড়ির কর্তা বুড়ো মকবুলের প্রানচঞ্চল কিশোরী স্ত্রী টুনির সাথে মন্তুর অসামান্য প্রেমের কাহিনী এবং তাদের হৃদয় ভাঙ্গনের কথা তুলে ধরেছেন।তখনকার শিক্ষা ব্যাবস্থা ও চিকিৎসা ব্যাবস্থার করুন অবস্থা ফুটে উঠেছে উপন্যাসটিতে।কুসংস্কারে অন্ধ বিশ্বাস ও মহামারি সুনিখুত ভাবে ফুটে উঠেছে।বিনোদনের মাধ্যম বলতে রাতে পুথিপাঠ ও বাজারে সার্কাসের সুনিপুণ দৃষ্টান্ত। আম্বিয়াকে বলা যায় গ্রামের অপ্রতিরোধ্য,স্বাবলম্বী এক নারীর প্রতীক ।উপন্যাসের চরিত্রগুলোর মাঝে আছে মকবুল বুড়ো,গনু মোল্লা,আবুল,ফকিরের মা,মন্তু , আম্বিয়া,টুনি মোটকথা আবহমানকাল ধরে চলে আসা বাঙালি জীবনের প্রায় প্রতিটি দিকই ঔপন্যাসিক অন্তত সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন।মকবুলের মৃত্যুর পর সময়ের পরিবর্তনে সে কর্তা মন্তু হয় একে একে পূরনো মুখ গুলো হারিয়ে যেতে থাকে নতুন মুখের সৃষ্টি হয় কিন্তু তাদের ঐতিহ্য ঠিকই থাকে এবং থাকবে এভাবেই যুগ যুগ ধরে চলবে আবহমান বাংলা তারই প্রতিচ্ছবি জহির রায়হান অত্যান্ত সুন্দর ও নিখুত ভাবে এই উপন্যাসে তুলে ধরেছেন।বাংলার ইতিহাসে অন্যতম সেরা সাহিত্যকৃতী এবং আমার পড়া সেরা ঊপন্যাস বলে মনে করি।
Was this review helpful to you?
or
নদী বয়ে চলেছে আপন গতিতে। গাছে গাছে ফুল ফোটে। আকাশে পাখি উড়ে- আপন মনে গান গায়। হাজার বছর ধরে যেই জীবনধারা বয়ে চলেছে, তাতে আশা-নিরাশা, প্রেম-ভালবাসা, চাওয়া-পাওয়ার খেলা চললেও তা সহজে চোখে পড়ে না, অন্ধকারে ঢাকা থাকে। কঠিন অচলায়তন সমাজে আর যাই থাকুক, নারীর কোন অধিকার নাই। নারী হাতের পুতুল মাত্র। পুরুষ তাকে যেমন নাচায় তেমন নাচে। নিজের ইচ্ছেতে কাউকে বিয়ে করাটা এমন সমাজে অপরাধ, গুরুতর অপরাধ। অন্ধকার এই সমাজে আনাচে কানাচে বাস করে কুসংস্কার, বাল্যবিবাহ, বহুবিবাহ, নারী নির্যাতন। পরীর দীঘির পাড়ের একটি গ্রামকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে কাহিনী। কখন এই গ্রামের গোড়াপত্তন হয়েছিল কেউ বলতে পারে না। এক বন্যায় “কাষেম শিকদার” আর তার বউ বানের পানিতে ভেলায় ভাসতে ভাসতে এসে ঠাই নিয়েছিল এই জায়গায়। সেই থেকে এখানে পত্তন হয়েছিল শিকদার বাড়ির। শিকদার বাড়ীতে বাস করে বৃদ্ধ “মকবুল” ও তার তিন স্ত্রী সহ “আবুল” “রশিদ”, “ফকিরের মা” ও “মন্ত” এবং আরো অনেকে। বৃদ্ধ মকবুলের অষ্টাদশি বউ টুনির মনটা মকবুলের শাসন মানতে চায় না। সে চায় খোলা আকাশের নিচে বেড়াতে, হাসতে, খেলতে। তাই সঙ্গী হিসেবে বেছে নেয় অল্প বয়সী সঠামদেহী মন্তকে। মন্ত বাবা-মা হারা অনাত। বিভিন্ন কাজ করে বেড়ায়। টুনি আর মন্ত সকলের অগোচরে রাতের বেলায় বেরিয়ে পড়ে মাছ ধরতে। বর্ষায় যায় শাপলা তুলতে। এমনি করে দুজন দুজনার কাছে এসে যায়। অব্যক্ত ভালবাসার জোয়ারে ভাসে ওরা দু’জন। কিন্ত কেউ মুখ ফুঁটে বলতে পারেনা মনের কথা, লোক লজ্জার ভয়ে। সমাজের রক্ত চক্ষু ওদের দুরে রাখে। গাঁও গেরামে যা হয়, কলেরা বসন্তের মড়ক লাগলে উজাড় হয়ে যায় কয়েক ঘর মানুষ। ডাক্তার না দেখিয়ে টুকটাক তাবিজ করে, এভাবেই দিন চলে। মকবুলের আকস্মিক মৃত্যর পর মন্ত যখন মনের কথা টুনিকে খুলে বলে তখন অনেক দেরি হয়ে গেছে। গুন মোল্লা, আবলি, রশদ, ফকিরের মা, সালেহা কেই নেই। টুনির সঙ্গে মন্তর অনেক দিন দেখা হয়নি। টুনি হারিয়ে গেছে ওর জীবন থেকে। তবুও টুনিকে মাঝে মাঝে মনে পড়ে মন্তর। এমনি করে অনেকটা সময় পার হয়েছে। রাতের বেলা সুরত আলীর ছেলে ওর বাপের মতোই পুঁথি করে- “শোন শোন বন্ধুগনে শোন দিয়া মন, ভেলুয়ার কথা কিছু শান সর্বজন।” ভেলুয়া সুন্দরীর কথা সবাই শানে। একই তালে, একই সুরে হাজার বছরের অন্ধকার এক ইতিহাস নিয়ে এগিয়ে চলে সবাই। হাজার বছরের পুরনো জোত্স্না ভরা রাতে একই পুঁথির সুর ভেসে বেড়ায় বাতাসে। ---কালের আবর্তে সময় গড়ায়। প্রকৃতিতেও পরিবর্তন আসে। শুধু পরিবর্তন আসেনা অন্ধকার, কুসংস্কারাছন্ন গ্রাম বাংলার আচলায়াতন সমাজে।
Was this review helpful to you?
or
সত্যি বলতে, এটাকে স্রেফ সময় কাটানো উপযোগী বলা যায়। অথবা বাংলার গুটিকয়েক পরিবারের কথার বাস্তব প্রতিফলন বলা যায়। এর থেকে বেশি অন্য কিছু বলা যায় না। অন্ততঃ আমার কাছে জ্ঞান অর্জনের মাধ্যম মনে হয় নি। গতানুগতিক সাধারণ উপন্যাসের তালিকায় এটি তেমন সাড়া ফেলবে না। শুধু জহির রায়হানের লিখা বলেই অনেকটা পরিচিত বলা যায়।
Was this review helpful to you?
or
বইটি প্রথম পড়া হয়েছিল স্কুলের পাঠ্য বই হিসেবে। কি এক অদ্ভুত ঘোরের মধ্যে ছিলাম পড়া শেষ করে। মাথার মধ্যে বার বার ঘুরতে থাকে উপন্যাসের শেষ লাইন - “রাত বাড়ছে। হাজার বছরের পুরনো সেই রাত। তার পর বিভিন্ন সময়ে কত বার যে বইটি পড়া হয়েছে তার কোন হিসেব নেই।’’ কিভাবে মানুষের জীবন চক্র চলছে তারই এক সুন্দর উদাহরণ জহির রায়হানের হাজার বছর ধরে।
Was this review helpful to you?
or
#রকমারি_বইপোকা_রিভিউ_প্রতিযোগিতা RF-07-012 রূপ তুলির আচরে, জলরঙের স্কেচে সুন্দর ভাবে ফুটে উঠে। আবার কিছু রূপ থাকে যাদের স্কেচে ধারন করা যায় না, কলমের ভাষায় ফুটিয়ে তুলতে হয়। সুচারু বর্ণনায় সেই রূপ হয়ে উঠে প্রাণবন্ত। কিন্তু কিছু রূপ থাকে যাদের না ধরা যায় স্কেচে, না ফুটিয়ে তোলা যায় কলমের খোচায়। মনের মাধুরীর সঙ্গে মিশে তা চলে যায় চিত্রকল্প বা বিশেষণের উর্ধে। তেমনি এক অবর্ণনেয় সৌন্দর্যের নাম "হাজার বছর ধরে"। এই সৌন্দর্য বর্ণনার দুঃসাহস আমি দেখিয়েছি, এই গোস্তাকির জন্য শুরুতেই ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি। পাঠ্যপুস্তকের অন্তর্ভুক্তির কারনে একটা প্রজন্মের অনেকেরই হয়তো উপন্যাসের হাতেখড়ি এই অমর সৃষ্টির মাধ্যমে। পরীক্ষায় উপস্থাপনের জন্য হয়তো ইচ্ছেয়-অনিচ্ছেয় অনেক কাটাছেড়া করতে হয়েছে, তবুও... তবুও আমার বিশ্বাস কারো কাছেই মুহুর্তের জন্যও এর আবেদন বিন্দুমাত্রও ক্ষুণ্ণ হয়নি। শতবার পাঠের পরও যার প্রতিটা লাইন সমান মুগ্ধতায় আকর্ষণ করে; তেমনি এক বিস্ময়ের নাম- "হাজার বছর ধরে" ছমিরন বিবি ও কাসেম শিকদারের সংসারে অভাব ছিল না। কিন্তু শান্তি ছিলনা কাসেম শিকদারের মনে। তার যে ছেলেপুলে নেই। ছমিরন বিবি সব বুঝতেন। তার পর একদিন জলভরা চোখে স্বামীর কাছে আস্তে করে বললেন, তুমি আরেকটা নিকা কর। বলতে গিয়ে বুকটা ফেটে যাচ্ছিল তার। দু'গন্ড বেয়ে অবিরাম পানি পড়ছিল। তবুও স্বামীকে নিজ হাতে সাজিয়ে দিলেন। হাতে মেহেদী দিলেন। মাথায় পাগড়ী দিলেন। নতুন বউয়ের দিকে তাকাতে সাহস পেলেন না ছমিরন বিবি। ছুরির তীক্ষ্ণ ফলা দিয়ে কে যেন তখন কলজেটা কুটিকুটি করে কাটছিল তার। নিজেকে আর বেধে রাখতে পারলেন না তিনি। পুকুর পাড় থেকে গুনে গুনে চারটে ধুতরা ফুল হাতে নিলেন। এরপর ধীরে ধীরে সেগুলো মুখে পুরে নীরবে ঘুমিয়ে পরলেন!!! বাঙ্গালী নারীর চিরন্তন ভালবাসা, পতিপ্রেমের এরচে জলন্ত চিত্রকল্প আর কে-ই বা আঁকতে পারতেন??? তারপর... অনেক বছর পর শিকদার বাড়ি আজ মানুষে গমগম করে। এই বাড়িরই মকবুলের তিন বউয়ের ছোট বউ টুনি। আর মন্তু একা মানুষ। বাবা,মা,ভাইবোন কেউ নেই। লোকে বলে মন্তু নাকি বড় একগুয়ে আর বদমেজাজি। স্বভাবটা ঠিক জানোয়ারের মতো। টুনি বলে, অমন মাটির মানুষ নাকি এ জন্মে আর দেখেনি সে। আহা অমনটি আর হয় না!!! উপন্যাস জুড়ে যেমন গল্প থাকে, এই গল্প জুড়েই তেমনি মন্তু আর টুনির উপাখ্যান! অথচ "হাজার বছর ধরে" আবহমান গ্রাম-বাংলার সাধারণ মানুষের জীবন আখ্যান।জহির রায়হান একটি পরিবারের মাধ্যমে গ্রাম-বাংলার শত শত পরিবারের বাস্তবতা আমাদের সামনে নিয়ে এসেছেন। এই পরিবারের সদস্যরা আটটি পাশাপাশি ঘরে বাস করে। এরা সবাই সুখে-দুঃখে একে ওপরের পাশে থাকে। কখনও হয়তো এদের মধ্যে তুমুল ঝগড়া বেঁধে যায়। আবার সব ঠিক হয়ে যায়। এই পরিবারের কর্তা মকবুল। এই চরিত্রটির মাধ্যমে লেখক গ্রাম-বাংলার মোড়লের চরিত্রটিকে তুলে আনার চেষ্টা করেছেন। লেখক এই উপন্যাসে আবহমানকালের গ্রাম-বাংলার প্রায় সব দিকই তুলে এনেছেন। এই উপন্যাসে বাল্য বিবাহের প্রসঙ্গ এসেছে, বহু বিবাহের কথা এসেছে। নারীদের অসম্মান করার ব্যাপার উঠে এসেছে, এমনকি বউকে পিটিয়ে মেরে ফেলাও যে তৎকালীন সময়ে এমন অস্বাভাবিক কোন ব্যাপার ছিল না সেটাও লেখক অসাধারণ দক্ষতায় তুলে ধরেছেন। এই বইয়ে সামাজিক কুসংস্কারের কথা উঠে এসেছে। এখানে জীবীকার তাগিদে নারী-পুরুষ সবাইকে কঠোর পরিশ্রম করতে হয়।হাজার বছর ধরে চলে আসছে গ্রাম বাংলার মানুষের এ জীবনযুদ্ধ।এযুদ্ধে কখনও তারা জয়ী হয়;আবার কখনও হয় পরাজিত। একটু একটু করে জমানো খেজুর রস মন্তুর এক কথাতেই কেনো ছুড়ে ফেলে দিয়েছিল টুনি? ভালবাসা বুঝি এমন বেপরোয়া হয়? অভিমানী হয়?? মন্তু কেনো ছইয়ের বাইরে এসে গান ধরেছিল, ♪আশা ছিল মনে মনে........♪♪♪ সেই সুর প্রতিধ্বনিত হয়ে মহাকালের কাছে কি বলে যাচ্ছে??? তারপর? তারপর সহস্র ঘটনা দুর্ঘটনায় সময় বয়ে গেছে। ভীষণ শুকিয়ে গেছে টুনি। হঠাৎ বয়সটা যেন অনেক বেড়ে গেছে ওর। চোখের নিচে কালি পড়েছে। চুলগুলো শুকনো। মন্তু ইতস্তত করছিল। টুনি আবার বললো, আজকা নাহয় মাঝি বাড়ি না গেলা। একটু ওষুধটা আইনা দাও। ওর ঠোঁটের কোনে এক টুকরো ম্লান হাসি....। এই হাসির মানে কি পৃথিবী বুঝেছিল? চোখের সামনে প্রেমিক অন্যের হয়ে যাচ্ছে এর চে ভয়াবহ দৃশ্য আর কি হতে পারে!!! পৃথিবীর সবটুকু জল আটকে রাখতে চেয়ে কেনো টুনি বলেছিল- "না তা আর অয় না মিয়া। তা অয় না".... লিখতে লিখতে এইখানে এসে আমিও অনেক্ষন স্তব্ধ হয়ে ছিলাম। এবার বইটা নিয়ে ধার করা একটা ঘটনা বলি- ক্লাস নাইনে পড়ুয়া একটা ছেলে টেবিলে বসে কাহিনী বলে যাওয়ার মতো শব্দ করে পড়ে যাচ্ছে একটা বই। দুই ঘর ছাড়িয়ে রান্না ঘর পর্যন্ত চলে গেছে তার শব্দ। শুনতে পেয়ে তার নানি রান্না ঘর থেকে অল্প সময়ের নোটিশে হাতের কাজ-টাজ সব গুছিয়ে গুটিগুটি পায়ে পানের বাটা হাতে নিয়ে এসে আয়েশ করে বসল ছেলেটার পড়ার টেবিল লাগোয়া খাটে। ছেলেটাকে দেখে যদিও মনে হচ্ছে এক মনে সে শুধু বই-ই পড়ে যাচ্ছে, তার নানির এই কার্যকলাপগুলোও কিন্তু তার দৃষ্টি এড়িয়ে যাচ্ছে না। কোনো একদিন হয়তো ছেলেটার রুটিনে সহপাঠ বইটা নাই, সেদিন হয়তো তার নানি কাছে এসে জানতে চাইল, 'নানুরে, মকবুল বুইড়ার জ্ঞান কি পরে আর ফিরছিন না?' অগত্যা ছেলেটিকে জটিল রসায়ন বই ছেড়ে আবার 'হাজার বছর ধরে' ঘটে চলা জীবনের রাস্তায় তার নানিকে নিয়ে হাঁটতে হয়। পরীর দীঘির ইতিহাস তাঁকে ভাবায়। মকবুলের বুড়োর মেয়ে হীরনের বিয়ের গীত তাঁর মুখে শোনা যায়। মকবুল বুড়োর মৃত্যু তাঁর হৃদয়কে মথিত করে... পাঠ প্রতিক্রিয়াঃ ক্লাস সেভেনে থাকতে প্রথম মামাতো বোনের কাছ থেকে এনে পরেছিলাম বইটা। তারপর কতোবার যে পড়েছি তার ইয়ত্তা নেই। অথচ কি আশ্চর্য! বইটা যতোবার পড়েছি প্রত্যেকবার নতুন লেগেছে। প্রতিবার আমার মনে হয়েছে, আহা যদি আম্বিয়া চরিত্রটা না থাকতো। প্রতিবার আমি টুনির প্রেমে পরেছি, তার ভালবাসার প্রেমে পরেছি। এই এতো বছর পরও আমি যখন শেষ লাইনটা পড়লাম, আমার শরীর কাটা দিয়ে উঠল! একই অনুভূতি! সেই...!! সেই একই অনুভূতি!!! রেটিংঃ রেটিং দিতে বলছেন? স্টার?? স্টার মানে তো তারকা, আকাশে যতোগুলো তারা, আমি সবগুলো এই বইটাকে দিতে চাই। আপনারা গুনে নিন। বইটা পড়তে পড়তে রাত আরেকটু বেড়ে গেছে। প্রথম যে ঘরটায় বসে বইটা পড়তাম সেই ঘরটা আজ আর নেই। টিনের বদলে আজ ইটের দেয়াল। যে গাছটার মাথায় চাঁদ উঠতো, সেই জলপাই গাছটাও নেই। অথচ চাঁদটা সেই আগের মতোই সরে সরে আসছে। রাত বাড়ছে। হাজার বছরের পুরোনো সেই রাত
Was this review helpful to you?
or
চলচ্চিত্রকার ও ঔপন্যাসিক জহির রায়হানের উপন্যাস "হাজার বছর ধরে"। তত্কালীন গ্রাম বাংলার কাহিনী নির্ভর উপন্যাস এটি । উপন্যাসটিতে নিপুণভাবে চিত্রিত হয়েছে একান্নবর্তী মকবুল বুড়োর পারিবারিক জীবনের ইতিবৃত্ত । এই একান্নবর্তী পারিবারিক জীবন কাহিনীই প্রতিনিধিত্ব করেছে বিশেষ একটি অঞ্চলের আবহমান পূর্ব বাংলার গ্রামীণ সমাজজীবনের । একান্নবর্তী পরিবারের কর্তা মকবুল বুড়ো । তার বাড়ির প্রত্যেকেরই জীবন নিম্নবিত্ত শ্রেণীর । জীবিকার তাগিদে বাড়ির পুরুষদের কাজ করতে হয় ঘরে বাইরে , দিন রাত যেন অক্লান্ত পরিশ্রম । বাড়ির নারী সদস্যরাও বাদ যায়না । তারা চাটাই বোনা,অন্যের ধান ভাঙা,শাপলা তোলা এরকম আরো অনেক কাজ করে যতটা পারা যায় তারা পরিবারের আয় উন্নতিতে সাহায্য করে । তবুও তাদের লড়তে হয় কঠিনতম জীবন সংগ্রামে । এরপরেও আছে নানারকম কুসংস্কার,নানাবিধ ধর্মীয় গোঁড়ামী আর বিধি নিষেধের বেঁড়া জাল । তবুও সবকিছু ছাপিয়ে উজ্জ্বল হয়ে উঠেছে তাদের কঠিন সেই জীবন সংগ্রামের গল্প । উপন্যাসের চরিত্রগুলোর মাঝে আছে মকবুল বুড়ো,গনু মোল্লা,আবুল,ফকিরের মা,মন্তু , আম্বিয়া,টুনি এদেরকেই মূলত কেন্দ্রীয় চরিত্র বলা যায় । আম্বিয়াকে বলা যায় গ্রামের অপ্রতিরোধ্য,স্বাবলম্বী এক নারীর প্রতীক । মকবুলের তৃতীয় স্ত্রী কিশোরী টুনি গ্রাম বাংলার উচ্ছল এক কিশোরীর প্রতীক । মন্তুর প্রতি তার আকর্ষণ,মকবুল বুড়োর চোখ ফাঁকি দিয়ে তাদের প্রেম কাহিনী যেন হয়ে উঠেছে যেন উপন্যাসের প্রধানতম একটি আকর্ষণ । এভাবেই নানা ঘটনা,তত্কালীন গ্রাম বাংলার নানারকম বাস্তবতার প্রতিচ্ছবি অঙ্কনের ভেতর দিয়েই এগিয়েছে অসাধারণ এ উপন্যাসটির কাহিনী ।
Was this review helpful to you?
or
চিরাচরিত গ্রামবাংলার হাজার বছরের রূপকথার বাস্তব এবং অতি সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম কিছু চিত্রের অসাধারণ ও অকৃত্রিম চিত্রায়ন ঘটেছে 'হাজার বছর ধরে' উপন্যাসে। সাহিত্যের গুনগতমানের মাপকাঠি যদি হয় এই যে তা নিজস্ব সংস্কৃতির কতখানি গভীরে প্রবেশ করতে পেরেছে, তবে সেক্ষেত্রে 'হাজার বছর ধরে' নিঃসন্দেহে বিবেচিত হবে বাংলা সাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ উপন্যাস হিসেবে। গল্প বলার এক সত্যিকারের জাদুকর ছিলেন অমর লেখক জহির রায়হান। তার অন্যান্য লেখার মত এই উপন্যাসেও তিনি যথারীতি একটি অতি সাদামাটা গল্পই বলতে চেয়েছেন। কিন্তু লেখকের লেখনীর অসামান্যতা আর ঘটনাসমূহের সাথে বাস্তব জগতের শতভাগ সম্পৃক্ততায় সেই সাদামাটা গল্প, কিম্বা কাহিনীটাই নতুন মাত্রা লাভ করেছে। কেন্দ্রীয় চরিত্র টুনি আর মন্তুর মাধ্যমে লেখক তুলে ধরেছেন এই হাজার বছর বয়স্কা বাংলার হাজারো যুবক যুবতীর হৃদয়ের কথা, হৃদয় ভাঙার কথা। আর দশটা প্রেমের উপন্যাসের চেয়ে হাজার বছর ধরে'র অবস্থান অনেক অনেক উপরে। কারণ এটি তথাকথিত প্রেম ভালোবাসার গাথা না। সামাজিক উপন্যাস বলে বাস্তবিকই যদি কিছু থাকে, এটি তারই উৎকৃষ্ট দৃষ্টান্ত। কি নেই এখানে? সামাজিক নানা কুসংস্কার, গ্রামবাংলার প্রেক্ষাপটে নারী ও পুরুষের আবস্থানিক দ্বন্দ্ব, নারী নির্যাতন, নারীদের জীবনের করুণ পরিণতি, সমাজের লাঞ্চনায় মানুষের মানসিক মৃত্যু, বাল্য ও বহুবিবাহের ভয়াবহতা এবং সর্বোপরি গ্রামবাংলার মানুষের ভালোবাসার কথা লেখক এই গল্পে বলেছেন অপুর্ব দক্ষতায়। কোথাও কোন কৃত্রিমতা নেই, নেই কোন জোরাজুরি। কাহিনী তার আপন গতিতে এগিয়ে চলে কিভাবে একটা সময়ে থেমে যায়, কিন্তু তার পরিণতি যাকে ইংরেজিতে বলে consequences, তা কিভাবে বছরের পর বছর, যুগের পর যুগ ধরে অপরিবর্তিত থেকে সামাজিক জীবনকে এক অজানা অবস্থান থেকে নিয়ন্ত্রন করে তা বেশ ভালোভাবেই বোঝা যাবে হাজার বছর ধরে উপন্যাসের মাধ্যমে। হাজার বছর ধরে ব্যক্তিগতভাবে আমার পড়া অন্যতম শ্রেষ্ঠ উপন্যাস। আমি মনে করি, 'হাজার বছর ধরে' আক্ষরিক অর্থেই হাজার বছর ধরে বাংলা সাহিত্যের উঠানে স্বমহিমায় ভাস্বর হয়ে রইবে।
Was this review helpful to you?
or
‘হাজার বছর ধরে’ উপন্যাসটি বাংলাদেশের গ্রাম-বাংলার আবহমানকাল ধরে চলে আসা সাধারণ মানুষের জীবন ও সংস্কৃতির এক সূক্ষ্ম ও সুনিপুণ আখ্যান। ক্ষণজন্মা কথাসাহিত্যিক জহির রায়হান এই উপন্যাসে দেখিয়েছেন, কোন রকম শক্তিশালী গল্প ছাড়াও শুধুমাত্র গল্প বলার আশ্চর্য নির্লিপ্ত ভঙ্গি এবং জীবনের প্রতিটি ক্ষুদ্র সাধারণ বাঁক পরম মমতায় তুলে আনার মাধ্যমে কীভাবে একটি উপন্যাসকে কালজয়ী করে তোলা যায়। হাজার বছর ধরে উপন্যাসের কাহিনী আলোচনায় যাওয়ার আগে বর্তমান সময়ের প্রেক্ষিতে এই উপন্যাসটি কেন গুরুত্বপূর্ণ সে বিষয়ে একটু আলোকপাত করি। ‘হাজার বছর ধরে’ উপন্যাসে বাঙালির হাজার বছরের জীবনধারা খুব যত্নের সাথে তুলে আনা হয়েছে। কিন্তু মজার ব্যাপার হচ্ছে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির অগ্রযাত্রার ফলে শেষ দুই দশকে শুধু শহুরে জীবনে নয়, গ্রামীণ জীবনেও আমূল পরিবর্তন এসেছে। এখন বাংলাদেশের বেশিরভাগ গ্রামেই বিদ্যুৎ চলে যাওয়ায় কুপি জ্বালানো সন্ধ্যাগুলো হারিয়ে যাচ্ছে। ঘরের দুয়ার পর্যন্ত পাকা-রাস্তা চলে আসায় গরুর গাড়ির ঐতিহ্য আর নেই বললেই চলে। ফলে আজ থেকে আর কয়েক দশক পরে হয়তো আলোচ্য উপন্যাসে বর্ণিত গ্রামের মত আর একটা গ্রামও খুঁজে পাওয়া যাবে না। সে সময় ‘হাজার বছর ধরে’ উপন্যাসটিই হয়ে থাকবে বাঙালির হাজার বছরের ইতিহাস, ঐতিহ্যের অসামান্য দলিল। ‘হাজার বছর ধরে’ উপন্যাসে জহির রায়হান একটি পরিবারের মাধ্যমে গ্রাম-বাংলার শত শত পরিবারের বাস্তবতা আমাদের সামনে নিয়ে এসেছেন। এই পরিবারের সদস্যরা আটটি পাশাপাশি ঘরে বাস করে। এরা সবাই সুখে-দুঃখে একে ওপরের পাশে থাকে। কখনও হয়তো এদের মধ্যে তুমুল ঝগড়া বেঁধে যায়। আবার সব ঠিক হয়ে যায়। এই পরিবারের কর্তা মকবুল। এই চরিত্রটির মাধ্যমে লেখক গ্রাম-বাংলার মোড়লের চরিত্রটিকে তুলে আনার চেষ্টা করেছেন। লেখক এই উপন্যাসে আবহমানকালের গ্রাম-বাংলার প্রায় সব দিকই তুলে এনেছেন। এই উপন্যাসে বাল্য বিবাহের প্রসঙ্গ এসেছে, বহু বিবাহের কথা এসেছে। নারীদের অসম্মান করার ব্যাপার উঠে এসেছে, এমনকি বউকে পিটিয়ে মেরে ফেলাও যে তৎকালীন সময়ে এমন অস্বাভাবিক কোন ব্যাপার ছিল না সেটাও লেখক অসাধারণ দক্ষতায় তুলে ধরেছেন। এই বইয়ে সামাজিক কুসংস্কারের কথা উঠে এসেছেন, পরকীয়া প্রেমের কথাও বাদ যায় নি। মোটকথা আবহমানকাল ধরে চলে আসা বাঙালি জীবনের প্রায় প্রতিটি দিকই ঔপন্যাসিক অন্তত সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন। ‘হাজার বছর ধরে’ উপন্যাসটি নিঃসন্দেহে বাংলা-সাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ সৃষ্টি এবং জহির রায়হানের শ্রেষ্ঠ সাহিত্যকর্ম।
Was this review helpful to you?
or
Lekhok "Jahir Rayhan", aei biotite jevabe gram banglar shukh, dhukha tule dhorechen tar kono tulona hoe na. Boiti ak khotae oshadharon. Boiti je kinbe, vaggoban bole bibechito hobe.
Was this review helpful to you?
or
"হাজার বছর ধরে" উপন্যাসে তিনি তুলে ধরেছেন যুগ-যুগান্তরের বিবর্তনহীন গ্রামীণ জীবনের ছায়াচিত্র।ক্ষুদ্র একটি গ্রামের একান্নবর্তী পরিবারের সংঘাতময় জীবনের কাহিনী তিনি বর্ণনা করেছেন এতে। পরিবারটির কর্তা বুড়ো মকবুল।তার এই পরিবার এবাড়িতে ৮ঘর লোকের বাস;সবাই নিম্নবিত্ত শ্রেণীর।জীবীকার তাগিদে নারী-পুরুষ সবাইকে কঠোর পরিশ্রম করতে হয়।হাজার বছর ধরে চলে আসছে গ্রাম বাংলার মানুষের এ জীবনযুদ্ধ।এযুদ্ধে কখনও তারা জয়ী হয়;আবার কখনও হয় পরাজিত। জীবিকার তাগিদে বাড়ির পুরুষদের কাজ করতে হয় ঘরে বাইরে , দিন রাত যেন অক্লান্ত পরিশ্রম । বাড়ির নারী সদস্যরাও বাদ যায়না । তারা চাটাই বোনা,অন্যের ধান ভাঙা,শাপলা তোলা এরকম আরো অনেক কাজ করে যতটা পারা যায় তারা পরিবারের আয় উন্নতিতে সাহায্য করে । তবুও তাদের লড়তে হয় কঠিনতম জীবন সংগ্রামে । এরপরেও আছে নানারকম কুসংস্কার,নানাবিধ ধর্মীয় গোঁড়ামী আর বিধি নিষেধের বেঁড়া জাল । তবুও সবকিছু ছাপিয়ে উজ্জ্বল হয়ে উঠেছে তাদের কঠিন সেই জীবন সংগ্রামের গল্প । লেখক এই উপন্যাসে আবহমানকালের গ্রাম-বাংলার প্রায় সব দিকই তুলে এনেছেন। এই উপন্যাসে বাল্য বিবাহের প্রসঙ্গ এসেছে, বহু বিবাহের কথা এসেছে। নারীদের অসম্মান করার ব্যাপার উঠে এসেছে, এমনকি বউকে পিটিয়ে মেরে ফেলাও যে তৎকালীন সময়ে এমন অস্বাভাবিক কোন ব্যাপার ছিল না সেটাও লেখক অসাধারণ দক্ষতায় তুলে ধরেছেন। এই বইয়ে সামাজিক কুসংস্কারের কথা উঠে এসেছেন, পরকীয়া প্রেমের কথাও বাদ যায় নি.কেন্দ্রীয় চরিত্র টুনি আর মন্তুর মাধ্যমে লেখক তুলে ধরেছেন এই হাজার বছর বয়স্কা বাংলার হাজারো যুবক যুবতীর হৃদয়ের কথা, হৃদয় ভাঙার কথা। আর দশটা প্রেমের উপন্যাসের চেয়ে হাজার বছর ধরে'র অবস্থান অনেক অনেক উপরে। কারণ এটি তথাকথিত প্রেম ভালোবাসার গাথা না। আম্বিয়াকে বলা যায় গ্রামের অপ্রতিরোধ্য,স্বাবলম্বী এক নারীর প্রতীক ।উপন্যাসের চরিত্রগুলোর মাঝে আছে মকবুল বুড়ো,গনু মোল্লা,আবুল,ফকিরের মা,মন্তু , আম্বিয়া,টুনি মোটকথা আবহমানকাল ধরে চলে আসা বাঙালি জীবনের প্রায় প্রতিটি দিকই ঔপন্যাসিক অন্তত সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন। হাজার বছর ধরে চলে আসা আবহমান গ্রাম-বাংলার সাধারণ মানুষের জীবন আখ্যান